এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • siki | 12.50.47.36 | ১৬ আগস্ট ২০১২ ১৪:৪৭570479
  • আমার সুখের দিন আজই সেশ। এক মাস ধরে রোজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা আড়াইটে পর্যন্ত অফিস চলল।

    সামনের সপ্তাহ থেকে ফুল ডে চলবে।
  • bb | 127.216.214.163 | ১৬ আগস্ট ২০১২ ১৫:২৬570480
  • মিলা - আজকাল us এ তে ঐ খানে ফোন করে ওরা জিঞ্জেস করছে একে চেনেন কিনা। অনেক সময়ই স্পনসর চেনে না বা এই সব ঝামেলায় যেতে চায় না। তাই এগুলি সঠিক দেওয়ায় উচিত।
  • maximin | 69.93.208.211 | ১৬ আগস্ট ২০১২ ১৯:৩৯570481
  • সিকি লেখে বড় ভালো।
  • sosen | 125.184.75.230 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ০৯:৫৬570482
  • পরের কিস্তি?
  • Sibu | 218.54.39.183 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ১০:০০570483
  • ফোংএ গুরু পড়া ঝকমারি। টইয়ের নাম পড়লাম হাই ফ্রাই দুবাই। ঃ-(

    বাড়ি ফিরে এই টইটা ভাল করে পড়ব।
  • lcm | 34.4.162.218 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ১১:২৬570484
  • দুবাই-তে নাকি এই বছর দশেক আগেও কোনো রাস্তার নাম বা বাড়ির ঠিকানা ছিল না, অনেকেই নিজের বা বন্ধুবান্ধবদের আপিসের ঠিকানা দিত পোস্টাল মেইলের জন্যে।
  • kumu | 132.160.159.184 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ১৫:৪৪570485
  • সিকি লিখেচে-যেদিন আমার ফ্লাইট বিকেল চাট্টেয়, সেদিন সকাল থেকে গ্রেটার কৈলাসে খালিপেটে মেডিক্যাল ফিটনেস সাট্টিফিটির জন্য হাঁ করে বসে রইলাম। দুবার রক্ত নিল, একবার আরও কী কী সব বাজে জিনিস নিল-তা এই সবের রিপোর্ট চাট্টের ভেতর রেডি হয়ে গেল?
  • siki | 96.98.43.85 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ১৬:২৪570486
  • না, মেডিকাল সাট্টিফিটি তো অ্যারপোটে দেখাতে হয় না। ওটা পরের দিন স্ক্যান করে পাঠিয়েছিল।
  • সিকি | 96.98.43.85 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১২:২৩570487
  • হুশশ করে গাড়ি যখন রাস্তায় পড়ল, তখন দেখলাম চারপাশে কেবলই আখাম্বা উঁচু উঁচু বাড়ি। বিভিন্ন মডেলের, বিভিন্ন ডিজাইনের, বিভিন্ন শেপের। চাদ্দিকে যেখানেই তাকাই, খালি কংক্রিট আর কাঁচের দেওয়াল। কিন্তু তা সত্ত্বেও শহরটা মোটেই খারাপ কিছু লাগছে না। বেশ সুন্দর সাজানো গোছানো একটা শহর। অ্যাস্থেটিক লুক বলতে যা বোঝায়, সেটা পুরোমাত্রায় হাজির দুবাইতে। প্রচুর প্রচুর পয়সা এ দেশে, কিন্তু সে পয়সা শহরটাকে ঠিকভাবে সাজানোর কাজে ব্যয় করেছে এরা। লেটেস্ট টেকনোলজি, লেটেস্ট নির্মাণপদ্ধতি, দুনিয়ার যা কিছু সেরা, তাই নিয়ে এসে একেবারে মরুভূমি আর পারস্য উপসাগরের মাঝে একচিলতে সবুজ এলাকার মধ্যে পুরো আরব্য রজনীর দেশ বানিয়ে ফেলেছে।

    হোটেল, মানে যেখানে আমি এখন আগামী এক দেড় বছর থাকব, সেটা দুবাই শহরের একদম মধ্যিখানে। বর-দুবাই (Bur Dubai) বলে জায়গাটাকে। ঢাউস ঢাউস দুইকামরাওলা বাস চলেছে সামনে দিয়ে, সমস্ত বাস এসি, হটেলের এপাশে ওপাশে দুটি মেট্রো স্টেশন, আর রাস্তাঘাট দোকানপাট রমরম করছে ভারতীয়তে। সামনেই সিগন্যাল পেরোলে অপ্সরা সুপারমার্কেট। এদিক সেদিক ইতিউতি রাজস্থানী, পঞ্জাবী, কেরালিয়ান, মুম্বাইয়া, গুজরাতি বিভিন্ন ঢংয়ের রেস্টুরেন্ট গমগম করছে। আর সেই পরিমাণে ভারতীয় মানুষ। রাস্তাঘাটে বাংলা বা হিন্দিতে কথা বলা মানুষজন একেবারে ভর্তি।

    বাংলা বলতে, বাংলাদেশ। প্রচুর বাংলাদেশী মুসলিম এখানে কাজ করেন। দোকানে হোটেলে শপিং মলে অফিসে। রোজ সকালে আমার রুমে হাউসকিপিং যারা আসে বিছানার চাদর বদলাতে ঘর পরিষ্কার করতে, তারাও বাংলাভাষী, আমার অফিসের সিকিওরিটি যারা বসে গেটের মুখে তারা বাংলাভাষী, অফিসের ভেতর স্টেশনাই চাইতে যাই যার কাছে, তিনিও বাংলাভাষী, রাস্তাঘাটে যখন তখন বাংলাভাষী ট্যাক্সি ড্রাইভার দেখতে পাওয়া তো কোনো ব্যাপার নয়। ভয় করছে এখানে এতদিন থাকার পরে হিন্দিটা না ভুলে যাই।

    যেদিন পৌঁছলাম, সেদিন থেকেই রমজান শুরু। এত তাড়াতাড়ি আসাটা ঠিক হয়ে গেল, যে আলাদা করে দুবাই নিয়ে তেমন পড়াশোনা করে আসা হয় নি। শুধু জানতাম, এই সময়ে নাকি দিনের বেলায় প্রকাশ্যে কিছু খাওয়া বারণ, এমনকি জলও খাওয়া বারণ, খেতে দেখলেই নাকি পুলুশ ধরে।

    তা সত্যি বলতে কী, আমার এক মাস পূর্ণ হল দুবাইতে, আজ পর্যন্ত আমি একটাও পুলিশ দেখি নি। কোত্থাও না। ট্রাফিক পুলিশও নেই। অথচ কী অদ্ভুত নিয়মে সারা শহরের কেউ কোত্থাও নিয়ম ভাঙছে না। জেব্রা ক্রশিং-এর ঠিক আগে গাড়ি থামিয়ে দিচ্ছে ট্রাফিক সিগন্যাল হলুদ হলেই। এমনকি ডানদিকে ফ্রি টার্ন নেবার সময়েও যদি সোজা রাস্তায় গাড়ি আসতে থাকে, তাহলে টার্ন নেওয়া গাড়ি চুপচাপ ইন্ডিকেটর জ্বালিয়ে অপেক্ষা করবে যতক্ষণ না ওদিকের রাস্তা ক্লিয়ার হয়। কেউ হর্ন বাজায় না, কেউ লেন ছেড়ে ওভারটেক করে না, কেউ রাস্তায় গাড়ি আটকে ঝগড়া করে না, কেউ নিয়ম ভাঙে না, সবচেয়ে বড় কথা, রাস্তায় একটাও তোবড়ানো, ডেন্টিং-ওলা গাড়ি দেখলাম না এতদিনেও। প্রতিটা, লিটারালি প্রতিটা গাড়ি দেখলে মনে হয় এইমাত্র শোরুম থেকে বেরিয়ে এসেছে।

    শুনলাম, ট্রাফিক সংক্রান্ত আইন কানুন এখানে সাঙ্ঘাতিক রকমের কড়া। দুবাইয়ের সমস্ত রাস্তা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মনিটর করা হচ্ছে, কোথাও কেউ নিয়ম ভাঙলে তার নিস্তার নেই, বড় অঙ্কের ফাইন। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়াও এখানে বেশ চাপ। তিরিশখানা ক্লাস অ্যাটেন্ড করতে হয়, প্রতিটা ক্লাসের ফি নাকি সত্তর দিরহাম করে, শেষ হলে পরীক্ষা, তাতে পাশ করলে দুহাজার দিরহাম লাগে লাইসেন্স পেতে। আর দুবার কোনো নিয়ম ভাঙলে লাইসেন্স ক্যানসেল, আবার নতুন করে সব ক্লাস করতে হয়।

    এক দিরহাম, ভারতীয় পনেরো টাকার সমান।

    শনিবার পৌঁছেছিলাম। রবিবার থেকেই অফিস। এখানে শুক্র আর শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। রবি থেকে বৃহস্পতি অফিস হয়। তো, অফিস গিয়ে দেখলাম, তেমন কিছু চাপ নয় দুপুরে খাওয়া। সুন্দর বিশাল বড় ক্যাফেটেরিয়া আছে। খাবারের দোকান খোলা থাকে কিন্তু প্রকাশ্যে খাওয়া যায় ন, তবে টেক অ্যাওয়ে নিয়ে যাওয়া যেতেই পারে। ... এইভাবেই একমাস চালালাম, টেক অ্যাওয়ে থেকে খাবার নিয়ে ক্যাফেটেরিয়াতে বসে খেয়ে, কোনো অসুবিধে তো হল না! মুসলমানরা এই মাসে ক্যাফেটেরিয়াতে ঢোকে-ই না।

    প্রথম শুক্রবারেই ঠিক করলাম, অনেক হয়েছে, এইবার একটা নতুন ফোন কিনতে হবে। হোটেলে চব্বিশ ঘণ্টা এসি চলছে, অফিসের গাড়িতে করে যাই সেখানেও এসি, অফিসেও এসি, আমার নোকিয়ার ফোনের স্ক্রিন সর্বক্ষণ হ্যাং করেই থাকছে। বাইরে টেম্পারেচার দিনের বেলায় পঁয়তাল্লিশ ছেচল্লিশ, সন্ধ্যের পরে চল্লিশ একচল্লিশ। ফোন করার থাকলে হোটেল থেকে বেরিয়ে হাতে মোবাইল নিয়ে রাস্তায় খানিকক্ষণ পায়চারি করতে হচ্ছে, তবে ডিসপ্লে আসছে, এইভাবে কি চলে? তা ছাড়া অনেকদিন ধরে একটা স্যামসুং গ্যালাক্সি এস থ্রি-র ওপরে আমার লোভ জমে রয়েছে, হাতে অল্প করে পয়সাকড়িও এসেছে ...

    সুতরাং কিনে ফেললাম একটা এস থ্রি। কী মায়াবী ফোন দাদা, কী বলব। কেবল ওই জিপিএসের ব্যাপারটায় নোকিয়াকে মনে হয় না কেউ কোনও দিন বিট করতে পারবে।

    পরের এপিসোডে বেড়ানোর গল্প।
  • sosen | 111.62.38.4 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১২:৩৬570489
  • মচত্কার !
    শুধু ওই এস থ্রি র ব্যাপারটায় এট্টু সবুজ হয়ে গেলুমনে।
  • lcm | 34.4.162.218 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১২:৩৮570490
  • আর ঐ যে শপিং মলের মধ্যে স্কি করা যায় - ওটা লিখো
  • siki | 96.98.43.85 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১২:৫৫570491
  • লিখব। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্কি করা দেখছিলাম।
  • Fevi | 188.83.80.148 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০১:০৭570492
  • আর দাদা ড্রাইভিং লাইসেন্স !
  • nina | 78.34.167.250 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০১:৩৭570493
  • সিকি as usual পুরো একটাকা!!
    চলুক চলুক--
  • সিকি | 96.98.43.85 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০৪:৩৭570494
  • কী লিখব বুঝে উঠতে পারছি না। ঠিক বেড়াতে তো আসি নি। হোটেলখানা শহরের ঠিক মধ্যিখানে, সেখান থেকে রোজ অফিসের গাড়ি আসে, অফিস নিয়ে যায়, এখন রমজান চলছে বলে রোজ বেলা আড়াইটেয় ছুটি হয়ে যায়, ফিরে এসে আবার হোটেলে। বাইরে এমন হিট ওয়েভ চলে যে বেরনো যায় না প্রায়। বেরোতে গেলেও সন্ধ্যের পরে বেরোতে হয়।

    অফিসে নিজের কাজের জায়গাতেও প্রচুর বাঙালি। সব কলকাতা থেকে এসেছে, বাচ্চা বাচ্চা ছেলেপুলের দল। আলাপ হয়ে গেল মোটামুটি। তাদের হাত ধরেই প্রথম উইকেন্ডে বেরিয়ে পড়লাম কচি করে দুবাই দেখতে। ট্যাক্সি এখানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। চারপাঁচজন মিলে ট্যাক্সি শেয়ার করলে বেশ শস্তাই পড়ে।

    ছিলাম পাঁচজন। সাধারণ ট্যাক্সিতে ধরত না। তাই পরের পর ট্যাক্সিগুলোকে হাত নাড়িয়ে চলে যেতে বলছিলাম। এখানে ট্যাক্সি ডাকতে হয় না, পেডেস্ট্রিয়ান দেখলে ট্যাক্সি এমনিই এসে দাঁড়িয়ে যায়। তো, চার-পাঁচটা ট্যাক্সি চলে যাবার পরে এক ট্যাক্সিওলা মুখ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, বড় ট্যাক্সি চাই? ... এখানে হিন্দি চলতি ভাষা। প্রায় সকলেই হিন্দি বলতে পারে এবং বোঝে।

    আমি জাস্ট অবাক হয়ে দেখলাম, ট্যাক্সিওলা নিজে থেকে ফোন করে কার সাথে কথা বললেন, বড় ট্যাক্সি পাঠাতে বললেন, এবং যতক্ষণ না একটি তয়োটা ইনোভা এসে আমাদের সামনে দাঁড়াল, ততক্ষণ তিনি গাড়ি সাইডে লাগিয়ে আমাদের সাথে দাঁড়িয়ে রইলেন। আমরা ইনোভায় উঠলে পরে তিনি নিজের খালি ট্যাক্সি নিয়ে এগোলেন। আমি পুরো হাঁ। অচেনা লোকের জন্য একজন ট্যাক্সিড্রাইভার এতটা করেন?

    পৌঁছলাম দুবাই মল। বিশ্বের নাকি বৃহত্তম শপিং মল। তা, ফিতে তো নিয়ে যাই নি, গাজিয়াবাদে আমার বাড়ির চারপাশে সাত আটখানা মল আছে, দুবাই মল দেখে মনে হল, সেগুলো সবকটা এখানে ঢুকিয়ে দিলেও অনেক জায়গা বেঁচে যাবে। সামনেই আখাম্বা লাঠির মত দাঁড়িয়ে আছে, বুর্জ খলিফা। বিশ্বের বৃহত্তম বিল্ডিং। তা হ্যাঁ, লম্বা বটে। ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যায় ওপরের দিকে তাকালে। শুনলাম একদম টপ ফ্লোরে নাকি পাশাপাশি দুজন মাত্র দাঁড়াতে পারে, এত সরু। বুর্জ খলিফা আমাদের মত জনতাদের কাছে বাইরে থেকে দেখাই বেটার। টোটাল ১৬০ তলা এই বিল্ডিং-এর মোটামুটি ১০০ তলা পর্যন্ত ভিজিটর অ্যালাওড। টিকিট কেটে ঢোকা যায়। আগে থেকে অনলাইন টিকিট কেটে গেলে ১০০ দিরহাম, আর ওখানে গিয়ে টিকিট কেটে ঢুকতে গেলে ৪০০ দিরহাম। ওটা এখনও পর্যন্ত আর দেখার চেষ্টা করি নি, পরে কখনো দেখা যাব, একটু পহাকড়ি জমুক। একাশো দিরহাম টাকাটা খুব একটা কম নয়। দিল্লি বইমেলায় দেড়খানা স্টল বুক হয়ে যায় গুরুচন্ডালীর ওই টাকায়, হ্যাঁ।

    খলিফা সাইডে থাক, আমরা বরং মলের ভেতর ঘুরে দেখি। যে ছেলেপুলেগুলোর সঙ্গে গেছিলাম, তাদের তো হাজারবার করে ঘুরে যাওয়া, তাও তার মধ্যেই নিজের মত করে একটু ঘুরে নিলাম। এখানে একটা বিশাল বড় ফিশ অ্যাকোরিয়াম আছে, সেখানে পুঁটি থেকে হাঙর সাইজের বিভিন্ন মাছ বিভিন্ন রঙের মাছ, চরে বেড়াচ্ছে। টিকিট কেটে অ্যাকোরিয়ামের ভেতর গ্লাস উইন্ডো দিয়ে দেখে আসা যায়, এমনকি আরেকটু বেশি টিকিট দিলে ডুবুরির পোশাক পরিয়ে খাঁচায় পুরে মাছেদের সঙ্গে হ্যান্ডশেকও করিয়ে আনে। আরো কত কী যে আছে মলটায়! বিশ্বের যত রকমের ব্র্যান্ডের নাম শুনেছি, সব্বাই হাজির, সব্বাই। আর সে কী আলিশান মল! যেখানেই তাকাই, আলাদা আলাদা রকমের সুন্দর দোকানপাট, মলের করিডর সব সুন্দর করে সাজানো, আলো পিছলে পড়ছে এই রকমের চকচকে চারদিক। জায়গায় জায়গায় বড় বড় ব্যানার ঝুলছে, রমাদান করিম, মানে রমজানের শুভেচ্ছা, দোকানে দোকানে একমাসব্যাপী সেল চলছে, মেগা মেগা ডিল, লোকে ঢুকছে বড় বড় ট্টলি নিয়ে, বেরোচ্ছে ট্রলিতে ভরে গামা গামা এলইডি টিভি, মিউজিক সিস্টেম, ল্যাপটপ এইসব ভরে। চারদিকে শুধু বৈভব নেচে বেড়াচ্ছে। শীতকালে যে দুবাই শপিং ফেস্টিভাল হয়, সেটা এই মলেই হয় মূলত।

    মলের পেছন দিকে, বুর্জ খলিফা আর মলের মাঝে একটা বিশাল লেক বানিয়ে রাখা রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যে সাতটা থেকে আধঘণ্টা অন্তর অন্তর সেখানে ড্যান্সিং ফাউন্টেন শো হয়। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুটো শো দেখলাম, সে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। অনেক ড্যান্সিং ফাউন্টেন দেখেছি এর আগে, কিন্তু দুবাই মলের ফাউন্টেন শো অন্য লেভেলের জিনিস। আর সেই লেকের ধারের চাতালে লোকজন শুয়ে বসে কাত হয়ে বিভিন্ন পোজে বুর্জ খলিফার ছবি তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এর মাঝেই কোথা হইতে কী হইয়া গেল, এক অসামান্যা সুন্দরী মেমসাহেব আমার কাছটিতে এসে মিষ্টি হেসে বললেন, খলিফাকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে আমার একটা ছবি তুলে দেবেন? আমিও আপনার ছবি তুলে দেব।

    আহা! আ-হা! এমন অনুরোধ কি ফেলা যায়? মেমসাহেবের ক্যামেরা নিয়ে তাঁর ছবি তুলে দিলাম। অবশ্য আমার ছবি তুলতে দিই নি, কারণটা বিশেষ কিছুই না, আমি সেদিন ক্যামেরা নিয়ে যাই নি। ছবি তুলছিলাম মোবাইলে।

    আমরা গেছিলাম সিনেমা দেখতে। আইস এজ ফোর। টিকিট কেটে অনেকটা সময় ছিল হাতে। ঘুরতে শুরু করলাম মলে। তখন সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা। সবে রোজার সময় শেষ হয়েছে, ভিড় উপছে পড়ছে ইটিং জয়েন্টগুলোতে। সেসব পাশ কাটিয়ে আমরা এগোলাম আইস স্কেটিং রিঙ্কের দিকে।

    বিশাল বড় একটা জায়গা করে রাখা মলের মাঝে। সত্যিকারের বরফ নেই অবশ্য, তবে সেইভাবেই সাজিয়ে রাখা একটা স্কেটিং রিঙ্ক। প্রচুর ছেলেমেয়ে সেখানে সাঁইসাঁইবাঁইবাঁই করে ঘুরে বেড়াচ্ছে স্কেটস পরে। সামনে একটা মেগাস্য মেগা সাইজের এলইডি টিভি, সেখানে কোনও একটা ফুটবল ম্যাচের লাইভ টেলিকাস্ট চলছিল। চারপাশে বিভিন্ন তলা থেকে লোকজন ঝুঁকে পড়ে যুগপৎ স্কেটিং এবং টিভি দেখছে।

    বেশ খানিকক্ষণ ধরে স্কেটিং দেখে আমরা হলএ গিয়ে ঢুকলাম।

    সিনেমা শেষে তখন বাজে সাড়ে নটা কি দশটা। এটা এখানে এমন কিছু রাত নয়। দুবাইতে সমস্ত দোকান রাত প্রায় একটা দেড়টা পর্যন্ত খোলা থাকে, যে কোনও সময়ে ট্যাক্সি পাওয়া যায়। যে কোনও অপরাধের শাস্তি এখানে খুব মারাত্মক বলে অপরাধ প্রায় কিছুই নেই। ছেলে কি মেয়ে, খাটো পোশাক কি বোরখা, সবাই সেফ। মলের জায়গায় জায়গায় দেখলাম স্টিকার মেরে রাখা আছে, ডিসেন্ট ক্লোদিং পরিধান করে ঘুরুন, এমন কিছু পরবেন না যাতে ইসলামের সম্মানহানি হয়, তো দেখলাম ডজনে ডজনে ক্যাটখুকিদের দল খাটো থেকে খাটোতর পোশাক পরে দিব্যি হেঁটেচলে নেচেকুঁদে বেড়াচ্ছে দলে দলে আলখাল্লা আর বোরখাদের পাশে। কারুরই আলাদা করে সম্মানহানি হচ্ছে না, বরং দিব্যি চোখের আরাম হচ্ছে।

    কেএফসি-তে গিয়ে খাবারের অর্ডার দিতে গিয়ে কাউন্টারের লোকটার সাথে দুবার হিন্দিতে কথা বলেই বুঝে গেলাম এ বাঙালি না হয়ে যায় না। আর ঠিক তাই। বাংলাদেশের ছেলে। একগাল হেসে অর্ডার নিল, রমজানের শুভেচ্ছাসমেত।

    রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বেরোলাম মল থেকে। পাশেই বুর্জ খলিফা তখন ঝকমক করছে আলোর ফোয়ারায়। রাতের দুবাই বড় মোহময়। ট্যাক্সিরা সব লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে এক্সিটের সামনে। খালি ট্যাক্সিতে উঠে বসতেই ড্রাইভার হাল্কা করে চালিয়ে দিলেন গজল। গলাটা যেন চেনা চেনা লাগছে? ড্রাইভার বেশ ব্যারিটোন ভয়েসে হেসে জানালেন, মেহদী হাসান। একথা সেকথায় গজল নিয়ে গপ্পো জমে উঠল ড্রাইভারের সাথে। তিনি পাকিস্তান থেকে এসেছেন। গজলের শখ ভীষণ। ট্যাক্সিতে উনি এফএম রেডিও চালান না, চালান নিজের পছন্দ করা গজলের সিডি।

    দুবাইতে বিশাল বিশাল মলের ছড়াছড়ি। এর মধ্যে সবচেয়ে নামকরা হচ্ছে এই দুবাই মল। এর বাইরে আছে দেরা শপিং সেন্টার, ইবন বতুতা মল। দেরাতে গেছিলাম আরেক উইকেন্ডে, আমাদের গ্রুপের একটা ছেলে রমাদানের সেলে একটা এলজির বিয়াল্লিশ ইঞ্চির এলইডি টিভি কিনল সেদিন। তো দেরা শপিং সেন্টার নিয়ে তেমন আলাদা করে কিছু লেখার নেই। বরং ইবন বতুতাটা আগে দেখে আসি, তারপরে সেটা নিয়ে লিখব। ওটা একটু স্পেশাল মল।
  • EeshaRC | 132.176.128.33 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২০:৫০570495
  • আহা!!!
    আহা!!!!
    সব জায়্গা দুবাইয়ের মত কেন না?
    খুউউউব ভাল লাগল পরে।
  • kd | 69.93.200.8 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২১:৫৬570496
  • সিকি, কিছু কোশ্ন -
    ১) দুবাইতে গাড়ি বিলিতি না আম্রিকান সিস্টেমে চলে?
    ২) বুর্জ খলিফা লার্জেস্ট না টলেস্ট?
    ৩) ইলেক্ট্রিসিটি ১১০ভো না ২২০ভো?
    ৪) স্কেটিং রিন্কে পাব্লিক আইসস্কেট পরে ঘুরছে না রোলারস্কেট পরে?
    ৫) মলের অ্যাকোরিয়ামে মাছেদের হাত আছে লিখেছো, পাও আছে কি? কটা?
  • lcm | 34.4.162.218 | ২০ আগস্ট ২০১২ ০০:৩৩570497
  • দুবাই-তে মল অফ্‌ দ্য এমিরেট্‌স-এর মধ্যে অবস্থিত স্কি-দুবাই (স্কি রেসর্ট) -- যখন এটা চালু হয় এটি নিয়ে হৈ চৈ হয়। মরুভূমিতে একটি বাড়ির মধ্যে স্কি স্লোপ। ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিক-এর একটি ইস্যুতে আর্টিক্‌ল আসে।
    এ জিনিস পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এক্কেবারে পাক্কা স্কি-র ব্যব্স্থা। প্রায় ২০০ ফুট এলিভেশন থেকে স্লোপ শুরু। ৪০০ মিটার লম্বা। ৫ টা স্লোপ আছে উইথ ভ্যারিং স্টিপনেস। দিনের বেলা টেম্পারেচার -১ ডিগ্রী। লিফ্টে করে স্কি নিয়ে ওপরে ওঠা যায়।
    এই ছবিটা দেখলে একটা আন্দাজ পাওয়া যাবে বাইরে থেকে স্ট্রাকচারটা -

    http://en.wikipedia.org/wiki/Ski_Dubai

    এছাড়াও মলের মধ্যে আছে আইস স্কেটিং রিংক , যেটার কথা সিকি বলেছে
    - এই ছবি থেকে কাবলিদা আন্দাজ পাবেন।
  • lcm | 34.4.162.218 | ২০ আগস্ট ২০১২ ০০:৩৮570498
  • পৃথিবীর কোথাও নেই মানে বলে চেয়েছি, কোনো মরুভূমির শহরে নেই। ইন্ডোর স্কিং আছে অনেক জায়গায়। আর আইস স্কেটিং রিংক - তো অনেক।
    মিনিয়াপোলিশ-এ মল অফ আমেরিকায় একটি ইন্ডোর রোলার কোস্টার রাইড ছিল।
  • siki | 96.98.43.85 | ২০ আগস্ট ২০১২ ০১:০০570500
  • কাব্লিদা --

    ১) আমেরিকান সিস্টেম। বিলেতের উল্টো।
    ২) বুর্জ খলিফা টলেস্ট। লার্জেস্ট মল হল দুবাই মল।
    ৩) ২২০ ভোল্ট।
    ৪) আইসস্কেট পরেই তো মনে হল। তিনতলার ওপর থেকে দেখছিলাম।
    ৫) :)

    ল্যাদোশদা, মল অফ এমিরেটসও খুব নামকরা মল, যাওয়া হয়ে ওঠে নি। ওটা জুমেইরা বিচের খুব কাছে। যেতে হবে একদিন। আগে মাইনে পাই :)
  • Binary | 208.169.6.50 | ২৩ আগস্ট ২০১২ ০২:২০570501
  • দুবাই পড়ে বেশ লাগল। কোনোদিন যাইনি, এবারে ভেবেছি দেশে যাব এমাইরেট্স-এ, দুবাই-টা ঘুরে নেওয়া যাবে।

    গেল বারের আগের বার, কুয়ালালামপুর ছ্যালাম, ঈদের সময়। দিনের বেলায় খাবার দোকান-পাট বন্ধ-ই থাকত, তবে কেফসি-র মতন আম্রিকান ফাস্টফুড পাওয়া যেত। কেফসিতে চীকেন ড্রামস্ট্কের সাথে ভাত (!!) দিতো কম্বোমিল-এ।

    আমার ঘরের কাছে, ওয়েষ্ট-এডমন্টন মল আচে। একদা নাকি বিগেস্ট-ইন-নর্থ আম্রিকা ছ্যালো। তো সেথায় ইন্ডোর আইস স্কেটিং রিংক আছে বড়সড়-ই। তাপ্পর একটা পুরো ইন্ডোর অ্যামিউজমেন্ট পার্ক আছে, তাতে ঐ গা-গোলানো সাঙ্ঘাতিক জটিল রোলার কোস্টার ইত্যাদি। সঙ্গে, ইন্ডোর ওয়াটার পার্ক। চায়না-টাউন গোটা। ইন্ডোর সীলমাছের অ্যাকোরিয়াম। ইত্যাদি প্রভ্‌তি।
  • Arin | 142.181.141.120 | ২৩ আগস্ট ২০১২ ০৪:৫৩570502
  • সিকি'র লেখা দুবাই পড়ে মনে হচ্ছে দুবাই টা একটা হাবিজাবি জায়্গা, শুধু মলে ভর্তি, একটা কন্ক্রিটের জঙ্গল। মল, আইস স্কেটিঙ্গ রিন্ক, এগুলো দেখার জায়গা হল? সিকি বরং দুবাই ক্রীকের গল্প লিখুক, মরুভূমি সাফারির গল্প বলুক ।
  • PM | 96.130.180.90 | ২৩ আগস্ট ২০১২ ১৮:৩৫570503
  • সিকি, করেকটা কথা-
    ১। অবশ্যই ডেসর্ট সফারী টুর করবেন। একটু অফ সিজন-এ ১১০ দিরহাম/মাথা ডিল পেয়ে যাবেন। ডেসর্ট সাফারীতে আরব খাবার আর বেলি ডান্স আপনার বর্ননায় পড়তে চাই।

    ২। ওখানকার ট্যক্সি ড্রাইভার-রা মোস্টলি পাকিস্থানী। আমার প্রিয় অবসর বিনোদন ছিলো পাকী ট্যক্সি ড্রাইভার্দের সাথে ভাট করা ট্যক্সি চড়ার সময়। সব ড্রাইভার ভারত -পাকিস্থান, পাকিস্থান-আমেরিকা , পাকিস্থা।-বাংলাদেশ রিলেসন নিয়ে " নিজেদের বিশেষঞ্জ মনে করে। ওদের একটু খোচালেই টইতে লেখার মতো অনেক মাল মসলা পাবেন।

    ৩। কেনা কাটি করতে হলে ফেব্রুয়ারীর দুবাই ফেস্টিভাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ঐ সময়-ই সবচেয়ে সস্তায় জিনিষ পাওয়া যায়। আমি LED TVর সাথে সনি হোম থিয়েটার ফ্রী পেয়েছিলাম। আর ল্যপটপ-এর সাথে ১ এর মধ্যে ৩ প্রিন্টর, DVD মায় টোস্টার পর্য্যন্ত ফ্রী
  • সিকি | 96.98.43.85 | ২৪ আগস্ট ২০১২ ০৩:৪৭570504
  • অতি ক্রূর, কুটিল তাঁর দৃষ্টি। শুধু ছবিতে তাঁর চোখের দিকে তাকালেই মোটামুটি হাড় হিম হয়ে যায়, এমন বরপশীতল দিষ্টি তাঁর। অনায়াসে মনে হয়, হাতে একটা রক্তমাখা তলোয়ার, এইমাত্র পাঁচদশজনের মুণ্ডচ্ছেদ করে এসেছেন, এখন তাঁর সামনে চুপ করে থাকাই শ্রেয়, নইলে আপনার মুণ্ডুর গ্যারান্টিও কেউ নেবে না।



    তিনি হিজ হাইনেস শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম। দুবাইয়ের শাসক। রুলার অফ দুবাই। রয়্যাল ফ্যামিলির বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স সুলতানসাহেব আবার সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর ভাইস প্রেসিডেন্টও বটে। তবে শুনুন দাদা, এখানেই সেশ নয়, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীও।

    প্রথমদিন এতকিছু বিবরণ পড়ে পুরো হাঁ হয়ে গেছিলাম, এত কিছুই যখন করে ফেললেন মহামহিম, তাইলে প্রেসিডেন্টের পদটা ছেড়ে দিলেন কেন? তো ঘেঁটে দেখলাম, প্রেসিডেন্ট যিনি, তিনি খলিফা। খলিফা বিন জায়েদ বিন সুলতান আল নাহ্‌য়ান। এখন খলিফা আর ক্রাউন প্রিন্সের মধ্যে কী তফাৎ সে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না, আমি পড়া করে আসি নি। বরং কাকু বা পিসিকে জিগিয়ে নিন। ... তো, সে যাই হোক, পিসির বক্তব্য অনুযায়ী হিজ হাইনেসবাবুর দুই স্ত্রী, আর গুণেগেঁথে তেইশটা ছেলেমেয়ে, লালুপ্রসাদ যাদব শুনলে লজ্জা পাবেন, তবে আরবি শেখ আর বিহারি গয়লা, স্ট্রেংথ তো আলাদা হবেই।

    স্ট্রেংথ আছে অবশ্যই। হিজ হাইনেসের শাসনাধীনে দুবাই শহরটাকে তিনি এমন করে বানিয়েছেন, যে সারা পৃথিবী থেকে লোকে দেখতে আসে। দুনিয়ার লেটেস্ট টেকনোলজিদের ভিড় এখানে, আমোদ আহ্লাদ করার সমস্ত উপকরণ এখানে, ক্যাসিনো চাও ক্যাসিনো, শপিং চাও হুদো হুদো শপিং মল, নাইটক্লাব চাও পাব চাও ব্রথেল চাও, যে ধরণের উপকরণ চাও, সমস্ত কিছু হাজির। শুধু বীচের ধারে নেংটু হয়ে বসা যাবে না। নেই ন্যুডিস্ট কলোনি। ওইটুকু বাদ দিয়ে তুমি যা চাও তাই পাবে। আগে থেকেই জানিয়ে রাখলাম, কেউ যেন আবার বলে বসবেন না, "সেটা তো আগে বলো নি ..."

    শাস্তিসমূহ খুব খুব কড়া, তাই অপরাধের মাত্রা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা প্রায় জাঙ্গিয়ার সাইজের হাপপ্যান্ট পরে যখন তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে, এর ওর তার হাত ধরে, পাশাপাশি আপাদমস্তক ঢাকা বোরখার দলও আছে। আবার বোরখা বলে ভাববেন না যেন নিতান্তই গাঁইয়া মুসলমান পেত্নী। মাঝে মাঝে ভেল উন্মোচিত হলে বা বোরখার সম্মুখভাগ উন্মুক্ত হলে দেখা যায় পাগল করে দেওয়া টিশার্ট আর থ্রি-কোয়ার্টার জিনস রয়েছে ভেতরে। চোখেমুখে উৎকৃষ্টতম প্রসাধনীরঞ্জনীর ব্যবহারের প্রমাণ জ্বলজ্বল করছে। নেহাতই ধর্মরক্ষার খাতিতে এঁরা হিজাব টিজাব পরেন। কেউ ফুল লেংথ হিজাব, কেউ জাস্ট মাথাটা ঢেকে রাখেন, মাথা গলা কান। কেউ কেউ ইরানী, মাথায় শুধু স্কার্ফ বেঁধে রাখেন। গভীর রাত বা কটকটে দুপুর, মেয়েদের জন্য আর কোনো রেস্ট্রিকশন নেই। একা ঘোরা, সিগারেট খাওয়া, দোকা ঘোরা, শপিং মলে যাওয়া, দোকানবাজারে ঘোরা, "অপরিচিত পুরুষের" সাথে সরাসরি কথা বলা, কোনোকিছুতেই কোনো বাধানিষেধ নেই। যদি কেউ এই সব "আছে" বলে পড়ে থাকেন দুবাইয়ের সম্বন্ধে, জানবেন, পাতি ঢপ দেওয়া আছে। রেস্টুরেন্ট ওষুধের দোকান সুপারমার্কেট অফিস কাছারি হাসপাতাল ফরেন এক্সচেঞ্জ, সর্বত্র মেয়েরা কাজ করছে ঝাঁকে ঝাঁকে, এমনকি অড আওয়ারেও। রাত্তির এগারোটা বারোটাতেও। কর্মস্থলের গাড়ি থাকে, ঠিক কাজের শেষে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

    রাস্তায় পদাতিকের সংখ্যা নিতান্তই কম, যে কোনও বড় বড় শহরেই তাই হয়ে থাকে, কিন্তু পুরো শহরটার এমন কোনও রাস্তা নেই, এমন কোনও ক্রশিং নেই, যেখানে পদাতিকদের কথা মাথায় রাখা নেই, প্রতিটা রাস্তায় পেডেস্ট্রিয়ান ট্র্যাক আছে, প্রতিটা সিগন্যালে পেডেস্ট্রিয়ান সিগন্যাল আছে, এবং প্রতিটা পেডেস্ট্রিয়ান কোরান বাইবেলের মতন করে সিগন্যাল মানে। যদি গাড়ি না-ও আসে, তবু পেডেস্ট্রিয়ান সিগন্যাল সবুজ না হলে প্রায় কেউ রাস্তা পেরোয় না। আবার পেরনোর মাঝে যদি সিগন্যাল লাল হয়ে গাড়ির রাস্তা খুলে যায়, শেষতম লোকটি রাস্তা পার না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত গাড়ি অপেক্ষা করে থাকে, কেউ হর্ন বাজায় না। দুবাইতে গাড়িতে হর্ন প্রায় বাজে-ই না। অথচ, বেশির ভাগ রাস্তাতেই স্পিড লিমিট একশো কিলোমিটার পার আওয়ার। গাঁ গাঁ করে গাড়ি ছোটে।

    আমাদের দিল্লির রাস্তাঘাট দুবাইয়ের থেকেও চওড়া, তবু তাতেও ম্যাক্সিমাম সত্তর আশির ওপরে স্পিড তোলা যায় না, এক সবেধন নীলমণি হয়েছে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে, যেখানে একশো কিমি স্পিডে গাড়ি নাকি চালানো যায় এখন। কদিন চালানো যাবে কে জানে। গাড়ির যা চাপ দিল্লিতে। কলকাতা মুম্বাই চেন্নাইয়ের সমস্ত গাড়ির যোগফলের থেকেও বেশি গাড়ি আছে শুধু দিল্লি এনসিআরে।

    শাস্তিপ্রক্রিয়া শুনবেন? দু একটা উদাহরণ দিই। কাগজে দেখছিলাম, এক স্থানীয় বস এক ভারতীয় মহিলাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছিলেন। এই জুন মাসের ঘটনা। জুলাই মাসের শেষ নাগাদ লোকটির মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়ে গেছে।

    রমজান মাস বড় পবিত্র মাস। এই সময়ে কেউ কোনও অনৈতিক কাজ করবে না, এমনটাই মানে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। পুলিশও এই সময়ে অতিসতর্ক থাকে, কেউ কোনো খারাপ কাজ করলেই তার শাস্তি কড়া, রমজানের সময়ে করলে আরও কড়া। কদিন আগে দুই বাংলাদেশীকে তিরিশ তিরিশ ঘা চাবুক মারার হুকুম হয়েছে, সাথে তাদের দোকানের লাইসেন্স ক্যানসেল করা হয়েছে। কারণ? ... কারণ তারা মার্কেট রেটের চেয়ে বেশি রেটে চিকেন বেচছিল। ভাবা যায়? কত বড় অন্যায়? তাও রমজানের মাসে? তাই এই শাস্তি।

    রমজান এই শেষ হল গেল সপ্তাহে। জানেনই তো, এই সময়ে প্রকাশ্যে খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ। জল খাওয়াও বারণ। কিন্তু দুবাইতে তো অনেক অমুসলমান লোকজন থাকে! তাদের কী হয়? কোনো চাপ নেই। "প্রকাশ্যে" খাওয়া বারণ, গোপনে খেলেই হয়। সমস্ত রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকে, কিন্তু টেক অ্যাওয়ে খোলা থাকে, প্যাক করে নিয়ে অফিসের ক্যান্টিনে বা বাড়িতে বসে খাও না, কে বারণ করেছে?প্রকাশ্যে মদ্যপান করায় রেস্ট্রিকশন আছে। ভ্যালিড লাইসেন্স ছাড়া মদ খাওয়া যায় না। আর সে লাইসেন্স নাকি সহজে পাওয়া যায় না, অনেক ভেরিফিকেশন হয়ে টয়ে অনেক পয়সা দিয়ে তবে লাইসেন্স মেলে। তাচ্চেয়ে বোতল কিনে ঘরে বসে খাও, কেউ বারণ করবে না।

    গেছিলাম, বুঝলেন, জুমেইরা বিচ পার্কে। পাবলিক বিচে নাকি প্রচুর লোকজনের ভিড় থাকে, "দেখা-টেখা" যায় না, তাই পেইড বিচ। জুমেইরা বিচ পার্ক। পেইড মানে হাই ফাই কিছু পেইড নয়, মাত্র পাঁচ দিরহাম। সঙ্গে সেই বাচ্চা ছেলেগুলো, আহা, প্রথম বাড়ি থেকে বেরিয়েছে, দুনিয়া দ্যাখে নি এখনো তেমন, এদিকে আমি অলরেডি পাপীতাপী মানুষ, দিনেমারদের দেশে ন্যুড বিচ প্রাণ ভরে দেখে এসেছি, তবু গেলাম।

    মন ভরে যায় এমন মনোরম সুন্দর ভাবে সাজানো সী বিচ। জায়গায় জায়গায় শাওয়ার বসানো, সমুদ্রস্নান সেরে গা থেকে বালি আর নোনাজল ধুয়ে ফেলার জন্য, সেইখানে এক অষ্টাদশী খুবই ক্ষীণমাত্রায় বস্ত্রাবৃত হয়ে, জাস্ট আইন বাঁচিয়ে, গা ধুচ্ছিলেন। সঙ্গী ছানারা তাই দেখেই খুব খুশি।

    নামলাম। অনেক সমুদ্র দেখেছি, কিন্তু এমন ম্যাদামারা শান্ত সমুদ্র কখনো দেখি নি। পারস্য উপসাগর, ভয়ংকর রকমের নোনা জল, চোখ জ্বলছে হু হু করে, ডুব দিলেই, কিন্তু এক ফোঁটা ঢেউ নেই। একটুও না। অতএব গলা পর্জন্ত ডুবিয়ে রেখেই চারপাশের সৌন্দর্য নিরীক্ষণ করতে লাগলাম। তা সৌন্দর্যের কিছু কমতি নেই। সমুদ্রনীল কি কালো রঙের বিকিনি ছিল, আবার কয়েকজনকে দেখলাম বোরখা পরেই নেমে পড়লেন জলে, সে এক জম্পেশ ককটেল। সামনে চকচক করছে আখাম্বা বুর্জ খলিফা, ডানদিকে বুর্জ আল আরব, আর দূরে দেখা যাচ্ছে জুমেইরা পাম বীচের রেখা। সমুদ্দুরের মধ্যে মাটি ফেলে বড় বড় খেজুর গাছের আদলে দ্বীপ বানিয়েছে শেখের ব্যাটারা।

    পেইড বীচে ক্যামেরা নিয়ে যাওয়া বারণ, তাই ছবি তোলা হয় নি। ঘন্টাতিনেক নুনজলে গা ডুবিয়ে বসে ফেরত এলাম।

    আমার দুবাইয়ের গল্প আপাতত এখানেই শেষ। আর কিছু দেখা-ও হয় নি। এসে থেকে এখনো মাইনে পাই নি, এর পরে মাইনেকড়ি পেয়ে আবার বেরোব। যখন যেমন দেখব, এখানে লিখতে থাকব।
  • সিকি | 96.98.43.85 | ২৪ আগস্ট ২০১২ ০৩:৫৫570505
  • ডেজার্ট সাফারি, অতি অবশ্যই করব। বুর্জ খলিফার একটা ট্যুর হয়, ১২০ তলা পর্যন্ত উঠতে দেয়, সেটাও করব। বুর্জ আল আরব করব। জুমেইরা পাম বীচ করব। সবই হবে একে একে। সবে তো এলাম।

    শপিং-এর ব্যাপারে, হ্যাঁ, দুবাই শপিং ফেস্টিভাল একটা ভালো দাঁও মারার সময়। এ ছাড়াও অক্টোবরে জিটেক্স বলে একটা কী ফেয়ার হয়, সেটাতেও ভালো ডীল চলে, আর রমজানের সময়েও দুর্দান্ত ডীল চলে। আমার বন্ধু বিয়াল্লিশ ইঞ্চির এলজি এলইডি থ্রিডি টিভি কিনল, সাথে ব্লু রে প্লেয়ার, থ্রিডি ডিভিডি, থ্রিডি দুখানা এক্সট্রা চশমা (এমনিতে টিভির সাথে দুটো দেয়), ওয়াইফাই ডঙ্গল, ইত্যাদি পেল যে অ্যামাউন্টে, সেটা ভারতীয় টাকায় দাঁড়ায় পঞ্চাশ হাজার টাকা।

    গেলবছর আমি ক্রোমা থেকে বত্তিরিশ ইঞ্চির এলজি এলইডি টিভি কিনেছি, সাথে একটা বিশ ইঞ্চির এলসিডি টিভি ফ্রি ছিল বিশকাপ অফার। আটচল্লিশ হাজার টাকায়। নো থ্রিডি, নো প্লেয়ার, নো ওয়াইফাই ডঙ্গল।
  • nina | 78.34.167.250 | ২৪ আগস্ট ২০১২ ০৩:৫৬570506
  • আর মনিশ মলহোত্রার বিরাট ফ্যাশন শো হচ্ছে ---দুবাইতে এখন--দারুণ দারুণ সালোয়ার কুর্তা---টি ভি তে দেখাল---
    সত্যি দুবাই ঠিক যেন অ্যারেবিয়ান নাইটসের জিন-নগরী-----সোনার জালির স্কার্ফ--উফস!
    একটা ছবি দিস তো--নয়নসুখ করব ঃ-)
  • Binary | 208.169.6.50 | ২৫ আগস্ট ২০১২ ০৩:৪৮570507
  • দুএকটা ব্যাপারে খটকা লাগল। ১) শাস্তির বহরটা এইরকম-ই কিনা । মানে ইউনিভার্শাল এই রকম-ই কিনা, না সাদা-কালো আম্রিকান এশিয়ানে তফাৎ আছে, আমার মনে হয় আছে, আর শাস্তি-টাও এতটা উতকট নয় মনে হয়। আমি-ও সিঙ্গাপুরে এই রকম বহর শুনেছিলাম। তাপ্পর শুনেছিলাম, ঘোষিত শাস্তি আর কোর্ট হিয়ারিং -এর অনেক ফারাক। যেটা প্রথম গিয়ে শোনা যায়, সেটা চমকে দেওয়ার জন্য। ২) স্পীড লিমিট সব রাস্তায় ১০০, মানে বাড়ীর সামনে বা রেসিড্ন্সিয়াল, বা শহরের মধ্যে-ও, এটা ঠিক হজম হচ্ছে না। ইউনিভার্সাল রুল এরকম। রেসিডেন্সিয়াল রাস্তায় ২০, কমার্শিয়াল রাস্তায় ৫০, হাইওয়েতে ১০০, জার্মানিতে অটোবানে স্পীড লিমিট নেই, সেখানেও শহরে মধ্যে ৫০। শহরের মধ্যে ১০০ হওয়াটা টেকনিকালি ফিজিবিল নয় মনে হয়।

    আকি সব ঠিক-ই আছে, হিজাব-টিজাব বা মদ্যপান নিয়ে যা সিকি কইলো, তাতে কোনো সন্দ নেই।
  • siki | 127.213.241.187 | ১৮ আগস্ট ২০১৩ ০১:২৫570508
  • প্রায় এক বছর হল এই টই আর এগোতে পারি নি। আজ ভাবলাম আরেকবার খুলি। অনেকবারই ভেবেছি লেখার কথা, তারপরে ভেবেছি, কী হবে আর লিখে, ছেড়ে চলে এসেছি যে জায়গা, সে নিয়ে আর তো কিছু লেখার থাকতে পারে না।

    আবার ভেবেছি, লেখার মত পরিস্থিতি তৈরি হলেই লিখব। মাত্র তো কটা দিনের ব্যাপার, একটু থিতু হলেই লিখতে বসব বরং।

    দিন পেরোতে পেরোতে মাস, মাস পেরোতে পেরোতে বছর গড়িয়ে গেল, লেখার উপযুক্ত সময় অবশ্য আজও আসে নি, যাতে এই লেখাটাকে একটা পূর্ণ রূপ দেওয়া যায়, তবু ভাবলাম, আরও দেরি হবার আগে লিখতে শুরু করেই দি। একদিনে তো আর সব লিখে ফেলছি না।

    দুবাই যাওয়া হয়েছিল বিজনেস ভিসায়, কথা হয়েছিল ওখানে পৌঁছে ওয়ার্ক পারমিট নেওয়া হবে। তো সেই মত আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ওয়ার্ক পারমিটের কাজকর্ম শুরু করলাম। একগাদা ফর্ম ভরতে হয়, পারমিটের কার্ডের জন্য অ্যাপ্লাই করতে হয়, মেডিক্যাল এক্সামিনেশন দিতে হয়, এই সব।

    আমি গেছিলাম জুলাই মাসের কুড়ি তারিখে, আমার ঠিক একমাস আগে সেখানে পৌঁছেছিল আরেকটা ছেলে, বাঙালিই, তার তখন ওয়ার্ক পারমিটের কাজকর্ম চলছিল, তা সেই নিয়েই টুকটুক এগোচ্ছিলাম। বয়েসে অনেকটা ছোট হওয়া সত্ত্বেও নীলাঞ্জনের (আসল নাম নয়) সঙ্গে বেশ জমে গেল। একই হোটেলে আমরা ছিলাম, একই ফ্লোরে।

    আগস্টের দশ তারিখ মত হবে সেদিন, নীলাঞ্জন আমাকে জানাল, ওর ওয়ার্ক পারমিট বোধ হয় হবে না, রিজেক্ট হতে চলেছে। ... কেন রে?

    নীলু বলল, আর বোলো না সিকিদা, এদের নিয়মকানুন খুব কড়া। আমার বছর দুয়েক আগে একটা নিমোনিয়া মতন হয়েছিল, লাঙসে জল জমে ইনফেকশন হয়ে গেছিল। সেই প্যাচ দেখে এরা মনে করছে আমার টিবি হয়েছিল। আর কারুর টিবির হিস্টোরি থাকলে এরা কোনও অবস্থাতেই ডাব্লু-পি দেয় না।

    সে আবার কী? টিবি তো ইন্ডিয়াতে অনেকেরই হতে পারে, সেটা তো দীর্ঘস্থায়ী কোনও ব্যাপার নয়, চিকিচ্ছে করলে সেরে যায়, তাই নিয়ে দু বছর বাদে কারুর পারমিট আটকানোর মানে কী?

    মানে আবার কী। এখানে ঐ শরিয়তি নিয়ম টিয়ম। শুধু দুবাই বলে নয়, মিডল ইস্টের সমস্ত মুসলিম দেশেই এই নিয়ম। পৃথিবীর বাকি কোনও দেশে অবশ্য এই নিয়ম নেই। এই মুহূর্তে তোমার কোনও অ্যাকটিভ ইনফেকশন না থাকলে তুমি যে কোনও দেশের ওয়ার্ক পারমিট পেতে পারো। কিন্তু এই মিডল ইস্টের দেশে নিয়ম হচ্ছে, লাঙসে কোনও প্যাচ পাওয়া গেলেই তাকে বের করে দেয়, একেবারে নো এন্ট্রি। আমি অবশ্য বলেছি, আমার টিবি নয়, নিমোনিয়ার কেস ছিল, কিন্তু ট্রিটমেন্ট হয়েছিল টিবিরই, আর লাঙসে প্যাচ রয়ে গেছে। কিন্তু এরা মনবে বলে মনে হয় না।

    আমি মুখে বললাম বটে, চিন্তা করিস না, ডাক্তাররা নিশ্চয়ই এখানে গোমুখ্যু নয়, নিমোনিয়া আর টিবি নিশ্চয়ই আলাদা করে বুঝতে পারবে। ... বললাম বটে, কিন্তু আমার ভেতরে তখন প্যালপিটেশন শুরু হয়ে গেছে। নীলুর না হয় নিমোনিয়ার হিস্টোরি, কিন্তু আমার তো একেবারে টিবিরই কেস ছিল। চার বছর আগের ঘটনা, কিন্তু তাতে কী? ফুসফুসে সে দাগ তো আমার রয়ে গেছে, রয়ে যাবে আজীবন! তবে কি আমারও একই ঘটনা ঘটতে চলেছে?

    হোটেলে ফিরে গুগলে খুঁজতে বসলাম, দুবাইয়ের এ ব্যাপারে কী নিয়ম নীতি। যা পড়লাম, মনটা বেশ দমে গেল। নীলু যা বলেছে, ঠিক তাই। অসহায় অবস্থায় অনেকেই অনেক খিস্তিখাস্তা করেছে মিডল ইস্টের দেশের নামে, ইসলামের নামে, শরিয়তের নামে, কিন্তু হাজারে হাজারে এ রকমের উদাহরণ বেরোতে লাগল, স্ত্রীয়ের ওয়ার্ক পারমিট হয়ে গেছে, স্বামীর হয় নি, কারণ স্বামীর টিবি হয়েছিল, স্বামী-স্ত্রীর হয়ে গেছে, বাচ্চা রেসিডেন্স পারমিট পায় নি কারণ বাচ্চার টিবি হয়েছিল, হাজারে হাজারে উদাহরণ। প্রত্যেককেই হয় ফ্যামিলি থেকে আলাদা হয়ে দুবাইতে বা কাতারে চাকরি করতে হচ্ছে, নয় তো এখানে চাকরির সমস্ত আশা ছেড়ে দিয়ে নিজের দেশে ফিরে যেতে হয়েছে।

    আর এটা শুধু ভারতীয় নয়, ইউরোপিয়ান, আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান, পাকিস্তানি, চীনা, জাপানী, রাশিয়ান, সবার, সব্বার একই গল্প। টিউবারকিউলোসিসের কোনও চিহ্ন ফুসফুসে পাওয়া গেলে, যত পুরনো ঘটনাই হোক, তাকে চারদিনের নোটিসে বের করে দেওয়া হয় এই সমস্ত দেশ থেকে, এবং আজীবন নো এন্ট্রি।

    আমার তখন বোঝা হয়ে গেছে, আমার ভাগ্যে কী ঘটতে চলেছে, তবু আশা, আমি তো একদম সুস্থ, ভীষণ ফিট, আসার আগে আমার কোম্পানির হয়েও মেডিক্যাল টেস্ট দিয়ে এসেছি, সেখানেও আমি কিছু লুকোই নি, সব জানা সত্ত্বেও ডাক্তার আমাকে পরীক্ষা করে ফিট ফর ট্র্যাভেল সাট্টিফিটি দিয়েছেন, ফুসফুসে ঐ একটি দাগ ছাড়া আমার শরীরে আর কোনও স্মৃতিচিহ্ন নেই, আমাকে কি তবুও আটকাবে এরা? দেখাই যাক না।
  • siki | 127.213.241.187 | ১৮ আগস্ট ২০১৩ ০১:৪৮570509
  • চব্বিশ পঁচিশ তারিখ নাগাদ, আমার কোম্পানির যে ভিসা কোঅর্ডিনেটর, তার ফোন এল, আপনি তো আগে বলেন নি আপনার টিবির হিস্ট্রি ছিল?

    আমি বললাম, আলাদা করে কিছু বলতে হয় সেটাও তো জানতাম না, আসার আগে কোম্পানি থেকে আমাকে মেডিকাল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, তাতে বিস্তারিত আমার কেস হিস্ট্রি লেখা আছে, আমি তো লুকোই নি, সেটা দেখেও আপনারা কেন আমাকে দুবাই নিয়ে এলেন?

    মহম্মদ নাদিম, কোঅর্ডিনেটর, সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিতে পারলেন না, আসলে তিনি আমার মেডিক্যাল রিপোর্ট খুলেও দেখেন নি, ওটা বিদেশে পাঠানোর আগে সবাইকে করাতে হয়, তাই করানো হয়েছিল, কেউ খুলে দ্যখে ট্যাখে না। চিন্তিত গলায় বললেন, আপনার মেডিক্যাল রিপোর্টে এভিডেন্স এসেছে ওল্ড টিবি প্যাচের, আপনাকে আরও মেডিক্যাল টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। আমি গাড়ি পাঠাবো, আপনি মঙ্গলবার এগারোটা নাগাদ এদের মেডিক্যাল সেন্টারে যাবেন একবার।

    টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে আমার আপত্তি নেই, আমি তো জানি, আমার মধ্যে অ্যাকটিভ ইনফেকশন পাওয়া যাবে না। ঐ দাগটা ছাড়া আর কিছুই নেই আমার। কিন্তু তবু, নার্ভাসনেস আস্তে আস্তে ঘিরে ধরল আমাকে। নীলু বলল, ও চিন্তা করার কিছু নেই, যা হবে তা হবে। আমাকেও যেতে হচ্ছে মেডিকেল সেন্টারে স্পুটাম স্যাম্পল দিতে। তোমাকেও দিতে হবে।

    গেলাম, কৌটো ধরিয়ে বলল, স্পুটাম স্যাম্পল দিতে হবে, পরপর তিনদিন। কাল প্রথম স্যামপল দিয়ে দ্বিতীয় কৌটো নিয়ে যাবেন।

    এই মেডিক্যাল সেন্টারটা দুবাই শহরের একদম বাইরে। অফিস থেকে অনেকটা যেতে হয়, মরুভূমির মাঝখান দিয়ে রাস্তা। একেবারে শেষপ্রান্তে পৌঁছে সেন্টার, সেখানে গিজগিজ করছে লেবার টাইপের লোকজন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এইসব দেশ থেকে আসা গরীব লোকজন। পরনের পোশাক, আচার আচরণ প্রতিটা জিনিস থেকেই দৈন্য ফুটে বেরোচ্ছে, চারপাশটা বেশ নোংরা, এবং সেন্টারের কর্মীদের এই ধরণের লোকজন দৈনিক হ্যান্ডল করতে হয় বলে, তাদের মেজাজটাও বেশ উগ্র। সেই উগ্র মেজাজের ঝাঁঝ আমিও পেলাম, বেশ ধমকের সুরে একটা প্লাস্টিকের কৌটো আমার হাতে দিয়ে একজন বললেন, সম্ভবত তিনিও ভারতীয়, কাল এতে স্পুটাম স্যাম্পল দিয়ে পরের কৌটো নিয়ে যাবেন।

    আমি ক্ষীণ স্বরে বললাম, কিন্তু আমার তো কাশি টাশি হয়ই না, স্পুটাম দেব কী করে? গলা তো একেবারে পরিষ্কার?

    তিনি আরও উষ্ণ গলায় বললেন, ও সব জানি না, যেভাবে হোক, দরকারে গলায় আঙুল দিয়ে কাশবেন, যা আসবে, সেটা এতে দেবেন। কীভাবে করবেন জানি না, মোদ্দা কথা আপনাকে স্পুটাম দিতে হবে।

    এ কী শাস্তি রে বাবা। হোটেলে ফিরে আয়নার সামনে নিজেকে দাঁড় করালাম। জোর করে কাশবার চেষ্টা করলাম, কাশি এল না। গলায় আঙুল দিতে হয় নি কোনওদিন, জীবনে প্রথম গলার ভেতরে আঙুল ঢোকালাম, ওয়াক উঠল শুধু, কাশি কি আর ঐভাবে হয়?

    সকালে উঠে সেইভাবেই যা বেরলো, তা নিতান্তই মুখের লালা। তাই নিয়ে গেলাম। স্যামপল দেখে সেই লোকটি বলল, সেই একই রকমের ধমকের সুরে, এটা স্পুটাম নয়, স্পুটাম চাই।

    আমিও ধৈর্য হারাচ্ছি, বললাম, এর বেশি কিছু বেরোচ্ছে না তো আমি কী করব?

    সে কোনও কথা শুনতেই রাজি নয়, ওসব জানি না, সবাই দিচ্ছে, তোমাকেও দিতে হবে, বাইরে পার্কিংয়ে চলে যাও, যেভাবে হোক স্পুটাম নিয়ে এসো এই কৌটোয়।

    আগস্ট মাসের দুবাইতে রোদের বড় তেজ। আমি দিল্লির ছেলে, রোদে আমার অসুবিধে হয় না, কিন্তু সেদিনের রোদও বড় কড়া লাগছিল। গাড়ির আড়ালে হাস্যকার বিবিধ প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি নকল কাশি কেশে গলা থেকে একটু "স্পুটাম" বের করার জন্য।

    কী বেরলো কে জানে, দ্বিতীয়বারে কৌটো দেখে লোকটা নিয়ে নিল। আরেকটা কৌটো দিয়ে বলল, পরের দিনও একইভাবে।

    তিনদিন চলল এই অমানুষিক ব্যাপার স্যাপার। তারপরে আরও একদিন, ব্লাড স্যাম্পল নিল, স্কিন টেস্ট হল, এবং তারও তিনদিন পরে আবার একদিন যেতে হল। সেখানে আমার মতন অনেককে বসানো হল একটা ঘরে, বিভিন্ন দেশের লোকজন, প্রত্যেককে একটা করে মাস্ক দিয়ে বলা হল পরে থাকতে।

    কী ঝামেলা রে ভাই। আমার যখন অ্যাকটিভ ইনফেকশন ছিল, তখন আমাকে কোনও মাস্ক পরতে হয় নি, আজ কেন পরতে হবে? তবু, ধমক চলছে এলোপাথাড়ি, সেইভাবেই একঘন্টা বসে থাকার পরে ডাক্তারের ঘরে ডাক এল, তিনি বললেন, শ্বাস নাও, পিঠে স্টেথো ছোঁয়ালেন, বুকে ছোঁয়ালেন, "বাস, হো গয়া। এবার তুমি অফিসে যাও, তোমার রিপোর্ট সাতদিনের মাথায় তোমার কোম্পানিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে?"

    অন্তত আমাকে তো বলুন, কী পেলেন? "এখন কিছু বলা যাবে না, সমস্ত রেজাল্ট এক করে রিপোর্ট বানানো হলে তবেই বলা যাবে। আর প্রশ্ন নয়, এখন বেরোও, পরের লোককে পাঠিয়ে দাও।"

    কোম্পানির গাড়িতে আবার মরুভূমি পেরিয়ে ফিরলাম অফিসে। দুবাই ফেস্টিভাল সিটিতে।

    সেদিন চৌঠা সেপ্টেম্বর।
  • siki | 127.213.241.187 | ১৮ আগস্ট ২০১৩ ০২:০৮570511
  • দশ তারিখে আমার কোম্পানির ম্যানেজারবাবু আমাকে ডেকে পাঠালেন তাঁর রুমে। সেখানে মুখ কালো করে বসে আমার পিএম, এইচআর, ক্লায়েন্ট ভদ্রলোক নিজে -- ইনিও ভারতীয়, আমাকে বিশেষ পছন্দ করতেন।

    আমি তৈরিই ছিলাম, খবরটা পেয়েও তাই বিশেষ কোনও হেলদোল হল না মনে। চোদ্দ তারিখের মধ্যে আমাকে দুবাই ছাড়তে হবে। শুধু বললাম, সবই ঠিক আছে, আমাকে শুধু ওদের মেডিকাল রিপোর্টটা একটু দেখতে দেবেন?

    কোম্পানির ম্যানেজারবাবু বললেন, ও তুমি কিছু বুঝবে না, পুরোটাই আরবী ভাষায় লেখা। বললাম, তবুও দেখান, আরবী ভাষা ট্র্যানস্লেট করিয়ে নেওয়া যাবে কোথাও। উনি বললেন, ঠিক আছে, আমি অফিসে ফিরে তোমাকে সফট কপি পাঠাবো।

    এক বছর কেটে গেছে, সে রিপোর্ট আমি আজ পর্যন্ত আর চোখে দেখতে পাই নি।

    নীলাঞ্জনের রিপোর্ট তখনও বেরোয় নি, ক্লায়েন্ট বললেন আমাদের ম্যানেজারকে, যেভাবে পারো টাকা খরচা করো, আমাদের এইচআর বলে দেবে, কীভাবে কীভাবে কোথায় কনট্যাক্ট করতে হয়, তোমরা যদি এর কেসটাও আমাকে আগে জানাতে, আমি ব্যবস্থা করতাম, এইভাবে ওকে হারাতে হত না। এখন কে সামলাবে ওর জায়গা? নীলাঞ্জন যেন না যায় এখান থেকে অ্যাট এনি কস্ট, সেটা আপনাদের দেখতে হবে, তার জন্য যা করবার করুন। যদি মনে হয়, ওর রিপোর্টও এই রকমই হবে, তা হলে এখন থেকেই সেই রিপোর্ট পাল্টাবার চেষ্টা করুন। পয়সা ফেললে সব দেশে সব হয়, দুবাইতেও হয়। সেই রাস্তাগুলো এক্সপ্লোর করুন।

    ম্যানেজার আমাকে আলাদা করে ডেকে বললেন, তুমি কি আমেদাবাদে থেকে বাকি প্রজেক্টটা আমাদের সঙ্গ দিতে পারবে?

    আমি বললাম, কিন্তু আমার কাজটাই তো ক্লায়েন্ট প্লেসের, ক্লায়েন্টের সঙ্গে দৈনিক ডিসকাশন না করে তো আমার কাজ করা যায় না, সেটা অফশোর লোকেশনে বসে কীভাবে হবে?

    ম্যানেজার জানালেন, সে যেভাবে হবে হবে, ডেইলি কল করেও করা যাবে, পুরোটা নাহলে, অন্তত ৭০% যদি হয়, তাও হবে, তুমি দ্যাখো।

    আমি বললাম, দেখুন, ফিনান্সিয়ালি অন্য লোকেশনে বসে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। টাকাপয়সার দরকার বলেই অনসাইট এসেছিলাম। সেটা যদি না হয়, তা হলে আমার পক্ষে তো আমেদাবাদ গিয়ে থাকা সম্ভব নয়। রিলোকেশনের চক্কর কাটব না বলেই কিন্তু আমি আগের কোম্পানি ছেড়ে এই কোম্পানি জয়েন করেছি।

    ম্যানেজারবাবু কথা দিলেন, তিন মাসের বেশি উনি কাটকাবেন না, তিন মাস কোম্পানি থেকেই আমাকে গেস্টহাউসে রাখা হবে, ডেপুটেশনের অ্যালাওয়েন্স যা প্রাপ্য তার সমস্তটাই পাবো। অন্তত এউ ফেজটা, তিন মাসের জন্য যেন আমি এই প্রজেক্টকে সাহায্য করি।

    আমার মাথায় ঘুরছে তখন অন্য চিন্তা। অন্য লোকেশন হলে হয় তো মানিয়ে নিতাম, কিন্তু আমেদাবাদে যে শুনেছি সবাই ভেজ খায়, আর নন ভেজ লোকজনেদের নকি ওরা খুব নিচু নজরে দ্যাখে! আমি অতদিন ভেজ খেয়ে থাকব কী করে?

    কিন্তু কিন্তু করে বলেই ফেললাম কথাটা। ম্যানেজার বললেন, অত চিন্তার কিছু নেই, নন ভেজ রেস্টুরেন্ট ওখানে আছে অনেক, একেবারে পাওয়া যায় না কথাটা ঠিক নয়।

    চোদ্দই সেপ্টেম্বর, দুবাই বাসের ঠিক দু মাসের মাথায় ফেরত চললাম দিল্লি। বললাম, এক সপ্তাহ বাড়িতে থেকে তারপরে আমেদাবাদ যাবো। এর মধ্যে যা কিছু কল টল হবার, বাড়ি থেকেই করব।

    নীলু খুব কষ্ট পেল, হাত ধরে বলল, ভাবতেই পারছি না এইভাবে চলে যেতে হচ্ছে, কে জানে, আমারও হয় তো একই কেস হবে, দুঃখ কোরো না, আবার কিছু না কিছু একটা ভালো অনসাইট হয়েই যাবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন