ফলে এক ব্যালেন্সের খেলা চলতে থাকে – যতটা সম্ভব দেরিতে শাটডাউন নেওয়া হতে থাকে। আর একটা কাজ করা হয় – পুরো প্ল্যাটফর্ম শাটডাউন না করে যতটা পারা যায় কাজ সেরে ফেলা। মানে যেখানে কাজ করতে চান শুধু সেইখানের আশেপাশে শাটডাউন করে টুক করে কাজ করে নিলেন। এবার বুঝতেই পারছেন আমি যেমন সহজভাবে লিখলাম জিনিসটা তত সহজ নয়! আপনাকে পদে পদে রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। আমরা জানি যে আগুনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস চাই তিনটি – দাহ্য পদার্থ, আগুনের উৎস এবং অক্সিজেন। এই তিন জিনিস মিলিয়ে তৈরি হয় ফায়ার ট্রাঙ্গেল - এর মধ্যে যে কোন একটা জিনিস সরিয়ে নিলেই আর আগুন লাগবে না ... ...
আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে উদ্ভুত নব্য জমিদার ও নব্য ধনী মধ্যবিত্ত শ্রেণির গাঁটছাড়া বাঁধা রয়েছে কলোনিয়াল প্রভু ইংরেজের কায়েমি স্বার্থের সঙ্গে। তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার একটি অভিমুখ হল ইংরেজি শিক্ষালাভ। কিন্তু এহ বাহ্য। আগে কোম্পানি যে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ শুরু করল তাতে পড়ানো হত-আরবি, ফার্সি, হিন্দুস্তানি, সংস্কৃত, বাংলা ও অন্যান্য দেশিয় ভাষা। ... ...
আজকের সময়টা তথ্যের সময়, যাঁর কাছে যত তথ্য, তিনি তত বেশি শক্তিশালী। যেভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হয় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই ‘দিদিকে বলো’ প্রকল্প। তারপর সেই তথ্য সংশ্লেষণ করে, অঞ্চলভিত্তিক ভাগ করে, সমস্যা চিহ্নিত করে, আবার সেই মানুষটির কাছে পৌঁছনোর প্রক্রিয়াটিই এই প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা করেছেন এই নির্বাচনের শেষ অবধি। এর পাশাপাশি, নির্বাচনী প্রচারে, কোন নেতা কীভাবে কোন জায়গায় কতটুকু বলবেন, কোন সাংবাদিক সম্মেলনে কোন কথা বলা হবে সেই সমস্ত কিছু আগে থেকে ঠিক করা ছিল, সৌজন্য আইপ্যাক। কোন জায়গায় কে প্রার্থী হবেন থেকে শুরু করে কাকে দলে রাখা উচিত হবে না, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে তাকে দলে কতটুকু স্থান দেওয়া হবে, সমস্ত কিছুই নিয়ন্ত্রণ করেছে এই সংস্থা। আরো অনেক বিষয় হয়তো কাজ করেছে। ‘বিজেপিকে ভোট নয়’ যাঁরা প্রচার করেছিলেন তাঁদের হয়তো অবদান আছে কিন্তু দিনের শেষে আইপ্যাকের ভূমিকা বড় নির্ধারক হয়ে দাঁড়াল। ... ...
এশিয়ান পাম সিভেট। এক প্রকার ভাম বিড়াল। তাকে বাধ্য করা হয় কফি ফল খেতে। সেই কফি খেয়ে সে করে মলত্যাগ। সেই মল থেকে বেছে নেওয়া কফি বীজ প্রসেস করে তৈয়ার হয় দুনিয়ার সব থেকে দামি কফি—কোপি লুয়াক। ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে। পরিবেশবিদরা চান এই নিষ্ঠুরতা বন্ধ হোক। চেখে দেখলেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এঅধ্যায় এমভূমি গ্রাম থেকে রওনা হয়ে মাটাবুরু নামের জনপদে পৌঁছনোর কাহিনি। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
যুদ্ধ থেকে ফিরে তিনি আর দর্শন চর্চার মধ্যে যেতে চাননি। প্রথমত তাঁর ধারণা হয়েছিল ‘ট্রাক্টেটাস লজিকা-ফিলজফিকাস’ গ্রন্থে তিনি সমস্ত দার্শনিক সমস্যার সমাধান করে ফেলেছেন, দ্বিতীয় কারণ যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। পূর্বে উল্লেখিত Tolstoy-এর গস্পেল এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শৈল্পিক সৃষ্টির সঙ্গে পরিচয় (যার কথা একটু পরেই আমরা বলবো) তাঁর মনে আগামী করণীয় ও তদুপরি জীবন সম্পর্কেও একধরণের আধ্যাত্মিক ধন্দ তৈরি করেছিল। এই সময় মঠে কিছুদিন মালির কাজ করার পর তিনি ঠিক করেন স্কুলে শিক্ষকতা করবেন। সেই মর্মে তিনি প্রশিক্ষণ নেন এবং ১৯২০-২৬ অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন গ্রামে শিক্ষকতার কাজ করতে থাকেন। স্কুলের বাইরেও বিনা পয়সায় ছাত্রদের পড়াতেন, গরিব ছাত্রদের নানা ভাবে সাহায্য করতেন। স্কুলের মাইনে তাঁর কাছে যথেষ্ট বেশি বলে মনে হত। একবার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে এত মাইনে নিয়ে তিনি কী করবেন। প্রকারান্তরে উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রধান শিক্ষককে নিজের পুরো মাইনেটাই দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপনের এই স্পৃহা Wittgenstein-এর জীবনের একটা প্রধান দিক। ... ...
সলিলদা খুঁজে পেলেন অন্য শিক্ষার ধারণা পাওলো ফ্রের-এর লেখায়। প্রয়োগে আমরা। আমার প্রয়োগে থাকার গল্প বলে সলিলদা, সলিলদা দের গল্প বলি। দেবাশিস আমি বেছে নিলাম নিউ আলিপুরের পিছনে সাহাপুরে গরীব পরিচারিকাদের বসতি। পরিচারিকাদের পরিবারের বসতি। সলিলদা আমাদের বোঝালেন কি করতে হবে। আমরা সেই মতো অন্য লেখাপড়ার আন্দোলনের কর্মী হয়ে গেলাম। সপ্তাহের কয়েকটা দিন সন্ধাবেলা আমরা পরিচারিকাদের নিয়ে বসতাম। প্রথামাফিক অ আ ক খ বর্ণমালা শেখাইনি। পাওলো ফ্রের দর্শনে, সলিলদার, সলিলদাদের পরিচালনায় অন্যভাবে শুরু। একটা উদাহরণ দিই। ... ...
দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে, ভারতীয় সমাজ গড়পড়তাভাবে পুলিশকে সাম্প্রদায়িক ভাবেই দেখতে চায়। পুলিশ নিরপেক্ষ হবে, হিন্দু- মুসলমান দুজনকেই সমান দৃষ্টিতে দেখতে সাধারণভাবে যে এটা ভারতীয় সমাজ চায় না বিভূতি নারায়ণ রাই ক্ষেত্র সমীক্ষা জনিত বিশ্লেষণের ভিতর দিয়ে তা দেখিয়েছেন।পুলিশ ও নিজেদের কেবলমাত্র সংখ্যাগুরুর রক্ষাকর্তা বলেই মনে করে।পুলিশ আর মুসলমানের সম্পর্কটা প্রথম থেকেই যে সংঘাতের সেকথা খুব পরিষ্কার ভাবেই বিভূতি রাই বলেছেন। পুলিশ যে ব্যবহার ধারাবাহিকভাবে মুসলমানের উপরে করে চলেছে তার প্রেক্ষিতে এটা ধরে নেওয়া যায় না যে, মুসলমান পুলিশের নামেই অচলাভক্তি নিয়ে থাকবে। ... ...
বিজেপি মানেই পার্মানেন্ট অশান্তি। সাম্প্রদায়িকতা রুখতে পারে শ্রেণি চেতনা, মহিলাদের ক্ষমতায়ণ, প্রকৃত ইতিহাসবোধ, বাংলার উদার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে চাই ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগের প্রসার, কৃষিনির্ভর গ্রামাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন। জানালেন সিপিআই(এম-এল)-লিবারেশন দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
আগামীতে এ দেশে বামপন্থার বিকাশের চাবিকাঠিও রয়েছে এই বিশাল বহুত্ববাদী সমাজের মাঝে বামমন্থীরা কতটা নিজেদের সাক্ষর রাখতে পারে এই জনজাতি সমূহের য়ার্থ-সামাজিক অস্মিতার উত্থানে। বাংলা, তামিলনাড়ুর বা কেরালায় বিজেপির পরাজয় আসলে বিজেপির আরএসএস-এর একমাত্রিক ভারত গড়ার প্রকল্পে এক বড় ধাক্কা যেমন বাংলায় ‘জয় শ্রীরাম’ পরাস্ত হল ‘জয় বাংলা’ র কাছে। কিন্তু এই লগ্নে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল নানা ধারা-উপধারায় বিভক্ত বামেরা কি পারবে এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে? হিটলারের উত্থানের পশ্চাতে অন্যান্য নানাবিধ কারণের সাথে সে দেশের বামেদেরও অবদান ছিল বলে মনে করা হয়। সবচেয়ে অদ্ভুত হল রাজ্যে রাজ্যে বাম দলগুলি অবাম দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে নির্বাচনী আঁতাতে সেই বোধ উধাও হয়ে যায়। আরও দুর্ভাগ্যজনক এই অতীব সংকটকালীন সময়েও এদের কেউ কেউ অপরকে ব্যঙ্গ করে বিপ্লবী আত্মপ্রসাদ লাভ করছেন যা ভবিষ্যতে বাম ঐক্য গঠনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। প্রশ্ন জাগে বিহারের বিজেপি বিরোধী জোটে বামেদের সাফল্য থেকে কি কিছুই শিখবে না তথাকথিত বড় বাম দলগুলি? ... ...
সুন্দরবন ডেল্টা আজ অস্তিত্বের সঙ্কটের মুখে। একদিকে গোটা সুন্দরবন ভূমিরূপ গঠনের দিক দিয়ে যেমন নবীন, অন্যদিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে তীব্র হচ্ছে সংলগ্ন জনবসতির ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’ হওয়ার সম্ভাবনা। বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে একদিকে যেমন বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা। একই সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠছে বাড়তে থাকা জনবসতির বেঁচে থাকার আর্তি। পরিবেশবিদ ও ভুতাত্ত্বিকেরা সুদুরপ্রসারি দৃষ্টি দিয়ে বাঁচাতে চাইছেন গোটা প্রকৃতি। আর স্থানীয় মানুষ চাইছেন বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আশু উন্নয়ন। গণদাবী হয়ে উঠছে কংক্রিট বাঁধ। ফলে, ‘বনাম’ হয়ে মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে 'উন্নয়ন’ আর ‘নিসর্গ’। ‘বনাম’ হয়ে মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে ‘কংক্রিট বাঁধ’ আর ‘মাটির বাঁধ’। ... ...
স্বাস্থ্যব্যবস্থার নিরঙ্কুশ বাণিজ্যায়ন। সামাজিক অভিভাবক থেকে মুনাফা-তাড়িত পরিকাঠামোর প্রতিনিধি হিসেবে চিকিৎসকদের ভূমিকার বিবর্তন। চরম সরকারি উদাসীনতা ও দুর্নীতি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’— এই লক্ষ্য থেকে রাষ্ট্রের পশ্চাদপসরণ। ভারতের স্বাস্থ্যপরিষেবার অজুত সমস্যা। ও তারই মধ্যে কিছু বিরল সাফল্যের উদাহরণ। একটি বই। পড়লেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী ... ...
ইসমত চুগতাই। এমন উচ্চারণ তাঁকে মানায়। জীবনে ও সাহিত্যে মেরুদণ্ড অটুট থেকেছে তাঁর। পর্দা মানতেন না। প্রশ্নহীন আনুগত্য তাঁর স্বভাবে ছিল না। ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান, দেশভাগের নিদারুণ বাস্তব ছাড়াও ইসমতের সংবেদী দৃষ্টি ছুঁয়ে গেছে প্রান্তিক মানুষের একদিন-প্রতিদিন। একগুচ্ছ গল্প। বাংলা তরজমা এমনই সাবলীল, পাঠকের মনে হবে না অনুবাদ পড়ছেন। তরজমাকার সঞ্চারী সেন। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক ... ...
সুদীপ বসুর কবিতা। অন্যায়ের প্রতিস্পর্ধী চিৎকার। স্বতন্ত্র কাব্যভাষায় এ কবিতা মানবীয় অভিজ্ঞতাকে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাকে জাদুর মোড়ক দিয়ে নানা অর্থব্যঞ্জনার সৃষ্টি করে। লিখছেন কথাকলি জানা ... ...
খুবই আশ্চর্যের বিষয়, রাষ্ট্র কোনভাবেই পরিবেশ প্রতিবেশের আরো অবনতি হতে পারে এমন বিষয়কে ছাড়পত্র দেবে না, যদি না পক্ষে খুব শক্তিশালী যুক্তি থাকে, এটা এদেশের পরিবেশ আইনের একেবারে মূল কথা। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট সেন্টাল ভিস্তার ওপর যে রায় দিয়েছে তাতে এর কোনো ছাপ নেই। যদিও পিটিশনাররা সবিস্তারে জানিয়েছিলেন কিভাবে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট এক্টকে কলা দেখিয়ে জমির ব্যবহারে দ্রুত পরিবর্তন করা হয়েছে, কিভাবে হেরিটেজ এবং আর্কিটেকচারাল বিবেচনাকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে এবং পরিবেশের পক্ষে এই প্রজেক্ট কতখানি ক্ষতিকারক সে সম্বন্ধে কোনোরকম বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা না করেই এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে,তবুও সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে কোনো পরিবর্তনে বাধ্য না করেই পুরো প্রজেক্টকে ছাড় দেয়। শেষ পয়েন্টটিতে তাদের মনে হয়েছে বৃক্ষ সংরক্ষণের সরকারি প্রতিশ্রুতিতেই কাজ হবে এবং পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে খানকতক স্মগ টাওয়ার বসালেই যথেষ্ট হবে। পরিবেশ ভাবনা এবং দূষণ কমানো যে এক ও অভিন্ন বিষয় নয়, সেটা বোঝার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে বিরল। ... ...
তবে সবার আগে উনুনে উঠলো জলভরা লোহার কড়াই। এতে বাঁধাকপি ভাপানো হবে। ঠাকুমা খুব ঝুরি করে বাঁধাকপি কাটছে, বাঁধাকপি যত ঝুরি করে কাটা হবে স্বাদ তত খেলবে এর। তবে আমার মনোযোগ বাঁধাকপিতে নেই। সব মনোযোগ ঠাকুমার হাতের শাঁখা-পলা এক অদ্ভুত ছন্দ তুলছে তাতে। ক্রমাগত সে ছন্দ আমার লোভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, ও ঠাকুমা, এবার রথের মেলা থেকে আমাকে ঠিক এমন চুড়ি কিনে দিবা? ... ...
এক শীর্ণকায়া ভদ্রমহিলা এসেছেন। তাঁর স্বামী করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাগর দত্ত হাসপাতালে মারা গেছেন। ভদ্রমহিলা ঘন ঘন অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় কোয়াক ডাক্তারের নিয়মিত ডাক পড়ে। তিনি এসে দু – বোতল, তিন – বোতল স্যালাইন চালান। টালির ঘরে টিম টিমে হলুদ বালব। ঘরের এধার থেকে ওধার নাইলনের দড়ি। তার থেকে স্যালাইনের বোতল ঝোলে। মহিলা ক্রমশ বিছানার সাথে মিশে যান। কোয়াক ভরসার বাণী শোনান, 'শরীরের ভেতর শুকিয়ে গেছে। স্যালাইন দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।' ... ...
কথাটা পরিহাসের ছলে বলা কিন্তু এর ভেতরে একটি গভীর সত্য নিহিত ! ইউরোপের হাজার বছরের ইতিহাসে ইহুদি হবার অপরাধে সরকারি বা অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কর্ম গ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল বহুকাল । সে কারণেই ওকালতি , ডাক্তারি জাতীয় বিবিধ স্বাধীন পেশা এবং আপন ব্যবসাতে ইহুদির ভূমিকা বহু বছরে সুপ্রতিষ্ঠিত । মহাজনি কারবারের জন্য তাঁরা বিশেষ দুর্নাম কুড়িয়েছেন , শেক্সপিয়ারের শাইলক যার এক প্রতীক । এক দরোজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে জীবন ধারণের উদ্দেশ্যে অন্য দ্বারে করাঘাত করেছেন। আপন বুদ্ধি ও কর্ম বলে সফল হয়েছেন। ... ...
যে মীটিং হলো এবার তাতে সুকান্তদা আর জুঁইদি আসেনি, ওদের আশাও করেনি জয়ি। শ্যামলিমাও আসতে পারেনি, ওর শ্বশুরবাড়িতে কিছু একটা উৎসব আছে, ওরা সপরিবার গেছে সেখানে। তুলিও যথারীতি অনুপস্থিত। গেস্ট হাউজটা নিয়মিত চালাতে হবে, মীটিঙে যারা ছিলো সবাই একমত। সিনেমার লোকরা যদি শেষ পর্যন্ত পছন্দ করে খুশিঝোরাকে, সেটাও খুশিঝোরার পক্ষে, অন্তত আর্থিক ব্যাপারটা মাথায় রাখলে, ভালোই হবে, বললো প্রায় সবাই; বিশেষ করে মাত্র এক রাত্তির গেস্ট হাউজে থেকে যে টাকাটা ওরা দিয়েছে, সেটা তো অভাবনীয়, বললো কোষাধ্যক্ষ অনলাভ। সবাই সিনেমার ব্যাপারে উৎসাহী, শুধু নীরব জলধর। ও ঠিক জানে না, কেমন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছিলো ওর সিনেমার ব্যাপারটায়, কী অস্বস্তি স্পষ্ট করে বোঝাতে পারবে না, কাজেই চুপ করে থাকাই ওর মনে হলো ভালো। ... ...
আমাদের ছোটবেলায় একজাতের বই বাড়িতে এবং স্কুলে অবশ্য পাঠ্য ছিল – মহাপুরুষদের জীবনী। তাতে ক্ষুদিরাম, নেতাজি ও সূর্য সেনের মত স্বাধীনতা সংগ্রামী, রামমোহন, বিদ্যাসাগর ও আম্বেদকরের মত সমাজসংস্কারক, রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্রের মত সাহিত্যিক এবং চৈতন্য, রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের মত ধর্ম সংস্কারক সকলেই একসারিতে জায়গা পেতেন। এঁদের জীবনীর একটি ছাঁচ আছে। এঁরা কোন বিশেষ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে প্রেরিত। এঁদের জন্মসূত্রেই প্রতিভার স্ফুরণ দেখা যায়। এঁরা কখনও ভুল করেন না। কাজেই ভুল স্বীকার করার প্রশ্ন ওঠে না। ... ...