এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বুদ্ধদেব বনাম শঙ্কারাচার্য্য

    ব্রতীন
    অন্যান্য | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৪৪৫১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Atoz | 236712.158.678912.29 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:০৩729248
  • মাটি খুঁড়ে তুললেই সেটা হবে? শাকে পাতায়ও অনেক প্রাণী বাস করে। ছোটো ছোটো পোকামাকড়।
  • Atoz | 890112.162.783423.147 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:২৯729249
  • অবশ্য তাদের বাঁচানো যায়, না মেরে সাবধানে ঝেড়ে ঝেড়ে তাড়িয়ে দেওয়া যায়।
  • অরিন | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:৪৭729250
  • Atoz: "আর, "মৈত্রী, করুণা ও ভালোবাসা"র দ্বারাই যদি খাওয়া হয়, তাহলে প্রাণীই বা কী, উদ্ভিদই বা কী? সবই সমান!"

    ওমা, একশোবার! এবং যথারীতি আবার একটা দারুণ পয়েন্ট লিখলেন!

    প্রাণী, উদ্ভিদ, আমি, আপনি, সব মিলিয়ে মিশিয়ে এভাবেও দেখা যায় যে খাবার খাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে একটি শরীর আরেকটি শরীরকে গ্রহণ করছে। প্রতিদিন, প্রতিটি খাবারের কণাকে মৈত্রী, করুণা, আর ভালোবাসা দিয়ে খেয়ে দেখা, :-)

    সব সমান। তাই তো খাবার খাওয়াও একটা ধ্যান। ভিয়েতনামের জেন সাধু থিক নাট হান-এর খাওয়া দাওয়া নিয়ে একটা ভারি চমতকার বই আছে, তার মধ্যে একটা চ্যাপটার কি করে আপেল খেতে হয়, :-), তো সেখানে তিনি লিখছেন,

    "... When you chew, know what you are chewing. Chew slowly and completely, twenty to thirty times for each bite. Chew consciously, savoring the taste of the apple and its nourishment, immersing yourself in the experience 100 percent. This way, you really appreciate the apple as it is. And as you become fully aware of eating the apple, you also become fully aware of the present moment. You become fully engaged in the here and now. Living in the moment, you can really receive what the apple offers you, and you become more alive."

    এই যে Apple as it is, যথাভূতম, এই ক্ষণ, এই মুহূর্ত, এই গ্রাউন্ডিং এর ব্যাপারটা অনুধাবন করাটা জরুরী। কি মুশকিল,আপনি মাছ মাংস খাচ্ছেন মানেই আপনি হিংসাশ্রয়ী, ব্যাপারটা তো এরকম নয়।
    যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খাবার গ্রহণ করুন, (আমিষ কি নিরামিষ কিছু আসে যায় না), অনুধাবন করুন যে এই খাবারের যে কণাটুকু আপনি নিচ্ছেন কোথা থেকে কিভাবে কত হাত ঘুরে সে কিভাবে আপনার কাছে পৌঁছেছে, এর একটা দারুণ ম্যানিফেস্টেশন জাপানী জেন এর ওরিওকি প্রথায়,

    "... Just as shamatha-vipashyana and tonglen are a continuous thread throughout the three yanas, oryoki can be experienced and appreciated at all levels of the path. At one level, the focus of oryoki is on relating precisely with form and detail, learning the technique and experiencing the chants as dharma. This is relating to oryoki as shamatha, with great precision and mindfulness. We do everything in such a way that we are refraining from contributing to any confusion in the world. There are no dishes left at the end of an oryoki meal for someone to wash for us. As the Vidyadhara put it, “We are creating our world, and we are appreciating our world in that way. We are also making sure that our world doesn’t create any further nuisance for others, but in fact provides tremendous vision and inspiration for people to clean things up”

    https://shambhala.org/about-shambhala/the-shambhala-path/oryoki/

    এই সব আর কি!
  • sm | 236712.158.9005612.87 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:০৩729251
  • দূর,আমার মনে হয় নির্বিচারে প্রাণী হত্যা কম করতে,এই সব কথার মার প্যাঁচ তৈরি হয়েছে।
    স্ত্রী মশা রক্ত খেতে না পারলে,লাইফ সাইকেল কমপ্লিট করতে পারবে না।
    একটা জার্সি গরু দিনে চল্লিশ লিটার দুধ দিতে পারে।বাছুরের ওজন পনেরো কেজি। যদি নিজেদের ওজনের সমান দুধও খায়,বাকি পঁচিশ কেজি কি ফেলে দেওয়া হবে?
    মাংস,মাছ হলো ইমিডিয়েট প্রোটিন সোর্স।অস্বীকার তো করা যায় না।সেই জন্য জাপানী গুলো বৌদ্ধ হওয়া সত্বেও ,যাবতীয় মাংস ও মাছ খায়।মনের সুখে তিমি শিকার করে।
    নির্মলা শিথরমণ কে বিরোধীরা প্রশ্ন ছুঁড়েছে।আপনি কতো করে পিয়াঁজ কেনেন?
    ওনার প্রম্পট উত্তর,আমার বাড়িতে পিয়াঁজ, রসুন ঢোকে না।
    বোঝো অবস্থা!
    বাস্তব অস্বীকার করলে ধর্ম টেঁকে না,বা সেই অনুশাসন পালিত হয় না।
  • অরিন | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৪৩729252
  • sm: "বাস্তব অস্বীকার করলে ধর্ম টেঁকে না,বা সেই অনুশাসন পালিত হয় না।"
    যাকে বলে "right on the money"! মানুষের জন্য ধর্ম না ধর্মের জন্য মানুষ?
  • Atoz | 236712.158.788912.198 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪১729253
  • অরিন,
    আপনার আলোচনার জন্য তো বটেই, লিংকটার জন্যও অনেক ধন্যবাদ।
    "মৈত্রী, করুণা আর ভালোবাসা"র দ্বারাই তাহলে "অন্নং ব্রহ্ম" অনুভূতি হয়। নইলে সবই তো জাস্ট কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি।
    সেই আরণ্যক এর ভানুমতী দের কথা মনে পড়ে গেল। অতি সাধারণ দুটি অন্ন আর লবণ জোটে, কোনোদিন হয়তো কিছু ব্যঞ্জন। লেখক বিস্মিত যে এরা সবাই সুস্থসবল ও স্বাস্থ্যবান মাত্র ওই সামান্য সাধারণ খাবার খেয়েই। কোনো অসুখবিসুখও নেই নগরবাসীদের মত। কেজানে হয়তো চাবিকাঠিটি ঐ "মৈত্রী, করুণা ও ভালোবাসা"র দ্বারা অন্নগ্রহণ!
  • রঞ্জন | 237812.68.674512.187 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:০৮729254
  • বুদ্ধদেব অন্তিম রাত্রে ভক্তের দেওয়া শূকর মাংস খেয়েছিলেন।
    মনে হয় উনি অনর্থক প্রাণীহত্যা বা তাকে একটা মহৎ পূণ্য কর্ম বলে গ্লোরিফাই করার বিরোধী ছিলেন ।আসলে উনি সমস্ত এক্সট্রিম স্ট্যান্ডপয়েন্টের বিরোধী। মধ্যমার্গের প্রবক্তা। তাই অনাহারে থেকে কঠিন তপস্যা করা নিরর্থক মনে করতেন।
    এই বৌদ্ধধর্মের যাগযজ্ঞবলি- বিরোধী রূপকল্প মনে হয় ব্রাহ্মণ্যধর্মের নির্মাণ।
    এতে দর্শনের দিকটা, অসাধারণ জ্ঞানতত্ত্ব (এপিস্টেমোলজি) এবং মানবজীবনের উদ্ভব-বিকাশ-বিলয়ের পিছনে এক বেদবিরোধী-নিরীশ্বরবাদী চিন্তাকে ঢেকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
    ক্লাস থ্রি থেকে আমিও ওই পড়েই বড় হয়েছি।
    তাই বুদ্ধ হলেন বিষ্ণুর দশাবতারের এক অবতার।
    "নিন্দসি যজ্ঞবিধেহরহযাতম,
    সদয়হৃদয়দর্শিতপশুঘাতম।
    কেশবধৃত বুদ্ধশরীর জয় জগদীশ হরে।।"

    (এটা আমার ব্যক্তিগত মত , অন্য ব্যাখ্যাও সম্ভব।)
  • Shankar | 237812.68.674512.187 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:১৫729255
  • যাই হোক, তুমি অদ্বৈতবাদ মানতে না হয় মেনো না, কিন্তু গৌতম যে দেশের সর্বনাশ করলো, সে কথা মানো তো? এর একটা বিহিত করা উচিত নয় কি?
  • রঞ্জন | 236712.158.566712.59 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:২৬729256
  • শংকরাচার্য্য।
    অদ্বৈত বেদান্তের প্রবক্তা। দর্শনের ক্ষেত্রে জগতের সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় মানেন না । কারণ ব্রহ্ম সত্য , জগৎ মিথ্যা।

    জগতের অস্তিত্ব শুধু ব্যক্তিমানসের অবিদ্যাজনিত আবিল চেতনা নির্ভর। রজ্জুতে সর্পভ্রমের মত এক অপটিক্যাল ইল্যুশন। দর্শনের জগতে মিল ইউরোপীয় সাবজেক্টিভ আইডিয়ালিজমের মহান দার্শনিক ব্র্যাডলির সঙ্গে।

    ফলে বাস্তবদুনিয়ার দুঃখকষ্ট নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই । মানুষের উদ্দেশ্য সাধনার মাধ্যমে চেতনার আবিলতা দূর করে চেতনার শুদ্ধরূপে সবকিছু দ্যাখা বা ব্রহ্মচেতনায় লীন হওয়া। রামকৃষ্ণদেবের উদাহরণে 'ঘটাকাশের মহাকাশে' মিলে যাওয়া।
    ইহলৌকিক জীবন তুচ্ছ। তাই চারপাশের প্রবহমান জীবনের দিকে তাকালে ঊনি দেখতে পানঃ
    'বালকাসর্বেক্রীড়াসক্তা,
    তরুণাসর্বে তরুণীরক্তা,
    বৃদ্ধসর্বে চিন্তাবিলগ্ন,
    পরমব্রহ্মপর কোঅপি মগ্ন।"
    ( ব্যাকরণে আমার ভুল হতে পারে )।
    ছেলেপুলের দল খেলে বেড়াচ্ছে। ছোকরারা ছুটছে মেয়েদের পেছনে। বুড়োরা গালে হাত দিয়ে চিন্তায় ডুবে আছে । পরব্রহ্ম নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই ।
    কিন্তু উনিই আবার চারদিশায় চারটে মঠ বানালেন এবং সনাতন ধর্মের সন্ন্যাসীদের দশভাগে ক্যাটেগোরাইজ করে দশনামী সম্প্রদায় বানালেন। ভারতী-পুরী-সরস্বতী ইত্যাদি। তোতাপুরি, কেশবানন্দ ভারতী এঁদের কথা সবাই জানি।
  • রঞ্জন | 236712.158.786712.147 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:৫৯729258
  • কিন্তু একজায়গায় দুজনের মধ্যে আপাতমিল দেখতে পাচ্ছি।

    সম্যকদৃষ্টি।
    দুজনেই এই দুনিয়াকে বাইরের নামরূপের খোলসের বাঈরে আসল চেহারাটা দেখতে বলছেন। কিন্তু মিল ওইটুকুই।
    কারণ শংকরের মতে সত্যের লক্ষণ হল নিত্য, শাশ্বত। যা পরিবর্তনশীল, যা অস্থায়ী, যা অনিত্য --তা মিথ্যা। তাই এই নামরূপের প্রপঞ্চময় জগত। তাই তা মিথ্যা। একমাত্র সত্য হল ব্রহ্ম; কারণ শুধু তা ই অবিনাশী, অবিকারী, দেশ-কালের উর্ধে থেকে যায় । এ হল শংকরের সম্যকদৃষ্টি। শাশ্বতবাদী দর্শন।

    অন্যদিকে ক্ষণিকবাদী বুদ্ধ মনে করেন এ জগতে কোনকিছুই শাশ্বত নয় ।সমস্ত নামরূপের জগতের অস্তিত্ব ক্ষণিকের জন্যে , তা বলে মায়া নয় , মিথ্যে নয় ।
    বুদ্ধের চোখে কোনকিছুই যে শাশ্বত নয় এটাই সম্যকদৃষ্টি। যা নির্দিষ্ট কারণে জন্মায়, বিকশিত হয় , তা হ্রাসমান হবে এবং কারণটি অদৃশ্য হলে কার্যটিও লুপ্ত হবে।
    তাই বুদ্ধের মেটাফিজিক্সে এই জগত দুঃখময়, কিন্তু তার কারণ আছে । তাই এর প্রতিকার সম্ভব , তা হল সেই কারণগুলোকে (আকাঙ্খা ইত্যাদিকে) দূর করা।
    বুদ্ধের ভাবনাচিন্তা ইহজগত নিয়েই। তাই ওঁর সমাধান হল আটটি সৎ পথে চলা ।
    কিন্তু এসব হীনযানের সৌত্রান্তিক, বৈভাষিক সর্বাস্তিবাদী স্কুল অব্দি এরকম ছিল।
    এল মহাযান। নাগার্জুনের শূন্যবাদ (মাধ্যমিক দর্শন)-- তিব্বতীরা এর অনুগামী; ধর্মশালায় দেখতে পাবেন-- অসংগ-বসুবন্ধুর বিজ্ঞানবাদ (যোগাচার দর্শন ) অনেকটাই বেদান্তের মত । প্রতীক ও উপাসনার পদ্ধতি ছাড়া অমিল খুব রইল না । বেদান্ত এবং মাধ্যমিক দু'রকম সত্য এবং দু'রকমের জগত ( পারমার্থিক এবং অবিদ্যার জগত) স্বীকার করেন। টার্মগুলো আলাদা। এরপরে মূর্তিপূজো ও এল। এলেন সুন্দরী তারাদেবী, পদ্মপাণি অবলোকিতেশ্বর। তারপর বজ্রযান, ডাকিনীযান আরও অনেক কিছু তন্ত্রমন্ত্র ভূতপ্রেত সবই এল।
    ( ছত্তিশগড়ের সরগূজা জেলায় মোইনপাটে তিব্বতী উদবাস্তুদের শিবিরে দেখেছি বাড়িগুলোর পাঁচিলে সাদা সিল্কের পতাকায় ভুত তাড়ানোর মন্ত্র লিখে গোঁজা।)
    এভাবে ধীরে ধীরে চিন্তাজগতে হিন্দু ও বৌদ্ধসম্প্রদায়ের মধ্যে মূলগত ফারাকটা গায়েব হতে হতে যা হইল জানে শ্যামলাল।
    ঠিক যেভাবে আমার শৈশবে দ্যাখা কংগ্রেস ও কম্যুনিস্ট ছিল দুই আলাদা মেরুর জীব। আজকে?

    বুদ্ধ ছিলেন গুরুবাদের বিরুদ্ধে। বলতেন --নৌকো করে পারে যাবার পর কেউ নৌকোটাকে মাথায় করে বাড়ি নিয়ে যায় না ।
    আম্বেদকার ক্যান কম্যুনিস্ট না হয়ে বৌদ্ধ হলেন তার অন্যতম কারণ হিসেবে বলেছেন --এটি ওপেন সিস্টেম; মুক্তবুদ্ধির চর্চা ইত্যাদি।
    বুদ্ধ ঈশ্বর আত্মা নিয়ে মাথা ঘামানো সময়ের অপব্যয় মনে করতেন , বিরক্ত হতেন। শংকরাচার্য্য? দশনামী সম্প্রদায়?
  • Atoz | 890112.162.893423.136 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৫৩729259
  • একদল কর্পোরেট বৌদ্ধমত নিয়ে খুবই উলুতপ্লুত। এ নাকি আসলে একরকমের থেরাপি।
  • অরিন | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২৮729260
  • @Atoz: "একদল কর্পোরেট বৌদ্ধমত নিয়ে খুবই উলুতপ্লুত। এ নাকি আসলে একরকমের থেরাপি।"

    সে আর বলতে? থেরাপি নিয়ে গণ্ডেরিরামদের বিলিয়ন ডলারের বেওসা।

    - গুগলের চেড মেং ট্যান: "search within yourself" (youtube:
    )

    - জন কাবাত জিন: MBSR (Mindfulness based stress reduction), অষ্টাঙ্গমার্গের সম্মা সতী আর সম্মা সমাধির দুটো গুপি: আট সপ্তাহের কোর্স (৩৫ মিনিট দৈনিক ধ্যান, আট সপ্তাহ কোর্স; এক দিনের রিট্রিট, ইত্যাদি)। বহু বহু গবেষণা হয়েছে, মোটামুটিভাবে Anxiety/depression এর নিরাময় (??) কিছুটা কাজ দেয়, যদিও আমি ও আমার ন্যায় কিয়দ অর্বাচীনরা যতদূর
    স্টাডিগুলো খুঁটিয়ে পড়ে দেখেছি, ওরকম বলা যায় না। কা কস্য? পাশ্চাত্যে একটা গোটা ইন্ডাস্ট্রি তৈরী হয়েছে।
    - (f) ACT ((ফোকাসড) acceptance commitment therapy)'র নানারকমের বৈচিত্র্য
    - বহু App, podcast -- Calm/headspace/insight timer ...
    - ফাইভ স্টার রিট্রিট, (চড়া দাম নিয়ে)
    তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ....

    @রঞ্জন: "বুদ্ধদেব অন্তিম রাত্রে ভক্তের দেওয়া শূকর মাংস খেয়েছিলেন।"

    রঞ্জনবাবু, যতদূর জানি, এই বিষয়টা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে খাবারটা সম্ভবত "রাত্রে" হয়নি। প্রথমত, বুদ্ধদেব 'রাত্রে' কিছু খাবেন বলে মনে হয় না, সেযুগে ও এযুগেও, সদ্ধর্ম যাঁরা পালন করতেন/করেন, তাঁরা সাধারণভাবে একবেলা দ্বিপ্রাহরিক আহার করেন, রাতে বড়জোর সামান্য হালকা খাবার, ফল/জল/চা/ ইত্যাদি চলতে পারে, সাপার জাতীয় ফুল মিল চলবে না, অতএব বুদ্ধদেবের লাস্ট সাপার বলা যাবে না, ;-) । দ্বিতীয়ত, খাবার গ্রহণ করার পর, বুদ্ধদেব শিষ্যদের sermon দিয়েছিলেন। নানা কারণে sermon এর সময় হত দিনের বেলা।

    সে যাই হোক, দীঘ্ঘনিকায়াতে ভগবান বুদ্ধদেবের মহাপরিনির্বাণ সূত্রের কাহিনি, রঞ্জনবাবু, আপনার চেয়ে কেই বা ভাল জানবে, তবু এখানে যেহেতু গুরু, চণ্ডাল, সকলের আনাগোনা, তাই, আমাদের ন্যায় প্লেবদের জ্ঞাতার্থে, আমি যতদূর, যেমন পড়েছি , লিখছি (ভুল মনে হলে অপরাধ না নিয়ে শুধরে দেবেন):

    ভগবান বুদ্ধদেব যখন পাভা নামক জনপদে চুণ্ড কাম্মারপু্ত্ত নামে জনৈক লৌহকারের গৃহে সশিষ্য অধিষ্ঠান করছিলেন, তাঁর তখন ৮০ বছর বয়স, শরীরও ইদানীং ভালো যাচ্ছে না, প্রায়ই পেটে ব্যথা হয়। চুণ্ড, তাঁর জন্য যে খাবারের বন্দোবস্ত করেছিলেন তার মধ্যে একটি আইটেম ছিল "শূকরমধ্ব", এছাড়াও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যও ছিল। আমি যতটুকু দীঘ্ঘনিকায়ে পড়েছি, বুদ্ধদেব চুণ্ডকে নির্দেশ দেন যে অন্যান্য আইটেম শিষ্যদের দিতে, তিনি শূকরমধ্ব নামে খাবারটি গ্রহণ করবেন। বাকী শূকরমধ্ব চুণ্ড যেন মাটিতে গর্ত করে ঢেলে দেন, দিয়ে মাটি বুজিয়ে দেন, কারণ তথাগত যে খাবার শেষ দিনে খেয়েছেন, তা যেন আর কেউ, দেবতা, গন্ধর্ব, কারো দৃষ্টিগোচর না হয়।
    এর পর তিনি শিষ্যদের যথারীতি শিক্ষা দেন। শিক্ষাদানের পর তাঁর পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়, এবং ডিসেন্ট্রির মত রক্ত-আমাশা হতে থাকে (লোহিতপাখণ্ডিক)। তারপর পাভা থেকে তিনি এই যণ্ত্রণা নিয়েই কুশীনগরে পৌঁছন, সেখানে পৌঁছতে পৌঁছতে বেশ বেলা, কাকুথ্থ নদীতে চান করে এসে আনন্দকে দুটি শাল বৃক্ষের মাঝে এক চিলতে জমিতে আসন বিছোতে বলেন, এইখানেই তথাগতের মহাপরিণির্বাণ হবে।

    এখন বাদবাকী কথা থাক, এই শূকরমধ্ব জিনিসটি যে কি, তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে। শূকরমধ্ব কি নরম করে রান্না করা শুয়োরের মাংস (তুলতুলে করে রান্না করা পর্ক বেলি, :-))? পড়লে তাই মনে হওয়া স্বাভাবিক, ও খ্রীস্টিয় পঞ্চম শতকে বুদ্ধদাস এরই উল্লেখ করেছেন। আবার চৈনিক আগম অনুযায়ী,শূকর মধ্ব একপ্রকার মাশরুম (pig's delight fungus) | মাশরুম ভারতে শাস্ত্র অনুযায়ী ব্রাত্যজনের খাবার, কাজেই চুণ্ডের বুদ্ধদেবকে প্রদেয় খাবার মাশরুম না হওয়ার কোন কারণ নেই।
  • Atoz | 236712.158.678912.251 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৩729261
  • আমিও তাই শুনেছিলাম, সুকরমদ্দব নামের একরকম মাশরুম(ছ্ত্রাক)।
  • Atoz | 236712.158.788912.182 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৯729262
  • আর এই বিভিন্ন বৌদ্ধমত-ভিত্তিক থেরাপিগুলো জনপ্রিয় করার নেপথ্যে চৈনিক লামাদেরও খুবই অবদান আছে। এখন দক্ষিণ আমেরিকাতেও নাকি বৌদ্ধমতের রমরমা হচ্ছে। নানারকম ঘোরাঘুরি, মেডিটেশন, দামী হোটেল, মন্ডলচিত্রম, প্রার্থনা, স্পিরিট নৃত্য--- ইত্যাদি সব মিলিয়ে বড়লোকদের জন্য চমৎকার ভালো প্যাকেজ। ঃ-)
  • অরিন | 8990012.41.893423.117 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:০৪729263
  • বৌদ্ধধর্ম নিয়ে যে যা পারে করে। করুক না। করে খাক। পথ তো সেই একটাই, প্রতিনিয়ত নিজের শরীর ও মনে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ, আর প্রেম করুণা, ভালবাসায় নিমজ্জিত হয়ে সদাসর্বদা সমস্ত জগতের অপ্রমেয় মঙ্গল কামনায় সর্বজনহিতায় জীবন কাটানো। জগতের আর সব কিছু তুচ্ছ। যত বেশী লোকে করে, ততই মঙ্গল।
  • Atoz | 236712.158.788912.84 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:২৬729264
  • ব্যবসা জিনিসটাই তো তাই। যেমন করে পারো, যা পারো করেকম্মে খাও বাছা। ঃ-)
    তুতিয়ে পাতিয়ে যেমন করে পারো গছিয়ে যাও। হারারি সায়েবকে পর্যন্ত বিপাসনা গছিয়ে ছেড়েছেন আমাদের সত্যিনারাণ গোয়েঙ্কা। ঃ-)
  • :-() | 237812.69.2323.43 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৪২729265
  • নাঃ অরিন্বাবু (৬টা ৪ এ এম), এইটি সকলে মানে না — “পথ তো সেই একটাই”। কেউ কেউ বলে থাকেন “যত মত, তত পথ”।
  • রঞ্জন | 237812.69.453412.116 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৪৮729267
  • অরিন,
    লজ্জা দেবেন না । আমি উৎসাহী ছাত্র, এর বেশি কিছু নয় । যদিও আমার প্রাথমিক উৎসাহের কারণ রাহুল সাংকৃত্যায়ন এবং দেবীপ্রসাদ চট্টোর লেখাগুলো, তবু জীবনের শেষ ইনিংস খেলার এই দিনগুলোয় মনের সব জানালা খুলে রেখেছি। আপনার অনুবাদও মন দিয়ে পড়েছি। আমি নিজের বামপন্থী বায়াস নিয়ে সচেতন।
    এ পাতায় আপনি ছাড়া শিবাংশু হচ্ছেন বুদ্ধসাহিত্যের খুঁটিয়ে পড়া লোক। ওঁর "বুদ্ধ-- এক নিরন্তর অডিসি" নামের গতবছর প্রকাশিত বইটি আপনাদের ভালো লাগবে মনে হয়। তাতে মানুষ বুদ্ধ, তাঁর জীবন ও দর্শন নিয়ে প্রচারিত অতিকথার জাল সরিয়ে ইতিহাস সম্মত ভাবে যতটুকু স্বীকার্য তা তুলে ধরার প্রচেষ্টা এবং নিরন্তর উঠে আসা প্রশ্নগুলোর নিরাকরণের চেষ্টা-- সুধী পাঠককে ভাবাবে।
    চুন্ডের বাড়িতে আহার এবং দিনে আহার গ্রহণ নিয়ে আপনার বক্তব্য একদম সঠিক। আমি রাত্রে পেটে ব্যথা এবং অসুস্থ হয়ে পড়া নিয়ে শর্টকাট মারতে গিয়ে ছড়িয়ে ফেলেছি।

    এতোজ,
    অনলাইনে 'কোরা"তে মার্কিন সাহেবের সঞ্চালিত বৌদ্ধদর্শন, আধুনিক সাইকোলজি এবং মনোচিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে কোর্সটি কয়েকবছর আগে মন দিয়ে পুরো করলাম। প্রধানতঃ তিব্বতী ভার্সন অর্থাৎ নাগার্জুনের মাধ্যমিক দর্শনের উপর ভিত্তি করে এঁদের প্রচেষ্টা। তবু ভরিল না চিত্ত।
    খুঁজে খুঁজে কোলকাতায় বেলেঘাটার এক প্রান্তে হীনযানী বৌদ্ধচর্যার কেন্দ্রে গিয়ে নামী বৌদ্ধভিক্ষুর কাছে গেলাম। এঁরা সবাই ত্রিপুরা থেকে আসা বৌদ্ধ, থেরবাদী। শ্রীলংকার সেন্টার এবং মহাবোধি সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত। বাংলায় বৌদ্ধসাহিত্য অনুবাদ করছেন। পালি ভাষায় কোলকাতা ইউনির ডক্টরেট।
    দেখলাম মিসেস রীস ডেভিসের অতিকথার জাল সরিয়ে মানুষ বুদ্ধকে নির্মাণের প্রচেষ্টা তাঁদের না- পসন্দ। মনে হয় যেকোন ধর্মের জন্যে অতিকথা এবং মিথ জরুরী।
    ঊনি আমাকে রোজ হোয়াটস অ্যাপে ধম্মপদ থেকে দুটো শ্লোক এবং বিভিন্ন দেশে বুদ্ধমূর্তির ছবি পাঠাতে লাগলেন। আমিও বিপাসনা ধ্যানের দশ দিনের শিবিরে যাবার জন্যে তৈরি হলাম।
    এমনসময়ে রোহিঙ্গিয়দের ভারতে এবং বাংলাদেশে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা শুরু হলে উনি রোহিঙ্গিয়াদের বিরুদ্ধে এবং তাদের হত্যার সপক্ষে এমন উগ্র সারমন দিতে লাগলেন যে আমি তিতিবিরক্ত হয়ে তাঁকে লিখলাম--আপনি যা করছেন তা তথাগতের শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত। দস্যু অঙ্গুলিমালকে যিনি এত সহজে স্বীকার করেছেন, সর্বব্যাপী হিংসার বিরুদ্ধে যাঁর সদ্ধর্ম তাঁর নাম নিয়ে আপনি এসব কি করছেন?
    সম্পর্ক ছিন্ন হল।
    আমার নাস্তিক মনের ভূমি বৌদ্ধদর্শনের ডায়লেক্টিক্স এবং কার্যকারণ সম্বন্ধ।
    আমি মনে করি বৌদ্ধদর্শন সারা বিশ্বে ভারতীয় মনীষার শ্রেষ্ঠ অবদান, বেদান্ত নয় ।
    অরিন এবং আপনার শেষ পোস্টের ব্যাপারে সম্পূর্ণ সহমত।
    হিংসায় উন্মত্ত এই পৃথিবীতে বুদ্ধ যেন আজ বেশি প্রাসংগিক।
  • অরিন | 8990012.41.893423.111 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৪৮729266
  • নানা, সে তো ঠিক কথা । এই পথটা বৌদ্ধ ধর্মের প্রসঙ্গে লিখেছিলাম। ওতে একটাই পথ, যত দূর জানি ।
  • Atoz | 890112.162.893423.112 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:০৯729269
  • দেখুন জৈনধর্মের মতন আর কিছু নেই। দুটি সম্প্রদায়। দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর। যদি দিগম্বরে ঢুকে পড়তে পারেন, আর কোনো ঝামেলাই রইল না। ঃ-)
  • Atoz | 890112.162.783423.129 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:১৫729270
  • বিম্বিসার টিম্বিসাররা প্রচুর যুদ্ধ করেছেন, তেনার ছেলে অজাতশত্রু তো আরো এককাঠি উপরে।
    অহিংসা প্রবর্তক বুদ্ধ তো তখন রীতিমতন চলেফিরে বেড়াচ্ছেন। তা তিনি এঁদের কিছু বলতেন না? নাকি ক্ষত্রিয়ের ধর্ম, দেশরক্ষার প্রয়োজন, জাতির কল্যাণ ---এইসব ছাড় দিতেন? রীতিমতন সেনানীগ্রাম ছিল, সেখানে সৈন্যরা থাকত। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সদ্ধর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল, ঝামেলা হচ্ছিল, তখন রাজার পক্ষ থেকে স্পেশাল নির্দেশ দিয়ে সৈন্যদের সদ্ধর্ম নেওয়া বন্ধ করা হয়। কী অবস্থা!!!!!
  • :-() | 237812.69.2323.235 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:২৩729271
  • কেন? বেদান্ত কি হিংসা করতে বলে নাকি? একটিকে প্রাসঙ্গিক বলার শর্ত কি অন্য কিছুকে খারাপ বলা? রনজনের অদ্ভুত যুক্তি যা হোক!

    তাও মনে করুন, অরিন্বাবু, ৬টা ৪৮-এর কথাটা একটু গোলমেলে থেকেই গেলো। বৌদ্ধ ধর্ম একটা পথ বটে। তার মধ্যে প্র্যাকটিস বা আনুষ্ঠানিকতা ডিফারেন্ট হতেই পারে। সব শেষে সেখানেই পৌঁছাবে সবাই। যেমন গানে আছে আর্কি, “করুনা তোমর কোন পথ দিয়ে কোথা নিয়ে যায় কাহারে, একদিন দেখি নয়ন মেলিয়া এনেছ তোমারই দুয়ারে।”
  • রঞ্জন | 236712.158.566712.213 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:৫৫729272
  • "কেন? বেদান্ত কি হিংসা করতে বলে নাকি? একটিকে প্রাসঙ্গিক বলার শর্ত কি অন্য কিছুকে খারাপ বলা? রনজনের অদ্ভুত যুক্তি যা হোক!"
    --- মরেচে! তাই বললাম নাকি? বেদান্ত একটি দার্শনিক চিন্তা। তাতে প্রত্যক্ষ ভাবে হিংসার কথা ওঠা অবান্তর।
    বরং অদ্বৈত বেদান্ত এই জগতকে মায়াময় বলায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত দুঃখকষ্ট সামাজিক সংঘাত এসব তুচ্ছ হয়ে যায় । আবার বেদান্ত এবং সনাতন হিন্দুধর্ম বেদএ আস্থাবান। পশুবলি এবং যুদ্ধবিগ্রহ নিয়ে কোন বিরোধিতা নেই । দর্শনে বেদান্ত এবং সামাজিক প্রথা নিয়মকানুনে মনুস্মৃতি-- এ হল সনাতন ধর্ম অনুযায়ী হিন্দুসমাজের আকর।
    ভগবদ্গীতার উদ্দেশ্যই হচ্ছে আত্মীয়নিধনে বিমুখ এবং ব্যথিত অর্জুনকে (মাতুলাশ্বশুরাশ্চৈব শালাসম্বন্ধীনোস্তথাঃ) যুক্তি দিয়ে যুদ্ধে-- অর্থাৎ হিংসায়-- প্রেরিত করা ( ময়ৈবৈতে নিহতাপূর্বমেব, নিমিত্তমাত্রং ভব সব্যসাচীন)।
    মনুসংহিতায় রয়েছে দলিত ও নারীদের প্রতি হিংসার (সরব এবং নীরব) সমর্থন। শূদ্রের নেই বেদে অধিকার। শুধু তাই নয় , শূদ্র বেদ পড়লে শুনলে তার জন্যে বরাদ্দ নৃশংস শাস্তি। নারীর উপনয়ন হয় না । তাই তারও বেদমন্ত্রে অধিকার নেই । অনেক দুর্গাপূজোর প্যান্ডেলে অঞ্জলির সময় দেখেছি পুরোহিত বলছেন-- ব্রাহ্মণেরা 'ওঁ' বলবেন, অন্যেরা এবং মা-বোনেরা 'নমঃ' বলবেন।
    উচ্চবর্ণের পুরুষ নিম্নবর্ণের কন্যাকে গ্রহণ করলে তা 'অনুলোম বিবাহ' এবং সিদ্ধ। অথচ নিম্নবর্ণের পুরুষ উচ্চবর্ণের স্ত্রীকে গ্রহণ করলে তা 'প্রতিলোম বিবাহ' --অসিদ্ধ এবং এর সন্তানেরা হবে 'বর্ণসংকর'!
    কয়েক দশক আগে কোলকাতায় জনৈক অরুন্ধতী দেবীর প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে বেদ-উপনিষদ পাঠ ঘিরে বিতর্ক এবং পুরীর শংকরাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতীর আঙুল তুলে শাসানো এবং শাস্ত্রবিরোধী বোলে অভিশাপ দেওয়া নিশ্চয়ই অনেকের মনে পড়বে।
    বুদ্ধ দাঁড়িয়েছিলেন এই সর্বব্যাপী হিংসা ও ঘৃণার বিপরীত মেরুতে। তাঁর দর্শনের শুরুই হচ্ছে এই যন্ত্রণা এবং কষ্ট লাঘবের খোঁজে। রাধাকৃষ্ণণ বৌদ্ধদর্শনের আধার নিয়ে বলছেন-- টির‍্যানি অফ পেইন।
    রবীন্দ্রনাথের 'হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী'।
    এদিকে সামাজিক দুর্দশা এবং মেয়েদের অবস্থা নিয়ে যাঁর সবচেয়ে বেশি সক্রিয় চিন্তা সেই বিদ্যাসাগর বলছেন বেদান্ত ও সাংখ্য হল ভ্রান্ত দর্শন। কিন্তু হিন্দুমানসে এদের খুব প্রভাব, তাই কোর্স থেকে বাদ দেওয়া যাবেনা। তাই অ্যানেকডোট হিসেবে মিলের 'লজিক' পড়ালে ভাল হয় ।
  • Atoz | 236712.158.788912.84 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:১১729273
  • আর বিদ্যাসাগর বৌদ্ধধর্ম নিয়ে কী বলেছেন? ঃ-)
  • অরিন | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:১২729274
  • @":-()": "বৌদ্ধ ধর্ম একটা পথ বটে। তার মধ্যে প্র্যাকটিস বা আনুষ্ঠানিকতা ডিফারেন্ট হতেই পারে। সব শেষে সেখানেই পৌঁছাবে সবাই। যেমন গানে আছে আর্কি, “করুনা তোমর কোন পথ দিয়ে কোথা নিয়ে যায় কাহারে, একদিন দেখি নয়ন মেলিয়া এনেছ তোমারই দুয়ারে।”"

    যাহ, আসল কথাটা তো বলেই দিলেন।

    এইজন্যই মনে হয় পথ একটাই, তার ওপরে হাজার রকমের 'যান'। কিরকম জানেন? সব সময়, নিরন্তর, নিজের শরীর, নিজের অনুভূতি, নিজের মনের প্রতি নজর রাখা (ধরুণ "সতী" বললেন তাকে, আমার হাবিজাবি অনুবাদে একসময় তাকে 'মনোময়তা' বলে লিখেছি)। এবার সেটাকে সেন্টারে রাখুন, নজর করুন সারাদিন মন এই খারাপ লাগছে, এই ভাল লাগছে, বোর লাগছে, লোভ হচ্ছে, ঘৃণা জাগছে, চূড়ান্ত আসক্তি জাগছে, এরকম অজস্র বোধ সারাদিন ধরে হতে থাকে। মনে নানারকম গল্প তৈরি করি আমরা (এক্ষুণি, নজর করুন, মনে কোন গল্পটা জেগেছে ?)। হবেই, আপনি কিছু না করলেও হবে, কিছু করলেও হবে। এখন আপনি স্থির করুন autopilot mode এ যাবেন না, না নিজে নিজেকে কন্ট্রোল করবেন? autopilot mode এ নিজেকে গা ভাসিয়ে ছেড়ে দিন, জীবন আপনাকে বার বার আন্দোলিত করতে থাকবে। গল্পগুলো আপনাকে চালাবে, না আপনি নিজের রাস্তা নিজে কেটে এগোবেন?

    অটোপাইলটে না গা ভাসাতে চাইলে, নিজেকে কন্ট্রোল করুন, :-)

    একটা উদাহরণ দিই: আমি/আমরা সবাই মিলে মাঝে মধ্যে canoe/kayak নিয়ে জঙ্গলে নদীর উজানে যাই। এবার খরস্রোতা নদী বেয়ে কায়াকিং করার সময়, আপনাকে কায়াকটাকে নদীর ঠিক মাঝখানে রেখে না উল্টে গিয়ে শুধু একটা লগি ডান বাঁ করে ঠেলে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে, কারণ খরস্রোতা গভীর নদীর হিমশীতল স্রোতে একবার উল্টোলে, আর ডানদিকে/বাঁদিকে/কোথাও বোল্ডারে আটকালে আর দেখতে হবে না। জীবনটাও ওইরকম, জানেন? হাজার রকমের প্রলোভন, এর মধ্যে না উত্তেজিত, না বিষন্ন, একমনে জীবনের ঠিক মাঝের স্রোতে অটলভাবে এগিয়ে যাওয়া । তাই হয়ত বৌদ্ধদর্শণে 'সোতপন্ন' (stream entry) কথাটা ওঠে।

    আর এই কন্ট্রোল নেওয়ারও "পথ" সেই একটাই: শরীরে মনে হৃদয়ে সমস্ত কিছুতে জগতে সবকিছুর প্রতি একটা অপার ভালবাসায় নিজেকে নিমজ্জিত করা। সেই মঙ্গল কামনা শুধু আপনার আত্মীয়-বন্ধুর প্রতি নয়, আপনার চূড়ান্ত শত্রুর প্রতিও, যাকে এতটুকু পছন্দ হয় না, তার দু:খেও অপার দু:খিত, তার আনন্দেও অপার আনন্দবোধ, তার মঙ্গল কামনাও এর মধ্যে পড়ে।

    যে কথাটা একটু আগে রঞ্জনবাবু লিখলেন বুদ্ধদেব আর অঙ্গুরিমালের গল্পের কথাটা তুলে। অতএব আপনার খাওয়া-দাওয়া, কথাবার্তা, মেসেজিং, সোস্যাল মিডিয়া, চলা-ফেরা, সমস্ত কিছুর মধ্যে এই অপার শ্রদ্ধা/ভালবাসা ফুটিয়ে তোলার সারাদিনে ব্যাপার। যা করবেন, সব যেন সেই গভীর অপার প্রীতি, ভালবাসা, করুণা (করুণা কিন্তু দয়া নয়, empathy, অন্যের সঙ্গে এক হয়ে যাওয়া) থেকে উঠে আসে।

    আমার কাছে এই-ই ধর্ম, যদি বলেন। আমার কি জানি মনে হয় সব ধর্মেই এই ব্যাপারটা আছে। আপনি আপনার মত করে খুঁজে নিন।
  • Atoz | 236712.158.788912.6 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:১১729275
  • সেটাই। এমনকি প্রচলিত কোনো ধর্ম নেই, এরকম জনজাতির মধ্যেও হয়তো করুণা, মৈত্রী, ভালোবাসা ব্যাপারটা থাকতে পারে।
  • :-9 | 237812.68.343412.29 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:১৮729276
  • নাঃ রনজনের সঙ্গে আলোচনা করছি না। কথা হচ্ছিল বৌদ্ধ দর্শন আর বেদান্ত দর্শন নিয়ে। তো তিনি শ্রুতি-স্মৃতি-পুরান-আইন বা মনুসংহিতা-ইতিহাস সব কিছু নিয়ে গুলিয়ে ঘেঁটে একশা করলেন। এভাবে কথা হয় নাকি!
    বেদান্ত শুধু মায়া বলে থামে নি। ব্রহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যার পরেও একটি ছত্র আছে। জীব ব্রহ্ম ইব, ন অপর।
    অর্থাৎ শূন্যং সর্বং শূন্যং, দুঃখং সর্বং দুঃখং-এর বৌদ্ধিকতা ছাড়িয়ে পূর্ণতায় পৌঁছে গেলেন।
    আমি বলছি না শূন্যতার বোধ খারাপ, তবে ব্যক্তিগত ভাবে তার থেকে উত্তরণ চাইবো।
  • :-8 | 237812.68.124512.69 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:৩৪729277
  • তাও ঠিক একমত হতে পারছি না, প্রিয় অরিন বাবু।
    আমি শরীর বা মনকে নজর করার কোনও যুক্তি পাই না। দু-একটা পোস্ট আগেই, আপনি বলেছেন ‘জগতের আর সবই তুচ্ছ’ বা এমন কিছু। তাই যদি মানি তবে এই দেহে-মনে থেকে কী লাভ? সাক্ষীস্বরূপে যাস্ট দেখে যাওয়া যেতে পারে, তার বেশীকম কিছু না।
    ঐ যে গানে যেমন আছে
    “দুঃখ নয় সে, সুখ নয় সে, নয় সে কামনা।”

    তবে হ্যাঁ এটুকু মানি, সব কিছুরই স্তর আছে।
    সবাই যে একই ভাবে পারবে এমন তো না। প্রথমে কেড়ে খেতে শিখবে, তারপর ভিক্ষে করতে শিখবে। উল্টোটা কাম্য না। সেই জন্যই নানা মত, নানা পথ। যে যেমন ভাবে পারে, যাবে।
    তাই পথ একটাই বলাতে আপত্তি করলাম।
    আর না, এবার শুনব।
  • অরিন | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:০৬729278
  • @":-8":

    "ঠিক একমত হতে পারছি না, প্রিয় অরিন বাবু"

    :-), আরে, একমত হবার দরকার আছে কি? তবে, আপনার লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে যেন আমি আপনি দুটো জানলা দিয়ে প্রায় একই দৃশ্য দেখছি, কিন্তু অন্যভাবে, যে যার নিজের মত করে।

    "তাই যদি মানি তবে এই দেহে-মনে থেকে কী লাভ? সাক্ষীস্বরূপে যাস্ট দেখে যাওয়া যেতে পারে, তার বেশীকম কিছু না।"

    লাভ নেই তো। অতি অবশ্যই তাই , এটাই অনাত্ত, এটাই সব কিছুর basis। কেন বলছি: আপনি যখন লিখছেন "দেহে-মনে থেকে কী লাভ", তখন যদি ভাবি, ' আচ্ছা, কে থাকে? যে থাকে সে কোথায় থাকে?' (লালনের খাঁচার ভিতর অচিন পাখি??) কারণ আলাদা করে self বলে তো কিছু থাকার নেই, তাহলে তার কোন পরিবর্তন হত না। আপনার শরীরের কোনটা ঠিক "আপনি"? আমার শরীরের ঠিক কোন জায়গাটা অপরিবর্তনীয়ভাবে আমি এবং ঠিক এইকারণেই "দেখা" মানে একজন সাক্ষীর দেখা, যে কথাটা লিখলেন। একটা শরীর, সে শ্বাস নিচ্ছে, আরো অন্যান্য শরীরের সঙ্গে সেও আরেকটি শরীর। এই চেতনা একজন সাক্ষীর চেতনা।

    "সবাই যে একই ভাবে পারবে এমন তো না। প্রথমে কেড়ে খেতে শিখবে, তারপর ভিক্ষে করতে শিখবে। উল্টোটা কাম্য না। সেই জন্যই নানা মত, নানা পথ। যে যেমন ভাবে পারে, যাবে।
    তাই পথ একটাই বলাতে আপত্তি করলাম।"

    থেরাবাদে যাকে বলে ৮৪,০০০ দ্বার । কনসেপ্ট-টা আপনি যেমন লিখেছেন, যে যেমন পারে, যে যে দরজাটা দিয়ে প্রবেশ করে।
  • Apu | 236712.158.566712.173 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১১:০৭729280
  • আমি ঠিক কনট্রিবিউট কর্তে পারছি না।

    এখন ভগিনী নিবেদিতার " প্রসম্গ বৌদ্ধ ধর্ম " পড়ে একটু আপডেটিত হ্চ্ছি

    উইল বী ব্যাক সুন
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন