[ বাচ্চা মেয়েটি তখন সদ্যই সন্তানসম্ভাবা। মেয়েটির গোটা শরীর জুড়ে শুরু হ’ল অসহ্য ব্যথা আর যন্ত্রণা। এপাশ থেকে ওপাশ ফিরতে পারে না সে এমন প্রলয়ঙ্করী ব্যথা। স্বাভাবিকভাবেই কলকাতার ব্যানার্জি, মুখার্জি, পাল, চৌধুরী ইত্যাদি নামী নামী ডাক্তারবাবুদের চেম্বারে ছুটোছুটি শুরু হ’ল। কিন্তু ব্যথা আর কমেই না। বরং অযথা ব্যথা কমানোর ওষুধ খেয়ে খেয়ে সে মেয়ে প্রায় নিস্তেজ। কিছুদিনের মধ্যেই বিছানা হ’ল তার আশ্রয়।] ... ...
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সব কিছুরই টানাটানি । রুটি , কয়লা র্যাশনে পাওয়া যেতো , চকোলেটের র্যাশন ছিল ১৯৫৮ অবধি। বাড়ির বাথরুম অজানা বস্তু। মাঝে মধ্যে সার্বজনীন স্নানঘরে পয়সা দিয়ে গা ধোয়ার ব্যবস্থা। সেন্ট্রাল হিটিং অনেক দূরে তখন। যুদ্ধে ভাঙ্গা বহু বাড়ির মেরামত হয় নি। যুদ্ধ থেকে যারা ফেরেন নি ব্রিটিশ সরকার তাঁদের পরিবারকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন । লন্ডন অনেক দূরের শহর । জর্জ এবং জেনি অ্যাডামস নিঃশব্দে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের দিকে । না, কোন ইউনিসেফ বা অক্সফ্যামে টাকা পাঠিয়ে বিবেক পরিষ্কার করেন নি । নিজের হাতে টাকা বা সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন । ১৯৯৯ সালের ২৭শে আগস্ট বিবাহের সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে শেষ বারের মতো জর্জ অ্যাডামস জেনিকে নিয়ে গিরজে থেকে রাসটন লজ অবধি তাঁর প্রিয় সিলভার শ্যাডো রোলস রয়েস চালান । পরের দিন সেটি নিলামে তোলা হয় – সে যাবত প্রাপ্ত সমস্ত টাকা দান করেন। ... ...
চেনা মানুষ অচেনা গল্প ... ...
তাঁর নির্দেশের লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষ, অতএব তিনি মাগধী প্রাকৃত এবং আঞ্চলিক প্রাকৃত ভাষাই ব্যবহার করেছিলেন তাঁর নির্দেশগুলিতে। এর অপরিসীম গুরুত্ব বুঝে সংস্কৃতর পাশাপাশি গড়ে উঠতে লাগল প্রতিটি অঞ্চলের ভাষা এবং তাদের নিজস্ব লিপি। অর্থাৎ আজ আমি বাংলাভাষায় এই যে লেখাটি লিখছি এবং আপনি যে সেটি পড়ছেন, তার পিছনে সম্রাট অশোকের অসাধারণ এই অবদান স্বীকার করে আমরা যেন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় প্রণত থাকি। ... ...
একটি এমটিপি করতে আসা মেয়েকে নার্স বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রশ্ন করায় এক বেসরকারি হাসপাতালের (পশ্চিমবঙ্গের বাইরের) ডাক্তার নার্সকে ডেকে কাউন্সেল করেছিলেন, বলেছিলেন এই সব কথা তো তোমার জানার দরকার নেই। ও একটা সার্ভিস নিতে এসেছে আমাদের কাছে, আমরা দেব এইটাই ওর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, বাকিটা ওকে বুঝে নিতে দাও। এই ডাক্তার মহিলাকে অসীম শ্রদ্ধা জানাই। এর পাশে রাখি সেই সব কলকাত্তাই ডাক্তারদের যারা শুধু সিঁদূর দেখতে না পাওয়ার জন্য একটি মেয়েকে কুমারী ধরে নিয়ে মোরাল পিসিমা হয়ে এমটিপি করা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে চেষ্টা করেছিলেন। ... ...
সম্পর্কে আসা-যাওয়া ব্যাপারটা বড় স্বাভাবিক। তাই নতুনদের ভিড়ে পুরনো অনুরাগীরা চাপা পড়ে যায়। ও অভিমান আসে তেমনই । যেমন গুলজার সাব লেখেন,“খতা উনকা ভি নহী ইয়ারো ওহ ভী ক্যেয়া করতে / বহুত চাহনে ওয়ালে থে কিস কিস কো বফা করে…” ... ...
সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আফ্রিকা মহাদেশের সম্বন্ধ দীর্ঘদিনের কিন্তু গত প্রায় তিরিশ বছরে রাশিয়ার সঙ্গে পরিচয় তেমন হয়তো হয় নি। বর্তমান রাশিয়ান সরকার আফ্রিকার সকল দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ও রাশিয়া ও আফ্রিকার পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধির মানসে আফ্রেক্সিমব্যাঙ্কের সঙ্গে গাঁট ছড়া বাঁধতে মনস্থ করেছেন এ ব্যাঙ্ক কোন এক দেশের নয়, সারা আফ্রিকা এর মালিক । তাই এই ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করে তাঁরা সারা আফ্রিকার কাছে পৌঁছুতে চান। রাশিয়া সরবরাহ করে এক বিশাল পরিমাণ খাদ্য শস্য আফ্রিকার প্রয়াস হোক তাদের রপ্তানি বাড়ানোর । অন্য দেশের মতন ( তির্যক মন্তব্য চিনের প্রতি !) রাশিয়া টাকার থলি নিয়ে আফ্রিকা এসে সম্পত্তি ও প্রভাব কিনতে আগ্রহী নয় । ... ...
রনি, কলকাতায় মার খাচ্ছে বাংলা। এটা বলে বুঝানোর মত না। অকারণে মানুষ হিন্দি বলে! কেন বলে নিজেও জানে না। আপদমস্তক বাঙালি, কোন আন্দাজে হিন্দি বলে চলে সবাই? আমরা ঢাকা থাকা কালে হিন্দি শুনলেই মনে করতাম বিহারী কেউ আছে আশেপাশে! প্রথম নেমে যখন হিন্দি শুনলাম একজনের মুখে তখন আমার মনে হল আরে বিহারী না কি! না, বিহারী না। এরা শিক্ষিত, ভদ্র এবং সবাই হিন্দিতে কথা বলতে চায়। রিকশাওয়ালা, উবার চালক, ট্যাক্সই চালকদের দেখে আমার মনে হয়েছে এরা হয় সবাই ভিন্ন প্রদেশ থেকে এসেছে না হয় এদের মানসিক সমস্যা আছে। এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে কলকাতা কী ভাবছে আমার জানা নাই। ভাবছে কি না তাও জানা নাই। এদিক থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে এগিয়ে আছে। বাংলা আমাদের এখনও একমাত্র ভাষা। উবার ডাকেন, হেলিকপ্টার ডাকেন, ড্রাইভার আপনাকে আমাদের দেশে বাংলায়ই ডাক দিবে, এইটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। ... ...
স্মৃতি ঝাঁপটাতে ঝাঁপটাতে যেটুকু উঠে আসে। পাড়া, ছেলেবেলা, আত্মজন সব মিশে যায়। শুধু পরে থাকে প্রথম ঈপ্সা কে ফিরে পাওয়ার স্মৃতি লেখা.. ... ...
জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকেই আমাকে আটকে দেওয়া হল। বললাম, লাইব্রেরীতে কেন যায়? বই দেখব, পড়ব, হাতাব! মছুয়া দারওয়ান বলল, উঁহু, এখানে ওই সব হয় না! ওই সব করতে হলে আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, কবে আমি আসব তা আগে থেকেই ঠিক করে আসতে হবে। আর যদি সদস্য হওন তাহলে বই বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন! তাহলে এখন? তিনি জানালেন, ‘ভিজিট’ দিয়ে আসতে পারবেন! ভিজিট দিয়েই না হয় আসলাম। নাম, ঠিকানা, ডাবল ডোজ টিকা চাইলেন, আমি টিপ্রল ডোজ টিকার কার্ড দেখিয়ে, নাম ধাম দিয়ে ঢুকলাম। ওই ঢুকা পর্যন্তই। ভিতরেও একই কাণ্ড। একজন মহিলা আমাকে নিয়ে রিডিং রুমে নিয়ে গেলেন। বললেন, ওই যে ওইটা রিডিং রুম। আমি কাছে যেতে চাইলে বললেন, উঁহু, কাছে যাওয়া যাবে না। বোঝ? আমি এদিকে একটু উঁকি দিতে চাই, নানা কোন দিকে তাকানো যাবে না! একটা ছবি তুলি? নেহি! অজ্ঞতা আর কী, চলে আসলাম। ... ...
গত ১৯ জুন,২০২২ তারিখে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় পৃথিবীর দুই দেশে—প্রথমটি লাতিন আমেরিকা মহাদেশের কলম্বিয়ায়, দ্বিতীয়টি ইওরোপ মহাদেশের ফ্রান্সে। দুটি নির্বাচনের ফলাফলই শ্রমজীবী মানুষের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । ... ...
[ কাঠ্ঠোকরা পাখীর জলে ছোঁ মারার মতো কেড়ে নিলেন কাগজখানা ক্যান্টিন ম্যানেজারের হাত থেকে। দেখলেন কি লেখা আছে তাতে ! এরপরে অর্ডার বেরোলো, - ‘আমি বসে আছি এখানেই। সকালের চা, ব্রেকফাস্ট, তারপরের ফলের রস আর আজকের নন-ভেজ লাঞ্চ এক্ষুনি আনান এখানে’ ইয়েসো ম্যাম ইয়েসো ম্যাম করতে করতেই ক্যান্টিন ম্যানেজার প্রায় পালাতে পারলে বাঁচেন। এর মধ্যে পেশেন্ট বলে উঠল ‘ম্যাম, অতো আমি এখন খেতে পারবো না ! কিছু একটু হলেই হবে আমার !’] ... ...
শুধু প্রতিরক্ষাই নয়, নন্দরাজারা সেচ ব্যবস্থার জন্যেও বহু ক্যানাল এবং জলাধার নির্মাণ করিয়েছিলেন। রাজ্যের সমস্ত ভূমি এবং ভূসম্পদ ও জলসম্পদের অধিকারী যে রাষ্ট্র এবং সেই যাবতীয় সম্পদই যে করযোগ্য ভারতবর্ষে সে ধারণারও প্রথম প্রবর্তন করেছিলেন নন্দরাজারাই। ... ...