এই মিথ্যা প্রমাণের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন এই সত্য অনুধাবন করা যে, বরাক উপত্যকার মুখ্য ভাষা প্রথমাবধি (স্বাধীনতার অব্যবহিত আগে ও পরে) বাংলা। ১৮৭৪ সালে সিলেট ও গোয়ালপাড়া জেলাকে আসামের সঙ্গে বাংলা থেকে বিযুক্ত করে আসামের সঙ্গে সংযুক্ত করলেও স্বাভাবিক ভাবেই এতকালের বাংলাভাষী মানুষ রাতারাতি অসমীয়া হয়ে যেতে পারেনা। এদিকে বাংলাভাষীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আসামের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে। নিজেদের ভয়, অসমিয়া তৎকালীন নেতৃত্ব অসমিয়াদের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ... ...
সপ্তম অধ্যায়ে লেখক বলছেন, সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ রূপে বিদ্যাসাগর ‘লাভ করেন অসীম দাপট, অবাধ ক্ষমতা ও একক কর্তৃত্ব’। তারপর বিদ্যাসাগর ওই কলেজে শিক্ষাসংস্কারের জন্যে যা করেছেন সেগুলোকে লেখক ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গবেষণাকে ভিত্তি করে আটটি বিন্দুতে বেঁধেছেন। তারপর ওই সংস্কারগুলোর নিজস্ব মূল্যায়ন করতে গিয়ে বেশ কিছু অজানা তথ্যের দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আমরাও এ’ব্যাপারে লেখককে অনুসরণ করব। ... ...
অমলকান্তি সব শুনে বলে উঠল, “আমি শুধু একটা কথাই বলব, কাজের সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবার থেকে বাবাকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে, সার্টিফিকেট দেওয়ার মতো কাজ। তিনি প্রাজ্ঞ, মহৎ, দূরদর্শী ও বিচক্ষণ, গোটা দেশ একথা জানে। তিনি যে এই ধরনের হঠকারিতা করতে পারেন না, সেকথাও সবার জানা। তিনি এখন অন্যের ওপরে নির্ভরশীল। কিন্তু সেই নির্ভরতা যেন তাঁর পক্ষে আশঙ্কাজনক না হয়ে ওঠে, সেটা আমাদের সবাইকেই দেখতে হবে...” ... ...
সি-বিচে জলের ধার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে, সর্ষে দানার মত থেকে শুরু করে, ছোট মটর-কড়াই এর মত আকারের বালির গোল গোল ঢেলা প্রচুর পড়ে থাকতে দেখলাম; প্রথমে এগুলি কি তা না বুঝলেও, পরে আবিষ্কার করেছিলাম যে লাল কাঁকড়ারা তাদের গর্ত খুঁড়ে বাসা তৈরি করার জন্য দাঁড়া দিয়ে বালির ঢেলা তৈরি করে – যেগুলি বাড়ির উপর ছড়িয়ে রেখেছে। এদের বাসার গর্তগুলি বেশ গভীর ছিল। উপর থেকে গর্তের ভিতর বসে থাকা কাঁকড়াকে দেখতে পাওয়ার কোনো উপায় নেই। সমুদ্রের জলের ধারে এরা এমন দল বেঁধে বসেছিল, যে একটু দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন জলের ধারে বালির উপর কেউ লাল চাদর পেতে রেখেছে। সমুদ্রের জলের ঢেউ কখনও অল্প, আবার কখনও বালির অনেকটা উঁচু পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছিল। লাল কাঁকড়ারাও দল বেঁধে সেই ঢেউয়ের তালে উপরে নিচে ওঠানামা করছিল। দূর থেকে মনে হচ্ছিল যেন লাল চাদরটা জলের দামে একবার নিচে নেমে যাচ্ছে ও আবার ঢেউয়ের ঠেলায় উপরে উঠে যাচ্ছে। ... ...
এ রাজ্যের প্রায় সাড়ে ছ’হাজার উচ্চ-মাধ্যমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত স্কুলের মধ্যে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি বিভাগে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র তেরশো স্কুলে। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণদের জন্য ‘ভকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার’ তৈরি হয়েছিল যে সব স্কুলে, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষকের অভাবে সেগুলোর অধিকাংশই আজ ধুঁকছে। অনেকগুলো ইতিমধ্যে বন্ধও হয়ে গেছে। এবং এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্যটি হল, এ রাজ্যের কোনও স্কুলের ভকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারেই কোনও স্থায়ী শিক্ষকপদ নেই। পুরো ব্যবস্থাটাই চলছে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিয়ে। এই একটা তথ্যই বোধহয় এই বৃত্তিমূলক শিক্ষয়ার প্রতি সরকারের চরম উদাসীনতার বা বিমাতৃসুলভ মনোভাবের যথেষ্ট প্রমাণ হিসেবে গণ্য হতে পারে। ... ...
এবার বাহাত্তর দেখল দিঘির মাঝখানে জল সামান্য পাক খাচ্ছে। ফাল্গুন চৈত্রে ফাঁকা মাঠে যেমন শুকনো বাতাসের ঘুর্ণি ওঠে, ধুলোবালি, শুকনো পাতা, ছেঁড়া কাগজ – সব শূন্যে তুলে নেয় সেই বাতাস, পুকুরের মাঝখানে ঠিক তেমন একটা জলের ঘুর্ণি আস্তে আস্তে নীচের দিকে টান দিতে শুরু করেছে। বাহাত্তরের কত বার ইচ্ছে হয়েছে গরম বাতাসের সেই ঘুর্ণির ‘চোখ’-এ ঢুকে পড়তে। দেখি না, কী হয়। যদি বাতাস তাকে শূন্যে উড়িয়ে নিয়ে যায়, যদি অনেক দূরের এক অচেনা দেশে নিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়, যেখানে কেউ তাকে হারামজাদা বলবে না, বাপঠাকুরদার নাম জানতে চাইবে না। ... ...
এইবার এই চারটে অ্যামাউন্ট আলাদা আলাদা বাণ্ডিল করে একটা একটা খামে ঢুকিয়ে রাখো, জয়ি ড্রয়ার খুলে কতকগুলো খাম বের করে, আর রাবার ব্যাণ্ড। নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে উৎপল। জয়ি বলে, এদিকে এসো, আমার পাশে। উৎপল চেয়ার ছেড়ে উঠে জয়ি যেখানে বসে আছে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। জয়ি চাবি দিয়ে একটা ড্রয়ার খোলে, উৎপলকে বলে, এই টাকার বাণ্ডিলগুলো আর তোমার হিসেবের কাগজটা এই ড্রয়ারে রাখো। এবার চাবিটা দেয় উৎপলকে, ভালো কোরে চাবি দাও। চাবি দেওয়া হয়ে গেলে ওর কাছ থেকে চাবিটা নিয়ে নিজের ব্যাগে ঢোকায় জয়ি, বলে, টাকাগুলো ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে, ব্যাঙ্কে গিয়েছো কখনো? ... ...
করোনা ভাইরাস সংক্রমন বিষয়ে কিছু প্রচলিত ভুল ধারনা ... ...
বুড়ি জানে হাতে একটু টাকা রাখতে হয়। এদিকটা না দেখলে হবেনা। গঞ্জনা জুটবে, না খেয়েও মরতে হতে পারে। ক্রয়ক্ষমতাই তো ক্ষমতা এখন! বুড়ি বোঝে। এদিকটা না সামলালে চলবেনা, অরণ্যের জীবন তো আজ আর পাওয়া যাবেনা। তাই সে এটুকু করে। বাদবাকি সবসময় তুমি দেখো, বুড়ি আর প্রকৃতি। বুড়ি যেনো কথা বলে, "কীগো কেমন আছ তোমরা সবাই? আমার মন ভালো নেই। বাঁশবাগানে চ্যাং মাছ নেই। খালে শাল মাছ নেই। প্যাঁচার ডাক শুনতে পাইনা। শেয়ালরা কেউ নেই।" ... ...
আফগানরা স্বাধীনচেতা জাতি। ব্রিটিশরাও তাঁদের পুরোপুরি পদানত করতে পারেনি। তারা ব্রিটিশদের রক্ষাধীন ছিল, প্রটেক্টোরেট। গত চার দশকে মহাপরাক্রমশালী সোভিয়েত ইউনিয়ান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেউই তাঁদের কব্জা করতে পারেনি। দেশটা জ্ঞাতি ও উপজাতি রেষারেষি ও দ্বন্দ্বে বিদীর্ণ। দেশের বিভিন্ন পকেটে, দুর্গম অঞ্চলে যুদ্ধবাজ সামন্তসর্দারদের সার্বিক আধিপত্য, যেখানে ধর্মের চেয়েও নিজের ক্ল্যান বা উপজাতির প্রতি আনুগত্যই ছিল প্রধান। আশির দশক থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ানকে আটকানোর জন্য উগ্র ধর্মান্ধ সৌদি জঙ্গিদের মাধ্যমে আমেরিকানরা প্রথম এখানে ধর্মীয় মৌলবাদ রফতানি করে। আজকের তালিবানি উত্থান সেই নীতিরই বিষফল। এটা নিশ্চিত যে তালিবানিরা পালটাবে না। প্রতিদিন মধ্যযুগীয় বর্বরতার নতুন সব নমুনা প্রকাশ্যে আসছে। কিছু অসমসাহসী মহিলা এবং সামান্য কিছু জায়গায় সর্দারদের মিলিশিয়া প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে। এটা চলবে, কারণ আফগানিস্তান এমন একটা দেশ যেখানে যুদ্ধ চিরন্তন। একটাই রাস্তা, আফগানদের তাঁদের নিজেদের মতো থাকতে দেওয়া হোক। হয়তো তাতে আফগানিস্তান আগামী দিনে সৌদি আরবের মতো একটা ‘সভ্য’, ‘আধুনিক’ (যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি পাওয়ার জন্য কয়েক দশক ধরে অপেক্ষা করতে হয়) মৌলবাদী দেশ হয়ে উঠতে পারবে। ইতিহাস বারবার শিক্ষা দিচ্ছে যে বহিরাগত শক্তি সেখানে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে শুধুমাত্র হিতে বিপরীতই হবে। ... ...
প্রফেসরের ধারণা এর নিচে লুকানো আছে আরো নানা রহস্যময় ও অজানা জিনিস। তাঁর অনুমান সঠিক বলেই প্রাথমিকভাবে দেখা গেল। সেই মন্দিরের নিচে সন্ধান পাওয়া গেল অমূল্য সম্পদের এক গলির৷ সেই দেওয়াল জুড়ে অজানা হায়রোগ্লিফিকস্৷ ... ...
ভোগান্তি হয়েছিল অবিদুল্লাহেরও। ওর চোখ টেনে কী যে দেখেছে, জামার উপর চক দিয়ে দাগ টেনে দিল। ওকে টেনে একদিকে নিয়ে গেল আরও কীসব পরীক্ষা করতে। এইসব প্রশ্ন, তত্ত্বতালাশ পেরিয়ে জার্মান কসাই, ইহুদি দর্জি, জাপানি সুসি কারিগর, নরওয়ের চাষি, পোলান্ডের সিগার কারখানার কর্মী সবাই নেমে গেল। তারা কেউ যাবে পেনসেলভেনিয়া, কেউ মিশিগান, কারো রাস্তা ভার্জিনিয়ার দিকে। রয়ে গেল শুধু বারো জন চিকনের ব্যাপারি। আর দুজন চিনা। চিনাদের ব্যাপারটা আরও গোলমেলে, চাইনিজ এক্সক্লুসান অ্যাক্টে ওদের এই দেশে ঢোকাই এখন মুশকিল। তার উপর ওদের কথাও কেউ সহজে বুঝতে পারে না। ... ...
আমার যেমন হয় – সন্ধেবেলা হলেই খিদে পেয়ে যায়! গেস্ট-হাউসে ঢুকেই খাবার টেবিলে বসে পড়ার ধান্ধা করছিলাম, যে কোনো একটা চেয়ারে। পিছন থেকে টান দিল এক কলিগ – সেই প্রথম জাপানে বসার এটিকেটের সাথে পরিচয়। এই নিয়ে আলাদা করে একটা লেখা হয়ে যাবে – পদমর্যাদা অনু্যায়ী বসার ব্যবস্থা করা হয়। যারা সর্বোচ্চ পদমর্যাদার লোকজন – তাদের বসার ব্যবস্থা প্রথমে এবং তারা যেখানে বসবে, সেগুলোকে বলা হয় ‘কামিজা’। কম পদমর্যাদার লোকেরা যে স্থানে বসবে, সেগুলোকে বলা হয় ‘সিমোজা’ .... আমাদের বসতে বলল সেই ঘরে ঢোকার দরজার থেকে দূরের চেয়ার গুলোতে। এটাও একটা রীতি – অতিথিদের বসতে দেওয়া হয় দরজার থেকে দূরে, আর দরজার কাছে থাকবে হোস্ট। এর কারণটাও বেশ ইন্টারেস্টিং – এই রীতি চালু হয় বহু বহু আগে, জাপানের ফিউডাল পিরিওডে – যেখানে দুমদাম শত্রুর আক্রমণের বেশ চল ছিল। আমাদের মত জাপানীদেরও বিশ্বাস অতিথি নারায়ণ – তাই অতিথিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রবেশদ্বারের থেকে সবচেয়ে দূরে বসতে দেওয়া হত। ... ...
তা' গড়পড়তা বাঙালী যে মাদার-ফিক্সেশনে ভোগে সে কথা তো অনেকেই মনে করেন। তাই তারা বৌ আনতে যায় না, বলে - মা, তোমার জন্যে দাসী আনতে যাচ্ছি। (আজকের কোলকাতার প্রজন্ম নিয়ে কথা বলছি না, বলছি পূর্ব প্রজন্ম ও আজকের গ্রামীণ সমাজকে সামনে রেখে।) তবু রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিতে চাই, উনি হলেন ইউরোপীয় তথা আধুনিক শহুরে সংস্কৃতির পথিকৃৎ। বাংলা সাহিত্যে ও মননে পরিশীলিত রোম্যন্টিক প্রেমের কাঠামো নির্মাণের বিশ্বকর্মা। এ নিয়ে নীরদ সি চৌধুরি মশায় ওনার "বাঙালি জীবনে রমণী' বইটিতে বিশদ ব্যাখ্যা করেছেন। দেখিয়েছেন বংকিমের ইংরেজি উপন্যাস "রাজমোহন'স ওয়াইফ"এ পুকুরে স্নান সেরে ফেরা ভিজে কাপড়ের মেয়েদের দেখে সরস মন্তব্য করা পুরুষরাই বাঙালির তৎকালীন সমাজের সিংহভাগ। তাই হেমেন মজুমদারের নিজের স্ত্রীকে মডেল করে আঁকা সিক্তবসনার ছবির এত কাটতি। তাই "চলে নীল শাড়ি নিঙারি নিঙারি পরাণ সহিত মোর" বা একটু পরিশীলিত "নীলাম্বরি শাড়ি পরি নীল যমুনায়, কে যায়!" একেবারে বাঙালির প্রাণের গান। নীরদ দেখিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের সফিস্টিকেটেড "বিধি ডাগর আঁখি যদি দিয়েছিলে" নয়, ভারতচন্দ্রের "দেখিলাম সরোবরে কোন এক কামিনী, কোনমতে মোর সনে বঞ্চে এক যামিনী' আমাদের পুরুষমানসিকতার সঠিক প্রতিফলন। ... ...
নেজওয়ান দরবিশ। জন্ম ১৯৭৮। জেরুসালেনবাসী। এ সময়ের আরবি কবিতার নক্ষত্র। এ পর্যন্ত কাব্যসংকলন আটটি। পনেরোটি ভাষায় অনূদিত। মেহমুদ দরবেশ ও পূর্বজ মহান আরবি কবিদের থেকে তাঁর স্বর একেবারে ভিন্ন। আমরা বাধ্য হই সেই স্বর ‘হৃদয়ে পেরেক দিয়ে গেঁথে’ নিতে। লিখছেন পাকিস্তানের কবি অফজ়াল আহমেদ সৈয়দ। ... ...
তিন নবীন কথাসাহিত্যিকের সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বই। আঙ্গিক ও বিষয়ে বৈচিত্রময়। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক। ... ...
গ্রীষ্মের রাতে নদীর দিক থেকে হাওয়া বাতাস খেলে যায় শহরের বুকে। মল থেকে বেরিয়ে তিনবারের চেষ্টায় সিগারেট ধরালো পঙ্কজ। পার্কিংএর দিকে হাঁটল। গাড়ির দরজা খুলতে যাবে, যেন হাওয়া ফুঁড়ে বেরিয়ে এল এক মূর্তি- ফাটা জুতো, মলিন জামা প্যান্ট, গোঁফ দাড়ি, লম্বা চুল- মুখ থেকে ভকভক করে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে, একহাত পঙ্কজের দিকে এগিয়ে দিয়েছে, অন্যহাত পিছনে। পঙ্কজের হৃদয়ের বরফ আতঙ্কের উত্তাপে গলতে শুরু করেই আবার জমাট বেঁধে গেল। পার্কিং লটের আলোয় লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে তার মনে হল, যে নিরানন্দ জগত থেকে আগত একমাত্র মানুষ মনে হচ্ছিল নিজেকে , এ লোক সেই জগতেরই কেউ। এই আলোয়, এই নিয়ন সাইনের নিচে যাকে মানায় না। পঙ্কজের সামনে দাঁড়িয়ে হাত পাতল সেই লোক। ... ...
প্রয়াত হলেন প্রদীপ চৌধুরী। হাংরি আন্দোলনের পুরোধা এই কবি তাত্ত্বিক ভাবে কবিতাকে বুঝতে চেয়েছিলেন। শিক্ষিত ও মুখরোচক শব্দের প্রতি তাঁর কোনো আনুগত্য নেই। নান্দনিকতার অজুহাতে কবিতায় যা কিছু বর্জন করা হয়, তাদেরই নিজের কবিতায় স্থান করে দিতে চেয়েছেন। লিখছেন রাহুল দাশগুপ্ত ... ...
বাংলা করে বললে, এই রাজ্যের শনির দশা চলছে। একের পর এক গ্রাম মফস্বল থেকে রাজনৈতিক কর্মী বা তার পরিবারের মানুষের হত্যার খবর আসছে। হত্যার বহর বাড়তে বাড়তে ঘরে আগুন দিয়ে গণহত্যার খবরও আমরা দেখতে বাধ্য হলাম, গতকাল, বীরভূমের বগটুই গ্রামে। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এ অধ্যায়ে এমসালালো-র দিকে রওনা হয়ে মুকনডোকু নামের জনপদ পার করে উয়ানজি নামের গ্রামে পৌঁছনোর কাহিনি। তর্জমা- স্বাতী রায় ... ...