এই বক্তিয়াররা আরেকটি কাজ খুঁজে পেলেন। দেখা গেলো রাজা বা আমলাদের সামনে সকল নাগরিক নিজেদের কেস ঠিক ভাবে উপস্থিত করতে পারছেন না। বাদী বা বিবাদী তো আর্ট অফ পাবলিক স্পিকিং শেখেন নি। আন্তিফন নামক গরগিয়াসের এক চেলা পরামর্শ দিলেন দুই বিবদমান পক্ষের প্রয়োজন এমন একজন মানুষের যিনি মোটামুটি লেখাপড়া জানেন এবং আদালতে দাঁড়িয়ে কোন পক্ষের যথাযথ বয়ান দিতে পারেন।এই মানুষটি হবেন একজন নিঃস্বার্থ বন্ধু মাত্র যাঁদের কাজ অশিক্ষিত বাদী বিবাদীদের সহায়তা করা। অন্য অর্থে বলা যেতে পারে ইতস্তত ভ্রমণরত বাগ্মীরা একটা কাজের কাজ খুঁজে পেলেন! গ্রিকরা সেটি মেনে নিলেন কিন্তু সাব্যস্ত হলো মামলায় এই সহায়তার জন্য কোন পারিশ্রমিক দেওয়া বা নেওয়া চলবে না। বন্ধু রূপে যদি তাঁরা বিচারকের সামনে অবতীর্ণ হন, টাকা পয়সার প্রশ্ন ওঠে কোথা থেকে। মামলা জিতে কোন পক্ষ যদি সেই বক্তাকে আগোরার কোন শুঁড়ি খানায় দু পাত্তর সুরা পান করায় সেটাকে অবশ্য উকিলের ফি বলে ধরা হবে না। ... ...
আলব্যের কামু-র মতো কালজয়ী ঔপন্যাসিকের ভাষ্যও আজকের আলজেরিয়ার ফরাসি সাহিত্যে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে। ম্যর্সো, কন্ত্র-অঁকেত (ম্যর্সো, পালটা অনুসন্ধান) নামের সাম্প্রতিক উপন্যাসে L’Etranger বা ‘আউটসাইডার’-এর কাহিনিকে পালটা ভাষ্যে পাঠকের সামনে হাজির করে হইচই ফেলেছেন এ সময়ের ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম নাম কামেল দাউদ, যাঁকে হত্যার ফতোয়া জারি করেছেন এক উগ্রপন্থী ইমাম। লিখছেন ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার শিক্ষক পার্থপ্রতিম মণ্ডল ... ...
বিদেশে এসে যুদ্ধ করে টিকে গেলে NRI - আর যে অতি কষ্ট করছে টিকে যাওয়ার জন্য - তার দিকে নাক সিঁটকে সমালোচনা- বিদেশে থাকার এত লোভ!” - নিজে সহজে রাস্তা করতে পেরেছে বলে অন্যদের সংগ্রাম/ ইচ্ছে / স্বপ্ন ছোট করার অধিকার অর্জন করে নেয়। স্টিমুলাস চেক - কী সব কথা! বাড়ি বসে বসে গরিব লোককে খোলামকুচির মত টাকা দিয়ে ওদের কাজ করার মানসিকতা সরকার নষ্ট করে দিয়েছে! আমার চেনা বেশ কিছু অতি স্বচ্ছল পরিবার সেই নিয়মের ফাঁকে দিয়ে স্টিমুলাস চেকগুলো পেল! এক গুজরাটি পরিবার যার বেশ কিছু বাড়ি আর ব্যবসা - দশ হাজারের ডলারের বেশি স্টিমুলাস চেক পেয়ে নানা জায়গা ঘুরে এল। আর আমার সাথে কথা হলেই শুধু বলবে যে কাজ করার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার আনএম্প্লয়মেন্ট বেনিফিট আর স্টিমুলাস দিয়ে শ্রমিকদের অলস বানিয়ে দিয়েছে। অনেক বাঙালি তো লজ্জায় বলতেও পারে না যে স্টিমুলাস পেয়েছে। যে মুখে সমাজ সংস্কার আর দাতব্যের এত গল্প - সোসাইটিতে নাক উঁচু স্টেটাস - ওদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় দয়ার দান যারা নেয় তারা খুবই নিম্নমানের মানুষ। কিন্তু নিজের ভাগ কেউ ছাড়েনা। হ্যাঁ - নিজের ভাগ ছাড়ার তো কথা ও না। কিন্তু অন্য কেউ ভাগ নিচ্ছে সেটা যদি হজম না হয় - তবে তো সমস্যা। ... ...
পখাল একটা বিরাট লেভেলার। রাজা প্রজা, ধনী নির্ধন, সাধু ভণ্ড, সৎ অসৎ, সাহসী দুর্বল, মন্ত্রী জনগণ সব্বাইকে এক পাল্লায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সেটা কী? নিঃশর্ত পখালপ্রীতি। এই একটিমাত্র বিষয় যেখানে কোন মতপার্থক্য চলবে না। রাজার ঘরে যে ধন আছে, টুনটুনির ঘরেও সেই ধন আছে! নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ, পখালরাজের চরণে। এমনকি স্বয়ং শ্রীজগন্নাথদেবও স্নেহ করেন তাকে। ... ...
আমি রবি ঠাকুরের কবিতাও গড়্ গড়্ করিয়া বলিয়া যাইতে পারি। যেমন, ছপ্পড় পর কৌঁয়া নাচে ও আর কত কাল একা থাকব। এরূপ ভীষণ স্মরণশক্তি আজিকালকার বাঙ্গালীদের মধ্যে দেখা যায় না। শুনিয়াছিলাম মহাপুরুষ স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের এইরূপ ভীষণ স্মরণশক্তি ছিল। স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয় বাঘের ন্যায় গর্জ্জন করিতে পারিতেন। এ কারণে লোকে তাঁহাকে বাঙ্গালার বাঘ বলিত। তিনি একবার অত্যাচারী বৃটিশ শাসকের বাড়িতে গিয়া এইরূপ ভয়ানক গর্জ্জন করিয়াছিলেন যে অত্যাচারী বৃটিশ শাসক ভয় পাইয়া তাঁহার নামে একটি অট্টালিকা লিখিয়া দেয়। সেই অট্টালিকাতে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয় একটি কলেজ স্থাপন করেন। সেই কলেজ অধুনা আশুতোষ কলেজ নামে খ্যাত। এইরূপ আরো বহু ঘটনার কথা আমি নানা দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থে পড়িয়াছি। এইভাবে নানা দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের পর গ্রন্থ পড়িতে পড়িতে আমি বর্ত্তমানে একজন কেও-কেটা হইয়াছি। আমার সহিত এখন আর কেহই পাল্লা টানিতে পারিবে না। ... ...
গ্রামের যে রাস্তাটা উড়িষ্যার দিকে চলে গেছে সেই পথ দিয়ে ওরা হাঁটছিল।আমরা ওদের থামালাম।জিজ্ঞেস করলাম,কোথা থেকে এসেছে আর কোথায়ই বা যাবে! লোকগুলো কথা বলতে ভয় পাচ্ছিল।একটু থেমে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চারিদিক দেখতে লাগল।কাঁদতে কাঁদতে ফের চলতে লাগল কোনো জবাব না দিয়ে।আমরা আবার আটকালাম।জানতে চাইলাম একই কথা।কোথা থেকে আসছে ওরা?ওদের মধ্যে একজন বলল,মূর্শিদাবাদে বাড়ি।ওরা হেঁটে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছে।ভিন কোনো রাজ্যে কাজে গেছিল! এমন সময় দেখলাম পেছনে লোকাল পুলিশের গাড়ি।ওরা কোনোরকমে বলল পুলিশ ওদের বর্ডার পার করে দিতে চাইছে।কিন্তু ওরা তো বাংলার মানুষ!! ... ...
জায়গার নাম চক ইসলামপুর। বহরমপুর থেকে কিলোমিটার পঁচিশেক দূরে শহুরে ভাষায় এক হদ্দ মুদ্দের 'গণ্ডগ্রাম'। সেই গ্রাম, যা নবাব থেকে হালের আমল পর্যন্ত সকলেবরে অক্ষত 'মুর্শিদাবাদ সিল্ক' এর প্ৰথম প্রাণকেন্দ্র; খাদি এবং রেশম যেখানে হাত ধরাধরি করে বাঁচে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে যা কিছু রোশনাই, নহবত ছিল, ১৯২৯ এর বিশ্বজুড়ে মন্দার গ্রাসে সেসব ভয়াবহ ধাক্কা খায় । সেসময় গ্রামের ললিতমোহন সাহা, তৎকালীন বোম্বে প্রদেশের অল ইন্ডিয়া স্পিনার্স অ্যাসোশিয়েশন ও খাদি ভান্ডারের প্রতিষ্ঠাতা-কর্তা এবং স্বয়ং গান্ধীর খাদি দ্রব্যাদির বাণিজ্যিকরণের দায়িত্বে থাকা শ্রী জেরাজিনিজির সাথে যোগাযোগ করে রেশমশিল্পকে খাদির সাথে বিবেচনা করবার জন্য বারবার বোঝাতে থাকেন। ভারত জুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের সৌজন্যে গ্রামীণ শিল্পের কদর তখন তুঙ্গে। ললিতমোহন বাবু দূরদর্শী। তিনি আন্দাজ করেন, গ্রামের মানুষের নিজের হাতে তৈরি রেশম শিল্পও যে খাদির সমতুল্য "খাঁটি ভারতীয়"; এটা গান্ধী-জেরানিজিদের একবার বোঝাতে পারলেই মুখ থুবড়ানো সিল্ক-ইন্ডাস্ট্রি শ্মশানের আগেই কল্কে পাবে। ... ...
মহামারীর আবহে মামুলি এক মাস্ককে ঘিরে যে বহুমাত্রিক তাৎপর্য সেটিও আমাদের কাছে ক্রমেই স্পষ্টতর হয়ে উঠছে। শতবর্ষ আগের নিছক গজ আর কাপড়ের মাস্ক আজ বিপণনের অমূল্য সামগ্রী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, তাবড় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া আর সর্বজ্ঞ হিতৈষীদের প্রতিনিয়ত উপদেশ ও পরামর্শের ঠেলায় এবং 'ইনফরমেশন প্যানডেমিকে'র দাপটে সাধারণ মানুষ আজ দৃশ্যতই বিভ্রান্ত। আর মানুষের মনের এই বিভ্রান্তি ও আতঙ্ককে মূলধন করেই দুনিয়া জুড়ে পসরা বসেছে নানা ধরনের মাস্কের। শুধু স্বাস্থ্য সুরক্ষার তাগিদে নয়, সমাজের বিভিন্ন স্তরের চাহিদা, প্রয়োজন, মর্যাদা, ও মানসিকতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে রকমারি মাস্ককে অনবরত বাণিজ্যিক ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে 'কালচারাল' বা 'ফ্যাশন স্টেটমেন্ট' হিসেবেও। ... ...
খাপ কিন্তু শিল্প। চপসিল্পোর মতো খাপসিল্পো। এখানে এডিট স্ক্রিনিং স্ক্যানিং--- ইত্যাদির ব্যাপক কারুকাজ চলে। তো, ওই সুচারু ইন্টেলেকচুয়াল কারুকাজে কমেন্টের 'বাবা উক্ত' শেষের 'ভালোবাসা' 'মানবিক মুখ' কথাটথা ঝড়াকসে বাদ চলে গেলো। এবং ন্যাজাবিযুক্ত স্ক্রিনশটটি পোস্ট হইতে পোস্টান্তরে বাহিত হইতে লাগিলো। ... ...
বহু দিন ধরে ঐতিহাসিকরা, তাত্ত্বিকরা উৎস খুঁজতে চেষ্টা করেছেন এই দশকব্যাপী ভয়ানক, বিষময় সংঘর্ষের। কেউ দায়ী করেন অটোমান সাম্রাজ্যের পতনকে, কেউ ব্রিটিশ চক্রান্ত বা ১৯১৭-র বেলফোর ঘোষণাকে, কেউ বা বারংবার ব্যর্থ হওয়া শান্তিপ্রস্তাব অথবা বহু শতাব্দীর বঞ্চনার ইতিহাসকে। সেইসব কূট তর্কের মধ্যেই দ্রুত বদলে যায় জেরুজালেম, ইতিহাসের চিরস্থায়ী রক্তাক্ত রঙ্গমঞ্চ, যা একইসাথে ক্রিশ্চান, ইহুদি ও ইসলাম ধর্মবিশ্বাসী মানুষের পবিত্র ভূমি। কারুর বধ্যভূমি, কারুর নির্বাসন, কারুর বা প্রতিশ্রুত নিজভূম। ইতিহাসের ক্লাস নয়, একজন সাধারণ মানুষের ডায়রির পাতায় ধরে রাখা সেই আমূল বদলের একটুকরো ছবি, হীরেন সিংহরায়ের কলমে। ... ...
“জানি না”, অস্থির সীতাপ্রসাদ মাথার চুল খামচে ধরল। “কিন্তু গত বছরের সব কটা ঘটনা পর পর খেয়াল করে দেখো। মে মাসে প্রভুজির হুকুম আসল। আমরা ত্রিশূল নিয়ে গ্রাম ঘুরে ঘুরে কবরখানায় হামলা চালালাম। এখানে, ঠিক এই জায়গাতে,” সীতাপ্রসাদ এলোমেলো হাত চালাল চারপাশে, “এখানে আমাদের গোটা দল এসে কবরগুলো একটার পর একটা খুঁড়লাম। এমনকি পচে গলে যাওয়া বডিগুলোকেও ছাড়িনি । যেসব জেনানারা কংকাল হয়ে গিয়েছিল তাদের বাদ দিলাম শুধু। তারপর কাজ হয়ে গেলে লাশগুলো সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখলাম যাতে সকলে দেখতে পায়। পরদিন থেকে টেনশন শুরু হল। বলা হল ওরা অ্যাটাক করবে, তাই পার্টি অফিস থেকে রাত্রিবেলা তলোয়ার আর ত্রিশূল বিলি হল। আমরা হামলা চালালাম। খুনখামারি যা হবার তা তো হল, ওদের সবাই চলে গেল রিফিউজি ক্যাম্পে। সব কিছুই জুন মাসের মধ্যে মিটে গেছে। ভোটার লিস্ট চেক করে দেখো, যে কয়খানা ঘর এখনো টিকে আছে তাদের একটাতেও কোনো জোয়ান মদ্দ নেই। আগাছা সাফ করে দেবার মত উপড়ে ফেলেছি। তাহলে এতদিন বাদে এই মার্চ মাসে এমন কাজ করল কে? কে এমনভাবে খুন করল তিনজনকে? আশেপাশের গাঁও গুলোর কেউ নয় কারণ এই কাজ করবার জন্য গায়ের যা শক্তি লাগে তা ওই কয়েকঘর বুড়োহাবড়াদের মধ্যে নেই। আর এমনভাবে বডিগুলো সাজিয়ে রাখল ঠিক যেভাবে আমরা ঐ লাশগুলোকে সাজিয়ে রেখেছিলাম। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এঅধ্যায় এমভূমি গ্রাম থেকে রওনা হয়ে মাটাবুরু নামের জনপদে পৌঁছনোর কাহিনি। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এ কিস্তিতে উঙ্গেরেঙ্গেরি নদী পার হয়ে মিকেসেহে নামের একটি গ্রামের অভিমুখে যাত্রার কথা। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
প্রায় এক হাজার বছর আগের বাংলা। ১০৭৫ খ্রিষ্টাব্দ, পাল রাজবংশের অন্ধকার যুগ চলছে। সিংহাসন নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই শুরু হয়েছে। সাম্রাজ্যের পরিধি ক্রমশই ক্ষুদ্র হচ্ছে। বাঙালীর গর্ব অতীশ দীপঙ্কর বিক্রমশিলা মহাবিহার ছেড়ে তিব্বতে চলে গেছেন প্রায় ত্রিশ বছর হলো। চারদিকে শুধুই অন্ধকার। তার মধ্যে একটি প্রদীপের দীপ্ত শিখার মতো জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন চিকিৎসক চক্রপাণি দত্ত। প্রথম বিখ্যাত বাঙালি চিকিৎসক, যার রচিত পুস্তক এক হাজার বছর পরেও আজও সমস্ত ভারতবর্ষের আয়ূর্বেদিক কলেজগুলিতে পড়ানো হয়। সে দীপ শিখাও কি নিভে যাবে? ... ...
প্রতিবেশী সবজে বা ক্যাটক্যাটে নীল চেক-লুঙ্গি যে শুধু পোষাক নয়, পুরোনো ঢাকার রিকসার মত একটা পশচাদমুখী, মধ্যযুগীয়, অন্ধকারাচ্ছন্ন মানসিক অবস্থা। সর্বস্তরের নতুন বাঙ্গালি নারী তাই পুরুষকে সাথে নিয়েই আর পিছিয়ে থাকতে রাজি নন। দৈনন্দিনে, সামাজিক অনুষ্ঠানে,সদর্থে খেলানো বা হাতে নেওয়া কুচি ধুতি বা নানা কাট পাজামারা তাই এগোচ্ছে। কিছু কিছু প্রযুক্তি যেমন প্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না, লুঙ্গিও পারলো না। দুটি সুবিধে কিন্তু ছিল। উত্থান সংক্রান্ত। প্রথমটি হল সম্প্রীতির আবহে খোলা আকাশের নীচে শিশিরে ভেজা গ্রাম বাংলায় প্রাত:কৃত্য। দ্বিতীয়টি হল ঘটনাচক্রে অনিচ্ছামৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে কোনো কোনো পুরুষের প্রাথমিক সামাজিক পরিচয় জেনে নেওয়ার সর্বজনীন সুবিধে। এই পদ্ধতি ১৯৪৬ নাগাদ মধ্য কলকাতায় আবিষ্কৃত হবার পর থেকেই জনপ্রিয়তার কারণে প্রায় জাতীয় ঐতিহ্য হয়ে উঠেছিল। অপিমোড-পুরনারীর বাচ্চা তথ্য সংগ্রাহক দের এতোটা জানার কথা নয়। যাই হোক লুঙ্গির বিরুদ্ধে এই প্রবল জনমত প্রতিষ্ঠার পরের নয়, তার অল্প পূর্বের ঘটনা নিয়েই আমাদের সুশান্ত-অনিতার গল্প। তখনো সমাজে তর্ক চলছিল। বিবর্তনের গতি তখনো হয়তো কিছুটা সহমর্মী-শ্লথ ছিল। ... ...
সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বইয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। লিখলেন নবকুমার ও রন্তিদেব রায়। ... ...
আঁকা বাঁকা সরু সরু রাস্তা দিয়ে চলেছি। পুরোন শহর। ঝাঁ চকচকে নয় মোটেই। বরং একটু ধুলোভরা, অগোছালো – পথের পাশের বেআব্রু দারিদ্রে একটু যেন আবছা মত। পথের বাঁক ঘুরলে হঠাৎ হঠাৎ চোখে ভেসে ওঠে এক একটা পাথরে গড়া মায়া – কালের প্রলেপে ধুসর তাদের রং। ট্যুরিস্ট নেই মোটেই – শুধু পাড়ার দু চার জন লোকের ইতস্তত ঘোরাফেরা, নতুন লোক দেখে একবার তাকিয়ে দেখা – ব্যস ওইটুকুই। অটো নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে থামছে, ড্রাইভার শুধু জায়গার নামটা বলে দিচ্ছেন। বেশি কথাবার্তা হচ্ছে না, দুপক্ষেরই ভাষাজ্ঞানে ঘাটতি হচ্ছে। এরই মধ্যে দেখে নেওয়া গেল ইব্রাহিম রোজা। দ্বিতীয় ইব্রাহিম আদিল শাহের স্ত্রী তাজ সুলতানার সমাধি, সুলতানেরও। পাথরের দৃঢ়তার সঙ্গে অলংকরণের সূক্ষ্মতার আর আর্চের পেলবতার মিশেলে তৈরি একটা ছবি। ... ...
এই গত সাত আট বছর নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এই মাধ্যমে কাজ করে, গালাগালি আর ঘৃ্ণার যে পাহাড়নির্মাণ প্রতিদিন দেখে গিয়েছি। তাকে প্রতিহত করার জন্য কেউ কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন! আমি বর্ম পরে রয়েছি মানে বিষয়টা নেই তা তো নয়। অবিরল যে ভাবে লড়ে চলে দুটো গোষ্ঠী, দু'জন ব্যক্তি, তাতে প্রতি পলে ক্ষয়ে যায় সভ্যতার বাঁধনটা। প্রতি মুহূর্তে আলগা হয় সম্পর্ক। রেশ রেখে যায় ঘৃণা। অথচ কেউ কোনও ভাবেই একে নিয়ন্ত্রণ করে না। কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত? ... ...
সারা দেশ যখন জনগণমনঅধিনায়ক সুরে মাতোয়ারা, সারে জাঁহা সে আচ্ছা গাইছে দৃপ্ত উচ্চারণে আর তেরঙ্গা ঝান্ডা দুলিয়ে গাল ফুলিয়ে নারা তুলেছে বন্দে-মাতরম, তখন বাংলা অসম আর পাঞ্জাবের বুক চিরে উঠে আসছে অক্ষম ক্রোধের দীর্ঘশ্বাস, বিশ্বাসহীনতার কাছে পরিচয়ের হারানো অপমানিতের চিখ চিৎকার - "আমগো দ্যাশ ভাগ হৈয়া গেল / মোর দেখ ভাগ হৈ গ'ল / সাড্ডা দেস ভডিয়া গৈ" আজ সেই বিশ্বাসঘাতকাতার, সেই পিঠ পিছে ছুরি মারার, সেই চুর চুর হয়ে ভেঙ্গে পড়া স্বপ্নযাপনের পঁচাত্তর বছর। কি বীভৎস মজা ! এমন দিনে চেতনে বার বার আছড়ে পড়ে গান তার সুর আর বাণী নিয়ে, যে শোনায় তার কন্ঠ, যে শোনে তার অন্তর গেয়ে ওঠে – "যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক / আমি তোমায় ছাড়বোনা মা" ... ...
আজ ওদের দিন। রঙবেরঙে ভর্তি একটা গোটা পাতা, ওরাই বানিয়েছে। সব্বাই মিলে। আমরা শুধু লিংক দিয়ে দিলাম। ... ...