এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • হুমায়ুন আহমেদ

    পাই
    অন্যান্য | ২০ জুলাই ২০১২ | ২৫৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • তাতিন | 127.197.69.211 | ২৩ জুলাই ২০১২ ২২:৪১566520
  • হুমায়ুনের লেখাগুলোর মধ্যে দিয়ে যে চরিত্রটা ফুটে ওঠে তার সংগে মেয়ের বয়সী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করা মানুষটাকে গুলিয়ে ফেলতে ভালো লাগেনা
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৪ জুলাই ২০১২ ০২:৩৮566521
  • মেয়ের বয়্সী মেয়েকে বিয়ে করা নিয়ে আবার কি সমস্যা হল? কে কার প্রেমে পড়বে এ কি ফর্মূলা মেনে চলে নাকি?
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৪ জুলাই ২০১২ ০২:৪৬566522
  • তাতিন বোধহয় এখানে শয়তানের উকিলের ভূমিকায়।
  • Qy | 161.141.84.239 | ২৪ জুলাই ২০১২ ০৬:১০566523
  • কিন্তু কোথাও তো একটা সীমা আছেই। নিজের মেয়ের খেলার সাথী তো কন্যা না হলেও কন্যাতুল্যা।
    চারপাশের অজস্র সম্পর্কের নেটোয়ার্কের মধ্যে প্রত্যেক ইন্ভিজুয়াল থাকে, অজস্র মানুষের মন হৃদয় সম্মান সব কিছু ভেঙে চুরে দেওয়া মনে হয় যায় না শুধুমাত্র কাঁচা কিছু প্রবৃত্তির জন্য। সংযম কথাটা তবে আছে কেন?
  • aranya | 78.38.243.161 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১০:০১566524
  • কোয়াই, আপনার পয়েন্ট-টা বুঝেছি। মুস্কিল হচ্ছে যে কোনটা শুধুমাত্র কাঁচা প্রবৃত্তি আর কোনটা সো কলড্‌ মহান, পবিত্র প্রেম - তার বিচার কে করবে?
    হু আ আর শাওন তাদের দাম্পত্য জীবনে হয়ত সুখী ছিলেন হু আ-র মৃত্যুদিন পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে তাদের সম্পর্ক-টা অন্তত সার্থক হয়েছে।
    হ্যাঁ, গুলতেকিন (প্রথম বউ ) আর তার সন্তান-দের জন্য, বিশেষ করে নিজের মেয়ের জন্য ব্যাপারটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক, না ঘটলেই ভাল হত। ডিভোর্স একটা কষ্টের ব্যাপার, সন্তান সহ ডিভোর্স আরও অনেক বেশী কষ্টের, যন্ত্রণার - সকলের জন্যেই।
    হু আ-কে নিজেকেও হয়ত এর জন্য অনেক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
    দামী প্রশ্ন-টা হল যে একটা সম্পর্কের মধ্যে কারও থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে না, কষ্ট হচ্ছে - সেক্ষেত্রে স্ত্রী, সন্তানদের জন্য সে কি স্বার্থত্যাগ করে সেই সম্পর্কের মধ্যেই থেকে যাবে এবং সারা জীবন কষ্ট পেয়ে যাবে ?
    এখানে বোধহয় ঠিক-বেঠিক বলে কিছু হয় না। একান্তই ইন্ডিভিজুয়াল চয়েস। আর এই পয়েন্টে এসে ব্যক্তিমানুষ যে পথ-ই বেছে নিক না কেন যন্ত্রণা সে পাবেই, নিজে কষ্ট পাবে, অন্যদের, প্রিয়জনদের কষ্ট দেবে, এই তার ভবিতব্য।
  • তাতিন | 132.252.251.244 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১১:৩৬566525
  • শাওনকে বিয়ে না করলে শুধু নিজেই কষ্ট পেত, এটায় নিজেও পেল, বাকিরাও পেল
  • কল্লোল | 230.226.209.2 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১২:২১566527
  • আর, শাওন? সে কষ্ট পেতো না?
  • kc | 204.126.37.78 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১২:২৬566528
  • হুমায়ুন আহমেদের মরদেহ দাফনের জন্য নুহাশ পল্লির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সঙ্গে আছেন জাফর ইকবাল, শাওন, এবং পরিবারের অনেকেই।
  • তাতিন | 132.252.251.244 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১২:৩০566530
  • ওইরকম কষ্টকে কষ্ট হিসেবে পাত্তা দেওয়ার মানে নেই।
    হাজার হাজার লোক সেলিব্রিটিদের প্রেমে পড়ে--
  • kumu | 132.160.159.184 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১৪:৩০566531
  • ভাল লাগল সকলের লেখা,বিশেষ করে ব্যাং এর।

    কেউ লিলুয়া বাতাস পড়েছে?
  • নেতাই | 131.241.98.225 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১৪:৪২566532
  • আমি পড়েছি
    আমার সবচেয়ে ভালো লাগে তেঁতুল বনে জোছনা
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৪ জুলাই ২০১২ ১৯:৫৯566533
  • বলতে ভুলেছিলাম, কুমু মনে করিয়ে দিলেন - ব্যং-এর পোস্ট টা আমারও খুব ভাল লেগেছে, স্বতঃস্ফূর্ত, সুন্দর লেখা।
  • | 24.99.173.91 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:০৫566534
  • এই ফারুক ওয়াসিফ লোকটা আদৌ শংকর-সুনীল-শীর্ষেন্দুর একেবারে বিখ্যাত এক আধটা লেখা ছাড়া আর তো কিছু পড়েছে বলে মনেই হচ্ছে না।
    শরৎচন্দ্রের যুগটাই আলাদ, সামাজিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নিমাই আমি নিজে খুব একটা পড়ি নি তাই বলতে পারলাম না।
  • r | 127.194.1.72 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:২২566535
  • আমার সবচেয়ে ভালো লাগে ওনার সাইন্স ফিকশানগুলো
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:২৪566536
  • হুমায়ুন আহমেদের প্রয়ান নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যে একটি শূন্যতা তৈরি করবে। নয়ের দশকের শুরুতে সাপ্তাহিক প্রিয় প্রজন্মে কথা সাহিত্যিক আহমদ ছফার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। মনে আছে, সেখানে তিনি বলেছিলেন:

    "জনপ্রিয়তার দিক থেকে হুমায়ুন আহমেদ শরৎচন্দ্র চট্ট্রপাধ্যায়কে ছাড়িয়ে গেছেন। তবে মেরিটের দিক থেকে তিনি নিমাই ভট্টাচার্যের সমান। হি রাইটস অনলি ফর বাজার।"

    এখন হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ও শরৎ বাবুর তুলনা টেনেছেন।

    http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=27504
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:৩৩566537
  • 'মেরিটের দিক থেকে নিমাই ভট্টাচার্যের সমান' - ইন্টারেস্টিং অবসার্ভেশন।
    শামসুর রহমানের লেখায় পড়েছিলাম, 'হু আ-র কিছু ছোট গল্প বিশ্ব সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ ছোট গল্প সমূহের মধ্যে স্থান পাওয়ার যোগ্য' - রমাপদ চৌধুরীর মন্তব্য।
    আহমদ ছফা আর রমাপদ চৌধুরীর মূল্যায়নে কিছু পার্থক্য দেখা যাচ্ছে :-) ।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:৪৪566538
  • অরণ্য, ছফা-পর্যবেক্ষণের শেষ কথনটিও লক্ষ্যনীয়- "হি রাইটস অনলি ফর বাজার।" :-)
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:৫১566539
  • বিপ্লব, 'অনলি' কথাটায় আমার আপত্তি আছে, 'মেইনলি' চলতে পারে হয়ত :-)
  • শ্রী সদা | 127.194.195.103 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:৫৪566541
  • বাংলায় সার্থক সায়েন্স ফিকশন এবং সাইকো থ্রিলারের লেখক বলতে যাঁর কথা প্রথম মনে আসে তিনি হুমায়ুন আহমেদ।
    তবে সত্যের খাতিরে বলতেই হয় যে রিসেন্টলি প্রচুর ট্র্যাশ লিখছিলেন ঃ) এমনকি হিমু ও প্রেডিক্টেবল হয়ে যাচ্ছিল।
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২০:৫৮566542
  • জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন আমার হু আ-র লেখার চেয়েও ভাল লাগে।
  • Ki Jani | 127.201.114.213 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২১:৫২566543
  • বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র ড. হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে মিনিমাম কোন আক্ষেপ ছিল না। বরং মনে হয়েছে মৃত্যুই যেন তাঁর কাছে ছিল খুব সহজ-সরল এবং কাঙ্খিত বাস্তবতার শেষ গন্তব্য। সিলেট অঞ্চলের অখ্যাত একজন লোকশিল্পী গিয়াস উদ্দিনের লেখা 'মরিলে কান্দিস না আমার দায়' গানটি খুবই প্রিয় ছিল হুমায়ূন আহমেদের। নিউ ইয়র্কে সর্বশেষ পারিবারিক আড্ডায় দ্বিতীয় স্ত্রী শাওনকে গানটি গাইতে অনুরোধ করেন তিনি। আড্ডার বিভিন্ন পর্যায়ের কথোপকথন ও স্ত্রী শাওনের স্বকণ্ঠের এই গানের মাধ্যমেই প্রমাণ হয় মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের প্রতি মরহুম হুমায়ূন আহমেদের আস্থা ও অগাধ বিশ্বাস কতটা প্রবল ছিল। হুমায়ূণ আহমেদের জীবনের সর্বশেষ ধারনকৃত এই ভিডিওটি অনেকের অনেক মিথ্যা সমালোচনার জবাব দিচ্ছে............ ভিডিওটি দেখতে এবং শেয়ার করতে ভুল করবেন না প্লীজ। : Farhana Flora

    গানের কথা
    --------
    মরিলে কান্দিস না আমার দায়।।
    রে যাদু ধন ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়
    মরিলে কান্দিস না আমার দায়
    সুরা ইয়াসীন পাঠ করিও
    বসিয়া কাছায়
    যাইবার কালে বাঁচি যেন
    শয়তানের ধোঁকায়
    রে যাদুধন……মরিলে কান্দিস না আমার দায়
    বুক বান্ধিয়া কাছে বইসা গোছল করাইবা
    কান্দনের বদলে মুখে কলমা পড়িবা
    রে যাদু ধন …..
    ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়!
    কাফন পিন্দাইয়া আতর গোলাপ দিয়া গায়
    তেলাওয়াতের ধ্বনি যেন ।
    ঘরে শোনা যায়
    রে যাদু ধন ……মরিলে কান্দিস না আমার দায়!
    কাফন পড়িয়া যদি কান্দো আমার দায়
    মসজিদে বসিয়া কাইন্দো আল্লা’রই দরগায়
    রে যাদু ধন ……
    ….মরিলে কান্দিস না আমার দায়

    Humayun Ahmed - Last Recorded Video in New York

    Last Recorded Video of Humayun Ahmed in New York with Shawon.
  • Ki Jani | 127.201.114.213 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২১:৫৩566544
  • pi | 138.231.237.7 | ২৪ জুলাই ২০১২ ২১:৫৭566545
  • সকালেই গানটা শুনছিলাম। অনেকক্ষণ ধরে শুনেই গেলাম। শাওন কী চমৎকার গান !
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৫ জুলাই ২০১২ ০০:৩২566546
  • মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় হু আ-র লেখাগুলি আমায় অনেক বেশি স্পর্শ করে, হিমু বা মিসির আলীর চেয়ে , 'অনিল বাগচীর একদিন'-এর কথা লিখেছিলাম, আর একটি অতিপ্রিয় উপন্যাস 'আগুনের পরশমণি'।
    কি মায়ায়, মমতায় মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি এঁকেছেন এখানে - কতবার যে পড়েছি এটা।
  • শঙ্খ | 169.53.174.141 | ২৫ জুলাই ২০১২ ০১:১৭566547
  • কোথাও কেউ নেই।

    বাকের ভাই কে ভোলা যায় না।
  • aranya | 78.38.243.161 | ২৫ জুলাই ২০১২ ০৯:০৫566548
  • আর একটি অসাধারণ, অলোকসামান্য ছোট গল্প
    'জলিল সাহেবের পিটিশন' - এই গল্পটার জন্য কোন বিশেষণই যথেষ্ট নয়।

    শঙ্খ, 'কোথাও কেউ নেই'-টা শুরু করলাম আবার, আপনার পোস্ট পড়ে :-) ।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 | ২৫ জুলাই ২০১২ ১৮:৩৬566549
  • হুমায়ূন আহমেদর বিপরীত পাঠ।। ফেবুতে জনৈক মশিউল আলমের নোট
    _______________________________________________
    হুমায়ূন আহমেদের বিপুল জনপ্রিয়তার সঙ্গে সাহিত্যের সম্পর্ক কী?
    by Mashiul Alam on Tuesday, July 24, 2012 at 7:03pm ·

    হুমায়ূন আহমেদ যেসব গল্প-উপন্যাস লিখেছেন, সেসবের মধ্যে রাজনৈতিক বা আর্থ-সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টি বা উপাদান খুঁজতে যাওয়া সম্ভবত অর্থহীন হবে। কারণ এই লেখকের তেমন কোনো দৃষ্টি ছিল না। সত্তর দশকের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক ঝঞ্ঝার কথা বাদ দিলাম, হুমায়ূন উত্থান যে সময়ে (১৯৮০ সাল পর্যন্ত হমায়ূনের লেখা পড়েছেন খুবই কম সংখ্যক মানুষ, ১৯৮১ সালে যখন তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান, তখন তার বইয়ের সংখ্যা সাকল্যে চার), সেই পুরো আশির দশকের কথাই ভেবে দেখুন! কী একটা সময় গেছে! ১৯৮২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশের ওপর চড়াও হলের জবরদস্ত সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। কিন্তু তঁার জবরদসি্ত, প্রায় শুরু থেকেই প্রবল বাধার মুখোমুখি হলো। কেউ তঁাকে মেনে নিল না। কঠোর সামরিক শাসন চলল কয়েক মাস, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষদ্ধি। কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞাও মানুষ মানেনি, বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিদিন ভঙ্গ করেছে সামরিক শাসনের বিধান। হাজার হাজার ছেলেকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন এরশাদ। এক বছরের মাথায়, ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারি মার্চ থেকে শুরু হয়ে গেল সামরিক স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলন। তার পরের কয়েকটি বছর, একদম নব্বই সাল পর্যন্ত যারা বাংলাদেশে বাস করেছে, চোখ-কান-মাথা আছে, তারা জানে, কী সময় আমরা পার করে এসেছি।

    এই সময়টাই, ১৯৮১ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদ পরিণত হয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখকে। কিন্তু তাঁর সমস্ত লিখনকর্ম ঘেঁটে দেখলে কোথাও এই বাংলাদেশকে আপনি পাবেন না। যে মধ্যবিত্তের গল্প তিনি লিখেছেন, সেই মধ্যবিত্ত কোন দেশের, কোন সময়ের মধ্যবিত্ত, নির্ণয় করা যায় না। এই মধ্যবিত্ত যেন স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের সম্পূর্ণ বাইরে ছিল। এটা সত্য নয় যে ওই মধ্যবিত্ত জীবনে সেই সময়ের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অবস্থার অভিঘাত একটুও পড়েনি। মোটেও তা নয়। প্রত্যেকটা জেলা শহর, এমনকি থানা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল রাজনৈতিক আন্দোলনের ঢেউ। হুমায়ূন আহমেদ সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাস করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তখন রাজনৈতিক উত্তাপে টগবগ করে ফুটছে। কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ সেই সময় কী গল্প লিখছেন, কী কাহিনী রচনা করছেন?

    মনে হতে পারে, হুমায়ূন আহমেদকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে এসব কথা বলা হচ্ছে। না, তা নয়। হুমায়ূন আহমেদকে সেভাবে দেখি না। দেখি যে, তাঁর কোনো রাজনৈতিক বোধ ছিল না, তাঁর মন ছিল অ্যা-পলিটিক্যাল। এ কারণে, শেষের দিকে তিনি কিছু ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে যেসব উপন্যাস লেখার চেষ্টা করেছেন, সেগুলো ব্যর্থ হয়েছে। পলিটিক্যাল সেনসিবিলটি ছাড়া ঐতিহাসিক উপন্যাস লেখা সম্ভব নয়। কিন্তু এটা কোনো অপরাধ নয়, এ জন্য কাউকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় না।
    কিন্তু কোনো জাতির মধ্যে কোনো যুগে এমন কোনো বড় শিল্পীর দেখা মেলে না, যিনি তাঁর সময়ে তাঁর জাতির সামনে উপস্থিত সবচেয়ে জ্বলন্ত সমস্যাগুলোর প্রতি দৃকপাত করেন না।

    হুমায়ুন বাস্তববাদী কাহিনীকারও নন, তাঁর কাহিনিতে যে সমাজের দেখা মেলে, সেই সমাজ বাস্তবে বাংলাদেশে কখনো ছিল না, এখনও নেই। সেই সমাজ বাঙালি মধ্যবিত্তের কল্পনার সমাজ। হিমু, মিসির আলী, ইত্যাদি চরিত্র বাস্তবে পাওয়া যাবে না, পাওয়া যাবে মধ্যবিত্তের কল্পনায় । এগুলো মধ্যবিত্তের ইচ্ছাপূরণকারী চরিত্র। আমাদের মধ্যবিত্ত বাস্তবে যে জীবন যাপন করে, হুমায়ূন যদি সেই ছবিই তাঁর পাঠকের সামনে বাস্তবরূপে হাজির করতেন, তাহলে পাঠক তাঁর কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিত, কারণ সেই ছবি সুন্দর নয়। হুমায়ূন জনপ্রিয় হয়েছেন তার উল্টো কাজটি করেছেন বলে।

    কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের এই বিপুল জনপ্রিয়তার সঙ্গে সাহিত্যের সম্পর্ক কী? এই যুগের লেখাপড়া জানা বাঙালি মধ্যবিত্ত যে ভাষায় কথা বলে, প্রায় সেরকম ভাষায় হুমায়ূন কাহিনী লিখে ছাপার অক্ষরে বাজারে ছেড়ে দেখতে পেয়েছেন, লোকে দারুণ পছন্দ করছে। যে কোনোদিন গল্প-উপন্যাসের বই হাতেও নেয় না, সেও পড়ে দারুণ আনন্দ পাচ্ছে (হাসি-কান্নাসহ, মোট প্রাপ্তি)। ব্যাস, হুমায়ূনকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। যাকে বলে দুই হাতে লেখা, তিনি লিখে গেছেন টানা তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। যে বাংলাদেশে কোনও লেখকের বই এক বছরেও এক হাজার কপি বিক্রি হতো না, সেখানে হুমায়ূনের একটা নতুন বই বের হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায় তিরিশ হাজার কপি। বিপুল সংখ্যক ‍"পাঠক" গড়ে উঠল শুধু হুমায়ূন আহমেদের কারণে। কিন্তু এ এমন পাঠক, যার সামনে বাংলা সাহিত্যের সেনা মণিরত্নগুলো হাজির করলে সে মুখব্যাদান করে। এ পাঠক জানে না ভাষার সেৌন্দর্য কী। এ পাঠকের কাছে বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথ, বিভূতিভূষণ, মানিক, ওয়ালিউল্লাহ, অমিয়ভূষণ, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ শামসুল হক, মাহমুদুল হক, বা শহীদুল জহির দুষ্পাচ্য দূরের লেখক। এ পাঠক জীবন-জগৎ নিয়ে গভীর ভাবনার খোরাক চায় না, মানুষের সঙ্গে সমাজের ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে চিন্তা করার উস্কানি তার পছন্দ নয়।
    কোনো দেশে কোনো কালে "সাহিত্যে"র পাঠক কি এরকম হয়?

    না। হুমায়ূন আহমেদ সারাজীবন যে জনপ্রিয় পণ্য উৎপাদন করে গেছেন, তার ১৪ আনাই সাহিত্য নয়। ইংরাজি ভাষায় একে বলা হয় pulp fiction. কিন্তু এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখা মোটেও উচিত নয়। পৃথিবীর সব দেশেই এরকম লেখালেখি আছে; সবচেয়ে সভ্য, সংস্কৃতিবান সমাজগুলোতে আছে সবচেয়ে বেশি। অনুচিত হবে হুমায়ূন আহমেদ যা লেখেননি, তাঁর কাছ থেকে তা প্রত্যশা করে হতাশ হওয়া। তাঁর মধ্যে থেকে একজন চেখভের আবির্ভাব ঘটবে বলে আহমদ ছফা যে প্রত্যাশা করেছিলেন, সেটা ছিল অমূলক। হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সহজাত ক্ষমতাসম্পন্ন একজন tale-teller , এভাবে দেখলেই তাঁর প্রতি সুবিচার করা হয়।
    _____________
    https://t.co/GU1XL7ZI
  • I | 24.99.40.130 | ২৬ জুলাই ২০১২ ০০:১৩566550
  • মশিউল আলমের লেখাটি ভালো লাগলো।
  • a x | 138.249.1.202 | ২৬ জুলাই ২০১২ ০০:৪১566552
  • শাওনের গান আর কোথাও শোনা যাবে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন