কোনো ছবি থেকে, যদি তা সত্য ও শিল্পনিষ্ঠ হয়, সেই দেশের সমাজবাস্তবতার একটা আন্দাজ পাওয়া অসম্ভব নয়। এবার দেশটি যদি হয় চীন, আমাদের আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। যদি কোনো ছবি সেই লক্ষ্যপূরণ করে, আমাদের সে ব্যাপারে অবহিত করে তবে তা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে। সম্প্রতি আধুনিক চীনের তিনটি ছবি দেখলেও একটি ছবিকে ফোকাল পয়েন্টে রেখে এই আলোচনা। ... ...
ফচকেমির গল্প... ... ...
ভালবাসি, ভালবাসি! সবাই এই মুহূর্তে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে বিদেশকে। আর সবার ভালোবাসা-ভরা কথা নিষিক্ত করে চলেছে বিদেশকে। খুবই ভাল, ভাল সব কথা। শুনতে শুনতে বিদেশের নিজেরই নিজেকে কেমন অজানা অচেনা মনে হচ্ছে। বাব্বা এত গুণ তার ছিল তাই তো জানত না সে! ... ... ...
“…এখন আমি একটা পাহাড় কিনতে চাই।সেই পাহাড়ের পায়ের কাছে থাকবে গহন অরণ্য,আমি সেই অরণ্য পার হয়ে যাবো,তারপর শুধু রুক্ষ কঠিন পাহাড়।একেবারে চূড়ায়, মাথার খুব কাছে আকাশের নিচে বিপুলা পৃথিবী, চরাচরে তীব্র নির্জনতা।…”– সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়নাহ, পাহাড় কিনতে চাই না বটে, তবে বাকিটুকু খাপে খাপ। পাহাড়ী পথে পায়ে হেঁটে মাইলের পর মাইল চলে যাওয়া, দুপাশে সবুজ অথবা ধূসর চড়াই-উৎরাই, খাদের গহীনতা অথবা আকাশ ফুঁড়ে উঠে যাওয়া বরফে ঢাকা শৃঙ্গ – সেসব অবশ্য-ই চাই, এবং অতি অবশ্যই নির্জনতা, নৈঃশব্দ্য! তা এতদিন ছোটোখাটো কিছু হাঁটার অভিজ্ঞতা ছিল বটে, তবে সে’সব বড়জোর এক বা দু’দিনের খেল। দেশে ফেরার পর থেকে পায়ে হেঁটে ভ্রমণের ব্যাপারটা মাথায় ... ...
প্রথমে কিছু গগনবিদারি শ্লোগানে গা গরম করে নিয়ে মাইকটা এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ল জনপ্রিয় সুরে দল ও নেতার বন্দনাগীতিতে। ইতিমধ্যেই নেতাকর্মীদের ভীড়ে জায়গাটা ভরে গেছে। ওদিকে আরো কিছু মানুষ তাদের জন্য বরাদ্দ কোণাটিতে দাঁড়িয়ে গেছে; অবশ্য নিরাপত্তারক্ষীদের হুংকারে তাদের মাঝেমধ্যে কষ্টকর দিকবদল করতে হচ্ছে! সভার প্রবেশদ্বারটা প্রশস্ত হওয়ায় কোণাগুলি একটু বেশিই বেঁকে গেছে, না হলে সামান্য লম্ফ-ঝম্ফ - এ আর কী এমন কঠিন কাজ! ... ...
গরমের ছুটিটা বেশ মজা করে জাঁকিয়ে কাটানো যাবে ভেবে মনটা চাঙ্গা হয়ে উঠেছিলো সকাল থেকে। তার আগে বাবার হাত ধরে বাজার করতে যাওয়া। কিন্তু একি গঙ্গার ধারে এই বিশাল প্যান্ডেল...কি হবে এখানে? কেউ একজন সাইকেলে চড়ে যেতে যেতে বলে গেল “মাষ্টারমশাই...বালীতে ফিল্ম উতসব হচ্ছে গো...”। “ফিল্ম উৎসব কি বাবা?”“যেখানে অনেক ভালো ছবি একসঙ্গে দেখানো হয়...ছবি নিয়ে সবাই আলোচনা করেন...মশগুল হয়ে থাকেন কয়েকটা দিন”।“আমরা মুশগুল হব না?”বাবা হাসেন, কোনো জবাব দেন না। আমরা এগিয়ে যাই প্যান্ডেলের দিকে। অনেক পোষ্ ... ...
একশো আশি ডিগ্রী জুড়ে, অনেকটা নিচে, বরফ। রাস্তা দিয়ে মেঘের মত তুষারের ঢেউ, তার ওঠাপড়া। সমস্ত রাত, শহর, শিশুরাও ঘুমন্ত। ফুল ফুটছে, কোথাও না কোথাও। হাওয়ায় কান পাতলে শোনা যায়, দূরের কথা। গরম কেটে একটু শিরশিরে হাওয়ায় শুকনো পাতা ওড়ে। অন্ধকারে কীটের সংসার লেপ্টে মাটিতে মিশে যায় পায়ে পায়ে। সেই সারে যদিও গাছ হবে। সেই গাছ কেটে জ্বালানী। বছরকার দিনে একটা অনুষ্ঠান, কটি লোক। সামান্য মাছভাত, দই। মাটির ভাঁড়ে জল।চওড়া রাস্তা, পিচঢালা। ক্রমশ সরু হতে হতে একসময়, দেওয়ালের ধারে শেষ। সবুজ সতেজ ঘাস, ফুলসমেত। ... ...
ফোনটা হঠাৎ জলে পড়ল। তারপর কীসব কাণ্ড হল! ... ...
কৃষিকাজের জন্য হেবার-পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া উৎপাদন আজ একটি বিশাল শিল্প। প্রতিটি মানুষের দেহে যে নাইট্রোজেন, তার সবচেয়ে বড় অংশটাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত হয়। এটা খুবই সম্ভব যে, আমি এবং আমার মতো অধিকাংশ মানুষই জন্মাতই না, যদি না ফ্রিটজ হাবের, হেবার প্রসেস আবিষ্কার করতেন। ... ...
আমি এবারে ভেঙে পড়লাম। সেই কেজি ওয়ান থেকে অপেক্ষা করছি। ভেবেছিলাম ইন্দিরা গান্ধী চিঠি দেবে ওভারটাইমের জন্য। সে হেরে গেছে। আমি তাহলে দেশের দরকারে লাগব কী করে? চোখে জল চলে এল আমার। মা একটু সময় নিয়ে ব্যাপারটা বুঝল, আমার সমস্যাটা কী? তারপরে বলল, - তুমি ভুল বুঝে কষ্ট পাচ্ছ। দেশ ঐভাবে চিঠি দেয়না। দেশ কি চায়, সেটা বইতে লেখা থাকে। আর খেলতে গেলে হারজিত হবেই। কখনো মোহনবাগান জিতবে, কখনো ইস্টবেঙ্গল। এতে দুঃখের কিছু নেই। আমি কান্না ভেজা গলায় বললাম, - তা সে কোন বইতে দেশের দরকার লেখা থাকে, সেটা কি তোমার কাছে আছে? আমি পড়তাম তবে। ... ...
ইদানিং এমনকি জগদ্ধাত্রী পুজোর প্যান্ডেলেও ‘মায়ের পায়ে জবা হয়ে ওঠ না ফুটে মন’ বেজে চলতে দেখেছি --- একেবারে কালী প্রতিমা কেন্দ্রিক গান দিব্যি চালানো হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পুজোয়, আসলে যিনি নাকি মা দুর্গারই একটা রূপ ! কী চূড়ান্ত গুরুচণ্ডালী ব্যাপারস্যাপার বলুন দেখি? ... ...
১এক বৃষ্টির দিনে উল্কাপটাশ বাড়ির পাশের নালা দিয়ে একটি সজারুছানাকে ধেইধেই করে সাঁতার কেটে যেতে দেখেছিল। দেখামাত্রই তার মনে স্বজাতিপ্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্ববোধ দারুণভাবে জেগে উঠল এবং সে ছানাটিকে খপ করে তুলে টপ করে নিজের ইস্কুল ব্যাগের মধ্যে পুরে ফেলল। এটিকে সে পুষবে। ব্যাগের মধ্যে সজারুছানাটি কিচকিচ করছিল আর উল্কাপটাশের পিঠে ক্রমাগত চিমটি কেটে যাচ্ছিল। বাড়ির মধ্যে ঢুকে, ঠিক কোন জায়গায় জানোয়ারটিকে রাখা যায় স্থির করতে না পেরে প্রাথমিকভাবে বৈঠকখানার একটা চেয়ারের উপর তাকে নামিয়ে রাখল। জলে ভিজে সু ... ...
আমার জীবনে দেখা একটা ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার হলো প্রত্যয়। খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারে সে। আর সবসময়ই হাসছে। কেউ খারাপ কথা বললেও হাসছে,ভালো কথা বললেও হাসছে। পরিবার নিয়ে আমাকে দেখতে এসেছিলো প্রত্যয়। সেখানেই আমাদের প্রথম আলাপ। কথাবার্তা প্রায় পাকা হয়ে যাওয়ার পর আমি ওকে বললাম, আমার এরকম বিয়ে পছন্দ না। সে হাসতে হাসতে বললো, তাহলে কিরকম বিয়ে পছন্দ? গ্রান্ড ওয়েডিং? নায়ক-নায়িকাদের মতো? আমি না সূচক মাথা নেড়ে চুপ করে বসে রইলাম। তার কয়দিনের মধ্যেই যখন ... ...
“দই কচুরি, দই কচুরি”, শুনেই কেমন রক্ত নাচে,রক্ত নাচে ধিতাং ধিতাং, বেলপাহাড়ির ঝুমুর ধাঁচে!ঝুমুর ধাঁচে প্রাণটা লাফায়, মন চলে যায় বেলঘোরিয়া,বেলঘোরিয়া গিয়েই সে মন আপন তালে দিলদরিয়া!দিলদরিয়া, উদার চেতন, ইচ্ছে করে দিই বিলিয়ে,দিই বিলিয়ে দই কচুরি, হিসেব কষে, ছক মিলিয়ে।ছক মিলিয়ে মন ভরে যায় অঙ্ক কষার উন্মাদনায়,উন্মাদনায় দুলতে থাকি জীবনমুখি ধ্যান ধারনায়।ধ্যান ধারণায় হঠাৎ বাধা – কোথায় যেন চুন খসে যায়,চুন খসে যায়, পানটা নিরস, পানসে, জোলো, মন ধসে যায়। ... ...
হাজংদের ‘প্যাঁক খেলার’ মতো কক্সবাজার-পটুয়াখালির রাখাইনদের রয়েছে আরেক ঐতিহ্যবাহী পানি-খেলা উৎসব-- সাংগ্রেং। পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমারাও পানি খেলার আয়োজন করেন, তারা একে বলেন-- সাংগ্রেই পোয়ে। সেটি অবশ্য বর্ষ বিদায় ও বর্ষ বরণের ভিন্ন এক উৎসব। আর বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলে বসবাসকারী গারো বা মান্দি জাতিগোষ্ঠীর রয়েছে বীজ বপনের উৎসব ‘রঞ্চুগালা’ ও নবান্ন উৎসব ‘ওয়ানগালা’। আর চাকমাদের বর্ষ বরণ ও বর্ষ বিদায় উৎসবের নাম ‘বিঝু’। ত্রিপুরারা তাদের চৈত্র সংক্রান্তির উৎসবকে বলেন ‘বৈসুক’। সাঁওতাল আদিবাসীর রয়েছে নবান্ন উৎসব ‘সোহরাই বাহা’ ও বৃক্ষ বন্দনা ‘কারাম’ উৎসবের ঐতিহ্য। ... ...
১৯১৯ এর ৩১ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের গুজরানওয়ালাতে (হ্যাঁ, এই জায়গাটি ইদানিং বিলেতের অধুনা বিখ্যাত 'ভারতীয়' প্রধানের পূর্বপুরুষের ভিটের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছে) জন্মেছিলেন অমৃতা। চলে গিয়েছিলেন আরেক ৩১ এ, ২০০৫ এ। ঠিক গত পরশু দিনই। ৯৬ বছরের ইমরোজ আজও জীবিত। দিল্লিতে সেই ছোট্ট ফ্ল্যাটের পরিসরে, একান্ত নিজস্ব এক অমৃতাকে ঘিরে বাঁচেন তিনি। কবি -লেখিকা - নারীবাদী আইকন অমৃতা হিসেবে পাঠক-ভক্তের মধ্যে অনির্বাণ রইলেও ইমরোজের সমগ্রতায়, ইমরোজের ফ্ল্যাটের অসংখ্য ছবিতে রয়ে যাওয়া অমৃতা আসলে ছিলেন এক প্রাণবতী ঝর্ণা। যে নির্ঝরের সকল অভিমুখে উপলসম বুক পেতে অনিঃশেষ প্রেম নিয়ে ৭টি দশক ধরে অবিচল হয়ে আছেন ইমরোজ, আজও রোজ…। ... ...
মূল লেখাটি এনডিটিভি ইন্ডিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ এডিটর শ্রী রবিশ কুমারের, এনডিটিভি সাইটে একুশে ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত। রবিশজির অনুমতিক্রমে তার বঙ্গানুবাদটা এখানে দিলাম সকলের পড়ার জন্য। কটা বাজছিল, আমার মনে নেই। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মিছিল থেকে আমি ফিরে এসেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কত টাইমজোন, কত দেশ-দেশান্তরের ঘুম আমার চোখে এসে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। নিচে একটা চেঁচামেচির শব্দ শুনে আমার ঘুম ভাঙল। ঘুমচোখে শব্দগুলো শুনে মনে হচ্ছিল, সেগুলোও যেন অন্য কোনও ... ...
এইমাত্র এক বাল্যবন্ধুকে দেখলাম, আরেক পরিচিতের পোস্টে গিয়ে কমেন্ট করতে, যে, গুরু(চণ্ডা৯) 'ছুপা' তৃণমূল, অনেকদিন ধরেই। তার নীচে আবার একজন গম্ভীর সমর্থন জানিয়ে লিখেছে, গুরুতে নাকি সব তৃণমূল আইটি সেলের লোফার, আর ওখানে নাকি ডিএ-আন্দোলনকারীদের খুব গালি দেওয়া হয়... ... ...
আগের পর্ব ঃ পর্ব - ১ নভেম্বরের ৪ তারিখ শুক্রবার, রাত ১১ টার পরে ট্রেন, পদাতিক এক্সপ্রেস, শিয়ালদা থেকে। সুতরাং পুরোদমে দিনভ’র আপিস করে, ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাতের খাওয়া সেরে স্টেশন, বলাই ছিল সবাইকে ন’নম্বর প্ল্যাটফর্মেই সবাই মিলিত হব, সেই মত দেখা সাক্ষাৎ হল। ট্রেনে উঠে গুছিয়ে বসতে না বসতেই ট্রেন ছাড়ল একেবারে ঘড়ি ধরে। যাত্রা শুরু! ভোরবেলা ঘুম ভাঙতেই জানলার বাইরে তাকিয়ে প্রথম যেটা মনে হল, আকাশ আশ্চর্য রকম পরিষ্কার। হয়ত কলকাতার ঘোলাটে আকাশ দিন-রাত দেখেই এই অবস্থা। তখন-ও জানি না আমাদের জন্যে কি অপেক্ষা করে আছে! কিষাণগঞ্জ থেকে ট্রেন একটু ঢিমেতালেই চলছিল। রাঙাপানি পার হতেই দূর থেকে পাহাড়ের সারি চোখে পড়ছিল। হঠাৎ মনে ... ...