এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • হুমায়ুন আহমেদ

    পাই
    অন্যান্য | ২০ জুলাই ২০১২ | ২৫৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাই | 82.83.79.41 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:০৪566479
  • হুমায়ূন আহমেদ ঃ তাঁর অক্ষরগুলো আবার বেঁচে উঠতে শুরু করেছে

    কুলদা রায়
    -------------

    তিনি চলে গেলেন।
    গেলেন বলেই তো চলে যাওয়া যায় না।
    তিনি তাঁর অক্ষরের মধ্যে থেকে আবার বেঁচে উঠবেন। বলবেন, তোমাদের রেখে যাব কোথায়।
    শুরুতে তিনি উঠেছিলেন আমাদের পাড়ায়। নিউ ইয়র্কের কুইনস বরোর জ্যামাইকায়। একদিন আমার বড়ো মেয়ে ঘুম থেকে উঠেই জুতো পরে রেডি। তখনো অতোটা শীত পড়েনি। বলল, বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদকে খুঁজতে যাচ্ছে। আমার মেয়েটি বাংলা জানে। পড়তে পারে। ও যখন পড়তে শিখেছিল তখন আমার বুক শেলফ থেকে নিশিকাব্য গল্প পড়েছিল। পড়ে বলেছিল—ও বাবা, এই গল্প থেকে জল পড়ে। আমার ছোটো বলে উঠে, পাতা নড়ে।
    আমার মেয়েটি পাড়ার সব বাসার সামনে দিয়ে একা একা হেঁটেছে। দরোজায়—সিঁড়িতে তাকিয়েছে। কুইনস লাইব্রেরীতে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছে একা একা। আমার মেয়ে হতাশ হয়ে তাঁর স্কুলের শিক্ষক ডঃ মল্টোভাকে জিজ্ঞেস করেছেন, কী করা বলেন তো? ডঃ মল্টোভা বলেছেন, লেখককে বাইরে পাওয়া যায় না। তাঁর লেখার মধ্যেই পাওয়া যায়। আমার মেয়ে খুশী। সে বইয়ের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদকে খুঁজবে।

    হুমায়ূন আহমেদ যখন নিউ ইয়র্কে এসেছিলেন, অনেককেই দেখেছি—বলছেন, তিনি এসেছেন। সবার মধ্যে একটা নিশ্চিত ভাব—তাঁর কিছু হবে না। সেরে উঠবেন। জ্যাকসন হাইটসে যেদিন তার জন্মদিন হল—ঘটনাচক্রে সেদিন আমার ছিল বইকেনার দিন। কিছু গান খোঁজার দিন। তখন মুক্তধারা নামের বইয়ের দোকানে পিলপিল করে মানুষ আসছে। তারা হুমায়ূন যাদুকরকে দেখবে। বুড়ো একজন লোক এসেছেন। তার নাতিটি তাঁকে জিজ্ঞেস করছে, দাদু—এখানে কী হবে? দাদুটি তার নাতিকে বলে দিচ্ছেন—আমার বন্ধুর জন্মদিন হবে। নাতিটি জিজ্ঞেস করল, তোমার বন্ধুটি কই? তিনি হুমায়ূন আহমেদের বইগুলো দেখিয়ে দিলেন। একটি তরুনী মেয়েও এসেছিল নীল শাড়ি পরে। তার হাতে অচিনপুর বইটি। প্রথম পাতায় লেখকের স্বাক্ষর নেবে। যারা তাঁর বই পড়েছে—তারা তাকে জানত। যারা পড়েনি—তারাও তাঁকে জানত। এটা একটা ম্যাজিক। এভাবে এর আগে বাংলাদেশে আর কে সবার হতে পেরেছিলেন? তিনিই প্রথম। তিনি ম্যাজিক্যাল। এই ম্যাজিক তার কলমে ছিল। এখন অক্ষরে থাকবে। এই অক্ষরকে ভালবাসবো। এই অক্ষরকে দুষবো। অক্ষরই সত্যি।
    আজ হুমায়ূন আমহেদ চলে গেলেন। বেলভ্যু হাসপাতালে। খবরটি দেখেছিলাম কবি দার্শনিক মঈন চৌধুরীর ফেসবুক ওয়ালে। বিডি নিউজের রাজু আলাউদ্দিন জানতে চাচ্ছেন খবরটি সত্যি কিনা? গল্পকার জ্যোতিপ্রকাশ দত্তকে ফোন করলাম। তাঁর ফোন বিজি। ডঃ পূরবী বসুকে ফোন করেছি। তিনি বাসায় নেই। বেরিয়ে গেছেন। সাংবাদিক মঞ্জুর আহম্মেদকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি আঁতকে উঠলেন—সে কী করে হয়? গল্পকার—চলচ্চিত্রকার আনোয়ার শাহাদাত ঘুমিয়েছিলেন। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে মুক্তধারার বিশ্বজিৎ সাহাকে ফোনে ধরলেন। বিশ্বজিৎ সাহা জানালেন—খবরটি সত্যি নয়। দুপুর বারোটায় তিনি দেখে এসেছেন—হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে আছেন। এগুলো গুজব। কিন্তু তানভীর আমাকে জানাল—খবরটি সত্যি। তানভীর গাড়ি ছোটাল—ম্যানহাটানের বেলভ্যু হাসপাতালে যাবে। ফোন রেখে দিয়েছে। তানভীরের গাড়ির আওয়াজ শোনা গেল। তখন দুপুর ১।৫০। এর মধ্যে ৩০টি মিনিট চলে গেছে। তিনি চলে গেছেন।
    আজ হুমায়ূন আহমেদ নিউ ইয়র্কের বেলভ্যু হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন। যেতে যেতে একটি বালকের কাছে ধরা পড়েছেন। বালকটির মুখে কে একজন বাংলাদেশের পতাকা এঁকে দিয়েছে। সেই তুলিটি নিয়ে বালকটি এখন হুমায়ূন আহমেদের মুখে আঁকবে তার নিজের মুখটি। সেই মুখটি বাংলাদেশের। সেই মুখটি মধুর।
    মধুর, তোমার শেষ নাহি যে পাই।

    http://www.unmochon.com/2012/07/20/11309.html
  • | 127.194.98.182 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:১৬566507
  • শঙ্খ নীল কারাগার-


    শ্যামল ছায়া-


    নাটকঃ মাঝে মাঝে তব দেখা পাই-
  • r2h | 208.175.62.19 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:১৮566518
  • কদিন আগের একটা লেখায় পড়েছিলাম হাসপাতালের বিছানায় সন্তানের মুখ মনে পড়ে যাওয়ায় আরো কদিন বেঁচে থাকার ইচ্ছে, বেঁচে থাকার জন্যে সিগারেট ছেড়ে দেওয়া, এইসব।
    অসুস্থ ছিলেন বটে তবু বড় অপ্রত্যাশিত।
  • | 127.194.98.182 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:২১566540
  • আগুনের পরশমণি-
  • শঙ্খ | 169.53.110.147 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:২১566529
  • খবরটা শুনে মনটা ভারি ছিলো। আমার সবদিনের ইচ্ছে ছিলো হুমায়ূন আহমেদকে অন্ততঃ একবার চোখের দেখা দেখতে। সেতো আর হবে না।

    লেখাটা পড়ে কোথাও একটা স্নিগ্ধতার ছোঁয়া পেলাম মনে। সত্যি তো। অক্ষরেই খুঁজি তবে।

    কুলদাবাবুকে অনেক ধন্যবাদ।
  • aranya | 154.160.226.53 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:৩৫566551
  • এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। কবে যেন একটা দেখা হল বিশ্বজিতের সাথে, সেটা কি গত বছর, সময় বড় দ্রুত চলে যায় এখন, বলল হুমায়ুন আহমেদ-কে নিয়মিত কেমো করাতে নিয়ে যাচ্ছে, আমি লোভীর মত বলে ফেলেছিলাম আমি কি একটু দেখা করতে পারি, তার পর নিজেরই চেতনা ফিরে আসে, নিজেই বললাম না না অত অসুস্থ, বিরক্ত করতে চাই না, সেরে উঠলে দেখা করব, দেখা তো একবার করতেই হবে এই মানুষটির সাথে, যিনি আমার কাছে স্বাধীন বাংলাদেশ, মুক্ত বুদ্ধি, মুক্ত চিন্তার বাংলাদেশের প্রতীক।

    কষ্ট হচ্ছে খুব, বড় প্রিয়্জন চলে গেলেন।
  • | 127.194.98.182 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:৩৬566562
  • দুপুরবেলায় জেবতিকের এই মেসেজটা দেখি-
    Arif Jebtik
    23 hours ago near Dhaka, Bangladesh
    আমার বাবারও একই ধরণের ক্যান্সার হয়েছিল। শেষ ক'টা দিন অচেতন ছিলেন। মাঝে মাঝে একটু একটু চেতন আছেন বলে মনে হতো, তখন বড় বড় চোখ দিয়ে চারপাশে তাকাতেন। তাঁর বামপাশে ছিল বড় অক্সিজেনের সিলিন্ডার, নাক দিয়ে ঘন্টায় ঘন্টায় অক্সিজেন যাচ্ছে, হাতে-পায়ে জড়াজড়ি করে অনেকগুলো টিউবে ক্রমাগত তরল ঢুকছে, তিনি সবকিছুকে অস্বীকার করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। একটা বিছানা ঘিরে আমি, আমার ভাই, আমার বোন, আমার মা...আমরা বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি আর বিড়বিড় করে প্রার্থনা করছি।
    হুমায়ূন আহমেদ হয়তো এই মুহুর্তে অচেতন শুয়ে আছেন বিছানায়, আমি তাঁর জন্য প্রার্থনা করছি। আমি আজ এই গভীর রাতে তাঁর চাইতেও বেশি প্রার্থনা করছি হুমায়ূনের আত্মজনদের জন্য, যাঁরা দেশে ও বিদেশে এখন নিজেরাই নিদ্রাহীন প্রার্থনায়।
    দার্শনিক বুলি আউড়ে লাভ নেই। আমরা মানুষ তাই আমাদের কষ্ট হয়, তাই আমরা কাঁদি...
    ...........

    বিষন্নতা ভর করেছিলতখন থেকেই। ঘুমোতে গেছিলাম, একটা ফোনে খবরটা পাই। রাত-বিরেতে ফোন এলে সেটা খারাপ খবর নিয়েই আসে। শুনতে পাই হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন।

    কবেকার সেই হিমু, শুভ্র, মিসির আলীরা একসঙ্গে এসে হাজির হল। তার সঙ্গেই এলো শঙ্খ নীল কারাগার। আরও কত কত নাটক। নাম মনে নেই আজ আর। সেই ৮০র দশকের কথা। মাঝে পেরিয়েছে কতগুলো বছর?
  • | 127.194.98.182 | ২০ জুলাই ২০১২ ০১:৫৯566573
  • আমাদের কোনো স্যাটেলাইট চ্যানেল ছিল না। আমাদের দিনে পাঁচখানা করে সিনেমা আর পনেরো খানা মেগা সিরিয়াল ছিল না। আমাদের দুটো ধারাবাহিক নাটক হত। মঙ্গলবার মঙ্গলবার করে। এই মঙ্গলবারে একটা তো পরের মঙ্গলবারে অন্যটা। মানে একটা পর্ব দেখার পরে পরবর্তী পর্বের জন্যে অপেক্ষা করতে হতো পনেরো দিন। বিশেষ নাটক হতো বিশেষ দিনে। যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস আর দুই ঈদে। এই বিশেষ দিনগুলোতে আমরা অপেক্ষা করে থাকতাম বিশেষ নাটকের জন্যে। দু-আড়াই ঘন্টার নাটক হত। বিজ্ঞাপনও থাকত তবে সে অসহ্য রকমের কিছু ছিল না। বিশেষ দিনে বিশেষ নাটকের আকর্ষন বেড়ে যেত সে যদি হত হুমায়ূন আহমেদের নাটক।

    দেশ ছেড়ে আসার পরেও এই বিশেষ দিনগুলি আসত কিন্তু কোনো নাটক আসত না। বহুব্রিহী চলছে তখন, ধারাবাহিকে। সময়টাকে আধঘন্টা এগিয়ে দিতাম। ঘড়ির সময়টাকে মনে মনে আধ ঘন্টা এগিয়ে দিতাম, আর সেই এগিয়ে দেওয়া সময়ের সঙ্গে ঘড়ি মিলিয়ে নিয়ে বুঝতাম, এখন বিরতি চলছে, বিজ্ঞাপনের। এখন বোধ হয় অর্ধেক হয়ে গেল। সময়ে সব হয়। হলও। মনে মনে এগিয়ে দেওয়া ঘড়ির সময় দেখে নাটকের সময়টা কখন থেকে যেন নেই হয়ে গেল।

    সে ইন্টারনেটের যুগ নয়। ইউটিউবের যুগ নয়। কম্প্যুটার খুলে একটা ক্লিক, নাটক-সিনেমারা সব হাজির। সেসব ছিল না তখন। যা ছিল, যেটুকু ছিল সব নিজের ভেতরে ছিল। ভাবনায় ছিল। স্বজনদের ছেড়ে এসে পরকে আপন করার সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই পর হলো, দূরের হলো।

    আজকে এই সংবাদটি পাওয়ার পর, তাঁর মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরে এক লহমায় যেন চলে গেলাম তিনটি দশক আগে। ফিরে আসতে যদিও সময় লাগে না। লাগবে না। ইউটিউবে ধারাবাহিকেরা সব হাজির। সিনেমারাও। সেই দিনগুলোই শুধু ফিরবে না। যিনি চলে যান, তিনি ফিরবেন না। স্মৃতিরা তবুও থাকবে। মাঝে মাঝে মনটা পিছিয়ে যাবে। এক টাকা, দু'টাকা করে জমিয়ে বই কেনার দিন, মঙ্গলবারের প্রতীক্ষা, আর বিশেষ দিনগুলোর অপেক্ষা। সেই সব তো স্মৃতি হয়েছে বহুকাল আগেই, আজ হুমায়ূন আহমেদও স্মৃতি হয়ে গেলেন..
  • | 60.82.180.165 | ২০ জুলাই ২০১২ ০৩:২২566584


  • রেকর্ডিং খুব একটা ভালো না।তবুও
  • pi | 147.187.241.7 | ২০ জুলাই ২০১২ ০৪:২০566480
  • "চারিদিক কেমন জানি গুটিয়ে সিলিন্ডারের মতন হয়ে যাচ্ছে। সিলিন্ডারের শেষ প্রান্তে আলোর বন্যা। সেই আলোর ভয়াবহ চৌম্বক শক্তি। আমি ছুটে যাচ্ছি। আমি পিছন ফিরে বললাম, পৃথিবীর মানুষেরা, তোমরা ভালো থেকো ! সুখে থেকো ! আমি ছুটে যাচ্ছি আলোর দিকে।আমি জানি, আমাকে অসীম দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। অসীম কখনো শেষ হয়না। তাহলে যাত্রা কীকরে শেষ হবে ?"

    আর এর পরে উপন্যাসটাতে একটা পরিশিষ্টও ছিল।
    রবীন্দ্রনাথের কোটেশন।
    "চিরকাল এইসব রহস্য আছে নীরব
    রুদ্ধ ওষ্ঠাধর
    জন্মান্তের নবপ্রাতে সে হয়তো আপনাতে
    পেয়েছে উত্তর" ।।

    ভাবতে ইচ্ছে করছে, উত্তর পেয়েছেন।
    আর, পৌঁছে গেছেন, মেঘের ওপরের বাড়িটিতে।
  • nina | 78.34.167.250 | ২০ জুলাই ২০১২ ০৪:৩০566491
  • ম কে থ্যাঙ্কিউ----লিংকটির জন্য। বড় ভাল লাগল হুমায়ুন আহমেদ সাহেবের জীবনদর্শন--সহজ সরল ভাবটি!
    বড় তাড়াতাড়ি চলে গেলেন--তবে রেখে গেছেন লক্ষ লক্ষ অক্ষর আমাদের জন্য---তার মাঝেই আমরা ওনাকে বারে বারে ফিরে পাব।
  • সাগ্নিক | 140.203.154.46 | ২০ জুলাই ২০১২ ০৬:২৭566499
  • জীবনে প্রথম একজন লেখকের মৃত্যুতে এত দু:খ পেলাম। সামনে থেকে কখনো দেখিনি তাঁকে, লেখার মধ্যে দিয়ে বড় গভীর প্রানের আলাপ। নিউয়ার্কএ প্রায়ই যাই, ভাবি, সুযোগ পেলে, একবার কি দেখা করতে পারি? অসুস্থ মানুষ, তাই ইচ্ছা করেই আর উত্তক্ত করিনি। আশা ছিল, একদিন সেরে উঠবেন, হলুদ পাঞ্জাবি পরে হিমুরা আবার বেরিয়ে পড়বে বিশ্ব চরাচরে। কখনো ভাবিনি না সেরে ওঠারও একটা সম্ভাবনা ছিল। উনি চলে গেলেন, মনখারাপের অব্যর্থ এক বিশল্যকরণী রেখে গেলেন পিছনে।

    নিউয়ার্ক আর এক নিউয়ার্ক রইলো না। শহর আমার গরিব হয়ে গেল। ভালো থাকবেন, হুমায়ুন ভাই।
  • গান্ধী | 213.110.243.22 | ২০ জুলাই ২০১২ ১০:৪৪566500
  • আমাদের পশ্চিম বাংলায় আমরা বাচ্ছাবেলায় বাংলাদেশের কোনো লেখা পড়তেই পাইনা বিশেষ। প্রথম ওপার বাংলার লেখা পড়েছিলাম "হিমু" , তখন স্কুলে পড়ি, অদ্ভুত লেগেছিল। কেমন বলতে পারা যায়না। মানে লিখে বোঝানো অসম্ভব। তারপর থেকেই হুমায়ুন আহমেদের বইগুলো পড়া শুরু। অসম্ভব ভালো লাগা একজন
  • aranya | 154.160.5.25 | ২১ জুলাই ২০১২ ০৮:৫৬566501
  • হিমু, মিসির আলী প্রিয় তো নিশ্চয়ই, আমার সবচেয়ে ভাল লাগে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় ওর লেখাগুলো - '১৯৭১' (এই নামে অসাধারণ একটা ছোট গল্প আছে, একটা উপন্যাসও) আর অবশ্যই 'অনিল বাগচির একদিন'।
    জীবনে,খুব প্রতিকূল অবস্থায় পড়লেও লড়ার সাহস পাবেন শেষোক্ত রচনাটি পড়লে; আর মধ্যবয়সী, পোড় খাওয়া মানুষ, সিনিক মানুষ আপনার চোখ হয়ত নিজের অজান্তে একটু ভিজেও উঠতে পারে।

    হুমায়ুন আহমেদ আর জাফর ইকবাল - এই দুই ভায়ের লেখায় দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি অপরিসীম ভালবাসা - সে ভালবাসা চিনতে ভুল হয় না।

    মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষেরা - শামসুর রহমান, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন আহমেদ - একে একে চলে যাচ্ছেন সবাই, একে একে নিভিছে দেউটি। নতুন প্রজন্ম, নতুন মানুষেরা যেন এদের মশাল বহন করতে পারেন।
  • aka | 85.76.118.96 | ২১ জুলাই ২০১২ ০৯:২৮566502
  • হুমায়ুণ আহমেদের লেখা নিয়ে কিছুই বলার নেই।

    ওনার কোন ইন্টারভিউ আগে দেখি নি। এই কদিন দু একটা ইন্টারভিউ দেখলাম, অসাধারণ বললেও কম হয়। এত সহজ, অথচ গভীর কথা এবং এত সৎ অভিব্যক্তি আমি খুব কম দেখেছি। দুর্দান্ত ভালো লেগেছে। খাঁটি মানুষ। আমি ফিদা।
  • শঙ্খ | 118.35.9.186 | ২১ জুলাই ২০১২ ১৯:১৯566503
  • লিংকটা পাওয়া যাবে?
  • pi | 82.83.90.116 | ২১ জুলাই ২০১২ ১৯:২৯566505
  • *বারী
  • ব্যাং | 132.172.230.81 | ২১ জুলাই ২০১২ ২১:৪২566506
  • অনেকদিন আগের কথা। তখন জানতাম টিভিতে দুইরকম চ্যানেল হয়। দূরদর্শন আর বাংলাদেশ টিভি।
    আমার কাজ ছিল ছাদে উঠে অ্যান্টেনা ঘোরানো। সামনের বাড়ির ছাদ থেকে মিঠুদি হাসত আর খেপাত "বাংলাদেশের দিকে ঘোরা, তুই তো এখন মানিকতলার দিকে ঘোরালি।" নিতান্তই সরল ছিল বলে শুধাতাম, বাংলাদেশ কোন দিকে। মিঠুদি আঙুল দিয়ে সল্টলেকের দিকে দেখিয়ে বলত "সল্ট লেকের উল্টোদিকে লেকটাউন আর লেকটাউন থেকে যশোর রোড ধরে হাঁটলেই বাংলাদেশ। তাই ঐ দিকে ঘোরা।" আমিও চারিদিক তাকিয়ে কোনটা লেকটাউন, কোনটা মানিকতলা আর কোনটা যশোর রোড কিছুই বুঝতে না পেরে, সব বুঝেছির ভাব করে অ্যান্টেনার রড ধরে একটু একটু করে ঘোরাতাম, আর চেঁচাতাম, "মাআআ, এইবার আসছে এ এ এ?"
    "আসছে, কিন্তু খুব বালি ঝরছে আর ঝ্যাঁ ঝ্যাঁ আওয়াজ হচ্ছে, আরেকটু ঘোরা"
    "ঘুরিয়েছিইইই, এইবাআআর?"
    "আর একটু। একটু খানি। খুব আস্তে আস্তে ঘোরা। ঠিক আছে। ঠিক আছে। ব্যাস আর না। নেমে আয়"
    এবার শুরু হবে রেস। আমাদের বাড়ির চারতলার ছাদ থেকে আমি দোতলায় নামব। আর সামনের বাড়ির চারতলা থেকে মিঠুদি নেমে এসে আমাদের বাড়ির দোতলায় উঠবে। জানাই কথা, মিঠুদি প্রতিবারই রেসে জিতবে। মা সাধে আমাকে মিঠুদির মতন চটপটে হতে বলে! ঐতো মাসিমণি, তুলিপিসি, কেয়াকাকিমা,রত্নাকাকিমা, ঝুমাকাকিমা সবাই এসে গেছে।

    ইসস, নামতে কী করে এত দেরি করে ফেললাম! রফিককে আগেই দেখিয়ে দিয়েছে। নীলুর বরকে আমার মোটেই ভালো লাগে না এত গোমড়া কেন? আবার নীলুর শাশুড়িকে দেখাচ্ছে এইবার ঝুমাকাকিমা নিজের শাশুড়ি কেমন ব্যবহার করত সেই গল্প শুরু করবে, একটা ডায়লগও শুনতে দেবে না। ঐ দেখো মার মুখটা কেমন যেন দুঃখীমতন হয়ে গেছে। এক্ষুনি চোখ দিয়ে জল পড়বে আমি জানিই জানি। অবশ্য রফিক এসে কিছু বললেই আবার হেসে ফেলবে। যাঃ, ছবি চলে গেল আবার, ঝ্যাঁ ঝ্যাঁ শুরু হয়েছে। "মাআআ, আমি ছাদে যাচ্ছি"
    "এসছে?"
    "না আরো ঘোরাতে হবে" (এই উত্তরটা সমস্বরে)
    "এবাআআর?"
    "হ্যাঁ, হ্যাঁ, এসে গেছে, এসে গেছে" (সমস্বরে)।
    নীচে নেমে আসি। মা চায়ের জল চাপিয়ে দিয়েছে। কাকিমা অবিশ্যি আগে থেকেই আলুর চপ ভেজে রেখেছিল।

    নিশ্চয়ই এতক্ষণে সবাই বুঝে গেছেন আমাদের বাড়িতে এইসব দিনরাত্রি দেখাটা একটা উৎসবের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হত। এই সব দিনরাত্রি শেষ হয়ে গেলে কী হত বলুন তো? তার আধ ঘন্টা বাদে মালামাসি আর শুভদাদা লাবণী থেকে রিক্শা ধরে আমাদের বাড়ি আসত। মায়ের সাথে নীলুকে নিয়ে আড্ডা না দিলে চলবে কেন? আমি আর শুভদাদাও এবার শুভদাদার মিশাটা নিয়ে বড় খাটে উপুড় হব। মিশার পাতাগুলোয় হাত বুলোতে কী ভালো-ই না লাগে। শুভদাদাটা বড্ড হিংসুটে, আমাকে কিছুতেই পুরনো মিশাগুলো নিজের কাছে রাখতে দেয় না।

    কবে যেন এই সব দিনরাত্রি শেষ হয়ে গেল। আর আমি ছাদে গিয়ে গলা ফাটিয়ে চেঁচাই না। মা-ও বাংলাদেশ টিভির জন্য হন্যে হয় না। শুভদাদা আর মালামাসিও আর আসে না। শুভদাদার উঁচু ক্লাস হয়ে গেছে, টিউশনে যায়। মিশাও আর আসে না মালামাসিদের বাড়ি।

    আমিও তো এইটে পড়ি। বিকেল হলে আমি, সীমাদি, সোমাদি, রাত্রিদি, সুস্মিতাদি আমরা সবাই হাঁটতে বেরোই।
    "তোর আজ বাড়ি ফিরতে এত দেরি হল কেন? ছটা বাজতে চলল। এত বড় মেয়ে বাড়িতে থাকতে পারিস না?"
    "বাড়িতে থেকে কী করব? বাড়িতে একটাও নতুন গল্পের বই আছে? আমার সবসময়ে পড়ার বই পড়তে ভালো লাগে না।"
    "না শুধু গল্পের বই গিলতে ভালো লাগে!!! পড়ার বই যেন চিরশত্রু ওনার!! আর কত গল্পের বই চাই তোমার!!"

    "মা মা! এই বইটা কোত্থেকে এল? তুমি আর বাবা বইমেলায় গেলে? আমাকে নিয়ে গেলে না?"
    "মা, এই মাধ্যমিকের বছরটা কি তোমার না গেলেই নয়? প্রতিবারই তো যাও"
    "মা, মা, তুমি এই বইটা খুঁজে পেয়ে গেলে! কী করে পেলে মা? আমি তো কক্ষনো এইসব দিনরাত্রি খুঁজে পাই নি! মা আমি কিন্তু আজই পড়ব বইটা। তুমি টেনে নেবে না।"
    "হ্যাঁ, আমি তোমার অ্যাডিশনাল ফিজিক্সের পড়া পড়ি, আর তুমি এই সব দিনরাত্রি পড়! এক মাস বাদে তো আমার মাধ্যমিক শুরু হবে! পরীক্ষার পরে পড়ো।"

    একমাস বাদে পড়ি নি। সেইদিনই রাত্রে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়েছিলাম। স্কুলে যাওয়ার সময়ে বাসে পড়েছিলাম। টিফিনের সময়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে একসাথে পড়েছিলাম। টিউশন থেকে ফিরে ভাত খেতে খেতে পড়েছিলাম। রফিক তার মায়ের দাঁতে ব্যথা হওয়ায় ড্রাকুলার মতন দেখাচ্ছিল বলেছিল। শারমিনের কোলে মাথা রেখে টুনি মরে গেছিল। নীলু আর সফিক যায় নি। নীলু খুব বুদ্ধিমান বলায় শারমিনের বাবা শারমিনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন - শারমিন কি বুদ্ধিমান মানুষ পছন্দ করে না! কী অদ্ভুত প্রশ্ন!!
    "ওকী ওরকম ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিস কেন?"
    "মা, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, নীলুর জন্য কষ্ট হচ্ছে, মা, শারমিনের জন্যও। টুনির জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে মা!"

    কয়েকমাস পরে অনেক নতুন বন্ধু পেলাম। অনেক নতুন দাদা-দিদি।
    "অর্ণব, তোর বাড়ি বাংলাদেশে?"
    "হ্যাঁ কেন বল তো?"
    "তুই আবার কবে বাড়ি যাবি রে? আমাকে হুমায়ুন আহমেদের বই এনে দিবি? আর ফীডব্যাকের ক্যাসেট? এখানে শুধু একটাই ক্যাসেট কিনতে পাওয়া যায় ফীডব্যাকের। আমি ওদের অন্য গানগুলো-ও শুনতে চাই। এনে দিবি?"
    "শুধু ফীডব্যাক শুনবি কেন? মাইলস শুনেছিস? আমার হোস্টেলের ঘরে কয়েকটা আছে শুনবি? হুমায়ুন আমেদের কোন বই পড়েছিস?"
    "শুধু এই সব দিনরাত্রি পড়েছি। পড়ে থেকে আরো পড়ার জন্য খুব মন টানছে রে! আছে তোর কাছে?"
    "তুই না একদম আমার বড়দির মতন দেখতে। বড়দিও আবার হুমায়ুন আহমেদের ভক্ত। ওনার প্রথম দিকের লেখা নন্দিত নরকে পড়িস ।"

    পরের বছর অর্ণব এনে দিল একটা ক্যাসেট - যতীনস্যারের ক্লাসে। আর দুটো বই - বহুব্রীহি, নন্দিত নরকে। কী অদ্ভুত বই এই নন্দিত নরকে! এ কী অদ্ভুত অনুভূতি! এরকম আলোআঁধারিওয়ালা মানুষগুলোর গল্প এমন করেও লেখা যায় বুঝি!
    "ও কী! ওরকম খিলখিলিয়ে হাসছিস কেন? কী বই ওটা? দেখি! বহুব্রীহি!"
    "মা প্লিজ, প্লিজ! তুমি কিছুতেই এই বইটা এখন হস্তগত করবে না। আগে আমার শেষ হোক!"

    "কী রে! সিঁড়িতে বসে না গেঁজিয়ে আমার সঙ্গে বইমেলা যাবি ?"
    "যাবি? চল তাহলে। জানিস, আমি না এই প্রথম বাবা-মা ছাড়া একা একা বইমেলা যাচ্ছি!"
    "একা যাচ্ছিস!! ওরে আমরাও তো যাচ্ছি তোর সাথে! ফার্স্ট ইয়ারে উঠেও একি খুকিপনা তোর?"
    "শোন না, তোরা ঘোর তোদের মতন, আমি একটু বাংলাদেশের এই স্টলটায় ঢুকি।"
    "হুমায়ুন আমেদের নতুন কী বই আছে? এইটা! ওবাবা এত দাম!"
    "কী রে, কী বই কিনলি? ময়ূরাক্ষী!!!"
    "আমাকে কতা টাকা ধার দিবি রে? আমার কাছে আর বাসভাড়াটাও নেই।"
    "টিউশানি কর, টিউশানি। একটা বই কিনেই আর টাকা ফুরিয়ে যাবে না তোর"

    "মা, মা, দেখেছ এইবার পুজোসংখ্যায় হুমায়ুন আমেদের উপন্যাস বেরিয়েছে!!"
    "হ্যাঁ পড়লাম কোনোটাই এই সব দিনরাত্রির কাছে লাগে না।"

    "জিনত, তোর মা-বাবা আজও ঢাকায় আছেন, না? আমাকে হুমায়ুন আমেদের রচনাবলী এনে দিবি?"

    "হ্যাঁ রে, কচি বাচ্চা ফেলে তোর বইমেলায় ঘোরা আর শেষ হয় না, না? কী বই কিনলি, দেখি? হিমু সমগ্র! দুটো খন্ড!"

    হিমু, আমি খুব কষ্ট পাচ্ছি হিমু। চারপাশের লোকগুলো খুব কষ্ট দিচ্ছে, তুমি আমাকে আরো একটু হাসিয়ে দাও হিমু।

    "জানো তো, আমি টাকা জমাচ্ছি, একসাথে হুমায়ুন আমেদের সব বই কিনে ফেলব। তারপর সব ছেড়েছুড়ে বাড়ি বসে শুধু গল্পের বই পড়ব ছেলেটা কলেজ চলে গেলে!"

    "এ কী পাই কী লিখেছে এটা! হুমায়ুন আমেদ আর নেই!!!! কোথায় নেই! ঐ তো চারনম্বর তাকে অতগুলো বই দেখা যাচ্ছে তো! হিমু সমগ্রটা তো জ্বলজ্বল করছে, মিশির আলিও তো পাশেই রইল। রূপাও আছে নিস্চয়ই কোথাও। অমন মায়াবতী মেয়ে কোথায় মিলিয়ে যাবে! নীলু-মিলি সব্বাই আছে।"
  • Sibu | 118.23.96.4 | ২১ জুলাই ২০১২ ২২:৪৬566508
  • ওনার লেখা থেকে কটা লাইন তুলে দিতে ইচ্ছে করছে।

    হয়তো সহজ কাছে আসা
    তাই কাছে আসি।
    হয়তো সহজ ভালবাসা
    তাই ভালবাসি
    যখন সহজে কিছু পাই,
    ভাবি হয়তো সহজ ছিল পাওয়া
    যখন হারাই, ভাবি হায়
    কেমন সহজে চলে যাওয়া
    শিখেছে মানুষ
  • nina | 78.34.167.250 | ২২ জুলাই ২০১২ ০০:১৬566509
  • ভারি সুন্দর অক্ষরগুলো সাজিয়ে দিলি , শিবু!
    বিষাদ-মধুর!!!
  • sch | 125.242.213.146 | ২২ জুলাই ২০১২ ০১:৪৮566510
  • পাই কে বিশাল ক। সত্যি ভীষণ ভালো লেখা
  • পাই | 82.83.90.116 | ২২ জুলাই ২০১২ ১৩:৪১566511
  • একটা সাক্ষাতকার পড়ছিলাম।

    "প্রঃ মৃত্যুর পরবর্তী জগত্ নিয়ে আপনার নিজের চিন্তাভাবনা কী?

    হুমায়ূন আহমেদঃ এই বিষয়ে আমার প্রবল একটা আগ্রহ সব সময় ছিল। একবার আমি চেষ্টা করলাম প্রার্থনা করব। প্রতিদিন একটা সময়ে বসি। পৃথিবী থেকে বিদায়মুহূর্তটা কেমন হবে, এটা জানা যায় কি না চেষ্টা করি। দিনের পর দিন এটা চলল। তখন আমি একটা স্বপ্ন দেখলাম। স্বপ্ন আমাকে দেখানো হলো। অথবা আরেকটা ব্যাপার হতে পারে, দিনের পর দিন একটা ব্যাপার চিন্তা করার ফলে আমার মস্তিষ্ক সেটা তৈরি করল। অনেক বড় বিজ্ঞানীর বেলায়ও এটা হয়েছে।
    আমি কী স্বপ্নে দেখেছি সেটা বলি—
    বিশাল একটা হাওর। হাওরের মধ্যে পানি, পানি আর পানি। কলাগাছের মতো একটা জিনিস ধরে আমি ভাসছি। পানি অল্প ঠান্ডা। কলাগাছের মতো জিনিসটা মনে হচ্ছে একটা যান। সেটা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। কিছুদূর গিয়ে মনে হলো—মাই গড! এ তো আনন্দের পৃথিবী ছেড়ে আমি চলে যাচ্ছি! সঙ্গে সঙ্গে যাত্রা বন্ধ হলো। আবার ফিরে এলাম। আমার এই বাড়িঘর—সব আগের মতো। আমি দেখলাম। তখন আমার মনে হলো—আর কী? এবার যাই। আমার যাত্রা আবার শুরু হলো। অনেক দূর গিয়ে আবার মনে হলো—ও মাই গড! সব ফেলে আমি কোথায় যাচ্ছি! আবার ফিরে এলাম। তারপর আবার মনে হলো—এই তো সব। আর কী? এরপর যানটা একটা অকল্পনীয় গতিতে ছুটতে শুরু করল। কোন দিকে যাচ্ছি, কিছুই বুঝতে পারছি না। দূরে ছোট্ট একটা আলো।"
  • Spark/Qy | 161.141.84.239 | ২৩ জুলাই ২০১২ ০০:২৮566512
  • হুময়ুন আহ্মেদের লেখ প্রথম পড়ি "দেশ" এর এক পূজাসংখ্যায়, তখনো লেখকএর নাম দেখার অভ্যাস তৈরী হয় নি, কিন্তু লেখাটা পড়তে পড়তে কেমন ভালো লেগে গেলো, একেবারে অন্যরকম ব্যাপার। হিমালয় বলে এক চরিত্র যার বাবা তাকে মহাপুরুষ তৈরী করবেন বলে নিজে নিজেই শিক্ষা দিতেন, রীতিমতন বড় বড় খাতায় নিয়মাবলি ইত্যাদি লিখে। তো সেই হিমালয় বা হিমুকে নিয়ে অদ্ভুত গল্প, জঙ্গলে জ্যোস্না দেখার গল্প-- এ একে অন্য জগৎ, লেখার স্টাইলেও অন্য ব্যাপার। খুব ভালো লাগলো কিন্তু নাম মনে রইলো না, কারণ এই লেখকের লেখা আর কখনো পড়িনি। পরে দুনিয়া বদলালো, অনলাইন জগত এলো, সেখানে কনফুসিয়াসের সাথে দেখা, সে হিমালয়ের গল্প শুনে বললো , "হুমায়ুন আহমেদের নাম শোনো নি দিদি? ওনার হিমু চরিত্র নিয়ে তো হাজার হাজার ছেলে পাগল! " তারপরে সে আমাকে পাঠালো হু আ এর গল্প "জলিল সাহেবের পিটিশন"। খুব ভালো গল্প। মন টেনে ধরলো, অনলাইন জগতের আশীর্বাদে একে একে ওনার ভালো ভালো লেখা গুলো নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, অচিনপুর, সবাই গেছে বনে এসব পড়লাম কিন্ছু কিছু সাই ফাই পড়লাম আর অজস্র হিমু কাহিনি। ক্রমে ওনার বানানো সিনেমাগুলো ও দেখলাম।
    তারপরে ই শক খেলাম ওনার ব্যক্তিগত জীবনের কথা শুনে, জানি কবি বা লেখককে তার ব্যক্তিগত জীবন দিয়ে বিচার করতে নেই, কিন্তু আজও আমি আর "আজ রবিবার" সিনেমাটা দেখতে পারিনা, তিতলি আর কঙ্কাকে দেখলে ভিতরটা কেমন করে ওঠে, দুটি বোন, এই চরিত্র দুটি যারা করেছিলেন একইঅ বয়সী, খেলার সাথী, আজো তারা দুজনেই আছেন, অথচ কী ভয়ংকর তফাৎ হয়ে গেছে।
    হু আ য়ের পরবর্তীকালের লেখাগুলো কেমন জানি একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি মনে হয়েছে, সেই ম্যাজিক আর পাই নি, বাদশাহ নামদার, জোছনা ও জননীর গল্প, মধ্যাহ্ন---অনেক আশা নিয়ে বসলেও প্রত্যাশা পূরণ হয় নি, কেমন যেন ফরমায়েশী লেখা মনে হয়েছে। আরো অজস্র সব প্রেমের গপ্পো, টুনটুনি গপ্পো মনে হয়েছে। সেই "নন্দিত নরকে" তে যে অদ্ভুত একটা অনুচ্চ স্বরে প্রতিদিনের দুনিয়ার মধ্য থেকেই কোমল আর অনুভবময় স্বপ্নজগৎ এসে দাঁড়িয়েছিলো, তার আর তুলনা কোথাও পাই নি।
    যে সৃষ্টি পরম, সব ছাপিয়ে থেকে যায় সেই সৃষ্টি, নশ্বর মরমানবের ব্যক্তিগত জীবন তার সব আলো অন্ধকার ভুল ঠিক সব নিয়ে মিলিয়ে যায়। এই টুকুই সান্ত্বনা আমাদের।
  • সাগ্নিক | 140.203.154.46 | ২৩ জুলাই ২০১২ ০৩:৩৪566513
  • হুমায়ুন আহমেদ কে নিয়ে কি অসাধারণ সব লেখা হচ্ছে এখানে। গুরুচন্ডালির হুমায়ুন স্মরণ অবিস্মরণীয় হয়ে থাকলো। বড় লেখা গুলোকে একসাথে করে ছাপানো যায়না কাগুজে গুরুতে ? আমি জানি আরেকজন বড় ভক্ত আছে এখানে হুমায়ুন আহমেদের.।নাম নিশান চাটুজ্যে। পরীক্ষা টরীক্ষা আছে, শেষ হয়ে গেলেই লিখবে আশা করা যায়।আশা করা যায় আরো অনেকেই লিখবেন।
  • সুকি | 71.6.243.104 | ২৩ জুলাই ২০১২ ০৬:৩৫566514
  • গত দশ বছরে প্রকাশিত হুমায়ূণ আহমেদের লেখা প্রায় সবই পড়েছি - অনেক সময় আপ্লুত হয়েছি, অবাক হয়েছি, ভালো লাগার রেশ নিয়ে বসে থাকেছি বেশ কিছু সময়, সেই সঙ্গে আবার অনেক সময় মনেও হয়েছে যে বেশ কিছু লেখা ফরমায়েশী, পুনরাবৃত্তিতে ভরা। কিন্তু সেই এখাগুলি বাদ দিয়েও যা থেকে যায় তাতে করে সমকালীন বাঙলা সাহিত্যে তিনি আমার প্রিয়তম লেখক।
    নিজে বিঞ্জনের ছাত্র হবার জন্য এবং সঘোষিত আঁতেল টাইপ হবার কারণে অনেক বাঙলা লেখকের লেখা নাক উঁচু মনোভাব নিয়ে পড়ার অভ্যাস হয়ে গেছে। হুমায়ূণ আহমেদের লেখার কাছাকাছি এসে মনে হত - বাঃ, ভদ্রলোকের এলেম আছে। বড় বেশী কাছের মনে হত। ভনিতা নেই, লেখার ভিতর দিয়ে পাণ্ডিত্য ফলানোর তাগিদ নেই, কারো কাছে নিজেকে প্রমানিত করার ইঁদুর দৌড় নেই, তাঁর লেখা আমার মনের কাছে এসে গেছে কোন ফাঁকে।
    দেশে থাকা কালীন তাঁর লেখা বই বেশী সংগ্রহ করতে পারতাম না। কিন্তু তার পর বিলাতে পড়তে গিয়ে সেখানকার শহরের পাবলিক লাইব্রেরীতে হুমায়ূন আহমেদের প্রায় সব বই-ই পেতে শুরু করি। কিছু বই আমাকে বাঙলাদেশী বন্ধুরা বাড়ি গেলে এনে দেয়। আমি বিলাতে এক শহরের লাইব্রেরীয়ানের সাথে দেখা করে হুমায়ূন আহমেদের আরো বই আনার অনুরোধ করি। তিনি আমাকে বলেন তালিকা করে দাও, পরের ফাণ্ডিং থেকে কেনার চেষ্টা করা যাবে। আমাকে অবাক করে দিয়ে কিছুদিন পর দেখি সেই সব বইয়ে লাইব্রেরীর থাকগুলো ভরে উঠেছিল।
  • kc | 188.61.96.29 | ২৩ জুলাই ২০১২ ২০:৫৭566516
  • স্যার, এত তাড়াতাড়ি ঘুম যাওনের কি খুবই দরকার ছিল? এবার বাংলাদেশে গেলে নজরুলের সঙ্গে আপনাকেও দেখে আসব। মৃত্যুই পারে আপনাদের সহজলভ্য করে দিতে। ঘুমান স্যার, শান্তিতেই ঘুমান।



    <
  • kc | 188.61.96.29 | ২৩ জুলাই ২০১২ ২০:৫৯566517
  • স্যার, এত তাড়াতাড়ি ঘুম যাওনের কি খুবই দরকার ছিল? এবার বাংলাদেশে গেলে নজরুলের সঙ্গে আপনাকেও দেখে আসব। মৃত্যুই পারে আপনাদের সহজলভ্য করে দিতে। ঘুমান স্যার, শান্তিতেই ঘুমান।



  • | 127.194.97.169 | ২৩ জুলাই ২০১২ ২১:১০566519
  • ফারুক ওয়াসিফের কলমেঃ
    হুমায়ূন আহমেদ: মৃদু মানুষের ঈশ্বর

    একাত্তরের পরের জঙ্গম সময়ে ঠাণ্ডা নিরুচ্চার বেদনার ধাক্কা নিয়ে এলেন হুমায়ূন আহমেদ। কোথায় পেলেন এই গল্প? এই গল্পের কোথাও বোঝার উপায় নাই, দেশ-ভূগোল-মন থ্যাঁতলানো একটা যুদ্ধসময় পার করে করেও ত্বরাতে পারছে না নতুন দেশটা। এরকম সময়ে লোকে মায়াকভস্কি চায়, গোর্কি-নেরুদা-নাজিম হিকমতকে চায়। অথচ কিনা এলেন এক সামাজিক কথাকার_ বাংলাদেশি মুসলিম শরৎচন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের অল্প কিছু পরেই একাত্তরের সাতকোটি মানুষের সাতকোটি গল্প হঠাৎ মুখ বুঁজে ফেলল। সেসময়ে এক সামান্য পরিবারের তৎসামান্য আলেখ্যে মনোযোগ কার? কেন?

    সংগ্রামের উত্তাপ তখনো শুকায়নি। জাসদ-সর্বহারা-রক্ষীবাহিনীর যুগ। দুঃশাসন-নৈরাজ্য-অনাহারের দিন। সেটাও একরকম নন্দিত নরক। কিন্তু হুমায়ুনের সেই নরকে কোনো উত্তাপ নেই। ঠাণ্ডা-স্যাঁতসেঁতে দিশাহীন এক পরিবেশ। মৃদু মানুষদের স্বপ্নহীনতা দিয়েই তাঁর শুরু। ছোটো ছোটো কেরানিপ্রতিম স্বপ্ন তারা দেখে বটে, সেও স্বপ্নহীনতার শঙ্খনীল কারাগারকে ভালবাসবার জন্যই। তারা ইতিহাস গড়বে না। তারা কেবল একটু ভাল করে জীবনের আস্বাদন চায়, হঠাৎ কোনোদিন সামান্য কোনো আলোড়ন পেলে উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে চায়। কিন্তু দিনশেষে তারা অতি সাধারণ। অসাধারণ কিছুই ঘটে না তাদের জীবনে, মামুলি খুটখাটে ভরা তাদের কর্মকাণ্ড। সব আহ্লাদ সব সুখসাধ বিসর্জনে দিয়ে শান্ত মনে পরের দিনটি শুরু করার অধ্যাবসায়ে অশেষ নিষ্ঠা তাদের। শেষাবধি তারা পারিবারিক-সাংসারিক-অযান্ত্রিক। তারা সীমা ডিঙায় না, বিদ্রোহ করে না। নিজের ভেতরের দেব ও দানবকে অনায়াসেই নিস্তেজ করে রাখতে তারা পারঙ্গম।

    সারা জীবন এইসব অযান্ত্রিক মৃদু মানুষদের নিস্তেজ জীবনের বিস্তারিত দেখিয়ে যেতে যেতে তাদের ঈশ্বর হয়ে উঠেছেন হুমায়ূন আহমেদ। এইসব মানুষেরা জানে, তাঁদের ঈশ্বর তাঁদের স্বর্গে বা নরকে কোথাও পাঠাবেন না- এই পার্থিবতাতেই তিনি তাঁদের রাখবেন এবং ভালবাসবেন। সেই ঈশ্বর তাদের একের পর এক আয়না যুগিয়ে গেছেন, সেই আয়না সামান্য মায়াবী অধিকটা দুনিয়াবি। মায়ার এই মিশেলের জন্যই আয়না তাদের আত্মদহনে ঠেলে না। তাদের চেতনের আকুতি, অচেতনের বিকার এই আয়নার শুশ্রুষা পায়। এইভাবে তিনি এবং তাঁর চরিত্ররা একই মানস-আবহের মধ্যে বেড়ে উঠতে থাকেন। তাঁর সাহিত্যে আশির দশকের ঢাকাই মধ্যবিত্তের বিকাশ-অবিকাশের আলেখ্য সংরক্ষিত হয়ে আছে। আশির দশকে এই মধ্যবিত্ত বড় স্বপ্ন হারিয়ে ফেলেছে। ঘর-সংসার-চাকুরি-প্রেম এবং হঠাৎ গরিমার মধ্যে নিজেকে দেখবার সাধ ছাড়া তাদের আর কিছু নেই। এদের কথা পশ্চিমবঙ্গের শরৎ-নিমাই-শংকর-সুনীল-শীর্ষেন্দুরা কোনোদিন বলেননি। মাস্টার আর্টিষ্ট কথাকারেরা চিরটাকাল এদের শ্লেষভরা রসকষে উপেক্ষা করে সময়ের প্রবাহ খুঁজেছেন আরো তলার মানুষের জীবনে। অথচ এরা আছে, একটু একটু করে জীবন গোছাচ্ছে, চারপাশের সমাজ-প্রকৃতির মধ্যে আরো ঘন করে লেপটে থাকতে চাচ্ছে। এই বিরাট মধ্যবিত্ত সমাজের সাংসারিক আর অলীক আকাংখার বিশ্বাসী জীবনীকার তিনি। চরিত্রদের থেকে নিজেকে বেশি বড় করে দেখেননি তিনি, তাদের থেকে বেশি দূরেও যাননি।

    এই কেরানী মধ্যবিত্তের মনেই তো হিমুর মতো বাঁধনছেঁড়া দীনতামুক্ত তরুণের প্রতি আসক্তি জন্মে। নৈতিকতার দেহবন্ধনী আর অসামর্থ্যের শাঁসানিতে আটক বাসনা ও বিকারের নিদান পাবার মিসির আলীকে দরকার হয়। হিমুর অ-যুক্তির উচ্ছ্বাস আর মিসির আলীর যুক্তির স্থিরশীতলতা- এই দুই প্রাবল্য মধ্যবিত্তের সিউডো-স্পিরিচুয়ালিটির ফল; এই ফলে তার আবার নিজেরই আসক্তি।

    ষাটের মধ্যবিত্তের তেমন আত্মিক ক্রাইসিসের দেখা পাওয়া যায় না সেসময়ের উপন্যাসে। সবই তখন জাতীয় সমাজের মধ্যে ব্যক্তিগত ও সামষ্ঠিক লক্ষ্য খুঁজে পাচ্ছে। কিছু অস্তিত্ববাদী নড়াচড়া কারো কারো মধ্যে দেখা দিলেও তা ইউরোপীয় শিল্পসাহিত্য উপভোগ কিংবা তদানুযায়ী জীবনযাপনের পার্শ্বফল। আর তখনো তাদের গ্রাম আছে, সমাজ আছে, ঐতিহ্য আছে। কিন্তু যুদ্ধ পেরুনো সমাজ এক ধাক্কায় সাবালক হয়ে মাটি-ভবন কামড়ে থাকবার উপায় খুঁজতে হয়রান। গ্রাম দূরে চলে গেছে, পরিবারের বাঁধন আলগা হচ্ছে, সংস্কৃতির রস পানসে লাগছে। আশির দশকে এসে এই নগরজীবন অ্যালিয়েনেশনের দেখা পায়। বড় কোনো প্রেরণায় এই অ্যালিয়েনেশনের ঘের কাটানো সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। বিশেষ করে উঠতি তরুণ-তরুণীর মনের তৃষ্ণা মেটাবার কিছু ছিল না। হুমায়ুনের সামাজিক আখ্যানের ভেতরে এই নাগরিক চাপা-হাহাকারের উদযাপন হয় না। তাই হিমু আর মিসির আলী তাদের ভেতরের ফাপর আর গুমরের মানবিক বিহিতের দায়িত্ব নেয়। বাদবাকিটা অসম্ভব প্রতিভাধর এক রসরাজের রসের খেলা, ভাষা আর বাক্যের লীলা।

    কিন্তু কী আশ্চর্য, তাঁর চরিত্ররা বেশি ভাবে না। তাদের নানারকম ইচ্ছা হয়, খামখেয়াল হয়, আর তারা সেসব করে ফেলে কিংবা করতে পারে না। চরিত্রগুলো বাড়েও না, কেবল কথা বলে আর কাজ করে। এদের মনের তলায় অন্য মন যেন নেই, তারা একমনা একটানা মৃদু মানুষের মৃদু জীবন কাটিয়ে দেয়।

    এরই মধ্যে নব্বই সাল আসে। সত্তরের ধুঁকতে থাকা অনিশ্চয়তা, আশির সামলে নিয়ে গোছগাছে মন দেওয়ার পর নব্বইয়ে সে মুক্ত হতে চায়। যে সেনাশাসনের ধাঁচার মধ্যে সাবেকি জীবনধারা, অন্তর্মূখী সময়, বাধো বাধো নাগরিকতা একধরনের স্থিতির মধ্যে ছিল; বিশ্বায়িত গণতন্ত্র আর মুক্তবাজারের যুগল ডানায় এবার তা উড়তে শুরু করে। বহিরাগত বাসনা আর ভেতরগত তাড়নার তোড়ে পুরনো জগত, পুরনো ঘরগেরস্থালী, পুরনো দেহমন এত সাততাড়াতাড়ি বদলাতে শুরু করে, হুমায়ুনীয় ভাবালুতা এখানে আর ততটা থৈ পায় না। মৃদু মানুষদের অনেকেই প্রবল হওয়া শুরু করে, অনেকে তাল সামলাতে না পেরে ভাসতে থাকে, তরুণদের সামনে আসে নতুন উত্তেজনা। কেনাকাটার হাত খোলা, মেলামেশায় শরীরখোলা, যোগাযোগে অজড়িত থাকার এই নতুন পরিবেশে হুমায়ূনের আনিস, সাবেত, পরী, নীলারা এক পাশে সরে যায় তাদের ইনোসেন্সসহ। তিনি তখন আরো পেছনে তাকাতে শুরু করেন, আরো আগের গল্প বনুতে থাকেন। চক্র পূর্ণ হয়, মৃদু মানুষের ঈশ্বরের পতন শুরু হয়।

    অবশেষে একদিন মৃত্যু আসে। আর মধ্যবিত্ত তার হারানো মন আর সময়ের স্মৃতিপুঞ্জসমেত হুমায়ূনকে কবর দিতে যায়। ফিরে আসার সময় তাদের খেয়াল হয়, তাদের প্রথম যৌবন থেকে প্রতিটি যৌবনাগত যুবক-যুবতী হুমায়ূনি জ্যোছনার কুহক-ধরায় ধরা ছিল। সেই সময় সেইসব মানুষ আর সেইসব কল্পনা অবসিত হলে পরে, হুমায়ূনের সাহিত্যিক জীবনীর আজ প্রথম দিন। মহাকাল হুমায়ূনের সাহিত্যে দাঁত বসানো শুরু করে দিয়েছে। দেখা যাক...

    ২৩-৭-১২
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন