এখনও ভোর হয়নি বোধহয়। কিন্তু আমার বড্ড শীত করছে। পা দিয়ে লেপ বা কম্বল টানতে গিয়ে দেখছি পা অবশ, নড়ছে না। ঝিঁঝিঁ ধরেছে। সেটা হতেই পারে। ছোটবেলা থেকেই আমার এই রোগটা রয়েছে — অবশ্য যদি এটাকে কোন রোগ বলা যায়। ... ...
আচ্ছা, বয়স্ক লোকগুলো কি একটু বোকা হয়? সবার কথা বলছি না, আমার বাবা মোটেই বোকা ছিলেন না। মঙ্গলা পঞ্চায়েতের কত লোকজন ওনার কাছে পরামর্শ নিতে আসে। কিন্তু যারা একটু ফ্রাস্টু গোছের? যেমন ধরুন গ্রামীণ ব্যাংকের সকরী শাখার হেড ক্যাশিয়ার বিনোদ আংকল? ... ...
সত্যিটা কী? চারদিকে যা দেখছি, যা শুনছি? কিন্তু চোখ তো মরুভূমিতে জল টলটল সরোবর দেখে, কান যে কখনও কখনও স্বপনপারের ডাক শোনে যা অন্য কেউ শুনতে পায় না। তবে কি বোধবুদ্ধি বা অনুভব? জেগে স্বপ্ন দেখছি, নাকি স্বপ্নে জেগে আছি? দুটোর মধ্যে তফাৎ কী? আছে, তফাৎ আছে। স্বপ্নে গেলাস গেলাস এক কুঁজো জল খাও ঢক ঢক করে খাও বা যেমনই ইচ্ছে, তেষ্টা মেটে না। তাহলে আমার যে সারাজীবন তেষ্টা মেটেনি, তবে আমি কি স্বপ্ন দেখছি? স্বপনে রয়েছি গো সখি, আমারে জাগায়ো না। ... ...
কালীপূজোর সময় ছাত থেকে বোতলের সাহায্যে ছাড়া হত হাউইবাজি, পরের প্রজন্মে রকেট বোম। তারাও ফিরে আসত প্যারাবোলার পথেই। কিন্তু প্যারাবোলার গঠন তো রেললাইনের মত সমান্তরাল নয়, বরং খানিকটা চুলের কাঁটার মত; ফলে শুরুর বিন্দু আর শেষের বিন্দু একজায়গায় মেলে না। ভূমি একই, কিন্তু দুটোর মধ্যে বেশ কিছু তফাৎ থেকে যায় । ... ...
মেহতা সাব কেমন যেন চুপসে গেছেন, থ্যালিয়াম সালফেটের ভিসেরা রিপোর্ট দেখার পর কি? কুমড়োপটাশ পরিহারজি আঙুলের নখ খুঁটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোসলে স্যার ফাইলে কোন কাগজ দেখছেন, এবং নিজের কিছু নোটস। এবার সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন। ... ...
এই আচমকা বাম্পার যেন কুমারসাহেবের হেলমেট ছুঁয়ে গেল। উনি ডাক করার সময় পেলেন না। ক্রুদ্ধ চোখে কোসলে স্যারের দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে কেটে কেটে বললেন — তার মানে আপনি ওই ডাইনি দুটোর কথা বিশ্বাস করছেন? ... ...
আজ সারাটা দিন কেটেছে বুক ঢিপ ঢিপ উত্তেজনায়। স্যারের হুকুমে আমরা বসেছিলাম ফরেনসিক অফিসে। আমরা মানে আমি আর স্যার। আমাদের অফিসে সিমরনকে বলা ছিল আগামী দু’দিনের জন্য কাউকে কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট না দিতে। ... ...
এক ঘুম দিয়ে উঠলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, মাত্র তিন ঘন্টা ঘুমিয়েছি। ঘুমটা ভেঙেছে খিদের চোটে। কাল রাত জাগরণ, তায় পাঁচ ছ’ ঘন্টা জার্নি করে বুড়ার থেকে বিলাসপুর এসে চা খেয়ে বিছানায় ডাইভ মেরেছিলাম। কিন্তু উত্তেজনার চোটে ঘুম আসছিল না। বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে আমার চোখের সামনে এতসব ঘটনা ঘটেছে। ... ...
ঘটনা এখন এক্সপ্রেস নয়, রাজধানীর স্পীডে দৌড়ুচ্ছে। দু’দিনের পর আজ ফুরসৎ পেলাম, তাই লিখে রাখছি। আগেই বলেছি, গতকাল আমাদের বুড়ার যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে বোম্বাগড়ের যুবরাজের শ্রাদ্ধ। ... ...
ঝড় বয়ে গেল। এ’বছরের প্রথম কালবোশেখি। আঁধি মানে ধুলোর ঘূর্ণি, কিন্তু এটা ছিল অন্যরকম। এতে আমগাছের বৌর বা মুকুল ঝরে যায়, কাঁচা ঘরের চাল ওড়ে আর বৃষ্টির সঙ্গে ‘ওলে’ বা শিল পড়ে। তারপর কয়েকদিনের জন্য টেম্পারেচার নামে, লোকের মুখে হাসি ফোটে। ক’দিনের জন্য লু’ বা গরম হাওয়ার হলকার থেকে নিস্তার পাওয়া। সে সবই হোল। ... ...