এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • জনস্বাস্থ্যের ওপর উন্নয়ন ও অপউন্নয়নের প্রভাব

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ১২৯৪ বার পঠিত
  • (এই প্রবন্ধ কোনও তাত্ত্বিক উপস্থাপনা নয়, এই প্রবন্ধে কেবল উদাহরণ দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে মানুষের স্বাস্থ্য কি ভাবে উন্নয়ন বা অপউন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত।)

    জনস্বাস্থ্য বলতে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বোঝানো হয় "the science and art of preventing disease, prolonging life and promoting health through the organized efforts and informed choices of society, organizations, public and private, communities and individuals" (1920, C.E.A. Winslow)। কিন্তু এই আলোচনায় আমরা জনস্বাস্থ্য বলে জনগণের স্বাস্থ্যকে বোঝাবো।

    স্বাস্থ্য হল শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ভাবে ভাল থাকা, তা কেবল অসুখের অনুপস্থিতি নয়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য ‘সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে উৎপাদনক্ষম জীবনযাপন’-এর ক্ষমতাও বটে।

    স্বাস্থ্যের ওপর উন্নয়নের কুফল
    ১। অষ্টাদশ শতাব্দীর শিল্পবিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডে বস্তির সৃষ্টি হয়, নগর ও শহরগুলো হয় জনবহুল, জঞ্জাল জমার সমস্যা দেখা দেয়। অসুস্থতা ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়, বিশেষত মহিলা ও শিশুদের মধ্যে। সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় যাদের মধ্যে অন্যতম—যক্ষ্মা, ১৮৩২-এর কলেরা মহামারী। ১৮৪২-এ লন্ডনে গড় আয়ু শ্রমজীবীদের- ২২ বছর, অভিজাতদের- ৪৪ বছর। জানলে আশ্চর্য লাগে তার ১৬৪ বছর পরে ২০০৬-এ গ্লাসগোর অভিজাত এলাকা লেঞ্জিতে পুরুষদের গড় আয়ু যখন ৮২ বছর, তখন শ্রমিক এলাকা কাল্টনে তা ৫৪ বছর।

    ২। ভারতে উন্নয়ন ও ম্যালেরিয়া—ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশের আগেও ম্যালেরিয়া ছিল। রেলপথ ও সেতু নির্মাণের জন্য জলের ধারাগুলোর স্বাভাবিক গতিপথে অবরোধ হতে থাকে, মশার আঁতুড় ঘরের বৃদ্ধি হতে থাকে। নির্মাণ শ্রমিকরা নিজ নিজ বাসস্থান থেকে ম্যালেরিয়া পরজীবীর নতুন নতুন প্রজাতি বহন করে আনতে থাকেন। বোম্বেতে একাধিক ম্যালেরিয়া মহামারী হয় ১৮২১ ও ১৮৪১-এর মধ্যে কোলাবা কজওয়ে নির্মাণের সময়, আলেকজান্ডার ডক ও হিউজেস ড্রাই ডক নির্মাণের সময়।

    ৩। শিল্প ও পেশাগত শ্বাসরোগ—এই রোগগুলো শিল্প-স্থাপনের আগে ছিল না, বলাই যায়।
    অজৈব ধূলিকণা
    কয়লা- এন্থ্রাকোসিস
    সিলিকা- সিলিকোসিস
    এসবেস্টস- এসবেস্টসিস, ফুসুফুসের ক্যান্সার
    লোহা- সিডেরোসিস
    জৈব ধূলিকণা
    আখ- ব্যাগাসোসিস
    তুলো- বিসিনোসিস
    তামাক- ট্যোবাকোসিস
    খড় ও শস্যদানার গুঁড়ো- ফার্মার্স’ লাংগস
    পেশাগত শ্বাসরোগ হওয়া নির্ভর করে ধূলিকণার রাসায়নিক উপাদান, ধূলিকণার সাইজ, কতক্ষণ ধূলোর সংস্পর্শে থাকা হচ্ছে এবং ব্যক্তির সংবেদনশীলতার, ওপর। ধূলিকণা হল ০.১ থেকে ১৫০ মাইক্রন সাইজের কঠিন পদার্থের কণা। ১০ মাইক্রনের বড় সাইজের কণাগুলো থিতিয়ে পড়ে, ছোটগুলো ভাসতে থাকে। ৫ মাইক্রনের ছোট কণাগুলো সোজাসুজি ফুসফুসে ঢোকে। মেশিনীকরণের ফলে আরও ছোট কণা উৎপন্ন হয়, আরও বেশী ক্ষতি হয়।

    ৪। শিল্পায়নের ফলে স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলোকে এবার দেখা যাক।
    ক) পরিবেশগত স্যানিটেশনের সমস্যা
    বাসস্থানের সমস্যা
    জলদূষণ
    বায়ুদূষণ
    বর্জ্যনিকাশের সমস্যা
    খ) সংক্রামক রোগের সমস্যা
    •যক্ষ্মা
    •যৌনরোগসমূহ
    •খাদ্য-বাহিত সংক্রমণ
    •জলবাহিত সংক্রমণ- ভাইরাল হেপাটাইটিস, টাইফয়েড
    •নিকাশী-ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে নোংরা জলে মশার বংশবৃদ্ধি হয়, ফাইলেরিয়াসিসের প্রকোপ বাড়ে।
    •এছাড়া নির্দিষ্ট শিল্পে নির্দিষ্ট কিছু সংক্রামক রোগ দেখা যায়।
    গ) মানসিক সমস্যা
    গ্রামীণ যূথবদ্ধ জীবন থেকে অচেনা পরিবেশে আগমন ফলে মানসিক সমস্যা, আচরণের সমস্যা, কর্তব্যে অবহেলা ইত্যাদি দেখা যায়।
    ঘ) কারখানায় দুর্ঘটনা ছাড়াও শিল্পাঞ্চলে বেশী দুর্ঘটনা হয় জনবাহুল্য, বেশী গাড়ি- ঘোড়া, জীবনের গতির কারণে।
    ঙ) শিল্পায়নের ফলে সামাজিক সমস্যাগুলোর মধ্যে আছে মদের নেশা, ড্রাগের নেশা, জুয়া, বেশ্যাবৃত্তি, বিবাহ-বিচ্ছেদের সংখ্যাবৃদ্ধি, কমবয়সে কর্তব্যে অবহেলা,অপরাধের হার বৃদ্ধি, ইত্যাদি।

    ৫। মেশিনীকরণ ও দুর্ঘটনা—নাইজেরিয়ায় করা এক গবেষণায় দেখা যায় যে নির্মাণ-শিল্পে খনন ও ঢালাই-এ মেশিনীকরণের সঙ্গে দুর্ঘটনা বাড়ছে। কারণ হিসেবে দেখা যায় পুরোনো যন্ত্রপাতি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব,দুর্ঘটনা-প্রতিরোধের ব্যবস্থার অপ্রতুলতা।

    ৬। আমাদের দেশে উন্নয়নের এক বড় প্রতীক সবুজ বিপ্লব। পরম্পরাগত কৃষি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল ছিল। সবুজ বিপ্লবের বীজ ও সারের জন্য প্রয়োজন হল অনেক বেশী জল। সবুজবিপ্লব মাটির নীচের জল শেষ করতে থাকে। অন্যতম ফল ভূগর্ভস্ত জলের আর্সেনিক-দূষণ ও আর্সেনিকোসিস।

    ৭। দ্রুত গমনের পথ ও দুর্ঘটনা—উন্নয়নের আরেক প্রতীক হাইওয়েগুলো। ২০১০-এ জাতীয় সড়কে মোট পথ দুর্ঘটনার ৩০% ও মোট পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ৩৬% হয়েছে। রাজ্য সড়কে হয়েছে মোট পথ দুর্ঘটনার ২৪.৫% এবং মোট পথ দুর্ঘটনা-জনিত মৃত্যুর ২৭.৩%। দেখা যায় দুর্ঘটনাগুলোর ৭৮% ড্রাইভারের ভুলে। ড্রাইভারের ভুলের মধ্যে বেআইনি গতি ৫৮.৩% দুর্ঘটনা ও ৫৬% মৃত্যুর কারণ। তাই বলাই যায় হাইওয়ে মানে দ্রুততর গতি, ফলত অধিকতর পথ দুর্ঘটনা ও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু।

    ৮। কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস কর্মসূচীর ফলে আফ্রিকায় এইডস সংক্রমণ, বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমনটা হওয়ার প্রত্যক্ষ কারণ—গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে আসা, দারিদ্র, মহিলাদের ক্ষমতাহীনতা, বেশ্যাবৃত্তি। অপ্রত্যক্ষ কারণ--চিকিৎসা-পরিষেবার ক্রমাবনতি, বিদেশী ঋণ বৃদ্ধি, দেশের মুদ্রার দাম কমা, শ্রমিকদের মজুরি কমা, গরীবদের জন্য সরকারী পরিষেবাগুলো বন্ধ হতে থাকা, খাদ্যশস্যের বদলে রপ্তানীযোগ্য ফসল উৎপাদন-বৃদ্ধি, যাতে কৃষকের লাভ কম। কাজের খোঁজে বিশেষত পুরুষরা খনি শহর বা নগর-এ যেতে থাকেন, স্ত্রী বা মহিলা সঙ্গিনীকে গ্রামে ছেড়ে আসেন, যৌন প্রবৃত্তি নিবারণের জন্য বেশ্যা-সঙ্গ করতে থাকেন। মহিলা যৌনকর্মীরাও এসেছেন একইরকম দুরবস্থা থেকে, শরীর ছাড়া বিক্রি করার কিছু নেই। এইডস রোগ সংক্রমণ হতে থাকে। পুরুষরা মাঝে মধ্যে গ্রামে গিয়ে স্ত্রী বা মহিলা সঙ্গিনীদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে দিয়ে আসেন।

    আগের উদাহরণগুলো স্বাস্থ্যের ওপর উন্নয়ন/অপউন্নয়নের ক্ষতিকর প্রভাবের, আসুন প্রকৃত উন্নয়ন কি ভাবে স্বাস্থ্যের ওপর ভাল প্রভাব ফেলে দেখা যাক—

    ১। বিসিজি টীকার আবিষ্কার ১৯২১-এ, যক্ষ্মার প্রথম ওষুধ স্ট্রেপ্টোমাইসিনের আবিষ্কার ১৯৪৪-এর জানুয়ারীতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যক্ষ্মারোগে মৃত্যু ১৯০০-এ ছিল ১ লক্ষে ১৯৯ জন, ১৯৮০-তে তা কমে ১ লক্ষে ০.৫ জন হয়। মৃত্যু-সংখ্যা কমা শুরু হয়েছিল বিসিজি টীকা বা যক্ষ্মারোগের ওষুধ আবিষ্কারের আগে থেকেই...। এ বিষয়ে কমিউনিটি মেডিসিনের পাঠ্যপুস্তকে কি বলা হয়েছে দেখুন—This decline started long before the advent of BCG or chemotherapy and has been attributed to changes in the “non-specific” determinants of the disease such as improvements in the standard of living and the quality of life of the people coupled with the application of available technical knowledge and health resources.—Park’s Textbook of Preventive and Social Medicine, 2005

    ২। ১৯৮৯-এ ছত্তিশগড় (তৎকালীন মধ্যপ্রদেশে) –এর দল্লী-রাজহরায় সরকারী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এক সমীক্ষা চালায়, দেখা যায়—শ্রমিক বস্তিগুলোতে ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৯-এর মধ্যে কোনও শিশু পোলিওরোগে আক্রান্ত হয় নি।
    কিভাবে দল্লী-রাজহরার শ্রমিক বস্তিগুলো পোলিও-মুক্ত হল? যে কারণগুলো চোখে দেখা যায় তার মধ্যে আছে ১৯৮৩-তে শ্রমজীবী মানুষের জন্য শ্রমজীবী মানুষের নিজস্ব কর্মসূচী শহীদ হাসপাতাল স্থাপন। শহীদ হাসপাতালে জাতীয় টীকাকরণ কর্মসূচীর কাজ গুরুত্বের সঙ্গে চালানো হয়।
    আসল কারণগুলো ছিল গভীরে। ১৯৭৭-এ ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘ স্থাপন ও সংগ্রামের ফলে ঠিকাদারী শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধি হতে থাকে, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হতে থাকে। পাশাপাশি ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘের নেতৃত্বে জঞ্জাল সাফাই অভিযান, শিশুশিক্ষা ও বয়স্কশিক্ষার কর্মসূচী, মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়া চলতে থাকে। পানীয় জলের দাবীতে আন্দোলনের ফলে পানীয় জলের সুব্যবস্থা হয়। ১৯৭৭-এর আগে যেখানে শ্রমিক-বস্তিগুলোতে ছিল মাত্র একটা নলকূপ, সেখানে ১৯৮৯-এ রাজ্য প্রশাসন ও ভিলাই ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ দল্লী-রাজহরা ও আশেপাশের গ্রামগুলোতে দেড়শ’র বেশী নলকূপ বসাতে বাধ্য হয়।

    ৩। আরেকটা উদাহরণ দল্লী-রাজহরা থেকে—ছত্তিশগড় ডায়রিয়া-প্রবণ ক্ষেত্র, বস্তারের কোনও কোনও জায়গায় রক্ত-আমাশা endemic, দল্লী রাজহরায় কিন্তু ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়ে ছিল। কারণ—জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, জঞ্জাল সাফাইয়ে খনি কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা, পানীয় জল সরবরাহ করতে সরকার ও খনি-কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা।
    ৪। ঘরের কাছের একটা উদাহরণ দিই—সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকেরর সাতজেলিয়া দ্বীপে আমাদের সংগঠন ২০০৯-এর আয়লার পর থেকে কাজ করছে। আমরা জানি আয়লায় পানীয় মিষ্টি জলের পুকুরগুলো লবণাক্ত হয়ে যাওয়ার পর সুন্দরবনে অসুস্থতা অ মৃত্যুর এক বড় কারণ ডায়রিয়া। জেমসপুরে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে এক সার্ভে করা হয় ১৪ই এপ্রিল। ৭৭টা বাড়ী সমীক্ষা করা হয়। মোট ৪২৩ জন মানুষ। ৭৭টা পরিবারই নলের জল ব্যবহার করেন, আয়লার পর তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীর উদ্যোগে পাইপ-লাইনে জল সরবরাহ শুরু হয় ২০১১-এ। সরবরাহ কিছুটা অনিয়মিত যদিও। স্যানিটারী পায়খানায় মলত্যাগ করেন ৭৬টা পরিবার। আমরা দেখি শেষ এক মাসে ২১জন মাত্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ১৭জন ওষুধ খেয়েছেন। কাউকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি।

    ৫। কেরালাঃ শিক্ষা কিছুদূর অবধি স্বাস্থ্যের ওপর দারিদ্রের প্রভাবকে প্রশমিত করতে পারে
    ১৯৯৯-এ নবজাতকের মৃত্যুর হার ছিল কেরালায় ১৪, সারা ভারতে ৭১। মহিলাদের সাক্ষরতার হার কেরালায় ৮৭.৮৬%, সারা ভারতে ৫৪.১৬%।

    এই ভাবে স্বাস্থ্যের ওপর উন্নয়ন ও অপউন্নয়নের প্রভাব নিয়ে অনেক আলোচনা করা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় social determinants of health বা স্বাস্থ্যের সামাজিক নির্ণায়কগুলো।

    যোজনা কমিশন দ্বাদশ পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনায় সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা বিষয়ে সুপারিশ দেওয়ার জন্য যে উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল গঠন করে, তাঁদের স্পষ্ট সুপারিশ—অর্থ, জল, নিকাশী, কৃষি, খাদ্য-প্রক্রিয়াকরণ, শিক্ষা, গ্রামীণ উন্নয়ন, শহরের পরিকল্পনা, পরিবহন, যোগাযোগ, বাণিজ্য, পরিবেশ—এসবে নীতি আর কর্মসূচী জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনগুলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ১২৯৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | 118.12.173.94 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:০৭47009
  • health in all policy, আর social determinants of health , এদুটো এবার নতুন শ্লোগান হওয়া উচিত। পরে এনিয়ে লেখার ইচ্ছা রইলো।
    ছত্তিশগড়ে পোলিও নির্মূল হবার পিছনে সার্বিক জীবনযাত্রার উন্নয়নয়ের প্রভাব আরেকটু বিস্তারিত লেখা যাবে ?

    আর সাতজেলিয়া দ্বীপে আপনাদের কাজ নিয়েও আরো জানতে চাই।
  • জয়ন্ত | 127.194.84.28 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৪৪47010
  • ভাল লেখা।
    একটা ব্যাপার বোধহয় সবাই লক্ষ্য করেছেন। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের উন্নত দেশে এখন কলকারখানা তেমন হচ্ছে না। ম্যানচেস্টারের দোকানে বাংলাদেশ, তাইওয়ান আর ভারতের পোষাক ছাড়া পাওয়া যায় না। এই ব্যাপারটার পেছনে একটা ফলিত স্বাস্থ্যনীতি, বা রাজনীতি আছে বলে মনে হয়।
    ভারতের মতো দেশে শ্রমটা সস্তা, সেটা তো একটা জানা কারণ। আরেকটা কারণ মনে হয়, উন্নত দেশগুলোতে শ্রমিক স্বাস্থ্যের অধিকারটা পেয়ে গিয়েছেন, সেটা কাড়তে গেলে গরমেন্ট উলটোতে পারে। অথচ ভারতে সেরকম কিছু হবার সম্ভাবনা নেই।
    সুতরাং ভারতে কিছু করতে গেলে শ্রমজীবীদের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে করলে বেশিদূর এগোনো শক্ত।
  • Punyabrata Goon | 151.0.9.78 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০১:২৯47012
  • ছত্তিশগড়ের নয়, দল্লী-রাজহরায় পোলিও-নির্মূলন সম্ভব হয়েছিল। দল্লী-রাজহরা ভিলাই স্টীল প্ল্যান্টের ক্যাপ্টিভ লোহা-খনি। যে সময়ের কথা বলছি সে সময়ে ১ লাখ ২০ হাজারের জনপদ। দল্লী-রাজহরার স্বাস্থ্য-আন্দোলনের কাহিনী জানতে গুরুচন্ডালীতে ২০১২-র সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে পোস্ট করা শংকর গুহ নিয়োগীর উপর লেখা পড়ুন।

    সাতজেলিয়াতে আমার সংগঠন কাজ শুরু করে ২০০৯-এ আয়লার পরে। সুন্দরবন কম্প্রিহেন্সিভ এরিয়া ওয়েলফেয়ার এন্ড এনভা্যরনমেন্টাল রিসার্চ সেন্টার-নামক ছোট একটা এনজিও-র সঙ্গে আমাদের কাজ সুন্দরবন সীমান্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা নামে। শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের প্রশিক্ষণ দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা মূলত কাজ চালান। মাঝে মাঝে ডাক্তাররা যান শিবির করতে, সমীক্ষা করতে, প্রশিক্ষণ বা সচেতনতা শিবির করতে। খরচ চালানোর জন্য আমাদের বন্ধুদের সহায়তায় একটা মোটর বোট কেনা হয়েছে ট্যুরিস্ট সিজনে ভাড়ার টাকায় স্বাস্থ্য প্রকল্পের খরচ চলবে। বাকী সময় রোগী পরিবহন ও মেডিকাল টীম পরিবহনের কাজে লাগে।
  • Punyabrata Goon | 151.0.9.78 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৩৭47013
  • ক্লিনিক চালিয়ে বা সচেতনতা শিবির করে জনসাধারণের স্বাস্থ্যের অবস্থার ন্যূনতম পরিবর্তন করা যায় না বলে আমরা মনে করি।
    পরিবর্তন আনতে গেলে স্বাস্থ্য কর্মসূচীকে মেহনতী মানুষের খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের আন্দোলনের সঙ্গে, ব্যবস্থা বদলের লড়াইয়ের সঙ্গে মেলাতে হয়--ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্যআন্দোলন আমাদের সে শিক্ষাই দেয়।
  • Punyabrata Goon | 151.0.9.78 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৪১47014
  • কুনালদা অনেকদিন শ্রমিকের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন। ওঁকে বলব লিখতে।আমরা আমাদের কাজের প্রধান ক্ষেত্র চেঙ্গাইল-ফুলেশ্বরে জুট শ্রমিক ও জরি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে গবেষণার কিছু কিছু কাজ করছি ২০০০ সাল থেকে। পরে কখনও তা নিয়ে লিখব।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ১২:২৯47011
  • উন্নত দেশে তো 'অকুপেশনাল হেল্থ' একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শ্রমিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভালোই মাথা ঘামাতে বাধ্য এখন। আমাদের দেশে এনিয়ে সেভাবে কিছুই হয়নি। ডঃ কুণাল দত্তের মত কেউ কেউ করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের কাজকর্ম নিয়ে একটু জানতে পারলে ভালো লাগবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন