এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • বিপ্লবের আগুন - পর্ব তিন

    কিশোর ঘোষাল
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৩৮৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • [প্রাককথাঃ আধুনিক গণতান্তিক সমাজ হোক কিংবা প্রাচীন রাজতান্ত্রিক সমাজ হোক – বিদ্রোহ, বিপ্লব সর্বদাই প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। নিরীহ, অনুন্নত এবং প্রান্তিক মানুষরা যুগেযুগে কীভাবে উদ্বুব্ধ হয়েছিলেন এবং হচ্ছেন? তাঁরা কীভাবে এগিয়ে চলেন বিপ্লবের পথে? কীভাবে তাঁরা অস্ত্র সংগ্রহ করেন? কোথা থেকে তাঁরা সংগ্রহ করেছেন সেই বহুমূল্য অস্ত্রসম্ভার? যার শক্তিতে তাঁরা রাষ্ট্রশক্তির চোখে চোখ রাখার বারবার স্পর্ধা করেছেন? কখনও তাঁরা পর্যুদস্ত হয়েছেন, কখনও ক্ষণস্থায়ী সাফল্য পেয়েছেন। আবার কখনও কখনও প্রবল প্রতাপ রাষ্ট্রকে তাঁরা পরাস্ত করে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাতেও পুরোন বিদ্রোহ-বিপ্লবের আগুন নেভে না কেন? রাষ্ট্রের পরোক্ষ মদতেই কি এ বিপ্লব চলতে থাকে আবহমান কাল ধরে?]

    ছবি: রমিত চট্টোপাধ্যায়



    [এই ফাঁকে প্রাচীন ভারতের দৈনিক কাল-বিভাগ নিয়ে একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা সেরে নেওয়া যাক। এই লেখায় সে প্রসঙ্গ বারবারই আসবে। আমাদের তিথি মতে যদিও দিনের হিসেবে কিঞ্চিৎ হেরফের হয়, তবে গড় হিসেব ২৪ ঘন্টাই ধরেছি।
    ১ দিন = ৮ প্রহর = ২৪ ঘন্টা = ১৪৪০ মিনিট = ৬০ দণ্ড।
    ১ দণ্ড = ৬০ পল = ২৪ মিনিট = ১৪৪০ সেকেণ্ড।
    ১ পল = ২৪ সেকেণ্ড।
    দিনের প্রহরের হিসাব কিছুটা এরকম –
    প্রথম প্রহর – প্রভাত – ৬ AM থেকে ৯ AM; দ্বিতীয় প্রহর – পূর্বাহ্ন – ৯ AM থেকে ১২ PM
    তৃতীয় প্রহর – মধ্যাহ্ন – ১২ PM থেকে ৩ PM; চতুর্থ প্রহর - অপরাহ্ন – ৩ PM থেকে ৬ PM
    পঞ্চম প্রহর – সায়াহ্ন – ৬ PM থেকে ৯ PM; ষষ্ঠ প্রহর – প্রদোষ – ৯ PM থেকে ১২ AM
    সপ্তম প্রহর – নিশীথ (মধ্যরাত্রি) – ১২ AM থেকে ৩ AM; অষ্টম প্রহর – প্রত্যূষ - ৩ AM থেকে ৬ AM]

    এখন এই বেলা আড়াই প্রহরে রাজপথে পথচারীর সংখ্যা বেশ কম। কয়েকজন রাজপুরুষ ঘোড়ার পিঠে দুলকি চালে নগর পরিদর্শন করছে। সকালের প্রথম প্রহরান্ত থেকেই বিপণিতে ক্রেতাদের ভিড় জমতে থাকে। এখন পথের দুধারের বিপণিগুলিও প্রায় ক্রেতাহীন। সূর্যের তেজ যত বাড়তে থাকে নাগরিক ক্রেতারা গৃহাভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এই সময় বরং আশপাশের গ্রাম থেকে আসে গ্রাম্য লোকজন - ঘোড়া কিংবা গোশকটে। তাদের আশাতেই বণিকরা শূণ্য বিপণিতে ধৈর্য ধরে বসে থাকে। পড়শি বণিকদের সঙ্গে গল্পসল্প করে সময় কাটায়।

    সাধারণতঃ এই গ্রাম্য ক্রেতারা সরল হয়। কথার তুবড়িতে তাদের ভুলিয়ে ফেলা যায় সহজেই। তাদের সঙ্গে কিছুটা তঞ্চকতা করে, নাগরিক ক্রেতাদের তুলনায় বেশ দুকড়ি উপরিলাভ করে নিতে পারে বণিকেরা। তবে আজকাল গ্রাম্য ক্রেতারাও শহরমুখো হচ্ছে কম। আজকাল কিছুকিছু বণিক, গাধার পিঠে, বলদের গাড়িতে পসরা সাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। ঘরের মেয়েরা সরাসরি তাদের পছন্দ মতো বাসন-কোসন, রান্নার সরঞ্জাম, মশলাপাতি, কাপড়চোপড়, প্রসাধনী সামগ্রী হাতে নিয়ে, নেড়েচেড়ে, দেখেশুনে কিনতে পারে। কারণ শহরে আসে পুরুষরা। বাবা হোক, স্বামী হোক, ছেলে হোক, ভাই হোক – পুরুষরা পুরুষই। তারা মেয়েদের পছন্দের ব্যাপারটা তেমন বোঝে না। উপরন্তু তাদের মনে হয়, শহুরে বণিকদের বাকচাতুর্যে পুরুষরা বড্ডো বেশি ভেবলে যায়। তারা প্রায়ই ঠকে, রদ্দি জিনিষ কিনে আনে, বেশি দামে।

    অতএব আজকাল মধ্যাহ্ন আহারে গৃহে যাওয়ার সময় পর্যন্ত শহরের বণিকদের সময় কাটে একঘেয়ে আলস্যে।

    কিন্তু আজ তেমনটা হল না। বানজারা মেয়েদের একটি দল, গান গেয়ে আর নেচে নেচে রাজপথের একপাশ দিয়ে এগিয়ে চলেছে। তাদের চলায় যেন গন্তব্যে পৌঁছনোর কোন তাড়াই নেই! নাচ ও গানের আনন্দেই তারা যেন মত্ত। তারা কোথা থেকে আসছে কেউ জানে না। কোথায় যাবে তাও কেউ জানে না। তাদের ভাষা দুর্বোধ্য। আশ্চর্য তাদের পোষাক-পরিচ্ছদ। ঝলমলে রঙদার – পরনে পা পর্যন্ত লুটোন ঘাগরা, বক্ষে চোলি। ওদের দলে আছে চারজন যুবক পুরুষ। বলিষ্ঠ চেহারা সকলের। তাদের পরনে রঙিন পাজামা আর কুর্তা। চারজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ বাঁশি, ঝাঁঝর আর ব্যাঞ্জো বাজিয়ে নাচ গানের সঙ্গত করছে। তবে একজন – সেই মনে হয় সর্দার – দলের সবাইকে সামাল দিয়ে চলেছে। রাজপথের পথিকদের যেন কোন অসুবিধে না হয়, তাদের চলাফেরায় যেন কোন বিঘ্ন না আসে।

    বিপণি থেকে মানুষজন পথের ধারে এসে দাঁড়িয়েছে। উপভোগ করছে বানজারা দলটির নাচগান আর ওদের উজ্জ্বল বর্ণময় উপস্থিতি। এবং তার থেকেও তারা বেশি উপভোগ করছে, মেয়েদের অপরূপ রূপ আর যৌবন। তরুণ ও যুবক বণিকরা উচ্ছ্বসিত, আঃ মেয়ে তো নয় – যেন একঝাঁক প্রজাপতি উড়ে চলেছে। তাদের সকলের মনেও এখন উড়ছে ওই প্রজাপতির দল। অন্যদিকে বয়স্ক-বিজ্ঞ বণিকদের আড় চোখেও দর্শকামের আবেশ, কিন্তু মুখে বিরক্তি – কোথা থেকে জোটে এই নচ্ছার মেয়েছেলেগুলো, আমাদের ছেলেগুলোর মাথা খাওয়ার জন্যে? কোটালরা করছে কি, দূর করে দিক শহরের সীমানার বাইরে।

    ভিয়েনের রসের কড়াইতে আটকে থাকা মক্ষির মতো দলটির দিকে সকলের মন যখন আবিষ্ট, সেই সময়েই রাজপথে এসে পৌঁছল দুই ঘোড়ায় টানা সুসজ্জিত একটি রথ। রথের গতিতে ধীর লয়। রথের আরোহী চান না, রথের ঝাঁকুনিতে তাঁর পানপাত্রের পানীয় উছলে পড়ুক। অথবা রথের দ্রুত গতির ঝাঁকুনিতে ছিন্ন হয়ে যাক তাঁর মদিরার আবেশ। রথের আরোহী রাজ শ্যালক রতিকান্ত। তাঁর রথের দুপাশে সামনে পিছনে সমগতিতে চলেছে ছজন সশস্ত্র অশ্বারোহী রক্ষী। অনতিদূরের প্রমোদকানন থেকে, এই সময়েই, রতিকান্ত তাঁর বাস ভবনে ফেরেন।

    অহংকারী রতিকান্ত পথের দুধারের পথচারীদের কিংবা বিপণির বণিকদের মানুষের মধ্যেই গণ্য করেন না। পথের পাথরখণ্ড, অথবা পথের দুধারের গাছপালার দিকে তিনি যেমন নির্বিকার চোখে তাকিয়ে থাকেন, খেটে খাওয়া মানুষদের প্রতিও তিনি একই রকম উদাসীন। তবে পথচারীদের মধ্যে দৈবাৎ কোন সুন্দরী রমণীর দর্শন পেলে, তিনি মৎস্যলোভী শিকারী বিড়াল হয়ে ওঠেন। আজ পথের পাশে নাচ-গান গাওয়া বানজারা মেয়েগুলিকে দেখে তাঁর চক্ষুস্থির হয়ে গেল। সুন্দরী, যুবতী এবং নৃত্যগীত পটিয়সী এতগুলি রমণীর একত্র দর্শন পাওয়া – এ যে অভাবনীয় সৌভাগ্য। তিনি সারথিকে রথ থামানোর নির্দেশ দিলেন।

    রথ থামলে তাঁর পাশে পাশে চলতে থাকা অশ্বারোহী রক্ষীকে তিনি বললেন, “অ্যাই, যা তো, মেয়েছেলেগুলোকে আজ সন্ধেবেলা আমার প্রমোদ ভবনে আসার জন্যে নেমন্তন্ন করে আয়। আমি কে পরিচয় দিবি। আর বলবি প্রত্যেকের দুহাত ভরে সোনার মুদ্রা উপহার দেব। ভাল করে বুঝিয়ে বলবি, হতভাগা তোরা যা হোঁৎকা আর মাথামোটা...”।

    রক্ষীপুরুষ দলটির কাছে গিয়ে রতিকান্তর বার্তা দিতেই, মেয়েগুলি নাচ-গান থামিয়ে দিল। একটি মেয়ে গলা চড়িয়ে উত্তর দিল, “আমরা নাচগান করি মনের আনন্দে। আমরা বারনারী নয় হে, যে কেউ ডাকলেই তার নাট মহলে গিয়ে ধেই ধেই নেত্য করে বেড়াব। কথাটা আপনার ছোটরাজাকে স্পষ্ট করে বলে দিন, হ্যাঁ”।
    রতিকান্ত রথে বসে মেয়েটিকে মন দিয়ে দেখলেন, তার কথাও শুনলেন। মুগ্ধ চোখে মেয়েটিকে দেখতে দেখতে তিনি ভাবলেন, এমন জিনিষের স্বাদ তিনি বহুদিন পাননি। আহা, কী ঝাঁজ, কী তেজ, যেমন বুক তেমনে তার বুকের পাটা। নিজের বুকে ওই বুকের স্পর্শই যদি না লাগল – তা হলে তিনি কিসের রাজশ্যালক? রতিকান্ত অন্য রক্ষীকে বললেন, “অ্যাই যে, হাঁ করে দাঁড়িয়ে দেখছিস কি? ওই মেয়েটাকে তুলে নিয়ে বন্দী কর। বেশী ট্যাণ্ডাই-ম্যাণ্ডাই করলে সবকটাকেই ধরে কয়েদ কর – তারপর আমি দেখছি”।

    রক্ষীদের কর্তব্য রতিকান্তকে রক্ষা করা। তাঁকে কেউ আক্রমণ বা আঘাত করতে এলে, তাকে বন্দী করা কিংবা প্রয়োজনে হত্যা করা। কিন্তু এই নির্বিবাদী বানজারা দলটি কাউকেই আঘাত বা আক্রমণ করেনি। এক্ষেত্রে ওদের বন্দী করার কোন অধিকার তো তাদের নেই। রতিকান্তর আদেশ পেয়েও রক্ষীরা যখন ইতস্তত করছে, ঠিক তখনই অকুস্থলে উপস্থিত হল জনা ছয়েক অশ্বারোহী নগররক্ষী। তারা রক্ষীদের কথা শুনেই দ্রুত সক্রিয় হয়ে উঠল এবং ঘোড়া ছুটিয়ে ঘিরে ফেলল বানজারাদের দলটিকে। বাতাসে চাবুক চালাতে লাগল সপাসপ। চেঁচিয়ে উঠল “ছোটরাজাকে তোরা চিনিস না? তাঁর আদেশ অমান্য করার সাহস হয় কী করে? মানে মানে আমাদের সঙ্গে চল, নয়তো চাবকে পিঠের ছাল তুলে দেব”।

    দলের যে যুবকটিকে মনে হয়েছিল দলের সর্দার, সে মাটিতে পড়ে থাকা একটা ঝোলা থেকে ছোট্ট একটা বল্লম বের করে হাতে তুলে নিল। সেই বল্লমের ফলা দুপুরের রোদে ঝলসে উঠল আক্রোশে এবং মুহূর্তের মধ্যে সেটি উড়ে গিয়ে গিঁথে গেল রতিকান্তর গলার ঠিক পাশে আসনের পিঠে। এক চুলের জন্যে বেঁচে গেল রতিকান্ত।
    আচমকা এই ঘটনায়, মেয়েগুলিকে ছেড়ে নগররক্ষীরা ঝাঁপিয়ে পড়ল যুবকটির ওপর। প্রহার করতে করতে মোটা রজ্জুতে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলল তাকে। তারপর তুলে দিল একটি ঘোড়ার পিঠে। বন্দী যুবককে নিয়ে নগররক্ষীরা চলে যাওয়ার আগে, তারা এসে দাঁড়াল রতিকান্তর রথের পাশে।

    একজন নগররক্ষী মাথা নত করে বলল, “আমাদের অপরাধ মার্জনা করবেন, প্রভু। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। আপনি সুস্থ আছেন তো?”

    আতঙ্কে বিবর্ণ মুখ, রতিকান্তর জিভও শুকিয়ে গিয়েছিল। তিনি কোনমতে বললেন, “না, কই? তেমন কিছু তো হয়নি। ঠিকই আছি”।

    সেই নগররক্ষী আসনের পিঠে গিঁথে থাকা বল্লমটি খুলে নিয়ে বলল, “দুশ্চিন্তা করবেন না, প্রভু। আপনি নিশ্চিন্তে বাড়ি যান। আজ রাত্রে হতভাগাকে অন্ধকার কারাগারে নির্জলা উপবাসে রেখে দেব। আগামীকাল প্রথম প্রহরেই ওকে রাজপথের চৌরাস্তার স্তম্ভের পাশে শূলে চড়িয়ে দেব। সকল নাগরিক দেখুক, বুঝুক - এ রাজ্যে দুর্বৃত্তের কী পরিণতি হয়”।

    কিছুটা ধাতস্থ হওয়া রতিকান্ত হতাশ কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন, “কিন্তু ওই মেয়েগুলো? তারা তো পালিয়ে গেল!”

    “ও নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না, প্রভু। ওই দলের প্রত্যেককে আমরা অচিরেই খুঁজে বের করব। তারপর বন্দী করে আপনার সামনে এনে দাঁড় করাব। অনর্থক আপনার অনেক বিলম্ব হল প্রভু, এবার আপনি রওনা হোন। আপনার যাত্রা নির্বিঘ্ন হোক”।

    নগররক্ষী ইশারা করতে সারথি রথ চালনা শুরু করল, এবং আগের মতোই ছজন অশ্বারোহী দেহরক্ষী চলল সঙ্গে। বন্দী যুবককে নিয়ে নগররক্ষীরাও দ্রুত ঘোড়া ছুটিয়ে দিল উলটো দিকে। ওদিকেই নগর কোটালের কার্যালয়, বন্দীশালা ও কারাগার।

    এই গোলমালের শুরুতেই বিপণির ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছিল বণিকরা। আড়াল থেকে নজর রাখছিল পরিস্থিতির ওপর। এ ধরনের ঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কারণ তাদের অভিজ্ঞতা থেকে তারা জানে, এই ধরনের বিশৃঙ্খলা হলেই, সাধারণ জনতা, নগররক্ষী সকলেই বিপণিগুলি এবং বণিকদের উপর চড়াও হয় - অকারণ মারধোর করে এবং লুঠ করে নেয় বিপণির মূল্যবান সামগ্রী।

    এখন রাজপথ জনশূণ্য। পথে একজনও পথচারী নেই। আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে বণিকেরা তাদের সকল বিপণিগুলির দরজা দ্রুত বন্ধ করে ফেলল। তারপর একত্রে ঘরের দিকে যেতে যেতে আলোচনা করল, আজ সন্ধ্যায় আর বিপণি খুলে কাজ নেই। আগামী কাল সকালে পরিস্থিতি বুঝে যা হোক একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।




    ক্রমশ...




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৩৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:402b:995d:e4c7:3fa6 | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪০531177
  • এই বল্লম ছোঁড়া বেদে নেতাই কি ডামল? 
     
    কৌতূহল হচ্ছে ডামল নামটা কোত্থেকে এল জানতে।
  • &/ | 151.141.85.8 | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫৯531178
  • রতিকান্ত এপিসোডটা একেবারে সেই চিন্তা বেন এর জলসত্র অংশের মত! ঃ-) শরদিন্দুর 'রাজদ্রোহী' গল্পের।
  • সমরেশ মুখার্জী | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৩০531187
  • প্রদোষ মানে এতোদিন আমি জানতুণ সন্ধ‍্যা।
    আভিধানিক অর্থ‌ও তাই দেখাচ্ছে।

    কিন্তু কিশোরদা‌র লেখায় দেখলুম অতীতে তা 9AM to 12 Midnight.


     
  • সমরেশ মুখার্জী | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪০531190
  • "আজকাল কিছুকিছু বণিক, গাধার পিঠে, বলদের গাড়িতে পসরা সাজিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। ঘরের মেয়েরা সরাসরি তাদের পছন্দ মতো বাসন-কোসন, রান্নার সরঞ্জাম, মশলাপাতি, কাপড়চোপড়, প্রসাধনী সামগ্রী হাতে নিয়ে, নেড়েচেড়ে, দেখেশুনে কিনতে পারে।"
     
    অর্থাৎ - তখন অনলাইন শপিং না থাকলেও অনসাইট প্রোমোশন - সেল - অন দ‍্য স্পট ডেডেলিভারির ব‍্যবস্থা সর্বকালে‌ই ছিল। তা বেশ।
  • Kishore Ghosal | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১৩531196
  • @ আমিতাভবাবু, @ হীরেনদা, অনেক কৃতজ্ঞতা নেবেন, সঙ্গে থাকার জন্যে। 
     
    @ পলিটিশিয়ানবাবু - গোয়েন্দা গল্পের শুরুতেই খুনীর নাম জেনে ফেলবেন নাকি? ডামল নামটা কোত্থেকে এল আমিও জানি না। 
     
    @& বাবু, হতেই পারে, শরদিন্দু এক সময় গুলে খেয়েছি...
     
    @ সমরেশ - ঠিকই বলেছ, প্রদোষ মানে আমিও জানি - প্রাক-সন্ধ্যে - "প্রদোষকাল ঝঞ্ঝা বাতাসে রুদ্ধশ্বাস" । 
    চলন্তিকা বলছে - সন্ধ্যা, সায়ংকাল (সায়াহ্ন?}। রাত্রি। 
    এই শব্দগুলো আজ আমরা যেভাবে ব্যবহার করি, সংস্কৃত শব্দকারগণের বিধান নিশ্চয়ই  সেরকম ছিল না কারণ এ এম - পি এমের কনসেপ্ট তাঁরা কোথায় পাবেন? 
     
    যেমন, "নিশীথে কী কয়ে গেল মনে..." - এখানে নিশীথ মানে ১২এ এম থেকে ৩ পি এম নিশ্চয়ই নয়.. "আজি যে রজনী যায়, ফিরাইব কেমনে ..."  এই নিশীথ, এই রজনী মানে কবি পুরো রাত্রিটাকেই বোঝাতে চেয়েছেন। .
     
    আবার ত্রিপুরায় যে সময়ে সন্ধ্যা নামে - গুজরাটের দ্বারকায় সন্ধে নামে অন্ততঃ তার আড়াইঘন্টা পরে।  অতএব গোটা ভারতভূমির ক্ষেত্রেও এই নিয়ম আদৌ প্রযোজ্য নয়। আমি খুব সাধারণ - গড় একটা ধারণা দিতে চেয়েছি মাত্র। 
      
     যাই হোক নিজেও ভেবেছ, আমাকেও ভাবালে - খুব ভালো লাগল। 
     
  • Kishore Ghosal | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:০৩531199
  • @ সমরেশ,  বর্ষার তিন/চার মাস ছাড়া, ছোটবেলায় আমাদের গ্রামের দিকে এমন পসরা সাজানো গরুরগাড়ি, খচ্চরের গাড়ি নিয়ে বহু  বেনের পো (বণিক)-কে যেতে দেখেছি। আমার ঠাকুমা ছিলেন দরদাম করার ব্যাপারে তীক্ষ্ণ সচেতন, কিন্তু দিদিমা ছিলেন ঠিক তার উলটো।
    কিন্তু  অন্ততঃ বার দুয়েক দেখে ভীষণ আশ্চর্য হয়েছি - একই ধরনের জিনিষ হয়তো পেতলের ছান্তা দিদিমা ঠাকুমার থেকে একটু কমদামেই কিনতে পারতেন। তার কারণ হয়তো - ঠাকুমার পরিচিত বণিকটি  আমার ঠাকুমা-ঠাকরুনের সামনে এসে, ন্যায্য দামের থেকে অনেক দাম বাড়িয়ে বলত। অন্যদিকে দিদিমার পরিচিত বণিকটি দিদিমাকে ন্যায্যদামই বলত - কারণ দিদিমা একদমই দরদাম করতে পারতেন না। 
    অতএব জীবনে বোকা(?)-রা ঠকে আর চালাক(?)রাই  জেতে - এ তত্ত্বটি সবক্ষেত্রে হয়তো প্রযোজ্য নয়।  
     
    এ ব্যবস্থা চিরকালই ছিল - প্রাচীন ভারতের নিবিড় আন্তর্বাণিজ্য নেট ওয়ার্ক ছিল বিস্ময়কর।  
  • সমরেশ মুখার্জী | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২৯531200
  • "অতএব জীবনে  বোকারা (?)-রা ঠকে আর চালাক(?)রাই  জেতে - এ তত্ত্বটি সবক্ষেত্রে হয়তো প্রযোজ্য নয়।" -  কয়েকবার ঠকে‌ কয়েকবার জিতে এবং অন্তত একবার জীবনের একটি দানে দারুণভাবে জিতে (যার রেশ আজ‌ও চলছে) আমি আপনার সাথে হ‍্যাক্কেবারে সহমত
     
    "আন্তর্বাণিজ্য নেট ওয়ার্ক" - এর কথা জানি না তবে ছোটবেলায় আন্তর্পাড়ার হাঁড়ি মাথায় শোনপাপড়ি / চন্দ্রপুলির বণিকের জন‍্য হা পিত‍্যেশ করে থাকতুম। heart
  • হীরেন সিংহরায় | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৪৮531209
  • কিশোর 
    বাল্যকালে হাইল ব্রোনারের দি ওয়ারলডলি ফিলোসফারস পডি - অর্থনীতি যাঁদের বিষয় নয় তাঁদের পাঠ্য পুস্তক ! 
    আপনার  ঠিক ওই দুয়োরগোডায় ঠাকুমা দিদিমার দরদামের গল্প দিয়ে তিনি বাজারি অর্থনীতির বিবর্তন দেখান ! দেশ কাল পেরিয়ে খুব চেনা মনে হলো দৃশ্যটি 
  • Kishore Ghosal | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:১৭531211
  • হীরেনদা, আমাদের দেশে "অর্থশাস্ত্র" রচনার সূত্রপাত প্রায় ২৩০০/২৪০০ বছর আগে, সেই গ্রন্থে - আমি যতটুকু দাঁত ফোটাতে পেরেছি - আপনি অর্থনীতির লোক আরও ভালো ধরতে পারবেন - একটি আকর গ্রন্থ বিশেষ।  এই গ্রন্থটিতে বাণিজ্য, কর আদায়, শাসন ব্যবস্থা, পণ্য উৎপাদন - বিচিত্র বিষয়ের উল্লেখ পেয়েছি...এই ধরনের ছোট্ট ছোট্ট নানান বিধি-বিধান থেকে অনায়াসে ধারণা করা যায় - মৌর্য যুগ থেকে ভারতের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক উন্নতির কিছু কিছু চিত্র। 
     
    এই নিয়ে কিছু অনধিকার চর্চা করার, ইচ্ছে আছে।  প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে... এইটেই যা ভয়ের। 
  • হীরেন সিংহরায় | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৩৮531213
  • কিশোর
     
    এটি করুন। ইতিহাসের ঘটনার ঘনঘটার ভেতরে অজস্র অর্থনৈতিক মূল আছে। আমাদের স্কুলে কিছুই পড়ানো হয় নি। ফরাসি বিপ্লবের কারন কি?যাহা জান লিখ - তাই লিখে পাস করেছি। মনুর সুদের হিসেবটা জেনেছি অনেক পরে- বর্ন ভেদে সুদের হার
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন