এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • বাঙ্গলা গানের নতুন ধারা

    kallol
    গান | ১৪ মার্চ ২০১২ | ৮৭৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • departed | 69.160.210.2 | ১৮ জুন ২০১২ ১২:৩১535292
  • সন্ধ্যা মুখো ১৪ টি গান গেয়েছেন সুমনের। হৈমন্তি ৮ টি, লোপা ৬-৭ টা , সাবিনা কে তো গুনলামই না, অঞ্জন, নচি, গেয়েছে, অন্তরা, শ্রীতমা দের বাদ দিলেও, ইন্দ্রাণী সেন গেয়েছেন, সিনেমার প্লে ব্যাকেও অনেকে গেয়েছেন। হ্যাঁ তবুও এখনের স্কুলের ছেলে মেয়েরা সুমন শোনে না। অনুপম রায় বা রূপম কিন্তু তারা শোনে দিব্যি।
  • lcm | 60.136.192.52 | ১৮ জুন ২০১২ ১২:৩৩535293
  • প্রতুল বাবুর কিছু গান শুনেছি। আমার মনে হয় ভদ্রলোক নিজে না গেয়ে অন্য কাউকে দিয়ে গাওয়ালে আরো ভালো হত। বেসিক্যালি ঐ একটা গানই ভালো লেগেছিল - আমি বাংলায় গান গাই। কিন্তু ওনার নিজের গলায় গানটা কেমন যেন খুলল না। আরো দু একটা শুনেছিলাম, তেমন কিছু মনে হয় নি। ওভারঅল বাংলা গানে প্রতুলবাবুর তেমন যুগান্তকারী ভূমিকা বা প্রভাব আছে কি?
    IMHO
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৮ জুন ২০১২ ১২:৩৭535294
  • বিনয় রায়ের গান একটাই শুনেছি। ফিরাইয়া দে দে দে / মোদের কায়ুর বন্ধুদেরে।
    মালাবারের কায়ুর প্রদেশের কৃষক বিদ্রোহের শহীহদের নিয়ে বাধা গান, নানান বাংলা লোকসংগীতের মিশ্রিত ধারায়।
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৮ জুন ২০১২ ১২:৪৪535295
  • লসাগু।
    প্রতুলদার গলা আমাদের বাংলা গান (ব্যাপক অর্থে) শোনা কানে খুব "মেয়েলি" লাগে। যেমন দেবব্রত একসময়ে "হেঁড়ে" গলা ছিলেন - এই বলে গ্রামাফোন কোং ওনাকে বাতিল করেছিলো। আসলে আমাদের পাৎলা গলার (পুং) শেষ হলো শ্যামল বা মান্না। তার বেশী পাৎলা গলা হলে আমরা বাংলা গানে মানতে পারিনা। কিন্তু অন্য গান হলে মেনে নেই - ভাপ্পী লাহিড়ী / চঞ্চল।
    অবশ্য শেষ পর্যন্ত পসন্দ আপনা আপনা।
  • departed | 69.160.210.2 | ১৮ জুন ২০১২ ১৩:০৭535296
  • প্রতুলের গায়কি স্বতন্ত্র। যেমন এস ডি , আর ডি বা অখিলবন্ধু। সমস্যা কোথায়? সমস্যা একটাই কোনো যন্ত্রানুষঙ্গ ছাড়া প্রতুল যেভাবে তাঁর একটা গান কে পরিপূর্ণ গান করে তোলেন, সেটা আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং অন্যরা যখন প্রতুলের গান করেন, তখন সেটা নিজের মতো করেন, এক্স্যাক্ট প্রতুলের গান টা করে উঠতে পারেন না। হেমন্ত মান্না, শ্যামলের গানে যে সমস্যা টা হয় না।
  • PT | 213.110.243.23 | ১৮ জুন ২০১২ ১৩:০৯535297
  • departed
    আপনাকে ধন্যবাদ। সন্ধ্যার ১৪ টি গানের একটাই কানে বাজছে তার মানে কি হয় বুঝতেই পারছেন। আমি অনেক বাঙালীর থেকে বেশী গান শোনা একজন - আমার অবস্থা এই হলে সুমনের সুরে অন্যের গাওয়া গানের দম যে খুব বেশী দূর নয় তা বোঝা যাচ্ছে।

    কিছুদিন আগে সুমনকে নিয়ে ২৪ ঘন্টা একটি দীর্ঘ অনুষ্ঠান করেছিল। আমি পুরোটাই দেখেছিলাম। শ্রীকান্ত , রূপঙ্কর, রাঘব ছিলেন। সুমনের সুর দেওয়া অন্যের গাওয়া গান নিয়ে বিশেষ কাউকে কথা বলতে শুনলাম বলে মনে করতে পারছি না।

    এর পরের বার সিডির দোকানে গিয়ে খোঁজ নেব যে সুমনের সুর দেওয়া সন্ধ্যা, হৈমন্তি আর সাবিনার গানের কটা সিডি বিক্কিরি হয়েছে।

    মোদ্দা কথাটা এই যে, প্রতুল, সুমন এদের গানের কাঠামোটাই এমন যে অন্যদের গলায় সেই গান জমে না। আর এদের গানের ধারাটাও বেশ elitist - তাই পাবলিকের ধরতাই-এর বাইরে রয়ে যায়।

    কল্লোলদা
    "রাজনীতি" অর্থে এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু "কিসের ভয় সাহসী মন লালফৌজের" সঙ্গে "মুক্তির মন্দির শোপান তলে" কিংবা "বান এসেছে মরা গাঙ্গে খুলতে হবে নাও" -এর যদি তুলনা করেন তাহলে মনে হয় প্রথমটা খুব specific আর অন্যদুটো খুব general। সেইজন্য শেষের দুটো টিকবে অনেক বেশী দিন।

    রবীন্দ্রনাথের "স্বদেশ" পর্যায়ের গান নিয়ে কিছু লিখছি না। তবে সেই গানগুলোর চরিত্র যে সম্পুর্ণ ভিন্ন সে আপনি ভাল করেই জানেন। নাহলে ১৯৮৫-তে প্রতুল না গেয়ে রবীন্দ্রনাথই গাইতেন!!
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৮ জুন ২০১২ ১৪:৪৬535298
  • প্রতুলদার গান অন্যের গলাতেই শুনেছি ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত। জন্মিলে মরিতে হবে রে, মুক্ত হবে প্রিয় মাতৃভূমি, দাবানল জ্বলুক দাবানল, বোকা বুড়োর পাঁচালী, থাক না হাজার অযুত বাধা, যেতে হবে দূরে............ এসব গান তখন নকশালদের মুখে মুখে ফিরতো। তখন জানতামও না যে স্রষ্টার নাম প্রতুল। এগুলো "জেন"এর গান - এই নামে চলতো। ১৯৭৮ প্রথম প্রতুলদাকে জনসমক্ষে গাইতে শুনি।
    আমরা ক্যয়ার ফর্মে প্রতুলদার গান গাইতাম, সেগুলোর আবেদন অন্য রকম ছিলো।
    প্রতুলদার গান অন্যের গলায় কেমন লাগে? সুযোগ পেলে আমাদের সিকির গলায় শুনে নিও। অন্যরকম, কিন্তু অসম্ভব ভালো।
    প্রতুল, বাংলা গানে একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
    রবীন্দ্রনাথের স্বদেশ পর্যায়ের গান নিয়ে লিখলাম, তোমার ঐ কথাটির প্রেক্ষিতে - পুলিশের তাড়া খেলে গান নাকি অন্য রকম হয়, তাই। আমার বলার ছিলো গানের সাথে তাড়া খাওয়া বা না খাওয়ার কোন সম্পোক্ক নাই।
    আমরা কিন্তু রবিবাবুর গান আমাদের মতো ইন্টারপ্রিটেশনে গাইতাম। যদি তো ডাক শুনে কেউ না আসে - আইপিটিএ আমলে ধিকৃত ছিলো ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের গান বলে। কিন্তু আমরা গাইতাম মাওয়ের "স্রোতের বিরুদ্ধে চলো" এই কথাটি মাথায় রেখে। স্রোতের বিরুদ্ধে চলতে গেলে একাও হয়ে যেতে হয় কখনো।
  • PT | 213.110.243.23 | ১৮ জুন ২০১২ ১৪:৫৬535299
  • কল্লোলদা বুঝ্তেই পারছ যে প্রতুলের গানের ওপরে আমার শ্রদ্ধার কোন কমতি নেই। প্রতুলের "আমি বাংলায় গান গাই" অন্যের গলায় শুনেছি। ভাল লেগেছে আবার লাগেও নি। কিন্তু দু-একটি বাদ দিয়ে মনে হচ্ছে যে এগুলো সব বিশেষ অবস্থার আর সময়ের গান। যা কিনা (হয়ত) কখনই মূলস্রোতের অংশ হয়না। কাজেই এইসব গান কখনই গানের মোড় ফেরায় না।

    সিকির গলায় গান শোনা কি কপালে আছে?
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৮ জুন ২০১২ ১৫:০১535300
  • পিটি।
    তোমার সাথে মতের ফারাকটা রয়েই গেলো। তুমি মূলস্রোতের গানকেই গান বলে ভাবো, যা মোড় ফেরাতে পারে। আমি তা মনে করি না।
    সিকি বাসায় এলে বা তুমি দিল্লী গেলে যোগাযোগ করে দেখতে পারো।
  • ranjan roy | 24.99.211.251 | ১৮ জুন ২০১২ ১৬:৩৭535302
  • বিনয় রায়ের গলায় --" কেকরা কেকরা নাম বাতাউঁ জগমেঁ সারা লুটিয়ারা হো"। স্বতন্ত্র গায়কী। ক্যাসেটে শোনা।
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৮ জুন ২০১২ ১৬:৫২535303
  • কেকরা কেকরা নাম বাতাউঁ - তো খিদিরপুরের এক শ্রমিকের বাধা। নামটা এক্ষুনি মনে পড়ছে না। গুমান শেখ বা ওরকম কিছু। গানটা ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ষাঠের দশকে গানটায় রাশিয়া জার্মনীর বদলে ভিয়েৎনাম আর আমেরিকা হয়েছিলো। হিটলার বদলে নিক্সন হয়েছিলো।
  • PT | 213.110.243.23 | ১৮ জুন ২০১২ ১৭:১৩535304
  • কল্লোলদাঃ যতক্ষণ আলোচনাটা "বাঙ্গলা গানের নতুন ধারা"-তে সীমাবদ্ধ ছিল আমি কোন পোস্টিং দিইনি। আলোচনাটা যখন "বাঙ্গলা গানের মোড় ঘোরানো" -র দিকে গেল তখন আমার মতামত দিয়েছি। "ধারা" নিজের মত বয়ে যেতে পারে মূলের সঙ্গে না মিশেও, হারিয়েও যেতে পারে কাউকে খবর না দিয়ে কিংবা বেঁচে থাকতে পারে একদল কোন বিশেষ মতবাদে বিশ্বাসী মানুষের মনে কিন্তু "মোড় ঘোরানো" ছোট-খাটো ব্যাপার নয় - তার জন্যে বোধহয় সলিলের মত প্রতিভার দরকার।
  • ranjan roy | 24.99.211.251 | ১৮ জুন ২০১২ ১৭:৩৪535305
  • কল্লোল,
    কেকরা কেকরা -- সম্ভবতঃ ওমর শেখ মির্জা পরে কোলকাতায় গাইতেন। বিহারী আঞ্চলিক ভাষায়। কিন্তু আই পি টি এর ইতিহাসে আছে এই গানটা বিনয় রায় অনন্য ভঙ্গীতে গাইতেন। যেমন হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান " মাউন্টব্যাটেন সায়েব ও" সাধন গুপ্তের গলায় বিশেষ জনপ্রিয় হয়েছিল। তেমনি গণনাট্য সংঘের খ্যাতিপ্রাপ্ত গানগুলোর সংকলিত ক্যাসেটে আমি বিনয় রায়ের গলায় গানটি শুনেছি। ধুয়ো ধরার জন্যে কোরাস ছিল। অচিন্ত্যরূপ বলতে পারবে, ক্যাসেটটি নব্বইয়ের দশকে ওদের বাসায় শোনা।
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৮ জুন ২০১২ ১৭:৪১535306
  • চাঁদ-ফুল-লতা-পাতা ছড়িয়ে, গান পরিবেশনের ভঙ্গীকে পাল্টিয়ে বাংলা গানে নতুন ধারা সংযোজন তো মোড় ঘোরানোই। আজ যাকে ব্যান্ডের গান বলছি, তার খারাপ/ভালো, পছন্দ/অপছন্দ সব মেনে নিয়েও তার একটা শ্রোতৃকূল তৈরী হয়ে গেছে। তার ভগীরথদের স্বীকৃতি দেবো না?
    তারা সলিলের মতো প্রতিভাবান কিনা তর্কসাপেক্ষ, কিন্তু প্রতিভাবান, এ নিয়ে সন্দেহ নেই।
    ভুলে যেও না সলিলও "বিশেষ মতবাদে" বিশ্বাস থেকেই তার যুগান্তকারী সৃষ্টিগুলো তৈরী করেছেন।
  • PT | 213.110.243.23 | ১৮ জুন ২০১২ ১৮:০৩535307
  • ব্যান্ডের গান অবশ্যই "মোড় ঘুরিয়েছে" কেননা সেই গান হাজার হাজার পাবলিকের কাছে পৌঁছেছে - তাদের মুখে মুখে ঘুরছে। মানুষের গানের রুচি পালটে দিয়েছে। অবশই সব ব্যান্ড নয় - "বেলা বোস" জাতীয় গানের শ্রোতা খুব বেশী নয় - কয়েকটি গান শোনার পরে গানগুলো "পাঁচালী পড়ার" মত একই রকম শুনতে লাগে।

    প্রতুলের গানের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। আর প্রতুল আসার অনেক আগেই হেমাঙ্গ, সলিল এক ধরণের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় "ঐ ধরণের" গান মানুষের কাছে নিয়ে গিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রেখেছে। আমি তো আগেই বলেছি যে হেমাঙ্গ আর সলিল একধরণের রাজনৈতিক back-up পেয়েছেন যা প্রতুল পাননি। যেমন ধরুণ, পরিবর্তনের সঙ্গে থাকলেও সেই রাজনীতি প্রতুলের "লালফৌজ" গানটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেবেনা।

    প্রতুলের শ্রোতৃকুলের সংখ্যা নিয়ে আমার বিশেষ সন্দেহ আছে। কাজেই ব্যান্ডের গানের সঙ্গে প্রতুলের গানকে একাসনে বসানো ঠিক হবেনা।
  • departed | 69.160.210.2 | ১৮ জুন ২০১২ ১৮:১৫535308
  • বেলা বোস আবার কোন ব্যান্ডের গান?
  • PT | 213.110.243.23 | ১৮ জুন ২০১২ ১৮:২৭535309
  • ব্যক্তি আর ব্যান্ড এক আলোচনাতে মিশে যাওয়ায় অঞ্জন দত্তের গানের কথা বলেছি।
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৯ জুন ২০১২ ০৯:২১535310
  • পিটি। ইদানিংকার বাংলা ব্যান্ডের গান নিয়ে আমারো যে খুব উচ্ছাস আছে তা নয়। কিন্তু সেটা আমর ব্যাক্তিগত পছন্দের বিষয়। তোমার বা আমার পছন্দটাই শেষ কথা এমন তো নয়। কাজেই ব্যান্ডের গানগুলো "পাঁচালী" কি না সে নিয়ে আমার কোন মত নেই। কিন্তু বাংলা গানের মোড় ঘুরিয়েছে ব্যান্ডের গান, এনিয়ে কোন সন্দেহ নেই। সেই ব্যান্ডের গানের যারা পথিকৃত তাদের মোড় ঘোরানোর কান্ডারী মানতেই হয়।
    প্রতুলের গানের শ্রোতা সংখ্যা নিয়ে তোমার সন্দেহ আছে। অথচ তুমিই বলেছো যে বহু মূলধারার শিল্পীর চাইতে প্রতুলের গানের শ্রোতা অনেক বেশী।
    আমি কোথাও প্রতুলের গানকে ব্যান্ডের গানের সাথে তুলনা করিনি। বলতে চেয়েছি ব্যান্ডের গানের মতো বাংলা গানে প্রতুলও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
  • lcm | 79.236.163.133 | ১৯ জুন ২০১২ ১১:১৪535311
  • ধুস্‌, প্রতুল মুখার্জি-র গান আর কজন জানে। প্রান্তিক গায়ক। সুভাষ চক্রবর্তী-র মতন। বা, বড়জোর পিন্টু ভট্টাচার্য। না, না, পিন্টুর একটা দুটো গান আরো বেশী লোকে জানে, বা, জানত। সেটা অবশ্য সলিল চৌধুরীর ক্রেডিট।
  • PT | 213.110.243.23 | ১৯ জুন ২০১২ ১১:২৮535313
  • সাধারণ মানুষের কাছে প্রতুল পরিচিত তাঁর "আমি বাংলায় গান গাই" গানের জন্য। এই গানটির পরেই তিনি তাঁর সমসাময়িক শিল্পীদের থেকে তুলনায় বেশী বহুশ্রুত হন। লালফৌজ, চাঁদ ইত্যাদি গানের ক্ষেত্রে তিনি এখনো প্রান্তিক শিল্পী। সত্তরের বা এমনকি আশির দশকেও কতজন প্রতুলের গান শুনত?
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৯ জুন ২০১২ ১২:০৮535314
  • তর্কটা একটা অদ্ভুত জায়গায় পাক খাচ্ছে। কেউ মনে করছেন, সাঙ্গীতিক অবদান রাখতে গেলে সেই গানকে জনপ্রিয় হতে হবে। কেউ মনে করছেন গানের সাঙ্গীতিক গুণই অবদান রাখার মাপকাঠি, জনপ্রিয়তা নয়।
    আমার কাছে মোড় ঘোরানো মানে প্রচলিত ধারার থেকে আলাদা একটা ধারা তৈরী করা। সলিল চৌধুরী তখনকার বাংলা আধুনিক গানের ধারায় অন্য ধরনের সুর ও কথা নিয়ে আসেন। রানার বা গাঁয়ের বঁধুর আগে এধরনের ব্যালাডধর্মী বাংলা গান হয়নি। তা বলে সলিল কি শুধুই ব্যালাডধর্মী গান রচনা করে গেছেন। দুরন্ত ঘূর্ণী, পথ হারাবো কি নীল ধ্রুবতারার মতো রোমান্টিক গানের পাশে সাত ভাই চম্পা, আজ নয় গুনগুন গুঞ্জন প্রেমের, এমনি চিরদিন তো কভু যায় না, বউ কথা কওয়ের মতো প্রতিবাদী গানও করে গেছেন (আমি এখানে সচেতনভাবেই আইপিটিএর গানগুলো বদ রাখলাম)। আর ছিলো সলিলের সাঙ্গীতিক বৈশিষ্ট। এগুলো নিয়ে একটা আলাদা ধারা তৈরী হলো। মোড় ঘুরলো বাংলা গান। তাই বলে আগেকার ধারা লুপ্ত হয়ে যায় নি। নচিকেতা, সতীনাথ, হেমন্ত, মান্না, শ্যামল, মানবেন্দ্র অগেকার ধারাতেই সুর করে গেছেন। বরং বলা যায়, অভিজিত বন্দ্যো ও অনল চট্টো ছাড়া কেউই সলিলের ধারার বাহক নন। ঠিক তেমনই যখন মহীন বা প্রতুল তাদের ধারা নিয়ে আসেন, তখন তাদের গ্রহনযোগ্যতা সাধারণ মানুষের কাছে ততো ছিলো না। কিন্তু তাতে তাদের গানের সাঙ্গীতিক মূল্য কম হয়ে যায় না। তারা বাংলা গানে নতুন ধারা এনেছেন। মহীনের ধারাটি পরবর্তীকালে জনপ্রিয়তা লাভ করে ও ব্যাপ্ত হয় বাংলা ব্যান্ড নামে। প্রতুলের ধারার কোন নাম নেই, কিন্তু সেও বেশ জনপ্রিয়। হয়তো সেই ধারা বহন করে নিয়ে যাবার অল্প কেউই থাকবে বা থাকবে না। তাতে বাংলা গানে এদের অবদান কম হয়ে যাবে না। মহীন ও প্রতুল দুজনেই বাংলা গানের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
  • PT | 213.110.243.23 | ১৯ জুন ২০১২ ১৩:৩৯535315
  • মহীন ও প্রতুলকে খাটো না করেই বলা যায় যে গানের "মোড় ঘোরানো"-র ক্ষেত্রে মানুষের (শ্রোতার) রুচি বদলানোর বিষয়টিও জরুরী হয়ে আসে। সেক্ষেত্রে কত মানুষ সেই গানের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছেন সেটা আলোচনায় আসা দরকার। কোথাও পড়লাম যে খেমটা ইত্যাদির পথ ছেড়ে কানাকেষ্ট নাকি প্রথম বিদেশী ঢং-এর গান "মুক্তির মন্দির" গাইলেন। সেই গান এক সময় (মা-বাবার কাছে শোনা) লোকের মুখে মুখে ফিরেছে। আশ্চর্য বিষয় যে এই গান আমার ছেলে আর তার বন্ধুরা ৮/৯ বছর বয়সে স্কুলের প্রোগ্রামে খুব যোশের সঙ্গে গেয়েছে। অর্থাৎ গানটির কাঠামো সাধারণ মানুষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য সেটাও বোধহয় আমাদের ভাবতে হবে। প্রতুলের "আমি বাংলায় গান গাই" ছাড়া আর কোন গানই সেই অর্থে লোকের মুখে মুখে ঘোরে না যা নাকি মুকুন্দদাসের গানের ক্ষেত্রে (শোনা/পড়া কথা) বলা যায়।
  • প্পন | 226.52.215.232 | ১৯ জুন ২০১২ ১৫:১৫535316
  • প্রতুলের "ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে" আর "স্লোগান" এই দুটি গানও "আমি বাংলায় গান গাই"-এর মতই সমান জনপ্রিয়।
  • Lama | 127.194.229.101 | ১৯ জুন ২০১২ ১৫:২৩535317
  • মুকুন্দদাসের গান কিন্তু আমি কলেজে পড়ার সময় পর্যন্তও বেশ শোনা যেত, সবিতাব্রত দত্ত গাইতেন- "ভয় কি মরণে, রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে।' কিংবা "বান এসেছে মরা গাঙ্গে খুলতে হবে নাও, তোমরা এখনো ঘুমাও' কিংবা "আমি দশ হাজার প্রাণ যদি পেতাম'
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৯ জুন ২০১২ ১৬:১৩535318
  • বিড়ি জ্বালাইলে বা শীলা কি জওয়ানীর জনপ্রিয়তা দিয়ে শ্রোতাদের রুচি মাপা যায় কি?
    আসলে শ্রোতা বলে কোন একটা বর্গ নাই। বিড়ি জ্বালাইলে বা শীলা কি জওয়ানীর জনপ্রিয়তা দিয়ে কখনোই মেহেদী হাসানের বা আবিদা পরভিনের জনপ্রিয়তা মাপা যায় না।
    নানান রুচির শ্রোতার কাছে নানান বস্তু জনপ্রিয়। কাজেই সংখ্যাগুরু শ্রোতার রুচি দিয়ে শিল্পের মান বিচার হলে, চিরকালই ধ্রুপদী গান ঢিংকাচিকার চেয়ে মানে খাটো হয়ে যাবে। শংকর চিরকালই বাংলাভাষার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক হয়ে থাকবেন।
    প্রতুলের বা সেই অর্থে যে কারুরই গানের জনপ্রিয়তা দিয়ে সেইসব গানের মান বিচার খুবই হাস্যকর।
  • কোয়ার্ক | 24.139.199.1 | ১৯ জুন ২০১২ ১৬:২০535319
  • তাইলে খাড়াইলো এই যে "জনপ্রিয় ভালো" জিনিস কিছু নাই। এইটে লেখার সময় কল্লোলদা দাড়িদাদুকে সরিয়ে রাখ্লেন কীনা জানতে ইচ্ছে করছে।
  • কোয়ার্ক | 24.139.199.1 | ১৯ জুন ২০১২ ১৬:২১535320
  • **কিনা
  • lcm | 79.236.163.133 | ১৯ জুন ২০১২ ১৬:৪৪535321
  • ধুস, তাইলে, সুভাষ চক্রবর্তী-র অবদানও "গুরুত্বপূর্ন" বা "মোড় ভাঙা"।
    http://ww.smashits.com/subhas-chakraborty/songs/singer-6980-page-1.html

    একটা কথা বলেই ফেলি। মহীনের কিছু গান আমার অসাধারণ লাগে, কিন্তু বাংলা ব্যান্ড গানের ধারা ঘরে ঘরে এসেছে চন্দ্রবিন্দু আর ভূমি-র হাত ধরে, মহীনের প্রায় ১৫-২০ বছর পরে। মহীন না থাকলেও বাংলা ব্যান্ড হত।

    ক্থা হল, কেউ মোড় ভাঙা গান গাইল কিন্তু জনগণ নিল না - তাহলে কি তাকে ট্রেন্ড সেটার বলা যাবে, বা, তার গানের অবদানকে গুরুত্বপূর্ণ বলা যাবে?

    মুকুন্দদাস-এর মতন আরো অনেকেই যুগে যূগে গান লিখেছেন এবং গেয়েছেন, কিন্তু তারা অত জনপ্রিয় হন নি, মানুষ মনে রাখে নি। তাহলে, তাদের অবদান কি গুরুত্বপূর্ণ?
  • কল্লোল | 129.226.79.139 | ১৯ জুন ২০১২ ১৭:০২535322
  • কোয়ার্ক। এই অদ্ভুত তর্কগুলো করতে আর ভালো লাগে না। আমি বলেছি যে কোন শিল্পসৃষ্টির জনপ্রিয়তা দিয়ে তার মান বিচার করা বেশ হাস্যকর। আর আপনি বলছেন তার মানে আমি বলতে চাইছি, জনপ্রিয় হলে তার মান ভালো হবে না।
    আবারও বলছি। জনপ্রিয় মানে কি? রবিবাবুর গান কি দার্জিলিং থেকে কাক্দ্বীপ পর্যন্ত আপামর মানুষের কাছে জনপ্রিয়? তাতো নয়। শিক্ষিত বাঙ্গালীর একাংশের কাছে জনপ্রিয়। তেমনি শিক্ষিত বাঙ্গালীর একাংশ হেভি মেটাল বা অ্যাসিড রকেও মশগুল, আবার কেউ নজরুলের গান ছাড়া কিছু ভাবতে পারেন না রবিবাবুও না। তাতে কিছু প্রমান হলো কি?
  • lcm | 79.236.163.133 | ১৯ জুন ২০১২ ১৭:০৭535324
  • ভুল। রবীন্দ্রসংগীত কাকদ্বীপে জনপ্রিয়। এখন জানি না, এককালে গ্রামে গঞ্জে ম্যাড়াপ বেঁধে ফাংশান হলে পুরানো সেই দিনের কথা গাওয়া হত, গ্রামের স্কুলে গান হলে বাচ্চারা রবীন্দ্রসংগীত গাইত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন