এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শোক ও শস্যের ওয়াগন/৫

    Siddhartha
    অন্যান্য | ২৮ মার্চ ২০১২ | ৩৭০৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:২২540239
  • আমরা যাইনি মরে আজ-ও, তবুও খালি দৃশ্যের জন্ম হয়। কোথাও স্মৃতির সমুদ্রতীরে মেলে রাখা জালে শুকোতে থাকে সামুদ্রিক মাছ, ওল্টানো জাহাজ, ইউক্যালিপটাসের বন পাতা ঝরিয়ে নি:স্ব হতে থাকে, আর আমাদের গভীরের মায়া জন্ম দেয় পরের পর ছায়াছবি। সেই আমাদের ইউলিসিস, বা নিজস্ব অন্তর্জলি যাত্রা- জীবনে সফল সুখী পুরুষ, তিক্ত বেকার, উন্মাদ কবি বা সব হারিয়ে ছায়ার মধ্যে ছায়া হয়ে মিলিয়ে যেতে থাকা কমরেডের সকলের নিজস্ব সেই ইউলিসিস আসলে এক মনখারাপের ভ্রমণ-কারন আমাদের সকলের মধ্যেই থেকে যায় সেই অতলান্ত মনকেমন করা। এই ইউলিসিস নিয়ে আমরা বাঁচি, এই রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই সবার অজান্তে মরে যাই।

    আমার ইউলিসিস শুরু হয়েছিল এবং পথ হেঁটেছিল গোটা নব্বই জুড়ে। আমার নব্বই। আমার আট থেকে আঠেরো হবার নব্বই। সেই নয়ের দশকে সত্তরের রক্তক্ষরণ ছিল না, ভুল বিপ্লবের হ্যামলিন তার দুরতম ছায়াও মেলেনি সেখানে। ছিল না কোনো ঝড়- না কোনো হতাশার ক্ষুধার্ত আক্রমণ-না:, বরং গোপন আদরের মত ধীরে ধীরে আমায় বড় করে তুলেছিল, লালন করেছিল গোটা দশকদেহ। তা, সেই আদরের মধ্যেই নির্ভুলভাবে কোথাও যে গেঁথে দেয়নি সময়ের চারণচিহ্ন, তাই বা বলি কি করে, যে আগামীর মনখারাপের সব মাস্তুলগুলো পোঁতা হয়ে যায়নি সেখানেই? আমার বেওয়াফা নব্বই নরম রোদে স্বেচ্ছাব্যাথায় যে কখনো বেচমক আহত করে যায়নি, তেমনটিও বলা যাবে না।

    আমার নব্বই কেটেছে দক্ষিণ কলকাতার এক প্রায় শহরতলীতে। বড় পুকুর, কালীমন্দির, নারকোল গাছের সারি, বটতলা, নি:ঝুম রাস্তা, মরে যাওয়া বাসের খোল, বন্ধ কারখানার গেট, ধু ধু মাঠ, কুয়াশাজড়ানো গংগার ধার, শ্মসানের পাশে ভুতুড়ে কুটির, হ্যাজাকের আলোয় সন্ধের বাজার, তাসের আড্ডা, পাগলের চিত্‌কার-কোনটা ছাড়ি যে আর! রোজ রাতে বিশাল পুকুর ঝপাং ঝপাং করে আওয়াজ হত, সাঁতার কাটত কারা যেন। জানি না কারা, কোনদিন তাদের মুখ দেখিনি। তবুও সেই সাঁতারের শব্দ শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম রোজ রাতে। বাড়িতে কারেন্ট ছিল না বহুকাল-ঝুলপরা কেরোসিনের গন্ধে একটা পোড়া দুধের আভাস মিলত। তো, সেই গন্ধ গায়ে মাখতে মাখতে, আর দেওয়ালের গায়ে ক্রমশ বড় হয়ে ওঠা ছায়াগুলো দেখতে দেখতে আমি কুঁকড়ে যেতাম, বিছানা তোষক কাঁথার নিচ থেকে তখন ঠাকুমার ঘুম-জড়ানো গলায় কৃষ্ণের অষ্টোতর শতনাম, আর জান্‌লার পাশে গাড়ল মাতালের ব্যারিটোন চিৎকারের ককটেলে বহু রাত কেটেছে আমার।

    আমাদের পাড়াটায় নানা কিসিমের লোক ছিল। রেসিডেন্ট পাগল ছিল দুজন, যাদের একজন স্থানীয় ভাতের হোটেলে পেট-চুক্তিতে কাজ করত, তার জীবনের একমাত্র নেশা ছিল নক্সা করা দশ পয়সা জমানো। আরেকজন কিছুই করত না, শুধু ঘুরে বেড়াত আর বিড়ি চেয়ে খেত। তারপরে সংখ্যাটা তিনে বাড়ল। পাগলী আসল। তার ঘর ছিল, বর ছিল, ছেলেও হয়ত-কিন্তু সে ছিল বদ্ধ কালা, আর উন্মাদ। দুপুর রোদে ঘুরে ঘুরে চিত্‌কার করে হাসত, বেড়ালের পেছনে লাগত। পোদ্দারজেঠু ছিল, কি করত কেউ জানে না। লোকে বলে নক্সাল করত, আবার কেউ বলে পুলিশের স্পাই। সে সারাদিন খৈনী ডলতে ডলতে সারা পাড়া চক্কর কাটত আর মুখে মুখে ছড়া বলত। কালীমন্দিরের পুরুতের দু:খ ছিল তার থালায় প্রণামী পড়ে না। সে সন্ধ্যে হলে একটাই গান ধরত, আর সেটাই সারাক্ষণ গেয়ে যেত, `আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল সকলি ফুরায়ে যায় মা`। টারজান ছিল, তার গায়ের জোরের জন্য, যদিও পরে চোলাই খেয়ে খেয়ে হারিয়েছিল সব-ই, লোকে তাকে বলত টারজান। তার ঘর ছিল না, বালি-স্টোনচিপের পাশে মাদুর পেতে শুয়ে থাকত। আমার বন্ধুদের সার্কেলটাও তথৈবচ। কেউ স্কুলে যায়, কেউ যায় না। কারোর বাপ অটো চালায়, আবার কারোর সে সৌভাগ্য, মানে জন্মের পর খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা কোনো মুখ যে দেখবে যে মাঝে মাঝে কোলে নেবে এবং দরকারে আধখাওয়া বিড়ি মেঝেতে ঘষে নিভিয়ে উদ্দন্ড মার, সেসব হয়নি। তা সত্বেও, বেশ আনন্দেই ছিল তারা। মানে দুখানা ইঁটকে উইকেট বানিয়ে আর প্লাস্টিক কাপড় গার্ডার দিয়ে পেঁচিয়ে পাকিয়ে বল বানিয়ে, তখন রবার ডিউসের দাম প্রায় তিন টাকা ক্যাম্বিস স্বপ্ন এবং সবচেয়ে শস্তা রবারের বলে খেলা যেত না যেহেতু ফেটে যেত খুব তাড়াতাড়ি, ক্রিকেট খেলায় যতটুকু আনন্দ থাকে আর কি! সেই বল খুব একটা লাফাত না, ডিপেন্ড করত কত শক্ত করে বাঁধা হচ্ছে তার ওপর। ব্যাট মানে বেশিরভাগ সময়েই কাঠের তক্তা কেটে বানিয়ে নেওয়া একটা খন্ড। কেউ কেউ আবার একটু রোয়াব নিয়ে সন্ধের সময় বলত `না: বাড়ি যাই পড়তে বসব।` তুমুল বক দেখানো এবং `যা না দেখি, তুই পেছন ঘুরলেই প্যান্ট খুলে নেব` টাইপের আওয়াজে সে আর সাহস করত না বিশেষ, মানে যতক্ষণ না তার রণচন্ডী মা এসে `কি রে হারামজাদার বাচ্চা বাড়ি বলে কিছু নেই?` টাইপের আদর না দিত। অবশ্য সেসব দেখার সৌভাগ্য আমার বিশেষ হত না, কারণ বাবার ভয়ে ঘড়ির একটা বিশেষ ঘন্টার পরেই প্যান্ট হাতে করে বাড়িতে ঢোকার ঝুঁকি নিয়েও ফিরে আসতে হতই, সেই রোদ মরে যাঅওয়া বিকেলের ক্রিকেট বা শিরোধাস্যি, এই খেলাটা মনে হয় আর কেউ খেলে না, সেই সব কিছুর দিকে চাইতে চাইতে, নি:শ্বাস গোপন করতে করতে।

    আরেকটা খেলাও খেলতাম, ডাক্তারের বাগানে পিয়ারা চুরি। ডাক্তারের বাগানে কেউ গলায় দড়ি দিয়েছিল, ফলে বিশেষ লোকজন ঘেঁষত না ওখানে। দুপুরে কিছু নেশাখোরদের আড্ডা বসত বিশাল বাগানের এখানে ওখানে। সারা জায়গাটা হিম হিম চুপ, রাজ্যের গাছ-গাছালি বুনো ঝোপ সাপের গর্ত-বাড়িতে জানলে চামড়া ছাড়িয়ে নেবে যে ওখানে গেছি-তা এমনসব রিস্ক মাথায় নিয়েই যেতে হত, কাঁচা প্রায় খাওয়ার অযোগ্য পিয়ারার আকর্ষণে। আর এরকম একদিন, আমাদের দলটা একটা বড় ঝোপের পাশ দিয়ে যেতে যেতে হঠাত থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। খিল খিল করে হাসির আওয়াজ, খচর-মচর শব্দ। হঠাত হাসিটা থেমে গেল। তারপর খচ-মচ করে বেরিয়ে এল পাশের বাড়ির রেখাদি, জ্জালজেলে সালওয়ার পেটের ওপর নামাতে নামাতে -চার বোনের বড়, আপাতত শাড়িতে ফলস পিকো করে কিছু রোজগার করে, বাবা মাতাল, এবং মা এরকম পরিবেশে যা হয় ঠিক তততাই দজ্জাল- রেখাদির পেছনে একটা আধচেনা ছেলের মুখ। আমাদের দেখে রেখাদি হেবি রোয়াব নিল এখানে কেন এসেছি, বাড়িতে বলে দিলে কি হবে এসব। চিত্‌কার চেঁচামেচি করল যে বাড়িতে বলে দিয়ে সবকটার বেরনো বন্ধ করছে বিকেলে। আমরা হাতে পায়ে ধরে কোনোরকমে শান্ত করলাম। চুক্তি হল কেউ কারোর কথা বলবে না। অনেক পরে বুঝেছি আমাদের থেকে অনেক বেশি ভয় রেখাদি পেয়েছিল।

    সেই রেখাদিও একদিন পালিয়ে গেল বাড়ি ছেড়ে। এখনো তার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তার আশিকের সাথে না কিন্তু, একাই। সেই আশিক, সেলুনে কাজ করত, এক ভোর রাতে গলার কাছে হাঁ হয়ে থাকা এত্ত বড় কাটা নিয়ে, আর গ্যালগেলে রক্তের মাঝে, হয়ত দাপাতে দাপাতেই, মরে পড়ে থাকল এক ভোরবেলা, ফুটপাথের পাশে। কেন, কেউ জানে না। আমরা তো ঐ বয়েসে আরৈ জানতাম না।

    তো, এমনি আরেক বিকেলে, আমি তখন মামারবাড়িতে সাদা-কালো টিভিতে খুব মন দিয়ে পসেনজিত শতাব্দীর ছবি দেখছি, আর কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না কেন ফ্রেঞ্চকাট দাড়ির মুশকো লোকটা পসেনকে অত ক্যালাচ্ছে আর পসেন কিচ্ছুটি বলছে না, সেই সময় হঠাৎ বড়মামা ঘরে ঢুকে বলল `সর্বনাশ হয়েছে বাবরি মসজিদ ভেংগে দিয়েছে। এক্ষুণি বাড়ি যা তোরা`। মা পরি মড়ি করে ছুটল আমায় নিয়ে। সারা রাস্তা শুনশান, মোড়ে মোড়ে জটলা, বাস ফাস-ও চলছে না। আমার হেবি মজা, কারণ পরদিন স্কুল ছুটি ঘোষণা হয়ে গেছে। সারাদিন ধরে ক্রিকেট, বকার-ও কেউ নেই, কারণ সকলেই উত্তেজিত। মাঝে মাঝে পুলিশের গাড়ি যাচ্ছে, আর আমরা পড়ি-মড়ি করে খেলা-ফেলা ভেংগে ছুটে লুকিয়ে পড়ছি। মানে, আমাদের কেউ পাত্তাও দিত না, কিন্তু ঐ-পুলিশ ধরতে পারে, তাই পালাতে হবে, তখন ১৪৪ ধারা জারি যদিও যা বলেছি আগেই বাচ্চারা ক্রিকেট খেলবে তাতে কার কি, এই ভাবনাটাই সেই বয়েসেও যথেষ্ট শিহরণ জাগাত। সন্ধ্যে হলেই চারদিক ফাঁকা, মাঝে মাঝে নিয়ম করে সিপিএম-এর শান্তিরক্ষা কমিটির টহল চলছে। তাদের কেউ কেউ ঢং ঢং করে লাঠির বাড়ি মারছে ল্যাম্প-পোস্টের গায়ে। পরদিন সকালে দেখা গেল শনি-মন্দিরের গায়ে কেউ একদলা পাঁক লাগিয়ে রেখেছে। হৈ হৈ কান্ড, উত্তেজিত জটলা, টহলদার বাহিনীকে খিস্তি চলছে তেড়ে কেন ভাল করে পাহারা দেওয়া হয়নি-শেষমেষ জানা গেল স্থানীয় পাগলটির কির্ত্তি, যার নেশা ছিল দশ পয়সা জমানো। কি বুঝেছিল, কে জানে! চারপাশের হৌ-হল্লা হিন্দু-মুসলিম শুনেই বা কি যে ভেবেছিল, কেউ বলতে পারবে না। কেনই বা পাঁক মাখিয়ে এল মন্দিরের গায়ে, সেটাও-কি জানি! শুধু জানি, এই ঘটনার দশদিন বাদে সেই পাগল পুকুরে ডুবে মরে যায়।

    তিরানব্বই জানুয়ারি, মারাত্মক শীত, এবং আমার প্রথম ভিক্টোরিয়া দেখা। চিড়িয়াখানা থেকে বাবা মা আমি ঠাকুমা হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে বসলাম ভিক্টরিয়ার সিটে। আমার পায়ে সদ্য কেনা কেডস, এবং বাগানের নুড়িগুলোকে ফুটবল ভেবে মহা আনন্দে লাথাচ্ছি। একসময়ে বাবা ডাকল। গেলাম না। বাবা এসে নিচু হয়ে কেডস দেখল, সামনেটা ফাটতে শুরু করেছে। চটাস করে থাপ্পড়, আর আমার আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে হাউ-মাউ ভ্যাঁ। সেই ভ্যাঁ তারপরেও অনেকদিন অনেক অজুহাতে ব্যবহার করব আমি, দরকারে, বা মিথ্যে চাওয়ায়।

    টিভির পর্দা তখন কাঁপাচ্ছে হিন্দি সিরিয়াল `তালাশ`, `তেহকিকত` এসব। রবিবারে হিন্দি সিনেমা, শনিবারে বাংলা। সিনেমার মাঝে কমার্শিয়াল ব্রেক আসেনি তখনো। সেখানেই সপ্তপদী, সাড়ে চত্তর, শত্রু, ঝিন্দের বন্দী, সোনার কেল্লা দেখা প্রথম। সত্যজিত রায় মরে যাওয়াতে অনেকগুলো সিনেমা পরপর দেখিয়েছিল। এছাড়া উত্তম্‌কুমারের রেট্রোস্পেক্টিভে হারানো সুর, সাগরিকা, সুচিত্রার রেট্রোতে ফরিয়াদ যেটা আমায় দেখতে দেওয়া হয়নি বড়দের সিনেমা বলে। কিছুদিন আগেও `সার্কাস` বলে একটা সিরিয়াল হত। তার বাচ্চা বাচ্চা দেখতে নায়কটা, যে কানঢাকা চুল রেখেছিল বহুদিন, সে আস্তে আস্তে বড়-পর্দায় আসছে। বাজীগর নামের একটা সিনেমা করেছে, যেটা আমাদের তখন দেখার অনুমতি ছিল না, কিন্তু বুধবারের চিত্রহার বেস্পতিবারের চিত্রমালাকে সরিয়ে দিয়ে সদ্য বাজারে আসা `সুপারহীট মুকাবিলা`র দৌলতে লুকিয়ে চুরিয়ে দেখছি কাজল-শিল্পার অমোঘ যৌবণ। এই সিনেমার-ই একটা গানে শিল্পা শেঠি নাচতে নাচতে হঠাত ক্লিভেজের কাছে একটু আলতো করে হাত বোলাবে, আর আমার সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠবে, কেন জানি না তখনো। পেটের কাছে একটা অস্বস্তি হবে, আমি ভাবব হিসি পেয়েছে। কিন্তু সেদিন সারারাত ধরে শিল্পা শেঠিকে স্বপ্নে দেখব। তখন একটু একটু বুঝতে শিখেছি মেয়েদের দিকে তাকানো বাজে, কেন জানি না যদিও। তাই ভয়ে কাউকে বলতেও পারব না সেকথা। শুধু স্কুলে যখন শুভময় বলবে `শিল্পার বুকটা দেখেছিস, হি হি` তখনো ঠিক বুঝব না কি বলছে, শুধু আগের রাতের কথা মনে করে একটু কেঁপে যাব ভেতরে ভেতরে।

    সেবার পুজোয় হঠাত নির্মলা মিশ্রর চিরাচরিত `আমি যে তোমার চিরদিনের হাসি কান্নার সাথী`র বদলে একটা অন্য গান বেজে উঠল পাড়ার মাইকে। অন্য গলা, আর কথাগুলো কিরকম অদ্ভুত। কি চেনা চেনা সুখ দু:খ, মন খারাপ করা বিকেল, দশ্‌ফুট ঘর এসব। পোদ্দার জেঠু বসে বসে নিজের ঘরটায় খৈনী কাটছিল। হাত থেমে গেল। পুরো পাথরের মত। শুনে চলল `দশ ফুট বাই দশ ফুট`। গান শেষ হবার পরেও বহুক্ষণ নিস্পন্দ। যেন প্রাণ নেই। তারপর একটা নি:শ্বাস ফেলে আমায় বলল খোঁজ নিয়ে আয় তো, কার গান।`

    সেই ক্যাসেট পাল্টে দিল আমার কালী-মন্দিরের সন্ধেবেলা। এখন আর পুরুত মশাই পান্নালাল গায় না। সন্ধে হলেই একটা আধ ভাংগা টেপ-রেকর্ডারে চালিয়ে দেয় `তোমাকে চাই`। তারপর বসে বসে ঝিমোয়, বিড়ি ধরিয়ে চেয়ে থাকে সামনের অন্ধকারের দিকে। সেই নির্জন মন্দিরের ঝোপ-ঝাড় বটেরচারা গজানো দেওয়াল, ম্লান সর-ওঠা হলদে বাল্বের আলো, দালানময় পুরোনো রং-চটা পাঁজি গুরুদেবের পায়ের ছাপ ভাংগা তোরংগ বিষণ্ন টিকটিকি ঘটাং ঘটাং ঘুরতে থাকা পাখা, অদুরে ভীষণ কালী মুর্তি, আর তখন ক্যাসেটে বাজছে সাপলুডো খেলছে বিধাতার সংগে। আমি ঠাকুমার সাথে কালী-মন্দির যেতাম প্রায়-ই। সুমনকে এই পোদ্দার জেঠু, পুরুত মশাই-এদের মধ্যে দিয়ে আমার প্রথম পাওয়া। তাই আমার সুমন আসলে বিদ্রোহের নয়, গোপন ভালবেসে কষ্ট পাওয়ার সুমন।

    (চলবে)
  • kallol | 119.226.79.139 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৩৪540350
  • খুব ভালো লাগছে। চালিয়ে যাও।
  • d | 14.96.3.217 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৩৭540461
  • ইয়ে, সালোয়ার পেটের ওপর নামানোটা টেকনিক্যালি একটু চাপের। ;-)
    ওটা বোধহয় কামিজ হবে।
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৩৮540683
  • সালওয়ার কাকে বলে? ওপরেরটা না?
  • Ben Arfa | 121.241.218.132 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৩৮540572
  • :-)

    শিলওয়ার == সালোয়ার
  • tatin | 122.252.251.244 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৩৯540794
  • উফ,,- কী লেখা- সেই নব্বই, আমার নব্বই, আমাদের নব্বই
  • Ben Arfa | 121.241.218.132 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৪১540842
  • না। সালোয়ার বা শিলওয়ার হল পাজামা-টা। মুজতবা পড়েন নাই? পাঠানদের শিলওয়ার বানাতে কতটা কাপড় লাগে?
  • tatin | 122.252.251.244 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৪১540831
  • আমি দীর্ঘদিন জানতাম ওপরেরটাকে সালওয়ার আর নিচেরটাকে কামিজ বলে। পরে মনে হল পাজামা-পাঞ্জাবি বা প্যান্ট-শার্টের হিসেব মেনে অন্যরকমই হবে
  • d | 14.96.3.217 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৪৩540853
  • ছেলেদের আর মেয়েদের বড় হওয়াগুলো কি ভীষণ আলাদা হয়।
  • tatin | 122.252.251.244 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৪৪540240
  • কী রকম?
  • d | 14.96.3.217 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৪৯540251
  • মেয়েদের বড় হওয়ার গল্পগুলো পাশাপাশি পড়ুন, দেখতে পাবেন হয়ত।

    আমি অবশ্য নিজের বা বন্ধুদের সাথে মিলিয়ে বললাম কথাটা,
  • i | 137.157.8.253 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৫২540273
  • সিদ্ধার্থর লেখা খুব ভালো। এই পর্বটা পড়ে শঙ্খর এক্সপেরিমেন্টাল গল্প মনে পড়ছে খুব।
    চলুক। লেখা চলুক।
  • tatin | 122.252.251.244 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১০:৫৫540284
  • মেয়েদের ছোটবেলার গল্পে কি ব্যক্তিগত প্রেম কিছু থাকবেই?
  • pinaki | 138.227.189.9 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১১:০৫540295
  • সিদ্ধার্থ, চমৎকার। মনে পড়ল '৯২ এর জন্মদিনে সুমনের 'তোমাকে চাই' আমাকে দিয়েছিল আমাদের গুরুর ব্যাঙ ওস্তাদ। :-)
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১১:০৬540306
  • আমার কোন মেয়েবেলা নেই, শুধু ছোটবেলা আছে!! আমার আর আমার দাদার (১ বছর ৯ মাসের বড়)বেড়ে ওঠার গল্প একইরকম। একই খাবাই, একই সুবিধা আর একই শাসন!
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১১:০৭540317
  • খাবার
  • pi | 72.83.76.34 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১১:৩৩540328
  • বড় ভাল লাগছে। মেয়েদের ছোটবেলা খুব কি আলাদা ? আমার নিজের জন্য উত্তরটা বোধহয় না হবে।

    আর তোমাকে চাই আমারো বিরানব্বইএর জন্মদিনের প্রাপ্তি। ৯২ র জন্মদিনে আরো কতজন যে সুমনকে ধরে চলা শুরু করেচে ! এই নব্বইএর প্রজন্মের আরো কতজন !
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১১:৪০540339
  • তো, এসবের মধ্যেই দুম করে একদিন দিব্যা ভারতী মরে গেল। আমাদের দু:খ রাখার জায়গা নেই তখন। অনেকেই মনে মনে জানত বড় হয়ে দিব্যাকে বিয়ে করবে। তা কিছুর মধ্যে কিছু নেই, ধড়াম করে উনিশ-তলার ওপর থেকে টালমাটাল স্লিপ? তারপর দু:খ কোমর কষে তিনগুণ যখন জানলাম ওর একটা বর-ও ছিল। এরকম মেয়ের-ও বর হয়, আমি বাদে আর কেউ হতে পারে?
    আমাদের তখন মোটামুটি ডায়াস জুড়ে নেতা, মাঠ জুড়ে শচীন, আর পর্দা জুড়ে শাহরুখ। সৌরভ গাংগুলী নামের ওপাড়ার একটা ছেলের কথা মাঝে মাঝে শোনা যায় বটে, ভাল ব্যাট-ও করছে, তো ধুর, সে তো হেরো। বাদ পড়ে গেল আনকা। কে আর মাথা ঘামায় তখন! বরং হীরো কাপের সেমিফাইনালে শচীনের সেই ওভার। আমার বাবা খাত থেকে লাফিয়ে উঠে নাচানাচি করছে। বোম ফাটছে পাড়ার মোড়ে। আর সেই সপ্তাহেই আমাদের ক্লাসের কিরণময় সরখেল সেই ঐতিহাসিক কান্ড ঘটাল। পেছনের বেঞ্চিতে বসে কমিক্স পড়ার জন্য স্যার কান ধরে টেনে সামনে দাঁড় করিয়ে নাম জিজ্ঞাসা করাতে উত্তর দিল `ক্কি ক্কি ক্কিরণ`। রথীনবাবু শুনে টুনে `খুব পাখনা গজিয়েছে না? খুব ডানা হয়েছে` এসব বলে উদুম ক্যাল দিলেন ঠিক-ই, কিন্তু সেই থেকে ক্কি ক্কি ক্কিরণ আমাদের হীরো হয়ে গেল। স্কুল ছাড়ার সময় পর্যন্ত শুধু আমরা নয়, সিনিঅর জুনিঅর মায় কিছু টিচার পর্যন্ত অন্‌য়্‌মনস্কভাবে তাকে ক্কি ক্কি ক্কিরণ বলে ডেকে উঠতেন।

    এদিকে আমার বাবা মায়ের হেবি চিন্তা, আমার ইংরিজি শেখা হচ্ছে না। সরকারী স্কুলে সিক্সের আগে ইংরিজি নেই। এদিকে বাড়িতে শেখাবার সাধ্য নেই স্কুল না পেরনো মায়ের। বাবা মাঝে মাঝে বসত, কিন্তু তার বিদ্যেও সেরকম-ই। তার ওপর অসাধারণ রকমের অধৈর্য্য। `আই`-এর পর ইজ শুনলেই চুলের মুঠি ধরে মার। একদিন মারতে গেছে, আর আমি তেড়ে ছুটে বাইরে গিয়ে ছেলেধরা ছেলেধরা বলে চেঁচাতে লাগলাম। বাবার পড়ানোর ওখানেই ইতি। কিন্তু ইংরিজি শিখতেই হবে। পাড়ায় তখন নতুন এসেছেন দেবুদা, দেবব্রত ভট্‌চাজ। একসময়ের নক্সাল, অনন্ত সিং-দের দলে ছিলেন। যাদুগোড়া থেকে আরেস্টেড হয়ে `৬৯ থেকে `৭৯ জেলে কাটান। তখন চাকরি করছিলেন বাউলমনে, আর টিউশন। সাব্যস্ত হল আমায় ওখানেই দেওয়া হবে। তো, সেই শুরু আমার পাল্টানোর। দেবুদা আমায় গল্প করত রাশিয়ান বিপ্লবের, চে গুয়েভারার। আমার ক্লাস ফাইভ সিক্স সেসব কতটা বুঝত জানি না, হাঁ করে গিলত সব। প্রথম ইংরিজি বই দেবুদার কাছেই পরা, ব্ল্যাক বিউটি। ঐ বই পড়ার পক্ষে বয়েস তখন বেশী-ই। কিন্তু শুরুটাই তো দেরীতে হল। প্রথম যেদিন সব কটা লাইনের মানে বুঝতে পারলাম, আমার আনন্দ দেখে কে! মা-কে গিয়ে সগর্বে বললাম, আমার আজকাল বাংলা বৈ-এর থেকে ইংরিজি পড়তেই বেশি ভাল্লাগে, এদিকে পরার মধ্যে সাকুল্যে ঐ ব্ল্যাক বিউটি। মা মনে হয় মুখ টিপে হেসেছিল-অথবা, কে জানে, নি:শ্বাস লুকিয়েছিল কিনা, নিজের অসমাপ্ত স্কুল-জীবনের কথা ভেবে।

    দেবুদা ক্লাস এইটের আমার হাতে তুলে দিয়েছিল সমীর রায়ের কবিতা, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা। আস্তে আস্তে একটা অন্য জান্‌লার সন্ধান পাচ্ছিলাম। গোগ্রাসে পড়তাম, যা পেতাম হাতের কাছে। এদিকে বাইরে তখন তুমুল হট্টগোল। সিপিএম এর কাছে সরকার গড়ার প্রস্তাব এসেছে, পার্টি প্রত্যাখ্যান করেছে। আর জ্যোতি বসু কিছুদিন বাদে বলে দিলেন ঐতিহাসিক ভুল। বাবারা রাগে ফুঁসছে, পাড়ার চায়ের দোকানে জটলা, `বাংগালী কে চক্রান্ত করে আটকে দিল শালারা`। আমরা অত শত বুঝতাম না, তবে স্কুলে দেখি স্যারেরাও ক্লাসে এসে ভাটাচ্ছে এসব নিয়ে। এ কি রে বাবা! কে এমন হনু জ্যোতি বোস? যাজ্ঞে, আমরা তখন পিকনিক, বিকেলের রোদ, সন্ধের জনি সোকো ফ্লাইং রোবট আর লুকিয়ে চুরিয়ে জুহী চাওলাকে পেয়েই খুশী। কে প্রধানমন্ত্রী হল কি হল না কি এসে যায় ঐ ঝামরে পড়া দিনগুলোতে?

    আস্তে আস্তে আমি বড় হচ্ছিলাম। যেসব মেয়েদের সাথে এককালে খেলতাম, তাদের বুকের দিকে তাকালে নিজের কেমন একটা লাগে। তাদের-ও খুব একটা স্বস্তি হয়না মনে হয়। এক বিকেলে এরকম একটা সময়ে পেয়ারা গাছের নিচে জাপটে ধরলাম আমার এক বান্ধবীকে। সুশীলা। হিন্দুস্তানীদের মেয়ে। মা মনে হয় লোকের বাড়ি কাজ করত। ওর বুকে আমার হাত ঘষে দিয়ে বললাম `আই লাভ ইউ সু সু সুসীলা`। ক্কি ক্কি ক্কিরণের মতন করে। সুশীলা লজ্জা পেয়ে মুখ চোখ লাল করে বসে পড়ল মাটিতে। আমি ততক্ষণে ভয়ে কাঠ। কি হয়েছে বুঝতে পারছি। বললাম `এই, বাড়িতে বলিস না, প্লিজ`। সুশীলা কোনো উত্তর না দিয়ে বসে রইল চুপচাপ। আমি দাঁড়িয়ে রৈলাম কাঠের পুতুলের মত। এক একটা সেকেন্ড যেন এক একটা যুগ। অনেক অনেক ক্ষণ পর, সুশীলা মুখ তুলে ফিক করে একটু হেসে দিল, তারপর দৌড়ে পালাল। না, কাউকে বলেনি ঠিক-ই, কিন্তু আর খেলতে আসেনি কোনদিন। কে জানে, কি মানে ছিল হাসিটার!

    এদিকে মেয়ে বলে জিনিসটার প্রতি উদ্দাম আকর্ষণ বাড়ছে। দৈবাত বেরিয়ে পড়া কোনো ব্রা-এর স্ট্রাপ, তখনো কিন্তু প্রেম ব্যাপারটাও ঠিক বুঝতুম না, বা হঠাত মিষ্টি সেন্ট মাখা কোনো মেয়ে, সিরসিরানি ধরিয়ে দিচ্ছে গায়ে। মায়া মেমসাব সেকেন্ড টাইম রিলিজ করেছে, আর আমার বেশ কিছু বন্ধুর দেখা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। এদিকে আমি তখনো মাস্টারবেট কাকে বলে জানি না। একদিন দেখলাম, বাড়িতে একটা পুরনো আনন্দলোক। ছবি দেখে শিরশিরানি বারল। তাও জানি না কি করে করতে হয়। স্কুলে সোমশুভ্রকে ভয়ে ভয়ে একদিন জাগালাম `হ্যাঁ রে, খেঁচে কি করে? ` সোমশুভ্র প্রথমে প্রচুর আওয়াজ দিল, তারপর বলল। চাইছিল এক্সপেরিমেন্ট করে ওর সামনেই দেখাতে, আমি খুব একটা ভরসা পেলাম না। বাড়িতে রাতের বেলা আনন্দলোক নিয়ে বসলাম। ছবিগুলো দেখছি, আর হাত বোলাচ্ছি ওখানে। বেশ ভাল্লাগে্‌ছ। এক সময় অজান্তেই হাত বোলানো বেড়ে গেল। ছবির পাতায় তখন মমতা কুলকার্ণি। আমি প্রচন্ড ভাবে হাত নাড়াচ্ছি। মমতা ভেজা শরীরে একটা সি-থ্রু গেঞ্জি পরে হাত মাথার ওপর তুলে বসে আছে, আমার মনে হচ্ছে ঝাঁপিয়ে পড়ছে আমার ওপর। আমি পাগলের মত হাত মারছি। হঠাত কিছুর মধ্যে কিছু নেই, একতা রাতপাখি অস্বাভাবিক তীব্র শব্দে, হয়ত কিছুই না কিন্তু রাতের নিস্তব্বধতায় ওটাই মারাত্মক হয়েছিল তখন, ক্যাঁ ক্যাঁ করে ডেকে উঠল, আর আমি ভনক চমকে, জানি একটা পাপ কাজ করছি তার ওপর লুকিয়ে আনন্দলোক, হাত থেকে বৈটা ছুঁড়ে ফেলে দিলাম আর দেখলাম দুধের মত সাদা তরল পিচকিরির বেগে বেরিয়ে এসে আমার উরু ভিজিয়ে দিচ্ছে। হ্যাঁ, আমার নিজের হাতে কৌমার্য্য ভাংল মমতা কুলকার্ণীর মাধ্যমেই, তাও হতচকিত অবস্থায়। বেওয়াফা নব্বই আমায় জীবনের প্রথম পরম আনন্দটাও দিল সম্পুর্ণ অপ্রস্তুত করে।

    (চলবে)
  • kallol | 119.226.79.139 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:০৬540351
  • অ, তুমি দেবুর ছাত্র।
    দেবুর কবিতা আমার খুব ভালো লাগতো। আমরা একই ওয়ার্ডে থাকতাম না। তবে আমাদের ওয়ার্ড আর ওদের ওয়ার্ডের মাঝে একটা বন্ধ দরজা ছিলো। দরজার ওপাশ থেকে ভেসে আসতো প্রণবদার বাঁশি, আর সমীরদাকে শোনানোর জন্য দেবুর কবিতা।
    দেবুকে প্রথম দেখি ছাড়া পাবার পর ফোর্থ ট্রাইবুনাল কোর্টে। বাম সরকার তো ওদের ছাড়বে না - ওরা নাকি শুধুই ডাকাত, রাজনৈতিক বন্দী নয়। ওরা অনন্ত সিং এর দলে ছিলো। আমাদের রঞ্জনও তো প্রথম প্রথম ওদের সাথেই ছিলো। পরে অবশ্য বন্দীমুক্তি আন্দোলনের চাপে ওদের ছেড়ে দেওয়া হয়। দেবু ছাড়া পেয়ে বাউলমনে কাজ নেয় - সতু বদ্যির সাথে মহাভারত পড়তো।
    দেবুর গল্প বলি। দেবুরা তখন থাকতো বি এল সাহা রোডের ভিতর দিকে সিরিটি-কলাবাগান এলাকায়। একদিন বেশ রাতে দেবু বাড়ি ফিরছে। বেশ রাত। তখন ওদিকটা ভাটিখানার দৌলতে কিঞ্চিত গোলমেলে। তা, তাতে দেবুর কি। বি এল সাহা রোড থেকে বাড়ির দিকে গলিতে ঢুকতেই দুজন ভেরেন্ডা দেবুকে আটকালো। তার মধ্যে একজনের কাছে একটা ওয়ান শটার। এরপর দেবুর জবানীতে।
    বুঝলি, মাথাটা গরম হয়ে গেলো। শেষে এও ছিলো কপালে, আমায় ওয়ান শটার দেখায়! ওদের বললাম
    - আর একটা আছে?
    - কেন বে!
    - থাকলে, ওটা মাটিতে ফেলে রাখ, আর তোরটা পকেটে রাখ। তুই পকেট থেকে বার করার আগে তোকে শুইয়ে দেবো। আর না থাকলে ফুটে যা এখন।
    ওরা চলে গিয়েছিলো।
    যদুগোড়া জঙ্গলে হেভি মেশিনগান চালানো দেবু, কবিতা অসম্ভব ভালো লিখতো।
    দেবুর সাথে আর বহুকাল যোগাযোগ নেই। তোমার সাথে আছে কি?
    আচ্ছা দাঁড়াও, আমিই চেষ্টা করি।
    টইটা ঘেঁটে দেবার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। কি করবো, বন্ধুদের কথা এলে পারি না যে।
  • PM | 86.96.160.8 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:২৪540362
  • এতোদিনে শ্রাবনীর সংগে ফাইট দেবার মতো পুরুষ লেখনি(গল্পো বলিয়ে) এলো গুরুতে
  • ppn | 202.91.136.71 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:২৮540373
  • না:, ছেলেবেলাটা একই রকম। দিব্যা ভারতী, এসএইচএম, সুমনের গান, ইংরেজি শিক্ষা, বাবার হাতে কথায় কথায় ঝাড় সবই মিলে যায়।
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:৩৮540384
  • দিব্যা ভারতী আপ্পনের ছেলেবেলা??? কোন ব্যাচ তুমি? দিব্যা ১৯৯৩ তে মারা গেছিল না?
  • ppn | 202.91.136.71 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:৪১540395
  • টিন এজ পেরোতে আরো বছর তিনেক।
  • dd | 59.97.121.132 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:৪৫540417
  • সত্যি।
    যেমন কল্লোল তেমনি আমি। পি পাকামির শেষ নেই, খালি ক্যাঁক করে আজাইরা কমেন্ট করা।

    এই যেমতি, কল্লোল লিখে দিলে "হেভী মেশিনগান চালানো" দেবু। সব্বোনাশ। মেরেকেটে এল এম জি হলেও হতে পারে, হেভী মেশিন গান হবে কোথথেকে? সেও আবার ঘোর জংগলে? যদ্দুর মনে পরে কয়েকটি স্টেনগান ছিলো। এই পর্যন্ত্য।
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:৪৫540406
  • এদিকে নব্বই বুড়ো হচ্ছিল, আমরাও বড় হচ্ছিলাম। কলকাতার দিকে একা একা যাই। ট্রায়াংগুলার পার্কে বসে আড্ডা মারি। মাঝে মাঝে একটু সাহস করে বিবেকানন্দ পার্ক বা লেকের ধার। জাপটাজাপটি যুগল দেখে হাঁ চোখ সরাতে পারছি না, মনে মনে ভাবছি কবে আসবে আমাদের দিন। দু একবার সিটি মেরে পালিয়ে গেছি, তারপর নিজেকে কিরম বোকা বোকা লেগেছে। ধুস, আমি পাইনি বলে আওয়াজ দিচ্ছি! স্কুল কেটে প্রদীপ দু-একবার। তবে বড্ড নোংরা, পোষায়নি। লেকের ধার অনেক ভাল। `একটা মাসি আসত, চানাচুর ঝাল মটর এসব বিক্রি করত। নেব না বল্লে চোখ পাকিয়ে নেবে না মানে? নাও নাও তাড়াতাড়ি দামটা চুকিয়ে দাও আমার হাতে টাইম নেই বলে ধমক ছাড়ত।` সেই মাসিকেই আবার দেখতাম প্রেমিক প্রেমিকাদের বলে দিতে `এবার উঠে যাও, সন্ধে হয়ে গেছে, পুলিশ আসতে পারে`। ম্যাডক্স স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর আলো তখন লাখ রোশনাই হয়ে ছটা জ্বালাচ্ছে আমাদের চোখে মুখে।

    এই ট্রায়াংগুলার পার্কেই আমার প্রথম শরীরের স্বাদ, এক উত্তাল নব্বই এর রোদ মরে যাওয়া ঘুমিয়ে পড়া বিকেলে, আচমকা ঠোঁটে ঠোঁট……

    আর এরকম-ই এক রোদ মরে আসা বিকেলে দুম করে আমি রাজনীতিতে জড়িয়ে গেলাম। আজকাল মনে হয়, এটাও ঐ নব্বই-য়ের চক্রান্ত। ওরকম মনোরম মনোটনাস ম্যাজিক মোমেন্ট পরের দশকে আর আসেনি। স্কুল কেটে কলেজ স্ট্রীট গেছিলাম। আমি আর আমার এক বন্ধু। দেখি মাধ্যমিকের খাতা রিভিউ করার দাবীতে অবস্থান চলছে। ব্যাপারটা অল্প স্বল্প জানতাম, পাড়ার এক দাদা বলেছিল, সে যেতেও বলেছিল। স্বভাবজাত কৌতুহলে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম। দেখি, অনেক উজ্জবল মুখ, হাসছে, গান গাইছে, খোরাক করছে একে অন্যকে। আন্দোলন না হট্টমেলা? হঠাত দেখি এক হাল্কা দাড়ি সুদর্শন, খয়েরী পঞ্জাবী আর জিনস, গিটার হাতে বসে পড়ল, তারপর উদাত্ত কন্ঠে গান `কিসের ভয় সাহসী মন লাল ফৌজের, লাফিয়ে হই পার`। অনেকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে, একসাথে গলা মেলাচ্ছে-জীবনে ঐ প্রথম প্রতুল শোনা, কেঁপে গেলাম ভেতরে ভেতরে। তার ওপর ঐ হালকা দাড়ির গিটার- জাস্ট কিচ্ছুটি না বুঝেই, শুধু এগুলোকে ভালবেসে দড়াম করে পড়ে গেলাম। সেই শেষ নব্বইতেই কোনো এক ছাত্র সংগঠনের ম্যাগাজিনে কোন এক অনামী মিত্রর লেখা সেই কবিতা, যা আমার সমস্ত বিষণ্নতা, মনখারাপের টুঁটি ধরে নাড়িয়ে দিয়ে আমুল চারিয়ে এল ভেতরে ভেতরে-`নৈঋতে মেঘ জড়তা ভাংলে মৌসুমী বায়ু বৃষ্টি আনলে আনমনা হয় সেই যে বালক, দেখেছিস তার বিষণ্ন চোখ? চোখ বলে দেবে চোখ বলে দেয় মানসিক চলাচল, কার বুকে ক্ষোভ, কার মনে ভয়, কার বুকে দোলাচল? ঝড় কেন ওঠে, ঝড় কেন বয়? মৌসুমী বায়ু? আর কিছু নয়? প্রশ্নলোর সঠিক উত্তর, দিতে কি পারবি, জানা আছে তোর? পারবি না তুই পারবে না কেউ ভাসায়নি তোকে দুরন্ত ঢেউ, বালকটি জানে। বালকটি আনে কাছে আসা মানে আষাড়ের প্রথম ধারাবর্ষণে অহেতুক নয় সকল ইচ্ছেই বৃষ্টি যখন জানান দিচ্ছে বিষন্নতা…….`

    নব্বই তখন রাজনীতি শেখাচ্ছে, কট্টর সিপিএম বাপের সাথে আগমার্কা নক্সাল ছেলের বেফিকর ঝগড়া শেখাচ্ছে, প্রেম শেখাচ্ছে, লিটল ম্যাগ শেখাচ্ছে। কবিতা শেখাচ্ছে। সেই সুত্র ধরে ধীমান আমায় বলছে নতুন একটা ব্যান্ডের গান এসেছে, শুনবি নাকি? আমি শুনছি, প্রথম গান `বন্ধু তোমায় এ গান শোনাব বিকেলবেলায়` আর শব্দগুলো প্রজাপতি হয়ে মাথার ভেতর গেঁথে বসছে, উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। পাগলের মতন শুনে যাচ্ছি যদি বলো আড়ি, তোমাকেও ছেড়ে যেতে পারি`, অকারণ নুড়িঘর, এল হরিণের মাস`, এবং নব্বই-এর শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক গান ভেসে যায় আদরের নৌকো`। আজকাল মনে হয়, আমাদের আর্বান সদ্য-তরুণ বোধে প্রেম জিনিসটা শিখিয়েছিল সুমন না, চন্দ্রবিন্দু। সুমন আরেকটু বয়স্কদের জন্য, যারা পশ্চিমের বদলে পূর্বের দিকে তাকিয়ে রাত্রির তপস্যা দেখে। আর আমাদের ঐ এলোমেলো উত্তাল দিনগুলোর এবড়ো-খেবড়ো রং, থাক, শুধুই থাক বরং।

    তো, এখানেই গল্পটা শেষ না হলে ভাল হত। কিন্তু মাত্র এক দশকে আর কত কি-ই বা করতে পারে, একটা সময়? তাও তো অনেক কিছুই থাকে, যেগুলো লিখতে ভাল লাগে না। ধু ধু রংকলের মাঠে ফ্ল্যাট উঠে যায়। কালী মন্দিরের পুরুত চাকরী ছেড়ে দিয়ে দেশে চলে যায়, তার ভাংগা টেপ-রেকর্ডার নিয়েই। অপারেশন সানশাইনের এক অসহনীয় রাত ভেংগে দিয়ে যায় টারজানের ঝুপড়ি। সকালবেলা দুধ আনতে গিয়ে দেখি টারজান শুন্য দৃষ্টিতে বসে আছে, গালে হাত দিয়ে, চারপাশে অবিন্যস্ত ছড়ানো ছিটানো হাঁড়ি কুঁড়ি, মাদুর, কাপড়-চোপড়-টারজান আমার দিকে শুন্য চোখে চেয়ে বলে `এই সব, সব..`। হাত দিয়ে চারপাশ দেখায়। আমি বলি `সব ভেংগে দিল? সব? কিচ্ছুটি বল্লে না? ` টারজান শুন্য চোখে তাকায়, তাকিয়ে থাকে, তাকিয়েই থাকে। আমি পালিয়ে আসি। শনিমন্দিরের পাশে চোলাই আর সাট্টার ঠেক গজিয়ে ওঠে। কুয়াশাজড়ানো আদি গংগা দিয়ে ভেসে যায় মরা লাশ, দুধারের বৌ ঝিরা মুখে কাপড় চাপা দিয়ে বলে `আহা রে, কে গো?` সেই স্বেচ্ছাচারী লাশের নাম কি? কে জানে! পোদ্দার হয়ত! শ্মসানে গজিয়ে ওঠে ইলেকট্রিক চুল্লী, রমরমিয়ে বাড়ে ফুল বেলপাতা আর গোপনে খাট জামা কাপড় সাপ্লাই বিজনেস-না: এসব লিখতে ইচ্ছে করে না আর।

    তবুও, আমাদের একান্ত ব্যাক্তিগত রানওয়ে জুড়ে পড়ে থাকে, কেউ নেই শুধু শুন্যতা। কখনো দু একটা পাতা উড়ে যায়, আর এই স্বপ্ন, এই গন্তব্যের মধ্যে মরে যেতে যেতে আমরা বুঝি যে আমাদের নব্বই আসলে সেই বেনেডিক্ট আন্ডারসনের ইমাজিন্ড কমিউনিটি, যা বাস্তবে কখনো ছিল না। ছিল, হয়ে আছে আমাদের ভালবাসা, বেদনায়, মনখারাপের রাতে। তার কোনো দায় নেই নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করার। তবুও মায়া থেকেই যায়। মায়া থেকে যায় অনামী সেই মিত্র-র কবিতায়, তার রাজনীতি ছেড়ে দিলেও, পাঁক জমতে থাকা মজা পুকুরের কোণে কোণে, ট্রায়াংগুলার পার্কের সিঁড়িতে, ঢাকুরিয়া ব্রিজের গায়ে, যাদব্‌পুর ইউনি-র মাঠে, ফুটপাতের গায়ে অবহেলায় লটকে থাকা লাল ফেস্টুনে, ভুলে যাওয়া ঋষি কাপুরের গানের সুরে- আর এই সব মায়া নিয়েই আমরা গড়ে তুলতে থাকি আমাদের নব্বই, আমাদের নিজেদের ইমাজিন্ড কমিউনিটি। হয়ত সেই গোষ্ঠীর মধ্যে বাঁচতে বাঁচতেই মরেও যাই কখনো কখনো, বা হয়ত.. হয়ত বা…

    (চলবেনা)
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:৪৭540428
  • কল্লোলদা, দেবু দা উপন্যাস-ও লিখেছিল। বাঁয়ড় বন্দী। দুখানা কবিতার বই বেরিয়েছিল, `জেলখানায় গান্ধী জয়ন্তী` আর `অন্য পৃথিবীর কবিতা`

    এখন সরশুনার দিকে থাকে।
  • tatin | 122.252.251.244 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১২:৫১540439
  • অসামান্য,এত সত্যি লেখা, নিজের সংগে কথা বলবার মতন সত্যি
  • siki | 155.136.80.36 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১৩:০৮540450
  • হুবহু একরকম, হুবহু।

    ছেলেবেলা। ভুলে যাই নি। তবে এভাবে লিখতে পারতাম না। পারবো-ও না কোনওদিন।

    আভূমি কুর্নিশ, সিদ্ধার্থ।
  • Siddhartha | 131.104.241.62 | ২৮ মার্চ ২০১২ ১৩:১১540462
  • ওহ, মেমারি ট্রেটরগিরি করেছে। ভিক্টোরিয়া প্রথম দেখা ৯৩ না, ৯০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন