টেস্টামেন্ট অফ বা - ডুনহুয়াং-এর সতেরো নম্বর গুহা -- সকাল থেকেই আকাশের মুখ কালো হয়েছিল। সজল মেঘের ছায়ায় ঢাকা পড়েছিল গোটা শহর। লকডাউনের নিয়ম শিথিল হয়ে আসায় পথে মানুষজনের আনাগোনা বেড়েছে। দু-চারটি দোকান-পাট আবার নতুন করে জেগে উঠেছে শীতের বরফ গলে যাওয়ার পর মাথা তোলা লাইকেনের দলের মত। নতুন আশার আলো নতুন করে সবুজের স্পর্শ দিয়ে যাচ্ছে তাদের গায়ে। এই কয়মাসের অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আবার নবীন সূর্যের মুখ দেখার প্রত্যাশী এখন এই পথের পাশের ছোট ছোট দোকানগুলো। ... ...
ব্রিটিশরা যখন ভারত ছেড়ে চলে যাবে এই ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে গেল, তখন দুটো প্রধান সমস্যা এসে দাঁড়ালো আমাদের স্বাধীনতার সামনে। একটি অবশ্যই দেশ ভাগ সংক্রান্ত। বহু আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক, বহু রক্তাক্ত হিংসা দাঙ্গার পর্ব পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল দেশভাগ হচ্ছেই। অবিভক্ত ভারত - ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় যে সমস্যাটি দেখা গেল সেটি হলো দেশীয় রাজ্যগুলির ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা ... ...
আচার্য শান্তরক্ষিত। স্রোংচান গামপোর পরবর্তী একশো বছরে বৌদ্ধ ধর্ম আবার হারিয়ে যেতে বসেছিল তিব্বতের বুক থেকে। রাজা ত্রিসোং দেচেন আমন্ত্রণ জানালেন নালন্দার অধ্যক্ষ আচার্য শান্তরক্ষিতকে। উদ্দেশ্য বৌদ্ধ ধর্মকে রাজপ্রাসাদের বাইরে তিব্বতের সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। ... ...
আপনি নিজে একা বা ফ্যামিলি নিয়ে বেড়াতে গিয়ে যখন কোন হোটেলে ওঠেন, তখন কোনদিন সেই হোটেলের ‘ফায়ার-এসকেপ’ ব্যবস্থা নিয়ে ভেবেছেন? মানে ধরুণ আপনি সেই হোটেলের পাঁচতলায় আছেন, হঠাৎ রাতের বেলা আগুন লেগে গেল কোন কারণে! কি করবেন আপনি? এটা আমরা সবাই জানি যে আগুন লাগলে লিফট ব্যবহার করা উচিত নয় (আর এমনিতেই আগুন লাগলে লিফট অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবার কথা) – তাহলে আপনি কিভাবে নামবেন নীচে? বেশী সময় নেই কিন্তু আপনার হাতে – আগে থেকে দেখে রেখেছেন কি সিঁড়িটা কোন দিকে যাতে বিপদের সময় আপনাকে খুঁজতে না হয়! ... ...
খালিশপুরে হাউজিং বাজারের বিহারী পট্টির এক চিমসার মধ্যে সে সাইন্দা থাকে! চায়ের কাঁপে চুমুক দেয় আর চিনচিন করে বিড়িতে টান মারে! ফলে আমরা রত্ন আবিষ্কারের মতন ঝকমকি উল্লাসে উজ্জ্বল হয়ে যাই তারে নজরে পেয়ে! আমরা নাড়াই তারে! আমরা জিজ্ঞাস করি, কাকা দেশের অবস্থা দেখছেন? করোনার মধ্যে সারা দেশে কি টাল্টুবাল্টু কারবার? ... ...
সম্রাটের পদে আসীন হয়ে ঠিস্রোং দেচেনের প্রধান কাজ হল দেশের আমজনতার মধ্যে বৌদ্ধ-ধর্মের প্রসার। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয় আর এক... ... ...
চোতমারানির পোলারা চুদতেও পারে না। আক্রোশটা খিস্তিখেউড়ে পরিণত হয়ে ঝনঝন করে ভেঙে পড়ছিল। ঘটনাটার ফলাফল তখন সবেমাত্র সে টের পায়। তলপেট থেকে যখন টক জলের ঘূর্ণি গা কাঁপিয়ে বাইরে এসে পড়ে। কলতলায় যাবার সু্যোগ দেয় না। দরজার বাইরে বসে সে হাঁপায় আর শরীরের সমস্ত শক্তি একাট্টা করে গালি দেয়। ... ...
রাম মন্দির আর বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত মামলায় অযোধ্যার নাম সারা ভারতবর্ষ জানে। এমনকি ভারত ছাড়িয়ে পৃথিবীতেও খ্যাতি হোক বা কুখ্যাতি হোক ছড়িয়ে পড়েছে। এখন যে অযোধ্যার কথা বলব সে এক অন্য অযোধ্যার কথা। সেই অযোধ্যার নাম ছিল তখন আওধ। হ্যাঁ এই সেই ওয়াজেদ আলি শাহ'র আওধ। যে ওয়াজেদ আলি শাহ্ কে মেটিয়াবুরুজে নির্বাসন দিয়েছিল ব্রিটিশরা। আওধের রাজ্য জোর করে কেড়ে নিয়ে ওয়াজেদ আলি শাহ্ কে বার্ষিক পেনশনের বিনিময়ে মেটিয়াবুরুজে নির্বাসিত থাকতে বাধ্য করেছিল। কোম্পানির রাজ্য দখলের খাই তখন এমন বেড়ে গেছিল, চোখের সামনে যে দে ... ...
ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি আমাদের দেশ নাকি স্বাধীন,গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র । তা বড় হবার সময়ে এই সব শব্দ গুলির অর্থ ই কেমন যেন গুলিয়ে যেতে লাগল। কেউ শেখালেন ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়, তো অন্য কেউ বোঝালেন,এর চেয়ে ইংরেজরা নাকি ঢের ভালো ছিল! স্বাধীনতা ধুয়ে কি জল খাব, ইত্যাদি। ... ...
বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর সময়কাল ধরে ‘ফান্ডামেন্টালিজম’ বা ‘মৌলবাদ’ সারা পৃথিবী জুড়ে এমনই এক ‘ফেনোমেনন’ হয়ে দেখা দিয়েছে, কোনও চিন্তাশীল মানুষই যাকে আর উপেক্ষা করতে পারেন না। ইউরোপে রেনেসাঁ, বৈজ্ঞানিক বিপ্লব, এনলাইটেনমেন্ট, শিল্প বিপ্লব এইসব ঘটে যাবার পর থেকে আলোকপ্রাপ্তদের মনে ক্রমশ এই ধারণাটাই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছিল যে, জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি অর্থনীতি এইসবের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ধর্মের প্রভাব আস্তে আস্তে কমে আসবে, এবং এক সময়ে হয়ত তা পুরোপুরিই অবলুপ্ত হয়ে যাবে। সমাজতন্ত্রের ধ্যানধারণার প্রচার ও প্রসারের ফলে এ প্রত্যাশা আরও অনেক জোরালো হয়েছিল, শেষতক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক বা না-ই হোক। সেদিক থেকে দেখলে, বিশ শতকের শেষে ধর্মের রমরমা বেড়ে ওঠা এবং মৌলবাদের উত্থান প্রায় এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার। এখন, বিষয়টি নিয়ে চর্চা করতে হবে, গভীরভাবে ভাবতে হবে যুক্তি সহকারে, এবং পৌঁছতে হবে কোনও এক বুদ্ধিগ্রাহ্য উপলব্ধিতে। বোঝার চেষ্টা করতে হবে, সমকালীন সমাজবিজ্ঞান এ নিয়ে কী ভাবছে। ... ...
শত ব্যস্ততা, নিত্যকর্ম, আর কর্পোরেট কার্টিসির ব্যুহ ভেদ করে বার বার মনের গহিনে গোপনে হানা দেয় পাহাড়ের গণহত্যা, গণধর্ষন, ত্রিপুরার শরণার্থী শিবির, কল্পনা চাকমা অপহরণ, মেশিন গানের গুলির ভেতর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মিছিল-- আরো অসংখ্য রক্তাক্ত অতীত স্মৃতি… কেউ জানে না সে এক গোপন হরর থ্রিলার যাত্রা, ব্যাং ব্যাং ক্লাবের একই কেভিন-যন্ত্রণা! আর ঘুমের ঘোরে এখনো ফিরে ফিরে আসে বাঘাইছড়ির সেই আশ্চর্য দেবশিশুর দল।... ... ...
সদ্য পরাজিত বাম বিধায়কের দলের প্রতি সমালোচনা সবটাই কি যথার্থ? ... ...
অধিগঠন/অধোগঠন বা সারফেস আর ডিপ স্ট্রাকচার(একটা জিনিস মনে রাখতে হবে। বিষয়টাই খুব জটিল। বুঝে গেলে অবশ্য মনে হবে, তেমন জটিল কিছু নয় তো! শুরুতেই তত্ত্বটা বলে নেওয়া হল। সেখান থেকে আমার জ্ঞানবুদ্ধি মত ব্যাখ্যায় যাবো। আর, যেহেতু মূল লেখার একটা অংশ অনুবাদ করে দেওয়া হল, একটু খটোমটো লাগতেই পারে। ফ্রেইরি পড়ে উপকৃত হবেনই পাঠক, কিন্তু তার জন্য একটু পরিশ্রম করতেও হবে। তাছাড়া, এইসব অপটু লেখা পড়েই সব বুঝে যাওয়া যাবে না … মূল লেখাগুলো পড়তেই হবে। ডায়ালোগ চাই। ‘অধিগঠন’ (‘surface structure’ ) আর ‘অধোগঠন ... ...
৩৬।একা থাকার অভ্যেসটা অনেক দিনের।ধীরে ধীরে, তিলে তিলে রপ্ত করা। অভ্যেসটা কবে থেকে রপ্ত করা শুরু করেছেন তা আর আজকে মনে পড়ে না। পাবনায় যাওয়ার পর থেকেই কি? না বোধহয়! কোলকাতার আলোক মালার বৃত্তের মাঝেই হয়ত শুরু হয়ে গেছিল এই একাকিত্বের যাত্রা; হয়ত সেটাকে চিহ্নিত করে উঠতে পারেননি তখন – এই যা! নাকি পেরেছিলেন ? শুধু নিজেকে ভুলিয়ে রাখার জন্য যেটুকু ব্যসন আসনের দরকার হয়, সে গুলির আড়ালটা ব্যবহার করেছিলেন মাত্র! আর তারো আগেকার, মানে কার্সিয়াঙের জীবনটাকে ধর্তব্যের মধ্যে আনা চলেনা। ঐ বালিকা বয়সে কেউ ... ...
অমৃতকুম্ভের সন্ধানে' ঝুমা সমাদ্দার ১"বিরিয়ানি ? সেটা কি বস্তু হে দেবরাজ ?" "আরে, 'পলান্ন' রে, 'পলান্ন', পুরনো বোতলে নতুন মদ ।"ইন্দ্রের রাজসভায় মেনকার প্রশ্ন শুনে শুরুতেই এক দাবড়ানিতে থামিয়ে দিলেন দেবাদিদেব মহাদেব । অমনি লাফিয়ে উঠেছেন নারদ ।"না না, প্রভু, বিরিয়ানি অতি উপাদেয়, একটি অতি অভাবনীয় স্বাদের খাদ্যবস্তু । "" হয়েছে রে বাপু, হয়েছে । ওই একই হলো । যাঁহা বাহান্ন, তাঁহাই তিপ্পান্ন । সেই মাংস মেশানো ভাতই তো ! "" তাই ... ...
ডায়রিটা পড়ে ছিল একটা স্পটলাইটের মধ্যে। মেঝের রঙ কালো। যদিও স্বপ্নে আসলে রঙ হয় না বলে লোকে। তবে বোঝা তো যায়। অথবা স্বপ্নের যে স্মৃতি তাতে তো অন্তত মনে হয় যে সবকিছুরই যেন রঙ ছিল একটা। এটা সেই স্বপ্নের স্মৃতির বিবরণ। ব্রতীশঙ্কর ভাবছিল ডায়রিটা সে এগিয়ে গিয়ে তুলবে কিনা। ওই তো, 'অংশুমানের ডায়রি', যা কিনা তার এত পছন্দের। ডায়রিটা তুলে নিয়ে খুললেই পড়ে ফেলা যাবে যা যা গল্পে ছিল না। অংশুমান কে, কি হয়েছিল তার শেষ অবধি; সবটাই জেনে ফেলা যাবে। হয়তো তার নিজের ভবিষ্যৎ পরিণতির সঙ্গে খানিক মিলও থাকবে সেটার। এইসব ভাবছিল ব্রতী। আর তখনই ... ...
সেখানে কামাল পাশার সঙ্গে আনোয়ার পাশার নামও উল্লেখ করেছেন। এই আনোয়ার পাশা কামাল পাশার আগে তুরস্ক জয় করতে গিয়ে হেরে গিয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারান, তাঁর সংগ্রামের রাস্তা কামাল পাশার থেকে আলাদা ছিল। তবু তিনি আনোয়ার এর নাম রেখেছিলেন তাঁর কারণ তিনি দেশের জন্য লড়াই করেছেন যে বীরেরা, তাঁদের বন্দনা করেছেন, শুধু জয়ীদের নয়। এ কথাও সত্যি কবিতাটি তিনি যখন লেখেন তখনও কামাল পাশা জয়ী হয়ে উঠতে পারেন নি। জয়লাভ করেছিলেন পরে। তিনি এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে শুধু জয়ীকেই বন্দনা নয়, সংগ্রামীকে বন্দনা করা হবে। সংগ্রামী মানেই সম্ভাবনা। ... ...