এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শোক ও শস্যের ওয়াগন

    Siddhartha Sen
    অন্যান্য | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ | ৭৮৪০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Siddhartha Sen | 131.104.249.99 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৯:৪২528130
  • বাবা

    এই চিঠি তোমায় লেখার কথা ছিল নয় মাস আগেই। কিন্তু মে মাসের ঐ যুক্তি বুদ্ধি লোপাট করে দেওয়া ঘটনাগুলোর ধাক্কা সামলাতে লেগে গেল এতগুলো দিন। আমরা সকলেই ভেতরে ভেতরে জানতাম বামফ্রন্ট পড়ে যাবে, মৃত্যুপথযাত্রীর প্রাণপণে টানা শেষ নিশ্বাসটাও শুনতে পাচ্ছিলাম অনেকেই। তবুও, বুকের ভেতরটা এক লহমায় খালি হয়ে গিয়েছিল সেদিন। মনে হয়েছিল, পায়ের তলার মাটি খুঁজতে গেলে হাওয়ায় ভর করে ভেসে বেড়ানো ছাড়া আর কিছু করার নেই বেশ অনেকটা সময় জুড়ে। তখনি ভেবেছিলাম, এ চিঠি লিখব তোমায়। কাকেই বা লিখতে পারি, তোমাকে ছাড়া? যে তুমি প্রতিটা নি:শ্বাসের সংগে বলে ওঠো বামপন্থার কথা, যে বিশ্বাস করত যে কখনো না কখনো লাল কেল্লায় লাল নিশান উঠবেই, সেই লাল ঝান্ডার ব্যর্থতার কথা ভাগ করে নিতাম কার সংগে? আমার বিশ্বাসের ভিত্তিটা এতই দুর্বল, যে এই কঠিন সময়েও তাই মুখ ফেরাতে হচ্ছে তোমার দিকেই। আবার অন্য দিক দিয়ে দেখতে গেলে, এই চিঠি লেখার তো কোনো মানেই হয় না, তাই না? কারন তুমি, সারাজীবনের পার্টি অন্ত প্রাণ এক রাজনৈতিক কর্মী, আর আমি, নিজের বিশ্বাস, আস্থা সব কিছু নড়বড়ে হতে হতে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন এক প্রান্তবাসী যুবক, এই পশ্চিমবংগের কোনো রাজনৈতিক দলেই যার প্রশ্নহীন স্থান হয়নি। সে কি করেই বা প্রশ্ন করবে তোমাকে, অভিযোগের আংগুল তুলে ধরবে সব ভুলের জন্য, অপরাধের বিচার করবে উত্তরপুরুষের কাঠগড়ায়? তবুও, কিছু কিছু কথা লিখে রাখতে হয়। নাহলে হারিয়ে যায়। আংগুলটাকেও তুলে ধরতে হয়, নাহলে কোথায় যাবে আমাদের বি্‌য়্‌ক্‌তগত গাদা-বন্দুক প্রচেষ্টা, হোক না সে যতই তুচ্ছ, এই সংকটকালে?

    …………

    `কৌন সা ঝান্ডা বে?
    লাল ঝান্ডা!
    ভাগ শালা! ঠিক সে বোল!
    হালাল ঝান্ডা!`

    তোমাকে কখনো বলা হয়ে ওঠেনি, আমার প্রথম তোমার সংগে স্মৃতি বেহালার কে এফ আর মাঠে। বামফ্রন্টের মিটিং হয়েছিল, সেই আশির দশকের গোড়ায়। জ্যোতি বসু ছিলেন। আমি গিয়েছিলাম তোমার কাঁধে চেপে। আর মিটিং শেষে সকলে তাদের হাতে পাকানো খবরের কাগজে আগুন জ্বালিয়ে মশালের মত তুলে ধরেছিল গোটা মাঠ জুড়ে। যেন লক্ষ লক্ষ আগুনপাখি উড়ে বেড়াচ্ছে। তুমিও করেছিলে। সেই শিশু বয়েসে দেখা অত আগুন আমি কোনোদিন ভুলতে পারিনি। আমার ভয় লেগেছিল, শক্ত করে মুখ গুঁজে দিয়েছিলাম তোমার কাঁধে। আর তুমি হাসতে হাসতে বলেছিলে `ধুর পাগল, ভয় কিসের? এরা সকলে বন্ধু লোক`। সেদিন মনে হয়েছিল, আমাদের এত এত বন্ধু? মজা হয়েছিল না অবাক হয়েছিলাম, আর মনে নেই। কিন্তু আমার সব গল্‌প্‌গুলোর শুরু ঐ দিনটার থেকেই।

    তোমার কি মনে আছে, সেই দিনগুলোর কথা? ভুলে যাবার কথা নয় অবশ্য, যদি না সময়ের পলি তোমায় আচ্ছন্ন করে দেয়। সেই ডি-ওআই এফ আই এর দিনগুলো? আমায় কাঁধে নিয়ে মিটিং মিছিল যাওয়া? ব্রিগেড? পার্টির বুক স্টলে আমায় বসিয়ে রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা? বেহালা তখন প্রকৃত অর্থেই লাল-গড়। সত্তরের একটার পর একটা কিলিং, হানাহানি, খোঁচড়বাজি আর হিমেল সন্ত্রাসের ক্ষত আস্তে আস্তে শুকোতে শুরু করেছে। কংগ্রেসীরা মুখ লুকোতে ব্যস্ত। বেহালার হীরো তখন নিরঞ্জন মুখার্জী, যিনি ঐ দু:সময়েও কাউন্সিলার থেকে বুক দিয়ে পার্টিটাকে আগলেছেন। হীরো তখন হরিদাস মালাকার, ঊষা কোম্পানীর সংগ্রামী শ্রমিক নেতা, কোর্টে যাঁর বিরুদ্ধে রাশি রাশি জংগীপনার কেস, সেই কমরেড মালাকার এরকম-ই একটা কেসে আসামীর কাঠগড়ায় উঠে অবলীলায় পকেট থেকে বিড়ি বার করে কোর্টের মধ্যেই ধরালেন। উছ্‌ছ্‌বাসে ফেটে পড়ল মানুষ। কারণ কোর্ট বা পুলিশ তখনো ঘৃণিত, মানুষের চোখে কংগ্রেসের তল্পীবাহক। হীরো হলেন রঘুনাথ কুশারী, যাঁর টালির চালের ছোট্ট ঘরের সংগে কিছুতেই মেলানো যেত না তাঁর হৃদয়ের পরিসর। ভোলা চক্রবর্ত্তীদের গুন্ডারাজ নিমেষে উধাও, বেশিরভাগ কংগ্রেসী গুন্ডা পাড়া ছাড়া। বাস্তবে জ্যোতিবাবুরা প্রতিহিংসার রাজনীতি না নেওয়ার কথা বললেও অনেকেই সেই কথায় আস্থা রেখে ফিরতে পারেনি। তারা ফিরে এসেছে, কিন্তু সেটা অনেক পরে। পার্টি কর্মী অমল হোম স্কুল খুলছেন দু:স্থ বাচ্চাদের জন্য। সেই স্কুল পরে হোম`স কেজি নামে প্রসিদ্ধ হবে। পার্টি নাগরিক কমিটি তৈরী করছে, ঢোলা পাজামার উত্‌পল দত্ত সেখানে এসে বলছেন নাটক দেখাবেন, তারপর ভুলে যাচ্ছেন। মাঠে নামছেন গোপাল ঘোষ, অজয় ভট্‌চাজের মত পুরনো ও দীক্ষিত কর্মীরা। এঁরা সত্তরের একটা বড় সময় জুড়ে পাড়া ছাড়া ছিলেন। গোটা বেহালা জুড়ে সেই সময় কাজ চলছে। বিজ্ঞান মঞ্চ, মেলা, ছোট-খাট বইমেলা- সব কিছুর মধ্যে পার্টির উপস্থিতি প্রবল। পর্ণশ্রীর যুক্তিবাদী শাখার অনুষ্ঠানে এসে গেয়ে যাচ্ছেন সলিল চৌধুরী। পথশিশুদের নিয়ে জোছন দস্তিদার নাটক করলেন। রবিবারের দুপুরে ডায়মন্ড হারবার রোড থামিয়ে সেই নাটক মঞ্চস্থ হল। সভায় তখন নির্মল মুখার্জী, জনার্দন বিশ্বাস। ফোটো থেকে মুচকি হাসিতে সদ্‌য়্‌প্‌রত প্রমোদ দাশগুপ্ত।

    আর এই সব কিছুর মধ্যে প্রবল হয়ে থাকছে তোমার উপস্থিতি। সেটাই স্বাভাবিক ছিল, কারণ পুর্ববংগ থেকে সব কিছু হারিয়ে আসার রিফিউজি বেদনার আকাশে ছাতা হয়ে আর দাঁড়াতে পারত কে-ই বা, পার্টি ছাড়া? পার্টি তো তখন শুধু এক গোষ্ঠীমাত্র নয়, বরং চেতনার ভেতরে খেলা করা রক্তকণিকার অপর নাম। নিম্ন-মধি্‌য়্‌বত্তের শ্রেণীচেতনায় তাই পার্টি আর বেঁচে থাকা হয়ে উঠেছিল সমার্থক। প্রশান্ত শুর যখন আজাদগড় যেতেন, বাংগাল বাড়ির মহিলারা শুনেছি তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতেন শাঁখ বাজিয়ে। তুমিও বি্‌য়্‌তক্রম ছিলে না। পার্টি স্টলে রুটি আলুর দম বিক্রি থেকে শুরু করে ব্রিগেডের মাঠে পত্রিকা নিয়ে বসে যাওয়া অন্য কমরেডদের সাথে, আবার নাগরিক কমিটির মিটিং-এর উদ্যোক্তা, সবেতেই তুমি। শুনেছি, তখন আমার জন্ম হয়নি, নিরঞ্জন মুখার্জিরা যখন সত্তরের সেই রক্তাক্ত দিনগুলোতে প্রকাশ্যে মিটিং করতে পারছেন না, পার্টি অফিসগুলো বন্ধ, তখন মিটিং হত আমাদের ঐ একচিলতে ভাড়াবাড়ির উঠোনে, রাতের পর রাত। সাতাত্তরের ভোটের আগে স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগেই গোপনে প্রচার চালানো হয়েছিল বাড়ি বাড়ি গিয়ে, ছড়ানো হয়েছিল লিফলেট। যে ক্লাবের একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলে তুমি-ই। ভোট মানে তখন আমার কাছে উত্‌সব। সারাদিন তোমার সংগে বসে থাকা লাল পতাকা জড়ানো বুথে। তোমাদের দমকে দমকে চা, রুটি আলুরদমের মধ্যেই আমি এই কাকু ঐ জেঠুর হাত ধরে গুট্‌গুটিয়ে কখনো পাশের পাড়া, কখনো বা সাইকেলের ক্যারিয়ারে চেপে গোটা পুর্ব বেহালা টই টই। সেদিন কেউ বকার নেই, পড়তে বসতে বলার নেই, কারণ উত্‌সবের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে যে! দুদিন বাদেই তো রেজাল্ট! আর তখন মোড়ে মোড়ে শস্তা কাগজে হাতে লেখা `লাল সেলাম` পোস্টার অথবা মিছিলের ধুম-ধাড়াক্কা।

    মাঝে মাঝে ভেবেছি, কোথা থেকে পাও এত বিশ্বাস? এত সামান্য পড়াশোনা, সামান্যতর চাকরি করেও একজন নিম্ন-মধি্‌য়্‌বত্ত মানুষ শুধুমাত্র বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে বেঁচে থাকে কি করে? আমি তো পাই না? নানা দ্বিধা-সংশয়ে সবসময়ে প্রশ্নকাতর থেকেছি আমি, আর তাই স্থির থাকতে পারিনি কোনো রাজনৈতিক দলেই। ঠেলতে ঠেলতে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি একদম প্রান্তে। কিন্তু তুমি সেই আস্থা কিভাবে রাখো? আজকের দক্ষিণপন্থার দাপাদাপি ছেড়ে দিলাম, কিন্তু এমনকি নক্সাল দিনগুলোতেও কখনো কি টাল খায়নি এই আনুগত্য?

    মনে আছে কি না জানি না, মধ্য আশি তে, আমায় নিয়ে তুমি বেড়াতে গেছিলে সেনহাটি কলোনীর ধারে। সেই ঝিলের পাশে বসে তুমি কাঁদি্‌ছলে। মনে পড়ে? কারণ এখানে তুমি আড্ডা মারতে রাতের পর রাত, আর সেই সব বন্ধুরা হারিয়ে গেছে সোনালী রাত শেষ হবার আগেই। এখানেই একটা ব্যায়াম সমিতি ছিল, যেখানে তোমার সংগে ব্যায়াম করতে আসত বেহালার নাম করা নক্সাল নেতা এবং পরে কংগ্রেসীদের হাতে নিহত অনিল মুখার্জি (নীল)। নীল একবার তোমাকে পিকনিক যাবার জন্য দশ টাকা ধার দিয়েছিল। সেটা ফেরত দেওয়া হয়নি, কারণ তার কিছুদিনের মধ্যেই ও খুন হয়। তুমি নীলের কথা মনে করে কাঁদি্‌ছলে, কাঁদছিলে তোমার আরেক নিহত নক্সাল বন্ধু সাগরের (অমিয় চট্টোপাধ্যায়) কথা মনে করে, যে যাবার আগে তোমায় বলে গেছিল `আবার দেখা হবে বন্ধু, আবারো দেখা হবে`। সাগরকে পুলিশ আলিপুর জেলে পিটিয়ে মারে। সেদিন, ঐ বাচ্চা আমি-আমার অদ্ভুত লাগি্‌ছল। মনে হচ্ছিল, এই লোকটা কি অভাগা! এর একটাও বন্ধু নেই! আর কিছু বোঝার মত বয়েস তখনো হয়নি। তখন কতই বা বয়েস তোমার! আমার এখন যা বয়েস, তার থেকে হয়ত কম। মাঝখানে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। বয়েস হয়ে গেছে আমার। সেই তুমি, তার থেকেও বেশি বয়েস। যে পৃথিবীতে বাবার থেকে ছেলে বয়স্ক হয়ে যায়, সে খুব করুণ একটা পৃথিবী, তার আরেক নাম, ছেড়ে আসা। সেই দিনগুলো ছেড়ে ফেলে আসলাম আমরা সকলে-আমি, তুমি, এমনকি গোটা পার্টিটাই!

    আর এরই মধ্যে দিয়ে একটা একটা করে দিন এগোচ্ছিল বেইমানির বেনোজলস্রোতের দিকে। তোমরা কেউ বোঝোনি। বাতাসে তখন ফিসফিস করে মমতা ব্যানার্জী বলে একটা বাচ্চা মেয়ের নাম উচ্চারিত হচ্ছে এখানে সেখানে, তা সে-ই বা কত্‌টুকু! মেয়েটা নিজেই তো আমাদের মালিনীদির কাছে যাদবপুরে হেরে ভূত হয়ে গেল! পাড়ায় পাড়ায় তখনো উত্তাল স্ট্রীট কর্নার, রোড শো। নিরঞ্জন মুখার্জি বৃদ্ধ হচ্ছেন। উঠে আসছে নতুন ছেলেমেয়েরা। সমর রায়চৌধুরী প্রাচীন বটের মতন আঁকড়ে ধরে আছেন সখের বাজার। তুমি বিড়ি ছেড়ে সিগারেটের দিকে যাচ্ছ। অমর ভট্‌চাজ, তখনকার শহর-কাঁপানো যুব নেতা (পরে পার্টি থেকে এক্সপেলড হবেন) তোমার কাছে বিড়ি চাইলে একটু সংকোচের সাথে জানাচ্ছো যে বিড়ি খাও না। অমর হাঁ করে চেয়ে থেকে বলছেন `তাহলে পার্টি করছিস কেন?`

    একানব্বই সালে যেদিন লালু আলম লাঠির বাড়ি মেরে মমতার মাথা ফাটাল, মনে আছে তুমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছিলে। কারণ লালু ছিল বাদশাদার ভাই। সেই বাদশা আলম, গোটা দক্ষিণ কলকাতায় যার মত সংঠকের জুড়ি খুঁজে পাওয়া ভার ছিল। সেই বাদশা, তোমার বাদশাদা, মেঠো ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা সেই বাদশা দা যে কখনো কোনো লড়াইতে পিঠে মার খায়নি। কংগ্রেসীদের ছুরি খেয়েও যে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালায়নি কখনো, তখন জেলা কমিটির সদস্য সেই বাদশার ভাই এবার অভিযুক্ত। জ্যোতি বসু বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন `এত বড় অডাসিটি? কি ভেবেছে কি? কে লালু? এখুণি ওকে গ্রেপ্তার করুন` তখনো তোমাদের মাথায় হাত পড়ে গেছিল। জ্যোতি বসুর পক্ষে সম্ভব ছিল না লালু আলমকে চেনা। পার্টি বাধ্য হয় এক্সপেল করতে। এর কিছুদিনের মধ্যেই বাদশাও এক্সপেলড হবে। কসবার সিপিএম নেতা বাবলু (স্বপন) চক্রবর্ত্তী, কংগ্রেসীদের হাতে মার খেয়ে এবং মেরে যে প্রায় গোটা সত্তর জুড়ে হয়ে উঠেছিল বেহালার কিংবদন্তী, যার ভুল মৃত্যু টিভি-প্রচার করার পর প্রিয়রঞ্জনের গুন্ডারা হাসপাতালে হানা দিয়েছিল খবর যাচাইয়ের জন্য, এবং পাঁচ খানা গুলির একটা এখনো যার শরীরের মধ্যে রয়ে গেছে, সেই বাবলুও এক্সপেলড হবে খুব তাড়াতাড়ি। বাদশা, সুমন্ত হীরা এবং বাবলু মিলে তৈরী করবে মার্‌ক্‌স্‌বাদী মঞ্চ, যার সভার দিনে সিপিএম-এর ছেলেরা গিয়ে সভা ভাংচুর করে যখন বাদশাকে এক ধাক্কায় মাটিতে ফেলে দেবে, বাদশা অবাক আহত বিস্ময়ে পুরনো কমরেডদের দিকে তাকিয়ে বলবে `তোরা আমায় মারলি?` কিন্তু সেসব পরের কথা, ততদিনে এক্সপেলড বাদশাদা কমিউনিস্ট পার্টির পরম্পরা বহন করেই তোমাদের কাছে ভিলেন হয়ে গেছে।

    বাবলুদা এখন তৃণমুল করে। যাদের পিস্তল থেকে ছোঁড়া গুলিটা এখনো শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে, কসবায় আজকাল তাদের সভাতেই বক্তৃতা দেয়। বাদশাদা কি করে, জানি না। হয়ত কিছুই না। হয়ত অনেক পার্টি। যাদের কারোর কারোর নাম বিজেপি!

    সময়ের পলি জমছে, খুব মারাত্মক, বিশ্বাসঘাতক পলি, যা অনেক ত্যাগ, অনেক লড়াই ভুলিয়ে দেয়।

    ………………

    `বিংশতি কংগ্রেস, না কি আরো আগে শুরু অধ:পাত?
    কেন্দ্রের চক্রান্ত আছে, সেই সংগে বিদেশের হাত।
    এসব প্যাচাল ভাল, বিশ্লেষণে খুলে যায় পথ।
    তা বলে কি দেখব না পচে যাচ্ছে নিজেরি শপথ?`

    ভেবে অবাক লাগে, গোটা নব্বই জুড়ে তোমরা কি কিছুই বোঝনি, কোথায় কোথায় লুকিয়ে ছিল দক্ষিণী চোরাস্রোত? আস্তে আস্তে পুরনো মুখগুলো সরতে শুরু করেছিল, ঢুকে পড়ছিল নতুন, অচেনা মুখ, যাদের জীবনে কখনো কেউ পার্টির ধারেকাছে দেখেনি। প্রোমোটার, ঠিকাদারদের মুখের হাসি তখন আস্তে আস্তে কান এঁটো করার দিকে এগোচ্ছে। এঁটো হয়ে যাচ্ছে গোটা পার্টিটাই। সত্তরের পালিয়ে থাকা নেতার তিনতলা বাড়ি উঠছে, বৌ-এর গলায় তিনভরী সোনার হার। অটো ইউনিয়নের সংগ্রামী নেতার নামে বেনামী ফ্ল্যাট। সত্তরের ঘৃণিত পুলিশ তখন খুব কাছের বন্ধু, ভরসা করার মতন মিত্র। সালকিয়া প্লেনামের সুত্র ধরে তখন পাড়ায় পাড়ায় ক্লাব পুজো কমিটি লাইব্রেরী থেকে সর্বত্র ইনফিলট্রেট করার প্রবল চেষ্টা। তখনো তোমরা বোঝোনি, এটা করতে গিয়ে উল্টে পার্টিটাই ইনফিলট্রেটেড হয়ে যেতে পারে! বিরানব্বই ডিসেম্বরের মানব-বন্ধনের দিন যখন বেহালার-ই কিছু উঠতি নেতা মিলে দল পাকালো পাশের পাড়ার মুসলিম ছেলেটিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য, সেদিনকেও তাদের শুধুমাত্র ধমকেই ছেড়ে দেওয়া হবে? লাথি মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হবে না? চিহ্নিত করে দেওয়া হবে না সকলের সামনে? ঠিক কোথায় লুকিয়ে ছিল দুর্বলতা?

    হ্যাঁ, এই সব কিছুর জন্যেই আমি তোমাকে এবং তোমাদের দায়ী করছি। আজে্‌কর বিপর্যয় কোনো সিংগুর-নন্দীগ্রাম থেকে আসেনি। এসেছে অনেক আগে থেকে। মোড়ে মোড়ে গজিয়ে ওঠা শনিমন্দিরের পাশে চোলাই আর সাট্টার ধুম, আর সেখান থেকে নিয়মিত বখড়া পার্টি অফিসে চলে যাবার সময় থেকে, শালকিয়া প্লেনামের বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত থেকে। এসবের মধ্যে দিয়েই শপথ পচে গেছে তোমাদের। আর এ সব-ই হয়েছে রাজনীতির নামে, সেই রাজনীতি, হে আমার কমরেড, যে রাজনীতি করতে গিয়ে নর্দমার ধারে লাশ হয়ে থাকা যাদের ভবিতব্য ছিল তারাই সময়ের সংগে সংগে মাফিয়া হয়ে উঠেছিল!

    বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে দেখে প্রাণপণে বিশ্বাস রাখতে চেয়েছি বামপন্থায়। এখনো চাই। নানা ধরণের শিবিরে গেছি। কিন্তু সকলে দাবী করেছে প্রশ্নহীন আনুগত্য, নি:শর্ত সমর্পণ। তাতেও তো কোনো বাধা ছিল না, কারণ জীবনে একটা কিছুর ওপর বিশ্বাস না রাখলে ভেসে যেতে হয়। কিন্তু যদি দেখি, শপথ পচে যাচ্ছে? যদি দেখি, ক্ষমতা আমুল পরিবর্তন করে দিচ্ছে সর্বত্যাগীদের, আর সব থেকে বিপজ্জনক, যদি দেখি যে যারা ক্ষমতায় না থাকার কারণে এখন সন্নাসী, তারাও ক্ষমতায় গেলে একইভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠবে? তখন? কোন অস্মিতার কাছে রাখব নিজের আস্থা? কোন সে লুটে-পুটে-খাবার-মাধ্যাকর্ষণ হীন পরিসর, যেখানে আমরা নিরাপদ? আজকাল মনে হয়, কমিউনিস্টরা সারা দেশে সব যুগে সবসময় এক-ই রকম হয়। লড়বে অনেক, প্রাণ-ও দেবে, আত্‌ম্‌ত্‌য়াগ করবে, আর তারপর ক্ষমতায় গিয়ে কোনো এক নিয়তি-তাড়িত পুরুষের মত ধীরে ধীরে সব কিছু ভুলে যাবে, আর এই সবের পরিণতিতে বিপ্লব একদিন গিলে খাবে নিজের সন্তানদের।

    কোনো উত্তর নেই তোমার কাছে, জানি। কারণ তুমি আমার থেকেও বেশি হতাশ। ভেংগে পড়েছ ভেতরে ভেতরে। রেজাল্ট বেরোবার দিন সারাদিন কিছু খাওনি তুমি, শুয়েছিলে চুপ্‌চাপ, নিজের ঘরে, চোখে হাত রেখে। আজ বামপন্থার পরাজয় মানে শুধু তো একটা রাজনীতির পরাজয় নয়। বামপন্থা হেরে যাওয়া মানে তোমার লড়াই, আমার বেড়ে ওঠা, আমার ছোটবেলা এই সবি্‌কছু মিথ্যে হয়ে যাওয়া। আমার বামপন্থার গল্পটা আসলে তোমার গল্প, কারন আমার কাছে সিপিএম মানে তুমি-ই। আর তাই, সেই বামপন্থার ব্যর্থতার জন্যেও আমি দায়ী করব তোমাকেই, উত্তরপুরুষের কাছে কোনো উত্তর দেবার মত তোমার নেই, এটা জেনেও।

    কেন জানো? বিরোধীতাহীন একটা দীর্ঘ সময় আজ আমাদের এই জায়গাটায় এসে দাঁড় করিয়েছে। বিরোধীতা মানে তো শুধু দক্ষিণপন্থীদের বিরোধীতা নয়। পার্টির মধ্যে বিরোধীতা, তীব্র সংগ্রাম। সেটা না থাকলে ঐ শিরা বার করা কালো কালো ঘামে ভেজা মুখগুলো থাকে না, তাদের সরিয়ে বসে পড়ে মেদবহুল চকচকে ফেসিয়াল-শোভিত অনিন্দ্যকান্তিরা। মার্কেজ আওড়ানো এবং জীবনে কখনো মাঠে না নামা ব্যর্থ কবিরা। বোলেরো চড়ে ঘুরে বেড়ানো সিংহের চামড়া পরা শেয়ালেরা। আর তার পরিণতিতে কোথায় ভেতরে ভেতরে ফোঁপরা হয়ে যায় মেরুদন্ড, বুঝতেই পারো নি। নাকি বুঝেও চুপ করে ছিলে? হয়ত ভেতরে ভেতরে কোথাও, কোনো অবচেতনের অন্ধকার তলদেশে তোমাদের মধ্যেও লুকিয়ে ছিল নব্য-ধনীর চিন্তাধারার প্রতি একটু হেলে থাকা? বা সেই শ্রেণীতে নিজেদের উত্তীর্ণ করার আকাংখা? হয়ত বা, গোটা পার্টিটাকে গ্রাস করে নিচ্ছিল উচ্চ-মধি্‌য়্‌বত্ততার দর্শনের প্রতি এক বিপজ্জনক ইনডালজেন্স? নাহলে কেন শিল্পস্থাপনের নামে দক্ষিণপন্থার চর্চা, কেন চন্দ্রবাবু নাইডু হয়ে ওঠার মরীয়া প্রস? এগুলো তো সব-ই রোগের উপসর্গ, রোগটা কোথায়?

    জানি না কোথায়। শুধু একটা জিনিস জোর গলায় বলছি, শুনে নাও। আজ যখন তোমরা নাগরিক সমাজের বিশ্বাসঘাতকতার কথা বলছ, বুদ্ধিজীবিদের বেইমানির কথা বলছ, আমি বলি্‌ছ, কমিউনিস্টরা সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক। তারা স্বপ্ন দেখিয়েছে, কিন্তু তাকে বাস্তবে রূপ দেয়নি। তারা ধর্মতলার মোড়ে দাঁড়িয়ে বেহালায় দাঁড়িয়ে বহরমপুর নদীয়া জলপাইগুড়িতে দাঁড়িয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমর্থন নিয়েছে, সেই সমর্থনের জোরে বামপন্থার ভিতটা শক্ত করেনি। ভোট ভেসে গেছে অলকানন্দা জলে, আর মতাদরে্‌শ্‌ক পাঞ্জাবীর পকেটে রেখে আনন্দবাজারের প্রশংসাকে জীবনের ধ্রুবতারা ধরে নিয়েছে। ক্লাস বেস ধ্বংস করে দিয়েছে নিজের হাতে, আর এই সব কিছুই ঘটেছে দক্ষিণ্‌পন্থার উথ্বানের বিনিময়ে। কারণ প্রকৃতি শুন্‌য়্‌স্‌থান পছন্দ করে না।

    মনে আছে, কবীর সুমনের কথা? সেই সুমন, যাকে তুমি সহ্য করতে পারতে না সিপিএম বিরোধী বলে? আমার হাতে যে সুমনের ক্যাসেট দেখে তুমি ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলে, ওর গান শুনবেনা বলে? বামফ্রন্ট পড়ে যাবার দিন সেই সুমন, হ্যাঁ, অগণিত সুবিধেবাদীদের ভীড়ে হারিয়ে যাওয়া সেই সুমন-ই কিন্তু একমাত্র যে টিভি চ্যানেলে বসে দীপ্র অচঞ্চল মেধায় প্রশ্ন করেছিল ` কি করেছিল কমিউনিস্টরা? কোথায় লুকিয়ে ছিল তাদের দুর্বলতা?` বাবা, সুমন এখনো কিন্তু গান গেয়ে বেড়াচ্ছে, সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে আধা ফ্যাসিস্টদের। লেখায় তুলে আনছে প্রান্তিকদের কাহিনী। আর সেখানে পার্টি কেন ম্রীয়মাণ? ভোটে হারার ধাক্কায় কেন বসে গেল এত কমরেড? যে বামফ্রন্টকে টিকিয়ে রাখাটাই ছিল একটা শ্রেণী-সংগ্রাম, সেই বামফ্রন্টের অন্দরমহলে কোথায় প্রচ্ছন্ন ছিল আমলাতন্ত্রের বীজ? কে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর?

    আজ তুমি যেখানে, আমিও সেখানে দাঁড়িয়ে। তুমি যেমন বামপন্থার এই হার মেনে নিতে না পেরে নিজের মধ্যে গুটিয়ে যাচ্ছ ক্রমাগত, আমিও তেমন বামপন্থীদের এই আত্মসমর্পণের রাজনীতিতে, অতি বামেদের প্রশ্নহীন মনোলিথিক কাঠামো অথবা অনিচ্ছাকৃত হলেও দক্ষিণপন্থার প্রতি দুর্বলতায় ঠোক্কর খেতে খেতে সরে যাচ্ছি প্রান্তে, প্রান্ত থেকে প্রান্ততরে। দাঁড়াবার কোনো ভিত্তিভূমি কি আছে আর কোথাও? নিরুপায় সমর্থন জানাতেই হয় পার্টিকে, কারণ বামপন্থা ছাড়া আমার বা তোমার কারোর অস্তিত্ব নেই। কিন্তু আমার সে সমর্থনে মিশে থাকে সংশয়, রাগ, অভিমান, প্রশ্ন। তোমার কি প্রশ্ন জমা হয় কখনো, মনের মধ্যে? তুমিও তো আসলে ভেতরে ভেতরে সেই একাই। এক কাপ চা নিয়ে হয়ত বসে আছ বারান্দায়। দৃষ্টি দুরে নিবদ্ধ। চুলগুলো আরেকটু পেকেছে, মুখের বলিরেখার সংখ্যা আরেকটু বাড়ল। চশমার পাওয়ার বেড়েছে, বেশ কষ্ট করেই কাগজ পড়তে হয়। লুংগিটা ছিঁড়ে গেছে, সেলাই করতে দিতেও মন উঠছে না। আর বিশেষ বেরূ না বাইরে। মিটিং মিছিলেও যাও না। নিজেকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যাচ্ছ অন্য এক প্রান্তের দিকে, যেখানে শুধু চাপ চাপ অন্ধকার জমে নিস্তব্ধতা। কি আশ্চর্য্য! আমি বা তুমি, কেউ-ই কি তাহলে কিছুই করতে পারি না? শুধু প্রতিকারহীন ক্ষোভ জানিয়ে যাওয়া ছাড়া আমার যেমন কিছুই করার নেই, তোমারো কি তাই? নীরব হয়ে থাকা ছাড়া বলার নেই কিছুই? আমরা যে আসলে কিছুই পারি না, সেই দিনের শেষে নতজানু হয়ে দাঁড়াতে হয় অভ্যাসের সামনেই, তার কথাই কি ধরা পড়ে গেল এই চিঠিতে? থাক, ধরা থাক!
  • demba ba | 121.241.218.132 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৯:৫৮528141
  • Hello darkness, my old friend
    I've come to talk with you again
    Because a vision softly creeping
    Left its seeds while I was sleeping
    And the vision that was planted in my brain
    Still remains
    Within the sound of silence...

  • siki | 155.136.80.36 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ০৯:৫৯528152
  • নতজানু হয়ে ছিলাম তখনো, এখনো যেমন আছি।

    তাড়াহুড়ো করে পড়ে রাখলাম, পরে ভালো করে পড়ব।
  • dd | 110.234.159.216 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:০৪528163
  • খুব তাড়াতাড়ি পড়লাম, পরে আবার পড়বো।

    খুব ভালো লাগলো। দারুন।

    আশীর শেষ,নব্বইএর শুরুতে কসবা ছিলাম । পার্টী তখনই এক নির্ল্লজ্জ সুবিধাবাদীদের পাকাপাকি আস্তানা। দেখছিলাম কিরকম দ্রুত ছড়িয়ে পরছে ক্যান্সার। অথচ বিন্দুমাত্র অপোসিশন ছিলো না। ঐ, অ্যাবসোলিউট পাওয়ারের গল্পো। ঐটা আর হজম হয় নি পার্টীর।

  • El d | 220.227.106.153 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:১২528174
  • অসাধারণ ......

    ধন্যবাদ সিদ্ধার্থ চেনা অচেনা মানুষজনকে আবার চিনিয়ে দেওয়ার জন্য
  • ppn | 202.91.136.71 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:২৭528185
  • তুমিও তো আসলে ভেতরে ভেতরে সেই একাই। আমরা সবাই ভেতরে ভেতরে একা। নিজের মত করে একা। তাই অনেকে মিলে একা হলেও অনেক আমিরা আবার কবে আমরা হয়ে উঠবে, আদৌ হয়ে উঠবে কিনা এই পাল্টানো সময়ে, জানা নেই।

    পরে আবার পড়ব। হয়ত অনেকবারই। আশাহীনতা আর উদ্দেশ্যহীনতার মাঝে পুড়ে যায় যে একাকী মোমবাতি, তার নির্জন আলোয়।

    ধন্যবাদ কমরেড।
  • Siddhartha Sen | 131.104.249.99 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:৩১528196
  • ডিডি, বাবলুদা কে নিশ্চয় চিনতেন.।অশচীন সেনকেও দেখেছেন তার মানে।

    সেই বাবলু দা এবং তার স্ত্রী আজ তৃণমুলের পতাকার নিচে..:)

    বুড়ি চাঁদ সত্যি-ই বেনোজলে ভেসে যায়
  • kc | 194.126.37.78 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:৩৬528207
  • সিদ্ধার্থবাবু, খুব ভাল লাগল।
    তবে কম্যুনিষ্ট পার্টির সেই উন্মাদনা আর হবেনা। হলেও আমাদের জীবদ্দশায় তো নয়ই। পরবর্তী প্রজন্ম কে আমরাই তো অন্ধ বানিয়ে দিলাম। অন্যরকম ভাল কিছু নিয়ে মাতামাতি ..... আশা করতে দোষ নাই।
  • Siddhartha Sen | 131.104.249.99 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:৪৬528212
  • আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজো ভাল লাগে :(
  • demba ba | 121.241.218.132 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:৪৯528131
  • আমারও।
  • Bratin | 14.96.53.203 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১০:৫১528132
  • সিদ্ধার্থ বাবু, খুব ভালো লাগলো। উপাদেয় রান্নার মতন ই চেটে পুটে অনেকক্ষন ধরে আপনার লেখা টা পড়লাম।

    ভালো থাকবেন।
  • lcm | 69.236.167.38 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১১:৩৬528133
  • সিদ্ধার্থর লেখনীকে সেলাম,
    সোনার কলম হোক তোমার গোলাম।

  • siki | 155.136.80.36 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১২:০৯528134
  • আরও লেখা চাই। আরো, আরো।

    এমনি করে আমায় মারো।
  • kallol | 119.226.79.139 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১২:৩২528135
  • এ এক নীলকন্ঠ মানুষের, নাকি মানুষদের, উপাখ্যান। এই হলাহল ধারণ করেছে যে শরীর, তার কাঁধে হাত রেখে বলতে ইচ্ছে হয়, ক্ষ্যাপা, চল পথ হাঁটি। তার চোখে হাত রেখে বলতে ইচ্ছে হয়, আয়, রাতের আকাশ দেখি, আকাশ ভরা সূর্য তারা। তার হাতে আমার কলজে তুলে দিয়ে বলি, হোলী হ্যায়।

    যেতে হবে দূরে,
    বহুদূরে
    আমাদের যেতে হবে
    যেতে হবে মা'র কাছে
    অতীত জঠর থেকে নেমে
    তাঁর কাছে
    আমাদের সমস্ত প্রনিপাত মেনে
    যেতে হবে
    আমাদের যেতে হবে
    দূরে..............
  • siki | 155.136.80.36 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১২:৫০528136
  • জীবনের শেখা পাঠ সাথে করে আলোকশিখায়
    এসেছি এতটা দূর, কাঁটাপথ মাড়িয়ে দুপায়ে
    যেতে হবে ...

    ...

    আমাদের বুঝে নিতে হবে আজ, এই সে সময়
    সামনে ছড়িয়ে থাকা আমাদের এই পথময়
    কোথাও পাবো না কেউ একফোঁটা জল কোনও, তবু
    যেতে হবে, আমাদের।
  • sumeru | 117.194.98.245 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৩:৩৭528137
  • বাবা/ বাংলা ব্যান্ড- অপার বাংলা
  • a | 65.204.229.11 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৩:৩৯528138
  • সরি, একটু সমালোচনা করে যাই (সবাই তো ভালো বলছেই)

    কোর্টের ভিতর বিড়ি ধরানো যে দলের কর্মীদের কাছে হিরো ইজমের ডেফিনিশন, তারা কি করে নিজেদের সাংস্কৃতিক (মেলা, মন্‌চ, গান বাজনা, নাটক ইত্যাদির ভিতর দিয়ে জে কথা বার বার বলা হয়েছে আর বলা হয় ইন জেনেরাল) বলে দাবি করে? আমি দেখেছি বহু সো কল্ড পুরোনো আর "সচ্চা" কমুনিস্ট, নিজের কাজের ক্ষেত্রে চুরি জোচ্চুরি দিব্যি করে থাকে। সেটাই বা কি করে যায় শপথ টপথ কি সব বল্লেন তার সাথে/?

    আমার অতি সীমিত পড়াশোনায় যা মনে হয়েছে, হিউম্যান বিহেভিয়র জিনিসটা মার্ক্সবাবু খুব বেশী গুরুত্ব দেননি। মানুষ কেন বিপ্লব করবে তথা কি গেন করবে সেখান থেকে, সেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যখন বড় জয়ের পরে, সেটা কেউ ভালো ভাবে হ্যান্‌ড্‌ল করতে পারেনি। লেনিন থেকে জ্যোতি বসু, কেউ না। আমি লোভের কথা বলছি না, আমি বলছি ভালো থাকার ইচ্ছার কথা। "একচিলতে ভাড়াবাড়ি" থেকে "নিজের একটা বাড়ি" বানানোর প্রবণতা মানুষের থাকবেই, আর যে করল না সে যে করল তাকে "বুর্জোয়া" বলে ঈর্ষাভরা খিস্তি মারবে।

    তাই কোন কোন ক্ষেত্রে হয়তো বেসিকে ফিরে যেতে হয়, নিজের বিশ্বাসকে শিক্ষিত আর পরিশীলিত করতে হয়, তার বাউন্ডারি কন্ডিশনগুলোকে জানতে হয়।
  • kallol | 119.226.79.139 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৪:১৩528139
  • এ।
    সমালোচনাটি প্রত্যাশিত ও যৌক্তিকও বটে।
    কিন্তু কমিউনিষ্টদের (অন্তত: বাংলার) এই ধরনের আচরনের একটা প্রেক্ষিত আছে।
    এই সমাজ ও তার কাঠামোকে ভেঙ্গে ফেলাটাই কমিউনিষ্টদের কাজ। তাই যে যেখানে আছে সেখান থেকেই কাঠামোকে দুর্বল করার কাজ করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। কাজে ফাঁকি দেওয়া, কাজ না করা, ভুল কাজ করা, এমনকি ঘুষ নেওয়া পর্যন্ত এই ""বিপ্লবী"" কাজের আওতায় টেনে আনা হতো।
    সরকারী কর্মচারী, বাম ইউনিয়ান করেন, পাড়ায় বামদলের সাথে থাকেন এবং উপরিল্লিখিত কাজ কম্মোও করেন - এটা শুধু শেষ ৩৪ বছরের ছবি নয়। বরং শেষ ৩৪ বছরের প্রথমদিকে কেউ কেউ ছবিটা বদলানোর চেষ্টাও করেছে। ততদিনে দেরী হয়ে গেছে অনেক। ৬০এর দশক থেকে চলে আসা এই ভিতর থেকে দুর্বল করার নীতি, সর্বনাশা হয়ে গেছে।
    ভালো থাকার বিষয়টি আপেক্ষিক। কমিউনিষ্টরা সামাজিক আনোলন তৈরী করতে ব্যার্থ হয়েছে। ক্ষমতায় থাকা কমিউনিষ্টরাই পারেনি - চাহিদা কমানোর আন্দোলন তৈরী করতে। ক্ষমতায় না থাকারা তাদের সহজ সরল জীবন যাত্রাকে সামাজিক মূল্যবোধ হিসাবে তুলে ধরতে পারে নি। হয়তো তাতে এদের বিশ্বাসও ছিলো না। একমাত্র মাও সাংষ্কৃতিক বিপ্লবের সময় চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেও তো ক্ষমতার হাতে লুঠ হয়ে যায়।
    তাই বিড়ি থেকে সস্তা সিগারেট থেকে দামী সিগারেটে সরে আসতে কোন দ্বিধা হয়নি। সকলের সামর্থ্য ছিলো না এই সরে আসায়। কিন্তু সেটা সামর্থ্যের প্রশ্ন আদর্শের নয়।
    নিজেকে নায়ক বানানোর চেষ্টাও তেমনই একটা ব্যক্তি কমিউনিষ্ট মুল্যবোধ। এটির চাষ সোভিয়েৎ আমলের সাহিত্যে মুড়ি মুড়কির মত পাওয়া যায়।
    তাই ঐ সব মানুষেরা হয়তো তাদের আচরণে অযোক্তিক ছিলেন, কিন্তু বেশীরভাগই কোথাও আদর্শের প্রতি প্রচন্ড রকমের অবিচল ছিলেন। আর যাই হোক ধান্দাবাজ ছিলেন না।
  • aishik | 195.219.14.164 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৪:৫২528140
  • কমরেড সিদ্ধার্থদা, লাল সেলাম।
  • dd | 110.234.159.216 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৫:১৪528142
  • সিদ্ধার্থের লেখাটা আবার করে পড়লাম। চোখের সামনে প্রায় সারা জীবনের আদর্শের মৃত্যু,বিশ্বাসের মৃত্যু যে কিরকম কুঁকড়ে দেয় মানুষকে - সে তো অনেকগুলি কেসই দেখলাম।

    অ্যানেকডোট দি। আশীর শেষে ছিলাম গাংগুলিবাগানে। একেবারে লালদুর্গ। পার্টী ছিলো ভদ্র সভ্য সৎ লোকেদের হাতে। আপদে বিপদে নির্বিচারে হাজির থাকতো তারা। ১০০% স্বর্গরাজ্য তো নয়, কিন্তু ওরকমই একটা আবেশ ছিলো তখন।

    ঐ সময়েই গেলাম কসবায়। আরেক লাল দুর্গ। ওখানে পার্টী পুরোপুরি তোলাবাজ,প্রোমোটারের হাতে। এককালের নাম করা নেতারা (সিদ্ধার্থ যাদের কথা লিখলেন, কয়েকজনকে চিনলাম, কয়েকজনকে গেস করছি, দেখলে হয়তো চিনবো)হয় সাইডলাইন নয়তো মেনে নিয়েছেন এই দু:শাসন। ছোটো মাঝারী বড়ো - সবাই লুটের বাজারে। রাতারাতি বড়োলোক হয়ে যাওয়ার গল্পো মুখে মুখে। এখন যে সিন্ডিকেটের গল্পো শোনেন আপনেরা, সেটা তখনই চালু হয়ে গেছে।

    বাকীটা তো স্রেফ গড়িয়ে যাওয়া।
  • dd | 110.234.159.216 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৫:৩২528143
  • আরেক অ্যানেকডোট।
    কো অপারেটিভ বাড়ী হবে, পঞ্চাশ ষাঠটা ফ্ল্যাট। একটা পরিত্যক্ত মাঠ কিনে বাড়ী শুরু হবে। আমাদের আপিসের অনেকেই টাকা দিয়েছেন আগামে, আমিও।

    কিন্তু জমি দখল নিতে গেলে মুষ্কিল। পাড়ার জগাই মাধাই জমি দিবে না। রাতারাতি পোস্টার পরে "রক্ত দিবো,জমি দিবো না"। আমাদের কো অপারেটিভেও পার্টীর বেশ একজন হোমড়া আছেন। ওটা মাস্ট। তিনিও সামাল দিতে পারছেন না। এক সকালে আমাদের কো অপের সেক্রেটারী জমির কাছে গেলে জগাই মাধাই ঘিড়ে ধরে,অশ্রাব্য গালি গালাজের পর ঢাঁই করে হকি স্টিক ঘোরায় একজন। ঝট করে মাথা সড়িয়ে না নিলে সেক্রেটারী বাবুর মাথা ভুয়ে লুটাতো। কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে সেক্রেটারী তো বিকেল নাগাদ আপিস ফিরলেন অন্য কাজ সেরে।

    আপিসে ঢুকে চক্ষুস্থির। জগাই মাধাই রিসেপসনে বসে,মুখে স্বর্গীয় হাসি।"আপনার সাথেই দেখা করতে এসেছি স্যার।"

    সেক্রেটারী কাঁপতে কাঁপতে তাদের নিজের চেম্বারে ঢোকান। জগাই বলে "বুঝলেন স্যার, আরো তিন চারদিন অম্নি গালি গালাজ দেবো। কিছু মনে করবেন না। তার পর মিউচুআল হয়ে যাবে।" খরচাপাতির কথাও জানালো।

    মাধাই বেশ ক্ষুব্ধ"খামোখা অমন মাথা ঘুড়িয়ে নিলেন যে বড়ো? যদি হকি স্টিকটা লাগতো?" আশ্বাস দেয় "আপনি স্ট্যাচুর মতন দাঁড়িয়ে থাকবেন। আমাদের লাঠ একটাও আপনার গায়ে লাগবে না। আপনি শুধু ছটফট করবেন না।"

    ঐটাই বন্দোবস্ত। জগাই মাধাই পার্টীর বড়ো সদস্য। তোলা বাদেও সাপ্লাই সব ওদেরকে দিয়েই করাতে হবে। ক¾ট্রাকটরীও ওরাই করবে। বড়ো নেতারা পিছনে। আমাদের হোমড়া সদস্য নির্বিকার, "এমন ই হয়। ছেলে পুলেরা। বেকার। খাবে কি? " এটাই মিউচুয়াল।

    না হলে কোন হিসেবে মমতার মতন একটি পুর্ণ পাগোল মুখ্যমন্ত্রী হতে পারে?
  • tatin | 115.249.41.218 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৫:৩৮528145
  • আসলে মনে হয় একটা জিনিস ছিল- বিশ্ববীক্ষা ইত্যাদি নাম দিয়ে নিজেকে নিজের চেতনাকে নিজের ঔকাদের থেকে বড় করে দ্যাখার নেশা।
    সাধারণত: ধর্মাচরণগুলোতে এরকম হয়। তারপর গ্লোবালায়িত দুনিয়ায়, ঔকাদের দৌড়ও আরও কিছুটা হবে মনে হয়- আর, বিশ্ব,দর্শন, ইতিহাসকে আরও একটু ছোটও লাগে। ফলে নেশা ছুটে যায়
  • kd | 59.93.213.223 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৫:৩৮528144
  • কল্লোল, জানোই তো আমি মাথামোটা, তোমার শেষ প্যারাটা একটু ক্লিয়ার করে বলবে - যাতে ব্যাপারটা আমার মাথায় ঢোকে।

    আমি যা বুঝলুম:
    যে ব্যবসায়ী আদর্শগত কারণে (অনেক টাকা কামানো) বেবিফুডে ভেজাল দিয়ে বেচে (সো-কল্‌ড অসদুপায়) আর লাখ টাকা খরচা করে কাঙালীভোজন করায় (সো-কল্‌ড সমাজসেবা), তার সঙ্গে এই লোকেদের ফারাক নেই। বলছো?

    বা পাতি বাংলায়, এন্ড ডাজ জাস্টিফাই দ্য মীন্‌স।
  • kallol | 119.226.79.139 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৫:৪৫528146
  • প্রায় তাইই।
  • aka | 168.26.215.13 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৩৬528147
  • প্রথম কথা সিদ্ধার্থর লেখন শৈলী ভালো, একটা অ্যাট্রাকশন আছে।

    কিন্তু অ্যানালিসিসটা আবেগ বর্জিত হতে পারল না। বামপন্থা ভেঙে পড়েছে স্বাভাবিক নিয়মে, আইনকে কাঁচকলা দেখাতে গেলে সমান্তরাল অন্য যে সিস্টেম তৈরি হতে হয় তা চিরকাল অলীক থেকে গেছে - সেও খুব স্বাভাবিক নিয়মে। একদিকে প্রচলিত আইনকে কাঁচকলা দেখানো অন্যদিকে অন্য কোন পন্থা নেই অথচ ক্ষমতা আছে, এও যদি সুযোগসন্ধানীরা কাজে না লাগায় তবে তাদের নামই বৃথা। আর দক্ষিণপন্থা বলে কিসু নেই, বামেরা বামদিকে হেলে থাকে বলে সোজাকে ডানদিকে লাগে।
  • sayan | 101.63.244.242 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৪১528148
  • অসম্ভব ভালো লেখা। মাত্র দু'বার পড়লাম। আরও কয়েকবার পড়ার মত। নস্টালজিয়া আর ইমোশন - হাতধরাধরি। কেমন একটা মনখারাপে আক্রান্ত হলাম।
  • pi | 72.83.80.169 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৪৩528149
  • সেন মহাশয়, চলতে থাকুক :)
  • ppn | 204.138.240.254 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৪৮528150
  • সিদ্ধার্থর লিখনশৈলী ভালো তার উপরে ট্র্যাজিক জিনিসপত্তর যেমন পরাজিত নায়কের আত্মবীক্ষা, নিয়তিতাড়িত পৌরুষ, ভাঙাচোরা স্বপ্নের লাশ ইত্যাদি মানুষ চিরকালই বেশি পছন্দ করে। কাজেই অতীব স্বাদু ও মনোগ্রাহী লেখা হবেই।

    সেটুকু ডিসকাউন্ট দিয়েও লেখাটা ভালো লেগেছে। শুধু লাস্ট প্যারাটার জন্য।
  • Bratin | 14.99.77.179 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৫৫528151
  • সিদ্ধার্থ বাবুর লেখা, তার সাথে অয়ন র মন্তব্য। কল্লোল দার ক্লারিফিকেশন। ডিডি র ২ প্যারা। সেই সময়ের ছবি টা ধরতে পারলাম টা খানিক টা। সব্বাই কে ধন্যবাদ।
  • Bratin | 14.99.77.179 | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৯:৫৮528153
  • হ্যাঁ স্পিড ভালো ই।

    সয়ানের কবিতা য় লীন কি সে 'সিক্স সিগমা লীন'?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন