এ জেলার মন্দির স্থাপত্য ধর্মীয় বৈচিত্র্যের দীর্ঘ পরম্পরাবাহী। শাক্ত, শৈব, বৈষ্ণব, জৈন ঘরানার বহু মন্দির আজ নিশ্চিহ্ন। কালের সঙ্গে লড়াই করছে আরও অনেকগুলি। প্রয়োজন এগুলির যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রত্নক্ষেত্রগুলি নিয়ে তন্নিষ্ঠ গবেষণা। সে অভাব পূরণকারী একটি বই। পড়লেন রামামৃত সিংহ মহাপাত্র। ... ...
তিন নবীন কথাসাহিত্যিকের সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বই। আঙ্গিক ও বিষয়ে বৈচিত্রময়। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক। ... ...
আরও অনেক কিছুর সাথে দুর্গা পুজো মনে করিয়ে দেয় আমার রিসার্চ বিষয়ক প্রথম ব্যর্থতার কথা। বাড়িতে বাজি বানাতে গিয়ে—না, বাজি বানাতে ব্যর্থ হইনি, ব্যর্থ হয়েছিলাম হাতে বানানো রংমশাল আর তুবড়ির ধোঁয়া কমাতে। বানাতাম সেসব মাল জবরদস্ত, কিন্তু বড়ো বেশি ধোঁয়া হত। সে অনেক দিন আগেকার কথা। একসময় আমাদের দাদারা লায়েক বয়েসে পৌঁছে ঠিক করল বাড়িতেই বোম-বাজি ইত্যাদি বানাতে হবে। আমরা তখন খুবই ছোটো। কানেকশন এল নেপালদার বন্ধু অদয়দার চেনা সূত্র ধরে—সেই মাস্টার-এর সাথে। মাস্টার নাকি কংগ্রেস জামানায় পেটো বানাত দুরদার—সিপিএম আমলেও বানাত, তবে খুব খাতির থাকলে তবেই। আমাদের পুরানো বাড়ির ছাদেই সেই বোম-বাজি বানানোর শুরু। তুবড়ির খোল কেনা আসত কুমোর বাড়ির থেকে—বাকি বোম বানানোর মালমশলা মেমারি বাজারের এদিক ওদিক হতে। সোরা, গন্ধক, অ্যালুমিনিয়াম/লোহাচুর, স্পাইরো পাউডার ইত্যাদি। তখন অত রেগুলেশন ছিল না সোরা (পটাশিয়াম নাইট্রেট) বিক্রি নিয়ে। পরে খুব কড়াকড়ি শুরু হয়, লাইসেন্স ছাড়া বিক্রি করা যাবে না এবং বিক্রি করলেও কতটা পরিমাণে ইত্যাদি। তবে সত্যি কথা বলতে কী সবই চেনাশোনা সার্কেলের জন্য জিনিস মার্কেটে থাকলে এবং বেআইনি না হলে মালমশালা পেতে কোনোদিন আসুবিধা হয়নি। তবে জমাটি কেস ছিল কাঠকয়লার বেলায়। সঠিক কাঠকয়লা বাজি বানানোর ক্ষেত্রে খুবই জরুরি যাঁদের অভিজ্ঞতা আছে তাঁরা জানবেন। আর কোন্ পাগলা নাকি বলেছিল সবচেয়ে ভালো কাঠকয়লা হয় আকন্দ গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে! ... ...
পাঁঠার বদলে শসা বলি হলেও, সেই শসার জন্য তো আর আলাদা করে খাঁড়া কেউ বানাতো না! ফলে পাঁঠা কাটার খাঁড়া দিয়েই শসা বলি – মশা মারতে কামান দাগার মত! কামারের কাজ খুব সিম্পল ছিল – চোখ-টোখ লাল করে একটু হালকা টলতে টলতে নাকি কে জানে, সাইকেল নিয়ে হাজির হত। সে মদ খেয়ে এসেছে কি খায় নি, তা এক বড় গবেষণার ব্যাপার। তবে তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাত না। এই কামার এসে সামনের পুকুরে ডুব দিয়ে আমাদের দেওয়া নতুন কাপড়টা পরে আর হাতের খাঁড়াটা ধুয়ে নিয়ে এসে মা-দুর্গার সামনে বামুন ঠাকুরের পাশে রাখত। বামুন দাদু নানা বিধ মন্ত্র বলে সেই খাঁড়াকে পুজো করে দিত এবং তার পর উঠে এসে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা কামারের মাথায় মন্ত্রপুত জল ছিটিয়ে দিত। ব্যাস এবার রেডি বলির জন্য। ... ...
শিল্পকলার অন্য ক্ষেত্রে, মানে ছবি আঁকা, মূর্তি গড়া বা চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে যদি কেউ এই ধরনের রেফারেন্স বা কোটেশন ব্যবহার করেন তাহলে কি সেটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে গন্য হবে ? আমার উত্তর হচ্ছে ‘না’। যদি কোন শিল্পী তাঁর পূর্বজ আরেকজন শিল্পীর কোন আইকনিক কাজকে অন্য ভাবে অন্য কনটেক্সটে বা অন্য মাধ্যমে ব্যবহার করে আলাদা কোন বার্তা দিতে চান, তাহলে সেটাও শিল্পের একটা ভ্যালিড পদ্ধতি বলেই ধরে নিতে হবে । এই পদ্ধতিতে সাধারণত শিল্পী তাঁর রেফারেন্স সোর্সকে গোপন রাখতে চান না বরং সেটাকেই তাঁর নিজস্ব সৃষ্টির একটা এন্ট্রি পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করবার চেষ্টা করেন । এ বিষয়ে সেরা উদাহরণ হচ্ছে পিকাসোর পঞ্চাশের দশকের বেশ কিছু ছবি, যেখানে তিনি ভেলাস্কেথ, গোইয়া, এদুয়ার মানে প্রমুখ শিল্পীর আঁকা কিছু বিখ্যাত মাস্টারপিস ছবির পুনর্নির্মাণ করেছিলেন । ... ...
সুবিদিত হলেও, সত্যজিতের পশ্চিমি ধ্রুপদী সঙ্গীতের দখলের কথা যত বলা হয় তত বলা হয়না ওনার হিন্দুস্তানী সঙ্গীতের দখল সম্বন্ধে। পশ্চিমি ধ্রুপদী সঙ্গীতে ওনার দখল ও উৎসাহ তখনকার গড়পড়তা সঙ্গীতবোদ্ধাদের তুলনায় অনেক বেশি ছিল সে কথা বহু-আলোচিত। আমি এমনও শুনেছি বন্ধুমহলে ওনাদের একটা খেলাই ছিল একটি কম্পোজিশনের পিস শুনে চিনতে হবে - কম্পোজার চেনা তো তুশ্চু - কন্ডাকটরকে! কিন্তু আমার ব্যক্তিগত ধারণা হিন্দুস্তানী সঙ্গীতে সত্যজিতের দখল ছিল পশ্চিমি সঙ্গীতের থেকে হয়ত বেশিই। গুগাবার গানের বাজির দৃশ্যটি তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। ছবির দিক দিয়ে দেখতে গেলে গানের বাজির শুরুয়াৎ কিন্তু হাল্লার রাজসভারও আগে, যখন গুপি-বাঘা ভূতের দেওয়া খাবার খেয়ে হাত-মুখ ধুতে ধুতে ও সঙ্গে রাজকন্যার চিন্তা করার সময়ে দোলায় চড়ে টোড়ি গাইতে গাইতে যাওয়া ওস্তাদের সাক্ষাৎ পায়। সেই দৃশ্য শেষ হয় লয় বাড়িয়ে দ্রুতে খেয়াল গাইতে গাইতে যখন "বাপ রে বাপ, কী দাপট"-এর সঙ্গে ওস্তাদজী হাল্লার রাজসভার দিগন্তে মিলিয়ে যান। এও দেখার বিষয় যে গানের বাজিতে একটি কীর্তন আর একটি ঠুংরি ভিন্ন আর সবই যাকে বলে পাকা গানা। ধ্রুপদ ও খেয়াল। মানে পাকা আর আধা-ধ্রুপদীর বাইরে কোন গান নেই। নো লোকগান। নেই যন্ত্রসঙ্গীতও। এটাও স্রেফ একটা অবজার্ভেশান। কোন বিশেষ কারণ নির্দেশ করার চেষ্টা করছি না। ... ...
কেন, দূরত্বের প্রশ্নে এতো বিস্ময় সৃষ্টি হলো কেন? মার্কনির পরীক্ষায় বিস্ময় উদ্রেক হওয়ার পিছনে নিহিত ছিল আর একটা কারণ। মার্কনির সমসময়ে আলোর সরলরৈখিক গতি, আলোর প্রতিফলন, আলোর প্রতিসরণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানতেন আলো হলো এক বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্য সম্পন্ন তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ। তারা জানতেন সমস্ত তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গই আলোর মতো সরলরেখায় চলে। রেডিও ওয়েভ যেহেতু তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ তাই সেই ওয়েভও সরলরেখায় চলে। কোনও প্রতিবন্ধকতা না থাকলে ৫-৬ কিমি দূরের কোনও আলো যেমন স্পষ্ট দেখা যায়, তেমনই ৫-৬ কিমি দূরে রেডিও ওয়েভ প্রেরণ করাটা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। কিন্তু তাই বলে ইংলন্ডে আলো জ্বালালে কি তা কানাডা থেকে দেখা সম্ভব? ঠিক তেমনই ইংলন্ড থেকে রেডিও ওয়েভ প্রেরণ করলে তা কি কানাডায় পৌঁছন সম্ভব? তাছাড়া পৃথিবী পৃষ্ঠ হলো গোলকাকার। আর রেডিও ওয়েভ চলে সরলরেখায়। তাহলে বক্রপৃষ্ঠ বেয়ে সেই তরঙ্গ কি ভাবে পৌঁছল কানাডায়? স্থম্ভিত বিজ্ঞান মহল। ... ...
পুজো আসছে। বাপ্পাদার স্টুডিও ঠাসা দুর্গা। বাঁশ গুলো প্ল্যাস্টিক বাঁধা। কাদামাখা। ... ...
সকাল থেকে চেয়ারে বসে বসে কোমরটা ধরে গেছে, পেটটাও যেন কেমন মোচড় মারছে। ওই খান দুই শুকনো পেয়ারা ছাড়া আর কিছুই জোটেনি, পিকাবুলিটার দ্বারা যদি একটা কাজ ঠিকঠাক হয়! নিজে বেরিয়ে গিয়ে যে কিছু ভালোমন্দ ঢুঁড়ে আনবে তারও জো নেই। অফিস ছেড়ে তো আর এরকম কাজের সময় খাবার খুঁজতে যাওয়া যায় না। অবশ্য অফিস ফাঁকা রাখার দরকার নেই, পিকাবুলি আর টিনিয়া তো আছেই। তবে ওরা কাজের চেয়ে অকাজটাই বেশি করে কী না! ... ...
আমার মা আঁকতে পারেন, প্রতিমা গড়তে পারেন। মামাবাড়িতে প্রতিমা তৈরি হয়। মা, মাসি ,মামা সবাই হাত লাগাতেন শিল্পীর সঙ্গে। সে অভ্যাস মায়ের এখনও আছে। যদিও এখন কিছুই করা হয়ে ওঠে না। ইনটারনেট দেখে আঁকতে ভাল লাগে মায়ের। মাঝেমাঝে তাই আঁকেন। আর আমায় আঁকায় উৎসাহ দিয়ে যান খুব। ভালো লাগে না আমার, যখন মাকে আত্মীয়, পাড়া পড়শীরা বলে ‘অংশু মেয়ে হলে ভালোই হত।আসলে তোমার মতো তো ও অনেকটা’! মা উত্তর দেন না । মনে মনে হয়েতো কিছু উত্তর দেন। তবে আমায় বলেন, ‘আমার অংশু কিসে কম! ওর পড়তে ভালো লাগেনা, তো লাগে না।বাবু আমার পাশ তো করে যাচ্ছে’।আবার কখনও মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলেন, ‘আমার বাবুর মতো কেউ আলপনা দিতে পারে’? বাবাকেও নালিশের সুরে মনের কথা বললেন। বাবা তখনই বলে ওঠেন, ‘ছাড় ওসব কথা’। পুজোতে এবার মামাবাড়ি যাব ঠিক হয়েছে। সোনাদিদি আসছে বিদেশ থেকে। বড়োমাসিও আসতে পারে। সোনাদিদি বিদেশে গবেষণার জন্য গেছে। পুজোর পর আমাদের বাড়িতে থাকবে দু মাস, গবেষণার কাজের জন্য। আমার আঁকার অন্যতম ভক্ত সোনাদিদি। মহালয়ার পর পরই চলে এলাম দাদুর বাড়িতে। কী আনন্দ! দালানে বসে বসে ঠাকুরের সাজ পরালাম। সোনাদিদিও এলো হাত লাগাল। ঢাকের বাদ্যি বাজল। পাড়ার অনেকে এল। সোনাদিদির প্রশংসা করল। আমারও করল। তবে আমাকে, মাকে আবার শুনতে হল অংশু মেয়ে হলে কত ভালো হত। সোনাদিদি শুনছিল আর হাসছিল। ... ...
ইন্দ্র বিশ্বাস রোডের বাসাবাড়ি ছিল প্রায় এক মেসবাড়ি, জংশন ষ্টেশন। তখনো পূর্ব বঙ্গের লোকের আসায় বিরাম নেই। এপারে এসে আমাদের ফ্ল্যাটে সাময়িক আশ্রয় নিয়ে বাসা খুঁজে কাজ খুঁজে চলে যেতেন। অত ভীড়ে পড়ব কোথায় ? কে পড়া দেখায়? সকলেই কথা বলছে, হাসছে, গল্প করছে। ক্লাস নাইনে সায়েন্স পেলাম। নাইন থেকে টেনে উঠতে গিয়ে সেকেন্ড কলে পাস করলাম। খুব খারাপ। ভয়ে আমার বউদির ভাই গটুদা, যে দিল্লি থেকে পাস করে কলকাতায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ত আমাদের ফ্ল্যাটে থেকে, এক বুদ্ধি দিল। প্রগ্রেস রিপোর্টের নম্বরের কালি ব্লেড ঘষে তুলে বেশি নম্বর লিখে দেওয়ার কাজ দুজনে মিলে করলাম। এবং ধরা পড়ে গেলাম বাড়িতে। ... ...
স্কুলে যেতে শুরু করলো সতীনাথ, মহা উৎসাহে। বাবার টোলের মতো আসন পেতে বসতে হয় না সেখানে, চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চি-ডেস্কের ব্যবস্থা। স্যররা চকখড়ি দিয়ে দেয়ালে টাঙানো ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে লিখে পড়ান, সমস্ত ক্লাসের ছেলে একসাথে দেখতে পায় সে লেখা। টিফিনের ছুটিতে দৌড়োদৌড়ি-খেলাধুলো হয়, খুবই মজা। অনেক কিছু নতুন নতুন শিখেছে সে, কিন্তু বাড়িতে শেখাবার কাউকে পাওয়া যায় না। বড়দিকে পড়তে বললেই রান্নাঘরে মায়ের কাছে পালিয়ে যায়, ছোড়দির সাথে খুব ভাব তার, ভাইকে খুশি করার জন্যে খাতা পেনসিল নিয়ে পড়তে বসেও সে, কিন্তু কী বোকা ! এতদিনেও ঠিক ঠিক মতো এ-বি-সি-ডি শিখতেও পারলো না। দশ বার দিন পর পর ফুলকাকা আসে খড়গপুর থেকে, তাকেই সতীনাথ পড়ায়, সে শিখেও যায় চটপট। ... ...
রবীন্দ্রনাথ আমাদের বিশ্বকবি শুধু নন, এই মহামনীষীর লেখার সূত্রে আমরা অনেকেই জগৎ চিনেছি। অথচ কী আশ্চর্য, রবীন্দ্রনাথ পড়লে আপনার কখনও মনেই হবে না নিউজিল্যান্ড বলে কোনো কহতব্য দেশ আছে, বা সেদেশে ইংরেজ বাদে আর কেউ থাকে, বা আর কোনো পুরোনো সভ্যতা ছিল যার সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। প্রকাশিত রবীন্দ্ররচনাবলি ঘাঁটলে নিউজিল্যান্ডের মাত্র একটি উল্লেখ পাবেন ইংরেজের কলোনি প্রতিষ্ঠার সূত্রে একটি প্রবন্ধে। অথচ দেখুন, রবীন্দ্রনাথের সময়, তাঁর বাল্যকালে বহু ভারতীয় তথা বাঙালি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে পাড়ি জমিয়েছেন, নানা অবস্থায়। রবীন্দ্রনাথ কি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের কথা জানতেন না? রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক ক্যাথারিন ম্যানসফিল্ড (তখন ইংল্যান্ডে থাকতেন), নিউজিল্যান্ডে-জাত লেখিকা, রবীন্দ্রনাথ কি তাঁর কথা জানতেন না? নাকি মনে করার মতন কেউ নন বলে মনে করেননি? ... ...
নাজমা বিকেল হলে দোতলার ছাতে আসবে। তারিক একথা জানে। তিতুও। এছাড়াও তারিক জানে, নাজমা স্কুলে কখন বেরুবে, আর, সেই সময়ে তার গায়ে থাকবে একটা অব্যর্থ লালচে টিউনিক। ওই সময়ে, নাজমা, তিতুকে সে বলেছে, একদম নীলমের মাফিক। নীলম, নীলম। চাংকি পান্ডের হিরোইন। সাদা জামা, সাদা প্যান্ট, সাদা জুতো পরিহিত হিলহিলে চাংকি। ওর সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে হাসতে হাসতে নাচে নীলম। উজ্জ্বল নীলম। লাল ফিতে চুলে বাঁধা থাকে তার। গায়ে লাল ফ্রক। পায়ে যেমন জুতো থাকে সেরকম জুতো সে যদিও নাজমার পায়ে দেখেনি। সত্য বোসের বেটি পরে অমন হিলতোলা জুতা, অমন ফ্রক। কিন্তু, দশটায় টিউনিক গায়ে যখন নাজমা বেরুবে, তখন সে আদতে নীলম। ওই সময় তার পথের একপাশে বসে থাকবেই তারিক, হয় হরলালের পুকুরের ধারে, নয় রাস্তাটা যেখানে বাঁক নেয়, সেই তুঁতগাছের নীচে, কোনোদিন তিতু সঙ্গে থাকবে, কোনোদিন সে একা, কিন্তু ওই সময়ে নাজমার হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য দেখবেই তারিক। একই দৃশ্য, তবুও কেন যে নতুন মনে হয়! তার যাওয়ার পরে সঙ্গে তিতু থাকলে তারিক বলবেই, কেমন দেখলি, আজ? আর হয়ত এমনই চাপাগলায় কথাবার্তা হবে তার ও তিতুর: ... ...
কখনও ভেবেছেন কি সিংহ এদেশে গুজরাত ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না, আর বাঘ প্রায় সব রাজ্যে! অথচ প্রাচীন হিন্দু বা বৌদ্ধ ভাস্কর্যশিল্পে সিংহ সর্বব্যাপী আর বাঘ প্রায় অনুপস্থিত। ভারতের জাতীয় প্রতীক অশোকস্তম্ভের শীর্ষভাগ- সেখানেও সিংহ। রাজারা বসতেন সিংহাসনে। বুদ্ধও শাক্যসিংহ। সিংহ থেকে সিংহল, সিংহ থেকে সিঙ্গাপুর। ... ...
হ্যাঁ, তেমনটাই কয়ে গিয়েছেন স্বয়ং আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য। কাজেই হে বাঙালিগণ প্রস্তুত হন। আরও দিন চারেক, এখনও আছে সময়! চটপট পড়ে ফেলুন সটীক বানারসি নির্মাণবিধি, থুড়ি রেসিপি সহ, এই ভাংময় কিস্সা। সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হবে আফ্রিকার গভীরে অভিযান। চলছে জোর প্রস্তুতি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়। ... ...
বাংলা লিখিত সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের যুগ থেকে কোম্পানি-রাজের পত্তন পর্যন্ত রচিত নানা বাংলা গাথা চর্ব্যচোষ্যলেহ্যপেয়র রঙিন বিবরণে ভরপুর। উঠে আসে বাঙালির রসনা-সংস্কৃতির বিবর্তনের ছবি। এ কিস্তি জুড়ে রইল ‘মিট’-এর ছড়াছড়ি, এমনই ছড়াছড়ি যে আজকের যুগে রীতিমতো চোখ ছানাবড়া হয়। ছাগল তো বটেই, সঙ্গে শুয়োর, হরিণ, হাঁস, বেজি, শজারু আবার শামুক, কচ্ছপ আর তার ডিমও! লিখছেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ... ...
চলছে খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। যে ‘বাজরাখিচড়ি’ ওরফে ‘লাদরা’-র এমন নাম রটাল ডাকসাইটে কেতাব জাহাঙ্গিরনামা, কী সে খানা? আদৌ যাবে কি জানা? এ অ্যাডভেঞ্চারের উপরি পাওনা, এ কথা জানা যে মুঘল রাজন্যের পাতে গোমাংস বা এ যুগের সাধের চিকেন দুটির কোনোটিই মোটে পড়ত না! নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...