আমি মাঝারি মধ্যবিত্ত হলে কী হবে? আমি আদতে বুখারার আমীর। ... ...
পোপ অষ্টম ক্লেমেন্ট (১৫৩৬-১৬০৫) অত্যন্ত বিরক্ত। নিকোলো মেকিয়াভেল্লির রচনাগুলো সর্বনাশ করছে ক্রিশ্চিয়ান সমাজের। এ কেমন জীবনধারার কথা বলছেন তিনি? অর্থ উপার্জন, পার্থিব সাফল্য - অবস্থা অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ? ক্ষেত্রভেদে ভালো ও মন্দ সমার্থক? অসম্ভব। লোভের দেবতা ম্যামনের কাছে নিজেকে বেচে দিয়েছিলেন নিশ্চয়ই মেকিয়াভেল্লি। শয়তানের কাছেও হতে পারে। তাঁর রচনাকে নিন্দা করছে পবিত্র চার্চ। কোনও ধর্মনিষ্ঠ ক্রিশ্চিয়ান তাঁর লেখা পড়লে নিশ্চিত নরকগামী হবে। মেকিয়াভেল্লি কিন্তু মতের স্বপক্ষে যুক্তি দিতে পারতেন। জানাতে পারতেন, তাঁর দর্শন বিশ্বের এক প্রাচীনতম দর্শনকে অনুসরণ করে, যেখানে অর্থ আর ধর্ম জীবনচর্যার দুই অভিন্ন অঙ্গ। বলতে পারতেন কূটনীতিতত্ত্ব। উদ্ধৃত করতে পারতেন এক দীর্ঘ শ্লোক। ... ...
স্টাফরুমে শ্মশানের স্তব্ধতা। সকলের মাথায় হাত। শুধু সেকেন্ড মাস্টারের মুখে বিজয়ীর হাসি। হেডমাস্টারকে উদ্দেশ্য করে বললেন - আমি আপনাকে সাবধান করেছিলুম। এসব অনার্স, ফার্স্ট ক্লাস এই ভুরশুটপুর হাই স্কুলে চলে না। শুনলেন না। আমার মেজ ভায়রার সেজ ছেলে রেডিই ছিল। এখন সামলান। সাহেব ইনসপেক্টর। এইড তো গেলই। স্কুলই না তুলে দেয়! হেডমাস্টার আমার দিকে এমনভাবে তাকালেন যেন আমি ওঁর আরাধ্য দেবতা বঙ্কিমবাবুকে গালমন্দ করেছি; নয়তো ওঁর সাধের কলাবাগান তছনছ করে দিয়েছি। চোখ ছলছল করছে। ধরা গলা। - এটা কী করলে দেবমাল্য? ইনসপেকশনের সময় ইংরিজিতে কথা বলতে ওই অলম্বুষকে বারণ করোনি? দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। হেডস্যারর বাগানের কোণার ঘরটায় থাকি। ওঁর গৃহেই আহারাদি। ... ...
বাবার দেওয়া নামটাকে প্রকাণ্ড এক ঠাট্টা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না রণবিজয়ের। জীবনের রণক্ষেত্রে পরাজয় ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না তিনি। হ্যাঁ, তিনি ইতিহাসের পণ্ডিত, বিদেশের জার্নালে তাঁর লেখা ছাপা হয়, কলেজের অধ্যাপক, বাবার রেখে যাওয়া বসতবাড়ি আর সম্পত্তিও আছে। তবু, তিনি একেবারে একা। মা চলে যাওয়ার পর তো আরও বেশি। ছেলের বিয়ে দিয়ে যেতে পারেননি বাবা, মা কেউই। রণবিজয় সহপাঠিনী রত্নাকে ভালোবেসেছিলেন। কিন্তু, মনের কথা বলবেন কী করে ঠিক করে উঠতে উঠতেই রত্নার ছেলের অন্নপ্রাশনের কার্ড এসে পৌঁছলো। এই একটি কারণের জন্যই রণবিজয় মনে করেন তাঁর নাম পরাজয় বা পরাস্তকুমার রাখলে ভালো করতেন বাবা। তিনি অসম্ভব লাজুক ... ...
হাসি-রাগ-আলো: পরশুরাম ও কিছু ভাবনা To laugh at fate through life’s short spanIs the prerogative of Man…ষোড়শ শতকে হাসির এই ভূমিকার কথা বলেছিলেন ফ্রান্সের রাবলে। আর, এখন পাশ্চাত্যের তত্ত্ববিদরা হাসিকে বলেন, ‘ইভেন্ট’। যে হাসাচ্ছে, আর যে হাসছে, তাদের সম্পর্কের মধ্যে খুঁজে পান বহু মাত্রা ও স্তর।তাঁদের বিচারে,হাসি কখনও নিরাপদতম ব্যক্তির আত্মপ্রকাশের চিহ্ন, কখনও বা আত্মগরিমা (যাকে নিজের লেভায়াথান বইতে ইংরেজ দার্শনিক টমাস হবস, গ্লোরি নাম দিয়ে, বিবাদের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন)-র উদযাপন, আবার কখনও হাসির মধ্যে তাঁরা খুঁজে পান, এমন কিছু উপাদানের সংজ্ঞাতীত অবশেষ যা আমাদের অস্থির করে। ... ...
দুর্গেতি দৈত্যবচনো হপ্যাকারো নাশবাচকঃ।দুর্গং নাশয়তি যা নিত্যং সা দুর্গা বা প্রকীর্তিতা।বিপত্তিবাচকো দুর্গশ্চকারো নাশবাচকঃ।ত্বং ননাশ পুরা তেন বুধৈদুর্গা প্রকীর্তিতা।। (শব্দকল্পদ্রুম)হিন্দুপুরাণে দুর্গার আবির্ভাব নিয়ে একটা কথা কাউকে বলতে শুনি না। সেটা হলো, এই দেবীটি মোটেই ‘মেয়েলি’ নন। যে কাজটা তিনি সবচেয়ে ভালো পারেন, সেটা যুদ্ধ করা। তিনি কোনও পুরুষ দেবতার অধীন নন। তাঁর বাহিনীতেও কোনও পুরুষ নেই। তাঁর সহযোদ্ধা রক্তপিপাসু, ভয়াল সপ্তমাতৃকা আর যোগিনীরা। আদিম, বন্য তাঁদের প্রকৃতি। আর্য প্যান্থিয়নের প্রথম ওয়ারিয়র গডেস মধু বা আসব পানে অভ্যস্থ, মাংসভোজী। খুব পরিষ্কার ভাবে বলতে গেলে, তাঁর ওপর অনার্য ছাপটা খুব প্রকট।সমস্ত আর্য দেবীদের যা মডেল, তার মধ্যে এই দেবীটিকে প্রচুর এডিট বা সেনসর ... ...