এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ঈদ সমাচার

    মুহাম্মদ সাদেকুজ্জামান শরীফ লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০২ জুলাই ২০১৭ | ১২২৪ বার পঠিত
  • ক্লাস ওয়ান বা টুয়ের বাংলা বইয়ে একটা গল্প ছিল ঈদ নিয়ে। সেখানে একটা লাইন ছিল ‘আজ ঈদ, মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দ’। এই লাইনটা অদ্ভুত ভাবে মাথার মধ্যে থেকে গেছে, ঈদ শব্দটা শোনার পর প্রথম যেটা মাথায় আসে তা হচ্ছে আজ ঈদ মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দ। মনে হয় এই লাইনটাই ঈদের ফুরতি পুরোটা ধরে আছে, যেন শুনলেই মনের ভিতরে একটা খুসির ফোয়ারা বয়ে যায়। তখন বাকি সব কিছু ভিড় করে আসতে থাকে, নতুন জামা, নতুন জুতো সব কিছু সব। 

    ঈদের আগে নতুন জামা জুতো লুকিয়ে রাখা ছিল অবধারিত। কেউ যদি দেখে ফেলল তাহলে সেকি আহাজারি শুরু হত আমাদের। ঈদ কার্ড ব্যাপারটা এখন প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। কি উৎসাহে যে কার্ড কিনে বিলি করতাম!!

    ২৯ রোজার দিন ইফতারের সময় হলেই আমরা শরবতের গ্লাস হাতে নিয়ে দৌড় দিতাম বাহিরে, খোলা মাঠের দিকে, উদ্দেশ্য ঈদের চাঁদ দেখা। নিজেরা খুঁজে পেলে তো পেলামই আর না পেলে বাসায় এসে বসে থাকতাম টিভির সামনে। যদি সরকারি কোন ঘোষণা আসে, সেই আশায়। একবার তো সরকারি ঘোষণা এলো তারাবি নামাজে পর!! মানুষ মোটামুটি ৩০ রোজার জন্য মানসিক ভাবে তৈরি হয়ে গেছিল সেদিন। ২৯ রোজার পরে আর একটা রোজা রাখা যে কি কষ্টের ছিল তা বলে বোঝানো যাবে না। ঈদের ফুরতি মনে হয় কমে যেত রোজা ৩০টা হলে, সব মজা ২৯ রোজায়।  এখন সব কিছুই কেমন ঘোর লাগা সময়ের গল্প মনে হয়। 

    ছোট বেলায় রোজা হত শীতের দিনে। সক্কাল বেলায় উঠে গোসল করে ঈদগাহে যাওয়ার মাঝে ভালই চ্যালেঞ্জ ছিল। কাঁপতে কাঁপতে গোসল করে তৈরি হওয়া। ভাইয়েরা সবাই তৈরি হলে এক সাথে ঈদের জামাতের জন্য বের হয়ে যেতাম।আব্বা সবার আগে তৈরি হয়ে চলে যেতেন সবার আগে। আমরা বের হতাম তার একটু পরে। একটু দেরি হয়ে গেলে দ্রুত পা চালাতে হত, না হলে জামাত মিস করার সম্ভাবনা এবং আরও একটা কারন হচ্ছে ঈদগাহের মূল চত্তরে জায়গা না পাওয়ার ভয়ে। মূল চত্তরে জায়গা না পেলে দাঁড়াতে হত পাসের রাস্তার উপরে বা ঠিক কোথায় তা আল্লাই মালুম। তখন ঈদের নামাজ কে অনেক দীর্ঘ মনে হত। মনের ভিতরে শুধু কখন শেষ হবে, কখন শেষ হবে বাজতে থাকত। নামাজ শেষ হওয়ার পরে শুরু হয় গন কোলাকুলি। পরিচিত, স্বল্প পরিচিত, মুখ চেনা সবাই জড়িয়ে ধরছে একে অপর কে। মুখে ঈদ মুবারক আর কোলাকুলি। ফেরার সময় আর জোট বেঁধে ফেরা হত না আর। দ্রুত যে যেভাবে ফিরতে পারে বাড়িতে। আর বড় ভাইদের দেখতাম তারা তখনই ফিরত না, মাঠে তাদের বন্ধুরা সব আস্তে আস্তে এক জায়গায় জড়ো হতে থাকত, তারপর আর আমারা দেখার জন্য থাকতাম না।বন্ধুদের মাঝে মিশে যাওয়ার আগে খুব কৌশলে জায়নামাজ খানা গছিয়ে দিত আমাদের কারও হাতে। প্রতিবারই নিতে চাইতাম না কিন্তু প্রতিবারই কিভাবে জানি জায়নামাজ গছিয়ে দিতেন আমাদের ছোট কারও হাতে ।বড় ভাইয়েরা বাড়ি ফিরত সবার শেষে , অনেকক্ষণ পরে। আমাদের বাড়ি ফিরে কাজ ছিল দৌড়ের উপরে মুরুব্বি সবাই কে সালাম করা। আমাদের বাড়ি শেষ করে দৌড় পাসের জ্যাঠাদের বাড়িতে। সালামের সাথে সাথে জ্যাঠাত ভাইদের কে গোরস্থানে আসার জন্য বলে আসতাম। সবাই এলে পরে আব্বা গোরস্থানের পাসে দাঁড়িয়ে কবরবাসি সবার জন্য দোয়া করতেন। কবরে শুয়ে আছে উনার বাবা মা ভাই, দেখতাম এত বছর পরেও অশ্রু ধরে রাখতে পারছেন না তিনি। কবর জিয়ারত শেষে সবাই কে ধরে নিয়ে আসতাম আমাদের বাড়িতে। সকালের খাওয়া দাওয়া হত আমাদের বাড়িতেই। এর মাঝেই আমরা সেলামির টাকা তোলা শুরু করে দিতাম।আম্মার কাছে চাইতাম সবার শেষে। আম্মা টাকা দিয়ে আমার সব টাকা গুছিয়ে দিতেন। আমি উনার টাকা সহ আমার সব টাকা আম্মার কাছেই গচ্ছিত রাখতাম।তারপর শুরু হত কে কত টাকা পেল তা হিসাব করা। আর সারা দিনে কয়েকবার করে আম্মার কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিয়ে আবার হিসাব করে আবার আম্মার কাছেই ফেরত দিতাম। আম্মা বিরক্ত হতে হতে যখন চরমে তখন বাদ দিতাম হিসাব চাওয়া। এই টাকার কোন শেষ থাকত না, কিছু টাকা নিতাম কিন্তু তা বেমালুম ভুলে যেতাম। আবার হিসাব করতাম শুরু থেকেই। আম্মা যদি বলত একটু আগে যে নিলি? আমি বলতাম ওইটা তো আপনার কাছ থেকে নিছি, ওইটা কি আমার টাকা? এই ভাবে চলত, টাকা শেষ হত না, আরেক ঈদ চলে আসলেও না। ঈদ সারা দিন কেটে যেত শুধু আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি ঘুরে ঘুরেই। আর যখন থেকে বাড়ির বাহিরে বন্ধু বন্ধব হলো তখন থেকে ঈদের মানে বদলে গেলো।    

    শুরু হত বন্ধুদের বাড়ি ঘোরাঘুরি দিয়ে।তিন চার জন এক হয়ে মান্নার সিনামা দেখা। যখন আরও একটু বড় হলাম তখন সিনামার বিষয় বস্তু পরিবর্তন হয়ে গেলো, ভাষা পরিবর্তন হয়ে গেলো, নায়ক নায়িকার কাপড় চোপড় আশঙ্কাজনক ভাবে কম হত সেই সিনামা গুলতে। আমরা ঘাপটি মেরে ঢুকে যেতাম হলের ভিতরে। এরোপরে ঈদের চেহারা আরও পরিবর্তন হলো, বন্ধুরা মিলে রিক্সা ভাড়া করতাম ঘণ্টা চুক্তিতে।সারা দিন টইটই করে ঘুরতাম সারা শহর। শহর থেকে গ্রামে, জাস্ট নিরুদ্দেশ হয়ে যেতাম। এমনও হয়েছে এমন এক গ্রামে গিয়ে হাজির হয়েছি যেখানে পরিচিত কেউ নাই, এদিকে খাওয়ারও কোন ব্যবস্থাও নাই। রিকশাওয়ালা আমরা সবাই খিদায় কাতর। আরও দুই এক গ্রাম পরে এক বন্ধুর বাসা আছে, হিসাব করে খুঁজে খুঁজে তার বাড়ি বের করেছি  এবং রিকশাওয়ালা সহ ওই দিন ওর বাড়িতে আমরা যে খাওয়াটা খেয়েছিলাম তা আজ পর্যন্ত ওদের বাড়ির আলোচনার বস্তু হয়ে আছে। 

    এখনকার শহরের ঈদ হয়ে গেছে স্থান নির্ভর। সিনেপ্লেক্স, পার্ক এই রকম জায়গায় বেড়ানো মানে হচ্ছে ঈদ। ঢাকাবাসি প্রবল ভাবে মানুষ শুন্যতায় ভোগে ঈদের এই কয়টা দিন। একটা মেগাসিটি পুরোটা ধুপ করে ফাঁকা।রাস্তা ঘাট সব যেন হাহাকার করছে সর্বদা। এমন ম্যাজিক অন্য কোন শহরে ঘটে কিনা জানা নেই। 

    মফস্বল শহরের ঈদে এখন লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। কিছুটা ভাল কিছুটা খারাপ। কান ফাটা শব্দে হিন্দি গান যোগ হয়েছে ঈদের আনন্দে। পাড়ায় পাড়ায় মোড়ে মোড়ে বড় বড় স্পিকার নিয়ে তীব্র শব্দ দূষণ করে চলে গান শোনা। এরপর দুপুরের পরে এই স্পিকার একটা ট্রাকে তুলে গান বাজাতে বাজাতে সারা শহরে চক্কর দেওয়া আর উদ্দাম নৃত্য।এই ব্যাপারটা এসেছে সম্ভবত দুর্গা পূজা থেকে। বিসর্জনের আগে প্রতিমা ট্রাকে নিয়ে এই একই রকম গান আর নাচের একটা সিস্টেম চালু আছে এখানে। আর ফুর্তির এমন একটা বিষয় কোনমতেই ছাড়তে পারে নাই এখনকার তরুন মুসলিম সমাজ। ভাল সংযোজন হয়েছে কিছু, যেমন এখনকার অনেককেই দেখি ঈদ উপলক্ষে নানান সামাজিক কাজ করতে। এবার ঈদেও দেখলাম সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা কিছু ছেলেমেয়ে দুস্থদের মাঝে চাল,ডাল চিনি সেমাই বিতরন করেছে। দেখে খুব ভাল লাগলো। আগে এমন দেখা যায়ই বলতে গেলে।

    আগের ঈদের সাথে এখনকার ঈদের পার্থক্য হয়েছে অনেক। আমার দেখার চোখ বদলেছে, আমি বদলেছি, যার কারনে ঈদও  পরিবর্তন লাগে এখন। এখন নামাজ পরে কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়, সম বয়সি বন্ধু মারা গেছে কয়েক বছর হয়, যেতে হয় ওর মার সাথে দেখা করতে, ওর কবর জিয়ারত করি আম্মার কবর জিয়ারতেরও আগে। যখন শেষ করে বাড়ি ফিরি তখন দেখি আমার বড় ছোট সবাই ঈদগা থেকে বাড়ি ফিরেছে অনেক অনেকক্ষণ আগেই।আমি এখন জানি আমার বড় ভাইয়েরা ঈদগাহ মাঠে নামাজ শেষে দাঁড়িয়ে কিসের জরুরি আলাপ করত, জানি যে এক সময় কেন তাদের ফিরতে দেরি হত বাড়ি। কবে কখন তাদের জমিনে এসে দাঁড়িয়েছি খেয়ালই করিনি। 

    সবাই ভাল থাকবেন, ঈদ মুবারক।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০২ জুলাই ২০১৭ | ১২২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন