আসলে শিবপ্রসাদ রবীন্দ্রনাথকে একেবারেই পছন্দ করতেন না আগাগোড়াই। তার কাছে কবিত্ব কোনদিন পায়রার খোপে বসে হয়না। কবিত্ব করতে গেলে ডানা মেলতে হয়। আর তার কাছে রবি ঠাকুর পায়রার খোপের মধ্যে থাকা সেই পায়রা যে কিনা বাইরে বেরোতে ভয় পায়। শিবপ্রসাদ রমাকান্তের কথায় মুচকি হেসে বলে “ কবি হলেন মাইকেল মধুসূদন, হেমচন্দ্র এরা। আর হ্যাঁ নবীন সেনও বটে। এরা উন্মুক্ত আকাশ নিয়ে লিখত। কারণ, তারা আকাশ দেখেছে। বন্ধ ঘরে কবিত্ব করা যায়না ভায়া। নবীন সেন, ভাগবতগীতা বাংলায় কাব্যানুবাদ করেছিল। পড়েছ?” রমাকান্ত আর কিছুই বলেনা। সে বুঝে গেছে কলকাতার রসগোল্লা থেকে শুরু করে কবি কোনটাকেই এই আলোচনায় জায়গা করে দিতে পারবেনা সে। শিবপ্রসাদের সামনে চাঁচরের সামনে টিঁকতে পারবেনা কলকাতা। তাই সে চুপ করেই থাকে। ... ...
#পথ_চলিতে ১শরীরটা সুবিধার নয়। কিন্তু সে নিয়ে কাঁহাতক আর বিলাপ করা যায়। গতকাল এক অনুজপ্রতিম দার্শনিকের সান্নিধ্যে চমৎকার কেটেছে। তাঁর মা শক্তি কর ভৌমিক চমৎকার লেখেন। আমার প্রিয় দার্শনিক বলেন খুব সুন্দর। পুরো মাথা ঘুরিয়ে দেবেন, বিপরীত যুক্তি ও তথ্য দিয়ে। কিন্তু লেখা নৈব নৈব চ।আপাতত শুনেই মুক্তি।তবে একটা লাভ হয়েছে, চমৎকার সিঁদল খেয়েছি। বাড়তি পাওনা মনে রাখার মতো, এঁচোড় রান্না। গাছ পাঁঠা যে কেন বলা হয়, টের পেলুম। আজ সকালে একটা বৈঠক সেরে বিকেলে মানিকতলা খালপাড়ে। পড়াতে। ইচ্ছে ছিল প্রাচ্য নাট্যদলের 'পোস্টমাস্টার' দেখার। বন্ধু সুজন বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও অংশুমান ভৌমিক, অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়দের আড্ডাটাও হলো না।তবে আজ পাঠশালায় মন ভরিয়ে দিল কয়েকজন।বহুদিনের ... ...
ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হবার আগেই রোদিকা গিয়েছিল কি কি দান এই সব দাতব্য প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করতে পারে সে তথ্য সংগ্রহ করতে। সে জেনে এলো আমাদের গ্রামের কোন চ্যারিটি শপ জামা কাপড় আর নেয় না। বেছে কুচে তারা যা দোকানে রাখে তা যদি এক মাসের ভেতরে বিক্রি না হয়, সেগুলো পুড়িয়ে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দোকানে মাল রাখার খরচা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে দুধের হ্রদ, মাখনের পর্বত জেনে এসেছি – দুধ ফেলে দেওয়া হয়েছে, স্তূপীকৃত মাখন নষ্ট করা হয়েছে। চাষি তার দাম পেলো কিন্তু সেটা বাজারে গেলে দর কমে যাবে যে। মনে হয়েছে ক্ষুধার্ত আফ্রিকায় কি পাঠানো যেতো না? এই মহান ইউরোপীয় ইউনিয়নের ধ্যান এবং দর্শন অন্য মাত্রার। ... ...
ধরা যাক আমি একজন দাস। সারা জীবন মন দিয়ে সেবা করতে লাগলাম এবং আমার ছেলেমেয়ে, নাতিপুতিদেরও উপদেশ দিয়ে গেলাম, আমার মতো সেবা করতে থাক, তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের আবার স্বর্গে দেখা হবে। স্বর্গে গিয়ে দেখা হচ্ছিল কিনা জানার কোন উপায় নেই, কিন্তু এই বিশ্বাসে বিভোর দাসেরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম দাসই থেকে যাবে! তারা অন্য আর কিছু হয়ে ওঠার চেষ্টাই করবে না। এটাই মানুষের মনুষ্যত্ব ভুলে যাওয়া। আর এখানেই ব্রাহ্মণ্য দর্শনের সঙ্গে লোকায়ত দর্শনের সাংঘাতিক দ্বন্দ্ব। এবং বলা বাহুল্য এই দ্বন্দ্ব উচ্চস্তরীয় পরমমোক্ষ লাভের জন্যে নয়, খুবই নিচুস্তরের পার্থিব স্বার্থসিদ্ধির জন্যে। ... ...
[ আমার এমআরডি (ওখানকার ৬৯ঙ) নাম্বার জিজ্ঞেস করলেন ডাক্তার। গোটা শঙ্কর নেত্রালয় তখন সুন্নুনাটা। ডাক্তার এক সিকিউরিটিকে ডেকে আমার নাম্বার দিয়ে ফাইলটা আনতে বললেন। বিশ্বাস করুন ঠিক পাঁচ মিনিট। আমার সেই “এ্যালারজিক টু সালফার” লেখা ফাইল ডাক্তারবাবুর টেবিলে। তখন ডানচোখ পুরো অন্ধকার। কালো – নিকষ কালো।] ... ...
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে কিছু কথা মনে এসে গেল। ... ...
শরতের আকাশে পেঁজা তুলোর মাঝে মায়ের মুখটা যেন ভেসে উঠল। শিবরানী উঠোনে নেমে এসে জোড়ে চেঁচিয়ে বলল “ওই যে, ওই যে মায়ের মুখ। আমার মা আসছে আমার বাড়ি।“ তার চোখে মুখে সেই চেনা আনন্দ। সে প্রতিদিন তার ঠাকুরকে অনুভব করে। কথা বলে। তার ভক্তি বারংবার মা দুর্গাকে তার কাছে টেনে নিয়ে আসে। মায়ের সাথে অনেক গল্প করে শিবরানী। অনেক না বলা কথা মা দুর্গাকে বলে সে। যে কথাগুলো আর কেউ জানেনা। ... ...
ড়ি আঁচল দিয়ে চোখ মুছে বলল “ হ্যাঁ বাবা। তোকে মনে পরবে না! তুই গেলি আর পাঁচু ডাকাত তোর বউকে মেরে সব লুট করে নিয়ে গেল। “ আসলে শিবপ্রসাদ যে নিরুদ্দেশ হয়েছিল সেটি সবাই জেনে গেলেও। হেমাঙ্গিনীকে যে ডাকাতের দল মেরেছে সেই নিয়ে একটা ঘটনা রটে গিয়েছিল। মানে শিবপ্রসাদ বেঁচে গেল আর’কি। সবাই জানত পাচু ডাকাত লুট করতে এসে হেমাঙ্গিনীকে মেরে ফেলেছে। ... ...
ধেড়েখোকার প্রত্যাবর্তনের পর কিছুদিন রগড়ারগড়ি চলবে। তৃণমূল বলবে ,ঘরের কার্তিক ঘরে ফিরে এল। বিজেপি বলবে ,দুষ্ট গরুর চেয়ে শূণ্য গোয়াল ভালো। তথাগত রায় প্রায় থ্রিলারের ভাষায় টুইট করবেন, কে এস ডি এ গ্যাং ( কৈলাশ আর দিলীপ ছাড়া গ্যাংয়ের বাকি দুই সদস্যের নাম আমার মনে থাকে না) মমতা ট্রোজান হর্স ঢুকিয়ে ছিল বিজেপিতে। তবে এসব দুদিন বাদে থেমে গেলেও একটা ব্যাপার নিশ্চিত বামপন্থীদের নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে বেশ কিছুকাল কামড়া কামড়ি চলবে। ... ...
থাপ্পড়ের রকম ফের ... ...
প্রথম উপন্যাসে প্রোজ্জ্বল কোনো দার্শনিক প্রস্তাবনা, ন্যারেটিভের জটিলতা , ব্যক্তিমনের অন্তর্লীন শুলুকসন্ধানে প্রবৃত্ত হন নি। একেবারে সোজাসাপটা গল্প বলতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর জোরের যে জায়গাটা সেটা হল এই কাজটুকু তিনি ভীষণ আন্তরিকতা আর সততার সঙ্গে করতে পেরেছেন। ... ...
দেশদ্রোহ বিষয়ক আইনের ধারা ও সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ... ...
সেদিনের অনুষ্ঠানে শচীন দেব গান গাইতে উঠলেন। রবি বাবুর ততক্ষণে চলে যাবার কথা, আর শচীন দেব সরাসরি গ্রীন রুম থেকে এলেন বলে তিনি আর খেয়াল করেন নি শ্রোতাদের মধ্যে রবি ঠাকুর বসে আছেন। গান শুরু হল – শচীন দেব সেদিন গাইলেন ঠুমরি। সেই কি গাইলেন – পুরো অনুষ্ঠান শেষ হলে শচীন দেব পেয়েছিলেন গোল্ড মেডেল। রবি বাবু খুব মন দিয়ে গান শুনছিলেন – মজে গিয়েছিলেন, একসময় জিজ্ঞেস করলেন, " হ্যাঁরে, দিনু, ছেলেটা কে রে? ভারী সুন্দর গাইছে তো।" ... ...
প্রিয় মিশ্রাজি (পরিচালক – দীপক কুমার মিশ্রা) … এই যে প্রশ্নপত্র হাতে আমাদের দাঁড় করিয়ে গেলেন আশাকরি তার উত্তর শীঘ্রই পাব পঞ্চায়েত ৩ এ। ততদিন মনের মনিকোঠায় লুকোনো থাক ফুলেরা গ্রামের গল্পরা … ... ...
যজ্ঞের সমস্ত উপচার, অনার্য দাসেরাই সংগ্রহ করে দেয়। যজ্ঞের বেদী নির্মাণ, বিপুল সমিধসম্ভার, তৈজসপত্র, ঘি, দুধ, শস্য, ফল-মূল সর্বত্র তাদেরই হাতের স্পর্শ। যজ্ঞ শেষে পুরোহিতরা দক্ষিণা হিসাবে তাদের ঘরে নিয়ে যায় যে বিপুল সম্পদ – সোনা, রূপো, সবৎসা-গাভী, অজস্র শস্য সম্ভার, ধাতব কিংবা মাটির পাত্র – সে সবই অনার্য বৈশ্য ও শূদ্রদের পরিশ্রমের উৎপাদন। অথচ তারা বুঝতেই পারে না, দেবতারা কারা। পুরোহিতরা কাদের জন্যে যজ্ঞ করছেন। যে মন্ত্র তাঁরা বলছেন, তার মধ্যে কোথাও কী আছে বিপুল এই অনার্য শ্রমের সামান্যতম স্বীকৃতি? কঠোর শ্রমের পরিবর্তে অসহায় তাৎপর্যহীন এই জীবন তাদের ঠেলে দিতে লাগল আরও নিরাশার দিকে। মনে মনে আকুল প্রার্থনায় তারা আরও বেশি করে মাথা কুটতে লাগল তাদের নিজস্ব দেবতাদের পায়ে। ... ...