কয়েকদিন আগে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত “হিপোক্রেটিক ওথ” আর নয়। একে প্রতিস্থাপিত করা হবে একেবারে নির্ভেজাল ভারতীয় “চরক শপথ” দিয়ে। এতে একদিকে হয়তো আমাদের নিজস্বতার এক দৃঢ় বিজ্ঞাপন হবে, অন্যদিকে একটি জাতীয়তাবাদী মানসিকতার নবজাগরণ ঘটবে। কিন্তু মুশকিল হল “চরক শপথ” বলে যা বলা হচ্ছে সেটি কর্তিত এবং নবনির্মিত। তাহলে চরক শপথ কী? এ নিয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হব। ... ...
প্রতিটি পদে পদে পরিষ্কার যে পুলিশ প্রথম থেকেই ঘটনা সম্পর্কে নিঃস্পৃহ ছিল। তাঁর বাবা সালেম খান থানায় ফোন করেন রাত তিনটেয়। পুলিশ এতোটাই অসংবেদনশীল যে তারা সদ্য পুত্রহারা পিতাকে বলে যে তিনি তো আনিসকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি তাহলে কী ভাবে প্রমাণিত হল তিনি মৃত? ... ...
মনিকা ভিত্তিকে আন্তনিওনির মানসকন্যা বলার কারণ শুধুমাত্র এই নয় যে ওঁর একক নির্দেশিত চোদ্দ পনেরটি ছবির মধ্যে পাঁচটিতেই মনিকা অভিনয় করেছিলেন। সত্যজিৎ রায়ের প্রধানতম ছবি গুলির তালিকায় নিশ্চয়ই সব ছবি পড়বে না। পড়বে ‘অপুত্রয়ী’, পড়বে ‘চারুলতা’, পড়বে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ইত্যাদি। কারণ, এগুলিতেই সত্যজিৎ-বীক্ষার সর্বোত্তম প্রকাশ ও বিকাশ দেখা গেছে। একই ভাবে আন্তনিওনির ক্ষেত্রে নাম করতে হবে তাঁর প্রখ্যাত ট্রিলজি – ‘লাভেন্তুরা’(১৯৬০) , ‘লা-নত্তে’(১৯৬১), ‘লা-এক্লিপ্স’(১৯৬২)-এর, নাম করতে হবে ‘দি রেড ডেসার্ট’(১৯৬৪)-এর। মনিকা ভিত্তিকে ছাড়া এই ছবিগুলোর কথা স্রেফ ভাবা যায় না! ... ...
হজরত মুহম্মদ অবশ্য নিজের জীবনে ‘চার-স্ত্রী নীতি’ মানেননি, কোরানের ৩৩ : ৫০ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল তাঁর চারের অধিক বিয়েকে অনুমোদন দিয়ে। ইসলামীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী তাঁর ‘তেরোজন’ (এ ক্ষেত্রে মতৈক্য নেই, তেরো থেকে পনেরো নানা সংখ্যা বলা হয়েছে) স্ত্রীর কথা জানা যায়। ... ...
না, গত পাঁচশ’ বছরে এমন শীত কেউ দেখেনি, তাপমাত্রা এইভাবে কখনো মুখ থুবড়ে পড়েনি। এই তো সেদিন হঠাৎ ধেয়ে আসা তুষার ঝড় আর বরফ এক রাতে মেরে ফেলেছে ২০০০ সুইডিশ সৈন্যকে – যারা রাশিয়ার সীমান্তে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। ভেনিসে বড় বড় খাঁড়ি জমে এমন হয়েছিল, যে মানুষ তাদের ওপর চলতে গিয়ে দেদার আছাড় খাচ্ছে। সুইজারল্যান্ডে ক্ষুধার্ত নেকড়েরা দলবদ্ধভাবে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। পুরো বাল্টিক সাগর জমে পাথর। সমস্ত নদী জমে পাথর, যানবাহনের অভাবে ব্যবসা লাটে উঠেছে। প্রথম প্রথম লন্ডনবাসী মহা ফূর্তিতে জমে যাওয়া টেমসের ওপর স্কেটিং, খানাপিনা ইত্যাদি করছিল। তারপর অবস্থা দাঁড়াল – ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি। ... ...
২৫ শে জানুয়ারি, মঙ্গলবারের আনন্দ বাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় স্কুল খোলা সংক্রান্ত বিষয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য পড়ার পর প্রাণে ঠান্ডা বাতাস লাগলো, মনে আনন্দের জোয়ার উঠলো। নিন্দুকেরা অনেক তেরা বেঁকা কথা বলছেন বটে, যেমন তাঁরা বলেই থাকেন। সেই নিন্দুকদের বিরুদ্ধেই এই প্রচেষ্টা। এক এক করে আসি? ... ...
মনে করুন সেই ছোট্টবেলার ভূগোল বই – সৌরজগতের ছবি আঁকা। প্লুটো তখন-ও লাইনের শেষে টিমটিম করে দাঁড়িয়ে আছে, আর বাকিরা আগে-পিছে উঁকি মারতে মারতে ঘুরে চলেছে – আমাদের দেখা সৌরজগতের প্রথম ‘মডেল’ এবং বলাই বাহুল্য, সেটিও খুঁটিয়ে দেখলে ‘ভুল’-ই। তবে এক্কেবারে ডাহা ভুল নয়, অন্তত সূর্য তো মধ্যিখানে, তাই না? একটা সময় তা-ও ছিল না, যেমন ধরুন টলেমি আর কোপারনিকাস – টলেমি-র মডেল ‘জিওসেন্ট্রিক’ আর কোপারনিকাসের ‘হেলিওসেন্ট্রিক’। ‘জিওসেন্ট্রিক’ অর্থাৎ পৃথিবীর চারদিকে সূর্য বা অন্য গ্রহ প্রদক্ষিণ করে এমন কথা এখন বাচ্চারাও শুনলে হাসবে। আর বড়দের মধ্যে? সেই এক বিখ্যাত কন্সপিরেসি-থোরিস্ট কে-সি-পাল ছাড়া আর কেউ এ কথা বিশ্বাস করবেন, এমন ভাবনা-ই অসম্ভব, কিন্তু টলেমি নেহাত বোকা বা গোঁড়া মানুষ ছিলেন না। ছিলেন একজন জিনিয়াস! ... ...
শিল্পমহল বুঝেছে, যে তাপবিদ্যুতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাই সরকারি সংস্থা ছাড়া কেউ নতুন করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ করছে না। সম্প্রতি আদানি-আম্বানি-টাটা সৌরবিদ্যুতে বিপুল বিনিয়োগ করছে। এবার, দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদক এবং তেল কোম্পানি নবায়নযোগ্য উন্নয়নে জুটি বাঁধছে। এনটিপিসি, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের হয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়ন এবং শক্তি মজুত করার ব্যবস্থা করবে। এ বিষয়ে দুই বড় সরকারি কোম্পানির জোট এই প্রথম। ইন্ডিয়ান অয়েল তাদের রিটেল কেন্দ্রে রুফটপ সোলার এবং ইভি চার্জিং স্টেশন করবে। তাদের পরিকল্পনা হল, নতুন প্রকল্পের শতকরা ৮৫ ভাগ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে আসবে। ২০১৯ সালে তারা এ-বাবদ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছে.. ... ...
আমাদের প্রথম ওজু-অভিজ্ঞতা কিন্তু ওজুর নামকরা ছবি গুলির মধ্যে থেকে হয়নি। কোন উৎসব মনে নেই, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব হতে পারে আবার স্বতন্ত্র কোনো প্রদর্শনীও হতে পারে। এক দশকের একটু বেশি আগে হবে, সন্ধ্যা-বাসর, যতদূর মনে পড়ছে বিকেল চারটে বা সন্ধ্যা ছটার প্রদর্শনী, নন্দন দুই (তখন আলাদা আলাদা চেয়ার পাতা থাকত, এখনকার মত ফিক্স সুইঙ্গিং চেয়ার নয়)। ওজুর নামের সাথে পরিচিতি তখনও পর্যন্ত উপরের ঐ সত্যজিতের বক্তব্যটি। ... ...
দীর্ঘ এগারো বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে আজও সুবিচার অধরা। একটি নিরস্ত্র, আত্ম-নিরাপত্তাহীনা কিশোরীর মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়নি। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিএসএফের বিশেষ আদালত অভিযুক্ত জওয়ানকে নির্দোষ বলে রায় দিয়েছে। ২০১৫ সালে সেই রায়ের পুনর্বিবেচনা মামলায় সেই একই আদালত অভিযুক্ত জওয়ানকে পুনরায় নির্দোষ ঘোষণা করেছে। ফেলানি ও তার বাবা অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল এবং একই কায়দায় তারা আবার স্বদেশে ফিরতে চেয়েছিল। সেটা নিশ্চিতভাবে বেআইনি কাজ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধই বটে। কিন্তু এ হেন অপরাধের শাস্তি কি মৃত্যু হতে পারে? আর এই মৃত্যুদণ্ড তো বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালত-স্বীকৃত নয়! সীমান্তরক্ষীবাহিনীর কি কোনো নিরস্ত্র অনুপ্রবেশকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার অধিকার আছে? ... ...
কত র্যাপিং কাগজ ব্যবহার করি আমরা? যে পরিমাণ র্যাপিং পেপার উপহারের গায়ে আটকে দেওয়া হয়, তার সিংহভাগই যে ঠাঁই পায় ময়লার ভ্যাটে—তা আঁচ করার জন্য বেশি মাথা ঘামানোর দরকার নেই। কয়েকটি পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলেই উত্তর মেলে। পশ্চিমি দেশগুলোতে উপহার আদানপ্রদানের সেরা সময় হল বড়দিন। মার্কিন মুলুকে শুধুমাত্র বড়দিনের মরসুমে যে পরিমাণ র্যাপিং কাগজ ব্যবহার করা হয়, তার পরিমাণ নাকি চার মিলিয়ন টন। অন্য তথ্য বলে, ইংল্যান্ডে এই উৎসবের মরসুমে ব্যবহৃত র্যাপিং কাগজগুলোকে পরপর মেলে ধরলে যে দৈর্ঘ্য হয়, তা দু’লক্ষ মাইলকেও ছাপিয়ে যায় হেলায়। গ্রহের সবকটি দেশ এবং তাদের উৎসবপক্ষে ব্যবহার করা র্যাপিং কাগজের যদি হিসেব নিতে বসা যায়, তাহলে চোখে ঝিলমিল লেগে যায়। ... ...
স্তালিনের কথা একটু পালটে নিয়ে আমাদের কি তবে বলতে হবে, বুর্জোয়া শ্রেণি গণতান্ত্রিক সমাজবাদের পতাকাকে ধুলায় ফেলে দিয়েছে, নিপীড়িত মানুষের দায়িত্ব হল তাকে আবার সসম্মানে প্রতিষ্ঠিত করা? গ্যাব্রিয়েল বরিচ দেবদূত কিনা জানি না, কিন্তু আজ থেকে প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে প্রাসাদ অভ্যুত্থানে যে সালভাদোর আয়েন্দেকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল, তাঁর পুনরুত্থানের ঋত্বিক তো বটেই। হ্যাঁ, চিলি বামদিকে মোড় নিচ্ছে। ... ...
আমরা জানি ৫৫% ভোট পেয়ে গ্যাব্রিয়েল বোরিক, ছাত্র আন্দোলনের বহু ব্যারিকেড পেরিয়ে, পুলিশি দমনপীড়নের মোকাবিলা করে, নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৪৬ লক্ষ ভোট পেয়েছেন যা তাঁর যে কোনও পূর্বসুরিদের চেয়ে বেশি। বোরিক দেশে গণতন্ত্র রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি নিও লিব্যারাল অর্থনীতির প্রবল বিরোধী। “চিলি নিও লিব্যারিলজমের জন্মভূমি ছিল, এখানেই সেটার কবর খোঁড়া হবে,” তিনি ডাক দিয়েছেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পেনশন এবং কর সংস্কার করতে তিনি বদ্ধপরিকর। তিনি সামাজিক ন্যায়ের আওয়াজ তুলেছেন। তাঁর সরকারে মহিলা, মূলবাসী এবং এলজিবিটিকিউদের উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তাঁর দল বামপন্থী; তিনি মার্কসবাদী কিনা, তার কোনও ইঙ্গিত এখন অবধি পাওয়া যায়নি। তিনি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ করার পক্ষপাতী। ... ...
ঘৃণায় উস্কানি দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে তাদেরই মঞ্চ, দেখেও দেখেননি ফেসবুকের কর্তাব্যক্তিরা। ফ্রান্সিস হাউগেন মুখ খোলার পরে এ কথাটা প্রথম সামনে এল, এমনটা কিন্তু নয়। এমনকী হাউগেন আরও যেসব অভিযোগ এনেছেন, যেমন ফেসবুক যে মুনাফাকেই অগ্রাধিকার দেয়, নরেন্দ্র মোদী-সহ দেশবিদেশের দক্ষিণপন্থীদের নানা ভাবে সাহায্য করে এবং পক্ষান্তরে মুসলিম ভীতিকে চাড়িয়ে দেয়- এ বিষয়েও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা একপ্রকার ছিলই। তথাপি হাউগেনের আন্তঃতথ্য যাচাই এবং ফাঁস করে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহু কারণে। এই উন্মোচনের জেরেই হয়তো মার্কিন প্রশাসন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কংগ্লোমারেট ফেসবুক তথা মেটা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কিছু কঠোর বিধিনিষেধ আনতে পারে। ... ...
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার Technical Advisory Group on SARS-CoV-2 Virus Evolution (TAG-VE) গত ২৬ নভেম্বর সার্স-কোভ-২-এর যে নতুন প্রজাতি “ওমিক্রন” (গ্রিক অ্যালফাবেট অনুযায়ী নামকরণে ইংরেজির O) আফ্রিকায় উদ্বেগ বাড়িয়েছে তাকে VOC (Variant of Concern) বলে অভিহিত করেছে। আমরা, ভারতের পৃথিবীর সমস্ত সাধারণ মানুষ, ঘরপোড়া গরু। তাই সিঁদুরে মেঘে ডরাই। আমরা এখনো স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরতে পারিনি। যতই “নিউ নর্ম্যাল”-এর মতো আদুরে নামে ডেকে একে স্বাভাবিক বানানোর চেষ্টা হোক না কেন, আমাদের এ জীবন পূর্নত অ-স্বাভাবিক। এজন্য এই মারণান্তক ভাইরাসের (২০১৯-এর নভেম্বরের শেষ থেকে যার নমুনা মিলছিল চিনের য়ুহান প্রদেশে) দাপট ২ বছর পার করলেও নতুন নতুন চেহারায়, নব নব অবতার রূপে হাজির হচ্ছে এই ভাইরাস। আমরা চাপা আতঙ্কে বাস করছি – আবার কোন প্রিয়জনকে হারাতে যেন না হয়। ... ...
হইচইয়ের 'মন্দার' নামক এই সিরিজ দেখতে বসে, সমকালীনতা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশই থাকেনা একদম প্রাথমিক কিছু দৃশ্যের পর। দেখা যায় সমুদ্রতীর, দেখা যায় মোটরসাইকেল। দেখা যায় পোলানস্কিসুলভ 'আধুনিক' হিংস্রতা। সিরিজের একদম শুরুতে সমুদ্রতীরে ডাইনি এবং তার চেলা যখন মাছকে গেঁথে ফেলে বর্শায়, সেই দৃশ্যের সঙ্গে পোলানস্কির প্রথম দৃশ্যের অদ্ভুত মিল। আলোর তফাতটুকু বাদ দিলে স্কটল্যান্ড এবং বঙ্গের সমুদ্রতীর একদম এক হয়ে যায় মরা মাছ আর মরা সৈনিকের ছটফটানিতে। ডাইনিদের পদচারণা এবং আচার-অনুষ্ঠানে। পোলানস্কির সিনেমায় ঘোড়সওয়াররা টগবগিয়ে আসে সৈকতে। মন্দারে ঘোড়া নেই, তার জায়গায় আছে মোটর সাইকেল। ধূধূ সমুদ্রসৈকত দিয়ে মন্দার মোটরসাইকেল চালিয়ে যায় পিছনে একজন আরোহীকে নিয়ে। ... ...
মাঝরাতে শিশু কন্যাকে নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে যখন একটু মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয় দরকার, যখন গার্হস্থ্য হিংসার ফলে বাড়ি ছেড়েছে প্রমানিত হলে রাষ্ট্রের অনেক পরিষেবা পাওয়া সহজ হয়ে যায়- পাওয়া যায় উপার্জনের রাস্তা , মাথা গোঁজার জায়গা এবং পেট ভরানোর খাবার-তখনও মেয়েটি সমানে বলতে থাকে যে, সে কিন্তু গার্হস্থ্য হিংসার শিকার নয়, তার মেয়ের বাবা তাকে মারেনি, ভয়ানক গাল মন্দ করেনি, পরকীয়ায় লিপ্ত নয় । শুধু সে নেশা করে ফিরে চেঁচিয়ে ওঠে, দরজায় ঘুসি মেরে দরজায় গর্ত করে দেয় আর কিছু বাসন কোসন ছুঁড়ে ফেলে ভাঙে। পরের দিন আবার ঠিক হয়ে যায়। সে আসলে মেয়েকে খুবই ভালবাসে, তাকেও বাসে। ... ...
দেওচা-পচামিতে যেন এক অঘোষিত কার্ফু জাড়ি করা হয়েছে। লকডাউনে ত্রাণ দেওয়ার অছিলায় কিছু পোষা ‘বুদ্ধিজীবী’ অবশ্য নেমেছিল মাঠে। বলাবাহুল্য শাসক দল ও প্রশাসন ‘কোভিড বিধি’ ভঙ্গের অজুহাতে আটকায়নি তাদের। অথচ সমীক্ষক দল হোক বা অন্যদের প্রবেশ ছিল ‘নিষিদ্ধ’। প্রতিবাদীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি চলছে নির্দেশ অনুসারে। জীবন আর কতটা দুর্বিষহ করলে থামবে রাষ্ট্র? জানতে চাইছেন তাঁরা। ভয় দেখিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের বশে আনতে পারেনি সরকার। শাসক দলের গুন্ডারা পথে নেমেছে বহুদিন। তা সত্ত্বেও বশ্যতা মানেনি সাঁওতালরা। তাঁদের জীবন-জীবিকা-সংস্কৃতির ওপর আঘাত তাঁরা চাননা, জানালো ছোট্ট জমায়েত। পাথর খাদানের ধুলো আমরা খেয়েছি, আর ধুলো খাবোনা, বললেন অনিল সোরেন (নাম পরিবর্তিত)। প্রতিরোধে সাঁওতাল। ... ...
মোদী ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের এ এক অসীম লজ্জা ও অপমানের প্রহর। কারণ কৃষকের দাবি যে মূহুর্তে মেনে নেওয়া হল, সেই মুহূর্তেই এই চরম প্রতিক্রিয়াশীল সরকারকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ইষ্টমন্ত্র – নয়া উদারবাদের বিরুদ্ধে যেতে হল। তাকে প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিতে হল, সে কার পক্ষে – আন্তর্জাতিক বৃহৎ ব্যবসার, নাকি দেশীয় মার-খাওয়া কৃষকের। আপাতত বাধ্য হয়ে সে কৃষকের – ভবিষ্যতের কোনো ষড়যন্ত্র যদি না পাশা উলটে দেয়। ... ...
উনি যা করেন দেশের ভালর জন্যেই করেন। বেশ সাহসী এবং আউট অফ দ্য বক্স ভাবনা চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু একটু সময় দেবেন তো! আমার গিন্নি আমার পেনশনের টাকার থেকে কিছু সরিয়ে ওঁর শাড়ির ভাঁজে রাখেন, সব ৫০০ ও ১০০০ টাকায়। আমি টের পেয়েও টের না পাওয়ার ভান করি; সেগুলোর কী হবে? ব্যাঙ্কে চাকরি করেছি। যোগ দেবার একমাসের মধ্যে, মানে জানুয়ারি ১৯৭৮ সালে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ৫০০, ১০০০, ৫০০০ ও ১০০০০ টাকার নোট ব্যান করেছিল, কিন্তু সেগুলো বাজার থেকে তুলে নেওয়ার আগে সময় দিয়েছিল যাতে পাবলিকের অসুবিধে না হয়। এরকম রাত্তিরে মাত্র ৪ ঘন্টার সময় নয়, এ তো একেবারে ‘উঠল বাই, কটক যাই’ কেস! ব্যাপারটা বোঝার জন্য বিভিন্ন চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রী মোদীজি, বিত্তমন্ত্রী অরুণ জেটলী ও বিত্ত সচিব শক্তিকান্ত দাসের বক্তব্য মন দিয়ে শুনে যা বুঝলাম, তা’হল এই: পড়তে থাকুন - নোটবন্দীর পর ৫ বছর.. ... ...