যেখানেই থাকো তুমি, আশেপাশে নানা রকম প্রতিবেশী থাকবেই। তাদের সঙ্গে তোমাকে মানিয়ে চলতে হবে। সে তো সত্যি, তবে অনেক জায়গায় অনেক রকম প্রতিবেশী পেয়েছি। সেই বৈচিত্র আমার অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে ভরপুর করে তুলেছে এবং করেই চলেছে। প্রতিবেশীদের নিয়ে যত রকম অভিজ্ঞতা আছে সব বলতে গেলে আমার বাকি জীবনটাও যথেষ্ট নয়। তাই কিছু অভিজ্ঞতার উল্লেখ করছি।এখন তো পাইকপাড়ায় থাকি। এখানে থিতু হওয়ার আগে বেশ অস্থির বাস গেছে আমাদের। সেই অতীতের কিছু ঘটনা বলব আজ, কিছু এখনকার সময়কার। কিছু নাম পাল্টে দিতে হবে।অনেক দিন আগে কাঁকুলিয়া ক্রসিং পার হয়ে একটা রাস্তায় বড়সড় বাড়ির একতলায় ঘিঞ্জি দু'টো ছোট্ট ঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভাড়া থাকতাম। আলো ... ...
মানুষের রসবোধ ব্যাপারটা আমাকে বরাবরই খুব টানে। এখানে আজ এমন কতকগুলো কথার উল্লেখ করব যেগুলো দোকানবাজারে ও রাস্তায় শোনা। প্রাত্যহিক জীবন থেকে পাওয়া। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত মজার কথা সেগুলো। বাজার মানেই টাকাপয়সার শুকনো লেনদেন আর রসকষহীন বিকিকিনি, এমন মোটেই নয়। বাজারে কান পাতলে নানা রকম কৌতুককর কথাবার্তা কানে আসে যা শুনতে বেশ ভালোই লাগে। প্রথমে বাজারি রসের কথাই বলি। এক দিন আমাদের চুনীবাবুর বাজারে এক ভদ্রমহিলা কাঁচা পাতিলেবু কিনছিলেন। ছোট্ট তাজা সবুজ লেবু পছন্দ করে বললেন - " রস হবে তো?" সব্জি বিক্রেতা বলল - "দিদি, রস চাইলে আপনাকে বয়স্ক, পাকা লেবু নিতে হবে।" সন্দেহ নেই, দীর্ঘ দিন বেচাকেনা ... ...
সুগন্ধশুভশ্রী রায়এই কাহিনী খুশবু নামে একটি প্রান্তিক মেয়ের। এই লেখায় তার নাম পাল্টে দিয়েছি। খুশবু আমাদের আবাসনে পরিচারিকার কাজ করত এক সময়। সেই সূত্রে আমাদের সঙ্গে তার পরিচয়। মেয়েটি দেখতে ভালো, অসম্ভব সুন্দর বড় বড় চোখ, ছিপছিপে গড়ন।আমাদের আবাসনের কাছে পাইকপাড়াতেই মেথরপট্টিতে তার বাড়ি। এখানেই তার জন্ম। গরীব পরিবারের মেয়ে, শৈশব থেকেই খাটতে অভ্যস্ত।বছর পনেরো বয়সে মেথরপট্টিতেই তার বিয়ে হয়। বর, দুই দেওর ও এক ননদ নিয়ে বড় সংসার। বিয়ের পরেও তাকে আগের মতোই খেটে খেতে হ'ত।পরপর দুটি ছেলে হ'ল তার। ঘরেবাইরে খাটাখাটনিও বাড়ল। বর অল্প রোজগার করত তবে মারধর করত না। মোটামুটি সুখেই ছিল তারা।কিন্তু এই সুখ স্থায়ী হ'ল ... ...
অনেকভাবে মানুষকে ঠকানো যায়। এই লেখায় আমি জিনিসপত্র কেনাকিনি সংক্রান্ত ঠকানো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। বাবা একটা ঘটনা নিজের চোখে দেখেছিল। এরকম নাকি শেয়ালদা স্টেশনে হামেশাই হ'ত। যাই হোক, বাবা যা দেখেছিল- একটা লোকাল ট্রেন ইন করল। শত শত যাত্রী নামল। তাদের মধ্যে কয়েকজন প্ল্যাটফর্ম থেকে না বেরিয়ে এটা ওটা দেখছিল। একজন যাত্রী ব্যাগবিক্রেতা এক হকারের সামনে ... ...
কম মৃত্যু দেখলাম না জীবনে। বেশিরভাগই স্বাভাবিক মৃত্যু। তবে একটা মৃত্যুর কথা জীবনে ভুলব না। চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি। সেটা দুর্ঘটনা তো বটেই, সেই সঙ্গে খুন বললেও ভুল বলা হবে না। তবে তার সঙ্গে মানুষের যে নিষ্ঠুরতা আর পলায়নী মনোবৃত্তি দেখেছি, তা আমাকে অনেকটা বিশ্বাসহীন, উদ্ভ্রান্ত আর অস্থির করে তুলেছিল। বুঝতে পেরেছিলাম, মানুষ আসলে সভ্য প্রাণী নয়। এখনকার মানুষ আসলে হৃদয় মরে যাওয়া একটি প্রাণী। যাদের হৃদয় মরে গেছে ... ...
এটা একটা স্মৃতিকথা। খুব সামান্য এক মানুষের যার নাম শুভশ্রী, পদবী রায়, ডাকনাম মৌ।বাড়িভাড়া, কলকাতায় থাকা এ সব নিয়ে ভয়াবহ স্মৃতি আছে আমার। আমার জন্ম দক্ষিণ কলকাতায়। গোলপার্কের ও দিকে একটা জায়গায়। মামারবাড়িটা ওখানেই ছিল।বাবার তো রাজ্য সরকারে বদলির চাকরি। আমার জ্ঞান হয় সোনামুখীতে। ওখানেই হেলথ সেন্টারে আমার বোনের জন্ম। দুই বোনের মধ্যে বয়সের তফাত দু' বছর আট মাস। যাই হোক, ওই সময়টায় মফস্বল শহরগুলোতে কম টাকায় ভালো বাড়ি পাওয়া যেত। সোনামুখীতে বেশ বড় একটা বাড়িতে থাকতাম আমরা। সেটার কথা বেশি মনে নেই। একটা টানা বারান্দা ছিল মনে পড়ে। পরে সেই বাড়িটা ছেড়ে আরেকটা বাড়িতে যাই। সেটার কথা অনেক বেশি ... ...