এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • ছড়ানো ছেটানো কথা ও ঘটনা।

    সে
    নাটক | ২০ আগস্ট ২০১৩ | ২৭৪১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৩ আগস্ট ২০১৬ ০২:৪৮619838
  • ভেবেছিলাম সত্যব্রতর জন্য অপেক্ষা করতে হবে কিছুক্ষণ। কোথায় যেন কী কাজ আছে তার আর্জেন্ট, সেসব সেরে ফিরবে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করাও ভাল। সিধুর সঙ্গে আর কিছুক্ষণ থাকলে আমার পক্ষে মাথা ঠাণ্ডা রাখা আর সম্ভব হতো না। সত্যব্রতকে দেখা গেল বিল্ডিং এর সদর দরজার সামনে। আমাকে দেখেই বলল, এত তাড়াতাড়ি লাঞ্চ হয়ে গেল আপনাদের?
    ওরা এখনো বসে আছে, আমি চলে এলাম। ওখানে বসে থাকলে কাজ শেষ হবে না।
    আমরা ওপরে গিয়ে কাজ শুরু করে দিই আবার। কিছু কিছু জিনিস সোমবার ওকে বোঝাতে হবে অফিসে। সেগুলো ও টুকে নেয়। কিচেন থেকে একটা ফ্লিপচার্ট নিয়ে আসে টেনে। সেখানে পয়েন্টগুলো লিখে নেয়। পরে আর কোনোমতেই ভুলবে না। এই কোম্পানীতে ওকে খুব সুন্দর করে প্রজেন্টেশান করতে শিখিয়েছে। দুটো সিস্টেমের কাজ শেষ। এবার তিন নম্বর সিস্টেম। এটাই প্রোডাকশান বক্স। কাজ শুরু করতে করতে প্রায় বিকেল।
    সত্যব্রত, শোনো যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে, আমি টানা কাজটা করে ফেলতে চাই। তবে সন্ধের মধ্যেই নেমে যেতে পারে। আমরা চা খাই, গল্প করি, আমি আমার নিজের গল্পও বলি ওকে। ওকে একটা খাতায় কিছু কিছু কাজের জিনিস লিখে দিই। আমার নিজের জ্ঞানই সীমিত, তবুও সেই সীমিত জ্ঞানেই যেটুকু কুলোয় ওকে শিখিয়ে দিই ছোটো ছোটো কাজ, কথায় কথায় যেন জাপানে ফোন করতে না হয় ওকে। এতে ওর প্রতি ইম্প্রেশান ভাল হবে না কোম্পানীর। এখন যেটুকু শিখিয়ে দিলাম, সেটুকু দিয়েই ও মোটামুটি কাজ চালিয়ে নিতে পারবে। গত দুবছর কেমন করে যে চালিয়েছে সেটা বিস্ময়কর।
    একটা কথা জিগ্যেস করব সত্যব্রত, তুমি বিরক্ত হয়ে না খেয়ে উঠে চলে এসেছিলে তাই না? সত্যি তোমার কোনো আর্জেন্ট কাজ ছিল কি?
    সত্যব্রত স্বীকার করে, যে তার কোনো আর্জেন্ট কাজ ছিলো না। সিধুর প্রশ্নও সে বোঝে নি। যাদবপুর খড়গপুর শিবপুর দুর্গাপুর এসব বলতে যে তার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি আছে কিনা জানতে চাওয়া হচ্ছিলো সেটা সে বুঝতে না পারলেও, কিছু একটা আঁচ করেছিল। তবে না খেয়ে বেরিয়ে আসবার কারণ সম্পূর্ণ অন্য। দূরের একটা টেবিলে সে তার জামাইবাবুকে বসে থাকতে দেখেছিল। তার নিজের দিদির বর। মন খারাপ হয়ে গেছল তার। সেটাই আসল কারণ উঠে আসবার। নইলে সিধু তাকে ইঞ্জিনিয়ার ভাবল কি মূর্খ ভাবল, তাতে তার কিছুই এসে যায় না। সে তো লুকোচ্ছে না কিছু।
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৩ আগস্ট ২০১৬ ০৩:১১619839
  • সন্ধে আটটা থেকে নটার মধ্যে আমাকে নিতে আসবে, সেরকম ব্যবস্থাই করে এসেছিলাম আজ সকালে। এর ভেতরে কাজ শেষ হতেই হবে। আটটার সময় এলো সত্যব্রতর বৌ এবং মেয়ে ফ্রিস্কুল স্ট্রীট থেকে। ওখানেই সত্যব্রতর বাড়ী, মানে ভাড়া অ্যাপার্টমেন্ট। বৌ কাছেই আরেকটা অফিসে কাজ করে। একটা টিফিন কেরিয়ারে করে সে এনেছে ভাত, রুইমাছের ঝোল, ডাল, একটা ভাজা। সবাই মিলে অল্প করে হলেও খেতে হবে। সে নিজে হাতে রান্না করেছে, না খাইয়ে ছাড়বেই না। ছফুটের মতো লম্বা হ্যান্ডসাম সত্যব্রতর বৌ খুবই ছোটোখাটো। গায়ের রং বেশ ময়লা, মুখশ্রীও একেবারেই তেমন নয় যাকে আমরা সুশ্রী বলে থাকি। বয়সেও মনে হলো সত্যব্রতর চেয়ে বেশ অনেকটাই বড়ো। সে পরেছে একটা সুতীর ছাপা শাড়ী, যে শাড়ীগুলোকে এককালে ভয়েলের শাড়ী বলা হতো। এককথায় তার সাজ পোশাক বলে দিচ্ছে যে সে মধ্যবিত্ত পরিবারের। বাচ্চা মেয়েটা মায়ের কোলেই ঘুমিয়ে পড়ল।
    এখন যে কোনো মুহূর্তে আমাকে নিতে আসবে। আমি তড়িঘড়ি সত্যব্রতর নোটবুকে আরো কয়েকটা দরকারি জিনিস লিখে দিতে লাগলাম, টুকটাক যা যা মনে পড়ে যাচ্ছে। এগুলো যদি ও মন দিয়ে শিখে নেয়, আপাতত ওর চাকরি খোয়া যাবার কোনো চান্স নেই।

    ------------
    শেষ
  • Atoz | 161.141.85.8 | ২৩ আগস্ট ২০১৬ ০৬:৪১619840
  • পিয়ানোর গল্পটা শুনবো। প্লীজ লিখুন।
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৪ আগস্ট ২০১৬ ০০:৩১619841
  • কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স
    -----------------------
    ২০০০সালের অগস্ট মাসের গোড়ার দিকে এক সকালে কোলকাতা থেকে ফ্লাইটে দিল্লি পৌঁছে গেছি। খুচরো কাজের জন্য আমাকে দিল্লিতে উড়িয়ে আনা হয়েছে। আসবার আগেরদিন অবধি কোনো নোটিস ছিল না। সেদিন বিকেলে আমার হাতে ফ্লাইটের টিকিট ধরিয়ে দিয়ে বলা হয়েছিল পরদিন ভোরে ফ্লাইট। আরো বলা হয়েছিল যে রিটার্ণটা ওপেন রাখা আছে, কাজ শেষ হয়ে গেলে ওখানে বললেই কনফার্ম করে দেবে। আমার সঙ্গে আর কেউ যাচ্ছে না। কাজ খুব বেশি কিছু নয়, একটা সফ্টওয়ার ইন্সটল করে দিয়ে আসতে হবে। এমনিতে এরকম ইনস্টলেশনে তখন দিন দেড়েক সময় লাগত। অর্থাৎ আমার কাজ মোট দেড় দিনের। কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ সেটাকে টেনেটুনে বাড়িয়ে দুদিন করে দিয়েছে। সম্পূর্ণ বিনা নোটিশে পরদিন ভোরে আমাকে দিল্লি চলে যেতে হবে। ঘরে একটা ছোটো শিশু রয়েছে, তার ব্যবস্থা কী করব, কিছুই ঠিক করতে পারলাম না। দুটো দিনের কাজ যদি হয়, তবে মধ্যিখানে রইল একটা রাত। সম্পূর্ণ আনঅ্যাটেন্ডেড অবস্থায় একটা ছোটো বাচ্চাকে একা ফেলে রেখে, আমি চাকরির তাগিদে ব্যাগ গুছিয়ে কর্পোরেট স্টাইলে হাসিমুখে উড়ে চললাম দিল্লি অভিমুখে।
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৪ আগস্ট ২০১৬ ০১:৩৭619842
  • এটুকু লিখবার পরে লেখাটুকু পড়ে দেখলাম পরিস্থিতিটা ঠিকমতো বোঝানো হয়নি। একজন মা তার বাচ্চাকে একটা ফাঁকা ফ্ল্যাটে দুটো দিন ও একটা রাতের জন্য একা ফেলে চলে যেতে পারে না। এটা অমানবিক আনএথিকাল। হ্যাঁ। সেটাই। কিন্তু এটাই বাস্তব এবং এই বাস্তবের কোনো অল্টারনেটিভ সলিউশান নেই। একটা কাজ করা যেত, কোনো চেনা পরিচিতের কাছে গিয়ে তাকে রিকোয়েস্ট করা, দুটো দিনের জন্য তোমার কাছে বাচ্চাটাকে রেখে যাব, প্লীজ প্লীজ প্লীজ রাজি হয়ে যাও। এরকম অপশন সেই অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব ছিলো না। আরেকটা জিনিস করা যেত। বেঁকে বসা। বসকে বলা, পারব না। এত অল্প নোটিসে জাস্ট পারব না। ঘরে বাচ্চা আছে, তার ব্যবস্থা না করে পারব না যেতে। আর যদি যেতেই হয়, বাচ্চাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চাই।
    যদি বেঁকে বসতাম, হয়ত বস আমাকে পাঠাতো না প্রোজেক্টে, কিন্তু চিনে রেখে দিত আমাকে। পরে হয়ত ছুতো করে চাকরি থেকে তাড়িয়েও দিতে পারত। বাচ্চা সঙ্গে করে ক্লায়েন্ট সাইটে যাবার অপশন তো একটা বিরাট হাসির কথা, বুঝেই নিত যে আমি ঠাট্টা করছি।
    তাই এসব কথা বলে কোনো লাভ তো হয়ই না, বরং ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। তারচেয়ে বাচ্চা দুটো দিন একা থাকুক ঘরে। তাকে নিরাপত্তার ব্যাপারগুলো বুঝিয়ে দিলেই হবে। খাবারদাবার সবই রইল। দরজা খুলে বাইরে যেন বেরিয়ে না যায় সেটা বলে দিতে হবে, আবার আগুন টাগুন যেন না জ্বালায়, কি কোনো সমস্যা হলে যেন বাইরে বেরিয়ে আসে, কেউ বেল বাজালে যেন সাড়া না দেয়, কি দরজা যেন না খোলে। এইসমস্তই তো। জিনিসটায় ঝুঁকি আছে অবশ্যই। কিন্তু টেলিফোনও আছে ঘরে। মাঝে মাঝে ফোন করে খোঁজ নিতে থাকব। এর চেয়ে বেশি আর কীই বা করতে পারি?
    এসমস্ত অফিসে গিয়ে বললে তারা আমার সামনে হয়ত খুবই সহানুভূতি দেখাবে, স্নেহে গদোগদো হয়ে অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবে, কিন্তু আদতে কোনো সুরাহা হবে কি? হবে না। বাচ্চা দুটো দিন একা থাকুক। দুটো দিন ইস্কুল না গেল নাহয়। ফিরে এসে চিঠি লিখে দেবো, জ্বর কি পেটের অসুখের অজুহাত দিয়ে।
  • কৌতূহল | 178.26.197.46 | ২৪ আগস্ট ২০১৬ ২০:০৯619843
  • বাচ্চার বয়স কত?
  • amit | 213.0.3.2 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৮:২৫619844
  • এটা অতি বাজে ধরণের অমানবিক আর ইররেস্পন্সিবল কাজ হয়েছে, যদি একটা বাচ্ছা কে (ধরে নিচ্ছি 12 বছর এর নিচেই) একা ঘরে রেখে 1-২ দিন চলে যাওয়া হয়। যতই চাকরির চাপ থাকেনা কেন।

    আমরা যে দেশে থাকি, সেখানে কড়া নিয়ম, 12 বছর এর নিচে বাচ্চাকে কোনো ভাবেই একা বাড়িতে বা unsupervised কোথাও ছাড়া যাবে না। কিছু যদি হয়ে যায়, তাহলে বাবা মার্ জেলের ঘানি টানা নিশ্চিন্ত। যে কারণে প্রচুর পৈয়সা গচ্চা দিয়ে হলেও আফটার স্কুল কেয়ার নিতে হয় বা কোথাও যেতে গেলে বেবি সিটার রাখতেই হয়।
  • π | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৮:৩০619845
  • সেই সাত আট বছর থেকে তো একা থেকেছি , এক দুই থেকে পাঁচ ছয় ঘণ্টা। কোন অসুবিধে কিছু তো হয়নি।
    আপনার কোন দেশ ? মানে নিয়মটা এক্স্যাক্টলি কী জানতে চাইছিলাম। বাড়িতে বাচ্চাকে একা রাখলেই শাস্তি ?
  • b | 135.20.82.164 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৮:৩৯619846
  • নর্থ আমেরিকায় এরকম নিয়ম আছে।

    খারাপ কিছু নয়। আমি ক্লাস টুতে পড়ার সময়ে একা ছিলাম, ক্যালেন্ডারে কিভাবে আগুন ধরে সেই এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে প্রায় বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিলাম। আরেকবার, একটা হ্যাঙ্গারের ওপরের হুকটা ইলেকট্রিক প্লাগের দুটো ডান্ডির ওপরে দিয়ে (যাতে পজিটিভ নেগেটিভ দুটই কানেক্ট হয়), সুইচ অন করে, হ্যাঙ্গারটা ছুঁয়ে দেখতে গেছিলাম শক খাই কি না।
  • π | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৮:৫৪619848
  • সে রিস্ক একা ঘরে থাকলেও হতে পারে।

    এরকম নিয়ম আমাদের দেশে হলে লোকজন তো সব জেলে গিয়ে বসে থাকতে পারে। একটু গরীব পরিবারে তো ঘরে ঘরে এরকম হয়ে থাকে। যে দিদি বা মাসি বাড়ি বাড়ি কাজ করতে যাচ্ছেন, তাঁর তাঁর নয় দশ বছরের ছেলে মেয়েকে যদি ডে কেয়ারে রাখতে হয়...
  • b | 135.20.82.164 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৯:০২619849
  • ঠিক আছে। তবু আমি বলব, বাচ্চাকে ঘরে আন-অ্যাটেন্ডেড রেখে যাওয়া ঠিক নয়। কেউ কেউ হয়ত বাধ্য হয়ে রেখে যান।

    আর আমদের দেশ ওদের দেশ কথাটাই বলছি না। কি হলে কি হত সেটাও না। এমনিতেই যে রুলগুলো (দুর্নীতি দমন থেকে শুরু করে অন্য সব কিছু) আমাদের দেশে আছে, সেগুলো ঠিকঠাক চালু হলে দেশের সব লোকই হয়ত জেলখানাতে বসে থাকত।
  • π | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৯:০৯619850
  • আরে আমাদের দেশ ওদের দেশ বলছেন না বলেই তো বললাম। আমাদের দেশে এটা কি আদৌ সম্ভব, নাকি এটা অপরাধ ? ঐ দুর্নীতি নিয়ে যার উদাহরণ দিলেন, তার সাথে তুলনীয় ?

    আপনার মতে তো ঠিকঠাক এগুলো চালু হওয়া উচিত এবং সেটা মানে লোকজনের জেলে যাওয়াও। ৯-১০ বছরের বাচ্চাকে একা ঘরে রাখলে। আন আটেন্ডেড মানে তো একা ঘরেই রাখা উচিত না !

    আচ্ছা, বাচ্চারা যে বাইরে একা খেলতে যায়। গ্রামেগঞ্জে কত জায়গায় বাচ্চারা একা একা খেলে বেড়ায়, ঘুরে বেড়ায়, মাঠে ঘাটে, খেতে, জঙ্গলে, সব পরিবারের জেল হওয়া উচিত ?

    দুর্নীতি ইঃ নিয়ে আমরা তো নিয়মগুলো এখানে আসুক, লোকজন শাস্তি পাক, সেটাই চাই, তো এক্ষেত্রেও দাবি বা চাহিদা সেরকমই নিশ্চয়।
  • b | 135.20.82.164 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৯:২৩619851
  • ১। অপরাধ কিনা জানি না, তবে ঐ যে বললাম,

    "বাচ্চাকে ঘরে একা আন-অ্যাটেন্ডেড রেখে যাওয়া ঠিক নয়"।

    ২। এটা ভায়োলেট করলে, সাতদিনের জেল না দশদিনের ফাঁসি, সেটা ল মেকাররা ভাবুন।

    ৩। আর যদি বাধ্য হয়ে রেখে যেতেই হয়, তবে দেশ সেই দিকে যাক যখন সেই রুলগুলো ইম্প্লিমেন্ট করা যাবে।
  • π | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৯:৩৬619852
  • আর বাইরে আনেটেন্ডেড খেলাধূলা করা নিয়ে ?
  • b | 135.20.82.164 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৯:৪৪619853
  • দলে খেলে তো। সেখানে একটা পিয়ার অ্যাটেনশন থাকে।

    ( এর প্যারালালে দেখুন প্লাস্টিক কিম্বা চাইল্ড লেবার নিয়ে )
  • π | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ০৯:৫৩619854
  • না না, আমি যে উদাহরণ গুলো দিলাম। গ্রাম গঞ্জে প্রচুর বাচ্চাই একা একা মাঠেঘাটে ক্ষেতে বনে বাগনে ঘুরে বেড়ায়। কত বাচ্চা একা একা কত মাঠঘাট জঙ্গল রাস্তা দিয়ে স্কুলে যায়, ক্ষেতে যায়, বাড়ি ফেরে।
  • Ekak | 53.224.129.48 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ১০:০১619855
  • গোটা পৃথিবীর একটাই রুলার হোক । আর একটাই রুল । ভালো করে তেল মাখিয়ে রেখে দেবে । বেয়াদপি দেখলেই পেচুনে ।
  • b | 135.20.82.164 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ১০:০৪619856
  • "কেউ কেউ হয়ত বাধ্য হয়ে রেখে যান"।
  • amit | 213.0.3.2 | ২৫ আগস্ট ২০১৬ ১১:২০619857
  • আমি অস্ট্রেলিয়া তে থাকি। আইনত বাচ্চাকে (< 12 বছর) একা রেখে যাওয়া এখানে অপরাধ। যতক্ষণ কিছু না হচ্ছে , তখন কারোর মাথা ব্যাথা নেই । কেও যদি কয়েক ঘন্টা রেখে চলে যায় এবং কিছু ক্ষতি না হয়, আর কেও না জানে, তাহলে কার কি এসে গেলো ? না জানলে শাস্তিও নেই। কিন্তু যদি কেও একলা ছেড়ে যায়, এবং বাচ্চা খেলতে গিয়ে ঘরে আগুন লাগে, অথবা অন্য কোনো ক্ষতি হয়, বাচ্চার বা অন্যদের, কেও যদি কমপ্লেইন করে তখন পুলিশ কে পয়সা দিয়ে পার পাওয়া যাবে না। সোজা আইন, বাচ্চা যখন আমাদের, দায়িত্ব টাও আমাদের।
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০০:২৬619859
  • ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট আধঘন্টা মতন ডিলে করে ল্যান্ড করেছে দিল্লিতে। ডোমেস্টিক টার্মিনাল থেকে বেরোনোর সময় ভাবলাম একটু ফোন করা যাক বাড়িতে, কিন্তু পাবলিক টেলিফোন দেখতে পেলাম না, খুঁজবার সময় নেই তেমন, পূর্বনির্ধারিত ব্যবস্থামত আমাকে নিতে আসবে গাড়ি, ড্রাইভারের হাতে থাকবে আমার নাম লেখা বোর্ড। কোন হোটেলে গিয়ে উঠব সেটা কোলকাতার অফিসে বলে দেয় নি। আমাদের সমস্ত কমিউনিকেশনই মুখে মুখে। যারা আগে আগে চলে গেছে এই প্রোজেক্টে তাদের একজনকেও আমি চিনিনা, তারা যে হোটেলে থাকছে সম্ভবত সেখানেই আমি থাকব। একজন সিনিয়র গতকাল বলেছিল যে সাকেত খুব ভালো জায়গা, আমার হোটেল সাকেতেই। ড্রাইভার হোটেল থেকেই আসবে। আমি তাও হোটেলের নাম বারবার জিগ্যেস করতে লাগলাম, তখন সিনিয়র কাকে যেন একটা জিগ্যেস করে জানালো, কৃষ্ণা, তখুনি আরেকজন এসে বলল, সে শুনেছে হোটেলের নাম সিদ্ধার্থ। দুটোর মধ্যে একটা হবে। কিন্তু আমার এসব নিয়ে চিন্তা করবার দরকার নেই, ড্রাইভার ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেবে। এবং ড্রাইভার একবার আমাকে পৌঁছে দিলেই আমি আমার কোম্পানীর লোকেদের দেখা পেয়ে যাব। চিন্তা করবার কিচ্ছু নেই। সত্যিইতো, এত চিন্তা করে হবেটা কি? একসময় টানা দশ বছর দিল্লিতে যাতায়াত করে বছর প্রতি গড়ে দুবার, যদিও সাকেত এরিয়ায় কখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি। খুব সময় তো কাটেওনি মধ্যিখানে, এত চিন্তা করবার কিছুই নেই। সাকেত কৃষ্ণা সিদ্ধার্থ এই তিনটে শব্দ মাথায় রাখলেই হবে। আরেকটা জরুরী কথাও জেনে নিলাম সিনিয়রের কাছে, ক্লায়েন্টের অফিসে কীভাবে যাতায়াত করব? সিনিয়ার কনফিডেন্টলি বলল, হোটেল থেকে কাছেই, তাছাড়া গাড়ির ব্যবস্থা আছে, দুটো তো দিন, যাও ঘুরে এসো।
    এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে দেখি ডানপাশে অনেক লোক হাতে বোর্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে, এর মধ্যে একটা বোর্ডে আমার নাম লেখা থাকবে। প্রতেকটা বোর্ড পড়তে পড়তে এগোতে লাগলাম, বোর্ড হাতে লোকেদের লাইন শেষ। আমার নাম নেই। আরেকবার উল্টো পথে গিয়ে বোর্ডের লেখা পড়ছি, হয়ত মিস্ করে গেছি। উঁহু, এবারেও নেই। এর মধ্যে অন্য ফ্লাইট এসে গেছে, সেই ফ্লাইটের যাত্রীরাও ব্যাগেজ ট্রলিসহ বেরোচ্ছে ঐ একই পথ দিয়ে। চড়চড় করে রোদ উঠেছে। আরো দুবার খুঁজলাম নিজের নাম। কিছুলোক আমাকে লক্ষ্য করছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ট্যাক্সি চাহিয়ে? ম্যাডাম কাঁহা যানা হ্যায় বোলো, ইত্যাদি। একটু ভেবে নিয়ে তাদের একজনকে বললাম, সাকেত।
    থ্রি হান্ড্রেড রুপিজ।
    তিনশো! এ নির্ঘাৎ আমাকে ঠকাচ্ছে। কিন্তু রাজি না হয়ে উপায়ও নেই। তারপরে দরাদরি করলে সে ঢাইসো তে রাজি হয়। কিছুদূর চালানোর পরে সে জানতে চায় আমার হোটেলের নাম। আমি একটু ভেবে উত্তর দিই, কুরুক্ষেত্র।
    হোটেল কুরুক্ষেত্র?
    একটু আশ্চর্য হয় ড্রাইভার। আমি নিজেও বুঝতে পারি নামটা এরকম নয়, কিন্তু চিন্তায় ভাবনায় তখন কৃষ্ণা এবং সিদ্ধার্থ মিলে মিশে ঐরকম হয়ে গেছে। সত্যিকথা বলতে হোটেলের নাম তো ঠিক করে জানিও না।
  • কৌতূহল er jonne | 119.177.162.207 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০১:১২619860
  • বাচ্চার বয়স ছিল সাড়ে চার
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০১:২৩619861
  • সাকেত এলাকায় পৌঁছনর পর একটু চক্কর কাটতে হয় হোটেলের সন্ধানে। একটা ম্যাক্ ডোনাল্ডসের পাশের রাস্তা দিয়ে এগোতেই দেখতে পাই হোটেলটা, নামটাও মনে পড়ে যায়। তিনশোই দিই ড্রাইভারকে। কোম্পানীতো ফিরিয়ে দেবে এ টাকা আমাকে।
    হোটেলে ঢুকে চেক ইন করছি, রিসেপশানের লোকটি বলে যে আমায় আনতে গাড়ি গেছে, সেই গাড়িতে আসিনি কেন।
    গাড়িতো খুঁজে পেলাম না।
    স্ট্রেইঞ্জ!
    অবাক হয় রিসেপশনিস্ট। তাকে জানাই, আমাকে অফিস যেতে হবে। আপনি জানেন, আমাদের অফিসের অন্য কোলিগরা কোথায়?
    তারা তো চলে গেছে।
    চলে গেছে? তাহলে আমি কীকরে যাব এখন?
    চিন্তা করবেন না। গাড়ি ওদের ড্রপ করে ফিরে আসবে, সেই গাড়িতে যাবেন।
    সিনিয়র তো আমায় বলেই দিয়েছিল, ক্লায়েন্টের অফিস কাছেই, গাড়ির বন্দোবস্তও আছে। আমি রিসেপশনে বসে অপেক্ষা করি গাড়ির। প্রায় এগারোটা বাজতে চলল। আমার কোলিগরা নিশ্চয় অনেকক্ষণ ওয়েট করেছিল আমার জন্য। নইলে এত দেরি করে কেউ কাজে যায়?
    এর মধ্যে আমাকে নিতে যে গাড়ি গেছল এয়ারপোর্টে, সে ফিরে এসেছে। সুপারভাইজার গোছের একজন তাকে খুব বকাবকি করে তার আক্কেল আছে কিনা জানতে চেয়ে। সে বোর্ড হাতে নিয়ে আমাকে দেখায়। সেখানে অদ্ভুত একটা নাম লেখা আছে। সে নাম কোনো অ্যাঙ্গেল থেকেই আমার নাম নয়।
    অফিসের গাড়ি এখনো ফিরছে না দেখে সেই সুপারভাইজারকে বলি, আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে, আর কোনো গাড়ি নেই? একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিন।
    তখন সেই এয়ারপোর্ট ফেরৎ গাড়িতেই আমার যাবার ব্যবস্থা হয়। এই ড্রাইভার চেনে ক্লায়েন্টের অফিস। একবার নাকি গেছেও আগে। এয়ার কন্ডিশান্ড মারুতি এইট হান্ড্রেড। হোটেল থেকে একটু এগিয়ে ড্রাইভার পেট্রল পাম্পে ঢোকে তেল ভরতে। জানি দেরি হয়ে যাচ্ছে, তবু উপায় নেই, ধৈর্যের পরীক্ষা। ঘরে ফোন করা হল না এখনো। ক্লায়েন্টের অফিসে পৌঁছে একটা ফোন আমাকে করতেই হবে কোলকাতায়। নানান কথা চিন্তা করছি। আজ অর্ধেক দিন কোনো কাজ করা হলো না। ইন্সটলেশান শেষ করতে পারবো তো দেড় দিনের মধ্যে? কিন্তু গাড়ি চলছে তো চলছেই। সিনিয়র যে বলেছিল হোটেলের কাছেই অফিস! ট্র্যাফিকের জন্য একটু ধীরে চলছিলো গাড়ি, একটু পরে ট্র্যাফিক হালকা হয়ে যায়। গাড়ি মোটামুটি স্পীড নেয়, আমি ড্রাইভারকে জিগ্যেস করি, ভাইসাব কতক্ষণ লাগবে যেতে?
    ভাইসাব উত্তর দেয়, ন্যাশানাল হাইওয়ে ধরব এখন। দুঘন্টা মতন লাগবে।
    সেকি! কেন? কোথায় যাচ্ছেন ভাইসাব?
    রেওয়াড়ি।
    অ্যাঁ! সেটা কোথায়?
    ভাইসাব কোনো উত্তর দেয় না।লোকটা জানে তো, কোথায় আমার ক্লায়েন্টের অফিস?
    রেওয়াড়ি কেন? রেওয়াড়ি কোথায়?
    আমার উদ্বেগ দেখে সে বুঝিয়ে বলে ওখানেই একটা কোম্পানীতে আমার কোলিগরা গেছে। যেতে দুঘন্টা লাগে, ফিরতে দুঘন্টা। জায়গাটা জয়পুর যাবার পথে পড়ে, তবে স্টেট সম্ভবত রাজস্থান নয়, হরিয়ানাই হবে।
  • আরো কৌতুহল | 178.26.197.46 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০১:৪৫619862
  • সাড়ে চার বছরের বাচ্চাকে একদম একা দুইদিন এক রাতে বাড়িতে? বড় ভাইবোন, পাড়া প্রতিবেশী ছাড়া?????

    বিলেতের কথা তো বাদই দিলাম, এইটা ভারতের তুলনাতে, গ্রাম গঞ্জের তুলনাতেও রীতিমতন ...... যাকে বলে পুঁদিচ্চেরি ব্যপার!!!

    এইটা কি সত্যি? মানে একদম সত্যি?
  • Ekak | 53.224.129.49 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০২:১১619863
  • পুঁদিচ্চেরি বটে । কিন্তু তাতে সত্যি হয় আটকাবে ক্যানো ? আমরা কী কেও লাইফে কখনো পুঁদিচ্চেরি কেস করিনি নাকি :):) পরিস্থিতি কত কিছু করিয়ে নেয় ।
  • কৌতূহল মিটে গেছে | 178.26.197.46 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০২:১৫619864
  • আগের প্রশ্নটা ফস করে হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে। দুঃখিত।

    কুমড়োদিদি, মনে কিছু করবেন না। গল্পটা লিখে যান।
  • কৌতুহল মিটে গেছে | 178.26.197.46 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০২:১৯619865
  • না না না সত্যি মিথ্যে নিয়ে আর মাথা ঘামাচ্ছি না। সবই হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। গল্পটাই আসল তো। :D
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০২:২১619866
  • ফ্লাইট ধরবার চক্করে অনেক ভোরে উঠতে হয়েছিল, গোছগাছ করতে করতে কাল ঘুমোতেও গেছি গভীর রাতে, তারপর এতক্ষণ ধরে যা যা হলো সব মিলিয়ে রীতিমতো ক্লান্ত হয়ে গেছি। এয়ারকন্ডিশান্ড গাড়িতে আরাম করে বসে যেতে যেতে ঘুম পেয়ে গেল অচিরেই। তারওপর ড্রাইভার মিউজিক সিস্টেমে গান চালিয়ে দিয়েছে রাজা হিন্দুস্থানির। পরদেসি পরদেসি জানা নেহি, মুঝে ছোড়কে, মুঝে ছোড়কে।
    কিছুক্ষণ ঘুমোনোর পরে ফের জেগে উঠেছি, এর কারণ রাস্তার ঝাঁকুনি। ন্যাশানাল হাইওয়ে হলেও, এ রাস্তায় খানাখন্দ রয়েছে কিছুটা জায়গা জুড়ে। হয়ত সারাতে হবে। দুদিকে দৃশ্যাবলী এখন অন্যরকম। শহর থেকে অনেক দূরে এখানে রুক্ষ্ম প্রকৃতি। হাইওয়ের একদিকে যাবার রাস্তা উঁচুতে, ফিরবার রাস্তা নীচুতে। দুটো রাস্তার মধ্যিখানে গর্তমতো। কেউ চেষ্টা করলেও ইউটার্ণ নিতে পারবে না। ক্রমাগত চলছে ট্রাক। মাঝে মাঝে চলেছে উট। একদল উট হাইওয়ের ওপরে মালের বোঝা নিয়ে চলেছে। তাদের সঙ্গে কোনো মানুষ নেই। টোটাল আনম্যান্ড কী বলব, ফ্লীট? ওরা জানে কোথায় যেতে হবে। হঠাৎ উল্টোমুখ থেকে একটা ট্রাক চলে আসে। ডেঞ্জারাস ব্যাপার। সব ট্র্যাফিক চলেছে একদিকে, সে চলছে স্রোতের বিপরীতে। অন্য দিকের রাস্তায় চাইলেও নামতে পারছে না। বেচারা কোনো একটা এক্সিট মিস করেছিল সম্ভবত, তারপরে ভুল সংশোধন করতে ইউটার্ণ নিতে পারেনি, এদিকে সময়মত মাল পৌঁছনোর তাড়া আছে, অগত্যা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলেছে। ঝুঁকিতো শুধু ওর একার প্রাণের নয়, মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে আরো অনেকের প্রাণ যেতে পারে।
    ড্রাইভার জানায়, এ জিনিস নিয়মিত হচ্ছে। দেরি হয়ে গেলে মালিকের কাছে গালি খেতে হবে, আবার ভুল হয়ে গেলে অনেক দূরে গিয়ে তবে ট্রাক ঘোরাতে পারবে, তাই এরকমই করে তারা। অ্যাক্সিডেন্টও হচ্ছে, ট্রাক উল্টোয়, লোক মরে।
    রেওয়াড়ি শব্দটা আগে কোথায় যেন শুনেছি মনে হয়। তবে কি সিনিয়র উল্লেখ করেছিল? উঁহু, তা কীকরে হবে? সে তো স্পষ্ট বলল সাকেতের খুব কাছে ক্লায়েন্ট সাইট। তাহলে কোথায় শুনলাম? তবে কি রামসুখ তেওয়ারির ছড়ায় ছিলো বুন্দি কি রেওয়াড়ি? হতে পারে। সেরকমই মনে হচ্ছে।
  • কুমড়োপটাশ | 198.155.168.109 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ০২:৫৯619867
  • দুপুর একটার কাঁটা পার করে গাড়ি পৌঁছল ফ্যাক্টরির গেটে। চারদিকে ধূধূ প্রান্তর। না আছে লোকালয়, না আছে গাছপালা। এরকম একটা লোকেশনে ফ্যাক্টরি বানিয়েছে কিন্তু কর্মচারীরা যাতায়াত করে কীকরে? বাস চলে নাকি এই হাইওয়েতে? অত ভেবে কোনো লাভ নেই। সময় বয়ে যাচ্ছে হুহু করে। গাড়ি থেকে নেমে অল্প একটু গরম হাওয়া হলকা লেগেছিল গায়ে, ফ্যাক্টরিতে ঢুকতেই যত্ন আপ্যায়ন করে এসি রুমে ঢুকিয়ে নিল আমাকে। মোটামুটি হৈহৈ পড়ে গেছে আমার আগমনে, বিয়েবাড়িতে বর এলে যেমন হয়। কিংবা চিড়িয়াখানায় কোনো নতুন জন্তু এলেও এরকম হতে পারে। মাঝারি সাইজের রান্নাঘরের মতো একটা ঘরে আমাকে ঢুকিয়ে দিয়েছে, মেঝের ওপরে সার্ভার রাখা রয়েছে। সেই সার্ভারের ওপরে অনেক কাগজপত্র ফাইল ইত্যাদি ডাঁই করা। মনিটরটা অল্প দূরে একটা টিনের টেবিলের ওপরে রাখা। টেবিলের পায়া ঢকঢক করছে। গোটাকতক মেটালিক ফোল্ডিং চেয়ার। কাচের দরজা। মাঝে মাঝেই লোকজন উঁকি ঝুঁকি মেরে আমাকে দেখে যাচ্ছে। যারা দেখছে, তাদের মধ্যে ক্লায়েন্টের লোকও আছে, আমাদের কোম্পানীর লোকও থাকতে পারে।
    আমি ঘরটা ভালো করে দেখে নিলাম। মেঝেতে এক কোণে অগোছালো কাগজের স্তুপের আড়ালে একটা জিনিস দেখা যাচ্ছে। ঐটাই আমার এখন সবার আগে দরকার। টেলিফোন। আমি রিসিভার তুলে কানে নিয়ে দেখলাম ডায়াল টোন আছে কিনা। আছে। এবার নির্দ্বিধায় ডায়াল করে ফেললাম বাড়ির নম্বর কোলকাতার এরিয়া কোড সহ। রিং হচ্ছে ওদিকে। রিং হয়েই চলেছে। এদেরকে জিগ্যেস করিনি, পারমিশান নিইনি, লং ডিস্ট্যান্স কল করছি, এটা কি বেআইনি কিছু? হু কেয়ার্স? ফোন বেজে যায়, একটা লোক এতক্ষণে ঘরটার ভেতর ঢুকল। উচ্চপদস্থ কেউ হবে মনে হচ্ছে। আমি রিসিভারটা কান থেকে সরিয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে হাসি হাসি মুখ করি। কান থেকে সরালেও রিং হবার শব্দ শোনা যাচ্ছিলো, তারপরে ওপাশে "হ্যালো" শোনা গেলেও আমি কিছু বলতে পারি না, ফোনটা কেটে দিয়ে লোকটার মুখোমুখি হয়ে বলি, হ্যালো।
  • sch | 132.160.114.140 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ১১:০১619868
  • বাচ্ছাটি কি নিজের খাবার নিজে নিয়ে খেতে পারত? মানে আমার জানা কোনো সাড়ে চার বছরের বাচ্চাই পারে না।
    আর চাকরিক্ষেত্রে বসকে কি এতটা মাথায় চড়তে দেওয়া উচিত যে বলা মাত্র যেতে হবে - নিজের পরিবারের ন্যুনতম সুরক্ষার ব্যবস্থা করার সুযোগটুকুও পাওয়া যাবে না
  • d | 144.159.168.72 | ২৬ আগস্ট ২০১৬ ১১:০৭619870
  • এই সাড়ে চার বছরের কথাটা কুমড়ো কনফার্ম করেছেন বলে তো মনে হচ্ছে না, অন্য কেউ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন