এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বসন্ত এসে গেছে ...

    সিকি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ মার্চ ২০১৭ | ৪৩৪৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • গল্পটা ঠিক গুরমেহরকে নিয়ে শুরু হয় নি। শুরু হয়েছে তার দুদিন আগে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রামজাস কলেজে দুদিনব্যাপী ডিবেটের অনুষ্ঠান ছিল, বিষয় ছিল প্রতিবাদের সংস্কৃতি। তো, সেই ডিবেটের দ্বিতীয় দিনে আমন্ত্রিত বক্তা ছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার, উমর খালিদ।

    এই অবধি পড়েই নিশ্চয়ই আন্দাজ করে নিয়েছেন কেন অচল সিকি আবার এক বছর বাদে বসে গেছে মন কি বাত লিখতে? বিচ্ছিন্নতাবাদী, রাষ্ট্রবিরোধী, আফজল গুরুর সমর্থক, “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে” বলে স্লোগান দেওয়া “ভামপন্থী” উমর খালিদকে সেদিন বলতে না দেওয়ায় সিকি নিশ্চয়ই প্রচণ্ড ব্যথিত? নিশ্চয়ই ফ্রিডম অফ স্পীচ নিয়ে সাতকাণ্ড লিখতে বসেছে আজ?

    নাঃ, সেই রকমের ব্যথা পাবার মত কিছু হয় নি। তেমন কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে আমি আজ লিখতে বসি নি। বিজেপি যে আদর্শে দীক্ষিত রাজনৈতিক দল, তাদের জাতীয়তাবাদের ধারাপাত মহারাষ্ট্রের একটি বিশেষ শহরে যে দলটি দ্বারা রচিত হয়, তাদেরই ছাত্র সংগঠন এবিভিপি যে এর চেয়ে কোনও উন্নত প্রক্রিয়ায় ভিন্নস্বরকে চুপ করিয়ে দিতে শেখে নি, সে আমরা আজ থেকে নয়, অনেক অনেক আগে থেকে জেনে এসেছি। এর চেয়ে উন্নত শিক্ষা এদের নেই, তাই এ বিষয়ে বিশেষ কিছু না বলাই ভালো। মুশকিল হয়ে গেল মাঝখান থেকে গুরমেহর কৌরের একটি ছোট পোস্টার হাতে ছবি বাজারে প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায়। এবিভিপির সুশিক্ষিত ছাত্রদের হাতে মার খেয়ে তখন দিল্লি ইউনিভার্সিটির একাধিক ছাত্রছাত্রী জখম, একজন অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারা হয়েছে, তিনি এখন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ইন্টারনাল ইনজুরি নিয়ে – বেশ একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে ফেলা গেছে, আর কোনও শালা এই শুওরের বাচ্চা কমিউনিস্ট দেশদ্রোহীদের রামজাস কলেজে দ্বিতীয়বার আনার কথা ভুলেও ভাববে না, সেই সময়ে কিনা – মাত্র কুড়ি বছর বয়স্ক একটা মেয়ে হাতে একটা পোস্টার নিয়ে ছবি তুলে সোশাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিল – যাতে লেখা, এবিভিপি, আমি তোমাদের ভয় পাই না, আমি একা নই – সারা ভারতের ছাত্রছাত্রী আমার সাথে আছে? ভাবা যায়?

    মানে, এবিভিপি বা আরএসএস – এমনিতেই অত্যধিক মাত্রায় ফিউডাল মনোবৃত্তির দল, মনুবাদকে মাথায় নিয়ে চলে, এদের দলের মেয়েরাও আদর্শ ভারতীয় নারীর সংস্কৃতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেন, যার পরিণতি হিসেবে আমরা পাই ইয়েল কলেজ থেকে পাশ করে মন্ত্রী হওয়া দুর্গাভক্ত শ্রীমতি স্মৃতি ইরানী জাতীয় রুচিশীল সংস্কৃতিবান মহিলাদের, সেখানে একটি কচি খুকি, হুট্‌ করে বলে বসল কিনা, নট অ্যাফ্রেড অফ এবিভিপি? এমনি কোনও মেয়ে বললে হয় তো ভারতমাতার নামে জয়ধ্বনির নিচে চাপা পড়িয়ে দেওয়া যেত আওয়াজটা, কিন্তু এই মেয়েটি আবার এমনি যে-সে মেয়ে নয় – রীতিমত শহিদের বেটি। এর বাবা, মনদীপ সিং ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের শহীদ। ও, ও, সরি, সরি, মাপ করবেন, ভারত সরকার “শহীদ” শব্দটি সরকারিভাবে গ্রাহ্য করে না। মৃত সৈন্য মনদীপ সিং।

    ভাবছেন, ইয়ার্কি মারছি? আজ্ঞে না, ইয়ার্কি নয়, খাঁটি সত্যি কথা। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনির কোনও কর্মী, কোনও রকমের অ্যাকশনে যদি মারা যান, তাঁকে সরকারের তরফ থেকে “শহীদ” আখ্যা দেবার কোনও অবকাশই নেই – মাত্র তিন মাস আগে লোকসভায় দাঁড়িয়ে এই তথ্যটি দিয়েছেন, আর কেউ নয়, স্বয়ং গৃহরাজ্যমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।

    "The ministry of defence has informed that the word ‘martyr’ is not used in reference to any of the casualties in Indian armed forces. Similarly, no such term is used in reference to the central armed police forces and Assam Rifles personnel who are killed in action or on any operation."

    ৬ই ডিসেম্বর, ২০১৬, লোকসভায় দাঁড়িয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এই বক্তব্য রাখেন মাননীয় মন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু, যা লোকসভার রেকর্ডে রাখা রয়েছে। তো, সেই হিসেবে কারগিল যুদ্ধে “মৃত” সৈনিক মনদীপের কন্যা গুরমেহরের এই বয়ান ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে ন্যাশনালিজমের ঠিকাদারদের, কারণ এতদিন অবিসংবাদিতভাবে তারা নিজেরাই মনে করত সেনাবাহিনির গর্ব আর দেশের সম্মান রক্ষা করার একমাত্র হর্তাকর্তাবিধাতা, ন্যাশনালিজমের দেশব্যাপী একমাত্র ঠিকাদার, সেখানে একজন মৃত সৈনিকের মেয়ে কিনা, দেখা যাচ্ছে, আরেকটা ভিডিও দিয়ে রেখেছে সোশাল নেটওয়ার্কে – যাতে সে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে দেখাচ্ছে, তাতে লেখা অনেক কিছু, তার মধ্যে লেখা ইংরেজিতে ন’টি শব্দ – বাংলা করলে দাঁড়ায়, পাকিস্তান আমার বাবাকে মারে নি। মেরেছে যুদ্ধ।

    আর যায় কোথায়! কলেজ ক্যাম্পাসে এবিভিপির নিজেদের জাতীয়তাবাদী লজ্জা নিবারণের একমাত্র ডুমুরপত্র ছিল এই “ভারতীয় সেনা, শহীদ হবার জন্য বর্ডারে দাঁড়িয়ে রাত জাগছে” রেটোরিক, সেইটাও কিনা ছিনিয়ে নিয়ে গেল জালন্ধরের এক তরুণী, তাও আশপাশের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মরসুমে? অতএব, নামিয়ে দাও নিজেদের পুষে রাখা আইটি সেল, যারা ইদানিং “আইএসআই” স্বীকৃতি পেয়েছে – জানেন নিশ্চয়ই? এ আইএসআই ভারতীয় মানক ব্যুরো নয়, পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সাথে যোগসাজস পাওয়া গেছে বিজেপির আইটি সেলের কর্মীদের, পরপর ধরা পড়েছে তারা।

    ভিডিওটি নতুন নয়। এটি প্রথম ফেসবুকে দেওয়া হয় গত বছর এপ্রিল মাসে, Voice of Ram পেজ থেকে, যেটি চালায় রাম সুব্রহ্মনিয়ম নামে এক যুবক। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তার পেজের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে শান্তির বার্তার আদানপ্রদান করা। সেই পিসকিপিং প্রসেসের মধ্যে দিয়েই এসেছিল গুরমেহরের এই ভিডিওটি। আমি যে হেতু শুরু থেকেই এই পেজটির ফলোয়ার, তাই ভিডিওটি তখনই আমার চোখে পড়েছিল, দেখেছিলাম, শেয়ার করেছিলাম নিজের ফেসবুক ওয়ালে, ভালো লেগেছিল বেশ। একটা মেয়ে তার নিজের জীবনদর্শনের পরিবর্তনের কথা বলছে নীরবে, যা কিনা অনেকটা আমারও মনের কথা। গত বছর মন কি বাত বাড়তি পর্বে আমি হুবহু এক কথাই লিখেছিলাম, দেশ কি মারে? দেশ মারে না। যে আতঙ্কবাদ, উগ্রপন্থার দোষে দোষী বানানো হচ্ছে পাকিস্তানকে, সেই উগ্রপন্থার বলি কি তারা নিজেরা নয়? কম রক্ত ঝরে সে দেশে? নেহাত দেশটার নাম পাকিস্তান, তাই ফেসবুকে “মার্কড সেফ” খেলা জমে ওঠে না, “জে সুইস করাচী” ট্যাগলাইনে ভরে ওঠে না ফেসবুকের প্রোফাইল। মারে কিছু স্বার্থান্বেষী যুদ্ধবাজ রাজনীতিবিদরা, তাদের বীরত্ব দেখানোর তাগিদে, দেশের মধ্যে “জাতীয়তাবাদ”এর সুড়সুড়ি দিয়ে দেশের লোককে ক্ষেপিয়ে তোলার তাগিদে। সেনসেশন তৈরি করা হয় দেশভক্তির নামে, দু দেশেই, ঘৃণা ম্যানুফ্যাকচার করা হয়, তার পরিণতি হিসেবে এক দিক মদত দেয় উগ্রপন্থায়, অন্যদিক বছর বছর তার সামরিক অস্ত্রসম্ভার বাড়িয়ে চলে। যুদ্ধ হলেও সেনা মরে, যুদ্ধ না হলেও মরে। দু দিকেই।

    সে কথা থাক। হচ্ছিল গুরমেহরের কথা। প্রায় ছ মাস আগের একটি ভিডিও, যাতে উনিশ বছুরে তরুণীটি বলছে, দু বছর বয়েসে বাবাকে হারিয়েছি, বাবা কী জিনিস জানতে পারি নি। খুব রাগ হত, পাকিস্তান আমার বাবাকে মেরেছে – মনে করতাম। আমার যখন ছ বছর বয়েস, একটা ছুরি নিয়ে এক বোরখা পরা মহিলাকে মারতে গেছিলাম, মনে করেছিলাম আমার বাবার মৃত্যুর জন্য সে-ই দায়ী। তার পরে মা আমাকে বোঝায়। এখন বুঝি, পাকিস্তান মারে নি আমার বাবাকে, মেরেছে যুদ্ধ। চাইলে এই সমস্ত যুদ্ধ এড়ানো যেত, এড়ানো যায়। আমি এখন তাই শান্তির পক্ষে কথা বলি। যদি শত্রুতা ভুলে আমেরিকা আর জাপান বন্ধু হতে পারে, দু দুটো বিশ্বযুদ্ধের তিক্ত স্মৃতি ভুলে গিয়ে জার্মানি আর ফ্রান্স বন্ধু হতে পারে, তা হলে আমরা কেন পারব না?

    কেউ বিশেষ দ্যাখে নি। জাতীয়তাবাদী ভক্তের দলের চোখ এড়িয়ে গেছিল এই ভিডিওটা। কোনও শোরগোল ওঠে নি তখন, অথচ, “অ্যান্টিন্যাশনাল” শব্দটাকে কয়েন করে তখন দিল্লি সমেত গোটা দেশ উত্তাল। বেশ কয়েক মাস আগে ছাড়া পেয়েছে কানহাইয়া, উমর খালিদ, অনির্বাণ, তাদের বিরুদ্ধে সিডিশনের একটি চার্জও প্রমাণ করা যায় নি, তাতেও ভক্তদের হুঙ্কার থামানো যায় নি, এদিকে উরিতে তখন ঘটে গেছে সন্ত্রাসবাদী হামলা, কাশ্মীরে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে মারা গেছে বুরহান ওয়ানি, মাত্র দেড় মাস আগে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ ঘোরালো ছিল।

    কিন্তু গুরমেহরকে কেউ চিনত না তখন। সমস্ত ফোকাস তখনও ছিল জেএনইউয়ের দিকে, তাই কে গুরমেহর, কী উদ্দেশ্যে তার ভিডিও বানানো হয়েছে, কেউই খোঁজ রাখে নি। আমি নিজেও ভুলে গেছিলাম নামটা। মনে পড়ল যখন এই কদিন আগে, টানা তিনদিন সভ্য জগত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পরে আমি আবার নেট কানেকশনের জগতে ফিরে এসে পুরনো ফেসবুকের স্টেটাস পড়তে শুরু করলাম, ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি। ততদিনে এবিভিপি তাদের অতিপ্রিয় মনুস্মৃতির বাতলানো পথে মেয়েটিকে “ঠোস জওয়াব” দেওয়া শুরু করে দিয়েছে। শুনলাম গ্রাফিক চিত্রসহ তার কাছে মেসেজ গেছে, কী ভাবে তাকে রেপ করা হবে। এত বড় সাহস, যে তার শহীদ বাবা শুধু নয়, দেশের যাবতীয় আর্মি জওয়ানদের অপমান করে? বলে কিনা এবিভিপিকে ভয় করে না, এবিভিপির বিরুদ্ধে কথা বলে? ততদিনে ভক্তের দল খুঁজে পেয়ে গেছে সেই ছ’মাসের পুরনো ভিডিও, তার আগেপিছের কোনও কথা নিয়ে তো ট্রোল করা চলে না, তাই বেছে নেওয়া হল ন’টি শব্দ, পাকিস্তান ডিড নট কিল মাই ড্যাড, ওয়ার কিলড হিম। ট্রোলের বন্যা বয়ে গেছে, “রসিক” হিসেবে টুইটারে খ্যাত ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ তাঁর রসবোধের পরিচয় দিয়ে দিয়েছেন টুইটারে, সেটিকে রসিকতা মনে করে শেয়ার করে ফেলেছেন আর এক বলিউডের অভিনেতা। কিরেন রিজিজু বড় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তখন, মেয়েটির মন কে বিষাক্ত করল, শালা লেফটিস্টগুলো করেছে নিশ্চয়ই, নইলে কেন বীর শহীদ সেনানীদের এই মেয়েটি অপমান করবে? লক্ষ্য করুন, সেই কিরেন রিজিজু, যিনি তিন মাস আগেই লোকসভায় দাঁড়িয়ে অন রেকর্ড বলেছেন, “শহীদ” শব্দটি মৃত ভারতীয় সেনাদের ক্ষেত্রে ভারত সরকার অনুমোদন করে না।

    আক্রমণের লক্ষ্য যখন একটি মেয়ে, তখন তো আক্রমণ করা অনেক সহজ হয়ে দাঁড়ায়। খানকি মাগী বল্‌, ওর শরীরের বাঁকের বিশদ বর্ণনা দে, জড়িয়ে দে ওর নাম র‍্যান্ডম কোনও একটা ছেলের সাথে, তা সে যে বয়েসের হোক না কেন, ধর্ষণের হুমকি দে, এতে যা সুখ পাওয়া যায়, সে সুখ তো অন্য কিছুতে মেলে না।

    গুরমেহর আজ পরিচিত মুখ, চাপে পড়ে গুরমেহরের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বাধ্য হয়েছে দিল্লি পুলিশ, তার পরেও সে দিল্লি ছেড়ে আপাতত চলে গেছে পঞ্জাবে নিজের বাড়িতে।

    আমরা, যারা তত-পরিচিত-নই সাধারণ মানুষরা, যারা একই রকম ভাবে সোশাল নেটওয়ার্ক সাইটে বিচরণ করি, তাদের সুরক্ষার ভার কে নেয়?

    গুরমেহরের খুব কাছাকাছি ধরণের একটা ঘটনা ঘটে গেল আমারই পরিচিত সার্কলে। দু বছর আগে এক ব্যক্তি রামকৃষ্ণ-সারদামণি-বিবেকানন্দ-নিবেদিতার সম্ভাব্য যৌনজীবন নিয়ে একটা পোস্ট করেছিল ফেসবুকের একটা ক্লোজড গ্রুপে। যদিও ঠিক মুখরোচক কেচ্ছা বানানোর উদ্দেশ্যে সেটা সে লেখে নি, বরং সেই ধরণের কিছু লেখাপত্তর নিয়ে বাজারে ইতিমধ্যেই দু তিনটে বই আছে, কিন্তু ভক্ত তো ভক্ত। পূজ্য ভগবানের যৌনজীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া তাঁরা মেনে নেবেন কেন? এই কলকাতা শহরেই অনেকদিন আগে বাংলা দৈনিকের রবিবাসরীয়র শয়ে হয়ে কপি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, কারণ সেখানে সেই সপ্তাহের বিষয় ছিল নেতাজির বিয়ে এবং এমিলিয়া শেঙ্কলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় থেকে পরিণয়ের কাহিনি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, যিনি নাকি মরেন নাই, ঘরেও ফেরেন নাই, তিনি বিবাহ করিতে পারেন, এইটা হজম করবার মত পাচনশক্তি তখনকার ভক্তদের ছিল না। নেতাজি যেমন বিয়ে করতে পারেন না, তেমনি লেনিনের নিতম্ব থাকতে পারে না (কোনও এক সিনেমায় লেনিনের চরিত্রটির পেছনদিক নগ্ন অবস্থায় দেখানো হয়েছিল, তাতে লেনিনভক্তরা খচে গেছিল বেদম), রামকৃষ্ণ বা সারদামণিরও যৌনজীবন থাকতে পারে না।

    কিন্তু কেউ যদি ভুল করে লিখে ফেলে সেই সব নিয়ে? নব্বইয়ের দশকে কাগজ পোড়ানো হয়েছিল, কিন্তু এখন তো সোশাল মিডিয়ার যুগ। হরদম সেখানে বসছে ক্যাঙারু কোর্ট, নেমিং অ্যান্ড শেমিংএর আসর, আর কোনও পুরনোই এখানে পুরনো হয় না। কোনও এক ভক্তের চোখে পড়ে সেই দু বছর আগের পোস্টটি, তিনি সেটির স্ক্রিনশট নিয়ে হিংস্রভাবে শেয়ার করতে শুরু করেন, এবং এক দিনের মধ্যে শুধু ফেসবুক নয়, আরও বিভিন্ন সোশাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মে সেই স্ক্রিনশট ভাইরাল করে দেওয়া হয়। ফলে, বিভিন্ন ধরণের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত ভক্তের দল ছেলেটির মুণ্ডু চাইতে শুরু করে, কেউ অতি সাবধানে তার বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর খুঁজতে শুরু করে, এবং আক্রমণের লক্ষ্য অচিরে খুঁজে নেয় সম্ভাব্য মহিলা টার্গেটদের। তার স্ত্রী, তার মা, তার বোনকে নিয়ে মুখরোচক যৌনগন্ধী কমেন্ট চারদিকে ছড়াতে তো শুরু করেই, ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গেছিলাম, এ সমস্তকিছুই হয় প্রথমে গণহারে রিপোর্ট করে তার প্রোফাইল সাময়িকভাবে ডিঅ্যাক্টিভেট করানোর পরে, যখন ছেলেটির নিজের তরফে ডিফেন্ড করবার মত কোনও প্ল্যাটফর্মই আর নেই। এর পরে আক্রমণ শুরু হয় যে গ্রুপে দু বছর আগে কমেন্টটি পোস্ট হয়েছিল, সেই গ্রুপের সঞ্চালিকার ওপর। যেহেতু তিনি লিঙ্গচিহ্নে মেয়ে, অতএব, আক্রমণের পদ্ধতিটা স্বাভাবিকভাবেই সহজ হয়ে যায়। রেপ থ্রেট থেকে শুরু করে এমন সুন্দর পানু ছড়া বানিয়ে বাজারে ছাড়া হয়, যাতে আরো আরো বেশিমাত্রার লোক মজা লুটতে পারে। ভার্চুয়ালি একটা মেয়েকে যতরকম ভাবে বুলি করা সম্ভব, সবই করা হল। আর এইসব ছড়া-কবিতা, কোনও অর্ধশিক্ষিত গোঁয়ারগোবিন্দের লেখা নয়, রীতিমত উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির যৌথ রচনার ফসল।

    ভক্তি, অন্ধই হয়। যে জিনিস তর্কের মাধ্যমে, আলোচনার মাধ্যমে, এমনকি দরকার হলে শালীন বাদানুবাদের মাধ্যমেও নিষ্পত্তি করে ফেলা যায়, ভক্তেরা সেখানে ব্যবহার করে লাঠি, ইঁট, বেল্ট, আর ভার্চুয়াল ট্রোল ব্রিগেড। ছোট করে বলতে গেলে, ভায়োলেন্স। আলোচনায় লাগে যুক্তির প্রয়োগ, ভক্তি তো যুক্তির পথে হাঁটে না।

    এমন কি, এ নিয়ে সরব হবার পরে এ-ও শোনা গেছে, ইঁট ছুঁড়লে তো ভাই পাটকেল খেতেই হবে। অমন নোংরা একটা জিনিস লিখলে তো ব্যাকল্যাশের জন্য তৈরি থাকতেই হবে। ভক্তদের সেন্টিমেন্টকে আক্রমণও করবে, তারপরে পালটা গালাগাল বা রেপ থ্রেট বা ডেথ থ্রেট খেলে বা তোমার নামে পানু ছড়া লিখে শেয়ার করলে তুমি আঁচল আঙুলে পাকিয়ে নাকে কাঁদবে, দুটো তো একসাথে চলে না বাপু!

    তাই হবে হয় তো। বাক্‌স্বাধীনতা, ফ্রিডম অফ স্পীচ বলে একটা শব্দবন্ধ আছে বলে জানি, কিন্তু কোনখানে, কতদূরে তার সীমারেখা, কখন সেটা বাক্‌স্বাধীনতা আর কখন সেটা অ্যাবিউজ, কে তা নির্ধারণ করবে? মানুষের ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধির ওপরেই সেসব নির্ভর করে বলে জানি, তবে আজকালকার দিনে বিচারবুদ্ধিরও এত বেশিমাত্রার ভ্যারিয়েশন দেখা যায়, মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে অবাক হতেও ভুলে যাই।

    ছেলেটির লেখাটি আপত্তিকর ছিল, মেনে নিলাম। সে যা লিখেছিল, সেটা রামকৃষ্ণ-সারদামণি-বিবেকানন্দ ভক্তদের আহত করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল, এবং সেটার প্রতিবাদ প্রতিবাদের ভাষাতেই করা যেতে পারত। ইন ফ্যাক্ট, ছেলেটি পরে জানিয়েছিল, সে কেন লিখেছিল সেই লেখাটি – ফেসবুকের সেই গ্রুপে কিছু উগ্র সদস্য মহম্মদকে নিয়ে যৌনগন্ধী কটূক্তি করে চলেছিল। এই ছেলেটি তাতে আপত্তি জানালেও তাতে লাভ হয় নি, ছেলেটি তাতে জানায় যে এতে মুসলমানদের সরাসরি অনুভূতিতে আঘাত হানা হচ্ছে। তাতেও সেই মহম্মদ-ব্যাশিং তো কমেই না, বরং চলতে থাকে। তাদের একটা শিক্ষা দেবার জন্য ছেলেটি তখন এই লেখাটি লেখে, রামকৃষ্ণ-সারদামণিকে নিয়ে, এইটা বোঝাবার জন্য যে তাদের সম্মাননীয়, আরাধ্য কাউকে নিয়ে কটূক্তি করলে সেটা কতটা আঘাত হানতে পারে অনুভূতিতে। এবং, আবারও, লেখাটি কাল্পনিক কিছু ছিল না, বাজারচলতি দু তিনটি বইয়ে এই নিয়ে বিস্তারিত চর্চাও আছে। বইগুলি খোলাবাজারেই কিনতে পাওয়া যায়।

    কিন্তু ভক্তরা তো ক্রিটিসিজম পড়েন না – তাঁরা ভক্তিমার্গেই বিচরণ করেন। অতএব, যা হবার তাই হল। প্রথমে ছেলেটির বলার প্ল্যাটফর্ম কেড়ে নেওয়া হল, তারপরে শুরু হল তার পরিবারের লোকজনকে জুড়ে স্ল্যান্ডারিং, এর পরে লেখাটি “পোস্ট হতে দেওয়ার” অপরাধে সঞ্চালিকার নামে সিরিজের পর সিরিজ আদিরসাত্মক চুটকি, ছড়া। কে না জানে, এই পদ্ধতিতে একটা মেয়েকে যত সহজে “কাত” করে দেওয়া যায়, যে অনির্বচনীয় ধর্ষকাম মর্ষকাম অনুভূত হয়, তেমনটি আর কোনও কিছুতে হয় না!

    ভার্চুয়াল দুনিয়ায় দিল্লি পুলিশও নেই, আর কিরেন রিজিজু বা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও বাংলা পড়েন বলে শুনি নি – ফলে এ রকম হাজার হাজার সাইবার বুলিয়িংএর ঘটনা ঘটে যেতেই থাকে লোকচক্ষুর আড়ালে।
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
    যাক গে। হচ্ছিল গুরমেহরের কথা, আর ছাত্রদের প্রোটেস্ট মার্চের কথা। আমি তখন একলা বেরিয়ে পড়েছিলাম আমার বাইক নিয়ে, বরফের দেশে। ফেরার পথে, ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি, যখন ফোনের নেটওয়ার্ক পেলাম, জানলাম কী কী হয়ে গেছে রামজস কলেজে, জানলাম কী কী ভাবে ছ’মাসের পুরনো পোস্ট তুলে এনে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে গুরমেহরকে, এমনকি এর পরেও নিজেদের দেশভক্তির প্রমাণ দেখাতে এক মেগা সাইজের জাতীয় পতাকা মাথার ওপর বিছিয়ে ধরে এবিভিপি এক প্রস্থ মিছিলও করে ফেলেছে ইউনিভার্সিটির নর্থ ক্যাম্পাসে। এবিভিপির হাতে আক্রান্ত শিক্ষক, প্রশান্ত চক্রবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁর শরীরের ভেতরে ক্ষত তৈরি হয়েছে ছাত্রদের লাথি খেয়ে। প্রতিবাদে দিল্লি ইউনিভার্সিটির সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পথে নামবে ২৮শে ফেব্রুয়ারি। জমায়েত হবে এসজিটিবি খালসা কলেজের সামনে।

    আমি বাড়ি পৌঁছবো ২৭ তারিখ রাতে। একদিন বাড়তি ছুটিও রয়েছে হাতে। অতএব, যেতেই হবে।

    সাড়ে বারোটায় ছিল জমায়েতের সময়, তাও পৌঁছতে পৌঁছতে পৌনে দুটো বেজেই গেল। বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোবার পরে পরেই পুলিশের আধিক্য ছিল চোখে পড়ার মত। ছাত্র মার্গ, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ ক্যাম্পাসের মুখ্য এন্ট্রান্স, সেখানে প্রতিটা মোড়ে মোড়ে মোটা মোটা ভেস্ট পরা দিল্লি পুলিশ, সমস্ত রাস্তা ব্যারিকেড দেওয়া, কোনও গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, অবশ্য পায়ে হেঁটে চলে যাওয়াই যাচ্ছে। চারদিকে অল্পবয়েসী ছেলেমেয়েদের ভিড়, অভিমুখ এক দিকেই।

    পরিচিত যে জনের থেকে মিছিলের খবর পেয়েছিলাম, তাকে ফোন করে জানলাম খালসা কলেজ থেকে মিছিল এগিয়ে এসেছে, এই মুহূর্তে তারা আছে রামজস কলেজের সামনে।

    রামজস পর্যন্তও এগোতে হল না, দেখা হয়ে গেল মিছিলের সঙ্গে। সে এক দৃশ্য বটে, দেখামাত্র বঙ্কিম হয়ে বলতে ইচ্ছে করে – এ যৌবনজলতরঙ্গ রোধিবে কে? হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী একজোট হয়ে স্লোগান দিচ্ছে, এবিভিপি গো ব্যাক, গো ব্যাক গো ব্যাক। খানিক এগোতেই পরের ঝাঁকের মুখে হইহই করে এই মরশুমের নতুন স্লোগান – আরে এবিভিপি, কাহে so creepy? দিল্লির ছাত্রছাত্রীদের মিছিলের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যেটা সাধারণত পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মিছিলে দেখা যায় না – সেটা হচ্ছে ডফলি। এক একটা ঝাঁক একটা ডফলি নিয়ে তাতে তাল তোলে, আর সেই তালে তালে চলতে থাকে স্লোগান। তার সাথে চলে হাততালি। হাতের তালে তালে কয়েক হাজার তরুণ তরুণীর একটা সমুদ্র তখন ছাত্র মার্গে আছড়াচ্ছে, গর্জাচ্ছে। তারই মাঝে অন্যরকমের তাল, কান পেতে শুনলাম সেই ঝাঁকে কোরাস চলছে – দেখনা কিতনা তাকত আজ বাজু-এ-কাত্‌ল মেঁ হ্যায়, সরফরোশি কি তমন্না অব্‌ হমারি দিল মে হ্যায়।









    দুদিন আগে এই রাস্তা দিয়েই লম্বা একটা জাতীয় পতাকা নিয়ে এবিভিপির মিছিল বেরিয়েছিল, নিজেদের ন্যাশনালিজম প্রমাণ করতে। কতজন ছিল সেই মিছিলে? জানি না, আমি ছিলাম না সেদিন, তবে আজকের ভিড়ের সাথে নিশ্চয় তুলনীয় নয় সেই মিছিল। আজ ধারেকাছে নেই কোনও এবিভিপির ছাত্র? …

    রাস্তা জুড়ে মিছিল চলেছে, দুপাশে মোটা দড়ি নিয়ে কর্ডন করে সাথে সাথে চলেছে দিল্লি পুলিশের দল, আমি ছিলাম বাঁদিকের ফুটপাথে, সেখানে অন্যান্য সাধারণ মানুষজনের সাথে আমিও ছিলাম, পাশ থেকে মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও তুলছিলাম, হঠাৎ শুনতে পেলাম আমার পেছনদিক থেকে গুটিকয় ছেলে বেশ আবেগের সঙ্গে স্লোগান লাগাচ্ছে, বন্দে মাতরম, ভারত মাতা কি জয়।

    স্লোগানটা আমি একা শুনতে পাই নি, আমার পাশ দিয়ে মিছিলের যে অংশটা চলে যাচ্ছিল, তারাও শুনতে পেয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে তালির রিদমটা জোরদার হয়ে গেল – আরে এবিভিপি, কাহে সো ক্রিপি? আরে এবিভিপি, কাহে সো ক্রিপি?

    ভারতমাতার সন্তানেরা একেবারে ফুস্‌ হয়ে গেল। মিছিল এগোতে থাকল, আমরা ঢুকলাম আর্টস ফ্যাকাল্টির চত্ত্বরে। সেখানে তখন মেলা বসে গেছে। হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী। মাথা গুণে শেষ করা যাচ্ছে না। চত্বরের মাঝে বিবেকানন্দের মূর্তির নিচে তখন চলছে বক্তৃতা। বক্তব্য রাখছেন যাঁরা, তাঁদের কাউকেই আমি চিনি না, তার মধ্যে একজনকে চিনলাম, তিনি দিল্লি ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর (DUTA) প্রেসিডেন্ট নন্দিতা নারায়ণ। হাসতে হাসতে বলছিলেন, এই এবিভিপির ছাত্ররা, এরাও তো আমার ছাত্রই, সন্তানতুল্য, বলতে বাধ্য হচ্ছি, এদের ইম্যাজিনেশন পাওয়ার বড় কম। এরা দেশপ্রেমী আর দেশদ্রোহীর বাইরে কিছুই বোঝে না, যে কোনও বিষয় নিয়ে এদের সামনে আনলে এরা সেটাকে এই দুভাবেই বিচার করার চেষ্টা করে, এর বাইরে এরা কিছুই বোঝে না, বুঝতে চায় না।

    আরেকটি ছেলে, বোধ হয় আইসা বা অন্য কোনও দলের সম্পাদক, সুন্দর মার্জিত বক্তব্যে জানিয়ে গেল তার প্রতিবাদ, বার বার বলল, ওরা মারপিটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, কিন্তু আমরা মারপিটে যাবো না, আমরা ওদের বার বার আলোচনায় ডাকব, ওরা আমাদের আলোচনায় অংশ নিতে বাধা দিলেও আমরা ওদের আলোচনায় অংশ নিতে ডাকব। আর সবার আগে আমরা সব্বাই মিলে ওদের জানিয়ে দেব, এবিভিপি, যতই গায়ে হাত তোলো, আমরা তোমাদের ভ-য় পা-ই না। মুহূর্তে কয়েক হাজার জনতার ঠোঁট নড়ে উঠল একসাথে –

    নহী ডর কিসি কা আজ
    নহী ডর কিসি কা আজ
    নহী ডর কিসি কা আজ, এক দিন –
    ও হো, মন মে হ্যায় বিশ্বাস
    পুরা হ্যায় বিশ্বাস,
    হম হোঙ্গে কামিয়াব, এক দিন।













    আস্তে আস্তে কিছু চেনা মুখের দেখা পাচ্ছি এবারে। শুদ্ধব্রতদার সাথে আগে ফোনে কথা হয়েছে, ভার্চুয়ালি আমরা যুক্ত, সামনাসামনি আলাপ হয় নি কখনও, আজ ছোট করে আলাপচারিতাটা সেরে নিলাম। সামনে দেখলাম শেহলা এসেছে, কানহাইয়া এসেছে, উমর খালিদকে দেখতে পেলাম না যদিও, বিবেকানন্দ মূর্তির নিচে তখন বক্তৃতা শুরু করেছেন যোগেন্দ্র যাদব। এই মানুষটি যখন কথা বলেন, মুগ্ধ হয়ে শুনতে হয়।

    কী বললেন উনি? আমি আর কী বলব? নিজেই শুনে নিন।



    এর পরে বললেন ডি রাজা, সীতারাম ইয়েচুরি, সমস্ত তো শোনার সময় হয়ে উঠল না – শেহলার বক্তৃতাও শোনার ইচ্ছে ছিল, শুনে আসা গেল না – আমার ফেরার সময় হয়ে এল, আর বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। ধীরে ধীরে পিছিয়ে এলাম। ভিড় তখন ছড়িয়ে গেছে আর্টস ফ্যাকাল্টির চত্বরে। বেশির ভাগ জনতাই তখনও বক্তৃতা শুনছে, কিন্তু ইতিউতি ছেলেমেয়েরা গোল হয়ে বসে গান ধরেছে –

    অ্যায় শ্‌শালা –
    আভি আভি হুয়া য়কীঁ,
    কী আগ হ্যায় মুঝ মে কহিঁ
    হুয়ি সুবহ্‌, ম্যায় জল্‌ গয়া
    সুরজ কো ম্যায় নিগল গয়া
    রু-ব-রু রোশনি …

    আরেক দল তখন রঙীন চক বিলি করছে ছেলেমেয়েদের মধ্যে, আর ছেলেমেয়েরা তাদের মনের কথা উজাড় করে লিখছে চত্বরের মেঝেতে। আর খুশিতে মাথা নাড়াচ্ছে রঙীন ফুলের দল।














    ফিরে আসার পরে খবর পেলাম, জমায়েত ভাঙার পরে আইসার দুজন ছাত্রকে গেটের বাইরে একলা পেয়ে বেদম পিটিয়েছে এবিভিপির দুই কীর্তিমান। প্রশান্ত আর বিনায়ক। পুলিশের সামনেই। পুলিশ অবশ্য হস্তক্ষেপ করায় বেঁচে যায় ছেলেদুটি। এবিভিপির এই দুই গুণ্ডাকে পুলিশ আপাতত গ্রেফতার করেছে, আর নিজেদের মুখ বাঁচাতে এবিভিপি তাদের পার্টি থেকে বহিষ্কৃত করেছে আজ।

    দিনের শেষে, এমন একটা ঢেউয়ের সাক্ষী হতে পেরে নিজেরই খুব ভালো লাগছিল। আমি নিজেই গুণগুণিয়ে গান গাইছিলাম, আমার খুব প্রিয় গান –

    স্লোগান দিতে গিয়ে, আমি ভিড়ে গেলাম দলে,
    গলায় তেমন সুর খেলে না,
    হোক বেসুরো পর্দা বদল,
    তবুও আমি সবার সাথে মিলিয়ে দিলেম গলা –
    ঘুচিয়ে দিয়ে একলষেঁড়ে চলা।
    জুটলো যত আমার মত
    ঘরের খেয়ে বনের ধারে মোষ তাড়ানোর উল্টো স্বভাব
    মোষ তাড়ানো সহজ নাকি?
    মোষের শিংয়ে মৃত্যু বাঁধা
    তবুও কারা লাল নিশানে
    উশ্‌কে তাকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ে
    স্লোগান।


















    +++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

    গতকাল (৪ঠা মার্চ) দিল্লিতে এরই সূত্র ধরে হয়ে গেল আরেকটি প্রতিবাদ মিছিল। মান্ডি হাউস থেকে পার্লামেন্ট স্ট্রিট পর্যন্ত, সিটিজেন্স প্রোটেস্ট মার্চ।

    বেশি লেখার তো কিছু নেই, ছবিগুলোই সব কথা বলে দেবে। বেঙ্কাইয়া নাইডু সেদিন বলছিলেন না, এইবারে "আজাদী" বললেই সিডিশনের চার্জ লাগিয়ে দেবেন? ... কাল পার্লামেন্ট স্ট্রীটের সমস্ত পিচ রাস্তা ছাত্রছাত্রীরা ভরিয়ে দিয়েছিল আজাদীর স্লোগানে, রঙবেরঙের চক দিয়ে। যেদিকে তাকাও, খালি লেখা "আজাদী", "আজাদী", "আজাদী"।





























































































    এর সাথে শেহলা রশিদের গান, উমর খালিদের বক্তৃতা, সীতারাম ইয়েচুরি, নিখোঁজ নাজীবের মা - আর সেদিন দিল্লি ইউনি-তে যারা এবিভিপির হাতে আর পুলিশের হাতে মার খেয়েছিল তাদের স্পিচ, সব মিলিয়ে রইল এই কোলাজ।


















    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ মার্চ ২০১৭ | ৪৩৪৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পিনাকী | 95.229.73.124 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৯:২২60973
  • না না, সচদা আমি আপনার সাথে এ নিয়ে একমত। ঐ লেখা ও পদ্ধতি ইমম্যাচিওরড। আর আলোচনা বেলাইন করেও লাভ নেই। ঠিক কথা।
  • dc | 132.174.117.71 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৯:৩৩60974
  • $$$ এর প্লেনস্পিক আবার ভালো লাগলো।
  • PM | 116.78.46.31 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ১০:৫৯60975
  • পাই এর উদ্দেশ্যে লেখা কমেন্টগুলো কিছুক্ষন আগে দেখে ইস্তক মাথা জ্বলছে। ওনার অবস্থা কল্পনা করতে পারছি। যেহেতু সব কমেন্টগুলই পুরুষদের দ্বারা--- আরেকজন পুরুষ হিসেবে ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছি।

    শাক্যর লেখাটি অতীব জঘন্য। আশা করি এরপর উনি ওনার এই জাতীয় "শক থেরাপি "তে সংযম দেখাবেন।

    কিন্তু পাই তো পরিস্কার বলছেন উনি লেখাটাকে সমর্থন করছেন না--তার পরেও এতো অসহিষ্ণুতা, নোংরামো কেনো?
  • ৳৳৳ | 127.194.205.149 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ১১:১৩60976
  • স্লোগান দিতে গিয়ে"ই" আমি ভিড়ে গেলাম "গানে"
    ...
    মিলিয়ে দিলাম সবার সাথে মিলিয়ে দিলাম গলা
    ঘুঁচিয়ে দিয়ে একলষেড়ে চলা।

  • Du | 57.184.7.45 (*) | ০৪ মার্চ ২০১৭ ১২:২৭60947
  • বীতশ্রদ্ধ, বিরক্ত, ক্রুদ্ধ, ঘেন্না ধরা সবই ঠিক আছে। কিন্তু খুন খওলার কমে কিছু হয়না আজকাল। না হজরতের নামে শুনলে ওদের আর না হি নিজেদের কোন আরাধ্যের বিষয়ে শুনলে আমাদের। এইটুকু মেনে নিতেই হবে সকলকে। যে এই অনুভুতিটা স্বাভাবিক হলে হঠাত করে জে সুই চার্লি লেখার মানে হয়না । আর এই অনুভুতি মৌলবাদ হলে সেটা সকলের মধ্যেই চারিয়ে গেছে এই মুহূর্তে।

    এই টইতে আর কিছু লিখ্তে চাইছিলাম না কিন্তু মনে হয় না এটা ডুববে বা টইয়ে ফিরবে। এমনকি সিকি ঐ অ`শটা বাদ দিলেও।
  • Supriyo | 24.99.186.243 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০১:১৭60986
  • হুসেন সাব একটি নাঙ্গা মেয়ের কোলে বীনা রেখে সরস্বতী বানান শিল্পের নামে, শাক্যবাবু সারদা কে নিয়ে থ্রিসাম লেখেন শোক থেরাপির নামে, কিছু হারামি পাইদিদি কে নিয়ে পন্ডি লেখে এমনি এমনি বা গায়ের ঝাল মেটানোর জন্য - লজিক ওই এক। 'তেরি মা কি' - দিল্লির লোক বলে বটে, কিন্তু ভাবে তো প্রায় সারা দেশ। আজ অব্দি শুনেছেন, তেরি বাবা কি!!
  • Pi | 57.29.131.104 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৯60987
  • রাজ্যসভা টিভিতে সরোকারে বাকস্বাধীনতা আর দেশদ্রোহিতা নিয়ে একটা ব্যাপক প্রোগ্রাম হচ্ছে। সঞ্চালিকা, জে এন উ র প্রফ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্র্সের ব্য়্যোরো চিফ, মানবাধিকার কর্মীরা সরকারকে পুরো ধুয়ে দিচ্ছেন, আর আর এস এস এর কোন প্রবক্তা যাতা চাট খাচ্ছেন।
    একটু শুনুন প্লিজ।
    এখন ছাত্রছাত্রীরাও চেপে ধরেছে।
  • সিকি | 132.177.175.90 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:১২60988
  • রাজ্যসভা টিভি লাইভঃ

  • nandita | 57.15.0.226 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৮60981
  • এক নারী হিসেবে ঈপ্সিতার হেনস্থার বিচার চাই।তাকে আবার পরামর্শ দি আইনের দ্বারস্থ হবার।
    প্রথম লেখাতেই লিখেছিলাম গুরুচন্ডালি ফেসবুক গ্রূপে ছিলাম না কোনো মন্তব্য করা দূরে থাক,এই সাইটেও নিছক গল্প কবিতা পড়তেই আসা।সেই জঘন্য পোস্ট যখন চোখে পড়েছে এখানেই প্রতিবাদ জানানোর স্পর্ধা রাখি।ভয় পাইনা আমাকে নিয়ে আগত slandering কে।
    আচ্ছা গুরুতে তো ডিসক্লেইমার লেখা লেখকের মতামতের দায় তার নিজের।তাহলে শাক্যজিতের লেখা ডিফেন্স করার দায় আপনারা কেন নিচ্ছেন? ঈপ্সিতার ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ করুন,পুলিশ সার্বিক তদন্ত করুক।
    কোনো প্রকৃত রামকৃষ্ণ ভক্ত নবী কে নিয়ে জঘন্য উক্তি করতে পারে না বলেই আমার বিশ্বাস , এদেরকে আমি রামকৃষ্ণ ভক্ত মানতে অস্বীকার করি,যেকোনো এক্সট্রিমিস্ট দের ঘৃণা করি।যারা এটা করেছে তাদের ও শাস্তি চাই ।
    ও এটা তো আবার আপনাদের চোখে পাতি "ডিপ্লোমেসি" - তা ভাবলে ভাবুন। কিন্তু আমার জোরটা হলো আমি কোনোদিন কোনো ধর্মের মহামানবদের আঘাত করিনি করবো না,আমি এবং আমার মতো অজস্র মানুষ অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছি। ও আপনারা তো "মহামানব" কথাটাকেই অস্বীকার করেন,ভাবাবেগ শব্দটায় হাসেন।লেসবিয়ানইজম একটা ব্যক্তিগত সেক্সুয়াল প্রেফেরেন্স ও পার্সোনাল রাইট ,থ্রিসাম একটা সেক্সুয়াল এক্ট। খারাপ কি ভালো অপ্রাসঙ্গিক,বিন্দুমাত্র প্রমান ছাড়া তিন ঐতিহাসিক চরিত্র কে জড়ান কিন্তু শুধু "এগ্রেসিভ" নয় অপরাধ।লাইক কমেন্ট করেছিলেন ,উদ্ধত গলায় বলছেন ক্ষমা চান না আবার লাইক করবেন তাদেরকেই প্রশ্নটা করি -
    সারদা নিবেদিতা এরাও তো নারী ,এদের কে নোংরা অশ্লীল পোস্টে টেনে আনা কি অপরাধ নয় ? কেউ বলেছেন স্বামীজি ,মা এবং সিস্টার কে জড়িয়ে থ্রিসাম বর্ণনা (কৃপাল বা সুনীলের বইতে মা সিস্টার নিয়ে রগরগে বর্ণনা নেই কিন্তু ) নাকি "শক থেরাপি"- এভাবেই নাকি সমাজ এগোয় । বেশ, ব্ল্যাসফেমি আইন এতে প্রযোজ্য হবে কিনা সেটা তো আইনি বিশারদরা বিচার করুক,তবে এটা জানি বাকস্বাধীনতার সীমা আইনে নির্দিষ্ট ।
    সেই কাদা ছোড়াছুড়িতে অংশ নিই নি আমি এবং আমরা,অগণিত সেকুলার রামকৃষ্ণ ভক্তরা ;আমরাও colateral damage, আঘাত পেয়েছি নোংরা পোস্টে।আমাদের ও বিচার চাইবার অধিকার আছে - সেটাকে ব্যবহার করা আমাদের প্রেরোগেটিভ - তাকে রাষ্ট্র লেলিয়ে দেওয়া বলে না।
  • sinfaut | 133.136.198.18 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৪60982
  • কিন্তু আমার জোরটা হলো .... ধর্মের মহামানবদের আঘাত করিনি করবো না ... অজস্র মানুষ অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছি -

    রবীন্দ্রনাথের গান ছাড়া এমন প্যারাডক্সিকাল জোরের জায়গা আর ক্কোত্থাও দেখিনি।
  • dc | 132.174.97.58 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৪:২০60983
  • খুব বিনীতভাবে একটা বক্তব্য রাখি। "মহামানব" হিসেবে কাকে মানব আর কাকে মানব না সেটা বোধায় কিছুটা ব্যক্তিগত (যদিও "মহামানব" শব্দটাতেই আমার আপত্তি আছে, আমি কাউকেই মানব ছাড়া কিছু মানতে রাজি নই)। তো ধরুন এরকম তিনজন, যাদেরকে আমি দুয়েকসময়ে "মহামানব" ভেবে ফেলতেও পারি, তাদের সম্বন্ধে এক্কেবারে প্রমান ছাড়া একটা স্টেটমেন্ট লিখলামঃ নিউম্যান, টুরিং আর ফেনম্যানের মধ্যে তুমুল ত্রিকোন প্রেম ছিল, যার জেরে ফেনম্যানের দ্বিতীয় স্ত্রী ওনাকে ছেড়ে চলে যান। তা এনাদেরও অগণিত ভক্ত, এরকম কিছু বললে কি ভক্তগণ ব্লাসফেমি আইনের আওতায় এনে ফেলবেন।
  • $$$ | 127.194.219.60 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৮:৩৩60984
  • যেমন আশা করা গেছিল, আলোচনাটা শাক্যজিতের পোস্টই হাইজ্যাক করবে, যেটার রিঅ্যাকশনের ওনারশিপ শাক্যজিৎ একরকমভাবে অস্বীকারই করেছেন, যদিও সেই পোস্টটি ও তার অভিঘাতও সম্পূর্ণ রাজনৈতিকই ছিল।

    ঘোষিত বামপন্থী শাক্যজিত-এর মৌলবাদ সংক্রান্ত অবস্থান এ-রাজ্য বা দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক সংগঠনগুলির সাথে সম্পূর্ণ অ্যালাইনড। হিন্দু-মুসলিম মৌলবাদের প্রশ্নে এরাজ্যে বা দেশে বিজেপি আরএসএস প্রভৃতি ক্ষমতাসীন বা অবিলম্বে ক্ষমতা দখলের জন্য তৈরি হিন্দু মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলিই বামপন্থী এমনকি তৃণমুলী গোষ্ঠীর কাছেও প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। ইসলাম মৌলবাদী কোন গোষ্ঠী যেহেতু ভোটের রাজনীতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে গদি-আসীন হওয়ার মতো থ্রেট হয়ে ওঠেনি, তাদের আক্রমণ বা প্রত্যাঘাত করাটা রাজনৈতিকভাবে এদের কারোরই প্রেফারেন্স নয় - উল্টোদিকে হিন্দু মৌলবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর গোটা রাজনীতিটাই ইসলাম বিরোধীতার ভিত্তিতে (+ আক্রমণাত্মক দেশাত্মবোধ, অতীতগৌরব) প্রতিষ্ঠিত। প্রাত্যহিক ব্যক্তিজীবনে যখনই কেউ মুসলমান ব্যক্তিমানুষ বা জনগোষ্ঠী কে থ্রেট হিসেবে পেয়েছেন সেখানেই হিন্দু মৌলবাদীদের পক্ষে মেরুকরণ তথা দলভারি করা সহজতর হয়েছে। সেখানে রাজনৈতিকভাবে অলাভজনক বলে বামপন্থী বা তৃণমুলী কেউই তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি।

    এইজন্যে মৌলবাদের প্রশ্নে ইসলাম মৌলবাদের বদলে হিন্দু মৌলবাদকে আক্রমণ করার দিকে বেশি ঝুঁকে থাকতে দেখা গেছে শাক্যজিৎ এমনকি সোমনাথ (রায়) কেও, সময়ে সময়ে তা জঙ্গী ইসলামী সংগঠনকে সরাসরি সমর্থনের মাধ্যমেও যা রাজনৈতিকভাবে হিন্দু মৌলবাদের বিরোধিতায় ইসলাম জনসমর্থনকে পাশে পাওয়ার কনসাস বা সাবকনসাস প্রচেষ্টা হিসেবেই চোখে পড়েছে। সে সমর্থন মৌলবাদী ইসলাম গোষ্ঠীর হলেও যেন কিছু যায় আসে না। অথচ এই অ্যাপ্রোচ ইসলাম-মৌলবাদ বিরোধী মুসলমানদের আসলেই দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

    শাক্যজিতের পোস্ট এই রাজনীতির একটা সুস্পষ্ট নিদর্শন। হিন্দু মৌলবাদের রাজনীতিকে আক্রমণ করার একটা নিজস্ব পন্থাবিশেষ। খেয়াল করবেন একই পদ্ধতিতে ইসলাম মৌলবাদীরাও হিন্দু আইকনদের আক্রমণ করে থাকেন। যারা তানিম রাজু বা ফারাবীদের রচনাপদ্ধতি বিষয়ে বিন্দু মাত্র ওয়াকিবহাল, তারা রাজু বা ফারাবীর রামকৃষ্ণ সংক্রান্ত অনুরূপ পোস্ট সম্পর্কেও নিশ্চয়ই জানেন। সুতরাং হিন্দু মৌলবাদীরা যেভাবে মুসলিম মৌলবাদীদের প্রত্যাঘাত করে থাকে, অবিকল একই প্রত্যাঘাত শাক্যজিৎ এই পোস্টের মাধ্যমে নিজের প্রতি আহ্বান করে নিয়েছেন, জ্ঞানত।

    কিন্তু যেভাবে ইপ্সিতা পুরো ব্যাপারটায় জড়িয়ে পড়েন সেটার রসায়ন আবার প্রত্যক্ষ রাজনীতি করার সুবাদে নেওয়া একটা কৌশল বিশেষ। ব্যক্তিকর্মী যেখানে প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী ও সংগঠন দ্বারা আক্রান্ত - বাঁচার উপায় সেখানে : আক্রমণের মুখ সহজতর টার্গেটের মাধ্যমে ভিন্নতর বা ব্যক্তিটির চেয়ে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী সংগঠনের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া। শাক্যজিতের প্রোফাইল বহুল রিপোর্টের ভিত্তিতে ফেসবুক ডিঅ্যাকটিভেট করে থাকুক বা তিনি নিজেই নিজের প্রোফাইলের সাথে লিংকড পরিজনদের সম্ভাব্য আক্রমণের থেকে সরিয়ে রাখতে ডিঅ্যাকটিভেট করে থাকুন, কোনো নতুন প্রোফাইল বানিয়ে সেখান থেকেও এই সংঘবদ্ধ হিন্দু মৌলবাদী আক্রমণের বিরোধীতা লেখার মাধ্যমে, যুক্তির মাধ্যমে করা সম্ভব ছিল। কিন্তু তাতে আক্রমণের মুখ তখনও তাঁর দিক থেকে ফেরানো সম্ভব হত না। এমনকি ইতিপূর্বে জানা তাঁর আইডেন্টিটি বাস্তব জগতের প্রাত্যহিক আক্রমণের থেকে তাঁর পরিজনদের সুরক্ষিত রাখতে পারতনা বলেই মনে হয়। শাক্যজিৎ বিকল্প উপায় নিলেন, ইপ্সিতার মাধ্যমে নিজের বক্তব্য আক্রমণোদ্যত মৌলবাদী মবের সামনে রাখলেন। স্বাভাবিকভাবেই পরিকল্পনামাফিক মবের আক্রমণের অভিমুখ তাৎক্ষণিকভাবে অনেকাংশে ইপ্সিতার দিকে সরে এল। ইপ্সিতা যেহেতু গুরুচণ্ডা৯ প্লাটফর্মটির একটি প্রধাণ স্তম্ভ, ইপ্সিতার মাধ্যমে আক্রমণগুলি রিডাইরেক্ট হয়ে গেল গুরুচণ্ডা৯র দিকে। আক্রমণের পদ্ধতি নিয়ে কথা বলার কোনো মানে হয় না, কারণ আগেও যেমন বলেছি, সামগ্রিকভাবে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কর্মপদ্ধতির কাউন্টার আরো বেশি বিপজ্জনক বিরোধীতার প্রতিজ্ঞাই হয়ত রাখে। শাক্যজিতের ক্ষমাপ্রার্থনা ইপ্সিতার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সেই মব-আক্রমণের অভিঘাতে কোনোভাবে প্রলেপ দিতে পারবে বলে মনে হয় না।

    এই পুরো কৌশল ও প্রথাগত রাজনীতির অনুশীলনের থেকে গুরমেহেরের ঘটনা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে - যেখানে একটি অপরিণত অরাজনৈতিক অকৌশলী বাচ্চা মেয়ের জীবনের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতালব্ধ উপলব্ধির অকপট প্রকাশ সংঘবদ্ধ রাজনীতিকে এই পরিমান সন্ত্রস্ত ও আক্রান্ত বোধ করাতে পেরেছে।
  • রোবু | 55.248.37.247 (*) | ০৫ মার্চ ২০১৭ ১১:৩৬60985
  • এর আগের পোস্টগুলো তাও লজিকাল লাগছিল :-)
  • de | 69.185.236.53 (*) | ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৬:৩২60990
  • গুরমেহেরের লেখা, তাঁর সাহস আর ভাবনাকে কুর্নিশ! এই লেখাটায় শুধু তিনি থাকলেই ভালো হোতো! এতোটুকু একটা মেয়ের ভাবনার ম্যাচিওরিটি দেখে বড়ো আশা হয়!

    যাঁদের পায়ের তলায় সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম নেই - যেমন রবিঠাকুর, নিবেদিতা, স্বামীজী, ফাইনম্যান, আইনস্টাইন, পাড়া-বেপাড়ার আরো বহুজন - তাঁদের কারোরই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে রসালো কেচ্ছা পড়তে অপছন্দ করি! ডিফেন্ড করতে তো এনারা কেউই আসতে পারেন না!

    তাছাড়া মহম্মদকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে রামকৃষ্ণকে পাঁকে টেনে নামানো বা ভাইসি ভার্সা - কোনটাতেই রুচি নেই। নিজে ধর্ম মানিনা, কিন্তু সাধারণের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টে অকারণ আঘাত করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা!

    পাইয়ের ইম্মেডিয়েটলি এই নোংরা পোস্টগুলো নিয়ে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কোনরকম কম্প্রোমাইজ না করে!
  • AR | 195.182.81.54 (*) | ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৭:৪১60992
  • যেহেতু ফেবুগুরু থেকে ব্যান হয়েছি (হেফাজতে) ইসলামের বিরুদ্ধে পোস্ট দিয়ে, তাই দুয়েক কথা এখানেই বলে যাই। শাক্যর পোস্ট আর ইপ্সিতার হ্যারাসমেন্ট বোধহয় এই আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলনা, জে এন ইউ আর শ্যালা রশিদ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। তো এই চুদিরপুতেদের (যেঁ বা যারা এই আলোচনা শুরু করেছেন) কাছে আমার প্রশ্ন, শ্যালা রশিদ যেঁ আলিগড় ইউনিভার্সিটি থেকে লাথ খেল, টা নিয়ে কেন কথা বলবেন না। আর এই বালের আলবাল ভাট বকিয়েরা, আপনাদের কাছেও একই প্রশ্ন?
  • AR | 47.58.52.81 (*) | ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৭:৪৮60993
  • এখানেও কি এডমিন আছে? পছন্দমত কথা না বললেই ব্যান করে দেয়?
  • Ishan | 180.202.22.2 (*) | ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৮:২৪60994
  • হ্যাঁ। ব্যক্তিগত আক্রমণ, খিস্তিখাস্তা এখানেও অ্যালাউড না।
  • AP | 24.139.222.45 (*) | ০৬ মার্চ ২০১৭ ১১:০৩60991
  • আলোচনা অনেকদুর এগিয়ে গেছে, কিন্তু এমন একটা বিষয়ে নিজের সমর্থন বা বিরোধিতাটুকু স্পষ্ট করে জানানো একটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
    প্রথমত ঃ সিকির মূল পোস্ট অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সুলিখিত। গুরমেহরের ওপর আক্রমণ আর ইপ্সিতার ওপর আক্রমণ যে আদতে একই ঘটনার দুটো প্রকাশ সেটা খুব সুন্দরভাবে বোঝানো হয়েছে। এটা শুধু গুরমেহরের প্রতি বা সেই ইস্যুতে দিল্লীর জনগণের প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানানোর পোস্ট ছিল না, তাই আলোচনা যেভাবে এগিয়েছে সেভাবেই এগোনোর কথা ছিল। কিছু কিছু কথা বার বারই বলতে হয় যেভাবে ইপ্সিতা কে বলতে হচ্ছে শাক্যর পোষ্টকে সাপোর্ট করেনি, শাক্যকে বলতে হচ্ছে তার পোস্টটা একটা অলোচনার অংশ, সেটাও দু বছর আগের আর সে জন্য সে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার ক্ষমা চেয়েছে। সিকির পোস্ট এই কথাগুলো বলার সুযোগ করে দিয়েছে।

    দ্বিতীয়তঃ ইপ্সিতার দিকে এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির বিভিন্ন পর্যায়ে বার বার যে কথা মনে এসেছে, হয়তো ইপ্সিতাকেও সে কথা শুনতে হয়েছে যে ও কেন চুপ করে যাচ্ছে না, এই কদর্য কথা গুলো কেন পুনরাবৃত্তি হতে দিচ্ছে। কিন্তু ৪ ঠা মার্চের পোস্টে ইপ্সিতা তার যে অবস্থানের কথা লিখেছে সেটা সত্যিই ভেবে দেখার মত। কদর্য কথায় মেয়েরা 'অসুবিধেয়' পড়বে ভেবেই তাদের দিকে কদর্য কথা ছোঁড়া হয়, যাতে তারা চুপ করে যায়। ঠিক সেই কারণেই যে কোনো ঝামেলায় মেয়েরা জড়িয়ে না থাকলেও খুঁজে খুঁজে বার করা হয় কাকে আক্রমণ করা যায়। যেমন এই ক্ষেত্রে শাক্যজিতের স্ত্রী বা মা বা শাশুড়ি। তাই চুপ করে না গিয়ে এই আলোচনায় পুরোপুরি অ্যাক্টিভ থাকা যে আসলে এই মানসিকতার প্রতি উদাসীন থাকা ইপ্সিতার এই অবস্থান আমার যথার্থ মনে হয়েছে।

    তৃতীয়ত ঃ, বামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ-সারদা দেবী-নিবেদিতা, এই মানুষ গুলোর সম্মানহানি হচ্ছে মনে করে যাঁরা এহেন কান্ড ঘটাচ্ছেন আর যাঁরা পরোক্ষভাবেও সেগুলো সমর্থন করছেন (মোদীর স্টাইলে) ধরে নেওয়া যায় তাঁরা সবাই এঁদের আদর্শে শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু তাঁদের চিন্তা ভাবনার দৈন্য দেখে খুব অবাক ও হতাশ হতে হচ্ছে। শাক্যজিতের সার্কাজম সারদা দেবী বা নিবেদিতার গায়ে লাগছে আর তাঁদের আদর্শে বিশ্বাসী জনগণের আচরণের হীনতা তাঁদের গায়ে লাগছে না ? এঁদের গুরুদের কাছ থেকে এই শিক্ষাই পাওয়ার ছিল ? (রামকৃষ্ণের লাগছে ব্যথা বুঝছে নাকো তারা !) নিশ্চিত ভাবেই 'না'। অর্থাত এঁরা নিজেরা কোনো আদর্শেই বিশ্বাসী নন, স্রেফ সুযোগ পেলে 'ভাবাবেগে লেগেছে' 'ভাবাবেগে লেগেছে' বলে চেঁচিয়ে চারটি গাল পাড়ার লাইসেন্স জোগাড় করে নিজ নিজ খার (ক্ষার ?) মেটাতে আগ্রহী। লক্ষ্য আর উপলক্ষ্য বদলে বদলে যায়, এই আর কি !
  • b | 135.20.82.164 (*) | ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৬60995
  • কোথায়? আলোচনা তো শুরু হয়েছিলো রামজস কলেজ আর উমর খালিদকে নিয়ে।
  • to AR | 174.100.41.2 (*) | ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৫:৩৩60996
  • ভাষা সংযত করুন মহাশয়। প্রশ্ন করুন অবশ্যই। খেউড় করবেন না।
  • Amit Sengupta | 116.51.240.204 (*) | ০৯ মার্চ ২০১৭ ০৬:০০60999
  • pi কে ও অন্যান্যদের,
    World women's day তে রিলিজ হওয়া "Naked"short film টা দেখুন।
    Kalki Koechlin and Ritabhari ।

    Computer এর পেছনে লুকিয়ে থাকা কমেন্টওয়ালাদের বিরুদ্ধে।
  • সাতমার পালোয়ান | 131.241.218.132 (*) | ০৯ মার্চ ২০১৭ ০৬:০৭61000
  • আপাতত, এইটেই রেলিভ্যান্ট টই। এখানেই দিয়ে রাখি। অর্ণবের রিপাবলিক নিয়ে কিছু আর্টিকল "দ্য ওয়্যার"-এ বেরিয়েছিলো। রাজীব চন্দ্রশেখর (অর্ণবের বস) সেগুলো ব্যান করার জন্যে কোর্টে যায় - যার ফলে সেই আর্টিকলগুলো তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু যেহেতু এটা ইন্টারনেটের দুনিয়া, সেই আর্টিকলগুলো ওয়েবক্যাশ থেকে তুলে চেক রিপাবলিকের একটা আর্কাইভে স্টোর করে রেখেছে। ব্যান করবো বল্লেই করা যায় না - এইটা রাজীব আর অর্ণব ভুলে গেছিলো। তিনটে আর্টিকলের লিংক দিলাম - প্রথমটা যেখানে এই ঘটনার কথা বলা আছে, আর বাকি দুটো ওই দুটো আর্টিকলের লিঙ্ক।

    http://www.altnews.in/dear-rajeev-chandrasekhar-articles-wanted-banned-archived-czech-website-now/

    Arnab's Republic, Modi's Ideology - http://archive.is/ayuDs

    In Whose Interests Do Our Soldiers March - https://archive.is/ODFIC
  • RA | 203.15.16.4 (*) | ১৩ মার্চ ২০১৭ ০৫:০৮61001
  • আমি খিস্তিবাজ, ফ্যাতাড়ুও বলা যায়, তোরা চুতমারানি দের সখী সখী ভাব গলিয়ে দেবার জন্যই এখানে ঢুঁ দিলাম। ইশান বালটা কে? সৈকত বন্দ্যো? আমাকে ব্যান করেছিস, এখানে তোদের ভদ্রলোকত্বে গু দিয়ে ঢিল মেরে যাব, কথা দিলাম।

    শাক্য বালটা ভালো লেখে, আজকেও ভাং খেয়ে বামইস্লামিক পেয়ার নিয়ে লিখেছে। তবে ব্যাটা একচক্ষু হরিণ, এই বালের আঁতেল মার্কা, তোরা জেরম। তবে মনে রাখিস, একচক্ষু হরিণেরা লাথ খেতে খেতে ডাইনোসর হয়ে যায়।

    মহাকাশ হতে গুখেগো শকুন হাগিয়া যাবে তোদের গায়
    গুরুচণ্ডালী শুধু বাটপাড় নয় তদুপরি অসহায়।
  • to RA | 174.100.41.2 (*) | ১৪ মার্চ ২০১৭ ০৭:২০61002
  • আবার খেউড়!! কি বলতে চাইছেন স্পষ্ট করে লিখে দিন না ভাই। খামোখা গালাগালি করছেন কেনো। বক্তব্য রাখুন।
  • dc | 132.174.106.121 (*) | ১৪ মার্চ ২০১৭ ০৮:০৯61003
  • মহাকাশ থেকে হাগলে সে তো রিএন্ট্রি স্টেজেই জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যাবে, মাটিতে আমাদের গায়ে পৌঁছবে কিকরে?
  • শঙ্খ | 57.15.4.175 (*) | ১৪ মার্চ ২০১৭ ০৯:৩১61004
  • আরেকটি টেকনিকাল কোস্নো : মহাকাশে ওড়া কসমিক শকুন, সে গু পায় কিকরে? ভগবানের গু?
  • | 52.106.11.171 (*) | ১৪ মার্চ ২০১৭ ০৯:৫০61005
  • সম্পুরক প্রশ্ন
    শকুনের স্বাভাবিক খাদ্য তো গু নয়। তাহলে মহাকাশে গিয়ে, যেখানে গু পাওয়াই মুশকিল, শকুন হঠাত ফুড হ্যাবিট বদলে ফেলল কেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে প্রতিক্রিয়া দিন