আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … মানবমনের জটিলতার তল পাওয়া অসম্ভব। যে দেশে ঢাকঢাক গুড়গুড় বেশি সেখানে অনেক কিছু প্রকাশ্যে আসে না। পাশ্চাত্ত্য পরিমন্ডল খোলা-মেলা। সংস্কার কম। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসুতায় অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা বেশি। মনোবৈজ্ঞানিক সার্ভেতে তাই অনেকে স্বেচ্ছায় অংশ নেয়। লিপিবদ্ধ হয় কেস স্টাডি। তৈরী হয় ডাটা বেস। ফলে জানা গেছে অজাচার সম্পর্ক বা incestuous relationship এর কিছু সম্ভাবনার কথা ... ...
শান্তি শান্তি করে মরিস, শান্তি কী তোর গাছের ফল? ... ...
’৭৪-৭৫ সাল থেকে টানা প্রায় ৭-৮ বছর গ্রামে রাত পাহারা দিয়েছি পালা করে। অনেকবার লড়াই হয়েছে ডাকাত দলের সঙ্গে। কুকুরশোল বলে একটা গ্রাম ছিল। একবার সেখানে ডাকাত পড়ল। পুলিশে কাজ করত এক চৌকিদার, থাকত সেখানে। চৌকিদার, তার ছেলে আর গ্রামের লোক লড়াই করে অনেককটা ডাকাতকে ধরে ফেলে। সাত-আটটা ডাকাত মারা যায় ওই দিন। তারপর ডাকাতি প্রায় বন্ধই হয়ে গেল।’ ‘কিন্তু, বলছিলেন যে, গ্রামে বেশিরভাগ লোকই গরিব ছিল। তবে ডাকাতি হত কেন? কী নিতে আসত ডাকাত?’ ‘কী আর নেবে? কারও বাড়িতে হয়তো কিছু চাল ছিল, নিয়ে গেল। মুড়ি, গুড়, কাপড়, তেল সব নিয়ে যেত। লন্ঠন, কুপিও ব্যাগে ভরে নিয়ে গেছে। ডাকাতও তো গরিব। ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … সুমন একটা সিগারেট ধরায়। চিন্তার গোঁড়ায় একটু ধোঁয়া দিতে হবে। মনযোগী শ্রোতার উৎসাহের হাওয়ায় ঘুড়ির সুতো তো ছেড়ে যাচ্ছে, গোটাতে পারবে তো? না হলে জট পাকিয়ে একশা হবে। এরপর তো আরো স্পর্শকাতর দিকে যাবে আলোচনা। ওরা নিতে পারবে তো? তবে ভরসা এটাই, এখনো অবধি ওরা শুনেছে নির্দ্বিধায়, কোনোরকম অস্বস্তি প্রকাশ না করে। তাই এমন খোলামেলা আলোচনা সম্ভব হচ্ছে ... ...
আমাদের এই নারী উদ্যোক্তা যে শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছেই দেনাদার ছিল, তা নয়। ঋণের টাকা দিয়ে তো সে মেশিন কিনল। কিন্তু বড় বড় অর্ডারকে পূরণ করার জন্য যে সে গাদা গাদা কাপড় এনেছিল হোলসেল কাপড় সাপ্লাইয়ারদের কাছ থেকে, তাদের দেনা পরিশোধেও ছিল উপুর্যুপুরি আর ধারালো চাপ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আইন-সমর্থিত চাপ সামলাতে পারলেও ঐ নারী উদ্যোক্তা সরবারহকারীদের আইন-অসমর্থিত চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয়েছিল, যার অবশ্যম্ভাবী ফল নতুন ক্রয় করা সেলাই মেশিনগুলোর অধিকাংশ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়া কাপড়ের স্টকের সাথে সাথে। এভাবে করোনার করাল গ্রাস সেই সাপ্লাইয়ারদের অস্বাভাবিক মুনাফা এনে দিলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি ঋণের কোন টাকাই উদ্ধার করতে পারল না। ফলশ্রুতিতে তারা আইনি পদক্ষেপ শুরু করলে, আমাদের আলোচ্য নারী উদ্যোক্তা মান-সন্মান বাঁচাতে মহাজনদের দ্বারস্থ হল, যারা প্রচলিত সুদের প্রায় চার-পাঁচ গুণ হারে ঋণ দিয়ে থাকে, আর ঋণ আদায়ে তাদের থাকে আলাদা গুন্ডা বাহিনী। ফলে করোনা অস্বাভাবিক মুনাফা এনে দিল টাকার এই আদিম কারবারীদেরও! ... ...
বর্তমান রাজনীতি ... ...
“আবার একা একা বাথরুমে গেছ?” জিজ্ঞাসা করে বিনীতা; কোন সাড়া পায় না ভেতর থেকে। ফের জিজ্ঞাসা করে, “দেরি হবে?” তাও কোনও উত্তর নেই। কী ব্যাপার? দরজায় হালকা চাপ দিয়ে বিনীতা বুঝল সেটা ভেতর থেকে বন্ধ নেই; যাক, এই কথাটা অন্তত শুনেছে। আর একটু চাপ দিতে দরজাটা পুরো খুলে গেল। ভেতরে কেউ নেই। বিস্মিত বিনীতা দ্রুত পায়ে ঘরের বাইরে গিয়ে গেস্টরুম, ড্রইং রুম, ডাইনিং রুম, কিচেন সব ঘুরে দেখে। কোথাও নেই অরুণাভ। কী ভেবে ফের যায় মেয়ের ঘরে, সেখানে রঙিন ঘুমোচ্ছে, আর কেউ নেই। ... ...
আজ ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ - কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবস। এই উপলক্ষে ডিজিটাল গ্ৰুপে কিছু সুশীল জনগণের নানা ভাবগম্ভীর বার্তা আসছে। আমার স্বভাবে জনৈক শ্রীগুরু বর্ণিত “খেলো টাইপস” রম্যরসের আধিক্য। ফলে নিজেকে আমি ঐ সমাজে ব্রাত্য মনে করি। তাই এই উপলক্ষে একটা “লঘু টাইপস” উপাখ্যান পেশ করছি। এটা প্রায় ৮৮ হাজার শব্দের এক দীর্ঘ স্মৃতিচারণমূলক আখ্যানের অংশ। যদি কখনো সেটা এখানে পোষ্ট করি - এই অংশটির পূনরাবৃত্তি হবে ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … সুমন বলে, পাঠ্যবিষয়ের বাইরেও বিভিন্ন বিষয়ে আমার আগ্ৰহ আছে কিন্তু তা নিয়ে বিশদে যথেষ্ট পড়াশোনা করার সামর্থ্য, সময় আমার নেই। কিছু বই পড়ে, সিনেমা দেখে, ঋদ্ধজনের কথা শুনে, নানা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বা আত্মবিশ্লেষণ করে কিছু বিষয়ে নানা বিক্ষিপ্ত ভাবনা ক্রমশ একটা আকার পায়। যখন কোনো বিষয়ে কিছু বলতে যাই সেই দানা বাঁধা ভাবনাই কথায় প্রকাশ পায়। তখন কোথায় কী পড়েছি, দেখেছি, শুনেছি মনে থাকে না। আমি যা ভাবছি সেটাই যে সঠিক তেমন দাবিও আমার নেই। সেই প্রসঙ্গে অন্য দৃষ্টিকোন থেকে কেউ কিছু বললে, তা মুক্তমনে ভাবার চেষ্টা করি। যুক্তিগ্ৰাহ্য মনে হলে তাও মনে থেকে যায়। এভাবেই মানুষের ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী হয় বলে মনে হয় ... ...
এই পুরো ব্যাপারটা যদি দেখেন, এর মধ্যে "শিক্ষা হল অধিকার" বা মানকল্যাণের কোনো জায়গা নেই। বোর্ড একটি অর্থকরী প্রতিষ্ঠান, তারা অনুমোদনের বিনিময়ে পয়সা নেয়। দেয়না। স্কুলও একটি অর্থকরী প্রতিষ্ঠান। তারা সম্পূর্ণ বেসরকারি। তারা টাকা তোলে ছাত্রদের কাছ থেকে। তার থেকে শিক্ষকদের মাইনে দেয়। নিয়োগও করে তারা এবং মাইনেও তারাই ঠিক করে। মাইনে ঠিক কী হবে, তার আইন নেই, কিছু উপদেশ আছে। ফলে সেটা কোম্পানির ইচ্ছে। এক কথায় পুরোটাই ব্যবসা। কত ফি হবে, কত মাইনে হবে, সবশুদ্ধ। কোথাও কোনো নির্দিষ্টতা নেই। হ্যাঁ, কোম্পানির মালিক লাভের গুড় পকেটে নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেননা। কিন্তু তাঁরা গুষ্টিসহ ডিরেক্টর হয়ে মোটা টাকা মাইনে নিলে সেটা সম্পূর্ণ বৈধ। ... ...
সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা একটা গাড়িকে পেছন থেকে ধাক্কা মারে একটা লরি। গাড়ির মালিক উকিল। সে পুলিশের দ্বারস্থ হয় কিন্তু পুলিশ তাকে শেষ অবধি বুঝিয়ে দেয় তার গাড়ি কে কোন লরি নয় একটা গরু ধাক্কা মেরেছে। ... ...
এতদিন পর্যন্ত বিধর্মীরা তেড়ে লাভ-জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছিল, এবার পাল্টা হিসেবে হুপচতুর্দশীতে তাদের ধর্মস্থানের সামনে লাফালাফি শুরু হল। এর নাম দেওয়া হল লাফ-জিহাদ। আর যারা লাফ দেয়, তাদের নাম হল ল্যাজোদ্ধা। সব চেয়ে বড় ব্যাপার হল হুগলীতে। বলাগড়ের কাছে গুপ্তিপাড়া বলে এক জায়গায় পুরোনো ভাঙা মসজিদের নিচে পাওয়া গেল এক হনুমানের ল্যাজ। হনুমানকে মেরেই ওই মসজিদ তৈরি হয়, জানার পর তৎক্ষণাৎ মসজিদ ভেঙে ফেলা হল। স্বয়ং উনিজি হাজির হয়ে গুপ্তিপাড়ার নাম বদলে করে দিলেন হুপ্তিপাড়া। সেখানে তৈরি হল এক বিরাট হুপমন্দির। পুজোর নতুন নাম হল হুপাসনা। ... ...
আবার কি একটা প্যানডেমিক দরকার এই অলক্ষুণেদের মনে করাতে – যে রক্তের গ্রুপ হয়, ধর্ম না? অক্সিজেনের রঙ নেই, ঝান্ডার আছে? প্রিয়জনের মৃত্যুর সময়ে তার পাশে না থাকতে পারার চেয়ে বড় যন্ত্রণা কিছুতে নেই—সে তার রাজনৈতিক আদর্শ যা-ই হোক না কেন? যে সমস্ত ভয়, আত্মবিশ্বাসের অভাব, অসূয়া, অসহিষ্ণুতা আমাদের 'পৃথক' করে, আসলে তা বিশ্বব্যাপী? সেসবই আমাদের 'মানুষ' বানায়? ... ...
দুঃসময়ে ছোট্ট স্ফূলিঙ্গও জোগায় অবান্তর রচনা লেখার প্রয়াসে আত্মমগ্নতায় ডুবে থাকার দাওয়াই। লেখার উপাদান সংগ্ৰহকালে জানা যায় নানা চমকপ্রদ বা আনন্দময় তথ্য। পলায়নবাদীরা এভাবে এড়িয়ে থাকতে চায় বিষাক্ত বর্তমানের অভিঘাত - পর্ব-২ ... ...
বিখ্যাত ঐতিহাসিক রঙ্গনা রানাকৌতের মতে, মিডিয়া আবিষ্কার হয় ভারত স্বাধীন হবার কুড়ি বছর আগে। তার আগে ছিল প্রস্তরযুগ। লোকে শিকার করে আমিষ খেত। ইন্টারনেট এবং কেবল টিভি আবিষ্কার করার উদ্দেশ্য ছিল, এই অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর দিকে নিয়ে আসা। কিন্তু তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতার ফলে, কাজটা করা যায়নি। ইন্টারনেট আবিষ্কারের পরও দেখা যায় মানুষকে কষ্ট করে ভেবে-ভেবে গুগল সার্চ করতে হচ্ছে। এমনকি টিভি চালালেও উঠে উঠে চ্যানেল বদলাতে হচ্ছে। বনে বনে ঘুরে শিকার করার থেকে কাজটা কম কষ্টের নয়। ... ...
বিগত চার দশকের রাজনৈতিক স্লোগান ও দেওয়াল-লিখন ... ...
বিখ্যাত গবেষক ডক্টর অনিরুদ্ধ বাসু উপলব্ধি করেন ভুলো মনের হয়ে গেলেও বাবার স্বাভাবিক বুদ্ধি এখনো বেশ প্রখর। ... ...
১৯৩৩ সালে ফ্রিৎজ জুইকি নামে এক বিজ্ঞানী দেখালেন, মোট পরমাণুর হিসেব থেকে ছায়াপথের ভর বের করতে গেলে একটা গোলমাল হচ্ছে। ছায়াপথের স্পাইরাল বাহুতে যে সমস্ত নক্ষত্র আছে, তারা সকলেই ছায়াপথের কেন্দ্রের চারদিকে আস্তে আস্তে ঘুরছে। ছায়াপথের দৃশ্যমান ভরের প্রায় পুরোটাই এই কেন্দ্র অঞ্চলে অবস্থিত (কেন্দ্রের গল্পটা সংক্ষেপে বলেছি শেষের দিকে। সেখানে যে ঠিক কী আছে, তা দেখানোর জন্যে এই বছর, ২০২০ সালে, রাইনহার্ট গেঞ্জেল এবং আন্দ্রেয়া গেজ নামে দুই বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন)। কিন্তু তাহলে ওই নক্ষত্রদের ঘোরার বেগ যত হওয়া উচিত, পাওয়া যাচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি। জুইকি বললেন, এর একমাত্র ব্যাখ্যা মহাবিশ্বের সব ভরই দৃশ্যমান নয়। অনেকটা জিনিস আছে যা আমরা চোখে (অর্থাৎ যন্ত্রপাতি দিয়ে) দেখতে পাই না, শুধু তার মহাকর্ষীয় টান অনুভব করতে পারি। এর নাম দিলেন ডার্ক ম্যাটার বা কৃষ্ণবস্তু। ... ...