এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আলাস্কা

    Tim
    অন্যান্য | ২১ জানুয়ারি ২০১৬ | ৫০৭৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • hu | 78.63.145.192 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:৪১692711
  • আর্কটিক সার্কেল পর্যন্ত যাওয়াটা টিম শর্টে সেরেছে। আমি একটু যোগ করি। ফেয়ারব্যাঙ্কস থেকে আর্কটিক সার্কেল ছ'ঘন্টা লাগে। শীতকালে প্রাইভেট কার অ্যালাউড নয়। গাইডেড ট্যুর নিতেই হবে। সেটা একদিক থেকে ভালোই। কারন, জয় ট্রেডিং পোস্ট, মানে যেখানে আমরা অরোরা দেখার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম, ফেয়ারব্যাঙ্কস থেকে দেড় ঘন্টা হবে, তার পরে আর কোন গ্যাস স্টেশন নেই। বলতে গেলে কোন ফেসিলিটিই নেই। বিলির হোস্টেল থেকে আমরা সকাল ন'টায় বেরিয়েছি। সকাল লিখছি বটে, কিন্তু তখনও আলো ফুটতে বিস্তর দেরি। সাড়ে ন'টায় ট্যুর বাস ছাড়ার কথা। সেটা দশটায় দাঁড়ালো। আমাদের প্রথমেই গ্রসারী দোকানে নিয়ে গিয়ে বলল যার যা কেনার কিনে নাও। সারাদিনের মত খাবার, জল ইত্যাদি। আমরা কিছু কোল্ড স্যান্ডউইচ আর ড্রিঙ্কস তুলে নিলাম। বাসে কয়েকটা গরম জলের ফ্লাস্ক ছিল। সারাদিনে মাঝে মাঝে ঐ গরমজলেই চা, কফি, হট চকলেট খাওয়া হয়েছে। আর কিছু পাওয়া যায় না পুরো রাস্তায়। বাথরুমের ব্যবস্থাও খুবই বেসিক। যাদের বাথরুম নিয়ে পিটপিটানি আছে তাদের এই রাস্তায় না আসাই ভালো। টয়লেট সিটে বরফ জমে আছে। সে বরফ যে জমার আগে কি অবস্থায় ছিল তা নিয়ে গবেষনা না করাই ভালো। তবে কুমুদি ও জগতের যাবতীয় কেমিস্টকে শতকোটি পেন্নাম - এত ঠান্ডাতেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার জমেনি। কি দিয়ে বানান আপনারা এসব?
  • hu | 78.63.145.192 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:৫২692712
  • পঁচিশে ডিসেম্বর সারাদিনই মেঘলা ছিল। কিন্তু ছাব্বিশে শহর ছেড়ে বেরোনোর একটু পরেই আলো ফুটল। এই ধরা যাক এগারোটা নাগাদ। বিকেল তিনটে পর্যন্ত রইল সেই আলো। অরোরা নিয়ে এত কথা লেখা হল, সকালের ঐ আলো কিন্তু তার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। কিন্তু সে আলোর ছবি তোলা আমাদের কম্ম নয়। আর লিখেও হয়ত বোঝাতে পারব না কেমন সে আলো। এটুকু বলতে পারি, পৃথিবীর ঐ অত উত্তরের দিকে দিনগুলো একেবারে আলাদা। সারাক্ষণই সেখানে ভোর ভোর অথবা বিকেল বিকেল। সূর্য তো মাথার ওপরে ওঠে না। দিগন্ত ধরেই সরে সরে যায়। অদ্ভুত কমলা একটা আলো। বরফে ঢাকা আর্কটিক তুন্দ্রায় সেই আলো কেমন রূপকথার রাজ্যের মত লাগে। আমাদের খালি মনে হয়, এ যেন পৃথিবীর বাইরে কোন দেশ। আমরা অনধিকার প্রবেশ করছি। আমাদের ড্রাইভার খুব ভালো মানুষ। মাঝে মাঝেই রাস্তায় দাঁড়াচ্ছিলেন। আমরা নেমে গিয়ে ছবি তুলে আনছিলাম। কিন্তু অত ভালো ছবি তো তুলি না। আর শুধু শাদায় ছবি তোলাও মনে হয় একটু কঠিন আছে। কনট্রাস্ট করার মত তো কিছু নেই। সবচেয়ে বড় কথা - ঐ কমলা আলো - সে আলো তুলব কি করে! সে মনেই থেকে গেছে।
  • Binary | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:৫৯692714
  • হু আর টিম মিলে , লোভ বাড়িয়ে দিচ্ছে । এখুনি ম্যাপ দেখলাম , আমার এখান টি অঙ্করেজ 3600 কিমি , এডমনটন থেকে ডাইরেক্ট উড়ান ও আছে । তবে গেলে সামার-এই ।
  • rabaahuta | 108.192.41.166 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:৫৯692713
  • '-অরোরা বোরিয়ালিস কাহাকে বলে?
    অপুর চোখমুখ উজ্জ্বল দেখাইল। মাত্র দিন কতক আগে সত্যেনবাবুর কি একখানা ইংরেজি বইতে সে ইহার ছবি দেখিয়াছিল।'
  • Binary | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:০১692715
  • আর্টিক সাইকেল আমি অবসি দেখেছি নরওয়েতে ,
  • hu | 78.63.145.192 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:০২692716














  • Binary | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:০৫692717
  • সার্কেল **
  • hu | 78.63.145.192 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:২০692718
  • আড়াইটে নাগাদ আমরা ট্রান্স আলাস্কা পাইপলাইনের যে অংশটা ডালটন হাইওয়ের একদম পাশ দিয়ে গেছে সেখানে এসে পাইপলাইনের একটা ছবি তুললাম। সেই সময়েই সূর্য ডুবছিল। তাও আরো কিছুক্ষণ আলো রইল। ইউকন নদীর খাতে যখন এসে পৌঁছলাম তখন আলো মরে গেছে। ওখানে একটা লোক স্নো মোবিলে করে জমে যাওয়া ইউকন নদীর ওপর ঘুরিয়ে আনছিল। একটা আস্ত শেয়ালের মাথা দিয়ে বানানো টুপি পরেছিল লোকটা। ইউকনের তীরে একটা ছোট্ট কাঠের বাড়িতে, বাড়ি না বলে ঘর বলাই ভালো, লোকটা আর তার মা থাকে। এইখানে নেমে টিমের হঠাৎ সাঙ্ঘাতিক শীত করতে লাগল বলে ও গাড়িতে উঠে বসল। এটা দেখলাম অনেকেরই মাঝে মাঝে হচ্ছিল। আমারও একবার হল। হয়ত আগের স্টপটাতে টিম একটু বেশিক্ষণ বাইরে ছিল। তাই এইবারে সহ্য করতে পারল না। আমার অতটা ঠান্ডা লাগছিল না বলে আমি একটু ঘুরে দেখছিলাম। আর সেই কারনে ঐ শেয়ালের টুপি পরা লোকটার গল্পটা মিস করে গেলাম। আমি যখন বাইরে ছিলাম তখন নাকি ঐ লোকটার মা বাসে এসেছিল। ওরা ওখানে কিভাবে থাকে সেইসব গল্প করেছে। টিম, ঐ গল্পগুলো লিখে রাখিস। আমার কেমন আশ্চর্য লাগছিল ইউকনের খাতে দাঁড়িয়ে। এত বড় নদী জমে মাঠের মত হয়ে আছে। এমনিতে উত্তর আলাস্কার একটা বড় অংশই তাই। লক্ষ লক্ষ ব্ছর ধরে বরফ জমে পার্মাফ্রস্ট হয়ে গেছে। এই দেশে অত বড় ডালটন হাইওয়ে বানানো হয়েছে, তেলের পাইপ বিছানো হয়েছে - খুবই সাঙ্ঘাতিক ভালো ইঞ্জিনিয়ারিং। আর তেলের মহিমা।

    ইউকন নদীর খাত আর পাইপলাইনের ছবি।



  • lcm | 83.162.22.190 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:২২692719
  • বাহ! খাসা হইসে।
    তবে যা বুঝলাম, ঐ ফ্রোজেন স্কুলবাসের মধ্যে থেকেই সবথেকে ভালো ভিউ।
  • hu | 78.63.145.192 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:৩৩692721
  • সাড়ে ছ'টা-সাতটা নাগাদ আর্কটিক সার্কেলে পৌঁছলাম। আসলে তো একটা কাল্পনিক লাইন। দেখে কিছুই বোঝা যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু সেই যে ছোট থেকে ভূগোলের বইতে পড়েছি - সাড়ে ছেষট্টি ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ - সুমেরু বৃত্ত - তখন কি কোনদিন ভেবেছি কোনদিন সেই সাড়ে ছেষট্টি ডিগ্রীতে পা রাখব। তেমন কোন অ্যাডভেঞ্চারের ব্যাপার এটা নয় অবশ্য। বাসে করে গেলাম। গাইড চিনিয়ে দিল। ছবি তুললাম। সত্যিই খুব একটা বাহাদুরির ব্যাপার তো নয়। তবু খুব রোমাঞ্চ হল। আর্কটিক সার্কেল মনুমেন্টটার ওখানে খুব আলো ছিল। সেই আলো থেকে একটু দূরে সরে এসে তারাগুলো চিনে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। সেই একই সপ্তর্ষিমন্ডল, কালপুরুষ, ক্যাসিওপিয়া। সাড়ে বাইশ ডিগ্রী অক্ষাংশ থেকে আসা আমরা - কতটা পথ পেরিয়ে এসেও সব্বাইকে দেখতে পেলাম।

  • hu | 78.63.145.192 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:৫৯692722
  • অরোরার আরো কয়েকটা ছবি দিয়ে যাই। এগুলো অত চোখ ধাঁধানো নয়। কিন্তু এদের গল্পগুলো ভুলি কি করে!

    ইউকন নদী থেকে ফেরার পথে রেস্টরুম স্টপে টিম সেই যে অরোরা দেখতে পেল তারপর থেকে পুরো রাস্তাতেই অরোরা মাঝে মাঝেই দেখা দিয়েছে আমাদের। প্রথমবার তো খুব আফসোশ হল ট্রাইপড না থাকায়। খালি হাতেই ছবি তোলা হল। আমাদের ড্রাইভার বললেন, ইউকন নদীর কাছে আরেকবার নিয়ে যাবেন ফাঁকায় ফাঁকায় ছবি তোলার জন্য। আমরা যেখানে ছিলাম সেটাও অবশ্য ফাঁকাই। যাই হোক, এই দ্বিতীয় ছবিটা তোলার সময় এক চাইনীজ সহযাত্রী তার ট্রাইপডটা ব্যবহার করতে দিলেন। আমাদের ইচ্ছে হচ্ছিল ওখানেই থেকে যেতে। সত্যি বলতে পরে আমরা যেখানে অরোরা দেখলাম, মানে জয় ট্রেডিং পোস্টে, তার সাথে এই ফাঁকা মাঠে আকাশ দেখার কোন তুলনাই হয়না। নিজেরা গাড়ী চালিয়ে গেলে হয়ত আমরা ওখানেই সারা রাত থেকে যেতাম। কিন্তু সেসব অঘটন না ঘটানোর জন্যই সম্ভবত ঐ রাস্তায় গাইড ছাড়া যাওয়া নিষিদ্ধ। আমরা বাসে উঠে বসলাম। জানলা দিয়ে অরোরা দেখা গেল মিনিট দশেক। তারপরেই বাসের ভেতরের টেম্পারেচার যেই বেড়ে গেল কাঁচ গেল ঝাপসা হয়ে। ঘসে ঘসে কাঁচ পরিস্কার করার চেষ্টা করি। সে আর কতক্ষণ থাকে!

    ভাগ্যক্রমে আমরা বসেছিলাম ড্রাইভারের সিটের পেছনেই। তাই সামনেটা দেখা যাচ্ছিল। যা দেখলাম তার চেয়েও বেশি কিছু দেখতে পাব এমন তো তখন ভাবি নি। আকাশে উঠে যাওয়া সবুজ সিঁড়ি আর পূর্ণিমা চাঁদের আশ্চর্য যুগলবন্দী নিয়ে দুজনে কথা বলছি এমন সময় দেখি সিঁড়ি তার রূপবদল করে একজোড়া রামধনু হয়ে আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। আবার বাস থামল। ছবি উঠল। ট্রাইপডের অভাবে খালি হাতেই উঠল। প্রচন্ড ঠান্ডায় হাতের চামড়া খসখসে হয়ে গেল, জ্বালা রইল তিন-চার দিন, তবে জ্বালা তো মিলিয়েও গেল। রইল পড়ে এই সবুজ আলো - যা সেদিন আমাদের ঘিরে পাক খাচ্ছিল সুমেরু বৃত্তের খুব কাছেই।











  • san | 11.39.32.115 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:০১692723
  • দীর্ঘশ্বাস , হিংসে ইত্যাদি প্রভৃতি -
  • I | 192.66.26.30 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৪:১৩692724
  • টিম্ভাই আর টিম্বৌদি দুজনের জমজমাট যুগলবন্দী।যেম্মন লেখা তেমনি ছবি। আমার হিংসে ,দীর্ঘশ্বাস ইত্যাদি হচ্ছে না;বড়মাপের মানুষ কিনা!!অন অ সিরিয়াস নোট,সত্যি ওদের জন্য খুব ভালো লাগছে।ওদের চোখ দিয়ে কেমন দেখা হয়ে গেল।জীবনে আদৌ দেখতে পাবো কিনা জানি না।তবে দেখার খুব ইচ্ছে;একবার অন্ততঃ! আর টিম্ভাই,ট্রাইপডে রেখে কতক্ষণ এক্সপোজার দিলি?
  • I | 192.66.26.30 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৪:১৭692725
  • ও ভালো কথা,হুচি আর আমাকে বন্দুক বলে ডাকে না বলে আমিও এখন থেকে ওকে টিম্বৌদি বলে ডাকবো।তা সে যতই ফাটাফাটি রান্না করে খাওয়াক না কেন !
  • sahana | 69.88.167.185 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৪:৪৮692726
  • অপূর্ব আলো। শুচিস্মিতা আর টিম এর লেখায় সফর ক্র্লাম এত্ত সুন্দর দেশ। যারা যেতে পারিনি , তোমাদের লেখা আর ছবিতে কি দারুন সেসব দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ।মুগ্ধ হয়ে বসে অা্ছি।
  • I | 192.66.26.30 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:০৪692727
  • এই সাহানা কি সিঁফোর সাহানা? তাইলে বলি বাপু,তুমি আর দাঁত কেলিও না এখেনে।অন্য টইয়ে গিয়ে দেখে এসো মাজননী,আট্টু হলেই কী বিষম বিপদপাতডাই না হয়ে যাচ্ছেলো।
  • de | 125.117.222.44 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:০৬692728
  • ক্ষী ভালো লেখা হয়েচে আর ততোধিক সুন্দর ছবি - তোমাদের চোখ দিয়ে দেখলাম, আমার কি আর যাওয়া হবে এসব জায়গায়! সেই ছেলেবেলার সাধ অরোরা দেখার!
  • Paallin | 102.233.71.50 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৬:০৮692729
  • মুগ্ধ !
  • I | 192.66.29.187 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৬:২১692730
  • শেয়ালটুপির ছবি দাও নি টিম্বৌদি?লোকটা তো ভারি দুষ্টু!শেয়াল মারে কেন?
  • | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:৪৮692732
  • হুঁ হুচিকে 'টিম্বৌ' বলে ডাকা যেতে পারে। :3
  • Tim | 108.228.61.183 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ২২:১১692733
  • ইন্দোদা,
    ৪-৬ সেকেন্ড এক্সপোজার, যখন ট্রাইপড পেয়েছি। আর হাতে ২-৩ সেকেন্ড।
  • hu | 140.160.143.215 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ২৩:৩৩692734
  • বন্দুকদাদা এমন পেগলে গেলে কেন? তোমাকেও কি কেউ বে করতে চায়?

    শেয়ালটুপির একটা গল্প বলি শোন। আস্তানাতে আমাদের এক কলিগ ছিল। সে ভারী ভালো লোক। কোনদিন ফার গায়ে দেবে না পণ করেছিল। একদিন সে ইউনিভার্সিটি শাটল মিস করে বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দাঁড়ালো। বাস আসে কুড়ি মিনিট অন্তর। তাকেও দাঁড়িয়ে থাকতে হল সে প্রায় কুড়ি মিনিটই হবে। আস্তানার জানুয়ারী মাসে খোলা বাসস্ট্যান্ডে কুড়ি মিনিট দাঁড়িয়ে তার যা অবস্থা হল তাতেই সে ইউনিভার্সিটির কথা গেলো ভুলে। বাস আসা মাত্র ছুটলো বাজারে। তিনশো ডলার দিয়ে মিংক ফারের টুপি কিনে বাড়ি ফিরলো।

    তাই বলছিলাম, সব শিয়াল মারাই দুষ্টু লোক হয় না।
  • I | 192.66.16.238 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ২৩:৪৫692735
  • এখন সব নকল ফার বেরিয়েছে না? এখনো শেয়াল মারতে হয়?কিন্তু ঐ টুপিটা দেখার আমার খুব ইচ্ছা ছিলো।
  • Tim | 108.228.61.183 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:০৪692736
  • নকল ফারেও চলে, আর আমাদের তো লাগেনি।
    তবে আলাস্কায় যে শিয়ালটুপি পরেছিলো তার হয়ত লাগে। বাজার থেকে এসে বলছি ঐ গল্পটা। রোসো।
  • I | 192.66.22.248 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:১২692737
  • লিখে রাখ।পরে শুনবো।এখন ঘুমাই।কাল ভোরবেলা ঘরে ফেরার পেলেন ধর্তে হবে।
  • hu | 140.160.143.215 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:২৪692738
  • নকল ফারে আসল ফারের মত গরম হয় না। কিছু কিছু জায়গায় আসল ফার ছাড়া উপায় নেই। আমরা খুব হিসেব করে বেরোতাম। ঠান্ডার মধ্যে যেন খুব কম বাইরে দাঁড়াতে হয় সেটা দেখতাম সব সময়। তাই আমাদের লাগেনি।

    ছবি নিয়ে একটা কথা বলে যাই। আমরা ১৮-৫৫ কিট লেন্সটাই নিয়ে গেছিলাম। ওতে এফ-স্টপ সাড়ে তিনের নিচে নামে না। যারা সিরিয়াস ফটোগ্রাফি করতে চান তারা এমন লেন্স নিয়ে যান যাতে এফ-স্টপ অন্তত দুই বা তার নিচে নামানো যাবে। পারলে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স নেবেন। সারা আকাশ জুড়ে আলো খেলা করবে। সেই জিনিস ১৮-৫৫ তে আসবে না। আর সবসময় মনে রাখবেন ঐ প্রচন্ড ঠান্ডায় হাত জমে যাবে। কাজেই ট্রায়াল অ্যান্ড এররের বেশী সুযোগ পাওয়া যাবে না। যা কিছু এক্সপেরিমেন্ট আগে সেরে রাখুন।
  • Abhyu | 138.192.7.51 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৪692739
  • কোথায় হুচিপালিকা আর কোথায় টিম্বৌদি। নামের কোনো ইয়ে নেই।
  • Tim | 108.228.61.183 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:৫৪692740
  • হ্যাঁ ঐ ঠান্ডায় অত তাড়াতাড়ি প্যারামিটার পাল্টে পাল্টে ছবি তোলা খুবই কঠিন। গ্লাভস খুলে ফেলতে হয় মাঝে মাঝেই, যাতে সময় নষ্ট না হয়। আর তখন অত কিছু মাথায় থাকেনা, পরে টের পাওয়া যায়।

    এবার শিয়ালটুপির গল্প। ইউকন নদীখাতের কাছে প্রথমবার যখন বাস দাঁড়িয়েছে, দেখি কাছেই একটা লোক স্নোমোবিল নিয়ে হাজির। প্রায় অন্ধকার ফুঁড়েই এলো বলা যায়। চেহারায় ছোটখাটো, মুখে দাড়িগোঁফের জঙ্গল, আর গায়ে একটা অন্ততকয়েক সাইজ বড়ো চামড়ার জ্যাকেট। পরিষ্কার ওটা ওর নিজের কেনা নয়। স্নোমোবিল আশাকরি সবাই দেখেছেন, নাহলে এখানে লিংক রইলোঃ

    https://en.wikipedia.org/wiki/Snowmobile

    যেটা বলার তা হলো ঐ লোকটা রকম ফ্যান্সি দেখতে জিনিস নিয়ে আসেনি। ওরটায় কোন ব্র্যান্ডের ছাপ নেই, অনেক পার্টই আলাদা করে কিনে এনে লাগিয়ে দেওয়া বলে মনে হচ্ছিলো। সে যাই হোক, লোকটির সবথেকে বড়ো বিশেষত্ব হলো মাথার টুপি। সেটা একটা আস্ত শেয়ালের চামড়া দিয়ে তৈরী। আমার দেখেই একটু কষ্ট হলো, আহা কি চকচকে কালো চোখদুটো। যাই হোক, লোকটি আসতেই আমাদের গাইড ডেভিড বললো কেউ যদি ইউকন নদীর খাতে স্নোমোবিল রাইড নিতে চায় তো এর কাছে নিতে পারে। অন্য আর কোন অপশনও ছিলোনা, কাজেই না বললেও চলতো। এরপর আমরা নেমে নদীখাতটা দেখলাম। বাইরে প্রচন্ড হাওয়ায় থাকা যাচ্ছেনা। নদীর দিকে যেতেই দেখলাম একটা ছোট কুঁড়ে মত, তার দরজার ফাঁক দিয়ে আলো দেখা যাচ্ছে। একটু পরে বাসে এসে বসেছি, হুচি ও আরো অনেকে তখনো বাইরেই আছে। ঐ লোকটি তার প্রথম সওয়ারি পেয়েছে, গোঁ গোঁ করে শব্দ তুলে ধাতব পাতে ভর করে তারা দূরে চলে গেছে। এমন সময় কুঁড়েটার দরজা খুলে একজন বয়স্ক মহিলা এসে বাসে উঠলেন। আবারো ডেভিড পরিচয় করিয়ে দিলো, ইনি সেই লোকটির (মনে হচ্ছে ওর নাম মাইক বলেছিলো) মা, একজন শিল্পী। ঐ কুঁড়েতেই মেটাল, পোড়ামাটি এইসবের কাজ করেন আর পর্যটকদেরা কেউ কেউ কেনে সেসব সুইভেনির হিসেবে। আমার তখন কোন কারণে হঠাৎ খুব ঠান্ডায় ধরেছে, পায়ের পাতা অসাড়, হাতও তাই। তাই হাত পা গরম করতে ব্যস্ততার মধ্যেই শুনলাম সেই ভদ্রমহিলা বল্লেন, আমি তোমাদের সাথে কিছুএকটু গল্পগাছা করতে এলাম। আমি ভাবলাম নিশ্চয়ই স্যুভেনির বিক্রি করবেন। কিন্তু না, উনি একটা বাঁধানো অ্যালবাম বের করে আমাদের ছবি দেখাতে আর গল্প বলতে শুরু করলেন। দরুণ সব গল্প ও ছবি, ওঁদের নিজেদের জীবনের ঘটনবলী। দেখলাম ঐ নদীর ধারেই ওদের বেশ গোছানো বাড়ি ছিলো। সুখী পরিবার। তারপর একদিন একটা হিমবাহ এসে সেই সংসার গুঁড়িয়ে দেয়। সবাই প্রাণে বেঁচে যায়, কিন্তু ওরকম বাড়ি আর করা সম্ভব হয়নি। তখনও নতুন বাড়ি হয়নি, কাঠকুটোর ধংসস্তুপের মধ্যেই একটা ভালুক এসে ওঠে, এবং বেগতিক দেখে তাকে মারতে বাধ্য হন ওঁরা। একটা ছবিতে দেখলাম এক কিশোরী মেয়ে নদীর সামনে দাঁড়িয়ে। পরের আরেকটা ছবিতে দেখি নদীর জল ভাসিয়ে নিয়েছে দুপাড়, সেই সাথে বাড়িও। তারপর অনেক সময় কেটে গেছে। ওঁর স্বামী মারা গেছেন এবং মেয়েও আর এই দূর্গম জায়গায় কষ্টের জীবন বেছে নেয়নি। তাই এখন ঐ সামান্য খ্যাপাটে ছেলে আর উনি এখানে থাকেন। জায়গাটা ফেয়ারব্যাঙ্কস থেকে ঘন্টা চারেক উত্তরে হবে, কোনদিকেই লোকালয় বলতে যা বোঝায় কিছু নেই, স্যুভেনির যা উনি বানান তার ক্রেতা (খুবই সামান্য বিক্রি হয়, আমাদের বাসের হিসেব যা দেখলাম) বলতে পর্য্যটকেরা। তাও ওঁরা এইখানেই থাকবেন। এইখানে ওঁদের শিকড় আছে। সেই স্নো-আউলটার মত, যে একদিন ঝড়ের রাতে ডানা ভেঙে ওদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়, এবং পরে শুশ্রুষায় সেরে উঠেও আর চলে যায়না। মাইক যাকে নিয়ে নদী দেখিয়ে এলো, তার কাছে নাকি পয়সা চায়নি, ওটা নাকি ফ্রি সার্ভিস, কেউ যেচে পয়সা দিলে দেয়, এইরকম। আমি ভারি অবাক হলাম। ওঁদের চেহারায়, পোষাক আশাকে দারিদ্র্যের ছাপ খুব স্পষ্ট। প্রকৃতিকে মানুষ অনেক জায়গাতেই পদানত করেছে। কিন্তু ইউকন নদীখাতের ঐ একটি কুঁড়ের জনপদে প্রকৃতিই রাজা। সেখানে এত কম রিসোর্স নিয়ে যুদ্ধ করতে থাকা দুটি মানুষ আমাদের হিসেবের, চেনা ছকের বাইরের একটি পরিবার, খুবই নাড়া দিলো। ওঁদের আমরা কোনদিন বুঝবোনা। যিনি ইউকন নদী ঘুরে এলেন, তিনি মাইককে টাকা দিতে গিয়ে আবিষ্কার করেন চেঞ্জ নেই। তখন মাইক এসে গাইডের কাছে টাকা ধার করে পয়সা ফেরত দিলো। ডেভিড ওদের অনেকদিন ধরে চেনে, অসুবিধের কিছু নেই।
    গল্প বলে টলে, সবাইকে মন দিয়ে গল্প শোনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে হাসিখুশি মাইক আর তার মা নেমে গেল। চুল্লীর আগুন নিভে আসছে, ওদিকে পরের বাসটাও এলো বলে, আরো কেউ হয়ত নদী দেখতে চাইবে। ঝোড়ো তুষারে ঝাপসা হয়ে আসা উইন্ডস্ক্রীনে দূরে দেখা গেল স্নোমোবিলে আবার কিক পড়লো। আমরাও ফিরে চললাম আমাদের রাজ্যে, যেখানে লড়াইগুলো অনেক সোজা।
  • I | 192.66.84.97 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৫:৩৭692741
  • অপুর্ব!
  • eije | 108.228.61.183 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২৩:০৬692743
  • কিকিদির জন্য
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন