শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমের কবিতাগুলোর কেন্দ্রে যে যুবতী ... ...
এই জীবনের আসা যাওয়ার পথের ধারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে খ্যাতনামা কিছু মানুষের সঙ্গে সামান্য সময়ের জন্য সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে । তাঁদের কাউকে চিনেছি কেবল কাজের সূত্রে , ঘটনাচক্রে হয়েছি সম্মুখীন। কোন ভালোলাগার মানুষকে পেয়েছি মুখোমুখি, নিতান্ত কপালগুণে । তাঁদের কথা নিয়েই শুরু করছি ' কিছুক্ষণ' পর্যায়ের কিছু লেখা । দেব আনন্দের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ঝরিয়া ( সে আমলে বিহার,আজকের ঝাড়খণ্ড)শহরের বিহার টকিজ সিনেমায় ; তৎকালীন বিহার প্রদেশের একমাত্র শীততাপ নিয়ন্ত্রিত চিত্রগৃহ। ছবির নাম সি আই ডি। একা সিনেমা দেখার স্বাধীনতা পেতে অনেক দেরি কিন্তু হোলি হ্যায় এই আওয়াজ তুলে পাড়ার বড়োদের সঙ্গে কিছু বালকের দলে আমিও ভিড়ে গেছি; টিকিটের লাইন হলের পেছন দিকে একটা লম্বা খাঁচায় , সেখানে গরমে ঘামে জামা ভিজে যায় । সে যাবত বাবা মায়ের সঙ্গে একটি মাত্র হিন্দি সিনেমা দেখে জেনেছি রাজ কাপুর নামক ভদ্রলোক জাপানি জুতো এবং ইংরিজি প্যান্ট পরেন – ছবির নাম শ্রী ৪২০। এবার রুপোলী পরদায় আমার সামনে আবির্ভূত হলেন দেব আনন্দ - ‘আঁখো হি আঁখো মে ইশারা হো গয়া ‘ সে ইশারা তিনি অভিনেত্রী শাকিলাকে করছিলেন কিন্তু সেই সঙ্গে আমার মন জয় করে নিলেন। ... ...
কুরোসাওয়া ক্রমশঃ মানিক বাবুর পারিবারিক বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন। উনি বিজয়া রায়-কে ডাকতেন “জয়া – সান” বলে। ‘সান’ হল জাপানী ভাষায় এক সম্ভ্রম সূচক সম্বোধন – পুরুষ, মহিলা দুই দলকেই বলা যায়। যেমন প্রথম প্রথম কুরোসাওয়া সত্যজিৎ রায়কে ডাকতেন “মাষ্টার-সান” বলে। কিন্তু মানিক বাবু বেশ অপ্রস্তুত হয়ে একদিন বললেন, “আপনি আমাকে প্লীজ এই ভাবে মাষ্টার বলে ডাকবেন না সবার সামনে – বেশ লজ্জা লাগে”। তারপর থেকে কুরোসাওয়া উনাকে সবার সামনে ‘মিঃ রায়’ আর একান্তে ‘মাষ্টার-সান’ বলে ডাকতেন। ... ...
আমেরিকাতে থাকার সময় কয়েকবার বাইবেল স্টাডি গ্রুপের মেম্বারদের সাথে দেখা হয়েছিল। তারই একখান এনকাউন্টারের গপ্পো ... ... ... ...
যৌবনে নারীর শীতল প্রত্যাখানে অপমানিত পৌরুষ হয়ে যেতে পারে কর্কশ, বিপথগামী। সবল পুরুষের হবে সংযমী হৃদয়, তাতে অযথা উঠবে না ভাবাবেগের তরঙ্গ, উঠলেও তার পাথরপ্রথিম মুখচ্ছবিতে ফুটবে না অন্তর্লীন বেদনার সামান্য আঁকিবুঁকি, একান্তে ক্ষণিক ক্রন্দনও সর্বৈব নৈব নৈব চ। এই হচ্ছে সমাজে পুরুষের প্রচলিত ম্যানলি ইমেজ। অজান্তেই এই ইমেজ অনুশীলনে রত অধিকাংশ মেল শভিনিস্ট। যারা এ ছকে পড়ে না, নারীর মধুর আন্তরিক সঙ্গ তাদের মননকে করতে পারে গভীর সংবেদনশীলতায় সমৃদ্ধ। সুমনের কাছে কেতকীর সাহচর্য ছিল সেরকম। গন্তব্য নয়, যতদিন সম্ভব সখ্যতার সহযাত্রাই ছিল সুমনের কাছে অতীব আনন্দময়। ... ...
আমাদের একটা আস্ত সমুদ্র ছিল – ছিল সমুদ্র সৈকত। ঘরে থেকে বেরোলেই ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ শুনতে পেতাম ঝাউগাছের তলায় আর কখনও কখনও প্রবল তাপদগ্ধ অলস দুপুর কাটাতে কাটাতে বারান্দায় বসে অপেক্ষা করতাম বিকেলের ভেজা বালির। আমরা তখনও কেবল দুজন মাত্র। হাঁটতে হাঁটতে চলে যাই ঢেউ পেরিয়ে পেরিয়ে – কখনও দেখা হয়ে যায় পাশের বাড়ির কুকুর নিয়ে ঘুরতে বেরোনো মালকিনের সাথে, কখনও দেখা হয় কাঁকড়া খুঁজতে আসা সেই স্থানীয় লোকেদের সাথে। কখনও দেখি এক পুরো পরিবার চিঙড়ি মাছ ধরছে জাল দিয়ে ছেঁকে – বাচ্চাদের উৎসাহ অবশ্যই মাছ ধরার থেকে জলে হুটোপুটিতেই বেশী। এক সময় গোধূলি নেমে আসে – এত রঙ আমরা আর কোথাও দেখি নি। জলের সাথে ভেসে আসা কাঠের গুঁড়ির উপর বসে সূর্যের ডুবে যাওয়া দেখি। ঢেউ দেখি – শব্দের সাথে মিশে যায় দিগন্তে আকাশের শত রঙ। ধর আজকে মেঘ করেছে – এমন মেঘের ফাঁক দিয়েও আলো চুঁইয়ে পড়বে জানি অনভ্যাসের আলতা পায়ে। লাল মুছে নিয়ে যাবে ক্রমাগত আর ফিরে না আসা ঢেউ। আমি তখন দূরে ছোটার ক্লান্তি নিয়ে তাকিয়ে আছি একে একে জ্বলে ওঠা জলের ওধারে জাহাজের আলোর দিকে। আলো স্পষ্ট হয়ে আসে, ঢেউ এগিয়ে এসেছে অনেক – আমরা হাতের আঙুল নিয়ে খেলতে খেলতে ফিরে আসি কাঠের বাড়িতে। ... ...
নীলরতন বাবু বয়েসে প্রায় বছর কুড়ি বড় ছিলেন বিধান রায়ের থেকে। ভালোবেসে তিনি বিধান রায়কে ‘বিধে’ বলে ডাকতেন আর একদম ভাইয়ের মত ভালোবেসে তুই বলেই সম্বোধন করতেন। সেই ভালোবাসা ছিল রেসিপ্রোক্যাল – কুড়ি বছরের বড় হওয়া সত্ত্বেও বিধান রায় ডাকতেন ‘নীলুদা’ বলে। প্রথম থেকে আলাপের পরেই নীলরতন বাবু বুঝে গিয়েছিলেন যে বিধান রায় খুবই প্রতিশ্রুতিবান ছাত্র এবং কালে কালে খুব নামকরা ডাক্তার হবে যদি ঠিক ঠাক গাইড করা যায়। তাই তিনি নিজে থেকেই বলেছিলেন, “বিধে, সময় পেলেই বিকেলের দিকে আসিস হাসপাতালে আমার রুমে। রাউন্ড দেবার আগে তোর সাথে চা খেতে খেতে বিশেষ কেস গুলো নিয়ে আলোচনা করব”। তা এমন সুযোগ কি আর হাতছাড়া করেন বিধান রায়! তাঁরও শেখার আগ্রহ প্রচুর, প্রায় প্রতিদিন সময় পেলেই ছুটতেন ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল কলেজে – যাকে আপনারা আজকে নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ বলে চেনেন। ... ...
তা ব্রজেন বাবু হেল্প করলেন। উনার কথাতেই অন্নপূর্ণা যাত্রা অপেরা ডেকে পাঠালো অরুণ কুমারকে একদিন। অরুণকুমার গিয়ে দেখলেন একদমই নতুন ধরণের যাত্রা – নাম “শের আফগান”। সেখানে আলি কুলী খাঁ-য়ের চরিত্রে অভিনয় করছে কম বয়সী, কিন্তু তুখড় একজন ছেলে। সেই ছেলেই পরে শান্তিগোপাল নামে বাংলার ঘরে ঘরের নাম হয়ে ওঠে। অরুণের জন্য ওঁরা ভেবেছিলেন কুতুবউদ্দিন কোকা-র চরিত্র। তবে চরিত্রে ফাইন্যাল করার আগে যাত্রার পরিচালক অরুণকুমারকে টেষ্ট করে নিতে লাগলেন – একটা অন্য কোন যাত্রাপালা থেকে বড় ডায়লগ তাঁকে পড়তে দিলেন, আরো বললেন অভিনয় করে দেখাতে। ... ...
মনে পড়ে ... ...
সেদিন নৈহাটি থেকে বেশ দেরী করেই আনন্দবাজারের অফিসে ঢুকলেন সমরেশ বসু। দেশ পত্রিকার সেকশনে ঢুকতেই সাগরময় ঘোষের সাথে দেখা। সাগরবাবু মাত্র কিছু দিন আগেই দেশ-এর সাব-এডিটরের দায়িত্ব থেকে প্রধান সম্পাদক হয়েছেন। তবে সাব-এডিটর থাকা কালীনও দেশ-র বেশীর ভাগ সিদ্ধান্তের পিছনে সাগরবাবুই ছিলেন শেষ কথা। সমরেশ বাসুর সাথেও তাঁর চেনা শুনে বহু বছর ধরেই – আজ পুরী, কাল কুম্ভ মেলা, পরশু কেঁদুলি – এই সব জায়গায় সমরেশ বাবুকে ঠেলেঠুলে তিনিই পাঠাতেন লেখা বের করার তাগিদে। ... ...
১৯৯৩ সালের কথা - জ্যোতিবাবু যাচ্ছেন কিউবা, প্রথমে যাবেন কিউবার রাজধানী হাভানা, সেখানে ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে দেখা সাক্ষাত করে তারপর কিউবা একটু ঘুরে দেখবেন। সিপিআইএম পার্টি থেকে জ্যোতিবাবুর সঙ্গী হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরী। যাওয়ার কয়েকদিন আগে জ্যোতিবাবু ফোন লাগালেন ইয়েচুরী-কে। - সীতা, তা তুমি কি নিয়ে যাবে ভাবছো কাস্ত্রো-র জন্য? এত দূর থেকে যাচ্ছি, খালি হাতে তো আর যাওয়া যায় না! - জ্যোতিদা আমি তো এখনো তেমন ডিটেলস কিছু ভাবিনি! তা আপনি কি নিয়ে যাচ্ছেন? জ্যোতিবাবু ফোনের এদিকে তাঁর সেই বিখ্যাত না ফুটে বেরুনো হাসিটা হেসে নিলেন – কারণ তিনি জানেন যে এই ব্যাপারে তিনি এগিয়ে আছেন ইয়েচুরীর থেকে। তাঁর ভাবার তত কিছু নেই – কারণ কুড়ি বছর আগে কাস্ত্রো কলকাতা এলে বোঝাই গিয়েছিল তিনি কি জিনিস ভালোবাসেন। তাই জ্যোতি বসু বললেন - - আমার দিক থেকে তেমন ভাবার কিছু নেই, ও সব ঠিক আছে। - একটু খুলেই বলুন না। - অত কথা এখন ফোনে বলার সময় নেই, এয়ারপোর্টে দেখা হলে বলব সেই গল্প না হয়। - ঠিক আছে, তাহলে আমি ভেবে দেখি কি নেওয়া যায় - বেশী দামী জিনিস নিও না যেন! একটা কথা মনে রেখো সীতা, আমরা কমিউনিষ্ট পার্টি – দামী জিনিস আমাদের ইমেজের সাথে যাবে না ... ...
কলমকে স্বাধীনতা দিলে তা মগজের নির্দেশ মানতে চায়না ... ...
আজকে শিক্ষক দিবসে ... ...
ছোট করে চুল কাটলে আমাকে একদমই বাঙালী বলে চেনা যায় না সেটা আবার আজ টের পেলাম। আর এমনিতে আমাকে দেখে ঠিক কি মনে হয় সেটারও রিমাইন্ডার এসে গেল আজ আমাদের হাউসিং কমপ্লেক্সে ওনম উপলক্ষ্যে মেলা টাইপের বসেছে - নানা ধরণের নারকেল তেল বিক্রী হচ্ছে খুব। কি খাওয়া সেফ হবে সেই ভাবতে ভাবতে দেখতে পেলাম এক দোকানে লস্যি পাওয়া যাচ্ছে। একবোতল ম্যাঙ্গো আর একবোতল স্ট্রবেরী কিনে বগলদাবা করে ফিরছিলাম, সেই দোকানী ভালোবেসে কাগজের ঠোঙায় প্যাক করে দিল সেই প্যাকিং নিয়ে আমি লিফটে ঢুকে দেখি এক দম্পতি। লোকটি আমাকে আপাদমস্তক দেখে হিন্দীতে বলল - - অ্যাই সুইগি ভাই, তুমি এই লিফটে কেন? ভেন্ডরদের জন্য যে লিফট আছে সেটায় যাও নি কেন? - আমি তো সুইগি নয়! - তাহলে জ্যমেটো হবে! তোমাদের তো কোম্পানী লেখা টিশার্ট থাকে। সেটা পর নি কেন? ... ...
হাঁটতে হাঁটতে তিনি পোঁছে গেলেন সেই জায়গাটায় এখন যেখানে গেলে গঙ্গার উলটোদিকে মেটিয়াবুরুজের ফেরিঘাট দেখা যাবে। আর বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে তখন এই পাশের পুরো জায়গাটা জুড়ে চাষ হত গাঁজার। হাঁটতে হাঁটতে জগদীশ বসু ভাবতেও পারেন নি সেদিনের থেকে প্রায় ১২০ বছর পরে এই বোটানিক্যাল গার্ডেন তাঁর নামেই নামাঙ্কিত হবে। আগেকার দিনের শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন এখন পরিচিত “আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন”। ভারতের সবচেয়ে বড় বোটানিক্যাল গার্ডেনের নাম ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত বোটানিষ্টের নামে হবে সে আর আশ্চর্য কি! তবে হালকা আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে বোটানিক্যাল গার্ডেনে জগদীশ বসু-র প্রথম পদার্পণ কোন স্পেশাল গাছ গাছালি দেখতে নয় – গাঁজার চাষ দেখতে! গাঁজার চাষ এবং গাঁজা গাছের ব্যাপারে আলোচনার জন্যই কিউরেটর ডেভিড প্রেইন ডেকে পাঠিয়েছিলেন জগদীশ বোস-কে। একদম সরাসরি তাঁর অফিসে চলে যেতে বলেছিলেন, কিন্তু জগদীশ বোস ভাবলেন আলোচনায় ঢোকার আগে নিজের মত করে গাঁজা গাছগুলিকে দেখে নেওয়া যাক! ... ...
১৪ই জানুয়ারি যখন ডাক্তারবাবু মায়ের ব্যপারে আমাদের বলে দিলেন “ইট ইজ নাউ ম্যাটার অফ টাইম”... তারপর মোবাইলের পাতায় এগুলো লেখা হয়েছিল। এর সম্পাদনা হওয়ার নয়। ... ...
আমরা যখন ভারতের কোন রাজ্যে কত ধান চাষ হয় আর কোন অঞ্চলে কোন আকরিক পাওয়া যায় তাই মুখস্থ করছি, তখন সিলেটি কাকু ঠোঙা ভর্তি মুড়ি আর আলুর চপ নিয়ে মাটিতে আয়েশ করে বসে বলতেন - বল তো রবিন হুড কোন জঙ্গলে ডেরা বেঁধেছিলো? আমাদের যখন মুঘল সাম্রাজ্য পতনের সতেরোটি কারণ গলাধঃকরণ করতে গিয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত তখন কাকু কানে কানে ফিস ফিস করে বলতেন রামায়ণের বিভীষণ কিন্তু অমর ছিল, মনে আছে তো? বিভীষণ এখন বি বি সেন নামে পরিচয় দেয়, বৌবাজারের ওদিকে থাকে। বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর ফোকাস করার জন্য বড়োরা যখন গম্ভীর উচ্চস্বরে বলতেন - "না না ওসব ভূত টুত সব বাজে কথা ভূত বলে কিছু নেই" তখন সিলেটি কাকু গলা নামিয়ে বলতেন - কে বলে ভূত নেই? আলবাত ভূত আছে। এই তো আমার বাড়ির পাশের কবরখানার ভূত মেরি তো রোজ আমার সাথে কথা বলে.... আর জানো না ভুলভুলাইয়ার গোলক ধাঁধা থেকে কে বার করে নিয়ে এসেছিলো হাসিনা খাতুন আর ক্যাপ্টেন আওকে? হাসিনা খাতুন আর ক্যাপ্টেন আও কারা কাকু?" "ক্যাপ্টেন আও একজন নাগা সৈনিক আর হাসিনা খাতুন ট্রেনে ট্রেনে গান গায় ... ... ...
পরচর্চার আনন্দ, উত্তেজনা অনস্বীকার্য। তবু চতুর্দিকে ধর্ম, রাজনীতি, দূর্নীতি, হিংসা, যুদ্ধের কলুষতায় আতুর মনের টুকুন মোলায়েম পরিচর্যা হয় - আমার ক্ষেত্রে - মেদুর পরীচর্চায়। তেমন কিছু এনিগম্যাটিক পরী, দক্ষ সাহিত্যিকদের কলম বেয়ে এসেছে আমার মনের আঙিনায় - দিয়েছে সবিশেষ আনন্দ। অণিমা (যাও পাখি), মণিদীপা (মানবজমিন), মনীষা (স্বপ্ন লজ্জাহীন), মার্গারিট (ছবির দেশে কবিতার দেশে), মারিয়ানা (কোয়েলের কাছে), ছুটি (একটু উষ্ণতার জন্য), কিশা (বাংরিপোসির দু’রাত্তির), ঋতা (সবিনয় নিবেদন), সুজান (পুত্র পিতাকে), রেণু (এই, আমি রেণু) … এমন আরো অ-নে-কে। তবে শুধু শব্দের ডানায় ভর করা পরী নয়। অতীতে কিছু বাস্তব পরীর সাহচর্যেও পেয়েছি অমল আনন্দ। এখন আর পরীসান্নিধ্যের সম্ভাবনা নেই। তাই নানা মিষ্টি স্মৃতির জাবর কাটি অবসরে। দুঃসময়ে অনেকে পথে নেমে প্রতিবাদ করেন। অনেকে কোনো ফোরামে করেন পরিস্থিতির সুচিন্তিত বিশ্লেষণ। দেন সম্ভাব্য সমাধান। আমি পড়ে সমৃদ্ধ হই। আত্মকেন্দ্রিক, ভীতু, ক্ষীণ বোধবুদ্ধির মানুষ আমি। তাই পৃথিবীর দুর্দশায় মন ভারাক্রান্ত হলে মাঝেমধ্যে গৃহকোনে একান্তে বসে YTতে ভর করে ভার্চুয়ালি চলে যাই দুর দেশ ভ্রমণে প্রকৃতির মাঝে। বা পড়ি পছন্দের কোনো বই বা দেখি কোনো সিনেমা। তখন বইয়ের বা সিনেমার কোনো পরী তাদের নারীত্বের সুষমায় আমার বিক্ষুব্ধ চিত্তে শান্তির চামর বোলায়। সাময়িক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই বাস্তব থেকে। তাই আমি পরীদের কাছে কৃতজ্ঞ। পরীহীন পৃথিবী পলায়নবাদীর কাছে অকল্পনীয় অভিশাপ। ... ...
হোটেলের রেষ্টুরান্টের বোরিং মাপাজোপা খাবার খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে এই ভাবেই একদিন ধর্মতলার ছোলে-বাটোরা-র প্রেমে পড়ে গেল রাসেল। হয়েছে কি একদিন বিকেলে প্র্যাক্টিস থেকে ফিরে হোটেলের বাইরে একটু ঘুরতে বেরিয়েছে, একটা দোকানে দেখে লোকজন বিশাল ফুলো ফুলো বান্-এর মতন কি খাচ্ছে! ইন্টারেষ্ট লেগে গেল রাসেলের – জয় মা বলে ঢুকে পড়ল দোকানে, আঙুল দিয়ে দেখালো যে ওই খাবার তার চাই। দোকানে যে ক্যাশে বসেছিল সে অনেক কষ্টে ভাঙা ভাঙা ইংরাজীতে জানালো যে ওই খাবারের নাম “ছোলে-বাটোরে”। ব্যাস, সেই খাবার খেয়ে রাসেল ফিদা! নামটা মুখস্ত করে নিল কয়েকবার আউড়ে নিজের মনে মনেই। ... ...
ফিল নাইট আর বিল বাওয়ারম্যান ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্টা করেন “ব্লু রিবন স্পোর্টস”। একবার ভেবে দেখেছেন এত কিছু থাকতে ‘রিবন’ কথাটা তাঁদের কোম্পানীর নামে ঢুকল কেন? মনে পড়ছে উনাদের কাছে করা ধীরুভাইয়ের সেই লাল-ফিতের চক্করে বিজনেসের লাইসেন্স পড়ে থাকার কথা? প্রায় সাত বছর “ব্লু রিবন স্পোর্টস” নাম নিয়ে কোম্পানী চলার পর, বিল আর ফিল ঠিক করলেন মার্কেটিং এর জন্য নাম চেঞ্জ করে এমন এক নাম রাখবেন যে তা সবাই সহজে উচ্চারণ করতে পারে। ভাবতে বসলেন তাঁরা – মনে এসে গেল সেই ধনেখালির দিন গুলির কথা যেখান থেকে তাঁদের সত্যিকারের টেক্সটাইল প্রীতির শুরু। মনে এল সেই অমিমাংসিত রহস্যের শব্দবন্ধের কথা ‘নাকি’! ততদিনে ‘নাকি’ টা ঠিক উচ্চারণ করতে পারলেন না – সেই ‘নাকি’ থেকেই এল নাম ‘নাইকি’-র! বাকিটা ইতিহাসটা আপনারা সকলেই জানেন – ... ...