এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • লোকাল ট্রেনের খোরাকসমূহ

    Samik
    অন্যান্য | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ | ৬২৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Samik | 61.95.167.91 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১১:২৪669466
  • লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করার অভিজ্ঞতা সম্ভবত অনেকেরই নেই। কিন্তু গুরুতে যেহেতু হুগলি জেলা এবং অন্যান্য শহরতলি সংখ্যাগুরু, তাই সুতোটা ছাড়লাম। শহর কলকাতারও অনেকেই নিশ্চয়ই লোকাল ট্রেনে বিভিন্ন সময়ে চড়েছে, ডেলি প্যাসেঞ্জার না হলেও।

    এই সুতোয় বরং ধরা থাক, লোকাল ট্রেন এবং তার প্যাসেঞ্জারদের নিয়ে স্মৃতিতে এবং জোক্‌সে ধরে রাখা অসংখ্য খোরাক।

    হাওড়া শিয়ালদা লাইন শুধু নয়, আমরা দিল্লি বোম্বের এমনকি বিলেতের লোকাল ট্রেন নিয়েও বাজে ভাটাতে পারি।
  • saa | 62.254.64.15 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১১:৫১669477
  • বিলেতের লোক্যাল টেরেন এ বিশেষ করে লন্ডনে সব হুঁকোমুকো হ্যাংলার দল। কেও হাসেনে। বড় জোর চোক পিটপিট করে আর মুক ব্যাদান করে হাসির মতো একটা মাসল কনট্র্যাকশান করে মাত্তোর! তবে একটি সুন্দরী নীলনয়না তেনার মেক আপ এক্কেরে স্ক্র্যাচ থেকে শুরু করেন। আড় চোকে দেকতে দেকতে বেশ টাইম পাস হয়ে যেতো। কেউ পাশে বসলে ওনার মুকে হাজার বিরক্তি!
    আমার বর পেরায় ই দীর্ঘশ্বাস ফেলে আহা সেই যে আমার খড়গপুর লোক্যালের দিনগুলি.....
  • dam | 202.54.214.198 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৩:১৩669488
  • আমার ১৮ বছর ধরে ডেলী প্যাসেঞ্জারির অভিজ্ঞতা এখেনে লিকে দিলে আত্মজীবনীতে কি লিখব? অ্যাঁ? ওসব হবে নে।
  • Samik | 61.95.167.91 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:০২669499
  • আত্মজীবনীতে ডিটেইলস লিখবে, সে তো আম্মো অমার হস্টেলের খোরাক লিখি নি, লিখলে আনন্দ পুরুস্কার পেতুম নি।

    হাইলাইট্‌স লেখো।

    আম্মো ডেলি পাষন্ড ছিলুম না, আমার বাপ ছেলো। তবে ব্যান্ডেল লোকালের সঙ্গে আমার বলতে গেলে নাড়ীর যোগ।
  • maitri | 203.197.89.222 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:২৩669510
  • আমার ট্রেন এ যাতায়াতের সেই রকম ধারোনা নেই। আমি university যেতাম বাস এ। প্রায় দু ঘন্টা লাগতো।সোমবার সব থেকে বেশি ভীড় হতো। এক দিন এই রকম ই এক সোমবার বাস এ পা রাখার জায়্‌গা নেই ,ভীষন ভীড়।বাস চলছে ও খুব আস্তে।তাই যারা অনেকক্ষন বসে আছেন ,উঠে দাড়াচ্ছেন , আর এক দল বোসছেন।
    তখন একজন বলে উঠলেন driver টা অনেকক্ষন বসে আছে , তাকে তুলে দিই।
  • Parolin | 213.94.228.210 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:৩৫669521
  • এই সদ্য সপ্তমীর দিন। কোলকাতা থেকে বাড়ি যাবো। বাড়ির গাড়ি খারাপ। কোনো ট্রেনে রিসার্ভেশান পেলুম না অতএব লোকালেই যাবো। বাড়ি যাওয়া নিয়ে কথা।
    ট্রেন থামতেই দুড়দাড় করে উঠে একটিমাত্র ফাঁকা জায়গা পেয়ে দিশেহারা হয়ে গুঁতিয়ে-গাঁতিয়ে এগিয়ে গেলুম। পেয়েও গেলুম। বসতে যাবো অমনি পেছন থেকে হাঁ হাঁ।" লোক আছে , লোক আছে"। এক চিমড়ে মাঝবয়সী ভদ্রলোক।
    "লোক আছে মানে ? "
    "মানে , ঐটে আমার জায়্‌গা"।
    "মানে?"
    "আমি ঐটেতে রোজ বসি।আমি ডেলি-প্যাসেন্‌জার জানেন?"
    সীট তুমি কার ? যে নোংরা-কালো রুমাল রাখে তার কিম্বা যে আগে এসে দখল করে তার।
    অতএব আমি লেগে যাই খ্যরখেরিয়ে। তিনি ও ছাড়বেন না। আমি বেশ গ্যাঁট হয়ে বসে টেরিয়ে বরের দিকে তাকাই। বেচারা সফিস্টিকেটেড বর আমার ভীড়ের মধ্যে চিঁড়ে-চ্যাপ্টা। ইশারায় বলে উঠে যেতে। এইসান গা জ্বলে যায় এবং বলাই বাহুল্য আমি উপেক্ষা করি। খানিকপরে তিনি হাল ছাড়েন। যেতে যেতে ভেংচিয়ে বলে "কি সব পাবলিক উঠে আজকাল ট্রেনে , দেখে তো মনে হয় ভদ্রবাড়ির মেয়ে , সালা সপ্তমীর সকালটাই যাতা করে দিলে"।
    আমি বিজয়িনী সগৌরবে বাপের বাড়ির দিকে কু-ঝিক-ঝিক করে এগিয়ে যাই।
  • dam | 202.54.214.198 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:৫৪669532
  • বেশ করেছ। উফ্‌ এই নিয়ে কত যে মারপিট হয়েছে বিভিন্ন ট্রেনে!
  • Shuchismita | 141.218.67.246 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৭:৫৭669543
  • ব্যাণ্ডেল-বর্ধমান-শেওড়াফুলি-তারকেশ্বর লোকালের "মিঠুনের মা"কে মনে আছে কারো? আমার ডেলি প্যাসেঞ্জারীর দিনগুলোর কথা ভাবলেই মিঠুনের মাকে সবার আগে মনে পড়ে - "ল জে এ এ এ এ ন......."
  • dam | 202.54.214.198 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ১৮:১৯669548
  • মিঠুনের মা কে খুব মনে আছে। গতবছরও দেখেছি।
    "মিঠুনের মা হেমামালিনী-ঈ"
    "ঐ দিদি তুমি গালটা এমন আলুর মত ফুলিয়ে রেখেছ কেন গো? আমার মিঠুনের জন্য সবাই একটা করে লজী-এ-এ-ন নিয়ে যাবেন গো দিদিরা"
  • Tirthankar | 130.207.93.156 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ২০:১১669467
  • "হে ভগবান, যদি কিইইইইইইইইইইচু করো মোরে দান ক্রিং ক্রিং'
    হাওড়া-ব্যান্ডেল লোকালে রেগুলার এন্টারটেইনমেন্ট ছিল। ফোক সং উইথ হ্যান্ড্‌স্‌। ক্রিং ক্রিং টা লাঠির ডগায় বাঁধা একটা সাইকেলের বেল থেকে উৎসারিত।
  • Tirthankar | 130.207.93.156 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ২০:১৯669468
  • একটা কম্পার্টমেন্টে নিয়মিত মেহফিল বসত; ভদ্রেস্বরের বিট্টুদা বাচ্চাদের খেলার প্লাস্টিকের মাইক নিয়ে গাইতেন শ্যামল মিত্রর "ঐ ঝিরিঝিরি পিয়ালের কুঞ্জে"। কামরার দেওয়াল ধমাধম পিটিয়ে সঙ্গত করতেন চন্দননগরের বকাইদা। আর এক দাদা প্লাস্টিকের চিরুনি নিয়ে ঝিকচ্যাক ঝিকচ্যাক ম্যারাকাস বাজাতেন। হেব্বি জমে যেত।

    মুশকিলটা হত বকাইদা একটু থামলেই হুমদো মত আরেক ভদ্রলোক কিশোরকুমারের "দিল অ্যায়সা কিসিনে মেরা তোড়া' গানটা গাইতেন, তার প্রতিটা লাইনে একই সুর। ওনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হত, "দাদা, গানটাতে আর সুর নেই?' নির্ঘাৎ ন্যাড়ার মত বলতেন, "আছে, তবে অন্য গানে।'
  • Tirthankar | 130.207.93.156 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ২০:৪২669469
  • আর ট্রেনে অনবরত "বালিতে ভাজা বাছাই করা বাদাম - একটাকা দুটাকা প্যাকেট' শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে পার্থ একদিন বলেছিল, "এতদিন বালি দিয়ে যাতায়াত করছি, কোথাও তো বাদাম ভাজা হতে দেখলাম না!'
  • ® | 221.135.212.78 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ২১:৪১669470
  • জনতা,
    কেউ রাবন্দার সেই মেন লাইন কড লাইন লোকাল ট্রেন নিয়ে প্রাচীন লেকা টা একটু দিয়ে দাও না এই থ্রেডে।
  • dam | 61.246.148.223 | ১৩ অক্টোবর ২০০৬ ২২:১৪669471
  • ক্যামনে দেব? অত টাইপ করবে কে? আর ট্রান্সলিটারেশান তো হচ্ছে না।

    "রাবন্দার লেখা" কি হে? কি অন্যায়!! রাবন্দা জম্মে টেরেনে চড়েছেন নিকি?
  • tan | 131.95.121.127 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ০১:৫৩669472
  • যার পুষ্পক রথের মতন একটা পোস্ট মডার্ন বস্তু আছে,সে কোন্‌ দু:খে ট্রেনে চড়বে?
  • Tirthankar | 130.207.93.156 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ০২:২৮669473
  • না না, রাবন্দা একবার ট্রেনে চড়েছিলেন বইকি, পুষ্পক রথে কি সব মেক্যানিক্যাল ফল্ট হওয়াতে ওনাকে মানকুন্ডুতে রথ ল্যান্ড করিয়ে ছদ্মবেশে ব্যান্ডেল লোকাল চড়ে হাওড়া যেতে হয়েছিল দক্ষ মেক্যানিকের সন্ধানে। তখনই উনি সত্যেন দত্তের কবিতার অনুকরণে এই পদ্যটি রচনা করেন।

    কোন্‌ রেলেতে ফেরিওয়ালা বেচে টাকায় দশটা কলম
    কোন্‌ রেলেতে চড়তে গিয়ে যায়রে কেনা দাদের মলম
    কোথায় কালো পোড়া মবিল ঝালমুড়িতে মাখায় রে -
    সে আমাদের সাধের রেল, হাওড়া ব্যান্ডেল শাখায় রে

    কোথায় পানি ছল্‌কে ওঠে গামলা ভরা জ্যান্ত মাছে
    কোথায় ছানার পুঁটলি চড়ে, চালের বস্তা পাছে পাছে
    সর্বহারা থীসিস লেখে রেল অবরোধ ডাকায় রে
    সে আমাদের সাধের রেল, হাওড়া ব্যান্ডেল শাখায় রে

  • Paramita | 143.127.3.10 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ০২:৪২669474
  • এমন লিখলে অবিশ্যি তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে পোমো। তালিয়া।
  • Gaza | 170.213.132.253 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ০২:৫১669475
  • না ! গাঁজা খেয়ে লিখি্‌ছনা
    লোকাল টেরেনের অনেক গলপো আছে কিন্তু মেট্রো র ঘটনা টা অগে শোনো।
    ৯:১০ এর মেট্রো তে পার্ক স্ত্রীট এ নামবো বোলে তৈরি।
    বেশ ভিড়। মেট্রো ডোর গুলি মাঝে মাঝে খারাপ থাকে , তাই ডোরের ওপোর sticker লাগনো থাকে This Door is under maintenance... ,please use other door..
    দেখ্‌লাম ঐ sticker টা এক ভদ্রমহিলার পস্‌চাত দেশে (বুঝে নিতে হোবে পাছায়) সেঁটে আছে।
    লজ্জা না কোরে বোল্লাম excuse me...
    ভদ্রমহিলা sticker ট না পোরেই খুলে ফেলে আমকে একটা thanks দিয়ে চলে গেলো।অশেপাশের পাবলিক খুব হাসি্‌ছলো। মোনে হোলো তারাই stickerটা লাগিয়ে ছিলো।
    গাঁজা
  • tan | 131.95.121.127 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ০২:৫৩669476
  • পাবলিক ই শেষে মুরগী হলো!
    একেই বলে বুমেরাং!!!!!!
  • tan | 131.95.121.127 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ০৩:০০669478
  • ট্রেনের গল্পে মারাত্মক ভাষাবিভ্রাট দেখা দিয়েছিলো দমদির গল্পে। গল্পটা কও।সেও হাওড়া ব্যান্ডেল মেন লাইন।
    ঐ টেরেন থেকে টেইনে ফেলে দেবার গল্পটা।
  • dam | 61.246.73.205 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ১৩:২৭669479
  • ঠিক। ওটা যখন আগেই বলা হয়ে গেছে, তখন আত্মজীবনীর মায়া না করে আরেকবার লিখে দেওয়াই যায়। কিন্তু তনু, তোমার মনে আছে?? সে তো বোধহয় আড়াই তিন বছর আগে লেখা। আমার পেরথম এনট্রি।

    সে একটা কান্ড বটে। আমি তখন সবে ডেলী প্যাসেঞ্জারী শুরু করেছি এগারো ক্লাসে উঠে। তখন বসার জায়গা থাকলেও বসতাম না। একদিন এরকমই ব্যান্ডেল লোকালে উঠে দরজার কাছাকাছি দাঁড়িয়েছি। পাশে সেন্ট জোসেফসের ৩ টে মেয়ে নিজেদের মধ্যে ফরফরিয়ে ইংরাজীতে কথা বলছে। সঙ্গে একজনের বডিগার্ড -- বেশ লম্বাচওড়া দশাসই মহিলা। অমন "খাড়ইয়া খাড়ইয়া ইংরিজি কওন" শুনে আমার বেশ একটু হীনমন্যতাই হচ্ছিল। তা ৩ কন্যের একজন আমাকে যেই বলেছে Can you shift a bit? অমনি আম্মো চান্স পেয়েছি দেখাতে যে কিছু কম নইকো। আমি স্মার্টলি sure বলে দরজার দিকে আরেকটু সরে দাঁড়াই। ওরে বাবা গো ---- সেই বডিগার্ড হঠাৎ একেবারে বাঘের মত লাফ দিয়ে প্রায় আমার ওপর পরে, শাড়ীর আঁচল মুঠো করে ধরে আমাকে ঐ চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেবার চেষ্টা করতে লাগলেন। সঙ্গে প্রবল তর্জন গর্জন। আমি তো কোনরকমে রড পাকড়ে ধরে আত্মরক্ষা করছি। ৩ কন্যাও বুঝছে না হঠাৎ কি ঘটল। এরকম সহসা সৃস্ট ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে দক্ষ আরো কিছু মহিলা তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে আমাকে টেনেটুনে ছাড়ালেন। তখনও সমানে গর্জন চলেছে। এইবারে আস্তে আস্তে শোনা গেল-- "ভদ্দরনোকের মেইয়ে তুই ভদ্দরনোকের মেইয়েকে শুওর বলতিচিস? তোরে আমি টেরেন থেকে টেইনে ফেলে দুবনি?" তাঁকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করতে (৩ কন্যাই চেষ্টা করছিল, আমার আর তখন কিছু বোঝানোর ক্ষমতা নাই) তিনি আরো রেগে গেলেন। "ছি ছি ছি ইশকুলে 'লিশচয়'কে 'শুওর' বলা শিকায়!! আর তোমরা তাই শিকতে যাও!! এন্নাম নেকাপড়া!"
  • Samik | 125.23.109.246 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ২১:৫৩669480
  • আরে এ তো একটা জোক্‌স চালু আছে এই নিয়ে।

    তার্কেস্‌সর লোকাল। এক তার্কেস্‌সর মহিলা বসে আছেন, বিকেলের দিকের ট্রেন, পোচোন্ডো ভিড়। চ্যানেলে চ্যানেলে লোক গুঁজে গুঁজে ঢুকে আছে, এক ভদ্রলোকের পা সমানে সেই তার্কেশ্বর মহিলার হাঁটুতে ঠুকে যাচ্ছে, আর ভদ্রলোক সমানে বলছেন, sorry

    বার চারেক হবার পরে মহিলা sorry শুনে এ বার তেড়ে উঠলেন, অলপ্পেয়ে কোতাকার, দেকতে তো ভদ্দরনোকের মতন, বলি মতলবটা কী, অ্যাঁ? তখন থেকে স'রি স'রি বলচিস, সরচিস না ক্যানে, অ্যাঁ? কিচু বুজি না ভেবেচিস?
  • Samik | 125.23.109.246 | ১৪ অক্টোবর ২০০৬ ২১:৫৬669481
  • হে-এ-এ-এ ভগবা-আ-আ-ন ক্রিং ক্রিংকে আম্মো দেখেছি অনেক। সে সব তো এখন লুপ্তপ্রায় শিল্প। এখন মাঝে মাঝে মানকুন্ডু কি বালি থেকে ওঠে একদল যুবক, প্রচুর ভাট বকে একটা ব্যাটারি লাগানো ফাটা বক্সে মিউজিক লাগিয়ে টোটাল বেসুরো গলায় বিনা তালে 'অমর শিল্পী তুমি কিশোরকুমার' দিয়ে শুরু করে, শেষ করে 'জিন্দেগি কা সফর' কিংবা অন্য কোনও গান দিয়ে।

    তারা আবার ভদ্দরলোকের ছেলে বলে, বেকার যুবক বলে সব্বাই তাদের পাঁচ টাকা দশ টাকা ইত্যাদি দেয় টেয়। ও সব আধুলি একটাকা এরা নেয় না।
  • dam | 61.246.23.22 | ১৫ অক্টোবর ২০০৬ ১৬:০২669482
  • যা দেখছি, হাওড়া মেন লাইনে অজস্র গল্প। তা শিয়ালদা লাইনে এমন কিছু নেই? এইযেসব বেলঘরিয়া, সোদপুর, রহড়া ইত্যাদির জনগন কি কখনও ট্রেনে চড়ে যাতায়াত করে নি নাকি?
  • i | 202.128.112.253 | ১৫ অক্টোবর ২০০৬ ১৮:০০669483
  • বিধাননগরের নিকনেম ছিল চোরী মেরা কাম,দমদম জংশনকে বলা হত অমর আকবর অ্যান্টনি, দমদম ক্যান্ট ছিল হাম কিসিসে কম নেহী।

    বিশরপাড়া কোদালিয়া হল্ট কিভাবে হোলো সেবিষয়ে অতীব রোমহর্ষক টুল মাফিয়ার গল্প আছে।সে বলা যাবে কোন এক সময়।আর ছিল হেলেন মানে তাকে ডাকা হোতো হেলেন।।অতি রহস্যময় চরিত্র।।।তিনি আপিসের ভীড়ে শিয়ালদা যেতেন আসতেন তার ছাগলকে খাওয়ানোর ডালপালা আনতে!
  • supriya | 140.181.71.146 | ১৫ অক্টোবর ২০০৬ ২১:০৬669484
  • দম এর কথায় যৎপরোনাস্তি অপমানিত বোধ করলুম।

    তখন কলেজে পড়ি, নিত্যযাত্রী। ট্রেন শেয়ালদা থেমেছে, সবাই নেমেছে, ভদ্রলোক জানলার ধারের সীটখানি বাগিয়ে তখনো ঘুমের দেশে। নেমেই যাচ্ছিলুম, দ্বৈপায়ন তাঁর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে উঠলো, "ও দাদা, এবার উঠুন, নেমে বাস ধরুন, এ গাড়ী ডালহৌসী যাবে না।"
  • s_r | 220.227.146.21 | ১৬ অক্টোবর ২০০৬ ১১:৪২669485
  • আমারও মৈত্রীর মতো বাস কেস। তবে দুঘন্টা নয় জ্যাম ট্যাম মিলিয়ে ঘন্টা দেড়েক হবে। লম্বা যাত্রা বলে আমরা কয়েকজন স্ট্যান্ডে গিয়ে 42 ধরতাম। যারা কাছের যাত্রী তারা কলেজের সামনে থেকেই উঠত এবং বেশীরভাগ দিন আমাদের হাতে ব্যাগপত্র দিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা চলতো। কিছু পাবলিক বাসে সবসময় মেয়েদের সীটের কাছে দাঁড়ানো মহিলাদের পেছন ঘেঁসে অত্যন্ত আপত্তিজনক ভাবে দাঁড়াতো। এরকমই একজন নিবেদিতার পেছনে দাঁড়িয়েছিলো। আমরা হলে সরে যেতাম বা অন্য দিকে চলে যেতাম অথবা তার উপায় না থাকলে "ঠিক করে দাঁড়ান" বলতাম।
    নিবেদিতা আমার সামনে, আমি গল্পের মধ্যেই ইশারা করছি যে পিছনের পাবলিক ঠিক নয়।ও হঠাৎ খুব ধীরে ঘুরে দাঁড়িয়ে লোকটাকে আপাদমস্তক দেখল, তারপর বলল, "ওমা দেখেছিস এটা একটা লোক, আমি তো তখোন থেকে ভাবছি কোনো মেয়ে বুঝি আমাকে ঠেলছে"। লোকটা অবশ্যই এক লাফে দরজার কাছে।
    আর একবার প্রথম শাড়ী পড়ে কলেজে যাচ্ছি ক্যালাইডোস্কোপের দিন। অনভ্যাসে শুধু শাড়ীর আঁচল নিয়ে কোমরে গুঁজছি আবার বন্ধুদের চোখের বকুনিতে আঁচল সোজা করছি। হঠাৎ বাসের দরজায় নামতে গিয়ে এক ভদ্রমহিলার চিৎকার "আমার আঁচল, আমার আঁচলটা কোথায়?" আমার পাশের এক ভদ্রলোক আঙুল তুলে বলে ওঠে "ঐ তো ওনার কোমরে"।
  • supriya | 140.181.71.146 | ১৬ অক্টোবর ২০০৬ ১৪:১২669486
  • আরেকদিন। যেকোন কারণেই হোক একটু ফাঁকা ট্রেন। জমিয়ে আড্ডা চলছে। পাশের এক ভদ্রলোক সিগারেট ধরালেন। একটু পর থেকেই দিব্যেন্দু উশখুশ শুরু করলো। বেশ কিছুক্ষণের পর ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, "কিছু মনে করবেন না, আপনার কি ধোঁয়ায় অসুবিধে হচ্ছে?" দিব্যেন্দু অবলীলায় বললো "খুউউব"। আমর চোখ কপালে তুলতে গিয়ে থেমে গেলুম। ভদ্রলোক নিতান্ত লজ্জিত হয়ে দরজার ধারে গিয়ে সিগারেট টা শেষ করে এলুম। পাঁচ মিনিটের মধ্যে দিব্যেন্দু পকেট থেকে বেরলো ১নং ঘড়ি বিড়ি। মৌজ করে ধরিয়ে একগাল ধোঁয়া ছাড়লো। ভদ্রলোকের মুখের দিকে তাকালে মনে হবে চোখের সামনে মরা বাবাকে দেখেছেন, আমরা ভয়ে কাঁটা। টানা ৪৫ সেকেন্ড দিব্যেন্দু কে পরখ করার পর ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, "আপনার এখন অসুবিধে হচ্ছে না?" দিব্যেন্দুর উত্তর,"না তো! নিজে খেলে কোন অসুবিধে হয় না, আমি প্যাসিভ স্মোকিং ব্যাপারটা একদম নিতে পারিনা।"
  • supriya | 140.181.71.146 | ১৬ অক্টোবর ২০০৬ ১৪:২৩669487
  • ক'টা ভুল (টাইপো) হয়ে গেছে, বুঝতে অসুবিধে হবে না আশাকরি।
  • Samik | 61.95.167.91 | ২৩ অক্টোবর ২০০৬ ১১:৪৪669489
  • প্লাস্টিকের মাইক্রোফোন। বেশ মোটাসোটা দেখতে হয়। ভেতরে একটা কফি খাবার পাতলা প্লাস্টিকের কাপ, আর স্প্রিং, তাতেই বেশ সুন্দর মাইক্রোফোনের এফেক্ট আসে। দাম মাত্র দশ টাকা, দশ টাকা, দশ টাকা। তবে শুনুন দাদা, দশ টাকা দিয়ে এই জিনিসটি কিনলে কোম্পানির তরফ থেকে আপনি বিনামূল্যে পাচ্ছেন একটি সুন্দর পকেট চিরুনি, বাজারে যার দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা, আমার কাছ থেকে কিনলে এই মাইক্রোফোন আর এই চিরুনি একসাথে পাচ্ছেন দশ টাকা, দশ টাকা, দশ টাকা। তবে শুনুন দাদা, এই মাইক আর চিরুনি একসাথে নিলে কোম্পানি আপনাকে বিনামূল্যে দিচ্ছে একটি সুন্দর পেন, বাজারে যার দাম ...

    পেনের পরে পেনসিল, তারপরে রবার, তারপরে রুমাল, এমনি করে মোটামুটি আট থেকে দশটা আইটেম পেয়ে যাবেই যাবে যে জায়গায়, তার নাম কলকাতার লোকাল ট্রেন। হাওড়া লাইন, বর্ধমান মেন, বর্ধমান কর্ড, তার্কেশ্বর, ব্যান্ডেল, শেওড়াফুলি আর অফিস টাইমে গীতাঞ্জলী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার।

    লোকাল ট্রেনের হকারদের নিয়ে অনেক অনেক খোরাক তো চালু আছেই মার্কেটে, কিন্তু বিরল লাভ বলতে আমি মনে করি হঠাৎ করে পেয়ে যাওয়া দরজার কাছে দাঁড়ানো অফিস যাত্রীদের একটা ঝাঁক, সংখ্যায় খুব বেশি হলে পাঁচজন, একজন ট্রেনের দেওয়ালকে তবলা হিসেবে পেটাবে, আর একজন থাকবে গায়ক। প্রধানত কিশোর রফিই চলে, কুমার শানুও চলে। বাকিরা হাততালি দিয়ে সঙ্গত করে, আর লাকিলি জানলার ধারে সিট পেয়ে যাওয়া গানপাগল আমি, ওদের একজন হতে না পারার জন্য হঠাৎই নিজেকে খুব আনলাকি মনে করি।

    ভিড় ঠেকে ওদের কাছে পৌঁছনো তখন আর সম্ভব নয়, আর পৌঁছলেও ওদের দলে ভেড়া আরও অসম্ভব। ওরা কাউকে ডাকেও না, কাউকে তাড়ায়ো না। ব্যান্ডেল টু হাওড়া গান গেয়ে দেওয়াল বাজিয়ে নিজেরা আনন্দ পায়, সক্কলকে আনন্দ দেয়।

    গায়ক যে, সে কিন্তু এলেবেলে গায় না, বেশ সুন্দর গলা, ভিড় ট্রেনের সমস্ত চেঁচামেচি, হকারের ডাক, ট্রেনের আওয়াজ ছাপিয়ে সে সুর আছড়ে পড়ে রেললাইনে, মেরে সপনোঁ কি রানি কব্‌ আয়েগি তু, আয়ি রুত্‌ মস্তানি, কব্‌ আয়েগি তু।

    একবার একটা দলের সাথে দেখা হয়েছিল, ছেলেটা লোকগীতি আর ভাওয়াইয়া গাইছিল, বেশির ভাগই আমি কোনওদিন শুনি নি। তার দুটো গান আমি আজও ভুলতে পারি নি। কেউ কি শুনেছো গানগুলো?

    ১। আমার জনম গেল দুখের সাথে, সেই দুখের কথাই বলি হায়,/ মা আমার পাগলিনী, পাগল বাবা গাঁজা খায়।
    ২। শূন্যে দিলাম উড়ান রে ভাই / zeতি চান্দে চাই / ডানা ভাইঙ্গ্যা পইড়লাম আমি কাইলকাতার এই চরে / তোমরা আমায় চেনো কি?

    আরেকবার শুনেছিলাম এক অফিসযাত্রীর গলায়, ভিড়ে ঠাসা বর্ধমান লোকালে, সেই প্লাস্টিকের মাইক হাতে নিয়ে একের পর এক গেয়ে যাচ্ছেন রফির গাওয়া নজরুলগীতি আর বাংলা গান: তোমার হাতের সোনার রাখি আমার হাতে পরালে, আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন দিল বহি মেরা ফ্যস্‌ গয়ি, তোমাদের আশীর্বাদের এই শতদল মাথায় রাখি। হাওড়ার কারশেড পর্যন্ত, সে এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা। জামাকাপড়ে খুব দীনভাব, প্রথমে গান গেয়ে ভিক্ষে চাইবার লোকই ভেবেছিলাম, তারপরে দেখি কারশেড আসতেই মাইক ঢুকিয়ে নিলেন নিজের ছেঁড়া লেদার ব্যাগে, আশেপাশের কিছু লোকজনের সাথে গল্প করতে করতে নেমে গেলেন ট্রেন থামতেই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন