এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • এইটা তোমার গান - ৪

    Abhyuday
    গান | ১০ জানুয়ারি ২০১১ | ২০৩১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 72.83.103.17 | ২৩ জুন ২০১১ ১৬:৫৪463965


  • pi | 72.83.103.17 | ২৩ জুন ২০১১ ১৭:১২463966
  • কালের রাখালের গানটাও থাক। পোটার গানটা যদিও আমার একটু বেশি ভাল লাগে।



    এই সিনেমাটার সব কটা গান ই বেশ।
  • achintyarup | 59.93.244.148 | ২৪ জুন ২০১১ ০৪:৫২463967
  • অনেক ধন্যবাদ
  • abastab | 61.95.189.252 | ২৪ জুন ২০১১ ১০:০১463968
  • কালোয়াতি গানের ভক্ত কেউ আছেন নাকি? আমার মামার বাড়ির দেশের লোকের গান এইখানে

    হ্‌ত্‌ত্‌প://য়্‌ব্‌ব।ইন।ওম/মুসি/সেঅর্চ।ফ্‌প?সেঅর্চ্‌দত=তরপদ+চক্রবোর্ত্যইসিতে্‌সঅর্চ=সেঅর্চ
  • Rajesh Datta | 117.194.0.129 | ২৯ জুন ২০১১ ১৬:১১463969
  • বাংলা গণসংগীতের প্রবাদপ্রতিম গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী সুরেশ বিশ্বাস আজ বিস্মৃতপ্রায়। সাধারণ শ্রোতারা সুরেশ বিশ্বাসের নামের সাথে বিশেষ পরিচিত নন। কিন্তু তৃতীয় ধারার রাজনৈতিক আন্দোলন ও গণআন্দোলনের কর্মীরা তাঁকে ও তাঁর অবিস্মরণীয় গানগুলিকে শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় ও নিবিড় মমতায় স্মরণ করেন। এই গণশিল্পীর গানের সংখ্যা আনুমানিক তিন শতাধিক। কিন্তু ক্যাসেট মাত্র একটি। তাঁর জীবদ্দশায় আশির দশকের শেষে কিছু গুণগ্রাহীর উদ্যোগে “গণমঞ্চে”র পরিবেশনায় “সুপ্ত আগুন আছে ক্রোধে মিশে” নামে একটি গানের ক্যাসেট বেরিয়েছিল। এই ক্যাসেটের নয়টি গান অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। দুই দশক অতিক্রম করেও গানগুলি আজও গণসংগীতপ্রেমীদের স্মৃতিতে উঙ্কÄল। ক্যাসেটটি দুর্লভ হলেও এখন ইন্টারনেটে আপনারা শুনতে পারেন,ডাউনলোডও করতে পারেন। এইখানে ক্লিক করুন--
    http://www.milansagar.com/kobi/suresh_biswas/kobi-sureshbiswas.html

  • Rajesh Datta | 117.194.0.129 | ২৯ জুন ২০১১ ১৬:১৭463970
  • মার্জনা করবেন আগের লিংকটি দিতে ভুল হয়ে গেছে। গণসংগীত শিল্পী সুরেশ বিশ্বাসের ওয়েবসাইটে যেতে এইখানে ক্লিক করুন।
    http://www.milansagar.com/kobi/suresh_biswas/kobi-sureshbiswas.html
  • I | 14.96.162.222 | ৩০ জুন ২০১১ ০১:১৫463973
  • অজস্র ধন্যবাদ।
    রণেন রায়চৌধুরী-র গানের কালেকশন কারো কাছে পাওয়া যাবে? মেঘে ঢাকা তারা'র সেই "মন তরে কেবা পার করে' কিম্বা সুবর্ণরেখা'র "দেহতরী ছাইড়া দিলাম'-এর গায়ক.....
  • achintyarup | 59.93.247.172 | ৩০ জুন ২০১১ ০৫:৩০463974
  • রণেন রায়চৌধুরী কেবল ফিল্মেই শুনেছি, কিন্তু দেহতরী দিলাম ছাড়ি গুরু তোমারই নামে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গলায় আমার ক্যাসেটে আছে। আমার খুবই প্রিয় গান এবং ক্যাসেট। আহা।

    বাজারীরা বাজার করে
    কত রঙ্গেরই বাত্তি জ্বলে গুরু
    দোকানের সামনে।
    তারা জ্বালাইয়া বাত্তি করে ডাকাতি ও
    সদর মুকামে....
  • kallol | 115.242.203.22 | ৩০ জুন ২০১১ ০৬:৫৪463975
  • রনেনদার একটা সিডি বের হয়েছে প্রায় বছর দুয়েক আগে। আমার কাছে আছে। কলকাতায় ওনার মেয়েদের কাছে পাওয়া যাবে। আমি ওদের যোগাযোগ এখানে দেবার চেষ্টা করছি।
  • nyara | 203.110.238.17 | ৩০ জুন ২০১১ ০৮:৩৮463976
  • 'দেবী'তে সত্যজিতের লেখা শ্যামাসঙ্গীত 'এবার তোরে চিনেছি মা'-ও রণেন রায়চৌধুরীর গাওয়া না?
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ১১:২৫463977
  • রনেন রায়চৌধুরীর সিডি পাওয়া যাচ্ছে - কলকাতা কফি হাউসের দোতলায় - বই-চিত্র নামের দোকানে।

  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ১৫:৪০463978
  • রাজেশকে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা সুরেশদার ""সুপ্ত আগুন আছে ক্রোধে মিশে""র গানগুলো নেটে তুলে দেওয়ার জন্য।
    ক্যাসেটটায় দুটো অসম্পূর্ণতা আছে। প্রথমত: প্রকাশের দিনক্ষণ দেওয়া নেই। এটা ভুল। দ্বিতীয়ত: সঙ্গীতায়োজকের নাম নেই। এটা বাধ্য হয়ে। রেকর্ডিং হয়েছিলো ১৯৮৫র জুলাই/আগস্টে। প্রকাশিত হয়েছিলো সম্ভবত: ১৯৮৫র অক্টোবরে।
    তখন কালীঘাট-রাসবিহারী অঞ্চলে আমাদের রাজনীতির দৌড় স্তিমিত হয়ে আসছে। আমরা যারা ঐ এলাকায় তৃতীয় ধারার গণসংগঠন করতাম (পিপিএফ - প্রোগ্রেসিভ পিপলস ফোরাম) তারা বেকার অবস্থা থেকে চাকরী-বাকরী পেতে শুরু করলাম। ফলে আর পূর্ণ সময়ের রাজনৈতিক কর্মী রইলাম না। সংগঠন মার খাচ্ছিলো। ১৯৮৫তে পুরসভার ভোট হলো বহুকাল পর। আমরা নিজেদের নামেই ভোটে লড়লাম ও সিপিএমের কাছে হারলাম। আমরা তৃমুখী লড়াইয়ে (সিপিএম-কং-আমরা) দ্বিতীয় হয়েছিলাম।
    ঐ সময়ে এক শনিবার, আমাদের সকালের আড্ডায়, এক বন্ধু এসে একটা প্রস্তাব দেয় - সুরেশদার গানের একটা ক্যাসেট করা হোক। সুরেশদা আমাদের ঐ এলাকার মানুষ। আদি গঙ্গার পাড়ে একটা খুপরী ঘরে সুরেশদা-বৌদি আর ওঁদের পুত্র সুমনকে নিয়ে সংসার। সুরেশদা গান শিখিয়ে, বৌদি ব্লাউজ সেলাই করে যা রোজগার করতেন, তাতে কিছুই হতো না, সেটা বলাই বাহুল্য। তবে এলাকার মানুষ ওদের জন্য প্রাণ দিয়ে করতেন। সুরেশদার প্রতিবেশী এক গোয়ালা, কোন পয়সা না নিয়েই দুধের যোগান দিতেন রোজ। বদলে সুরেশদাকে ওদের পালপাব্বনে গাইতে হতো।
    সে যাই হোক। আমরা লেগে পড়লাম। আমাদের বন্ধু, ঐ এলাকারই সেতারী দীপক চৌধুরী সঙ্গীতায়োজনে। এটা তো স্বত:সিদ্ধ। দীপকদা আমাদের প্রধান আড্ডাধারীদের একজন, রবিশঙ্করের প্রিয়তম ছাত্র। ও ছাড়া আর কেই বা করবে। দীপকদার বাজনার সাথে যাদের পরিচয় নেই, তাদের জন্য - সাদা-কালো দূরদর্শনের সাংঘাতিক জনপ্রিয় সিরিয়াল ""তেরো পার্বন"" এর সঙ্গীত পরিচালক। গুপি বাঘা ফিরে এলো, হীরক রাজার দেশের সহকারী সঙ্গীত পরিচালক। গান বাছা হলো। ঠিক হলো কোরাস লাগবে। কোরাসের লোকজন বাছা শুরু হলো। দীপকদার নির্দেশ - যারা ক্লাসিকাল শিখছে বা শিখেছে এমন ছেয়ে-মেয়ে চাই।

  • dukhe | 122.160.114.85 | ৩০ জুন ২০১১ ১৬:০২463979
  • @nyara, দেবীর গান পৃথ্বীশ মুখোর গাওয়া ।
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ১৬:১৩463980
  • রেকর্ডিং হবে বেহালার অডিও সেন্টারে। ওখানে সমীর দাস সাউন্ড রেকর্ডিস্ট। অসাধারন মিউজিক সেন্স আর সাংঘাতিক কান।
    বাজেট হলো। রেকর্ডিং থেকে সেলোফেনে মোড়া ক্যাসেট পর্যন্ত সে আমলে তিরিশ হাজার টাকা।
    টাকা তোলা শুরু হলো। অভূতপূর্ব সাড়া পেলাম, সারা পশ্চিম বাংলা থেকে। মূলত: প:ব:র তৃতীয় ধারার লোকজন, যাদের মিটিং-মিছিলে সুরেশদা গান গেয়ে বেড়াতেন, তারা অনেকেই ঝাঁপিয়ে এলেন। তখন আমরা যারা চাকরী করছি, তাদের মাইনের ১০% প্রতি মাসে ক্যাসেট না বার হওয়া পর্যন্ত। টাকা উঠে এলো।
    ওদিকে দীপকদা প্রতিদিনই অ্যারেঞ্জমেন্টের নানান ভাবনা শোনাচ্ছে। এই নাচিজও প্রাণপণে তা গলদ্ধকরণ করে চলেছে।
    রেকর্ডিং এর দিন এক কান্ডো ঘটলো। যন্ত্রীদের মধ্যে বেশীরভাগই দীপকদার ছাত্র। এছড়া আর যাঁরা প্রোফেশনাল মিউজিসিয়ানরা ছিলেন, তাঁরাও দীপকদার সাথে নিয়মিত কাজ করতেন। তাদের মধ্যে ভ্যাকাদা প্রবাদপ্রতিম পারকারশনিস্ট, তখনই খুব নাম করেছে সং ভায়োলিনিস্ট আউল-বাউল নামে দুই যমজ ভাই আরও দারুণ সব বাজিয়ে। এর মধ্যে তেজা এসে হাজির। তেজা মানে তেজেন্দ্রনারায়ন। তেজা তখনন রবিশঙ্করের নির্দেশে দীপকদার কাছে শিখছে। যদিও তখনই উঠতি সরোদীয়া হিসাবে নাম করেছে। রেডিওতে বাজাচ্ছে, নানান অনুষ্ঠানে ডাক পাচ্ছে। দীপকদা তেজাকে রাখেনি, কারন ও তখন পুরোদস্তুর প্রোফেশনাল। ওকে বিনিপয়সায় কাজ কারাতে দীপকদার মন চায় নি। কিন্তু সতীর্থদের কাছে খবর পেয়ে তেজা হাজির। দীপকদাকে সোজা বলে দিলো, ""তুমি আমায় রাখো বা না রাখো, আমি থাকলাম। যদি মনে করো আমায় কিছু বাজাতে দিও। নইলে তোমায় অ্যাসিস্ট করবো। সেটাও আমার শেখা। আর পয়সা? তুমি যদি একজন মানুষের জন্য করতে পারো, তবে সেই মানুষটার জন্য কিছু করা আমারও কর্তব্য।"" আজও কানে সেই কথা বাজে। তেজা অনেক বড় মনের মানুষ। আজতো ওর কতো নামডাক। এখোনো দেখা হলে সেই রেকর্ডিংএর গল্প হয়।
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ১৬:৫৩463981
  • প্রথমদিন ভালোই কাটলো। পাঁচটার মধ্যে কাজ শেষ। পাঁচটা গান হয়ে গেছে। আর বাকি গান কাল। তারপরদিন এডিটিং। সেই প্রথম কোন রেকর্ডিং এ আছি। আমার এমনি কোন কাজ নেই। দীপকদা আর সমীরদার পাশে বসে গোগ্রাসে গিলছি ওদের কথা আর কাজ।
    তখন অ্যানালগ রেকর্ডিংএর যুগ। সিনেমার রিলের মতো ইয়া ইয়া ম্যাগনেটিক টেপে রেকর্ড করা হচ্ছে। তখনকার দিনে নতুন মেশিন, সিঙ্গাপুর থেকে আনানো ষোল ট্র্যাকের রেকর্ডিং সিস্টেম। কিভাবে প্যাচ রেকর্ডিং হচ্ছে। গানের কোন একটা অংশ রি-রেকর্ডিং হবে। একটু আগে থেকে আগের রেকর্ডিংটা চালানো হলো। তিনটে ফাঁকা ট্র্যাকে আবার রেকর্ড হবে। সুরেশদাকে বলা হলো একটু আগে থেকে পুরোনো রেকডিংএর সাথে গেয়ে যেতে। সমীরদা একটা প্লাস্টিকের স্কেলের মতো কিছু দিয়ে ঐ তিনটে ট্র্যাকের বোতামের ওপর ধরে আছে আলগা করে। যেই রিরেকর্ডিংএর যায়গাটা এলো ওমনি ঐ স্কেলটা চেপে তিনটে বোতাম একসাথে অন করে দিলো। সুরেশদা তো গেয়ে যাচ্ছে, পুরোনো রেকর্ডিংএর সাথে। তারপর যায়গাটা আবার রেকর্ড হয়ে গেলে থামিয়ে দেওয়া হলো।
    প্রত্যেকটা গান ফাইনাল রেকর্ডিএর পর পুরো গানটা শোনা হচ্ছিলো। সুরেশদা রেকডিং হলের কার্পেটে লম্বা হয়ে শুয়ে গানগুলো শুনতো। গান শেষ হয়ে গেলে শিশুর মতো আনন্দে বলে উঠতো - কি দারুণ শুনতে লাগছে রে! তোরা যা করলি না, কি বলবো।
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ১৭:২৬463983
  • সুরেশদার একটা হিন্দি গান - বীর শহিদোঁ / মেরে দোস্তো / সবকো মেরা সলাম। দরবারী কানাড়ায় বাঁধা গানটি সম্ভবত: সুরেশদার করা শ্রেষ্ঠ গান। সুরেশদা এমনিতে গানটাতে প্রচুর ছোট ছোট মুড়কির কাজ দিয়ে গাইতো। দীপকদা সব কাজ ছেঁটে ফেলে একদম খাড়া সুর লাগিয়ে গাইতে বললো। সুরেশদা প্রথমে গাঁইগুঁই করেও মেনে নিলো। গানটা একবারে ফাইনাল হলো। চালিয়ে শোনার পর প্রায় দুমিনিট আমরা কেউ কোন কথা বলতে পারিনি। সুরেশদার বানভাসি চোখ আমাদের পাগল করে দিচ্ছিলো। দীপকদার হাত জড়িয়ে ধরে নীরবে কান্নায় ভেসে যাচ্ছে সুরেশদা। গোটা হলটায় স্তব্ধতা থম মেরে আছে। দীপকদা পরম স্নেহে সুরেশদার পিঠে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই সময়টার জন্য মরে গেছিলাম। সেই শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া মৃত মানুষ, যারা সুখ-দু:খ ছাড়িয়ে চলে গেছে। দুই মহান শিল্পী একে অন্যের কাছে সঁপে দিয়েছে সৃষ্টিশীল আবেগে। ঘোর ভেঙ্গে আউল-বাউলের একজন আমায় ফিসফিস করে বলেছিলো, ""দাদা রেকর্ডিং করে খাই। বহু তাবড় তাবড় মানুষের গান শুনি রোজ। এমন করে দরবারী লাগাতে আজ অবধি কাউকে শুনিনি।""
    ভাগ্যিস ওটাই সেদিনের শেষ গান ছিলো। না হলে ওখানেই সেদিনের কাজ শেষ করে দিতে হতো। এর পর আর কিছু করা যায়!!
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ১৯:১৪463984
  • কিন্তু এবারে সুরেশদাকে মাংস ভাত খাওয়াতে হবে।
    লাঞ্চের সময় মাংস ভাত হয়েছিলো। খুব ঝাল ঝাল করে রাঁধা মাংস, তাতে ডুমো ডুমো আলু। ও: সে এক সুরুৎজ্ঝরাস কেস। কিন্তু দীপকদা তো কিছুতেই সুরেশদাকে তা খেতে দেবে না। অম্বল হলেই ঝাড়। গলার টোনাল কোয়ালিটি পাল্টে যাবে। সুরেশদার সে কি রাগ। হ্যাঁ, আমার রেকর্ডিং, তোরা সব খাবি, আর আমার বেলা লাউয়ের তরকারী!! রেকর্ডিং ভ্যাস্তায় আর কি। শেষে রফা হলো, তোমায় রাতে খাওয়াবো। যত পারো, মাংস ভাত। কাছে বুড্‌ঢার বাড়ি। ওকেই বলা হলো মাসীমাকে বল সুরেশদার জন্য মাংস রেঁধে পাঠাতে। মাসীমা পাঠালেন। সুরেশদা পাড়ায় ফিরে দিলীপের দোকানের ভাত দিয়ে সে মাংস খেলো।
    আউল-বাউল ও দুপুরে মাংস ভাত খায়নি। ওদের তখন কতই বা বয়েস, কুড়ি-বাইশ হবে। ঐ বয়সেই দুজন নিজেদের সাদা অ্যাম্বাসেডারে চড়ে আসতো, আর বাড়ি থেকে আনা খাবার খেতো।
    আউল বাউল এখন - http://www.flickr.com/photos/u2amit/4022494611/। ওদের নাম বোধহয় দেবশঙ্কর, জ্যোতিশঙ্কর।
  • I | 14.99.99.211 | ৩০ জুন ২০১১ ২০:৫০463985
  • কল্লোলদা, দারুন লাগলো।
    সুরেশ বিশ্বাসকে একবার শুধু দেখেছিলাম সামনে থেকে-প্রেসি-র মাঠে প্রতিবাদী ও লোকগানের আসরে। ছেলেমেয়েরা কেউ খুব একটা পাত্তা দিচ্ছিল না।
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ২২:১৩463986
  • পরের দিন রেকর্ডিং দিব্যি চলছে। তর্কাতীতভাবে সুরেশদার সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ""শত শহীদের রক্তে রাঙ্গা পতাকা / আজ আমরা বয়ে নিয়ে চলেছি"" সেটা শুরু হয়েছে। গানটা সুরেশদা এতোবার গেয়েছে যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও ঠিক সুরে গেয়ে দেবে। স্টা করতে গিয়ে যাতা কান্ডো। ইন্টারল্যুডের পর দ্বিতীয় অন্তরা কিছুতেই ঠিক মত ধরতে পারছে না। কম করে দশবার টেক হলো। আমরা হতবাক। দীপকদার মত ঠান্ডা মানুষ ক্ষেপে গেলো। কি অসুবিধা হচ্ছে, জিজ্ঞাসা করলে শুধু বলছে - একটা অন্য কি যেন বাজছে। শেষ কালে সকলের স্কোর শিট দেখতে গিয়ে বের হলো ব্যাপারটা। একজন সেতারের স্কোর শিটে একটা বার বাদ চলে গেছে। ফলে সে পরের পিসটা বাজাচ্ছে, যেটা গানের মধ্যে বাজবে। তাতে সুরেশদার অস্বস্তি হচ্ছে। সেটা ঠিক করা হলো। ব্যাস গাড়ি গড়গড়।

    তৃতীয় দিন এডিটিং সেরে, মাস্টার কপি নিয়ে ফেরা হলো এলাকায়। পাড়ার মাইকওয়ালা শংকরদা সারা কেওড়াতলা জুড়ে মাইক লাগিয়ে সেই ক্যাসেট বাজানো হলো। সারা কেওড়াতলা মোড় জুড়ে সুরেশদা ঝলমল করে উঠছে। কখনো গমগম করে উঠছে - আমি তোমাদের অতি চেনা বন্ধু, কখনো দরবারীর মায়াবী সুরে ছেয়ে যাচ্ছে ফুটপাথের বৃক্ষ সকল - বীর শহীদোঁ, কখনো চেতলা ব্রিজের রেলিংয়ে ভর দিয়ে গান দুহাত তুলে গাইছে সুপ্ত আগুন আছে ক্রোধে মিশে..........
    গোটা এলাকার মানুষ আমাদের বুক ভরা ভালোবাসায় ডুবিয়ে দিচ্ছেন। সুরেশ, সুরেশদা, সুরেশমামা, মাস্টারজি যে সকলের। আর সুরেশদা লজ্জা লজ্জা মুখ করে আমদের বলছে - আমায় কিন্তু দশ ক্যাসেট দিতে হবে। গলির সবাই চেয়েছে। আমরা কি করে বোঝাই ঐ সরল আর বিশাল মানুষটাকে সবই তো তোমার, তোমারই।
    এতো সব কিছুর পরে আমরা যখন হাক্লান্ত হয়ে উত্তমের চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে শুয়ে কদম গাছটার ফাঁক দিয়ে আকাশ দেখছি, সুরেশদা বাড়ি থেকে খেয়ে এলো লুঙ্গী আর গেঞ্জি পড়ে। আমায় দেখেই বললো,
    - এই কল্লোল পান খাওয়াবি? তোর বৌদি আজ যা চচ্চড়ি করেছিলো না!
    - এই যে তুমি এতোগুলো মাংস ভাত খেলে, তারপর আবার চচ্চড়ি!
    - আহা সে তো কখন............। তারপর গান শুনতে শুনতে আবার খিদে পেয়ে গেলো না!
  • kallol | 220.226.209.2 | ৩০ জুন ২০১১ ২২:১৭463987
  • ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গেছি, দ্বিতীয় দিন প্রায় তিন ঘন্টা বেশী কাজ হয়েছিলো। যে সব প্রোফেশনাল মিউজিশিয়ানরা কাজ করেছিলেন ওঁরা ওভারটাইমের পয়সা নেন নি।
  • ranjan roy | 122.168.204.111 | ০১ জুলাই ২০১১ ০৭:৪৩463988
  • আকা যা বলছেন সেই স্ট্যান্ডপয়েন্ট থেকেই মিল্টন ফ্রিডম্যান জোরদার আর্গু করেছেন যে আমার পরিশ্রমের টাকায় কেন অন্য ""আলসে'' লোকজনের সোশ্যাল সিকিউরিটি বীমা দেয়া হবে? আমার বাচ্চা স্কুলে পড়ে না, তো আমি কেন এডুকেশন সেস দেব-- ইত্যাদি।
    অবশ্যই বিরুদ্ধ মতের স্টিগলিজের পাল্টা বক্তব্য আছে।
  • ranjan roy | 122.168.204.111 | ০১ জুলাই ২০১১ ০৭:৪৫463989
  • অবাস্তব,
    কালোয়াতি গানের ভক্ত এই সাইট জুড়ে।
    কিন্তু URL LINK তো ঠিক করে লিখুন, যাতে আমরা ব্যবহার করতে পারি।
  • siki | 123.242.248.130 | ০১ জুলাই ২০১১ ০৯:১১463990
  • কল্লোলদা, ফাটাফাটি লাগল।
  • abastab | 61.95.189.252 | ০১ জুলাই ২০১১ ০৯:৪৭463992
  • কল্লোলদা দারুণ লাগলো। কিন্তু একটা প্রশ্ন ছিলো। দীপক চৌধুরীর বাজনা , মানে গানের আসরে তেমন করে শুনিনি। আমাদের অঞ্চলে বছরে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর বলতে প্রতি বছর শ্রীরামপুরে হত একটা আর উত্তরপাড়াতেও হত। মুখোমুখি দীপক চৌধুরির বাজনা শুনেছিলাম ১৯৮৮ তে শ্রীরামপুরে। তাও একলা নন রবিশঙ্করের সাথে। মনে মনে ধারণা করে নিয়েছিলাম যে উনি বোধহয় আমেরিকাতেই ঘাঁটি গেড়েছেন। সেটাকি সত্যি নাকি অন্য কোন কারণে তেমন করে বাজাননি বা তথাকথিত লাইম লাইটে (!) আসেননি।
  • kallol | 220.226.209.2 | ০১ জুলাই ২০১১ ১৫:৫৯463994
  • আপনি যখন দীপকদার বাজনা শুনেছেন, তখন আপনি আমার আত্মীয়।
    না, উনি কলকাতাতেই থাকতেন। মাঝে মাঝে বিদেশ যেতেন, আর আমাদের জন্য প্রচুর গল্প, সাঙ্গীতিক অভিজ্ঞতা আর ভালো ভালো মদ আনতেন।
    ভাগ্য তেমন করে মানিনি, কখনো। দীপকদার জন্য মানতে ইচ্ছে করে।
    আপনি যখন দীপকদাকে শুনেছেন তখন ওর হাত দারুণ চলছে। আপনি তো নিজেই শুনেছেন। সেই সময় ডোভার লেন ওকে সারা রাতে ডাকলো। একই রাতে রবিশংকরও বাজাবেন। দীপকদা ডোভার লেনকে না করে দেয়। আমাদের বলেছিলো - আমি একই মঞ্চ একই দিনে বাজালে গুরুজির সাথে আমায় তুলনা করবে। সেতারটা বাজাতে যতটা মাথা, প্রায় ততটাই গা গতর লাগে। সেখানে আমি গুরুজির থেকে অনেক অ্যাজাইল। ফলে আমি হয়তো গুরুজীর চেয়ে ভালোই বাজাবো। সেটা কাগজে লেখা হলে আমার পাপ হবে। আর ইচ্ছে করে খারাপ বাজালে গুরুজী কষ্ট পাবেন। তাই......
    ডোভার লেন আর ওকে দীর্ঘ দিন ডাকে নি।
    ঠিক সেই সময়েই দীপকদার ব্যাক্তিগত জীবনে ভীষন টালমাটাল চলে। বৌ-ছেলে ছেড়ে চলে যায়।
    ওদিকে রবিশংকরও অনুষ্কাকে তুলে ধরার জন্য অন্যদের অবহেলা করেন।
    দীপকদা শেষ ৫ বছর সেতার ছোঁয় নি। ২০০৯এ সে চলে গেছে, যেখানে আর সেতারের প্রয়োজন নেই।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন