আজ সক্কাল সক্কাল উঠতে হয়েছে। টেলিফোন অফিস থেকে লোক আসবে। ভোরটা তরতাজা। কারণ উঠেই নিয়মমত হাফ গ্লাস সবুজ রসের সামনাসামনি হতে হল না আজ। না, রসতত্ত্বের নবীন কোন রস নয়, নির্ভেজাল করলার থকথকে নির্যাস, যা খেলে অন্তরাত্মাও খিঁচড়ে যায় সারাদিনের জন্য। সেটাই পান করি রোজ প্রাতঃকালে। ফলত, ক্লাসে যাই তেতো মুখে, লেকচার দিই তেতো স্বরে, নম্বর বসাই তিতকুটে। প্রেমের কথা যদি বলার হত, তবে বোধহয় তাও বলতাম তিক্ত সুরে। তবে রক্ষে এই যে, আমার এই আধবুড়ো বয়সে অত ঝুঁকি নিতে কেউ সাহস পায় না। ... ...
ইদানিং মাঝেমাঝেই দেখি সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যুশয্যায় শায়িত এক দাড়িওয়ালা বৃদ্ধ মানুষের ছবির নিচে লিখে দেওয়া হয় ‘উইলিয়াম রোদেনস্টাইন অঙ্কিত মৃত্যুশয্যায় রবীন্দ্রনাথের বিরল ছবি’। স্বভাবতই এ ছবি দেখে বাঙ্গালী আবেগের স্রোতে ভেসে পড়েন, হাজারে হাজারে ‘লাইক’ দেন আর শয়ে শয়ে শেয়ার করে একটি অদ্যন্ত ভুল তথ্যকে চক্রবৃদ্ধি হারে মহামারীর মত ছড়িয়ে দেন দেশে দেশে, দিশে দিশে। অথচ তাঁরা একবারও ভেবে দেখেন না কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন চিত্রকর রোদেনস্টাইন রয়েছেন ইংল্যান্ডে, কিভাবে তিনি এমন একটি ছবি আঁকতে পারেন? ... ...
দেবযানী ভট্টাচার্য লিখিত কলিকাতার কসবি কিস্সা বইটির আলোচনা। ... ...
কালী : একটি অনার্য অডিসি তব রূপং মহাকালো জগৎসংসারকারকঃ । মহাসংহারসময়ে কালঃ সর্ব্বং গ্রসিষ্যতি ।। ... ...
“…আমি পরিমান বা সংখ্যাকে প্রাধান্য দেই না। যেমন, বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসের সংখ্যা মাত্র কয়েকটা, কিন্তু সুনীল গাঙ্গুলীর প্রায় চারশ’। অথচ বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমবাবুকে কেউ অতিক্রম করতে পেরেছেন? লেখকের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে মেধাবী রচনা লেখা। লেখকের যদি লেখার প্রতি কমিটমেন্ট না থাকে”… বিশিষ্ট লেখক, চিন্তক আহমদ ছফা, নয়ের দশকের আলাপচারিতায় ... ...
আজকাল চারপাশে বেকড রসগোল্লা, বেকড সন্দেশ, চকোলেট মিষ্টি ইত্যাদি চোদ্দরকম হাবিজাবি দেখতে দেখতে মাঝে-মাঝে যখন বড় অবসন্ন লাগে তখন মনে পড়ে যায় লীলা মজুমদারের কথা। সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়ির রান্নাবান্না নিয়ে তাঁর মন্তব্য: "মন্দ জিনিস যে উপভোগ করে, তার চাইতেও শতগুনে অভাগা হল সেই মানুষ যে ভালো জিনিস উপভোগ করতে পারে না।" প্রাক-করোনাকালের অফিস-ফেরতা কোনও বিষণ্ণ বিকেলে হঠাতই তাই মনে পড়ে যায় আমার ঠাকুমার কথা। যাঁকে আমরা আদর করে ডাকতাম 'বাবুমা' বলে। অসাধারণ ছিল তাঁর নিরামিষ রান্নার হাত। আর দুধ, ছানা, ক্ষীর, সুজি, ময়দা, নারকেলের উপকরণে এমন সব খাবার-দাবার বানাতেন যার স্বাদ ছিল অমৃতসম। সে সবের নামও ছিল বাহারি। বাবুমা খোয়া ক্ষীর এবং ছানা দিয়ে এক স্বর্গীয় মিষ্টি বানাতেন যার নাম ছিল, 'ভাজা বরফি'। ... ...
আমার শৈশবের অনেকখানি আর কৈশোর ছিল ভারী একলামত| আমি যখন আট নয় বছরের মেয়ে, তখনই আমাকে প্রায় পূর্ণবয়স্ক মানুষ হিসেবে গণ্য করা হত| প্রায় বললাম, কারণ পূর্ণবয়স্ক মানুষের মত আমার মতামত গ্রাহ্য করা হত না, কিন্তু কাজকর্মে, আচার আচরণে পূর্ণবয়স্ক মানুষের মত ব্যবহার আশা করা হত| আমি বুঝতে শুরু করেছিলাম ভাইয়ের আগে জন্মানোয় আমাদের প্রাচুর্য্যের সময়ের পুরোটা, আট বছর ধরে আমি ভোগ করেছি, কিন্তু ভাই মাত্র দুই বছর ----- তাই এখন আর আমার কিছুই প্রাপ্য নয়| নয় বছর বয়সেই আমার পাড়ার মাঠে খেলাধুলো একদম বন্ধ ক ... ...
ভাবছিলাম এ বিষয়ে আদৌ কিছু লিখবো কিনা, কারণ প্রবল গালমন্দ খাবার সম্ভাবনা আছে। আসলে, অনেকদিনই, মানে যখন থেকে ভারতবর্ষ এবং বাংলায় গুরুবাদী প্রকল্পের আলোচনা শুরু হয়েছে, তখন থেকে মাঝেমাঝেই রামকৃষ্ণ দেব এর কথা মনে পড়ে। তাঁকে আমি কখনোই এইসব চমকপ্রদ বাবাদের সঙ্গে মেলাতে পারিনা। সত্যি বলতে কি, কথামৃত পুরোটা পড়িনি আজও। পড়বো নিশ্চয়ই কখনো। কিন্তু যতোটুকু পড়েছি, তাতে ওঁর মধ্যে অদ্ভুত কিছু পরষ্পরবিরোধি চলাচল দেখেছি। সেটা নারী বিষয়েই। বিনোদিনী কে তিনি পঙ্কতল থেকে "উদ্ধার" করেন। বলেন " তুই তো গায়ে হলুদ মেখেই বস ... ...
লতা মঙ্গেশকর -- বিশাল মাপের এক শিল্পী চলে গেলেন। তাঁকে শেষ বিদায় ও শ্রদ্ধা জানালাম। এবং তার পরে কয়েকটা "শাস্তিযোগ্য" কথা লিখলাম। ... ...
মনোবিদরা বলেন, ধর্ষণে আর যাই হোক যৌন পরিতৃপ্তি ঘটে না। অর্থাৎ sexual pleasure ধর্ষণে পাওয়া যায় না। তাহলে ধর্ষণ কেন হয়। ... ...
আস্তে আস্তে যেন একটা সময় আমার চোখের সামনে একটু একটু করে অবয়ব নিচ্ছে। একটা আনকোরা ক্যানভাসে একটু করে ছবির ফুটে ওঠা দেখতে অসুবিধা হচ্ছে না। যে সময়কে প্রশ্ন করা যায়, যে সময়কে খুব সহজে ছোঁয়া যায়। তাতকুরা আসলে আমার হাই মাইওপিয়া অতিক্রম করে ছুঁতে পারা সেই সময়। আস্তে আস্তে যেন একটা গোটা গ্রামের ঘুম ভাঙছে আমার চোখের সামনে। সকালবেলা আড়মোড়া ভেঙে যে গতিবেগে বাইরবাড়ির থেকে জন বেরিয়ে চাষের খেতের দিকে গেল, আমি তার পাশাপাশি ঠিক সেই গতিবেগে ... ...
এটি নেহাতই গপ্পো; এখানে যদি কোন ঘটনা বা কারো নাম দেখে আপনাদের পরিচিত কাউকে মনে পড়ে তো জানবেন তা নেহাৎই কাকতালীয়। ট্রেন একটা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অনেকক্ষণ থেমে আছে। কিন্তু হরিদাস পালের চোখে যেন আঠা লেগে আছে, খুলতেই চাইছে না। এসি-থ্রির কোমল ঠান্ডায় শেষরাতের জম্পেশ ঘুম আর কি কি সব আহ্লাদী স্বপ্ন! ও আরেকবার কম্বলটা ভাল করে টেনে নিল। কিন্তু কামরার মধ্যে আলো বড় বেশি, আর লোকজনের কথাবার্তা যেন বেড়েই চলেছে। এই সাতসকালে কেন ... ...
কলম্বাস বাবু শুধু ভারতকে নিয়েই কনফিউশনে ভোগেন নি – ক্যারাবিয়ান দ্বীপে পৌঁছেও বেশ ছড়িয়ে ছিলেন, ছড়ানোর মধ্যে এক অন্যতম উদাহরণ হছে চিলি-এর সাথে পেপার-কে ঘুলিয়ে ফেলা! ক্যারাবিয়ান দ্বীপ সান সালভাদরে (আজকের দিনের ওয়াটলিং দ্বীপ) পৌঁছে ঝাল ঝাল খাবার খেয়ে তিনি মনস্থির করে নিলেন যে যা থেকে ঝালের স্বাদ আসচে তাহাই ব্ল্যাক পেপার! কালো মরিচের স্বপ্নে তাঁর মন আচ্ছন্ন ছিল তখনো! যতক্ষণে তিনি বুঝতে পারলেন যে সেই ঝাল কালো মরিচ থেকে নয় বরং ছোট কুঁড়ি জাতীয় ফল এর জন্য এর জন্য দায়ী – ততক্ষণে বড় দেরী হয়ে গেছে। স্প্যানিশরা এই ছোট কুঁড়ি ফলকে পেপার বলে ডাকতে শুরু করে দেয় – সেই থেকে নামটা প্রচলন হয়ে গেছে! ... ...
বিকেলের চায়ে হবে মুচমুচে নিমকি চেবানো/পুরনো দিনের কথা বলবে না দেখো একজনও/হয়ত উত্তমকুমারের প্রসঙ্গ তুলে/পারমিতা দেবে হাত মাথার লুটিয়ে পড়া চুলে/তারপর শুরু হবে কার ছেলে ফিজিক্সে ভালো... সুমনের এই প্রায় বিস্মৃত গানটার কথা আমরা শুনেইছিলাম উত্তমকুমার পড়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই। উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেনের ছবি, আমাদের পরিভাষায় পঞ্চাশের দশকের বাংলা সোশ্যাল, তখন এমএ স্তরে পড়তে হচ্ছে। আমি বড় হয়েছিলাম ফিল্ম সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে, বাড়িতে ফিল্ম দেখা বারণ ছিল অনেককাল। ফলে জনপ্রিয় ছবি একেবারে না দেখে ব ... ...
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন লিখিত রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেন নি নামক বইটির আলোচনা। ... ...
the UK has been decimated by COVID 19. It shouldn't have been the case for the 5th richest nation in the world. This article tries to look at the issue from the perspective of an emergency physician working in a major coronavirus hotspot in the UK. ... ...
খুনির আর ধর্ষকামীর মন, মানসিকতা একই পাড়াতে বাস করে সামান্য দূরত্বে দুটো আলাদা রাস্তায়। আত্মগোপন করে থাকতে থাকতে প্রায়ই এরা ভুলে যায় এদের আত্মপরিচয়। অথচ ভদ্রপাড়ায় বাস করবার জন্য যে পরিচয়েই এরা বাসা ভাড়া নিক না কেন, ফেক আত্মপরিচয় বহন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে এরা এমন কিছু করে বসে বা এমন কিছু বলে বসে যে একটু চেষ্টা করলেই এদের আইডেন্টিফাই করা যায়। এই বিশেষ মানসিক গঠনই সংখ্যাগুরু। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই, এরা অপোনেন্টকে রেপ করতে চায়, শেষ করে করে দিতে চায়। বিরাট এই সংখ্যাগুরু 'হতাশ' মানুষের দল, একদল সত্যিই ডিপ্রাইভড, আর অন্য এক দল, যাদের সেই অর্থে কোনো বিপক্ষকে চিহ্নিত না করতে পারাতেই হতাশ হয়ে সম্ভবত বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংখ্যালঘুকে বেছে নিয়ে এক কল্পিত যুদ্ধের অবতারণা করে, এবং সেই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে চায়। ... ...