আচার অনাচারআমরা ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠি আচার আচরণে নানান বিধি, নিষেধের আবহে। কোন বাড়িতে মাত্রাটা বেশী, কোথাও একটু শিথিল। এই বিধি নিষেধ গুলো তৈরি হয় মূলত সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কারকে(কু) অবলম্বন করে। ধর্মযাজকেরা বিভিন্ন সময়ে নিজ প্রয়োজনমত ওইগুলি পরিবর্ধন এবং পরিবর্তন করে পরিবেশন করেন। আর আমাদের ঘরে ঘরে তা রুপায়নের দিকটি নিষ্ঠার সঙ্গে তদারকি করেন বয়স্কা মহিলারা। অণু পরিবারে ... ...
ভিখারি ডাকটা চেনা হয়ে গেছে। প্রতি সোমবার সকালে খঞ্জনী বাজিয়ে নাম সংকীর্তন করতে করতে হাজির হয় লোকটা। মাথায় সাদা পাগড়ী, অঙ্গে সাদা শার্ট আর ধুতি। চুল দাড়ি ধবধবে সাদা। একহারা টানটান চেহারা। বাড়ির সামনে এসে গান থামিয়ে গৃহস্থের উদ্দেশ্যে হাল্কা করে ডাক “জয় নিতাই”। এক আধ দিন আবার একটু বেশি সকালে চলে আসে। আমরা তখনো হয়ত ঘুম থেকে উঠিনি। তাই ডাকে কোন রেসপন্স না পেয়ে ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৪০ রজতের বৌভাতের পরের দিন নয়ন অফিসে জয়েন করল। কাজ শুরু করার একটু পরেই অভিজিৎ সামন্তর তলব এল। ঘরে ঢুকতেই পরিচিত গম্ভীর আওয়াজ ভেসে এল—বন্ধুর বিয়েতেই তিন দিন ছুটি!--খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু স্যার। একেবার ছোটবেলা থেকে একসাথে পড়াশুনা করেছি। --নিজের বিয়ের আপডেট কী? পছন্দের কেউ আছে, নাকি মা বাবাই ভরসা!নয়ন একটু লজ্জা পেয়ে বলল--তেমন কেউ নেই ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৯ রজতের বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ওর এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না। প্রেম পর্যায়ে আরো এক আধ বছর ভাসার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু দুই বাড়ি থেকেই চাপ আসতে থাকায় বিয়েটা আর ঠেকান গেল না। নয়ন অনুরোধ করেছিল, ওর চাকরির এক বছর পার হবার পর যেন বিয়েটা হয়। তা না হলে ওর পক্ষে ছুটি পেতে একটু সমস্যা হবে। নয়নের দুই বাড়িতেই বেশি রকমের গুরুত্ব আছে তাই, ওর ইচ্ছে ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৮ হাঁড়ি পুকুরের ধারে তখন প্রচুর লোক। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ এসেছে। এমন ভয়ানক ঘটনা এই চত্বরে কখন ঘটেনি। পুকুরে এক তরুণীর দেহ ভাসছে। নেপালি ধরণের মুখের গড়ন। পুলিশ এসে পুকুরের চারধারে তল্লাশি করে একটা পেন আর একটা রুমাল পেয়েছে। এমনই কপাল, সেগুলো পাওয়া গেছে, নয়নরা যেখানে বসে আড্ডা মারে সেইখানে। মানে পুকুর ঘাটের চাতালের ঠিক ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৭ কচিদার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নয়ন রাস্তায় একটু এদিক ওদিক দেখছিল।--কি খুঁজছিস?--দেখছিলাম, যদি একটা রিক্সা পাওয়া যায়। --চট করে পাবি না। এদিকটায় সব আমার মত ভি আই পি লোকজন বাস করে। খুব ঠেকায় না পড়লে এরা হেঁটেই যাতায়াত করে। চিন্তার কিছু নেই, চল আমি তোকে স্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসছি। ---আরে না না, তুমি এই একটু আগে বাড়ি এলে। আবার একবার যাবে ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৬ চাকরিতে ঢোকার পর নয়নের আড্ডা দেওয়াটা অনেক কমে গেছে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় দিনই আটটা নটা বেজে যায়, ফলে রবিবার ছাড়া সময় হয় না। এক রবিবার ফুল হাউস আড্ডা চলছে। সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে শোভন এসে বলল—জানিস, কাল কচিদাকে দেখলাম।সমস্বরে প্রশ্ন এল—কোথায় ?---বজবজ লোকালে। কি যেন একটা ফিরি করছিল।নয়ন বলল—তুই ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৫ নয়নের কোলকাতাতেই পোস্টিং। জয়েন করার জন্য কোন সময় লেখা ছিল না। নয়ন বাবার সাথেই খাওয়া দাওয়া করে ট্রেন ধরল। দশটা বাজার কিছু আগেই অফিসে পৌঁছে গেল। সরকারি দফতর হলেও মোটামুটি পরিচ্ছন্ন। লোকজন তখনো আসেনি। মেন গেট থেকে একটু ভেতরে ঢুকে দেখে একজন মেঝে মুছছে। নয়নকে দেখে এগিয়ে এসে জানতে চাইল কি চায়। নয়ন নতুন জয়েন করবে শুনে সামনে একটা ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৪ বুড়োদার চায়ের দোকানে দুজন মাঝবয়সী লোক মাঝে মাঝে এসে বসত। একজন কানু দা আর অন্যজন হলেন হরিদা। কিছু কিছু লোককে অনেক সময় পরিচিতজনেরা সন্তর্পণে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। সব সময় না হলেও বিশেষ কিছু সময়ে তো বটেই। এঁরা হলেন সেই ক্যাটাগরির লোক। কানুদাকে ভাল মানুষ আখ্যা দেওয়া না গেলেও হরিদা কিন্তু নিপাট ভাল ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩৩ একদিন ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস কম ছিল। অন্য কোথাও না গিয়ে নয়ন সোজা বাড়ি ফিরে এল। বাড়িতে ঢুকে দেখে, মায়ের চোখটা ছলছল করছে।--কি হয়েছে গো মা? দেখে মনে হচ্ছে তোমার মনটা ভাল নেই।আহেলি চোখের জল মুছে বলল—দুপুরে ছোড়দা ফোন করেছিল, ছোট কাকিমা আর নেই।নয়ন চুপ করে বসে পড়ল। খবরটা যে অপ্রত্যাশিত এমন নয়, তবু খুব খারাপ লাগছে। দাদু দিদা বলতে নয়ন ঐ দুজন মানুষকেই ... ...