এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সর্ষেঃ তালেগোলে হরিবোলে, দয়ারা বুগিয়ালে ...

    সিকি লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ | ১৬০৭৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • lcm | 83.162.22.190 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৬:৪০689518
  • জিও! কাঁপাকাঁপি ছবি !
  • h | 213.132.214.81 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৭:১২689519
  • রুট ম্যাপটা একটু দিবি, তোরা হরিদ্বার থেকে দেবপ্রয়াগ হয়ে এলি কেন বুঝতে পারছি না, মানে মুসৌরি/নরেন্দ্র নগর/তিহরি টা হাঁটা হিসেবে আমি গেছি, ওটা ভালো লেগেছিল। ও , না, আবার কনফার্ম করে দেখলাম, তোরা চাম্বা তে ফিরেছিশ ওকে। মনে আছে কিনা বল, দেওধরতাল/ মানেরি ভ্যালি রুট/ ডুন্ডা/বা রানারি ব্রিজ ইত্যাদি এগুলো খেয়াল পড়ছে?
  • de | 69.185.236.55 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৭:১৯689520
  • উফ- ছবি দেখেই নিশ্চিত হয়ে গেলাম - এখেনে যেতেই হবে -

    খুব সুন্দর লেখা হচ্ছে - সিকি সব ডিটেল দিয়ে রেখো -
  • Blank | 213.99.211.18 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৭:৫১689521
  • আমার ওপর দায়িত্ত ছিল বেথে কে ড্রাইভিং শেখানো। তাই আমি লং রুট নিয়ে বেথে কে প্র্যাকটিসের সুজোগ করে দিয়েছিলাম। এত বড় ত্যাগস্বীকার কেউ দেখলোনা
  • Blank | 213.132.214.81 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৭:৫৮689522
  • রায়থাল গ্রাম থেকে তোলা

  • সিকি | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:০১689523
  • রুটম্যাপ -



    আমাদের যাবার ছিল মাত্র ১৮৯ কিলোমিটার, তার বদলে আমরা গেছি ৩৩৪ কিলোমিটার। বুনানের প্রতিভা। ফেরার সময়ে চাম্বা থেকে নরেন্দ্রনগর হয়ে সোজা হৃষিকেশ-হরিদ্বার।

    উত্তরকাশী থেকে রায়থাল যাবার পথে মানেরি-তাল পড়ে, ওখানে একটা গিএমভিএনের হোটেল আছে। ঐ মানেরি-তালের কাছেই পাইলট বাবার আশ্রম।

    ছবি এখনও শুরু হয় নি। এইগুলো ছিল ট্রেলার। এর পরে আসছে ছবি। বুনান, তোর ছবিও যতটুকু লেখা হয়েছে, একটু দিয়ে দে এখানে।
  • h | 213.99.211.81 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:০৭689524
  • হরসিল টাচ করেছিলি?
  • সিকি | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:২০689525
  • না। হারসিলের রাস্তায় যেখানে 108 লেখাটা আছে, সেইখানে ভাটওয়ারি। ওখান থেকে বাঁদিকে রাস্তা উঠে যাচ্ছে রায়থালের দিকে। ম্যাপে শুধু গঙ্গোত্রীর মেন রাস্তাটা দেখানো আছে।



    হারসিল এখান থেকে অনেক দূরে।
  • de | 24.139.119.174 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:২১689526
  • সতেরোর পরে একটা গুরুবোনেদের ট্রেক হবার কথা ছিলো না? সেটা এখেনেই হতে পারে তো! কুমুদি, দমদি, ব্যাং আর কারা কারা যেন যাবে বলেছিলো সেই সময়?

    বুনুর ছবিটা খুনখারাপি!

    প্রথম ছবিটা দেখে আমি কিন্তু শিবঠাকুরকে বজরঙ্গবলীই ভেবেছিলাম - ঃ))
  • 0 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:৫৩689528
  • উফ! সন্ধ্যের কমলা রোদমাখা বরফচুড়োর ছবিগুলো! আর ব্ল্যাংকের দেওয়া ওই উপত্যকা-পাহাড়-মেঘের ছবিটা!
  • পুপে | 74.233.173.198 | ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:৫১689529
  • দে দি আমিও যাব। লিস্টে আমার নাম লিখে নাও।
  • 4z | 79.157.32.154 | ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫১689530
  • গেলেই হয়, নিয়ে যাবার জন্য তো লোকও রেডি।
  • d | 144.159.168.72 | ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:২৩689531
  • দে শুধু এইটে কেন? আরও অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায় যাব তো। এই ব্যাঙ কুমু নাহয় যতটা যেতে পারবে ততটা যাবে, বাকীটুকু বাকীরা যাবে। মোটকথা অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম সবার জন্য, সব্বার জন্য।
  • d | 144.159.168.72 | ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:২৪689532
  • আর বুনু তুই কি লাল সাইকেলটা চালানো শিখেছিস? উঠতে নামতে পারিস? পেছনে না ধরলে ১০০ মিটার এগোতে পারিস?
  • পুপে | 131.241.184.237 | ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:৩২689533
  • আরে দ-দি, লাল সাইকেলের দুপাশে ব্যালান্স হুইল লাগানো আছে, তাতেও অবিশ্যি প্রথম দিকে ধরতে হত। এখন আর হয়না :P
  • de | 69.185.236.52 | ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:৪৫689534
  • পুপের নাম লিখে নিলাম লিস্টিতে -

    হ্যাঁ - দমদি - কত্ত জায়গায় ঘোরা বাকি আছে -
  • pipi | 60.129.53.31 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০৭:২২689535
  • দেখলি? দেখলি? তোকে পইপই করে বলেছিলাম কিনা নিজের বোতল আগলে রাখতে? ঃ-)
    আর ডিসেম্বরে রায়থালে ঠাণ্ডা কেমন পেলি সেটা বল?
  • aranya | 154.160.5.102 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০৮:২৩689536
  • শুধু বোনে-দের টিরিপ, ভায়েরা বাদ :-(
  • সিকি | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০৯:৩৭689537
  • ধুর, ঠাণ্ডা কোথায়? এ বছর কোথাও ঠাণ্ডা নেই। বল্লে বিশ্বাস করবি, খোদ দিল্লিতে রাতের বেলা গায়ে কম্বল রাখা যাচ্ছে না, কানের কাছে বিনবিন করছে মশা, এই আটই জানুয়ারি? রায়থালেও মোটামুটি ঠাণ্ডা পেয়েছিলাম, আর একেবারে ওপরে, দয়ারা টপে বেশ ঠাণ্ডা ছিল, সে তো চাদ্দিকে তখন বরফ। তাও টেম্পারেচার শূন্যর নিচে কখনওই পাই নি।
  • Manish | 127.214.46.164 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:৩৩689539
  • কিন্তু বাকিটা কবে হবে?
  • সিকি | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ১৩:১১689540
  • ও ইয়েস। বাকিটা হবে তো বটেই - আসলে এক হাতে একদিন ফটো ঝাড়াই বাছাই করে আপলোড করতে হচ্ছে আর পরের দিন লিখতে হচ্ছে, তাই গ্যাপ।

    আপাতত একটা ক্রুশিয়াল ব্যাপার বাদ পড়ে গেছে। আগের পাতায় 05 Jan 2016 -- 11:37 PM-এর পোস্টের শেষদিকে এই টুকু অংশ অ্যাড করে নিয়ে আরেকবার পড়ে ফেলুন।

    সারাদিন ড্রাইভ করে আমিও এখন অল্প ক্লান্ত। ঘুমোতে হবে, তার আগে জামাকাপড় চেঞ্জ করতে হবে। প্যান্টুল খুলতে গিয়ে চমকে গেলাম - আমার রাতে পরার পাজামা কই?

    ব্যাগ খুলে হাঁটকালাম, আঁতিপাঁতি খুঁজলাম, কিন্তু না - আমার সেই নীল পাজামা, যা পরে কিনা আমি কাল রাতেও হরিদ্বারের হোটেলে ঘুমিয়েছি এবং সকালে উঠে ছেড়েছি, তার দেখা নেই। তবে কি ...?

    সে রকমই মনে হল। সকালে বাথরুমে একটা বড় ক্যাও হয়েছিল, কল খুলে এসে গেছিল অর্পণের হাতে, গরম জল পাওয়া যাচ্ছিল না, এর পরেই আমি পাজামা ছেড়ে প্যান্টুল পরতে ঢুকেছিলাম বাথরুমে, তখনই রিসেপশনের ছেলেটা এসেছিল গীজার চেক করতে, আর আমি কোনওরকমে প্যান্ট পরেই হুড়মুড় করে বেরিয়ে পড়েছিলাম। মানে, পাজামা এখনও সেই হোটেলের বাথরুমেই দোল খাচ্ছে।

    কী চাপ! পাজামা না হলে শোব কী করে? জিনস পরে ঘুমনো যায় নাকি? ফোন করলাম হরিদ্বারের হোটেলে, বললাম, এত নম্বর রুম, যদি একটা নীল রঙের পাজামা পায়, যেন রেখে দেয়, আমরা ফেরার পথে নিয়ে যাব।

    আমার অবস্থা দেখে বুনানের দয়া হল - বলল, চিন্তা কোরো না, আমি একটা এক্সট্রা পাজামা এনেছিলাম, দ্যাখো ওটা পরে চালিয়ে নাও আপাতত।

    তাই সই। বুনানের থেকে পাজামা নিলাম, এবং পরে ফেললাম। বুনান ততক্ষণে ঘুমিয়ে কাদা। আমারও ঘুম পাচ্ছে এবার বেজায় ...

    কিন্তু ঘুমোই তার জো আছে নাকি? কাল ছিল একা বুনান, আজ জুড়েছে অর্পণ। দুটো আলাদা ফ্রিকোয়েন্সিতে আমার পাশ থেকেই ভেসে আসছে নাসিকাগর্জন। এ আর কাঁহাতক সহ্য হয়? খানিক এপাশ ওপাশ করে আমিও কালকের মতই গুণতে শুরু করলাম একষট্টি ... বাষট্টি ... পঁয়ষট্টি ...
  • সিকি | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:৫৪689541
  • পরের পর্ব

    ভোর হল। যদিও বুনান মানতে চাইছিল না ভোর হয়েছে। তিন দিন আগে পূর্ণিমা গেছে, কাল তাই চাঁদ একটু দেরিতে উঠেছিল, আর আজ সকালের আকাশেও তাই চাঁদকে এখনও দেখা যাচ্ছে - সে তখনও অস্ত যায় নি। বুনানের দাবি, আকাশে যতক্ষণ চাঁদকে দেখা যায়, ততক্ষণ রাত। সে ঘড়িতে যা টাইমই হোক না কেন। তবে ট্রেকে যাবার আগে আজই শেষ পাকা পায়খানা, তাই চাঁদ মাথায় নিয়েই টয়লেটে ঢুকতে হবে এবং হাল্কা হতে হবে। প্রকৃতির এই কাতর আবেদনে সাড়া দিয়ে বুনান অবশেষে লেপের তলা থেকে বেরোল।


    ব্যাগগুলো রিশাফল করা হচ্ছে, বড় ব্যাগে অদরকারি জিনিস রেখে জাস্ট নিজেদের প্রয়োজনের জিনিস ছোট পিঠের ব্যাগে নিয়ে হাঁটা শুরু হবে এখান থেকে। বুনান বার বার করে বলেছিল জিনস পরে বেশিক্ষণ ট্রেক করা সম্ভব হবে না, আমি তাই আমার সেই জংলাছাপ কার্গো নিয়ে এসেছিলাম, সেইটা এবার পরে ফেলতে হবে। ... কিন্তু সেটাই বা কোথায়? ছোট্ট ব্যাগ, সব জিনিস বের করে ফেললাম, কিন্তু আমার সেই জংলাছাপ কার্গো কোথাও নেই!

    কেলো করেছে। এটাও কি হরিদ্বারে ফেলে এলাম নাকি? কী ঝামেলা! পেলাম না তো পেলামই না। অগত্যা, জিনস পরেই চলতে হবে। আমার অবশ্য এমনিতে তাতে কোনও অসুবিধে নেই, তবে কিনা আট কিলোমিটার ... এমনিতেই হাঁটতে পারব কিনা, কে জানে!

    গরম গরম আলু-জিরা তরকারি আর হাতরুটি সহ অমলেট দিয়ে বেকফাস্ট সারলাম। প্রেম আমাদের তিনজনকার হাতে ধরিয়ে দিল তিনটে পলিথিনের প্যাকেট, তাতে ভরা আপেল, কমলালেবু, আর টফি। বলল, রাস্তায় চলতে চলতে দরকার হলে খেতে। আর বলে দিল, পলিথিন যেন কোথাও ফেলবেন না, আপনাদের সঙ্গেই রাখবেন।

    এর পরে আর সিগন্যাল থাকবে না মোবাইলে, তাই ঝটপট আমরা সবাই যে যার মত স্টেটাস কল সেরে নিলাম, অবশ্যই অর্পণ পর পর তিন চারখানা স্টেটাস কল করল ব্যাক টু ব্যাক।

    আমাদের সঙ্গে যাবে কুক বিজেন্দর, পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রেমের ভাগ্নে সন্তোষ, আর দুটি মালবাহক খচ্চর। খচ্চরের পিঠে মালপত্র বাঁধতে একটু সময় লাগবে, বুনান বলল, আমরা ততক্ষণে হাঁটা শুরু করি। তোমরা পরে ধরে নিও আমাদের।

    নটা নাগাদ যাত্রা শুরু হল। যে বাড়িটায় আমরা ছিলাম, তার সামনেই খানিক উঁচু পর্যন্ত কংক্রিটের সিঁড়ি উঠে গেছে, এই পথ ধরেই আমাদের চলা শুরু।


    চারটে স্টেপ উঠেই আমার কেমন হাঁফ ধরে গেল। এমনিতেই এখানে অক্সিজেন কম, তবে জানি না সেইজন্যেই কিনা - বাকিদের অবশ্য কোনও অসুবিধে হচ্ছিল না। এক মিনিট দাঁড়িয়ে দম নিয়ে আবার উঠলাম - আবার খানিক বাদেই হাঁফ ধরে গেল।

    বুনান আর অর্পণ খানিক ওপরে উঠে পড়েছিল টুক টুক করে, এখন ওরা পেছনে ফিরে আমার অবস্থা দেখে দাঁড়াল। আমি ধীরেসুস্থে ওদের কাছে পৌঁছলাম। সিঁড়িগুলো পেরনো গেছে, এইবারে পায়ে চলা রাস্তা। আর কোনও ফর্মাল রাস্তা নেই। খানিকটা সমতল এলাকা - একসঙ্গেই পেরোলাম, তারপরে আবার চড়াই। খুব খাড়া চড়াই কিছু নয়, কিন্তু ক্রমশ বুঝতে পারছিলাম আমি পারছি না টানতে - হাপরের মত বুকে পিটছে, চোখের সামনে দেখছি অজস্র ঝুলন্ত লালসুতো-নীলসুতো, গলা শুকিয়ে কাঠ, ইচ্ছেশক্তির শেষসীমায় পৌঁছে আবার কয়েক পা চললাম - নাহ, মনে হচ্ছে বুক ফেটে যাবে।

    অসহায় হয়ে একবার সামনে এগিয়ে যাওয়া বুনান আর অর্পণদের দিকে, একবার পেছন দিকে ফিরলাম। নিচেই রায়থাল গ্রাম দেখা যাচ্ছে, হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়, এত কাছে। কী করব? আট কিলোমিটার তো অনেক দূর - আমি এক কিলোমিটারও এগোই নি। নেমে যাবো রায়থালের দিকে? এতটা কাছে এসে দয়ারা বুগিয়াল দেখা হবে না? পারব না, সত্যিই?

    সত্যিই পারছিলাম না। মাথা ভারী হয়ে যাচ্ছে, বুক ভারী হয়ে যাচ্ছে, গায়ের মধ্যে যেন অজস্র পিন ফুটছে। লাগাতার। অথচ পায়ে ব্যথা হয় নি - হবার কথাও না, দু তিন কিলোমিটার একটানা চলবার অভ্যেস আমার আছে। কিন্তু কিছুতেই এগোতে পারছি না কেন?

    সামনে একটু উঁচু থেকে বুনান বলছে, এই তো - এটুকু উঠে এসো, এখানে উঠে এসে দুজনে মিলে খানিক হ্যা হ্যা করব, তারপর এগবো। বুঝতে পারছি আমাকে বুস্ট আপ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ওটুকু ওঠবার মত শক্তি আমার হৃৎপিণ্ডে আর নেই, শুনতে পাচ্ছি ওর কথা, ঘাড় নাড়ছি, কিন্তু অপেক্ষা করছি কতক্ষণে হার্টবীট নর্মাল হবে, তারপরে পরের স্টেপ ফেলব।

    হার্টবীট কমল, যতক্ষণে বুনানের জায়গায় পৌঁছলাম, ততক্ষণে বুনান চলে গেছে আরো একটু উঁচুতে। অর্পণ রইল আমার সাথে। দুজনকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তারা এতটুকু হাঁফায় নি, সকালবেলায় ঘুম থেকে ওঠার সময়ের মতই ফ্রেশ আছে দুজনে।

    এক কিলোমিটার কি এসেছি? এসেছি বোধ হয়। সন্তোষ ছিল আমাদের সাথে, বলল, জ্যাকেটটা খুলে দিন, হাল্কা লাগবে। মুখে বললাম বটে, জ্যাকেটের জন্য আলাদা করে কোনও অসুবিধে হচ্ছে না - নিজের শরীরের ওজন তো খুব একটা বেশি নয়, তাই এই ধরণের অসুবিধে কখনও হয় নি আগে। তবে, জ্যাকেটটা খুলে দিলাম। সতেরো আঠেরো বছরের ছেলেটা, ইতিমধ্যেই তার পিঠে ইয়াব্বড়ো একটা ব্যাগ নিয়ে হাল্কা চালে উঠছে আমাদের সাথে, এই রায়থালের কাছেই একটা কলেজে পড়ে, তার কাঁধে চাপিয়ে দিলাম আমার জ্যাকেটটা।

    যদিও তাতেও কোনও সুবিধে হল না। অর্পণ আর সন্তোষ থেমে থেমে চলতে লাগল আমার সাথে বুনান ছবি তুলতে তুলতে আর শিস দিতে দিতে ওপরের দিকে অদৃশ্য হয়ে গেল - অবশ্য খুব দূরে যায় নি। বেজায় এমব্যারাসিং লাগছিল, আমার কারণে এতগুলো লোককে তাদের চলার স্বাভাবিক ছন্দ থেকে বঞ্চিত করছি - আমি তা হলে বোধ হয় বুড়ো হয়েই গেলাম।

    ... নাকি ফুসফুসের সমস্যা? আমার ফুসফুসের তিন ভাগের একভাগ নষ্ট চিরতরে। সেটাই কি কারণ? কিন্তু না, আমার দম তার আগেও আর পাঁচজনের থেকে কম ছিল। কম দম নিয়ে শয়ে শয়ে কিলোমিটার বাইক বা গাড়ি চালানোটা জাস্ট কোনও ব্যাপারই না, কিন্তু ফিজিকাল এক্সারসাইজের ক্ষেত্রে আমি চিরকালই পেছনের সারির ছেলে।

    পেছনে নিচের দিক থেকে টুং টুং ঘন্টার আওয়াজ পাচ্ছি, প্রেম আসছে খচ্চরগুলোকে নিয়ে। সঙ্গে বিজেন্দর। দেড় কিলোমিটার বোধ হয় চলেছি এতক্ষণে। প্রেম আসতে আসতে হাঁচোড় পাঁচোড় করে মেরে দিলাম আরও পাঁচশো মিটার মত। একটু ছোট্ট সমতল জায়গা। বসে পড়লাম একটা পাথরের ওপর। খানিক বাদেই প্রেম এল। বিজেন্দর খচ্চরগুলোকে নিয়ে এগিয়ে গেল, প্রেম বসল আমার পাশে। বুনান দেখলাম নেমে এসেছে ওপর থেকে - সে প্রেমকে ডেকে নিয়ে আবার ওপরে গিয়ে কী কথা বলল টলল, বোধ হয় আমার মুণ্ডপাতই করছিল। হেব্বি এমব্যারাসিং ব্যাপার স্যাপার, কিন্তু কিছু করারও নেই। কুল্লে দু কিলোমিটার এসেছি, এগারোটা বাজে। এই রেটে চললে পৌঁছে তো যাবো আজকের গন্তব্যে, কিন্তু সূর্যাস্ত নাগাদ, এদিকে বাকিরা হয় তো আর দুত্তিন ঘন্টাতেই পৌঁছে যাবার ক্ষমতা রাখে। খামোকা তারা আমার জন্য সারাদিন নষ্ট করবে নাকি?

    আজ আমাদের গন্তব্য গোই। দয়ারা বুগিয়ালের রাস্তায় মাঝপথে পড়ে একটা ছোট সমতল জায়গায়। সেখানেই আজ আমাদের রাত্রিবাস হবে।

    প্রেম আবার ফিরে এল আমার কাছে। জিজ্ঞেস করল, যেতে পারবেন বলে তো মনে হচ্ছে না, নাকি?

    আমি অসহায়ভাবে মাথা নাড়লাম দু দিকে।

    প্রেম বলল, ঘোড়া বলব? ঘোড়ায় চেপে যেতে পারবেন?

    পারব, আমি বললাম। ঘোড়ায় চড়ার অভিজ্ঞতা আমার আছে দু-দুবার, একবার বৈষ্ণোদেবী থেকে ফেরার সময়ে চোদ্দ কিলোমিটার, একবার লাদাখ যাবার পথে - সোনমার্গ থেকে মন্দাকিনী গ্লেসিয়ার এবং ফেরত, নয় নয় আঠেরো কিলোমিটার। খুব অসম্ভব কিছু ব্যাপার নয় ঘোড়ায় চড়া।

    আমরা রায়থাল থেকে এখনও বেশিদূরে আসি নি, চাইলে ঘোড়া আনিয়ে নিতে পারি। প্রেম আবারও বলল, তবে পাওয়া যাবে কিনা শিওর নই, এখন তো ঘোড়া ভাড়া নেবার সীজন নয়।

    কী বলব? চুপ করে রইলাম। প্রেমকেও অস্বস্তিতে ফেলেছি, বুঝতে পারছি।

    আমার মোবাইলে আর সিগন্যাল নেই, প্রেমের বিএসএনএল, তার সিগন্যাল আছে। ফোন করল, গাড়োয়ালি ভাষায় কার সঙ্গে যেন কথা বলল খানিকক্ষণ, তার পরে ফোন রেখে আমার দিকে একটু তাকিয়ে রইল - তারপরে বলল, ঘোড়া পাওয়া যাবে, তবে একটা নয়, দুটো নিতে হবে, তবেই পাওয়া যাবে।

    মানে, দুগুণ টাকা?

    না - পুরো দুগুণ হয় তো নেবে না, তবে দেড়গুণ তো নেবেই। থাক, একটা ঘোড়া বাড়তি থাকলে সুবিধেই হবে, অন্য কেউ দরকার হলে দ্বিতীয় ঘোড়াটা ইউজ করতে পারবে। ... হ্যাঁ বলে দেব?

    অবশ্যই। না বলার তো আর কোনও প্রশ্নই নেই। টাকাপয়সার চিন্তা এক্ষুনি করে তো লাভ নেই। আর বেশি হাঁটতে গেলে আমি নির্ঘাৎ হৃদ্‌পিণ্ড ফেটে মরে যাবো, এত চাপ পড়ছে বুকে।

    প্রেম বোধ হয় ফোন করে কনফার্ম করল ঘোড়ার ব্যাপারে। আরও একটা দুটো ফোন করল। আমি পলিথিনের প্যাকেট খুলে একটা টফি মুখে পুরলাম। চারিদিকে উঁচু উঁচু গাছপালা জঙ্গল আর পাথরের সমারোহ, হঠাৎ করে সেই জঙ্গল ফুঁড়ে একটা লোক এগিয়ে এল আমাদের দিকে, তার হাতে ধরা একটা রঙীন মোরগ। আমাদের সামনে নামিয়ে রাখল সেটা। প্রেম আমার দিকে তাকিয়ে এইবারে একগাল হেসে বলল, আগের দিন আপনাদের ব্রয়লার খাইয়েছিলাম, এটা দেশি মুর্গা। আরও টেস্টি।

    গুরু, সে আর বলতে? বরফ যদি না-ও পাই, শুধু এই দেশি মুরগির ঝোল খাবার জন্যেই আমাকে দয়ারা পৌঁছতে হবে। এ প্রেম বোধ হয় আমাদের খাইয়ে খাইয়েই মেরে দেবে।

    মুরগিটা বেজায় বড়সড় সাইজের, প্রায় পাঁচ কিলো ওজন তো হবেই। ওপর থেকে দেখি বুনান আর অর্পণও নেমে এসেছে। ওরাও মুরগি দেখে ডবোল উল্লসিত হয়ে গেল। ওদের জানানো হল ঘোড়া আসবার খবর। ভালো কথা, বুনান বলল, আর একটু তো ততক্ষণ হেঁটে নাও, ঘোড়া আসতে আসতে, একটু ওপর থেকেই রাস্তার ওপরে বরফ জমে রয়েছে - সেখান পর্যন্ত তো হাঁটো। আমি তো ওখান থেকে নেমে এলাম তোমাকে নিয়ে যাবো বলে।

    বুনানকে সম্মান জানাতেই আমি উঠে পড়লাম। অনেকক্ষণ রেস্ট নেওয়া হয়েছে, এখন আর অতটা অস্বস্তি হচ্ছে না। ওয়াকিং স্টিক হাতে নিয়ে এগোলাম। ধাতস্থ লাগছে। বুনান পাশেই ছিল, বলল, ও কোনও ব্যাপার না, কখনও পাহাড়ী রাস্তায় ট্রেক করো নি তো, আজকের দিনটাই চাপ যাবে, কাল থেকে দেখবে আর কোনও অসুবিধে হচ্ছে না।

    খানিক ওপরে উঠে অবশ্য সত্যিই রাস্তার ধারে একটু আধটু বরফের প্যাচ দেখতে পেলাম, হাল্কা ফ্রস্টের লেয়ার। তবে ততক্ষণে আবার পুরনো সিম্পটম ফিরে এসেছে, দম বেরিয়ে যাচ্ছে, চোখে প্রায় সর্ষেফুল দেখছি।

    আবার থামলাম। অর্পণও থামল। খানিক বাদে নিচ থেকে প্রেম এসে বলল, ঘোড়া রওনা দিয়েছে রায়থাল থেকে দশ মিনিটে এসে যাবে, আমি সিকিস্যারকে নিয়ে এখানেই দাঁড়াচ্ছি, অর্পণস্যার আপনি সন্তোষের সাথে এগোতে থাকুন, একটু ওপরেই দুইপায়নদা আছেন।

    ঘোড়া এল অবশ্য প্রায় চল্লিশ মিনিট বাদে। ততক্ষণে আমি মোবাইল বের করে দেখে নিয়েছি এখানে হাল্কা সিগন্যাল আসছে এয়ারটেলের, বোধ হয় অনেকটা ওপরে চলে এসেছি, দূরের কোনও টাওয়ার থেকে সিগন্যাল পাচ্ছে, একটা দুটো কল সেরে নিলাম। কুল্লে বোধ হয় তিন কিলোমিটার এসেছি সকাল থেকে. এখনও পাঁচ কিলোমিটার বাকি।

    এর পর ঘোড়া এল, ঘোড়া মানে খচ্চর আর কি, পাহাড়ী খচ্চর। সঙ্গে দুটি লোক, এবং আরও খানিক খাবার দাবার। এই লোকগুলো এবং বাড়তি দুটো খচ্চর আগামী তিনদিন আমাদের সাথে থাকবে, তাদের রসদও ক্যারি করতে হবে বই কি। আমি অনায়াসেই খচ্চরের পিঠে চড়ে বসলাম, অন্যটার পিঠে উঠল প্রেম, আর খচ্চরওয়ালারা পাশে হাঁটতে হাঁটতে চলল। আমার খচ্চরটা একটু বেআদব টাইপের ছিল, তাই প্রায়ই মালিকের জোরদার বকুনি ধমক খাচ্ছিল - অ্যা্য় চল্‌ চল্‌ চল্‌, তার পরেই একটা অধৈর্য মত উঁচুর দিকে সুর করে - ইরেএএএএ খাচরাআআআআ। কয়েকবার শোনার পর আমিও টোনটা তুলে নিলাম, নেহাত নিজের খচ্চর নয়, তাই গালাগালটা না দিয়ে শুধু দেখলাম, চল্‌ চল্‌ চল্‌ বললেই খচ্চর চলে, আর সামনে ঘাস বা গাছের পাতা পেলেই চলতে ভুলে গিয়ে খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন আবার চল্‌ চল্‌ চল্‌ বলে চলার কথা মনে করিয়ে দিতে হয়।


    ক্রমশ রাস্তা আরও খাড়া হতে শুরু করল, রাস্তা তেমন কিছু নয়, পুরোটাই পায়ে চলা একটা ট্রেল, সেইখানে পাথর টপকে পড়ে থাকা গাছের গুঁড়ি টপকে আমাকে নিয়ে চলতে খচ্চরেরও বেশ কষ্ট হচ্ছিল, বুঝতে পারছিলাম, খানিক উঠে তারপরে ব্ররররররর ব্ররররররররর করে আওয়াজ করে দম নিচ্ছিল।

    আরেকটু উঠতেই চারদিকে বরফের রাজত্ব শুরু হল। যেদিকে চোখ যায়, শুধু বরফের প্যাচে ঢাকা পাহাড়। লোকগুলো অবলীলায় তার মধ্যে দিয়ে হাঁটতে থাকল, পিঠে মালপত্তর এবং আমাকে নিয়ে খচ্চরগুলোও খচমচ করতে করতে চলল বরফে ঢাকা রাস্তার ওপর দিয়ে। ইচ্ছে হচ্ছিল না তা নয় - একটু বরফের ওপর দিয়ে নিজেও চলতে, তা প্রেম বলল, এর পরে শুধুই বরফ, বরফে চলার অনেক সুযোগ জুটবে এর পরে, পরে হেঁটে নেবেন।




    আরো খানিক এগোতেই দেখা পেলাম বুনান আর অর্পণের, ওরা খানিকক্ষণ আগেই এসে পৌঁছেছে। আর তার ঠিক দুশো মিটার সামনেই আমাদের সামনে দেখা গেল বরফে ঘেরা সবুজ এক টুকরো গালিচা, আমাদের আজকের গন্তব্য, গোই।

    ঘোড়া, মানে খচ্চরগুলোকে আললোড করা হল, আর ছেড়ে দেওয়া হল চরে খাবার জন্য। প্রেম, বিজেন্দর, আর খচ্চরওয়ালা মিলে অপরিসীম দ্রুততায় খাটিয়ে ফেলল একটা টেন্ট। সেইখানেই আমাদের শোবার জায়গা। আর বাকিদের জন্য?


    সামনে পর পর কয়েকটা পাথরের কুঁড়েঘর টাইপের, ওপরে খড়ের চাল, তার ওপরে পুরু হয়ে বরফ জমে আছে, এইখানেই থাকবে প্রেম, বিজেন্দর, সন্তোষ, খচ্চরওয়ালা ইত্যাদিরা।


    তাড়াতাড়ি কাঠাকুটো কুড়িয়ে এনে বন ফায়ার স্টাইলে আগুন জ্বালিয়ে ফেলল বিজেন্দর, আরও দুজন লেগে পড়ল মুরগী কাটাকুটিতে, সঙ্গে কেরোসিনের স্টোভও এসেছিল, আমরা চারপাশে একটু শোভা দেখে ছবি তুলে টেন্টে ঢুকে জুতো খুলতে না খুলতেই প্রথমে চলে এল মশলা দেওয়া এক এক বাটি ম্যাগি - আহা ম্যাগি, তোমা বিনে পাহাড় অচল। তার পরে এল চা আর ওই ইয়াব্বড়ো মুরগিটার মেটেভাজা। বুনান আর অর্পণ গেলাস সাজিয়ে বসল, একটা কুড়কুড়ে আর একটা কাজুবাদামের প্যাকেট খোলা হল, তার আগে চা খেয়ে একটা টফি আর একটা গোটা কমলালেবু খেয়ে বুনান আর অর্পণ বসল লাল পানি খেতে। আমিও এক গ্লাস পেলাম।

    এদিকে বুনানের খাবার গতিপ্রকৃতি দেখে আমি তো হাঁ হয়ে যাচ্ছি। মেটেভাজা খাবার আগে বিজেন্দরের কাছ থেকে চারখানা কাঁচালঙ্কা চেয়ে আনল, এবং কচকচ করে চারটে লম্বা লম্বা কাঁচালঙ্কা একাই খেয়ে নিল। মানুষ না টিয়াপাখি রে বাবা? অবিশ্যি বাঙালও হতে পারে। অর্পণ তিন গ্লাস খেয়েই খুব খুশি হয়ে স্টেটাস কল দিতে গিয়ে আবিষ্কার করল আমাদের কারুর মোবাইলেই আর সিগন্যাল নেই। তখন ও গেল খচ্চরওলার কাছে - তার আইডিয়ার ফোনে নাকি কোন টাওয়ার থেকে এক দাঁড়ির সিগন্যাল আসছে। সে খচ্চরওলার ফোন প্রায় ছিনতাই করে বউকে স্টেটাস কল দেওয়া শুরু করল - সামনে শ্রীকণ্ঠ পিক দেখা যাচ্ছে, এদিকে বান্দরপুঞ্ছ, ওদিকে ডিকেডি, ক্লিয়ার আকাশ, না, তেমন ঠাণ্ডা নেই - এইসব।


    আস্তে আস্তে সন্ধ্যে হয়ে এল, ঠাণ্ডা বাড়ল, আমরা গোল হয়ে গিয়ে বসলাম বন্‌-ফায়ারের চারপাশে। আকাশেফুটে উঠল একটা দুট করে হাজার হাজার তারা। স্পষ্ট দেখলাম এক নোম্যাডকে, এক হাতে ধনুক নিয়ে শিকারের প্রতীক্ষায়, কমরবন্ধ থেকে ঝুলছে তলোয়ার। কালপুরুষ। পায়ের কাছে ঝকঝক করছে লুব্ধক। সিরিয়াস। তাদের প্রতিফলিত আলোয় নীলচে হয়ে আছে চারপাশের বরফ। শুধু খচ্চরগুলোর কোনওদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই, দেখে দেখে অভ্যস্ত বোধ হয় - একমনে ঘাস আর বরফ খেয়ে যেতে থাকল।




    রান্না বা খাবার জন্য জলের সোর্স এখানে আলাদা করে পাওয়া যায় না। চারপাশে যত বরফ জমে আছে, প্লেটে করে চেঁছে চেঁছে টিনে ভরো, আর সেই টিনকে দাঁড় করিয়ে দাও বন্‌-ফায়ারের পাশে, খানিকক্ষণের মধ্যেই তা রূপান্তরিত হয়ে যাবে ঈষদুষ্ণ জলে। সেই জলেই রান্না, সেই জলেই পান-ভোজন, তাতে কতটা ঘাস মিশে আছে আর কতটা নোংরা - সন্ধ্যের অন্ধকারে কে দেখছে?

    সাতটার মধ্যেই ডিনার তৈরি। আজকের চিকেনটা কালকের থেকেও উমদা খেতে হয়েছে। তবে বুনান খেল না, তার পেটে সমস্যা। হবে না? পর পর চা, কমলালেবু, নিমকি, কাজুবাদাম, মেটেভাজা, টফি এবং রাম একসাথে পেটে ঢোকালে পেটের আর দোষ কী?

    সকালে যে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছিল চড়াই ভাঙতে গিয়ে, এখন আর তার লেশমাত্রও নেই। এতটুকুও ক্লান্ত লাগছে না। ঘুম আসছে না। মনে আরেকটা চাপ রয়েছে। পরের দিনের নিত্যক্রিয়াটা কীভাবে সম্পন্ন হবে - না আছে ল্যাট্রিন, না আছে ভালো দেখে একটা মগ, ওই বোতল দিয়ে কাজকম্মো যে আদৌ কীভাবে চালায় ... যতক্ষণ পারি চেপে রাখা প্যাকটিস করতে হবে।
  • সিকি | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:০৩689542
  • এই সেই চিকেন,

  • Abhyu | 109.172.116.187 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:২৯689543
  • দুরন্ত।
  • pipi | 60.129.53.31 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:৪৯689544
  • এই সেম কাটিং মোরগ আমার ছিল। আরো রং ঝলমলে। মস্ত বড়। উইথ তিন মুরগী। কে বা কাহারা সে মোরগটিকে ঝেপে দেয়। পোষ্যটিকে হারিয়ে খুব কষ্ট হয়েছিল মনে আছে। তখন ছোট ছিলাম তো, তাই ভেবেছিলাম অন্য কারোর বাড়িতে সে ভাল আছে হয়তো। কে বা কাহাদের পেটে তার সদগতি প্রাপ্তি হয়েছে ভাবলে এখনো কেমন মন চিনচিন করে।
  • Blank | 24.99.5.129 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:৫৯689545
  • সেই তিনটে মুরগী তারপর কারা খেলো?
  • King Ghidorah | 117.167.108.74 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২১:১৫689546
  • এটা হাইটের সমস্যা নয়, তাইলে লাদাখেও হত।

    আমি তাইলে বেশ ফিট! বিড়ি টিড়ি খাওয়া সত্ত্বেও, এবং দেড়ঠেঙে হওয়া সত্ত্বেও।
  • King Ghidorah | 117.167.116.86 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২১:২১689547
  • আর সিকির অন্য চিন্তা পড়ে মনে পড়লো - ভূজবাসায়ও টয়লেটটা অসাধারণ। বিরাট বড়, ফ্রেশ হাওয়া, প্রচুর জল...মানে গঙ্গার ধার আরকি। লালবাবার আশ্রমে প্রচুর টিনের কৌটো, আর উনুনে বিশাল ডেকচিতে জল ফুটছে। কৌটো নিন, আর কোনো একটা পাথরের পিছনে বসে পড়ুন। তবে দুম করে অন্য কেউ সেই পাথরটিকে টার্গেট করলে...

    এসব শুনে একজন পোর্টেবল পটি কেনার প্ল্যান করেছিলো...
  • সিকি | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২১:৫৩689548
  • লাদাখে তো হয়েইছিল। এমনিতে তো লাদাখে চড়াই ভাঙার কোনও গল্পই ছিল না, তবে এবারের ট্রিপে লিখেছিলাম, পেছনের রাস্তা ধরে লে প্যালেসে চড়তে গিয়ে কী রকম দম বেরিয়ে গেছিল। অথচ বাকিরা আরামসে উঠে যাচ্ছিল।

    সমস্যাটা অলটিট্যুডের জন্য নয়, আমার অলটিট্যুড সিকনেস নেই। আমার লাংসের জোর বেজায় কম, ছোটবেলা থেকেই - যার জন্য কখনও খেলাধূলোর দিকে এগোই নি। সাঁতার শিখেছি বটে - তবে শেষদিন পর্যন্ত হাজার মিটার কাটার পরে হাত পা ঝিম ধরে যেত, দমে কুলোতে পারতাম না - সেই পনেরো বছর বয়েসেও। বাইক রাইডিং বা ড্রাইভিং করা কোনও বড় ব্যাপার না, কিন্তু মনে পড়ছে - কলেজ থেকে রঙধামালি গেছিলাম সাইকেল চেপে। চোদ্দ কিলোমিটার, তিনবার স্টপেজ নিয়ে, আমার সঙ্গীদের আমার জন্য থামতে হয়েছিল - তারা কেউই হাঁপায় নি।
  • pipi | 60.129.53.31 | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ২২:২২689550
  • এই টয়লেটের অব্যবস্থার জন্যই আমার দ্বারা কোনদিন এইসব টেক-ফেক হবে না।

    ব্ল্যাঙ্কি, খালি খাবার চিন্তা :X দুপাত্তর রাম আর টফি, লেবু হ্যানত্যান খেয়ে যার পেটের সমস্যা হয় তার মুরগীর চিন্তা করতে নেইঃ-)
    তবে, তারা তিন বোন ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু ডিম দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। খালি খেত, ঝিমাত আর মুটোত। দুটিকে পরে দান করা হয়েছিল বাড়ির কাজের মাসিকে। আর একটি কি এক রোগে দুম পটাস করে একদিন সবাড় হয়ে গিয়েছিল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন