এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মাতৃত্ব বিষয়ক

    Shakti kar bhowmik লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ জুন ২০১৭ | ৭১৯৭ বার পঠিত
  • এটি মূলতঃ তির্যকের 'রয়েছি মামণি হয়ে' ও শুচিস্মিতা'র 'সন্তানহীনতার অধিকার'এর পাঠপ্রতিক্রিয়া।
    --------------------------

    মা শব্দটি এখনও মহিমান্বিত । সুদূর অতীতের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তো নেই। এখনো এমন ভাবার কোন কারণ দেখি না যে ভবিষ্যতে মা শব্দের গুরুত্ব কোমলতা এবং মহিমা কমে যাবে। আমি এও বিশ্বাস করি না যে অন্তত মানব শিশুর জীবনে বাবার ভূমিকা কম গুরুত্ব পূর্ন। তবে এই আলোচনা মায়ের বৃত্তেই সীমাবদ্ধ থাকবে। বিতর্ক এখনো এই পর্যায়ে আসেনি যে জৈবিক দিক দিয়ে শিশুর প্রাণোদ্গমে মা অথবা বাবা সমান গুরুত্ব পূর্ন কিনা। বিতর্ক সম্ভবত এবং মূলত এই কারণে যে মা'র ভূমিকা পালনকে গুরত্ব দিতে গিয়ে শ্রেণী নির্বিশেষে কতখানি ছাড়তে হয়, কেরিয়ার বিসর্জন দিতে হয়। সেটা কতোটা সমীচিন বা দরকারী, বিনিময়ে প্রাপ্তি কি বা কতোটুকু।
    নিজেকে বোঝানোর জন্য এই সত্য আরম্ভেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে মাতৃত্বের মহিমা পুরো না হলেও অনেকটাই আরোপিত। মা না হতে না পারলে নারীজন্ম বৃথা তাও নয়। বায়োলজিক্যাল মাদার না হলেও মাতৃব্যাক্তিত্ব কম হবে এও সত্য নয়। তবু দেশ কাল বা শ্রেণী নির্বিশেষে সন্তানের প্রয়োজনকে সর্বোচ্চ স্থান বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মায়েরা বাধ্য হয়ে বা না হয়ে ও দেন। দুচার জন ইন্দ্রা নুয়ি বা সুপ্রিয়া যোশির দৃষ্টান্ত সবার চোখে আসে বাকিদের যুদ্ধ স্বভাবিকতার মোড়ক গায়ে জড়িয়ে 'এ রকম তো হয়েই থাকে' এই তকমা র বেশি গুরত্ব পায় না। প্রশ্ন হয়তো এই যে মায়েরা কতো টুকু ছাড়বেন কেন ছাড়বেন আদৌ ছাড়বেন কিনা। প্রশ্নটি সম্প্রতি উঠতে শুরু করেছে, ওঠার সঙ্গত কারণ এবং পরিপার্শ্ব তৈরী হয়েছে। এর এথিক্যাল এবং সামাজিক দিক নিয়েও বিস্তৃত চিন্তার অবকাশ রয়েছে।
    অনেক মা উপার্জন বা পড়াশোনা ছেড়ে দেন, বা দিতে বাধ্য হন। অনেকে স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে করেন। সমাজের উঁচুতলায় যাঁরা আছেন, তাঁদের সমস্যাও আছে। কোন অবস্থাতেই কম গুরুত্ব পূর্ণ নয়। উনিশে এপ্রিল সিনেমার নৃত্যশিল্পীর ট্র্যাজেডি আমরা মনে রাখবো। তবু তাঁরা বুদ্ধির জোরে, বিত্তের জোরে নিজেদের সমস্যা মোকাবিলা করার ক্ষমতা এবং মা হবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রক্ষা করতেপারেন। যদিও অনেক সময় এঁরা ও অসহায়। তবু তাঁরা নিজদের সমস্যা আমার চেয়ে আরো পরিষ্কার, বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। নীচের দিকে যাঁরা আছেন - আদিবাসী, চা শ্রমিক, গৃহপরিচারিকা এদের নিজের চোখে যেমন দেখেছি এবং চাকুরীরতা মধ্যবিত্ত মা হিসেবে সত্তরের দশকে যে অসুবিধার মুখোমুখি হয়েছি আপাতত সে আলোচনাতেই আমি থাকবো।
    স্বীকার করে নিচ্ছি আদিবাসী জীবন বা চা শ্রমিকের জীবন আমার একটু দূর থেকেই দেখা। আদিবাসী মায়েদের মধ্যে যাঁরা শহর বাসিনী শিক্ষিতা তাঁরাও নিজেদের কথা নিজেরাই ভালো বলতে পারবেন। পাহাড়ে জীবন কঠিন। টাক্কল অর্থাত্ ছোট কুঠার জাতীয় ধাতব অস্ত্রে ধাপে ধাপে পাহাড় কুপিয়ে বীজ ছিটিয়ে ফসল বোনা। শষ্য সংগ্রহ, দূরের ছড়া, লুংগা বা ফুট নামের প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে জল সংগ্রহ, জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ, বনজ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস জোগাড় করার কাজ করতে হয় শিশু সন্তানকে পিঠে বহন করে। আমি ত্রিপুরার কথাই বলছি। পানে ভোজনে নাচে গানে নারী পুরুষে মোটামুটি সাম্য থাকলেও সন্তান পালনের দায় প্রধানত মায়েরই। তবে কঠোর পরিশ্রমী মায়ের সদাহাসিমুখ এবং শিশু মায়ের পিঠের বেতের ঝুড়িতে বা কাপড়ে বাঁধা অবস্থায় হয় নিদ্রিত বা প্রসন্ন মুখ দেখে মা শিশু দুজনকেই তৃপ্ত মনে হয়। সরল জীবন, চাহিদা সীমিত। অর্থমূল্য বেশি না হলেও পুষ্টিকর খাদ্যাভাস নিয়ে এঁরা নানা সমস্যার মধ্যেও শান্তি পূর্ণ জীবন যাপনের মন্ত্রটি জানেন। মাতৃত্বের ধকল এঁরা স্বাভাবিক বলে মেনে নেন। আর অন্তত চল্লিশ বছর বা তারও আগে চা বাগানে যা দেখেছি, এখনও শুনি সে অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। মায়েরা পিঠে পাতা তোলার ঝুড়ি আর বুকে কাপড় দিয়ে বাচ্চাকে বেঁধে নিয়ে কাজ করেন, মাঝে মাঝে দুধ খাওয়ানো আর কাছে রাখতে পারার সুযোগটুকু পান, কিন্তু সে তো কোলের বা দুধের বাচ্চাটির জন্য। একটু বড় গুলো অরক্ষিত খেলে বেড়ায়। আইন বাঁচানোর জন্য একটা ক্রেশ বলে কিছু থাকে কিন্তু সে নামেই। তবু আমার মনে হয় এদের চেয়ে করুণ অবস্থা শহর বা শহরতলীর গরীব মায়েদের যাঁরা গৃহ পরিচারিকা বা ওই ধরনের কাজ করেন। খেলা বেগম প্রথম যখন দেখি বয়স কিছুতেই আঠারো র বেশি নয় কোলে বছর খানেকের শিশু। বসিয়ে রেখে বাসন মাজে অসীম ধৈর্যে বাচ্চার বায়না হাসিমুখে সামলায়। বছর আড়াই বয়েসে বাচ্চা যখন ভালো ভাবে হাঁটে, দৌড়োয় তখন জলে ডুবে মারা গেলো। সকলের অগোচরে। খেলার কাছে তার যাদুর স্মৃতি বলতে নিজের বাহুতে একটি আঁচিল যা ছুঁয়ে যাদু হাসতো। সন্তান ধারণে মায়ের মতামতের প্রশ্ন নেই। আমার চোখের সামনে খেলা বেগম আরো তিনটি ফুটফুটে কন্যার মা হোল। কি অসীম ধৈর্যে কাজ করে সংসার সামলায়, হাসিমুখ সর্বদা। শুকনো পাতার ওপর মেয়েকে শুইয়ে রেখে উঠোন ঝাঁট দেয়। সহসা একদিন এসে কেঁদে পড়ে, মেয়েটি মরে গেছে অপুষ্টি, অপরিচ্ছন্নতা জনিত ব্যাধিতে। খেলা বেগম এমন অনেকের প্রতিনিধি যাদের মা হওয়া না হওয়া সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বা সচেতনতা কোনটাই নেই। জীবিকার প্রয়োজনে কাজ করবে না একথা বলার ক্ষমতাও নেই। এবার আমার মতো শিক্ষিত মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবি মায়েদের কথা। আমার অভিজ্ঞতা অন্তত চল্লিশ বছর আগের। সব বিষয় নিয়ে যেমন ভিন্ন অভিজ্ঞতা থাকে তেমন এক্ষেত্রেও হতে পারে, তবু আমি নিজেকে অনেকের একজন মনে করেই লিখছি।
    আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের চাকুরীরতা মেয়ে। সত্তরের দশকে মা হয়েছি। খুব রক্ষণশীল নিজেও নই, পরিবার ও না। মনে রাখা ভালো, মা হওয়ার আনন্দ, নিজের মধ্যে একটা প্রাণ একটু একটু করে মঞ্জরিত হবে এমন একটা রোম্যান্টিক মানসিকতা যদি আরোপিতও হয় তবু মনে ছিলো। ইচ্ছে করে মা না হওয়ার কথা তখন মনে আসেনি এখনও কজনের আসে। তবু যখন এখন মধুর নারী ব্যাক্তিত্ব এবং প্রখর ধীমতি মেয়েরা পরিচ্ছন্ন সুযুক্তিতে সন্তান না চাওয়ার সপক্ষে নিজেদের মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়ে মত প্রকাশ করে, মন দিয়ে খুঁটিয়ে পড়ি, আর অবাক হয়ে ভাবি এরা কতো স্বয়ংসম্পূর্ন, কতো দৃঢ় এদের দাম্পত্য বোঝাপড়ার বন্ধন। কতো গভীর প্রত্যয় থেকে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। এদের কথা মনে রেখেও বলি এখনও মায়েরা অনেক সমস্যা অনেক যন্ত্রণা সয়ে মা হতে চাইবে, কঠোর পরিণতি, নির্মম অবহেলার মুখোমুখি হবে। আপাতত আমি অনেকের একজন হিসেবে নিজে যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম, নীরিহ শিক্ষকতা পেশা সত্বেও অসুবিধার মোকাবিলা করতে হয়েছিলো তাই বলি।

    কি ভাবে আরম্ভ করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না; মূলত লেখার বিষয় তো কেরিয়ার বা পেশা তার সঙ্গে সন্তানের কল্যাণসাধনের সমস্যা। আমাদের যখন বিয়ে হয় আমার স্বামী এবং পরিবারের অন্যরা আগরতলায়। আমি কৈলাশহর নামে উত্তর ত্রিপুরার একটি ছোট্ট শহরে স্কুলে পড়াই। কিলোমিটারের হিসেবে দুশোর কম কিন্তু তেলিয়ামুড়া, আঠারোমুড়া, বড়মুড়া পাহাড় বিরক্তিকর আর বিপদজনক পাকদন্ডি পথ পেরিয়ে বারঘন্টার বাস যাত্রা সত্যি দুর্গম। বিমান পরিষেবা ছিলো কিন্তু সামান্য দুর্যোগে ফ্লাইট বাতিল হোত। সেই দূরান্তে আত্মীয় স্বজনহীন পরিবেশে থাকা, খাওয়ার কথা না বলাই ভালো। টয়লেট দুর্গম। বাংলা দেশ যুদ্ধ সবে শেষ হয়েছে। ছুটি ছাটা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তখনও বলবৎ। এখনকার মতো সহজ প্রেগনেন্সি টেস্ট তখন চালুই হয়নি। গেলাম মেডিকেল সার্টিফিকেটের জন্য, যদি কদিন বাড়ী গিয়ে থাকা যায়। যেহেতু তখন আমার মুখের কথার ভিত্তিতে সার্টিফিকেট দিতে হবে, বয়স্ক ডাক্তারবাবুটি টাকাও নিলেন আবার সন্দেহ প্রকাশ করলেন আমার কথা সত্যি কিনা। সঙ্গে ছিলো আমার বন্ধু এবং সহকর্মী সতী। দু'জনই রাগে অপমানে জর্জরিত হয়ে ফিরলাম। দিন কাটতে লাগলো আগ্রহ আর উৎকণ্ঠায়। ভাবী মাকে সুস্থ প্রসব সম্পর্কে বা প্রসবের পরবর্তী পর্যায় সম্পর্কে অবহিত করার মতো কোন লেখালেখি তখন এখনকার মতো সহজলভ্য ছিলো না। গ্রামীণ সমাজে হয়তো মেয়েরা পরস্পরকে এসব ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে সহায়তা করেন। বাধ্যতামূলক শহুরে সফিস্টিকেসন সেই সুবিধা দেয় না। সন্তানের পিতার তো ছুটি পাওয়ার প্রশ্নই নেই। মেটার্নিটি লিভ তখন ছেচল্লিশ আর তেতাল্লিশ দিনে ভাগ করা। আগে পরে সন্তানের জন্ম হলে সেই ছুটিতেও কাটা। আমার দুটি সন্তানই ছুটি নষ্ট করলো। বলা বাহুল্য সবারই এরকম হতো। বড় ছেলে জন্ম নিলো নির্ধারিত দিনের আঠারো দিন পর সুতরাং আঠারো দিন ছুটি বাতিল। একমাস হওয়ার আগেই কাজে যোগ দিতে হবে। বিনা বেতনে ক'দিন ছুটির ব্যবস্থা হোল। বেশি নয়। বোর্ডের পরীক্ষার সিলেবাস শেষ করতে হবে। সিলেকশন গ্রেড টিচার এমনিতেই কম। দিনে পাঁচটি অন্তত পিরিয়ড। সাকিং মাদারদের কিছু সুবিধা হয়তো দেয়া যায় সদিচ্ছা থাকলে তবু কিছু সংখ্যক মুরুব্বি শিক্ষক এবং অভিভাবক মত প্রকাশ করেন চাকুরীজীবি মায়ের বাচ্চাদের একটু কষ্ট তো হবেই। বক্তব্য যতো না নীতিগত তার চেয়ে বেশি অসূয়াপ্রসূত। চাকরি করার কি দরকার না করলেই হয়। শেষ পিরিয়ড গুলোতে শাড়ীর আঁচল ভিজে যায়। শিশুকে বাড়ীতে অশিক্ষিত পরিচারিকা বোতলে খাওয়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে আর মা'কে সাকার দিয়ে দুধ সাক করে স্কুলের বাথরুমের বেসিনে ফেলতে হয়, সে যে কি বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা সে বোধহয় ভুক্তভোগী ছাড়া বোঝাই সম্ভব নয়। শিশুর মুখের দুধ স্কুলের টয়লেটের বেসিনে ফেলে দিতে বাধ্য হওয়ার যন্ত্রণা এতো দিন পরে ও ভুলিনি। এই বেদনা আরো বাড়লো সম্প্রতি যখন পত্রিকায় পড়লাম সিডনি পার্লামেন্টে ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন সেনেটর ল্যরিসা ওয়াটার্স তাঁর দুমাসের শিশু সন্তান আলিয়া জয়কে পার্লামেন্টে প্রকাশ্যে স্তন্যদান করেছেন এবং আরো জানলাম এই দৃশ্য ইতালি এবং স্পেনে একেবারেই বিরল নয়। শিশুর এবং মায়ের এই স্বাভাবিক অধিকার একসময় আমাদের দেশে স্বীকৃত তো ছিলোই। শিশুসন্তান বাড়ীতে রেখে জীবিকার বা পড়াশোনা করতে চাওয়া বা বাধ্য হওয়া মায়েদের এবং তাদের বাচ্চাদের দুর্ভোগ কখনো অনুকম্পা কখনো তরিয়ে উপভোগ করার বিষয় হতে দেখেছি। নিজের কথার মধ্যে আমার এক মাসির কথা না বলে পারছি না। আমার মাসি আমারও আগের প্রজন্ম, সুতরাং তাঁর আরো বেশি দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে হয়েছে। মাসি আন্ডার সেক্রেটারি ছিলেন। মেসোমশাই শিক্ষক তথা কর্মচারী সংগঠনের নেতা,মানুষ ভালো কিন্তু সংসার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী একমাত্র পুত্রবধূ হিসেবে অতি বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ির সেবা এবং তিনটি পিঠাপিঠি ছেলে মেয়েকে সামলে রোজ চোখের জল মুছতে মুছতে অফিস যেতেন এবং অসামান্য দক্ষতার পরিচয় রেখে অবসরের পর এখন শয্যাগত। এবার আবার নিজের কথা। এম এ পরীক্ষা দেয়ার আগে বিয়ে হয়ে গেলো। হয়তো নিজেরও কিছু অবহেলা ছিলো, পরীক্ষা দিলাম না। অথচ অনেক মেয়েই যেমন, অন্তত সেকালে পড়ার ইচ্ছাটা ছেড়ে দেয় তাও করলাম না, ঠিক করলাম প্রাইভেট পরীক্ষা দেবো। সন্তান এলো, ফীজ দিলাম। পরীক্ষা দিলাম না। প্রথম সন্তান যা করে তাই ভালো লাগে, ওকে নিয়েই দিন রাত আনন্দে ভেসে থাকি, শিক্ষকতা তো আছেই। খোঁটা ব্যঙ্গ বিদ্রুপও শুনি মনোযোগের অভাব নিয়ে। দু'বছর পর আবার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিলাম। পরীক্ষার রুটিন এমন হোল বুঝালাম এবারও হবে না। তবুও শেষ পর্য্যন্ত ভাবলাম দেবোই পরীক্ষা। ছোট ছেলের বয়স মাত্র তিনদিন। আমার মিঠুমাসি বায়োলজিক্যাল মাদার না হয়েও তিনি অনেকের মা। ভার নিলেন শিশু পরিচর্যার কিন্তু ওইটুকু অসহায় দুগ্ধপোষ্যকে ফেলে ইচ্ছে হোল না। শাশুড়ি মা ও বললেন এই তিনদিন আগে বাচ্চা হয়েছে, মাথা ঘুরবে চোখে অন্ধকার দেখবে এবার থাক। থাকলো সে বারও।
    বুঝতে পারছি এই লেখা দীর্ঘ হচ্ছে ,ধৈর্য নষ্ট করবে অনেকরই। তবুও এই লেখা দলিল হয়ে থাক আজ থেকে চল্লিশ বছর বা তার আগে আমার মতো বা আরো বেশি যুদ্ধ করে যে মায়েরা জীবিকার দাবী, পড়াশোনা অব্যাহত রাখার লড়াই সঙ্গে পরিবার জীবনকে পর্যাপ্ত স্বচ্ছলতার অভাব সত্বেও এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, তাঁদের পায়ে ছিলো উনিশের শেকল, উড়তে চেয়েছিলেন বিশের আকাশে। আজকে একুশের দ্বিতীয় দশকে এই বিবরণ ইতিহাস ছাড়া কিছু নয় তা না। অনেকের কাছেই এই ছবিই সাম্প্রতিক।
    আরো দুএক বছর। ঠিক করলাম পরীক্ষা দেবোই। হনার্সটা করা আছে গ্র্যাজুয়েশনএর সঙ্গে। বড় ছেলের জন্মের পর আর ছোটছেলের জন্মের সময় যখন আসন্ন তখন অনেক ঝামেলা অসুবিধার মধ্যে টুক করে বি এড করে নিয়েছি। সেই বিবরণ ও আরো এক মহাভারত। বলছি না আপাতত। এম এ পরীক্ষা দেবো, স্কুল আছে, সংসার আছে। অতি অসুবিধাজনক কাজের মেয়ে আছে। আর আছে ব্যস্ত অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার স্বামীর ট্যুর প্রোগ্রাম। এর মধ্যে সময় করে পড়তে বসি। ছোট ছেলে বই আর আমার মধ্যে বসে থেকে আমার মনযোগ আকর্ষণে সচেষ্ট থাকে। বড় ছেলে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে যার ছেলে আছে সে কি পড়ে? কই, অনিল বাবুর রানী তো পড়ে না। সে জানে রাণী মানে রাজার বৌ। পাশের বাড়ির বহু প্রসবীনি গৃহিনী হচ্ছেন অনিলবাবুর রাণী। তিনি সম্ভবত নিজের ইচ্ছা ব্যতিরেকেই পাঁচটি সন্তানের মা। প্রায়ই করুণ হেসে রসিকতা করেন কোথায় যাবো বলুন, মুরগী মায়ের মতো পাঁচটা বাচ্চা লাইন করে পেছনে যাবে। যাই হোক করে পাঁচ পেপার তো পরীক্ষা দিয়ে দিলাম। সিক্সথ পেপারের আগের দিন স্বামী জানালেন পরের দিন তাঁর ট্যুর আছে। তাঁরও না গিয়ে উপায় ছিলো না কিন্তু আমি অভিমান ভরে ঘোষণা করলাম, এবারও ড্রপ দেবো, মনে আশা কেউ সাধবে, এতো কষ্ট করে পাঁচটা পেপার দিয়েছো যখন এবার ড্রপ দিও না। বয়েই গেছে কারো আমাকে সাধতে। রাত তিনটের সময় উঠে চোখের জল মুছে পড়তে বসলাম। বাকি তিনটে পেপার পরীক্ষা দিলাম।ভাগ্যদেবী প্রসন্ন ছিলেন,পাশ করে গেলাম। পাশ করলাম। ছত্রিশ বছর শিক্ষকতা করলাম। সায়েন্স আর্টস কমার্স তিনটে স্ট্রিম, ওয়ান থেকে টুয়েলভ অবধি ক্লাস। সহস্রাধিক ছাত্র ছাত্রী শতাধিক শিক্ষক অশিক্ষিক কর্মচারীসহ স্কুলের প্রশাসন এবং অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালনের সংকট কিভাবে অতিক্রম করেছি সে কথা বলার পরিসর এখানে নেই। সহকর্মী মহিলা ও ছাত্রীদের দেখা না দেখা সমস্যা গুলো ও বলছি না।
    ছেলেরা বুঝতো মা বাবা ওদের জন্য কতটা উদ্বিগ্ন থাকেন। সেই ছোট বেলাতেও সহজে বিব্রত করতে চাইতো না। একদিন শঙ্খ তখন চার। আমি গেট খুলে ঢুকছি। দেখি ছেলে শুকনো মুখে পথ চেয়ে জানালায়। মায়ের চোখ - কি হয়েছে শঙ্খ তুমি খাওনি এখনও? না। চোখে জল এসে গেছে। কেন সন্ধ্যা দিদি খেতে দেয়নি। না, যার ওপর দায়িত্ব ছিলো, বেতনভুক সেই মেয়েটি ফ্যান চালিয়ে ঘুমোচ্ছে, শঙ্খ ক্ষুধার্ত পেট পাটির ওপর চেপে মায়ের পথ চেয়ে অপেক্ষা করছিলো। রবীন্দ্রনাথ জীবনস্মৃতিতে ভৃত্যরাজকতন্ত্রের যে বর্ণনা দিয়েছেন তার কাছাকাছিই হবে আমার ছেলেদের শিশুবয়সের অভিজ্ঞতা। তবুও সন্ধ্যা অনেকের চেয়ে ভালো ছিলো। ওদের বাবা যথেষ্ট সহমর্মী ছিলেন। শঙ্খ যখন বোতলে দুধ খায় তিনি প্রতিদিন লাঞ্চে এসে ওকে দুধ খাওয়াতেন। বাইরে থেকে উর্ধতন কেউ এলেও বলতেন এই সময় আমার ছেলেকে সময়টা দিতেই হবে। যা তখন কেন এখনো অনেকে নিজের পক্ষে গৌরবজনক ভাববেন না। তখন মোবাইল? প্রশ্নই নেই। ল্যান্ড ফোন ক'টা ছিলো। বাড়ী থেকে বেরিয়েই মনে হোত, এই বোধহয় বাচ্চাটা পড়ে গেছে, এই বুঝি বোতল মুখে বিষম খেলো। নিরবচ্ছিন্ন উদ্বেগ নিত্যসঙ্গী। তার ফল নানা ধরনের দৈহিক অসুস্থতা। আমি একবারও বলতে চাই না এই উদ্বেগ শুধুই আমার ছিলো; আমার জীবিকার প্রয়োজন ওদের বাবার ও যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ ছিলো। আমার চাকরি পরিবারের প্রয়োজন ছিলো আবার সমান ভাবে বিড়ম্বনাও ছিলো হয়তো। এই যন্ত্রণা আমার জীবনের সুন্দর সময়কে নিত্কণ্টকাকীর্ণ করে রাখতো।
    আর একদিন, ছোট ছেলেটি মাত্র আড়াই মাস। উচ্চমাধ্যমিকের খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব পেয়েছি প্রথম বারের মতো। গৌরবজনক কাজ বলেই বিবেচিত। খাতা দেখতে হয় সংরক্ষিত কেন্দ্রে,নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। দিনে ত্রিশটি খাতা ভেন্যুতে বসে দেখতে হয়। দশটি করে খাতার প্যাকেট শেষ হলে স্ক্রুটিনি হয়ে যায়। ভুল পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে হেড এক্জামিনার ডেকে পাঠান। বাড়ীতে খাতা দেখার প্রথা ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষাপর্ষদে নেই। দুটো ছোটবাচ্চা বাড়ীতে থাকে। মিঠু মাসি, কণামাসি, ছোটমাসির সযত্ন তত্বাবধানে। পৌনে ন'টায় বেরোই ফিরি সন্ধ্যা ছটা নাগাদ। নিত্য লোডশেডিং, আগরতলার রাজকীয় মশক বৃন্দ গান জুড়ে দেয়। ওদের হাত থেকে বাঁচতে তুমুল গরমে মশারিই আশ্রয়। হ্যারিকেনের ম্লান আলোয় দুই শিশুই অপ্রসন্ন। ছোটটি কেঁদে তার বিরক্তি জ্ঞাপন করে। মাঝে মাঝে মিঠু মাসি বলেন, সারাদিন বেশ তো থাকিস মা ফিরলেই এরকম কেন করিস। ছ বছরের মাসতুতো ভাই শুভ বিজ্ঞ মন্তব্য করে খুকুভাই সারাদিন খাতা দেখে কেন? ওদের রাগ হয়না? তাও চালিয়ে যাচ্ছি। কর্তব্য স্বীকার করেছি, না পারলে চলবে কেন? দুদিন প্রবল বৃষ্টি। ছোট নদীখাত, নাম কাটাখাল। প্রবল বন্যা। পর্ষদ সভাপতি এসে ঘোষণা করলেন মহিলা পরীক্ষকরা অসমাপ্ত খাতার প্যাকেট জমা দিয়ে চলে যান। পুল ভেসে গেছে। গাড়ি চলছে না। প্লাবিত নদীর ওপারে দুধের শিশু এপারে নিরুপায় মা। অবস্থা অনুমেয়। টাকা? না সেবার টাকা পরীক্ষকরা প্রায় কেউ নিজেরা নেননি। শিক্ষা অধিকর্তার অলিখিত অনুরোধে একটি নামকরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টান নির্মাণে দান করতে হয়েছিলো। একটু দুঃখ কি আর হয়নি, মেনে নিয়েছিলাম। তবে আমি স্বীকার করবো কিছুটা কম হলেও শিশু সন্তানের জন্য ওদের বাবার উদ্বেগ এবং সান্নিধ্যস্পৃহা কম ছিলো না। সংক্ষেপে সেই কাহিনী না বললে বিবরণ একপেশে হবে।
    ত্রিপুরার গন্ডাছড়া বা ডম্বুর ইত্যাদি এলাকায় চল্লিশ পঁয়তাল্লিশ বছর আগে যাতায়ত দুরূহ ছিলো। হাতির পিঠে, পায়ে হেঁটে সরকারী কাজে যাতায়ত করতে হোত। সাধারণত রিয়াঙ্গরা পথপ্রদর্শক হতেন। কথিত ছিলো এঁরা সাপ খান বলে সাপ এঁদের আশেপাশে আসেনা। শঙ্খ যখন ছয় মাসের শিশু তখন ওর বাবা সরকারী কাজে গন্ডাছড়া গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। এতোদিন পরও পুরোনো চিঠির ছত্রে ছত্রে নির্জন ডাকবাংলোয় শিশুসন্তানকে দূরে রেখে কর্তব্যরত পিতার সোচ্চার ক্রন্দনের অশ্রুআভাস ছড়িয়ে আছে।
    আর এক চাকুরীরতা মা ও সন্তানের দুর্ভোগ মনে পড়ে। ধরা যাক্ তার নাম অনুরাধা। ত্রিপুরাতেই শিক্ষকতা করতেন। বিয়ের পর কলকাতায় চলে আসেন স্বামীগৃহে। কয়েক বছর পর শিশু সন্তান সহ তাঁকে ফিরতে হয় আগরতলায়। আগেই যেহেতু পারমানেন্ট এমপ্লয়ী ছিলেন ফের চাকরিতে যোগ দিতে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু পোস্টিং হয় মফস্বলে যেখানে একা মায়ের পক্ষে বাচ্চা নিয়ে বাস করা খুব অসুবিধাজনক। বাধ্য হয়ে ছেলেকে মোটমুটি ভালো অংকের বিনিময়ে একটি হস্টেলএ রাখতে হয়। শর্ত ছ'মাস মা অথবা কোন আত্মীয় শিশুটির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। মা বিপর্যস্ত, ছেলেটি চিরকালের জন্য মানসিক সমস্যার কবলে পড়ে। এখন মা অকাল মৃত, ছেলেটি ও ভালো নেই। অনেক ঘটনা আমার মতো অনেকেই জানেন, উদাহরণ বাড়িয়ে কি হবে?
    এতো দৃষ্টান্ত টেনে না আনলে লেখাটা আরো টানটান হতো আমি বুঝতে পারছি কিন্তু আজকে আমার নিজের কাছেই রচনার সৌকর্যসাধনের চেয়ে বড় এই প্রশ্ন, সন্তানের পক্ষে, তার মা বাবা এবং আপনজনের পক্ষে একটি শিশু কে পরিপালন কতোখানি আয়াসসাধ্য অপরদিকে কতো খানি প্রার্থিত, যে জীব জগতে সন্তানস্পৃহা লুপ্ত হওয়ার নয়। এতো সমস্যা সয়েও প্রাণীকুল সন্তান লোভাতুর কিন্তু আধুনিক মানুষ মানুষীরা কেউ কেউ অন্য ভাবে ও ভাবছেন। ভাবাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য যথেষ্ট প্রাঞ্জল এবং যুক্তিসঙ্গত। নিজের জীর্ণ পুরাতন বুদ্ধি নিয়ে সেই জগতটা নিয়ে ভাবি।
    কিছু মেধাবী বুদ্ধিমতী মেয়ে খুব সুন্দর ভাবে সন্তানহীনতার অধিকারের সপক্ষে বলছেন। বড়কথা জীবনসঙ্গীরা এব্যাপারে সহমত। প্রশ্নটার যথার্থতায় আমি অন্তত নিঃসন্দেহ, এই পৃথিবীকে আমরা তো নবজাতকের বাসযোগ্য করে তুলতে পারিনি উল্টো কতো না আবর্জনার আমদানি করেছি। দূষণক্লিষ্ট করে তুলেছি ধরিত্রীকে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের অনেকে তাদের অনাগত সন্তানের জন্য পৃথিবীকে যথেষ্ট নিরাপদ মনে করছেন না। সন্দেহ, রোগ, ব্যাধি, সন্ত্রাস জর্জরিত পৃথিবী। গত তেইশে মে দুহাজারসতেরো তেও ক'টি শিশু কনসার্ট শুনতে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলো। খাদ্য বস্ত্রের ও যথেষ্ট যোগান কোথায়? কোথায় স্বচ্ছন্দ বাসস্থান? শুচিস্মিতার লেখাটি আমি মন দিয়ে পড়েছি। ওর যে যুক্তি আমার কাছে সবচেয়ে সুক্ষ্ম মনে হয়েছে, নিজের সন্তানের সুপ্রতিষ্ঠিত সুস্থ জীবনের জন্য অধিকাংশের থেকে বিচ্ছিন্ন নিরাপদ বেষ্টনীর মধ্যে তাকে বড় করে তোলায় অনীহা।
    যুক্তিসহ লেখাটি আমার মতো অনেককে নূতন ভাবে চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করবে সন্দেহ নেই। গত শতকের শেষ দশকে একটা প্রশ্ন প্রায়শ আলোচিত হতে দেখতাম, ভারত বর্ষে প্রধানত বুদ্ধদেব পরে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য এবং সাম্প্রতিক অতীতে স্বামী বিবেকানন্দ সর্বোচ্চ মেধার তারুণ্যকে ব্রহ্মচর্যতে অনুপ্রাণিত করায় ভারতীয় সমাজে সৎ এবং আদর্শবাদী নাগরিক সংখ্যায় ঘাটতি হয়েছে। শুচিস্মিতার সঙ্গে যেহেতু ব্যাক্তিগত পরিচয় আছে ধীরস্থির বুদ্ধিমতী মাধুর্যময়ী মেয়েটিকে আমার খুব ভালোও লাগে, আমি সরাসরি প্রশ্ন করতে পারলাম, তোমাদের মতো মননশীল মানুষেরা সন্তানহীনতার সিদ্ধান্ত নিলে সমাজে কি উন্নতমনা নাগরিককের আরো বেশি অভাব হবে না? প্রত্যাশিত ভাবেই উত্তর এসেছিলো, যারা এতোদিন সুযোগ পায়নি সমুচিত সুযোগ পেলে তারাও এগিয়ে আসতে পারবে। আমার কাছে এই চিন্তার ধারাপথ অভিনব হলেও অযৌক্তিক মনে হয়নি। সব জেনে বুঝেও মানতেই হয় যে যেকোন উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের মতো মানুষ শত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও সৃষ্টির শেষ দিন পর্যন্ত সন্তান কামনা করে। অন্তত অধিকাংশ মানুষ। ভোরবেলা একটি কচি মুখ পরম মমতায় মুছিয়ে দিয়ে একটু পাউডার মাখিয়ে নূতন অস্তিত্বের কোমল আঘ্রাণ পেতে অনেকেই আকুল থাকবে। রাতে ঘুমন্ত শিশুমুখ সারা দিনের যন্ত্রণা ভোলাবে। সবচেয়ে বড় কথা সন্তান হীনতার সিদ্ধন্ত খুব কম ক্ষেত্রেই একার ব্যাপার। দুজনের মিলিত সিদ্ধান্ত যেখানে, সেখানে সময়ান্তরে একজন যদি এই মত থেকে সরে আসতে চায় তখন সেই মতান্তর সম্পর্ককে টালমাটাল করে দেবেই। আর পৃথিবীর যেকোন সমাজে গুহাবাসী সাধু ছাড়া মানুষ তো একা নয়। সমাজের পরিবারের প্রত্যাশা পুরোপুরি অস্বীকার ক'জনই বা করতে পারে। অতএব ধরে নেয়া যায় জগত পারাবারের তীরে শিশুদের খেলা কোনদিন থেমে যাবার মতো দুর্দিন আসবে না।
    মানুষের সভ্যতা যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণ, স্থাপত্য, ভাষ্কর্য, সাহিত্যে, শিল্পে যতটা মনোযোগ দিয়েছে, মাতৃত্বের সহায়তায়, শিশু সুরক্ষায় ততটা মনোযোগ কখনো দেয়নি। আন্তর্জাতিক স্তরে এবিষয়ে নূতন করে ভাবতে হবে। মাতৃত্বের মহিমা কীর্তন, মাকে দেবী জ্ঞানে পূজা বিধান দিয়ে তাঁর বাস্তব অবস্থানের ফারাকটা ভুললে চলবে না। মা তাঁর জীবনের দুর্লভ সময়, তাঁর কেরিয়ার হয়তো স্বেচ্ছায়ই সন্তানের কল্যাণে ব্যয় করেন, শেষ বয়স যায় উপেক্ষা আর অবহেলায়, পিতার অবর্তমানে বিধবা মায়ের দুর্দশা অবর্ণনীয় হয়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে, আমি বলছি অধিকাংশের কথা ।
    এখনও কাগজ খুললেই দেখা যায় কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে মা এবং শিশুর দুর্গতি ।মা হতে না পেরে দুর্দশা। কতো দিকে নজর দেয়া বাকি আছে। কতো প্রতিকার এখনো বাকি। চিন্তা করতে হবে। নূতন চিন্তাকে গ্রহণ করতে হবে। শিশু কোলে নিয়ে মানব সভ্যতা অগ্রসর হবে। মায়েদের সমস্যার সমাধান না ভাবলে চলবে কি করে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২২ জুন ২০১৭ | ৭১৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • শিবাংশু | 113.217.234.102 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ০১:৩০60448
  • @শক্তি দত্তরায় করভৌমিক,
    আপনার এই বিশ্বাসটি আমাদেরও প্রত্যয়, দাঁড়াবার ভূমি....
  • kumu | 181.78.195.214 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ০৬:১৫60442
  • এই লেখাটি আমার মতে অতি মূল্যবান একটি ঐতিহাসিক দলিল।
    লেখিকাকে অনুরোধেই লেখাটিকে ভিত্তি করে বিস্তৃতভাবে লিখতে।এত অসাধারণ অভিজ্ঞতা অতি বিরল।
  • kumu | 181.78.195.214 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ০৬:১৬60443
  • লেখিকাকে অনুরোধ এই
  • de | 192.57.54.230 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ০৬:১৬60449
  • কি যে জোর পেলাম মনে লেখাদুটো পড়ে!
    শক্তিদেবী আর শিবাংশুদার মা - দুজনকেই কুর্নিশ!

    এই লড়াইয়ের কিয়দংশও যদি আমাদের প্রজন্মের স্বেছায় গৃহবধূ হয়ে থাকা মেয়েরা দিতে পারতো, তবে আরো কতো এগিয়ে যেতো ভারতীয় কন্যারা!
  • Amit | 130.22.72.223 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ০৬:২৭60444
  • Osadharon laglo pore.
  • nabanita | 162.79.255.200 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ০৮:২৫60450
  • লড়াই দেওয়া বা না দেওয়াটাও কিন্তু নিজের ইচ্ছের মধ্যে পড়ে। যদি কেউ স্বেচ্ছায় গৃহবধূ হয়ে থাকতে চান লড়াই না দিয়ে, সেটাও কিন্তু তাঁর অধিকার। মেয়ে মানেই ত্যাগ, লড়াই, নিজেকে অতিক্রম করতে গিয়ে নিজেকে কখনো বা নিজেকে হারিয়ে ফেলাও - মেয়েদের কাছে এই ২০১৭ তেও এমন demand নাই বা করলাম। বরং একটু সচেতন হবার চেষ্টা করা - মাধ্যমিক/উচ্চ মাধ্যমিক/ ব্যাচেলারস/মাস্টার্স পরীক্ষার সময়ে মেয়ে গুলির যেন গর্ভবতী অবস্থা না থাকে, দু-তিন দিনের বাচ্চাকে রেখে না পরীক্ষা দিতে আসতে হয়- কখনো কোনো মা ও যেন সংসারের দায় দায়িত্ব নিতে না পারলে আমরা যেন সস্নেহে বলতে পারি - আহা ও আম আমড়া তে তফাৎ করতে পারে না - এটা কি খুব বড় চাওয়া? প্রতিটা মেয়ের লড়াই কিন্তু সমাজের এক চোখোমির দলিল - তাই না?
    শক্তি কর ভৌমিক আর শিবাংশুদার মায়ের জন্যে অনেক শ্রদ্ধা রইল। কিন্তু অনেক ক্ষোভও সেই সমাজের জন্যে যেখানে এক মহিলাকে তাঁর খুব স্বাভাবিক কেরিয়ারের জন্যে এত টানাপোড়েন এত প্রবলেম নিতে হয়।
  • শিবাংশু | 113.217.234.102 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ১১:৫৩60445
  • নিঃসন্দেহে এই লেখাটি একটি অমূল্য দলিল।

    ব্যক্তি আমি লেখিকার অভিজ্ঞতার সঙ্গে আমার মা'য়ের একটা অদ্ভুত সমান্তরাল খুঁজে পেলুম। তবে তিনি আরো দুদশক আগের মানুষ। টাটা কোম্পানির এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের আদরের মেয়ে ছিলেন তিনি। দেশভাগের অকস্মাৎ আঘাত আর সর্বস্বান্ত হয়ে যাবার উদ্বেগ সহ্য করতে না পেরে তাঁর পিতা দেশ স্বাধীন হবার বছরখানেকের মধ্যেই সেরিব্রাল স্ট্রোকে সম্পূর্ন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বছর দুই লড়াই দিয়ে ছিলেন আমার দিদিমা। কিন্তু ডাক্তার বিধান রায় তাঁকে অর্থ অপচয় করতে মানা করেন। তাঁর বাবা যখন প্রয়াত হ'ন, তখন আমার মা আই এ পরীক্ষা দিয়েছেন। রেজাল্ট বেরোয়নি। পড়া আর হলোনা। বছরখানেক পরে, পঞ্চাশ দশকের মাঝামাঝি বিয়ে হয়ে গেলো। একবছর পর আমার জন্ম। আমার দু'বছর পর আমার বোন। একটা সুবৃহৎ একান্নবর্তী পরিবারের কেন্দ্র হিসেবে পাঁচ বছর ভাটির নৌকো টেনে গেছেন। তার পর ঠিক করলেন প্রাইভেটে বি এ পরীক্ষা দিতে হবে। বাবা ছিলেন অধ্যাপক। কিন্তু একান্তভাবে অসংসারী। বলা হতো তিনি তখন মুগডাল মুসুরডাল আলাদা করে চিনতে পারতেন না। মা'য়ের বি এ পরীক্ষা শেষ হবার আটদিন পর আমার ছোটো ভাইয়ের জন্ম হলো। তখন তাঁর একার সংসার। অধ্যাপনা সেকালে একান্তভাবে অস্বচ্ছল বৃত্তি। ভাইয়ের জন্মের একবছর পর থেকে তিনি এম এ পড়া শুরু করলেন। আমরাও তখন বেশ ছোটো। সব সামলে গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করতেন। ষাটের দশকের শুরুর সময়। পাশের বাড়ির এক প্রবীণা গৃহকর্ত্রী খুব বিস্মিত হতেন। শিবাজির মা কী এতো পড়াশোনা করে? কী হবে এসব করে? এম এ পাশ করলেন এভাবেই। সঙ্গে বিশ্বভারতীর সাহিত্যভারতী পরীক্ষাও। তার পর ইশকুলে পড়াতে যাওয়া। ভাই নিতান্ত শিশু। আমার আর বোনের তখন সদ্যো বাল্যকাল। নতুন ইশকুল। শুরু থেকেই গড়ে তোলার চাপ। কিছুদিনের মধ্যেই আবার বাড়ি ছেড়ে রাঁচিতে থেকে বি এড পড়া। আমরা তখনও নিজের ভার নেবার মতো বড়ো হয়ে উঠতে পারিনি। প্রতি সপ্তাহান্তে একদিনের জন্য বাড়ি এসে পক্ষীমাতার মতো মা'য়ের সব দায় সামলে যাওয়া। বাবা'ও তখন পি এইচ ডি গবেষণার শেষ পর্যায়ে। কলকাতা, রাঁচি, শান্তিনিকেতন, জামশেদপুর করে বেড়াচ্ছেন। আমরা তিন ভাইবোন একজন পাচক ব্রাহ্মণ কর্মীর তদারকিতে রয়েছি।

    তখন হয়তো মাঝে মাঝে আমরা কাতর হয়ে পড়তুম। কিন্তু এই মূহুর্তে এসে মা'য়ের সেই অসম্ভব লড়াই কিছুটা বুঝতে পারি। তার পর তিনি একটা বিশাল ইশকুলের প্রধান হয়েছিলেন। তিন হাজার ছাত্রছাত্রী, একশোর উপর সহশিক্ষক, অতি ব্যস্ত পারিবারিক আর সামাজিক জীবন, সব সামলে ক্লান্তি প্রকাশ করতেন। কিন্তু আপশোস করেননি কখনও। এখন আমার মেয়েদের কাছে তাদের ঠাকুমার এই যুদ্ধ অলীক বোধ হয়। তারা দিনে বারোঘন্টার লড়াই করে বিভিন্ন মহানগরে। বিবাহ বা সন্তান যথার্থভাবেই তাদের প্রাথমিকতা নয়। বৃহৎ পৃথিবী তাদের টানে। তাদেরকেও আমি সেই সম্মান দিই, যা আমার মা'কে দিয়ে এসেছি চিরকাল।

    কিন্তু ভাবি আমাদের জন্মটা কী সেকালীন সামাজিকপ্রথার নিরুপায় চাপ মাত্র ছিলো। সৃজনসুখ রহিত, সময়ের ধর্মের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নেবার বিকল্পহীন বাধ্যতামাত্র।
  • শক্তি দত্ত রায় কর ভৌমিক | 37.63.166.207 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ১২:২৫60446
  • আমার বিশ্বাস বিকল্প হীন বাধ্যতা শুধু নয় তখনও না ,এখনও না ।অন্তত সব ক্ষেত্রে তো নাই ।শত উদ্বেগ বিড়ম্বনার মধ্যে ও মাতৃত্ব এক মধুর অভিঞ্জতা এবং কর্তব্য ।আমার লেখা আপনার মায়ের কঠিন সাধনা আমাদের প্রত্যক্ষ এ আনলো ।অনেক ধন্যবাদ
  • mila | 22.5.49.74 (*) | ২৩ জুন ২০১৭ ১২:৫১60447
  • লেখাটা খুব ভালো লাগলো
  • শিবাংশু | 55.249.72.227 (*) | ২৪ জুন ২০১৭ ০৮:১৯60451
  • নবনীতা,
    "কিন্তু অনেক ক্ষোভও সেই সমাজের জন্যে যেখানে এক মহিলাকে তাঁর খুব স্বাভাবিক কেরিয়ারের জন্যে এত টানাপোড়েন এত প্রবলেম নিতে হয়।"

    'সমাজ' শব্দটা খুব বিভ্রান্তিকর। আমরা সবাই কিন্তু তার ভিতরেই থাকি। সব সুযোগসুবিধে ভোগ করি আর যা কিছু পছন্দ হয়না তার জন্য নিজে আয়নার সামনে না দাঁড়িয়ে 'সমাজে'র নামে ক্ষোভটা ছুঁড়ে দিই। সমাজ কোনও অচলায়তন নয়। সমাজ নদীর মতো চিরবহমান একটা মূল্যবোধের নাম। যতো সে সাগরের দিকে যায় ততো বিস্তৃত হয় তার স্রোত। আজ আপনি যেভাবে ভাবছেন তার পিছনে আপনার পূর্বনারীদের যোগদান না থাকলে এই পর্যায়ে এসে পৌঁছোতে পারতেন না। রাতারাতি কিছু হয়না। মূল্যবোধের শুভত্ব ফুলের মতো ফুটে ওঠে। তাকে উপযুক্ত সময় দিতে হয়। কবির ভাষায় 'মাতিয়ে' দিয়ে ফুল ফোটানো যায়না। 'পাকিয়ে' দিয়েই যায়। সন্ত কবির সেই কোনকালে বলেছিলেন,
    " ধীরে ধীরে রে মনওয়া
    ধীরে সব কুছ হোয়
    মালি সিঁচে সও ঘড়া
    রিত আওয়ে ফল হোয় ।।
  • pi | 174.100.177.10 (*) | ২৪ জুন ২০১৭ ০৮:৪৯60452
  • লেখাটা ভীষণ ভাল আর দরকারি। অনেককে পড়াতে চাই।
    আর পড়তে পড়তে আমার মায়ের জীবনটা সামনে থেকে দেখতে পেলাম। মাকে দিয়ে কোনোদিনও লেখাতে পারব কিনা জানিনা। তবে এরকম চাকুরি করা মায়ের মেয়ের পার্স্পেক্টিভটা আমার লেখার ইচ্ছা আছে।

    আর আপনি আরো লিখুন, সেইসব কথা, যা এখানে বাদ পড়ে গেল।
  • Nina | 83.193.159.49 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৩:১২60453
  • খুব সুন্দর ও দরকারী লেখা। আমি আমার মাকে দেখেছি কি ভাবে জীবনে এগিয়েছেন বহু বাধাল বহু নিয়ম ভেঙে। মা গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে । বিয়ে করলেন বাবাকে কায়স্থ ও মায়ের চেয়ে ১৯ বছরের বড় । একটা জিনিষ আমি মাদের জেনারেশনে দেখেছি ওঁরা নারীবাদের ধ্বজাধারী ছিলেন না কিন্তু নিজেদের কি সুন্দর সসম্মানে জায়গা করে নিয়েছিলেন সমাজে -- সংসার করেছেন , মাতৃত্ব নিপুণ করে করেছেন , দেশের কাজ করেছেন -- নারী পুরুষ একে অপরের পরিপূরক -- কোনও বিদ্বেষ দেখিনি । ভিন্নতায় অভিন্ন ।
    আমি সত্যি ভাবি মার মতন কিছুই করলাম না --মা একাধারে স্ত্রী মা সোশাল ওয়ারক সমস্ত নিখুঁত করে করে গেছেন ---নারীবাদী যথার্থ ছিলেন -- নারী শক্তি র প্রতীক !
  • Kakali | 60.54.142.120 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৪:২৬60456
  • অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা। এবং দুঃখজনক হলেও, একালেও relevant । লেখিকা কে কুর্নিশ
  • swati | 127.194.36.88 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৪:৫৩60457
  • পড়তে পড়তে নিজের মায়ের যুদ্ধটা ভেসে উঠল চোখের সামনে। হায়ার সেকেন্ডারির পাস করে বিয়ে হওয়া মেয়েটির বাপের বাড়ি থেকে বি এ টুকু করার বিলাসিতা ভোগ করেছিলেন। তারপর শ্বশুর বাড়ীর উনকোটি ঝামেলা সামলে এম এ পাস। শুনেছি নোট নিতে প্রফেসরের বাড়ি গেছেন, গলির মোড়ে কাকা আমার দিদিকে কোলে নিয়ে পায়চারি করছেন। এম এ র পরে চাকরী, মাঝখানে বি এড। দুই সন্তান নিয়ে সংসার। তবে আমার বাবা আমার দেখা অন্যতম মেট্রো সেক্সুয়াল ম্যান। ঘর সংসারের সব কাজে হাত লাগাতেন। তাই সে দিকটায় মার সান্ত্বনা ছিল। ... এই লেখাটা একটা সময়ের দলিল। তবে সময় গুলো পাল্টায় না, তার নট- নটী রা শুধু বদলে বদলে যায়।
  • মৌমিতা মারিক কোনো কথা ব | 52.110.162.99 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৫:২৯60458
  • কোনো কথা বলার মত, জায়গায় নেই।

    আজকে মেয়েরা বা মহিলারা সরকারী বা বেসরকারি ক্ষেত্রে যে সব বা টুকু সুবিধা পান,,,, তার এনাদের জীবন সংগ্রামের ফসল।
    মানুষ, মানুষের বানানো সমাজ, নিয়ম ও সাঁকো দিয়েই হেঁটে যায়, বা এগিয়ে যায়।
    কুর্নিশ, জানানোর ভাষা নেই আপাতত। বেসিনে দুধ ফেলে দেওয়ার মত বেদনা দায়ক ঘটনা, আজো ঘটে, যদি ও,,,, আজ ম্যাটারনিটি র ছুটি ৬ মাসের।

    আজ ও মায়েরা শেষ পর্যায় পর্যন্ত স্কুলে আসেন সন্তান কে সময় দিতে পারবেন বলে।

    আর সব বাধা বা নিয়মের শৃঙ্খল কে যুক্তি দিয়ে ঝালিয়ে নিয়ে, যে নারী তার নিজের জীবনকে প্রশ্ন করতে পারেন,,,,,,,, তার সেই উত্তরণ ত এক অর্থে যুদ্ধ জয়।

    নারী মাতৃ বাসনা ত্যাগ এক অর্থে,,,,,,,, আগুনে পুড়ে সোনা হওয়ার গল্প।
  • Shuchismita Sarkar | 78.62.246.238 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৮:২২60459
  • মাসীমা আমার লেখাটা মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং তার পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখেছেন দেখে খুব ভালো লাগছে। পৃথিবীকে ভবিষ্যতের শিশুর জন্য বাসযোগ্য করে যাওয়ার অঙ্গীকারের চেয়ে কঠিন শপথ বোধহয় আর কিছুই নেই। অনেক মানুষ এই শপথ নিলে জঞ্জাল নিশ্চয়ই একদিন সাফ হবে। সাফ তো হচ্ছেই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে হচ্ছে। নইলে আমাদের যুগের মেয়েদেরই কি সাহস হত মাতৃত্ব এবং অমাতৃত্বের অধিকার নিয়ে মুখ খোলার? "এই পৃথিবীর রণ রক্ত সফলতা সত্য, তবু শেষ সত্য নয়।"

    এবার একটু অন্য প্রসঙ্গ। সিসিএল বা চাইল্ড কেয়ার লিভ সম্পর্কে আপনারা কি ভাবছেন? সেভেন্থ পে কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী যে মেয়েদের আঠারো বছরের কম বয়েসী বাচ্চা আছে তারা সন্তানের আঠারো না হওয়া পর্যন্ত সর্বাধিক ৭৩০ দিনের (দু বছর) এই ছুটি নিতে পারবে। আমার কর্মরত বন্ধুরা এই ছুটিটা পেয়ে অত্যন্ত উপকৃত। যদিও কয়েক জায়্গা থেকে খবর পেয়েছি এই ছুটি আদায় করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে মায়েদের। অসহযোগিতা আসছে সেসব মায়েদের থেকে যাদের বাচ্চারা বড় হয়ে গেছে। এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম ছেলেরাও এই ছুটি পাবে কিনা। জানতে পারলাম ছেলেরা সর্বাধিক এক মাসের সিসিএল পেতে পারে। আমাদের দেশে এখনও যেহেতু সন্তানপালন মূলত মায়ের দায়িত্ব মনে করা হয়, তাই মেয়েদের বেশি ছুটি দরকার এটা ঠিক। আবার এটাও ঠিক, ছেলেদের সমপরিমান ছুটি না থাকার জন্য বাবারা এই ছুটির দোহাই দিয়ে আরো বেশি দায়িত্ব কর্মরত মায়েদের দিকে ঠেলে দেবেন। এর ফলে সন্তানপালনের দায়িত্বের কোনদিনই সমবন্টন হবে না এরকম একটা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সর্বোপরি যেসব ছেলেরা সিঙ্গল পেরেন্ট তাদের জন্য নিয়মের ব্যতিক্রম আছে কিনা কেউ জানেন?
  • pi | 57.29.205.118 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৮:২৫60460
  • ছুটি দেওয়া অবশ্যই ভাল, কিন্তু ছেলেদের সমপরিমাণ ছুটি না দেওয়াটা ততটাই সমস্যার মনে হয়। প্যাটার্নিটি লিভের ক্ষেত্রেও বলেছিলাম, আর এক্ষেত্রে তো আরঐ। এক বছরের পরেও লিভটা মায়েরই করে দেওয়ার অর্থ এই কাজগুলো কেবল মায়ের, সেই পিতৃতান্ত্রিক ভাবনার দিকেই ঠেলে দেওয়া।
  • শক্তি দত্তরায় কর ভৌমিক | 37.63.132.146 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৮:৪২60454
  • নবনীতা আমরা বাড়তি শ্রদ্ধা কিছু দাবী করবো না ।সভ্যতার প্রথম যুগে যে মানুষরা কৃষি বা হাতিয়ার ,বাসন কোষন এমন কি গলার মালা ,গুহায় ছবি আঁকতে গেছেন তাঁদের কাজও তো একধরনের বাধা পার হয়ে নিজের সক্ষমতা প্রমাণের আনন্দে ভরা ছিলো ।আমাদের ও সেই আনন্দ ছিলো ।নইলে পারলাম কি করে ?হ্যাঁ কেউ যদি অনিচ্ছায় মা হতে বাধ্য হয় বা উপার্জনে সেটা অভিপ্রেত নয় ।কেউ গৃহবধূ হয়ে থাকতে চাইলে সেও তাঁর অধিকার ।তবে আমাদের মায়েদের যুগে এই দুঃখ ও মেয়েরা সহ্য করেছেন ,ঘরে অভাব ,সন্তান অভুক্ত কিন্তু উপার্জনের অধিকার নেই ,তার আগে তো শিক্ষার অধিকার ও পায়নি মেয়েরা ।আমি যখন এখন দেখি গ্রামে গঞ্জের মেয়েরা চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে চা বিক্রি করছে আমার বেশ লাগে ।আসলে কার কাছে কোনটা মুক্তি কোনটা স্বাধীনতা আর কোনটা এর উল্টো পিঠ নির্ণয় করা খুব মুশকিল ।আমরা তো সমাজেরই অঙ্গ ,ভাঙ্গাগড়া ,ভুল শুদ্ধির তরঙ্গ পেরিয়ে যাত্রায় "শেষ নাহি যে শেষ কথা কে বলবে "।তবে তুমি যে মন দিয়ে লেখাটা পড়েছো খুব ভালো লাগলো ।তোমার মূল্যবান বক্তব্য আরো বেশি স্পষ্ট করে বল
  • শক্তি | 37.63.132.146 (*) | ২৫ জুন ২০১৭ ০৮:৫৩60455
  • একটা লাইন অনবধানে অসম্পূর্ণ থেকেছে ,লিখছি আবার -যে মানুষেরা .......গলার মালা ,আদিম গহনা নির্মাণে ব্যাপৃত হয়েছেন .....
  • sm | 52.110.132.138 (*) | ২৬ জুন ২০১৭ ০৬:২৪60462
  • দু বছর ছুটিটা বেশ বাড়াবাড়ি। ছুটি ম্যাক্সিমাম ৬ মাসের দেওয়া উচিত। নতুন বাবা দের জন্য তিন মাস।
    এর কারণ হলো; কর্মক্ষেত্র কোনো হেলা ফেলার জায়গা নয়।
    যেসব নারীরা হেলথ,শিক্ষা,পুলিশ,ডিফেন্স ইত্যাদি ফিল্ডে কাজ করেন, সেখানে ২ বছরের অনুপস্থিতি সামাল দেবার মতো ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও ম্যান পাওয়ার অন্তত আমাদের ভারতের মতো দেশে থাকেনা বা নেই।
    ছুটি দেওয়া যেতে পারে, জরুরি আবশ্যকতার ওপর ভিত্তি করে এবং কেস বই কেস বিচার করে। ৬ মাসের বেশি ছুটি মঞ্জুর হলে ,সেটি অবৈতনিক হওয়া উচিত। খালি পেনশন বেনিফিট টুকু এক্সট্রা দেওয়া উচিত।
    মনে রাখতে হবে, ভারতের ৯০ শতাংশ মা কোনো কর্মস্থানের সঙ্গে যুক্ত নন।অর্থাৎ কাজের বিনিময়ে বেতন পান না।
    তাঁদের কাছে ২ বছরের ছুটি স্বপ্নাতীত।
    সুতরাং পে কমিশন ছুটি না বাড়িয়ে ওয়ার্কিং মাদার বা ফ্যামিলির জন্য এক্সট্রা ভাতার বন্দোবস্ত করতে পারে ;যাতে কিনা ,মায়েরা সন্তানদের ক্রেশ বা নার্সারি তে রেখে সত্তর কাজে জয়েন করতে পারে।
  • শক্তি দত্ত রায় করভৌমিক | 233.191.28.153 (*) | ২৬ জুন ২০১৭ ১২:৩৮60461
  • শুচিস্মিতা ,সেভেনথ পে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেশি ছুটি পেলে তো মা ,শিশু এবং সংশ্লিষ্ট সবারই উপকার হবে ।বাবা ও যদি পান ভালো হবে ,নারী এবং পুরুষ কর্মচারীর দায়িত্ব এবং অধিকারে সমতা আসবে ।তবে প্রশাসনিক স্তরে বৃহত্তর স্বার্থের কথা ও ভাবতে হবে নিশ্চয় ।কঠোর হতে হবে ছুটির অপব্যবহারের ক্ষেত্রে ।সবচেয়ে বোধহয় ভালো হয় প্রয়োজনে মা বা বাবা একজন ছুটি নেবেন ।কে ছুটি টা নেবেন দম্পতি নিজেরাই ঠিক করবেন ।আগে যাঁরা পাননি তাঁদের নিরীহ দুঃখ যুক্তি সঙ্গত কিন্তু সোচ্চার প্রতিবাদ যুক্তি নয় অসূয়াপ্রসূত ।এই ধরণের প্রতিবাদ পাত্তা পাবে না ।আমি তো সেভেনথ পেকমিশনের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানাবো ।
  • শক্তি দত্তরায় করভৌমিক | 37.63.161.222 (*) | ২৭ জুন ২০১৭ ০২:৫৭60463
  • আমার লিখতে গিয়েও লেখা হয়নি ,অসংগঠিত ক্ষেত্রে যে মায়েরা কাজ করেন তাঁদের ছুটির কথা ও ভাবা দরকার ।যে পিতা কৃষিতে ,ইঁট ভাটায় ,রেলস্টেশন এ মাল বহনের কাজ করেন ,তাঁদের তো অতি নিরুপায় অবস্থা ।
  • পাই | 57.29.193.203 (*) | ২৭ জুন ২০১৭ ০৩:১৩60464
  • একেবারে।

    আর এই দু বছর তো আঠারো অব্দি।
  • sm | 52.110.169.234 (*) | ২৭ জুন ২০১৭ ০৩:১৯60465
  • মাতৃত্ব এবং সন্তান লালন পালন কোনো আরোপিত শর্ত নয়। এটা মা দের অবশ্য করণীয় কর্তব্য।
    মানব শিশু জন্ম নেবার পর অসহায়।মায়ের দেখভাল টা হচ্ছে মাস্ট।প্রেগন্যান্সি যেমন পুরুষদের দ্বারা সম্ভব নয়,সন্তান প্রতিপালন এও মুখ্য ভূমিকা হলো মায়ের। যেমন বাচ্চা কে মাতৃ দুগ্ধ পান করানো।সময় মতো খাওয়ানো ,ন্যাপি চেঞ্জ ইত্যাদি। মায়ের ভূমিকা হলো প্রধান আর পিতার ভূমিকা হলো সহকারী।
    এই জন্য মায়ের ছুটির পরিমান ও দ্বিগুন হাওয়া উচিত। তবে ৬ মাস ছুটি যথেষ্ট।
    এখন প্রশ্ন উঠতে পারে মা কেই প্রধান ভূমিকা নিতে হবে কেন?
    কারণ সন্তানের অভিভাবক হিসাবে মায়ের পরিচয় নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকেনা-পিতার পরিচয় নিয়ে থাকতেই পারে।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ২৮ জুন ২০১৭ ০২:৪৭60466
  • ক্ষি ক্ষান্ড! 'সময় মতো খাওয়ানো ,ন্যাপি চেঞ্জ ইত্যাদি' পোচুর করেছি তো এককালে
  • hu | 140.160.124.4 (*) | ২৮ জুন ২০১৭ ০২:৫৫60467
  • সিসিএল আর ম্যাটার্নিটি লিভ আলাদা। আমি সিসিএলের কথা লিখেছিলাম। এটা বাচ্চার আঠারো না হওয়া পর্যন্ত মায়েরা নিতে পারেন সর্বাধিক ৭৩০ দিন। বাবাদের ক্ষেত্রে বরাদ্দ ছুটি ৩০ দিন। নাহয় ধরেই নিলাম, সদ্যজাত শিশুর লালনপালন মায়ের চেয়ে ভালো কেউ করতে পারে না। তার জন্য ম্যাটারনিটি লিভ আছে। CCL অর্থাৎ চাইল্ড কেয়ার লিভের আওতায় সদ্যজাতরা পড়ে না। একটু বড় হয়ে যাওয়া বাচ্চার ক্ষেত্রে বাবা-মা সমান দায়িত্ব পালন করতে অসুবিধে কোথায়?
  • sm | 52.110.187.162 (*) | ২৮ জুন ২০১৭ ০৪:০৩60468
  • ওসব ন্যাপি চেঞ্জ ফেঞ্জ তো আম্মো করেছি। তাবলে মায়ের মতো পেরেছি নাকি?ওই যে বললাম-সহকারী!
    যাই বলুন ভারতের মতন দেশে ২ বছর টা বহুত বাড়াবাড়ি।
    কোনো মায়ের ৩ টি সন্তান হলে মোট ৬ বছর!
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ২৮ জুন ২০১৭ ০৭:০৬60469
  • ন্যাপি চেঞ্জ ফেঞ্জ এত সহজ কাজ, মায়ের মত না পারার কিসু নাই।
    মাতৃ দুগ্ধ -এর ব্যাপারে, কি আর করা যাবে, বাবারা ব্যাপক ব্যাকফুটে, তবে অন্য সব কাজ-ই বাবা-রা চাইলে খুবই ভাল করতে পারে। অনেক বাবা করতে চায় না, সেটা আলাদা কথা।

    'সদ্যজাত শিশুর লালনপালন মায়ের চেয়ে ভালো কেউ করতে পারে না' - এটা একেবারেই ঠিক নয়।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ২৮ জুন ২০১৭ ০৮:০৪60470
  • হ্যাঁ হ্যাঁ দেখুন দিকি কী কান্ড! ৫ টি হলে দশ বছর। আর ঠাকুমার মতন ৭ টি হলে ১৪ বছর। রামের গোটা বনবাস কাল। ঃ-)
  • hu | 140.160.124.4 (*) | ২৮ জুন ২০১৭ ০৮:৫৭60471
  • দুটোর বেশি হলে দেবে না।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন