জোর? জোর করার কথা আসে কোথা থেকে? – বলেন আবুবক্র্, মোগল সম্রাট আকবরের জন্মের কথা জানেন তো? তাঁর জন্মের সময় তাঁর পিতা যুদ্ধপর্যুদস্ত হুমায়ুন কিছু পারিষদ এবং গর্ভবতী যুবতী সম্রাজ্ঞীসহ অমরকোটের রাণার দুর্গে আশ্রিত। সেই অবস্থায় পুত্র জালাল উদ্দিন মহম্মদ আকবরের জন্ম হয়। পারিষদদের কাছে মহার্ঘ কিছু আছে কিনা খোঁজ করতে করতে জৌহর নামক একজন পণ্ডিত আমীরের কাছে দু'শো খোরাসানী স্বর্ণমুদ্রা, একটি রজতনির্মিত রিস্টলেট এবং এবং খানিকটা মৃগনাভি হুমায়ুন পেয়ে গেলেন। স্বর্ণমুদ্রা বা রজতনির্মিত অলঙ্কারটি হুমায়ুন গ্রহণ করলেন না। মৃগনাভিটুকু স্বহস্তে বহু ছোট ছোট টুকরো করে উপস্থিত সকলকে একটি করে টুকরো তিনি উপহার দিলেন। নিজের শরীরজাত যে মৃগনাভির সুগন্ধে মাতোয়ালা মৃগটি নিজেই উন্মাদগ্রস্ত হয়, সেই গন্ধে বহু যোজন আমোদিত হল। মঙ্গলাচরণ করে হুমায়ুন উপস্থিত সকলকে বললেন, আপনারা প্রার্থনা করুন, এই আশ্চর্য সুগন্ধের মতো আমার এই সদ্যোজাত পুত্র আকবারের সুকর্মের ফল এবং যশ যেন দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ... ...
তরমুজওয়ালা ভীত হয়ে বললেন স্যার এই ফসল নষ্ট হলে বাঁচবো কী করে ? পুলিশ টাকা আদায় করে ছাড়ছে। তরমুজওয়ালার ছিল ৩৮০ টাকা। ২০০ টাকা নিয়ে ছাড়ল। যা হয়ে থাকে তাইই হচ্ছে অনেক জায়গায়। এই অভিযোগ শুনেছি অনেক। সত্য মিথ্যা যাচাই করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। তাঁদের বাইরে এইসব দুর্নীতিপরায়নরা আছেন। মহামারি, যুদ্ধ, বন্যার সময়ে, আপৎকালীন অবস্থায় দু’রকমই ঘটে থাকে। ভালো এবং মন্দ। বাংলাদেশে তো ত্রাণের চালচুরি নিয়ে কত সংবাদ বেরিয়ে আসছে। গরিব মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না। আমাদের এখানেও এই অভিযোগ কম নয়। এই উপমহাদেশে তা ঘটেই থাকে। এদেশে ওদেশে। কিন্তু আরো মর্মান্তিক ঘটনার কথা ভেসে এল। মানুষের আতঙ্ক কতদূর রক্তের ভিতরে প্রবেশ করলে এমন হতে পারে। বাংলাদেশে এমন ঘটেছে। এদেশেও তা ঘটতে আরম্ভ করেছে। ... ...
করোনা ভাইরাস এর অতিমারী বিলেতে একটু বেশি মাত্রায় সমস্যা সৃষ্টি করছে। সেই সঙ্গে আর একটা ব্যাপার দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান (মানে উপমহাদেশীয়, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রী লঙ্কা), এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মানুষেরা এই নতুন রোগটিতে আক্রান্ত হলে, তাঁদের মৃত্যুর সম্ভাবনা শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি। এই ব্যাপারে স্বভাবতই এই গোষ্ঠীর লোকেদের মধ্যে খানিকটা আতঙ্ক ছড়িয়েছে, সেই সঙ্গে অনেক রকম "তত্ত্বের" পর্যালোচনাও আরম্ভ হয়েছে। ... ...
স্থানীয় লোকদের মধ্যেও খুব প্রভাব পড়লো এগজিবিশনটার। প্রথম কয়েকদিন এখানকার মানুষরা অবাক হয়ে এতো বাইরের লোকের আনাগোনা লক্ষ্য করেছে, কিন্তু ভিতরে ঢুকতে সাহস করেনি। কিন্তু জলধর আর হেমন্ত সে সঙ্কোচ ভেঙে দিলো। কয়েকটা বাচ্চাকে ছবি দেখাতে নিয়ে এলো জলধর। তারা এতো ছবি এক জায়গায় দেখে অবাক। ধীরে ধীরে আসতে শুরু করলো তাদের বাড়ির লোকরা, বাবা-মা, ভাইবোন, সবাই। হেমন্তর উদ্যোগে আদিবাসী ছেলেমেয়েদের একটা 'বসে আঁকো' প্রতিযোগিতাও হয়ে গেলো, এবং প্রতিযোগিতার ছবিগুলোর থেকে গোটা দশেক ছবি প্রদর্শনী কক্ষেও লাগিয়ে দেওয়া হলো। জয়ি বুঝলো শুভেন্দুদা কেন আদিবাসীদের মধ্যে এই ছবির প্রদর্শনী করতে বলেছিলেন। ... ...
রোহতক, এপ্রিল ২০১৮। জনৈক স্মিতা চক্রবর্তি ভারতের সংশোধনাগার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলছিলেন মানসরোবর পার্কে। উনি সংশোধনাগার ব্যবস্থা নিয়ে স্বাধীন ভাবে গবেষণা করেন। সংশোধনাগারগুলির দূরাবস্থার কথা, সেখানকার বাসিন্দাদের দুর্দশার কথা বলতে বলতে হাঠাৎই এক রূপকাথা শোনান তিনি। রাজস্থানের আইজি সংশোধনাগার, এক আশ্চর্য বিপদে পড়ে ওনাকে সাহায্যের জন্য মারিয়া হয়ে ডেকে পাঠান। সমস্যা – সাজাপ্রাপ্ত মানুষেরা সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেতে নারাজ। এমনটা হয় কি? ... ...
যাগগে, আমি মূল প্রসঙ্গ থেকে আমার বায়োগ্রাফিতে চলে যাচ্ছি। সরি। যে কথা বলছিলাম, অনেকদিন পর আবার সন্ধেবেলা কাজ থেকে ফেরবার সময় পথের ধারে একটি মেয়েকে চাঁদের ওপর পা তুলে বসে থাকতে দেখে অনেকদিন পর আবার মাথা গরম হয়ে গেলো। কিন্তু কাজ, আর বাড়িতে কিছু সমস্যা নিয়ে মাথাটা এতই টেনশনে ছিলো, সেদিন আর বেশিক্ষণ ওখানে দাঁড়ালাম না। বাড়ি চলে এলাম। শুধু মেয়েটির চাঁদের ওপর পা তুলে বসে থাকার দৃশ্যটা মনের ভিতর বাকি রাতটা, পরের সারাটা দিন একটা অস্বস্তি দিয়ে গেলো। দ্বিতীয় দিন ফিরছি। এক দৃশ্য। আজও অস্বস্তি। রাগ কম, অস্বস্তিই বেশি। চেষ্টা করলাম বিষয়টা না ভাবার। এরকম ভাবে কয়েকটা দিন কেটে গেলো। ... ...
এই শিশুরা এখানে কেন? এদের সে এখানে আশাই করেনি। কিন্তু শিশুদের উপস্থিতি তার ভালোলাগল। শিশুরা থাকলে সে সবসময়ই নিরাপদ বোধ করে। মা আর বুড়ো অভিনেতা থাকলেও। মঞ্চে অভিনয় করার সময় এবং অভিনয় নিয়ে বইপত্র ঘাঁটার সময়ও সে একইভাবে নিরাপদ ভাবে নিজেকে। কিন্তু বাকি প্রতিটি মুহূর্তে কেমন একটা নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি হতে থাকে তার। সে কিছুতেই স্বস্তি বোধ করে না। কিছুতেই নিজেকে বয়স্ক লোকেদের একজন ভাবতে পারে না। বিশেষ করে শক্তি ও ক্ষমতার সামনে কেমন যেন গুটিয়ে যায়। এখনও গুটিয়েই ছিল। কিন্তু শিশুদের উপস্থিতি সমস্ত জড়তা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বচ্ছন্দ ও সাবলীল করে তুলছিল তাকে। ... ...
উৎসব হয় কোথায়? মণ্ডপে রাস্তায় বাড়িতে মসজিদে গির্জায় কোন বাড়িতে। উৎসব আসে কোথায়? উৎসব আসে মনে। মন না জাগলে মন না মাতলে উৎসবের কোনো মূল্য নেই। প্রকৃতি সুন্দর। ততক্ষণই, যখন আপনার চোখ ও চোখের ভিতরে থাকা মন প্রস্তুত তাকে দেখতে। ... ...
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বের ভুল হল, যখন পরিকল্পনা বহির্ভূত কিছু ঘটনা ঘটেই গেছে তখন জোরেসোরে তার সমর্থনে দাঁড়ানো উচিত ছিল। এভাবে তাঁরা অন্তর্ঘাতকে গিলে হজম করে নিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে সহসা তাঁরা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গেলেন। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস সহসা অতিরিক্ত শঙ্কায় বদলে গেল। ... ...
খেলার শেষে সবাই মুরি যাচ্ছেন বাসে করে। মুরি থেকে ট্রেন। দু ঘন্টার জার্নি। পিকে চুনী একই বাসে। সময় কম, বাস চলছে জোরে, ট্রেন ধরতে হবে তো। হঠাৎ চোখ ধাঁধিয়ে গেল ড্রাইভারের, উল্টোদিকে বোধহয় একটা বাস বা লরি কিছু ছিল, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদের দিকে ছুটছে বাস। বাসে রয়েছেন বসে আগামী দিনের দুই সুপারস্টার, প্রদীপ আর সুবিমল। পিকে আর চুনী। আঠারো মাসের ছোটো বড়। মোটামুটি নাম হয়ে গেছে দুজনেরই। সবাই ধরে নিয়েছে এরা কলকাতা মাঠ কাঁপাবে আর কিছুদিন পরেই। বাস ছুটতে ছুটতে ধাক্কা খেল বড় পাথরে। কাত হয়ে সামলে গেল। ভাগ্যিস গেল। না হলে? ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে আটকে গেছে অভিযান। এ কিস্তিতে অভিযানের জন্য কুলি জোগাড়ের হাজার ঝামেলার কথা। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
যদি আপনি খাবার এবং বাজার ভালোবাসেন, তাহলে এখানে ঘুরতে ঘুরতে আপনি আচ্ছন্ন হয়ে যাবেন। অনেক দোকানের সামনে দেখবেন, চাখার জন্য স্যাম্পেল রাখা আছে – ইচ্ছেমত ট্রাই করে যেতে পারেন। খুব ছোট ছোট কিছু রেস্টুরান্ট আছে, যারা দুই-একটা টেবিল বা বসার টুল নিয়ে স্পেশালিটি কিছু খাবার বিক্রি করছে। এখানে খাবার পাওয়ার জন্য খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। ইচ্ছে হলে চট করে খেয়ে নিন – কিন্তু একটা ব্যাপার মনে রাখবেন – জাপানে খেতে খেতে হাঁটা-কে ব্যাড ম্যানারস্ হিসাবে ধরা হয়। ... ...
ওয়াঙ কিপিং। বিশ্ববিখ্যাত ভাস্কর। দুনিয়ার নানা গ্যালারি, জাদুঘরে ছড়িয়ে আছে তাঁর শিল্প। বাসিন্দা প্যারিসের। সেখানেই পরিচয়। বিপুল খ্যাতি। কিন্তু বোঝার উপায় নেই, ব্যবহারে এমনই অমায়িক। হিরণ মিত্র ... ...
বেড়াতে গিয়ে ঝালমুড়ি, বাদামভাজা, বারোভাজা, আইসক্রিম কত কিছু খাওয়া হয় তার কোনো তালিকা বা হিসাব মনে হয় কেউই রাখে না। তাই আই সব খাবার বিক্রেতার মুখেও হাসি থাকে সর্বদা। কিন্তু জনশুন্য স্থানে এই খাবার কে খাবে? কোভিড তো মানুষ কে গৃহবন্দী করে দিয়েছে। তাই এই ব্যবসায়ীরাও বাধ্য গৃহবন্দী থাকতে। কিন্তু খিদে তো আর বন্দী থাকে না, সময় হলে তার খাবার চাই। সে বুঝবে না কিভাবে তা পাওয়া যাবে। এইসব ব্যবসায়ীদের অবস্থা সত্যিই কোনোভাবেই বর্ণনা করা যায় না। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর তারাও মূলস্রোতে ফিরছে। ... ...
রামপ্রসাদ সেনের বিভিন্ন ধরনের উপাসনামূলক গানের ভিতরেও যেভাবে বাংলার কৃষি সমাজের তৎকালীন পরিস্থিতির বিববরণ আমরা পাই, সেই দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু রামপ্রসাদের অনেক আগে থেকেই সুফি সাধকরা বাংলায়, তাঁদের বিভিন্ন ধরনের সাধনার তরিকার ভেতর দিয়ে উপস্থাপিত করতে শুরু করেছিলেন। এই দিক থেকে বিচার করে বলতে হয় যে, সুফি সাধনাতে এই অর্থনীতি ভিত্তিক আধ্যাত্মিক ভাবধারাকে রামপ্রসাদ সেনও কি অনেকাংশই গ্রহণ করেছিলেন? সেই চেতনা আমরা উনিশ শতকের সমন্বয়বাদী ধারার প্রধান সাধক শ্রীরামকৃষ্ণের ভেতরেও দেখতে পাই। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে গুরু গোবিন্দ রায় (ওয়াজেদ আলি খান) এর কাছ থেকে ইসলাম ধর্মের মূল মন্ত্র এবং কলমা গ্রহণ করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। পবিত্র কোরানের মতে কলমা হচ্ছে স্বীকারোক্তি এবং দেহ মন শুদ্ধির উপাসনা মন্ত্র। ... ...
মালিক! মুখে অনেকটা হাসি এনে বলল, মালিক করে কখনও! আমাদের দেড় মাসের টাকা কিছুতেই দেবে না। একটা গোটা মাস আর দিন পনেরো কাজ করেছিলাম। শেষে অনেক ঝামেলা ঠামেলা করে খাওয়া দাওয়ার খরচ সব কেটে রেখে দিল। অনেক কম দিয়েছিল। আমাদের কয়জনেরটা যোগ দিলে প্রায় এক লাখের উপর টাকা মেরে দিল। বাসের ভাড়াও তো অনেক। বাস ভাড়া নিল এক লাখ পঁচাশি হাজার। কোথা থেকে জোগাড় করব অতো টাকা! সবার টাকা মিলিয়েও তো অত টাকা নেই। বাড়িতে সব ফোন করলাম। আমার বৌ ধার করে টাকা পাঠালো। এই উত্তম মণ্ডলের বৌ কানেরটা বন্দক দিয়ে টাকা পাঠালো। মধুর বাড়ি থেকে সুদে টাকা ধার নিল। সব ঠিকাদারের একাউন্টে দিল। সে আমাদের টাকা দিল। আমার বৌকে অবশ্য সুদ দিতে হয়নি। এমনিই টাকা ধার পেয়েছিল। কপাল ভালো বলেন দিদি! ... ...
জাওয়া ফুল কী জানেন? জাওয়া ফুল আসলে ফুল নয়, তিন বা পাঁচ বা সাত রকমের দানাশস্যের অঙ্কুর, যা তারা বপন করেছিলো নিজের নিজের শালপাতার থালায় সাত দিন আগে, আর অঙ্কুরোদ্গম করিয়েছিলো রোজ সন্ধ্যেতে জল ছিটিয়ে। পুজোর পর চলবে হাঁড়িয়া পান আর সারা রাত ধরে নাচ; নাচে যোগ দেবে মেয়ের দল আর ধামসা-মাদল নিয়ে ছেলেরা। পরের দিন সকালে, ঐ যে মেয়েরা লুকিয়ে রেখেছিলো ভিজে বালিতে দানাশস্য ছড়ানো জাওয়াগুলো, সেগুলোর থেকে অঙ্কুরিত বীজ উপড়ে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে তারা, আর সেগুলো ছড়িয়ে দেবে নিজের নিজের বাড়িতে। করম উৎসব বন্ধুত্বেরও উৎসব। বীজ ভাগ করা হয়ে গেলে মেয়েরা পরস্পরকে পরিয়ে দেবে রাখী, এই রাখীর নাম করমডোর। এখন থেকে ওরা করমসখী... ... ...
লকডাউন পিরিয়ড কর্মহীনতাকে মাত্রাছাড়া করে তুলেছে। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির ফাঁদে পড়ে বহু ছাত্রকেই আয়ের পথ খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে। যে ছাত্রকে আজ সুদিনের আশায় অব্যহতি দেওয়া হল সে ফিরতি বছরে আদৌ স্কুলমুখী হবে কিনা তা বলা মুশকিল। গোটা বিশ্বেই এই আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে যে অতিমারীর প্রকোপ কাটলে ভয়াবহ ড্রপ আউট হতে চলেছে স্কুল কলেজে। ভারতে এর মাত্রা যে ঠিক কত ভয়াবহ হতে পারে তা আন্দাজ করাও মুশকিল। জিরো অ্যাকাডেমিক ইয়ারের প্রাথমিক অব্যহতি নড়িয়ে দিতে পারে ফিরতি বছরের শিক্ষার্থীর হারকেই। তাছাড়া শিক্ষাব্যবস্থা নিজেই অর্থনীতির একটা বড় অংশ। এই গোটা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ভিতর বিভাজন কম নয়। ... ...
সতীনাথ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর বললেন, আমি কলেজে ফিলসফি পড়তুম। প্রথম যখন হেগেল-মার্কস পড়েছি, আমরাও মনে মনে মার্কসকে শ্রদ্ধা করেছি; তোর এখন যে বয়েস, এ বয়েসে হয়তো এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা বেঁচে গিয়েছিলুম, মার্কসিস্ট হওয়ার কথা ভাবিওনি। কেন জানিস? নৈতিক সংঘাত। আমাদের আজন্ম শিক্ষা নাস্তিক মার্কসের মেটিরিয়ালিজ্ম্ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলো আমাদের। তোদের তো আমি সেভাবে মানুষ করতে পারিনি। এই তো, এখনই সন্ধ্যা-আহ্ণিক বন্ধ করে দিয়েছিস, বাইরে কার হাতে কী খেয়ে বেড়াস আমি ভয়ে জিজ্ঞাসাই করি না। আমি এখনো বেঁচে আছি, তা সত্ত্বেও পৈতেটা পর্যন্ত ফেলে দিয়েছিস তুই, যদুগোপাল ন্যায়রত্নের পৌত্র ! ... ...