এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রোজাভা বিপ্লব আপনাকে স্বাগত জানায়

    Debabrata Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ নভেম্বর ২০১৫ | ৬৯৬৫ বার পঠিত
  • 'The Rojava Revolution is the Paris Commune under German siege ,Mardrid during the Spanish civil war,and Stalingrad during the second world war'

    জর্জ অরওয়েল তার স্পেনের গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা ‘ Homage to Catalonia’ শুরু করছেন এইভাবে ‘ In the Lenin Barracks in Barcelona, the day before I joined the militia,I saw an Italian militiaman standing in front of the officer’s table.’। ফ্যাসিবাদি বিরোধী ১৯৩৬-১৯৩৯সালের সেই লড়াই হাজারো স্বাধীনতাকামী মানুষের সাথে পেয়েছিলো অরওয়েল, হেমিংওয়ে ,নরমান বেথুন এমনকি ইরানের প্রধানমন্ত্রীর মত ব্যাক্তিত্বকেও । ৫৩ টী দেশের গনতন্ত্রকামী ছাত্র যুবা শ্রমিক লেখক শিল্পীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক ব্রিগেডের অপ্রশিক্ষিত সদস্যদের স্পেনের কমরেডের সাথে ভাঙ্গা রাইফেল নিয়ে যে জীবনপন লড়াই তা ছিল এক বৈকল্পিক সমাজব্যবস্থা রক্ষা সাথে ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রতিরোধ । স্পেনের জনতার সেই গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই , নারী স্বাধীনতার বৈপ্লবিক পথ এবং বৈকল্পিক সমাজব্যবস্থার স্বপ্ন ফ্রাঙ্কোর ফ্যাসিবাদী শক্তি দমন করেছিলো এক রক্তাক্ত পথে। ‘ Homage to Catalonia’ সেই ইতিহাসের এক অনন্য দলীল।

    স্পেনের সেই অসমাপ্ত বিপ্লবের প্রায় ৭৫বছর পরে আমাদের বর্তমান সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিপ্লবী ‘আবদুল্লা ওচালানের’ ( Abdullah Öcalan) 'ডেমোক্রাটিক কনফেডারিলিসম’ বা ‘রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্র’ তত্বর ভিত্তিতে সিরিয়া তুরস্কের সীমান্ত অঞ্চলে বর্তমানে ঘটে চলছে এক অভূতপূর্ব ‘সামাজিক বিপ্লব ‘ । একদিকে তুরস্কের ফ্যাসিবাদী সরকারের তীব্র অসহযোগিতা, কঠিন 'এমবারগো’র খাড়া প্রাচীর অন্যদিকে ধর্মান্ধ ইসলামিক স্টেট (ISIS ) এর চূড়ান্ত বর্বরতা এবং প্রত্যহ সম্মুখ যুদ্ধ ,একই সাথে পেছনে ফেলে আসা হাজারো বছরের চূড়ান্ত রাষ্ট্রীয় দমনের ইতিহাস । এই চরম প্রতিকূলতা এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের বীভৎসতার মধ্যেও ৫০লক্ষের অধিক কুরদ এবং অন্যান্য জনজাতি ১৮৪০০ স্কোয়ার কিলোমিটারের এক বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আবদুল্লা ওচালানের প্রদর্শিত পথে ২০১২ সাল থেকে গড়ে তুলছেন ‘ রাষ্ট্রহীন গণতন্ত্রের ‘ এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ‘ Rojava Revolution”। আমাদের বর্তমান সময়ের সম্ভবত সবথেকে উচ্চাভিলাষী বৈপ্লবিক এক সামাজিক পরীক্ষা নিরীক্ষা।

    মূলত পশ্চিমের মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা এই অঞ্চল থেকে হাজারে হাজারে মানুষের ইউরোপ অভিমুখে আশ্রয় সন্ধানের ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার বিবরণ, সাথে ইসলামিক স্টেট নামক বর্বর ধর্মান্ধগনের সিরিয়া এবং ইরাকের ঐতিহাসিক স্থানগুলি ধ্বংস করে দেওয়ার সংবাদ, নিরস্ত্র অন্য ধর্মের অসহায় নাগরিকের গণহত্যার বীভৎসতা ,মহিলাদের যৌন দাসী হিসাবে ব্যবহারের কদর্যতার সম্বন্ধে প্রত্যহ অবগত হচ্ছি। মার্কিন এবং রাশিয়ার সম্রাটদের ইসলামিক স্টেট বিরোধী হুমকি এবং মাঝে মাঝে বিমান হানার খবর আমাদের আশ্বস্ত করছে যাক বিশ্বের প্রধান নেতাগণ ইসলামিক স্টেট এর বর্বরতার অবসানে এতদিনে সত্যিই কিছু কাজের কাজ করছেন । অথচ একই সময়ে এই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অভূতপূর্ব যে বিপ্লব সংগঠিত হচ্ছে যা প্রকৃত অর্থে একাধারে ইসলামিক স্টেটের অগ্রগতি রুখে দিচ্ছে পাল্টা সামরিক অভিযানে অন্যদিকে তত্বগতভাবে পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা এবং তথাকথিত গনতন্ত্র ,কম্যুনিস্ট আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রের ধারনা এবং ইসলামিক স্টেট এর নিরঙ্কুশ মুসলিম মৌলবাদ কে আক্রমণ করছে আবদুল্লা অকালনের তত্বের বাস্তব প্রয়োগে তার খবর আমাদের কাছে প্রায় অজ্ঞাত। যদিও রাজনৈতিক ইতিহাস পরিচিতি বিনা উল্লেখে রোজাভা'র মহিলা যোদ্ধাদের চিত্র আমাদের কাছে মাঝে মাঝে পরিবেশিত হচ্ছে বিভিন্ন পত্র পত্রিকার মাধ্যমে । এমনকি বামপন্থী বুদ্ধিজীবী শক্তি যা এখনো কিছুটা জনমত তৈরিতে সক্ষম আশ্চর্যজনক ভাবে তারাও এই অসাধারণ ‘ রাষ্ট্রহীন গণতন্ত্রের ‘ ম্যাসিভ স্কেল এ ঘটে চলা সামাজিক বিপ্লবের বিষয়ে পাথরের মত নিস্তদ্ধ ।

    প্যারিস কমিউন টিকে ছিল মাত্র ৭০-৮০ দিন , স্পেনের বিপ্লব তিন বৎসরের কিঞ্চিৎ অধিক , অন্যদিকে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতেতে 'রোজাভা বিপ্লব’ টিকে আছে তিন বৎসরের অধিক সময়। সম্প্রতি রোজাভা তার প্রাথমিক সংবিধানটি বিপুল গণভোটে পাস করেছে -এই সংবিধানের অন্যান্য অনেক বৈপ্লবিক সিধান্তের সাথে অন্যতম বৈপ্লবিক সিধান্ত ‘বাল্য বিবাহ এবং বহুবিবাহপ্রথা নিষিদ্ধ' । আরব মুসলমান প্রধান দুনিয়াতে যা প্রথম এবং অভূতপূর্ব। এই অসাধারণ সামাজিক বিপ্লব , তার সমস্ত প্রতিকূলতা অগ্রাহ্য করে টিকে থাকা , বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ক্রম প্রসার এবং সেই নিয়ে পৃথিবীর সমস্ত বিষয়ে জ্ঞানবান বুদ্ধিজীবী বিশেষত বামপন্থী বুদ্ধিজীবী গনের অদ্ভুত নীরবতা বিষয়ে David Graeber সম্প্রতি তার Gurdian এ প্রকাশিত এক লেখায় বলেছেন ঃ- “Is the world -and this time most scandalously of all, the international left- really going to be complicit in letting history repeat itself?”

    রোজাভা বিপ্লবের প্রেক্ষাপট ঃ- কুরদ লড়াইয়ের ইতিহাস
    A mountain river has many bends.
    —From a Kurdish folk song

    পৃথিবীর সব থেকে দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা কুরদদের এই ধারাবাহিক স্বাধীনতার আন্দোলনের ইতিহাসে এত বাঁক , এত উথাল পাথাল, এত বিশাল জটিলতা এবং এত বিভিন্ন পথ এই দীর্ঘ সময়ে তা অতিক্রম করেছে তাকে ব্যাখ্যা করা প্রায় অসম্ভব । প্রায় 3 কোটির অধিক জনসংখ্যার এই কুরদরা মধ্য এশিয়ার 'নন আরব' রাষ্ট্রহীন এক অদ্ভুত স্বাধীনতা প্রিয় জনজাতি । বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাম্রাজ্য এবং সরকার দ্বারা ব্যবহৃত ,নিপীড়িত এই জনজাতির স্বাধীনতা এবং সতন্ত্রতার লড়াই এর ইতিহাসের সন্ধান আবদুল্লা ওচালান খুঁজে পেয়েছেন সেই সুমেরীয় সভ্যতার সময় থেকে।ভাষা গত এবং এথেনেসিটির দিক থেকে এরা পারস্য বা ইরানিদের জাতিগত ভাই গোত্রের। কুর্দিস্তান বা বর্তমানের সিরিয়া, তুরস্ক ,ইরান এবং ইরাকের সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী এই জনজাতির ছোট ছোট নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা পারস্য, আরব ,গ্রিস এমনকি রোমান সাম্রাজ্যের দ্বারা আক্রান্ত এবং অধিকৃত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে । প্রতিটি সাম্রাজ্যই এই স্বাধীনতা প্রিয় কুরদ জনজাতির বশ্যতা আদায়ে অসমর্থ হওয়ায় নামিয়ে এনেছে আক্রমণ । কুরদ রা ক্রমে দুর্গম থেকে অতি দুর্গম পাহাড়ি এলাকার আশ্রয়ে নিজেদের স্বাতন্ত্রতা বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে দীর্ঘকাল ধরে । কুরদ রা তাই বলেন “the Kurds have no friends but the mountains” ।

    বিভিন্ন সময়ের লড়াই ,আধিপত্য কারী সাম্রাজ্যের দুর্বল হওয়া এবং বিভিন্ন উপায়ে অটোমান সাম্রাজ্যের উত্থানের প্রাক্কালে অবশেষে ১৫০০ সাল নাগাদ কুরদ জনজাতি বর্তমানের কুর্দিস্তান অঞ্চলে এক ধরনের স্বশাসনের স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয় । অটোমান সাম্রাজ্য উনবিংস শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ৩০০-৩৫০ বৎসরের অধিক সময়কালে কুরদ দের এই অটোনমি নিয়ে বিশেষ একটা মাথা ঘামায়নি । কিন্তু ১৮৩০-৩৫ সাল নাগাদ অটোমান সাম্রাজ্য এই স্বাধীন কুরদ এলাকাকে কস্তনাতিনওপোলের অধীনে নিয়ে আসতে ব্যগ্র হয়ে পরে । ছোট খাট যুদ্ধ বিগ্রহ অবশেষে ১৮৪৭ সালে বদর খান বেগ এর নেতৃত্বে কুরদদের এই বিদ্রোহ এক বিশাল যুদ্ধের আকার নেয় । অটোমান সাম্রাজ্য এই বিদ্রোহ দমন করে চূড়ান্ত নির্মমতার সাথে । শুরু হয় ১৭০ বছরের ধারাবাহিক নিপীড়ন এবং কুরদ স্বাধীনতার এক অনন্য আন্দোলনের ।

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৎকালীন তুরস্কের রাজতন্ত্র অনুগামী ‘ইয়ং তুর্কস’ পার্টি পরিকল্পিত ভাবে জনজাতি নিধনের যে অভিযান টি চালায় তা ইতিহাসে 'আর্মেনীয়ন জেনোসাইড' হিসাবে কুখ্যাত । ১০ ‘লক্ষের অধিক আর্মেনীয় হত্যার এই অভিযানের সাথেই চলতে থাকে কুরদ'দের ওপর আক্রমণ । ১৯১৬ সাল থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে প্রায় ৭০০,০০০ র অধিক কুরদ জনজাতি কে সেই সময় বলপূর্বক ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয় । অবশেষে ১৯২০ সালের আগস্ট মাসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্য পরাজিত হওয়ার পর কুরদ দের প্রতি এই দমনের ধারাবাহিকতায় সাময়িক বিরতি ঘটে । পরাজিত অটোমান সাম্রাজ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী পক্ষের সাথে অবমাননামূলক Treaty of Sevres চুক্তি সাক্ষর করতে বাধ্য হয় ।এই চুক্তি অনুসার অটোমান সাম্রাজ্যের তুর্ক প্রধান অঞ্চল গুলি কে বাদ দিয়ে জয়ী পক্ষ নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী বাকি সাম্রাজ্য ভাগ বাঁটোয়ারা করে নেয় ।বালির ওপর দাগ কেটে সীমানা সৃষ্টি হয় বর্তমান আরব দুনিয়ার । আজকের সিরিয়া এবং তার পার্শ্ববর্তী চলে আসে ফ্রান্সের প্রভাবে , ইরাক হয়ে পরে ইংল্যান্ডের অধীন ,আর কুর্দিস্তানের বিসয় টি ছেড়ে দেওয়া হয় এক রেফারেন্ডামের ফলাফলের ওপর । সদ্যগঠিত আর্মেনিয়া, ব্রিটিশ প্রভাবিত ইরাক, ফ্রান্স প্রভাবিত সিরিয়া এবং তৎকালীন খণ্ডিত অটোমান সাম্রাজ্যের অবশিষ্ট অংশ বর্তমান তুরস্কের মধ্যে স্বাধীন কুর্দিস্তানের সীমানা কি হওয়া উচিৎ এ নিয়ে তর্কবিতর্ক চলতে থাকে । ভারসাই চুক্তির অবমাননাকর শর্ত যেমন পরবর্তীতে জার্মান জাতীয়তাবাদ এবং হিটলারের উত্থানের কারণ ঠিক সেইভাবেই Treaty of Sèvres এর অবমাননাকর শর্ত কেমাল আতাতুর্ক এর নেতৃত্বে তুরস্কের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের জন্ম দেয় । ১৯২২ সালে কেমাল আতাতুর্ক এর নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ফলে তুরস্ক থেকে সুলতানেত এর অবসান ঘটে । আতাতুর্কের এই উগ্র জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ফলে ব্যবস্থা পরিবর্তন ব্রিটেন এবং অন্যান্য অ্যালায়েড শক্তি কে বাধ্য করে এক নূতন চুক্তির উপস্থাপনা করতে। এই চুক্তিটিকে আমরা Treaty Of Lausanne হিসাবে জানি। ১৯২৩ সালে সাক্ষরিত এই নূতন চুক্তি অনুসার কুরদদের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ অস্বীকার করে কুর্দিস্তান কে পুনরায় কেমাল আতাতুর্ক এর তুরস্কর সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হয় । Treaty of Sèvres এর মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া স্বাধীন কুর্দিস্তানের স্বপ্ন এবং আপাত শান্তি মাত্র কয়েকবছরের ব্যবধানে Treaty of Lausanne এর মাধ্যমে ডেকে আনে পুনরায় রাষ্ট্রীয় দমন পীড়নের ইতিহাস ।

    চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আতাতুর্ক ৬৫ টি বিভিন্ন ধরনের ডিক্রি জারি করে কুরদ দের অস্তিত্বই অস্বীকার করার জাতীয়তাবাদের নামে এক নিষ্ঠুর দমনের খেলা খেলতে থাকেন। কুরদ অঞ্চলের সমস্ত জনজাতিকে’'পাহাড়ি তুর্ক’ বলে নূতন নামাকরন করা হয় । যে কোন পাবলিক স্পেস, স্কুল কলেজে কুরদিশ ভাষার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় । কুরদ দের উৎসবগুলি রাতারাতি নিষিদ্ধ হয়ে যায় । কুরদিশ বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে নামাঙ্কিত রাস্তা ঘাট,শহর এমনকি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামও বিশুদ্ধ তুর্কীয় নামে পরিবর্তিত করা হতে থাকে । কুরদদের গোষ্ঠীর জমি দখল করে নেওয়া হতে থাকে । কুরদ কমুইনিটি ফান্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়। কুরদিস রাজনৈতিক সংগঠন , কুরদদের প্রতি সহানুভূতিশীল প্রতিষ্ঠান শেষ করার পর্ব চলতে থাকে এক কথায় কুরদ অসিত্বই মিটিয়ে দেওয়ার পর্ব চলতে থাকে । ,Treaty of Lausanne র মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে কুর্দিস্তান কে বর্তমানের সিরিয়া , তুরস্ক ,ইরাক এবং ইরানের মধ্যে চার টুকরো করে দেওয়া হয় এক কলমের খোঁচায়।

    Rojava revolution বর্তমানের যে ভৌগলিক সীমানায় সংগঠিত হচ্ছে সেই সিরিয়া চুক্তিবলে ফ্রান্সের অধীন আধা কলোনি আধা স্বাধীন এক রাষ্ট্র হিসাবে পরিণত হয় । চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার সময় সিরিয়ার জনজাতির ১৮% ছিল কুরদ (বর্তমানে ভারতে মুসলমান জনসংখ্যা ১৪-১৬% ) সিরিয়ার বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সিরিয়ার আরব এবং অন্যন্য জনজাতি ফ্রান্সের আধিপত্যর বিরোধে সংগঠিত করতে থাকেন অসংখ্য ছোট খাটো বিদ্রোহ । সিরিয়ার আরব সম্প্রদায়ের এই বিদ্রোহ দমন করতে ফ্রান্স পরিচিত ডিভাইড অ্যান্ড রুল সাম্রাজ্যবাদী পলিসি অবলম্বনে বিভিন্ন নন আরব ট্রাইব যেমন কুরদ ,খ্রিস্টান ,দ্রুযে এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে লোক জন নিয়ে তাদের সাম্রাজ্যবাদী সৈন্যবাহিনীটি গড়ে তোলে। সিরিয়ার আরবদের মধ্যে সংখ্যালঘু এবং কুরদ বিরোধী মনোভাব গড়ে ওঠার এ এক অন্যতম প্রধান কারন । ১৯৪৬ সালে ফ্রান্সের কবল থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্ত সিরিয়া সাথে সাথে আভ্যন্তরীণ শত্রুদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করা শুরু করে । প্রায় ২০০,০০০ লক্ষের অধিক Kurd দের পরিচয় পত্র কেড়ে নেওয়া হয় ,কুরদ রা হয়ে পরে এক stateless সংখ্যালঘু জনজাতি , রাষ্ট্রীয় মদতে আভ্যন্তরীণ শত্রুদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হতে থাকে । জমি হারা ,নাগরিকত্ব হারা কুরদ এবং অন্যান্য জনজাতি পরিবর্তিত হতে থাকেন দাস শ্রমিকে। কুরদ এলাকার সমস্ত গ্রাম শহর ইত্যাদি নাম বদলে দেওয়া চলতে থাকে ,সামাজিক ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে অন্য এলাকা থেকে আরব বেদুইনদের এনে কুরদদের এলাকায় বসতি গড়ে দেওয়া হয়। আরব বেদুইন দের অঞ্চল প্রধান থেকে পুলিস প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করা চলতে থাকে সাথে উস্কে দেওয়া হতে থাকে কুরদ বিরোধী জাতীয়তাবাদ । ফ্রান্সের দাবাড় বোড়ে হিসাবে ব্যবহৃত কুরদ জনজাতি হয়ে পরে সিরিয়ার আরব সম্প্রদায়ের গণশত্রু । চলতে থাকে কুরদিস সংস্থা এবং প্রথার নিষিদ্ধকরণ ,হাজারো কুরদ নাগরিক এবংট্রাইবাল নেতাদের কে তুচ্ছ অজুহাতে গ্রেপ্তার এবং গুপ্তহত্যার এক মহোৎসব চলে সিরিয়ার স্বাধীনতার পরবর্তী প্রায় একযুগ ধরে ।

    অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের অবশেষে ইরাক ইরান সিরিয়া এবং তুরস্কের নব্য জাতীয়তাবাদী এবং মৌলবাদী সরকারগুলির কুরদ নিপীড়নের মধ্যে এক ধরনের সাজুস্য বর্তমান । নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া , গন উচ্ছেদ , ভাষা ,প্রথা এবং সংস্কৃতির ওপর নিষেধাজ্ঞা । সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন গুলির নিসিদ্ধ্বকরন। ছোট খাট অজুহাতে সামরিক অভিযান ,খেত ,শস্য বোমাবর্ষণ ইত্যাদি । সাদ্দাম হুসেনের ১৯৮৬-৮৯ সাল জুড়ে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগে ১০০,০০০ -২০০,০০০ কুরদ জনজাতির নিধন সম্ভবত দীর্ঘকাল ধরে এই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চলে আসা কুরদ নিপীড়নের সর্ববৃহৎ গণহত্যার উধাহরন । এই দীর্ঘ সময় জুড়ে সভ্য জগত বিশেষত পশ্চিমের শক্তিগুলির ডিপ্লোম্যাটিক নীরবতা ,আশ্চর্যজনক উদাসীনতা সাথে সময়ে সময়ে কুরদ দের উস্কে দিয়ে নিজেদের তেলএর ভাণ্ডারের ওপর দখল এবং আঞ্চলিক স্বার্থ বজায় রাখার জটিল খেলা কুরদ জনজাতি বুঝতে শুরু করে রক্ত এবং নিপীড়নের বিনিময়ে ১৯৭০ দশকের শেষের দিক থেকে । জন্ম হয় Abdullah Öcalan এর নেতৃত্বে কুর্দিস ওয়ার্কার্স পার্টির ।

    কুর্দিস ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠা ঃ- কুরদ আন্দোলনের নূতন গতিপথ

    এই ইতিহাসের মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠা , ২৫ বছরের যুবা আবদুল্লা ওচালান ১৯৭৩ সালে মাত্র ৬জন সাথী নিয়ে এক সংগঠন গড়ে কুরদ প্রশ্ন বিভিন্ন ফোরামে প্রচার করতে থাকেন। সেই সময়ে কুরদ দের আন্দোলনের চেহারাটা ছিল কতকটা আমাদের দেশের ১৯২০-৩০ দশকের ব্রিটিশ বিরোধিতার আন্দোলনের মত । একদিকে কুরদ অভিজাত সম্প্রদায়ের কংগ্রেসি মার্কা আন্দোলন আর অন্যদিকে কিছু বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীর সশস্ত্র আন্দোলন এবং গ্রামের দিকে ট্রাইবাল গোষ্ঠীপতিদের বিছিন্ন সরকার বিরোধী প্রতিরোধ । আবদুল্লা ওচালান এবং তার রাডিক্যাল সংগঠন প্রথমেই এদের বিরোধিতার মুখে পরেন ,কিন্তু ধীরে ধীরে ছাত্র যুবা দের সমর্থন, গ্রামে বসবাস করে কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে লেগে থাকার ফলে সেই সংগঠনের সমর্থন বৃদ্ধি পায় দ্রুত । সে গনসংগঠনের ভিত্তিতে ১৯৭৮ সালে তার ২৩জন সাথী কি নিয়ে গড়ে তোলেন কুর্দিস ওয়ার্কার্স পার্টি(PKK)। ওকালানের সামনে তখন রয়েছে চারটি রাষ্ট্র জুড়ে কুরদ দের ওপর দমন পীড়নের ধারাবাহিকতা। Treaty of Lausanneর মাধ্যমে কুরদ দের সাথে বঞ্চনার ইতিহাস। বিশ্বজুড়ে রুসিয়া লবি এবং আমেরিকা, ন্যাটোর ঠাণ্ডা যুদ্ধের পর্যায় , চীনের ,ভিয়েতনামের প্রতিরোধের ইতিহাস এবং সারা পৃথিবী জুড়ে মাওবাদী গেরিলাযুদ্ধের কৌশলে বিভিন্ন সংগঠনের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা একই সাথে প্রথাগত ট্রাইব ভিত্তিক অকার্যকরী বিচ্ছিন্ন কুরদ সংগ্রামের চিত্র। এই শিক্ষার ভিত্তিতে আবদুল্লা ওচালান পি.কে.কে স্বাধীন কুর্দিস্তানের দাবীতে এক সশস্ত্র গেরিলা সংগঠন হিসাবে গড়ে তোলেন । ওচালানের নেতৃত্বদানের ক্ষমতা ,অসাধারণ বাগ্মিতা ,কম্যুনিস্ট সংগঠন গড়ে তোলার দক্ষতা এবং কুরদদের দীর্ঘকালীন স্বাধীন কুর্দিস্তানের স্বপ্ন সফলের বিশ্বাস্য বিকল্প হিসাবে পি.কে.কে র গ্রহণযোগ্যতা অকালান কে এক জনপ্রিয় সর্বজনগ্রাহ্য নেতা হিসাবে পরিবর্তিত করতে থাকে । কুরদ জনতা ওকালানের নূতন নামাকরন করেন Apo ,কুরদ ভাষায় 'কাকা ‘ । পার্টি গঠনের সাথে সাথেই কিছু হাই প্রোফাইল গেরিলা আক্রমণ ,দক্ষিণ তুরস্ক জুড়ে সফল গেরিলা বোমাবর্ষণের ধারাবাহিকতা এবং সেই সময়ের তুরস্ক জুড়ে সরকার বিরোধী ছাত্র , শ্রমিক আন্দোলন ,কুর্দিস্তানের লড়াই এ প্রথম মহিলা গেরিলা বাহিনি সৃষ্টি পি.কে.কে স্বাধীন কুর্দিস্তানের সংগ্রামকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে যায় যে তৎকালীন তুরস্কের সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রার্থী হতে বাধ্য হয় । কুরদ জনজাতির এক আঞ্চলিক আন্দোলন আবদুল্লা ওচালান এবং পি.কে.কের নেতৃত্বে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষনে সক্ষম হয় ।

    সেই সময়ের তুরস্কে দক্ষিণপন্থি এবং বামপন্থিদের আভ্যন্তরীণ লড়াই। ছাত্র যুবা শ্রমিক দের স্ট্রাইক এবং সরকার বিরোধী আন্দোলন সাথে পি.কে.কের আন্দোলনের ডামাডোলে বিধ্বস্ত অশান্ত তুরস্কে শান্তি প্রতিষ্ঠার বাহানায় ১৯৮০ সালের শেষের দিকে সামরিক অভ্যূথানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে MGK( ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল ) । সমস্ত রাজনৈতিক দল ,ট্রেড ইউনিয়ন ব্যান করে দেওয়া হয় , ভেঙ্গে দেওয়া হয় পার্লামেন্ট এবং সমস্ত সরকারী সংস্থা - মার্শাল ল এবং কারফিউ জারী করে চলতে থাকে এনকাউন্টার এবং ধরপাকর । পি.কে.কের কেন্দ্রীয় কমিটির কিছু নেতা ধরা পড়েন ,মিলিটারি বেশ কিছু আভিযান প্রতিহত করে , পি.কে.কের তুরস্কের দক্ষিণ পূর্বের মুক্তাঞ্ছল মিলিটারি আক্রমণের মুখে পড়ে,তুরস্কের ভেতরে থেকে লড়াই করার বাস্তবিক অসুবিধার কারনে অধিকাংশ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা লেবানন ,সিরিয়া ,পশ্চিম ইউরোপ এবং ইরাকের কুরদ এলাকায় আত্মগোপন করেন । পি.কে.কে তার গেরিলা বাহিনীর শক্তিক্ষয় এড়াতে ট্রেনিং বেস সিরিয়ার উত্তরে তুরস্ক সীমানায় দুর্গম কুরদ এলাকায় প্রতিষ্ঠাপিত করে । এই সময়ে গ্রেপ্তার এড়াতে আবদুল্লা ওচালান লেবাননে তার HQ স্থাপন করে কুর্দিস্তানের সপক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং জনমত তৈরির কাজ করতে থাকেন । মাত্র বছর দুয়েক পূর্বে গড়ে ওঠা পি.কে.কে প্যালেস্টাইন লিবারেসান অরগানাইজেসান ,কমুইনিস্ট লিগ অফ ইরান এবং মার্কসিস্ট আর্মেনিয়ান গেরিলা গ্রুপের সমর্থন পেতে থাকে । একই সময়ে কুরদ দের প্রশ্নর আন্তর্জাতিক পরিচিতির উদ্যেশে পি.কে.কে ইউরোপ জুড়ে তুরস্কের এমব্যাসি দখল এবং বোমাবর্ষণ চালাতে থাকে । এই অবস্থা চলতে থাকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত। অবশেষে ১৯৮৪ সাল নাগাদ তুরস্কে পুনরায় নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় ফিরে আসে , মিলিটারি শাসনের অবসান ঘটে ।নূতন নির্বাচিত সরকার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃউদ্ধারের স্বার্থে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন গুলির চাপে রাজনৈতিক বন্দিমুক্তি এবং হৃত গনতান্ত্রিক অধিকারগুলি ফিরিয়ে দেওয়ার এক প্রক্রিয়া শুরু করে। এই অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক অবস্থানে পি.কে.কে পুনরায় তাদের সিরিয়া/তুরস্কের সীমানায় আশ্রয় গ্রহণকারী গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের তুরস্কের ভেতরে নিযুক্ত করতে থাকে । অতি অল্প সময়ের মধ্যে পি.কে.কে মিলিটারি শাসনের সময় হারানো জমি পুনঃউদ্ধারে সক্ষম হয় ,১৯৮৪ সালের শেষ দিক থেকে শুরু হয় ফুলস্কেল গেরিলা যুদ্ধ । মূলত দক্ষিণ তুরস্কে এই অভিযান সীমাবদ্ধ থাকলেও ইস্তাম্বুলও চলে আসে এই যুদ্ধের আওতায় । একই সাথে পি.কে.কে তার কোর এরিয়া কুরদ প্রভাবিত এলাকায় গেরিলাযুদ্ধের ফাঁকে সামাজিক সুরক্ষা , মহিলাদের ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা , গ্রামের দিকে কুরদিস সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজের মাধ্যমে জনসমর্থনের ভিত্তি বাড়াতে থাকে। ১৯৭৮ সাল থেকে চলে আসা পি.কে.কের নেতৃত্বে এই গেরিলাযুদ্ধ বর্তমানে কারাগার বন্দী আবদুল্লা ওচালান এবং তুরস্ক সরকারের মধ্যে এক সমঝোতার অবশেষে ২০১৩ সালে এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে আপাত এক শান্তির অবস্থানে বর্তমান ।

    স্তালিনবাদি ‘গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’র শুঁয়োপোকা থেকে ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলিসম’র প্রজাপতি তে বিবর্তন ঃ-

    আবদুল্লা ওচালান এবং পি.কে.কের প্রতিষ্ঠাতা অধিকাংশ নেতাগনের কেউই ঠিক ডাই-হার্ড কম্যুনিস্ট ছিলেন একথা বলা যাচ্ছেনা । তাদের স্বপ্ন ছিল স্বাধীন কুরদিস্তান প্রতিষ্ঠা, পথ ছিল সশস্ত্র আন্দোলন । সময়ের দাবীতে এবং তৎকালীন সারা পৃথিবী জুড়ে চলে আসা বিভিন্ন মাওবাদী গেরিলা সংগঠনের অনুসরণে আবদুল্লা ওচালানের ব্যক্তিত্বশীল নেতৃত্বে অন্যান্য সব কম্যুনিস্ট পার্টির মতোই 'গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’র স্তালিন বাদী পলিটব্যুরো ,কেন্দ্রীয় কমিটি ইত্যাদি ছকে বাঁধা পথেই পি.কে.কে গড়ে ওঠে । তৎকালীন তুরস্কে আরও ছোট ছোট লেনিনপন্থি ,ট্রটস্কি পন্থি , অ্যানারকিস্ট এমনকি টিটো পন্থী দলগুলির উপস্থিতি থাকলেও আবদুল্লা ওচালানের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা ,সবল সংগঠন ,গেরিলা যোদ্ধা সংগ্রহের এবং কুর্দিস্তানের দুর্গম পাহাড়ে তাদের মিলিটারি ট্রেনিং দেওয়ার নেটওয়ার্ক , বিপুল পরিমাণে মহিলা সদস্যের উপস্থিতি সারা তুরস্ক জুড়েই পি.কে.কে কে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বিরোধী প্রধান মুখ হিসাবে অতি দ্রুততার সাথে প্রতিষ্ঠা করতে থাকে । ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯৭ সালের অন্ত্যভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় জুড়ে তুরস্ক, লেবানন ,সিরিয়াতে বসবাস করে 'গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’র কঠিন পার্টি ডিসিপ্লিনের স্তালিন বাদী পন্থা অনুসরণে ওচালান কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠার সশস্ত্র আন্দোলন পরিচালনা করেছেন । সেই ডিসিপ্লিন এতটাই কঠিন ছিল যে পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ,দীর্ঘদিনের সহকর্মী এবং একই সাথে অকালানের স্ত্রী 'কেশীরে ইয়িলডিরিম' কে তুরস্কের গোয়েন্দা বাহিনীকে তলে তলে পার্টির খবর পাচার করার অভিযোগে পার্টি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ওচালানের সমর্থনেই গৃহীত হয় ।

    সেই সময়ে বিশ্বজুড়ে একই সাথে দু তিনটি ঘটনা ঘটতে থাকে । তুরস্কের অভ্যন্তরে পি.কে.কের মাওবাদী ধারায় সংগ্রামের পদ্ধতি ,অতিরিক্ত বল প্রয়োগ , কখনো সাধারণ নাগরিকের উপর গেরিলা হানা এবং তৎপরবর্তী সরকারী দমনের ধারাবাহিকতা অপেক্ষাকৃত লিবারেল সমর্থকদের পার্টির প্রতি কিছুটা বিরূপ করে তোলে । পি.কে.কে.র আন্দোলনের ফলে কুরদদের প্রশ্ন সারা বিশ্বে আলোচিত এবং তুরস্ক সরকারের মানবধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি দেশের ভেতরে এবং বাইরে আলোচ্য বিষয় হিসাবে উঠে এলেও অনাবশ্যক হিংসা বিদেশী সমর্থকদের মধ্যেও বিরূপ মতামতেরও সৃষ্টি করতে থাকে ।

    ন্যাটোর বৃহৎ সহযোগী তুরস্কের এবং আমেরিকার চাপে পি.কে.কে সন্ত্রাসবাদী সংস্থা হিসাবে ঘোসিত হয় । ব্যাঙ্ক একাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয় । ওচালান তখন সিরিয়াকে কেন্দ্র করে তার সংগ্রাম টি পরিচালনা করছেন , তুরস্ক সরকার সিরিয়া কে এই বলে হুমকি দেয় যে ওচালান কে বহিষ্কার না করলে ফল ভালো হবেনা। সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সম্ভাবিত যুদ্ধ এড়াতে আবদুল্লা ওচালান রুসিয়াতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন ।আবদুল্লা ওচালানের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন রুশ পার্লামেন্ট ২৯৮-০ ভোটে পাস করলেও তুরস্কের এবং আমেরিকার চাপে রুসিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়েলেতসিন প্রেসিডেন্সিয়াল ভেটো প্রয়োগে আবদুল্লা ওচালানের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেন । ওচালান রুসিয়া পরিত্যাগ করে ইউরোপে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন । রুসিয়ার এবং সমাজতান্ত্রিক ব্লকের প্রায় অবলুপ্তি,চীনের পুঁজিবাদী পথ অবলম্বন, মার্কসবাদী তত্বের অবলম্বনে প্রলেতারিয়েট ডিক্টেটারশিপ রাষ্ট্রের সীমাবদ্ধতা ,স্তালিন পন্থী কঠিন কমিউনিস্ট স্ট্রাকচারের কর্তৃত্বশালী আচার তাকে ধীরে ধীরে মার্কসবাদী পথের মাধ্যমে কুরদ প্রশ্ন সমাধানের সফলতা অর্জন আদৌ সম্ভাব্য কিনা এ বিষয়ে ভাবাতে থাকে ।একই সাথে প্রায় ২০ বছর ধরে চলে আসা গেরিলাযুদ্ধের ফলে প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষের প্রানের বিনিময়ে অর্জিত সফলতার হিসাব এবং যে কুরদ স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যেশে ১৯৭৮ সালে তিনি তার পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা আদৌ মাওবাদী গেরিলাযুদ্ধের পথে অর্জন করা সম্ভব কিনা এবং সর্বোপরি কুরদিস সমস্যার অন্য কোন উপায়ে সমাধান সম্ভব কিনা এই সব প্রশ্ন ওচালানকে ভাবাতে থাকে।ওচালান নিষিদ্ধ পি.কে.কের গঠনতন্ত্রের এক আমূল বিকেন্দ্রীকরনের সাথে সাথে গন আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্যেশে এবং লিবারেল সমর্থকদের একজোট করার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল গড়ে তোলেন । পি.কে.কে স্তালিনবাদি খোলস মুক্ত হতে থাকে ।

    সেই সময় তুরস্ক বা সিরিয়ার সীমান্ত থেকে হাজারো মাইল দূরে মেক্সিকোতে ১৯৯৪ সালের ১লা জানুয়ারি NAFTA ( নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) সাক্ষরিত হয় । এই চুক্তি অনুসার মেক্সিকোর বাজার, চাষিদের জমি উৎপাদিত দেশীয় শস্য সমস্ত কিছু আমেরিকা এবংবাকি স্বাক্ষরকারী দেশের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় । চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার দিনেই এক অজানা সংগঠন Zapatista National Libaretation Armyর ( EZLN) হাজারো সশস্ত্র মায়া আদিবাসী গেরিলা মেক্সিকোর প্রধান শহর , জেলা শহর আঞ্চলিক এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে । zapatista এক নূতন ধরনের মুক্তির লড়াই , মায়া আদিবাসী সমাজের স্বয়ংশাসন প্রতিষ্ঠা করার এই যুদ্ধ বিভিন্ন রাজনৈতিক ধারার মিশ্রণে এক নূতন ধরনের বামপন্থী চিন্তার ফসল । Zapatista দ্রুত দক্ষিণ মেক্সিকোর জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিজেদের স্বয়ংশাসন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন কোর্রতে সক্ষম হয় । ‘they dont want to sieze power. This is something new .They want to create a democratic process that all Mexicans take part in .They want recognition of indegenious culture , history and autonomy ‘ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিহীন ,পার্টির কন্ট্রোল বিহীন ,পাল্টা রাষ্ট্র শক্তি তৈরি না করে বিপুল জনতার সায়ত্বশাসন অর্জনের এই সফল বামপন্থী পরীক্ষা ওচালান গভীর ভাবে অনুধাবন করেন । পার্টির দুইদিন ব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিংএ zapatista আন্দোলনের বিস্তারিত বিশ্লেষণ এবং কুরদ আন্দোলন সেই পথে পরিচালিত করা যায় কিনা এ নিয়ে বিতর্ক , আলোচনা এবং দলিল প্রস্তুত হয় । ওচালান তার ইউরোপে বসবাস কালীন মার্কস পরবর্তী বামপন্থী লেখা পত্র এবং কুরদদের প্রশ্নের সমাধানে পড়তে থাকেন বাকুনিন , এম্মা গোল্ডম্যান ,ফকাল্ট ইত্যাদি । চলতে থাকে সোভিয়েত পতনের পর বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আত্মবিস্লেসন । অবশেষে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ কারি তুরস্কের সবথেকে বিপদজনক ব্যক্তিত্ব গ্রিসের সহযোগিতায় উপস্থিত হন কিনিয়াতে । ১৯৯৯ সালে CIAর সহযোগিতায় তুরস্কের গোয়েন্দা পুলিস নাইরোবি এয়ারপোর্ট থেকে ওচালান কে অপহরণ করে নিয়ে আসেন তুরস্কে। ওচালানের এই নাটকীয় গ্রেপ্তার কে সরকারী প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে তুরস্কের সরকার পি.কে.কে এবং কুরদ জনতার আন্দোলনের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার কাজে ব্যবহার কোরতে থাকে অন্যদিকে চলতে থাকে তুরস্কের ইতিহাসে বিগত ২২ বছর ধরে রাষ্ট্রের প্রধান শত্রু আবদুল্লা ওচালানের এক হাই প্রোফাইল বিচার।

    অসম্ভব প্রাণশক্তির অধিকারী অদম্য ওচালান এই অবসরে জেলখানার ১৫’ x১৫’ কুঠুরির অন্ধকারে আত্মস্থ কোরতে থাকেন বাকুনিন , প্রুধোর রাষ্ট্র বিহীন গনতন্ত্রের আইডিয়া। মধ্যপ্রাচ্য এবং ইরাক, ইরান সিরিয়া ,তুরস্কে বিভক্ত কুরদ জনজাতির বাস্তব পরিস্থিতি এবং তার দীর্ঘ আন্দোলনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পারস্পেক্টিভে বিচার কোরতে থাকেন সেই আইডিয়ার বাস্তবসম্মত প্রয়োগের সম্ভাবনা । অবশেষে ২০০০ সালে কারাগারের অন্তরালে ওচালানের পরিচয় ঘটে আমেরিকান অ্যানারকিস্ট চিন্তাবিদ 'মুরে বুকচিন' এর Ecology of Freedom and urbanisation without cities নামক পুস্তকটির সাথে । বুকচিনের পুস্তকটির দ্বারা ওচালান এতটাই প্রভাবিত হন যে তার উকিলের মাধ্যমে জেলের ভেতর থেকে সমস্ত সাথিদের এই বইটি পড়তে অনুপ্রানিত করে এক নোট পাঠান । ২০০১ সালে প্রকাশিত হয় আবদুল্লা ওচালানের প্রথম প্রিসন রাইটিং ‘The roots of civilization ‘। বুকচিনের 'মিউনিসিপ্যালিসিম’ এর দ্বারা প্রভাবিত , মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষত কুরদ দের প্রশ্নের সমাধানে ওচালানের ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলসম ‘ তত্বের প্রথম ডিফেন্স । এই ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলসম ‘ তত্বের তাত্বিক ভিত্তিটি তৈরি হচ্ছে কারাগারের অন্তরালে ৬০০০ বছরের মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস মার্ক্সবাদী দৃষ্টিতে ব্যাখ্যার মাধ্যমে ।

    ‘The roots of civilization ‘ নামক এই দুই ভল্যুম এর আকর গ্রন্থ পর্যায়ের পুস্তকে আবদুল্লা ওচালান মার্কসবাদী বিশ্লেষনে সুমেরীয় সভ্যতার সময়ে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস ,নগর রাষ্ট্রের উৎপত্তি , রাষ্ট্রের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা , পুরুষ প্রধান সমাজের প্রতিষ্ঠা , মধ্যপ্রাচ্যে ইহুদি ,ইসলাম খ্রিস্ট ধর্মের উৎপত্তি এবং পতন থেকে শুরু করে কাপিট্যালের বিস্তার মার্কসবাদী বিশ্লেষনের পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করেছেন । এই অসাধারণ পুস্তকটিকে ৬০০০বছরের ইতিহাসের ব্যাপ্তিতে ওচালানের ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলসম ‘ তত্বের মুল রেফারেন্স হিসাবে আমরা গণ্য করতে পারি । পুরো কুর্দিস্তান আন্দোলনের গতিপথ পরিবর্তন ,সাথে স্তালিন বাদী ‘গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’ নির্ভর এক সক্রিয় গেরিলাযুদ্ধ পদ্ধতিতে আন্দোলনরত পি.কে.কের চরিত্র পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এটি ছিল তার প্রথম ডিফেন্স । স্বাধীন কুর্দিস্তান আরেকটা নূতন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার সশস্ত্র লড়াইয়ের গতিমুখ পরিবর্তিত হয় 'ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলিসম’ বা কুর্দিস্তান এ 'রাষ্ট্রহীন গণতন্ত্র ‘ প্রতিষ্ঠার লড়াই এ । ওচালান তাঁর 'ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলিসম’ পুস্তিকার ভূমিকা তে লেখেন ঃ-

    ‘ The right of self-determination of the peoples includes the right to a state of their own. However, the foundation of a state does not increase the freedom of a people. The system of the United Nations that is based on nation-states has re-mained inefficient. Meanwhile, nation-states have become serious obstacles for any social development. Democratic confederalism is the contrasting paradigm of the oppressed people.’

    অসংখ্য স্বাধীনতাকামী কুরদ জনতা, ওচালানের গ্রেপ্তারের পর তাঁর মুক্তির দাবীতে পুরানো গেরিলাযুদ্ধের টেকনিকে পরিচালিত পি.কে.কের নেতা এবং কর্মীগণ ,পশ্চিমের মিডিয়া সাথে তুরস্কের সরকার আবদুল্লা ওচালানের মত দীর্ঘ দুই দশকের ওল্ড স্কুল গেরিলা যুদ্ধের নেতার এই নূতন তত্বের প্রকাশে বিভ্রান্ত হয়ে পরে । সরকার এবং মিডিয়ার মনে হতে থাকে এ হোল নিজেকে ফাঁসীর কড়িকাঠ এবং পি.কে.কে কে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ওচালানের এক নূতন বুদ্ধিদীপ্ত চাল ।

    আবদুল্লা ওচালানের তত্বের সমর্থনে রচিত দ্বিতীয় ডিফেন্স টি প্রকাশ পায় ২০০৪ সালে ঃ- The PKK and the Kurdish question in the 21st Century। প্রথম পুস্তকটি যদি হয় ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলসম ‘ তত্বের মুল রেফারেন্স তবে দ্বিতীয় পুস্তকটি কুর্দিস্তানের লড়াইয়ে পি.কে.কের ভূমিকা ,সফলতা ,ব্যর্থতা ,আত্মবিস্লেসন এবংপি.কে.কের ভবিষ্যতের লড়াইয়ের দিক নির্দেশ । মাইন্ডলেস ভায়োলেন্স এর পরিবর্তে কুরদ জনতার গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা অর্জন ,রাষ্ট্রের সীমানায় থেকেই রাষ্ট্র প্রচলিত ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া গণতন্ত্রর পরিবর্তে 'ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলিসম’এর ভিত্তিতে জনতার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং গেরিলা মিলিশিয়ার মাধ্যমে তা রক্ষা করার এই দিক নির্দেশ । ওচালান বলেন ঃ- 'Democratic confederalism is based on grass-roots participa- tion. Its decision-making processes lie with the communities. Higher levels only serve the coordination and implementa- tion of the will of the communities that send their delegates to the general assemblies. For limited space of time they are both mouthpiece and executive institutions. However, the basic power of decision rests with the local grass-roots institu- tions.’

    এই ১৬ বছরের দীর্ঘ কারাবাসে আবদুল্লা ওচালান লিখেছেন ৫টি পুস্তক ,দশটির অধিক পুস্তিকা ,অসংখ্য প্রবন্ধ ,চিঠি । ২০০৬ সাল থেকে তুরস্কের সরকার দীর্ঘ ৫বছর তার সাথে প্রকাশ্যে এবং গোপনে কারাগারে কুরদ প্রশ্নে নেগোশিয়েসন চালিয়েছেন ,অবশেষে ওচালানের অধিকাংশ দাবী মেনে ২০১৩ সালে এখনো নিষিদ্ধ সংগঠন হওয়া স্বত্বেও পি.কে.কের সাথে তুরস্ক সরকারের এক শান্তিচুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে । আবদুল্লা ওচালান গত ৪০ বছর ধরে কারাগারের বাইরে এবং ভেতরে কুরদ দের প্রশ্নের সমাধান খুঁজছেন নিরলস আর তার হাতে গড়া পি.কে.কে সেই তত্ব বর্তমানে প্রয়োগ করছে তুরস্ক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।

    ২০০৭ সালের শুরুর দিক থেকে পি.কে.কে তুরস্কের কুর্দিস্তান অঞ্চলে ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলসম ‘ এর তত্বের বাস্তব প্রয়োগ করতে শুরু করে, বর্তমানে তুরস্কের কুর্দিস্তান অঞ্চলের সমস্ত প্রদেশে (Hakkari, Sirnak, Siirt, Mardin, Diyarbakir, Batman, and Van ) 'ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলিসম’এর ভিত্তিতে জনতার ডিসিশন মেকিং অ্যাসেম্বলি বর্তমান , এই সমস্ত প্রদেশে তুরস্ক সরকারের জনতার ওপর বস্তুত কোন প্রভাবই নেই , সরকারী এবং জনতার শাসনের এক সমান্তরাল ব্যবস্থা ক্রমশ তাঁর বিস্তার বাড়াচ্ছে অতি দ্রুত এমনকি নন কুরদ প্রদেশেও । আমাদের কাছে এই আধাবোধ্য ,বিমূর্ত রাষ্ট্রহীন গণতন্ত্রের আইডিয়া , রাষ্ট্রের সীমানায় থেকেই রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সশস্ত্র মিলিশিয়া বজায় রাখা এবং তার ইউনিকনেস 'রোজাভা বিপ্লব’ এর মাধ্যমে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রয়োগের উধাহরনে পরিষ্কার হচ্ছে ধীরে ধীরে , পৃথিবী আশ্চর্য হচ্ছে এই যুদ্ধবিদ্ধস্ত অঞ্চলে এক অদ্ভুত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উধাহরনে ।

    রোজাভা বিপ্লব ঃ- শুরুর কথা

    ২০১১ সালে সিরিয়াতে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ পি.কে.কের কাছে আবদুল্লা অকালানের ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলসম ‘ এর তত্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃহৎস্কেলে প্রয়োগের এক অভূতপূর্ব সুযোগের সম্ভাবনা উপস্থিত করে। তিউনেশিয়া , ইজিপ্ট এ সরকারবিরোধী গন আন্দোলন (পশ্চিমের মিডিয়া যাকে ‘ আরব স্প্রিং’ নামে আখ্যা প্রদান করে থাকে) এবং তার প্রভাবে সিরিয়াতে শুরু হয় ‘আসাদ ‘ বিরোধী শান্তিপূর্ণ গন আন্দোলন । জনতা ১৯৭০ সাল থেকে চলে আসা আসাদ পরিবারের বস্তুত এক পার্টির শাসনের ডিক্টেটরশিপ এর পরিবর্তে তুলনামূলক গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য আন্দোলন শুরু করেন । কিন্তু আসাদ তিউনেশিয়া , ইজিপ্ট ,লিবিয়ার গন আন্দোলনের ফল দেখে শঙ্কিত বোধ করতে থাকেন , ১৫ই মার্চ ২০১১ সালে দামস্কাস এর শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র কামী জনতার মিছিলে আসাদএর বাহিনী গুলিবর্ষণ করে । শান্তিপ্রিয় গনতন্ত্রকামি জনতার আন্দোলন ‘আসাদ’ সরকারের উচ্ছেদ আন্দোলনে পরিবর্তিত হয় । সেই বছরেরই ২৫ এপ্রিল আসাদের বাহিনী আন্দোলন দমন করতে ট্যাঙ্ক কামান সজ্জিত বাহিনী আন্দোলন দমনে ব্যবহার করে ,শুরু হয় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ । ২০১২ সালের মধ্যে সিরিয়ার অর্ধেক ভূখণ্ড চলে যায় আসাদ বিরোধী এবং মুসলিম মৌলবাদীদের হাতে ।

    বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াইরত আসাদবাহিনি যখন দুর্বল তখন ২০১২ সালের ১৯সে জুলাই কোবানে শহরের এক মসজিদে PYD (পি.কে.কে এখনো নিষিদ্ধ সংগঠন, তাই তুরস্কের ভেতরে এবং সিরিয়া তে পি.কে.কে গড়ে তুলেছে বেশ কিছু গন সংগঠন পি.অয়াই. ডি যার অন্যতম ) এবং তাদের মিলিশিয়া বাহিনী সন্মিলিত মিটিং এ সিধান্ত নেয় বিপ্লব শুরু করার এই মোক্ষম সময় । সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী কোবানে শহরে প্রবেশ এবং কোবানে থেকে বেরোবার সমস্ত রাস্তার দখল নেয়। পার্টির নেতৃত্বে এক সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা অনুযায়ী মহিলা এবং সাধারণ নাগরিকগন সরকারী দপ্তর এবং সামরিক ঘাঁটি ঘেরাবন্দি করে । পি.অয়াই. ডি প্রতিনিধিগন আসাদের মিলিটারি অধিকর্তাদের সাথে আলোচনা চালাতে থাকেন -তাদের দুটি শর্ত দেওয়া হয় ১। ব্যারাক এবং শহর পরিত্যাগ করে নিজ নিজ যায়গায় ফেরত যেতে পারেন ২। সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমাদের সাথেও থাকতে পারেন। কোবানের আসাদ বাহিনী যখন উপলব্ধি করে তাদের পক্ষে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য পাওয়া দূর অস্ত তখন অন্যনপায় আসাদ বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করে ব্যারাক ত্যাগ করে। একটাও বুলেট খরচ না করে কোবানে অঞ্চল আসাদ বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় শুরু হয় রোজাভা বিপ্লব। জাজিরা(Cizre) কোবানে এবং আফরিন রোজাভার এই তিনটি cantonএ ১৮৪০০ স্কোয়ার কিলোমিটার জুড়ে গত তিন বছর ধরে প্রত্যহ পরিক্ষিত হচ্ছে আবদুল্লা ওচালানের রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্রের এক অভূতপূর্ব সামাজিক বিপ্লব । অসংখ্য কুরদ এবং মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিপ্রিয় মানুষের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হচ্ছে নূতন পথ আমাদের বুদ্ধিদীপ্ত জগতের বাইরে । জর্জ অরওয়েল স্পেনের বিপ্লবের অভিজ্ঞতা থেকে পরবর্তীতে লিখেছিলেন "But the point to notice is that the people who are in prison now are not Fascists but revolutionaries; they are there not because their opinions are too much to the Right, but because they are too much to the Left. And the people responsible for putting them there are those dreadful revolutionaries at whose very name Garvin quakes in his galoshes – the Communists.” (Spiling the Spanish Beans -Gorge Orwell 1937) বামপন্থী বুদ্ধিজীবীগনের রোজাভা বিপ্লব নিয়ে পাথরের মত নীরবতা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখেনা ।

    ( বেশ কিছুদিন পূর্বে গুরুর ব্লগে 'আবদুল্লা অচালান’ এর এক প্রাথমিক পরিচিতি প্রকাশের পর কল্লোল বাবু ,রঞ্জন বাবু এবং ডাঃ জয়ন্ত দাস মহাশয় আবদুল্লা অচালানের ডেমোক্রাটিক কনফেডারিলিসম’ বা ‘রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্র’র বাস্তব প্রয়োগ বিষয়ে একটু ডিটেল এ লিখতে উৎসাহ প্রদান করেছিলেন । বর্তমানের লেখাটি সেই দিক থেকে পর্ব ২ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে । আমাদের সময়ের সবথেকে উচ্চাভিলাষী বৈপ্লবিক এক সামাজিক পরীক্ষা নিরীক্ষার সাথে পরিচিত হওয়ার এক সামান্য প্রচেষ্টা ,বর্তমান লেখাটির সময় সীমা ২০১২সালের জুলাই মাস রোজাভা বিপ্লব শুরু হওয়ার ক্ষণ পর্যন্ত । ২০১২ পরবর্তী সময় থেকে ২০১৫র কোবানে দখল মুক্ত করার সময়ের বিবরণ এবং রোজাভা কেন এক অসামান্য ঘটে চলা বৈপ্লবিক পরীক্ষা সেই নিয়ে পরবর্তী কোন লেখায় প্রকাশিত করার ইচ্ছা রইল । এই বিষণ্ণ সময়ে রোজাভা বিপ্লব এবং Abdullah Öcalan এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি পরিবর্তনে রোজাভা এক উজ্জ্বল উধাহরন । রোজাভা আমাদের সবল সমর্থনের দাবী রাখে ,রোজাভা কে আমরা স্পেন হতে দিতে পারিনা।) রোজাভা বিপ্লব নিয়ে BBC প্রায় বছর খানেক পূর্বে একটি তথ্যচিত্র প্রস্তুত করেছে লিংক টি সংযুক্ত হলো :-

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ নভেম্বর ২০১৫ | ৬৯৬৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • | 127.194.81.38 (*) | ১৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৪২66514
  • ভীষণ অপরিচিত বিষয়; আমাদেরই চিন্তার দৈন্য সূচীত করে।
    কল্লোল বাবু ,রঞ্জন বাবু এবং ডাঃ জয়ন্ত দাস আশা করি লেখাটি পড়বেন ও সাজেশন দেবেন।
    আমি এখনও পুরোটা পড়তে পারলাম না, কিন্তু দেবব্রতবাবুকে অভিনন্দন। তবে এত অপরিচিত বিষয়ে কিছু লিঙ্ক পেলে সুবিধা হত।
    যেমন দেবব্রত লিখছেন, “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৎকালীন তুরস্কের রাজতন্ত্র অনুগামী ‘ইয়ং তুর্কস’ পার্টি পরিকল্পিত ভাবে জনজাতি নিধনের যে অভিযান টি চালায় তা ইতিহাসে 'আর্মেনীয়ন জেনোসাইড' হিসাবে কুখ্যাত ।” ঠিক তাই কি? আর্মেনিয়ান জেনোসাইড করা ইয়ং তুর্কস ঠিক রাজতন্ত্রী ছিল না মনে হয়। বরং য়্যাবসোলিউট রাজতন্ত্রের বদলে কনস্টিটুশনাল মনার্কি চেয়েছিল। তবে ইয়ং তুর্কস ক্ষমতা পেয়ে তিন ‘পাশা’র চালে জার্মানির সাথে মিলিটারি-মিত্রতা ক’রে খুব যুদ্ধবাজ হয়ে গেছিল, ও আর্মেনিয়ান জেনোসাইড করেছিল, তা ঠিক।
    এইরকম কিছু ব্যাপারে ইতিহাস একসুরে কথা বলবে না হয়ত, কিন্তু তথ্যসূত্র এখন ইন্টারবেটে দেওয়া সোজা, দেবব্রত যদি আরেকটু কষ্ট করেন।
    পুরোটা পড়া এখনও হয়নি, কঠিন ব্যাপার, বিশেষ করে আমার মত মানুষ যারা এব্যাপারে কিছুই জানেন না, তাঁদের পক্ষে।
  • ranjan roy | 192.69.12.136 (*) | ১৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:৩১66515
  • সত্যি কিছুই জানি না। হাঁ করে গিলছি। দেবব্রতকে ধন্যবাদ।
  • debabrata | 192.66.56.87 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ০১:২৬66518
  • অলোক - আপনি ঠিকই বলেছেন বিবিসির ডকুটা বেশ পুরানো অনেক ভুল তথ্যও আছে ,তাও একটি প্রাথমিক ধারনা পাওয়া যায়।
  • কল্লোল | 125.242.168.173 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩১66516
  • ধন্যবাদ দেবব্রতবাবু। খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছি। আমার হৃদয়ের খুব কাছের বিষয়।
  • কল্লোল | 125.185.146.161 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৫৪66519
  • আবদুল্লা অচালানএর লেখা পত্র পড়ার চেষ্টা করবো। ওনার রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্রের দার্শনিক ভিত্তি বোঝার চেষ্টা করবো। কিন্তু আবারও মনে হচ্ছে(ওনার লেখা না পড়েই মনে হচ্ছে) এগুলো মুক্তি পথের দিশা মাত্র। টিঁকে থাকতে গেলে আরও কিছু বিষয়ে স্পষ্ট মত চাই। সেটা নেহাৎই আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রশ্ন।
    দেখা যাক কিছু পাই কি না।
  • alok | 212.142.103.56 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:০২66517
  • আপনি ঠিকই বলেছেন এই অঞ্চলের মহিলা ফাইটার দের ছবি আমি কিছু পত্র পত্রিকা তে দেখেছি ,কিন্তু জানতাম না তারা রজাভা অঞ্চলের আর এটাও জানতাম না ওখানে এইরকমের কিছু একটা ঘটছে , দারুন লেখা ,দুরন্ত সমকালীন বিসয় , পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় থাকলাম । অনেক ধন্যবাদ ।বিবিসির ফিল্ম টা কি বেশ পুরানো
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ১১:২৯66520
  • এই বিষয় নিয়ে লেখা দেখে খুব ভাল লাগল...
  • Debabrata Chakrabarty | 53.251.171.153 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩৭66521
  • কল্লোল বাবু রোজাভার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মডেল বিষয়ে পরে একটা লেখার ইচ্ছা আছে , তবে রোজাভার বিপ্লব বেঁচে থাকার সাথে ইসলামিক স্টেট এর বেঁচে থাকার সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত । যতদিন ইসলামিক স্টেট বেঁচে আছে রোজাভার আর্থ সামাজিক মডেল নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেনা ,বরং রোজাভা এখন ISIS বিরুদ্ধের লড়াই এ ইউরোপের বিশ্বাসযোগ্য মিত্র । ইসলামিক স্টেট শেষ হওয়ার সাথে সাথে রোজাভা টার্গেট হবে ।
    অচালান এবং PYD দুটি স্ট্রাটেজিক সিধান্ত নিয়েছেন ঃ-
    ১। সিরিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করেন নি ।
    রোজাভার সবথেকে বড় canton জাজিরা অঞ্চলে একটি এয়ারপোর্ট এবং শহরের বড় পোস্ট অফিস এখনো সিরিয়ার আসাদ বাহিনীর কন্ট্রোলে, শ পাঁচেক সিরিয়ার সেনা এয়ারপোর্টটি পাহাড়া দেয় - যে কোন সময়ে PYD ঘণ্টা খানেকের এক লড়াইয়ে এয়ারপোর্টটি দখল নিতে পারে কিন্তু এটা যে সিরিয়ারই অঞ্চল সেইটা প্রমাণ করতে পোস্ট অফিস এবং এয়ারপোর্টটি রয়ে গেছে সিরিয়ার সিম্বলিক পাওয়ার হিসাবে । এর ফলে একদিক থেকে রোজাভা আসাদ বাহিনীর এবং সিরিয়ার আসাদ রেজিম এর বন্ধু রাষ্ট্র ইরান এবং রুসিয়ার বিমান হানা এবং ব্যারেল বম্ব এর আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচিয়েছে। দ্বিতীয়ত অচালানএর দ্বৈত ক্ষমতার তত্ব(ডুয়াল পাওয়ার) যে রাষ্ট্রের সীমানায় থেকেও নিজেদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব তার উধাহরন বিশ্বের দরবারে উপস্থিত করছে।( এই মডেল আমাদের কাশ্মীর ভেবে দেখতে পারে )
    ২। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রোজাভা কোন পক্ষ অবলম্বন করেনি
    সিরিয়ার বর্তমান শাসক আসাদ এর স্বৈরাচারী ডিক্টেটরশিপ এর সমর্থন কুরদ দের পক্ষে সম্ভব নয় , কুরদ রা আসাদ রেজিম এর সবথেকে বড় নিপীড়িত জনজাতি , আবার অন্যদিকে আসাদ বিরোধী শক্তি চরম ইসলামি মৌলবাদী তাদেরকেও সমর্থন অসম্ভব । যতদিন ইসলামিক স্টেট কোবানে আক্রমণ করেনি ততদিন রোজাভা নিজেদের গণতন্ত্র বৃদ্ধি ,সিস্টেম প্রতিষ্ঠা এবং সামরিক শক্তি সংহত রাখার এক প্রচেষ্টা চালিয়েছে । ২০১২ সালের জুলাই মাসে বিপ্লব সংগঠিত এবং আসাদ বাহিনীকে সিরিয়ায় কুরদ অঞ্চল থেকে হটিয়ে দেওয়ার প্রায় ১-১/২ বছর পর জানুয়ারি ২০১৪ সালে রোজাভা নিজেদের স্ব শাসনের কথা ঘোষণা করেছে , এই সময় ধরে ‘ডেমোক্র্যাটিক কনফেডারিলিম’
    এর তত্ত্ব অনুযায়ী একদম নিচের স্তর থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার কাজ টি চালিয়েছে প্রায় কারো দৃষ্টি আকর্ষণ না করে ।

    রোজাভা মূলত ‘ women revolution’ -রোজাভার প্রত্যেকটি স্তর ,পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে গ্রামের ক্ষুদ্র সংস্থা পরিচালিত হয় Co-Chair পদ্ধ্বতিতে অর্থাৎ একজন পুরুষ যদি প্রেসিডেন্ট হন তবে একজন মহিলা অবশ্যই ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন এবং উলটোটা , প্রত্যেকটি স্তরে ৪০% মহিলা কোটা বাধ্যতামূলক তা সে মিউনিসিপ্যালিটিই হোক কি পার্লামেন্ট কি মিনিস্ট্রি । রোজাভার ক্ষুদ্রতম canton আফরিন অঞ্চলের সমস্ত অ্যাডমিনিস্ট্রেসানএ বর্তমানে ৬৫% মহিলা। আরব দুনিয়া এমনকি উন্নত দুনিয়াতেও যা অভূতপূর্ব । অচালানের ‘ geneder libarated society’ তত্ব মহিলাদের অংশিদারিত্ব নিশ্চিত করছে প্রতিটি স্তরে ।আর এই ৫০০০ বছরের নিপীড়নের পর মুক্ত নারী তাদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে অস্ত্র হাতে নিয়ে ইসলামিক স্টেট এর সাথে লড়াই করছে প্রত্যহ , তারা জানেন ইসলামিক স্টেট এর অগ্রগতি মানেই পুনরায় ২০০০ বছরের নিপীড়নের অন্ধকার।

    আমাদের এই ফোরামে হোক বা না হোক এই বিষয়ে পর্ব ৩ লেখার আগ্রহ রইল ।
  • কল্লোল | 111.63.202.249 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:২২66522
  • দেবব্রত লিখুন।
    খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছি। আমি ও আমার মতো কিছু মানুষ যারা মার্কসবাদে, বা বলা ভালো মার্কসবাদী সমাজ পরিবর্তনের কায়দা ও মার্কসবাদী সমাজতন্ত্রে আস্থা হারিয়েছে, কিন্তু মার্কসের ধনতন্ত্রের সমালোচনা নিয়ে একমত, তাদের কাছে এখনো পথ হাতড়ে বেড়ানো ছাড়া কিছু নাই। আমার ও আমার মতো অনেকেরই বিশ্বাস পুঁজি ও বাজারের বাইরে অর্থনীতি হয়। কিন্তু সেটা কেমন হয়, তা পুরোনো সামন্ততন্ত্রিক অর্থনীতির মডেলের বাইরে কিছু জানা নেই। মূলতঃ ভোগের জন্য উৎপাদন - এই রকম। তাই আপনার লেখা খুব মন দিয়ে পড়ছি।
    কশ্মীর, উত্তরপূর্ব ভারত, পার্বত্য চট্টগ্রামে রোজাভা বিপ্লব রাস্তা দেখাতে পারে।
  • ranjan roy | 132.180.161.116 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৩৩66523
  • "যতদিন ইসলামিক স্টেট বেঁচে আছে রোজাভার আর্থ সামাজিক মডেল নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেনা ,বরং রোজাভা এখন ঈঈ বিরুদ্ধের লড়াই এ ইউরোপের বিশ্বাসযোগ্য মিত্র । ইসলামিক স্টেট শেষ হওয়ার সাথে সাথে রোজাভা টার্গেট হবে ।"
    --- একেবারে খাঁটি কথা, দেবব্রত।
    কিন্তু পর্ব-৩ নিয়ে লেখা এই ফোরামে নয় কেন?
    হয়ে গেলে আমি অনুরোধ করব অ্যাডমিনদের , যাতে রোজাভা বিপ্লব (তিন পর্ব সমেত) একটি চটি বই আগামী ২০১৭ বইমেলায় প্রকাশিত হয়। একটা কাজের কাজ হবে।
  • Debapam | 53.251.171.153 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৪১66524
  • লেখা টি পড়ে খুব ভালো লাগলো। কুর্দিশ জাতীয়তা বাদ বিষয়ে আমি আগে অবগতি ছিলাম না। মিডিয়া তে কুর্দিশ রা কেবল অত্যাচারিত বলে পরিচয় পেয়েছে। এই লেখা টি চোখ খুলে দিল। যেকোনো বিপ্লব, এই পোস্ট মডার্ন জগতে, সাধারণের নজরে পড়লেও খুব আবছা রয়ে যায়। বায়াস এর ভীতি এবং অত্যাধিক পুথিগত বিদ্যার ফলে জ্ঞানী বেক্তিদের মধ্যে এক অদ্ভূত গোলাকার চিন্তার অভিব্যক্তি দেখতে পাওয়া যায়, যার ফলে তাদের জগত এর মরাল, স্পিরিচুয়াল এবং পলিটিকাল কম্পাস গুলি, পাঠক কে কোনো দিক নির্দেশ করতে অক্ষম হয়ে থাকে। এই লেখা টি ভালো লাগলো কারণ এতে পূর্বে লিখিত অক্ষমতা গুলি নেই। লেখক খুব জটিল কিছু ঘটনার পরিষ্কার এক ছবি তুলে ধরতে পেরেছেন আমাদের মত লেমান দের সামনে। পলিটিকাল লেখা খুব কম লোকে লেখেন, সেগুলিও বেশির ভাগ মাস ভিউ কেই সামনে ধরে লেখা হয়। এরকম লেখা আমার রেডিকাল লেগেছে। আরও নতুন বিষয়ে লিখুন। এই সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
  • ranjan roy | 132.162.198.81 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৫ ১১:০০66525
  • "পলিটিকাল লেখা খুব কম লোকে লেখেন, সেগুলিও বেশির ভাগ মাস ভিউ কেই সামনে ধরে লেখা হয়। এরকম লেখা আমার রেডিকাল লেগেছে। "

    ---হক কথা
  • | 127.194.1.33 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:১৭66528
  • দেবব্রত,
    আপনার লেখা সত্যিই উপযুক্ত মনোযোগ পাচ্ছে দেখে ভালো লাগছে।

    আপনাকে অনুরোধ করেছিলাম কিছু লিঙ্ক দেবার জন্য, না দেবার জন্য অনুযোগ করছি যে তা নয়। কিন্তু কয়েকটা লিঙ্ক আমি পেলাম, সেগুলো কাজের কিনা একটু বলুন।
    ফ্রন্টিয়ার-এর লিঙ্কটা প্রথমে দিচ্ছি, কারণ ভারতে এনিয়ে ইতিবাচক ভাবনা-চিন্তা কিছুমাত্র হয়েছে, সেটাও একেবারে ধুয়ে ফেলা ঠিক হবে নাঃ http://www.frontierweekly.com/। এই পেজের নীচের বামদিকে Bibliothèque এর দ্বিতীয় লিঙ্ক-এর লেখাটি https://www.popularresistance.org/this-one-small-book-explains-the-inspiring-rojava-revolution/-- একেবারে সাম্প্রতিক লেখা পুস্তক-সমালোচনা, যদিও ফ্রন্টিয়ার-এর জন্য এক্সক্লুসিভ লেখা নয় বলেই মনে হল।

    @কল্লোল-এর কাছে ফ্রন্টিয়ার-এর ব্যাপারটা সিগনিফিক্যান্ট হতেও পারে।

    Meredith Taxএর একটা ভাল লেখা পাচ্ছি এখানেঃ https://www.dissentmagazine.org/online_articles/the-revolution-in-rojava

    এছাড়া কিছু ছড়ানো-ছেটানো লেখা পাচ্ছি। সব বামপন্থীরা যে ভাল কথা বলছেন রোজাভা নিয়ে তা অবশ্যই নয়। এনার্কিস্টরা মোটের ওপর খুশি, তবে সবাই নন, যেমন https://libcom.org/library/grim-reality-rojava-revolution-anarchist-eyewitness-এ মতভেদ বেশ তীব্র। আবার অনেকে বেশ ইতিবাচক ভাবেই দেখছেন, যেমন-- http://anarchism.pageabode.com/andrewnflood/resources-rojava-revolution-kurdistan-syria

    দেবব্রত, এই বইটা A Small Key Can Open A Large Door: The Rojava Revolution পাওয়া যায় নাকি? মনে তো হয় আমাজন-এ মিলবে। বই মানেই অবশ্য একটু পুরনো কথা। যাকগে, আপনি লিখুন, এই নিয়ে বাংলায় আদৌ সীরিয়াস চর্চা দেখে থাকলে গুরু-জনেরা জানাবেন। আর এনিয়ে বই করার আইডিয়াটার সমর্থন রইল, @ ranjan roy।
  • Debabrata Chakrabarty | 213.147.88.114 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:৪৭66529
  • জ আপনি অনেক গুলোই দেখেছেন তবুও এগুলিও দেখতে পারেন ঃ-

    ১। PKK এর ইংরাজি ওয়েবসাইট দেখুন ওচালানের অনেক প্রবন্ধ পাবেন ।
    ২। ওচালানের ঃ- তিনটি পুস্তিকা ‘ডেমক্রাটিক কনফেদেরালিস্ম’ PKK এবং womens ইস্যু অনলাইনে PDF পাবেন তবে মুল বই গুলি পাওয়া যায়না । প্রথম প্রিসন রাইটিং আমার কাছে আছে -আমি ফটোকপি করে PDF দিতে পারি।
    ৩। PYD ওয়েবসাইট দেখুন এবং PYD কো চেয়ারম্যানের টুইটার ফলো করুন প্রতিদিনের খবর পাবেন ।
    ৪। উইকির রোজাভা পেইজ এর ভেতরে ঢুকুন
    ৫। আর দেখুন ঃ- লায়ন্স অফ রোজাভা ফেসবুক পেইজ

    এছাড়াও আমি যেটা ফলো করি তা হোল kurdtribune & Rojava Report।
    বামপন্থীদের একটু নাক সিটকানোর কারন ১। ওচালানের মার্ক্সবাদী মোল্ড থেকে বেরিয়ে আসা ২। কিছু যে হতে পারে সে বিষয়ে হতাশ তাঁর থেকে সিনিক টাইপ ইত্যাদি । এই লেখাটি লিখতে আমি অনেক প্রবন্ধ ,অচালানের নিজের লেখা , PKK ওয়েবসাইট , ইউটিউব , roar ম্যাগাজিন Rojava Report আরও মনে হয় গোটা পঞ্চাশেক লেখা পড়েছি তাঁর মধ্যে আপনি যে গুলো উল্লেখ করেছেন সেগুলোও -কিন্তু ফ্রন্টলাইন টা পরিনি । ২০১৪র সেপ্টেম্বর থেকে ইসলামিক স্টেট কোবানে দখল করার এবং PYG/PYJর প্রতিরোধের পর রোজাভা পশ্চিমের নজরে আসে তাই এখন যা পাবেন তা ওই সময়ের পর । অধিকাংশ সামরিক দিক নিয়ে গল্প ফাঁদতে ব্যস্ত কিন্তু আসল সামাজিক পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং ওচালান উল্লেখিত থেকে যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনি পরেছেন এবং খুঁজেছেন - আমার জানা বাঙ্গালাতে এ বিষয়ে কেউই লেখেননি -নিশ্চয়ই কেউ লিখবেন আগামীতে । জ A Small Key Can Open A Large Door: The Rojava Revolution বইটি আমার কাছে আছে কিভাবে পাঠাব বলুন (ফেরত দেওয়ার শর্তে)
  • Debabrata Chakrabarty | 213.147.88.114 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:১১66530
  • জ আপনি বলেছেন "ফ্রন্টিয়ার-এর লিঙ্কটা প্রথমে দিচ্ছি, কারণ ভারতে এনিয়ে ইতিবাচক ভাবনা-চিন্তা কিছুমাত্র হয়েছে, সেটাও একেবারে ধুয়ে ফেলা ঠিক হবে নাঃ" পরলাম , ফ্রন্টিয়ার অন্যের পুরানো লেখা কপি পেস্ট করেছে -এত বড় একটা কাণ্ড ঘটছে অথচ কি উদাসীনতা একটা লেখা লেখা গেলনা ?
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.116.198 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:০২66526
  • প্যারিস এ সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে যখন প্রথম বিশ্বের মানুষ দিশেহারা , কি ভাবে এই সন্ত্রাস প্রতিহত করা যায় যখন সারা বিশ্ব বাসির চিন্তা ঠিক তখনই ইসলামিক স্টেট এত ঘাঁটিতে উত্তর সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ১৪৮০০ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঘটে চলেছে এক অভূতপূর্ব সামাজিক বিপ্লব -Rojava Revolution সামরিক শক্তিতে সাধারণ নাগরিক ইসলামিক স্টেট কে পরাজিত করছে প্রত্যহ সে বিষয় আলাদা কিন্তু তত্বগত ভাবে মৌলবাদের মুল উপড়ে ফেলছে সামাজিক বিপ্লবে -এই খবর আমাদের প্রথাগত মিডিয়া দেয়না । চারিদিকে যখন বিষণ্ণতা তখন রোজাভা ওই যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলে এক উজ্বল রুপোলী রেখা । মৌলবাদ সন্ত্রাসবাদ কি ভাবে মোকাবিলা করতে হয় তাঁর এক মডেল সাথে নিচের স্তর থেকে মানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এক সামাজিক বিপ্লব ---- এই লেখাটি সেই খবর পৌছানো । আপনাদের মনে আছে নিশ্চই সেই ইয়েজেদী দের গণহত্যা এবং যৌন দাসী বানানোর ইসলামিক স্টেট এর বছর দেড়েক পূর্বের বর্বতার খবর -প্যারিস আক্রমনের দু দিন পূর্বে সেই সমগ্র অঞ্চল ইসলামিক স্টেট কে পরাজিত করে ইয়েজেদী এবং রোজাভা বিপ্লবীদের এক যৌথ বাহিনী পুনদখল করতে সক্ষম হয়েছেন ।এই খবর কে গল্প নেই তাই মিডিয়া প্রচার করেন না । এই লেখাটি প্রতিরোধের মডেল যে বর্তমান সে খবর পৌছানো বলতে পারেন ।
  • 0 | 132.163.8.195 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ১২:১৬66527
  • খুব ইনফর্মেটিভ লেখা। দরকারীও।

    সামান্য একটু যোগ করি। কুর্দিশ স্বতন্ত্রতার গোড়ার হদিশ পাওয়া যাবে।

    নানান ভাষার শব্দগঠন রীতিগুলোকে ভাগ করলে যে ক'টা মূল ভাগ হয় তার মধ্যে অন্যতম প্রধান দু'টো হলো Agglutinating এবং Inflectional টাইপ।

    প্রথমটার উদাহরণ :- Turkic (Altaic) ভাষাগুলো।

    দ্বিতীয়টাকে আবার অনেকগুলো ভাগ করা যায় - morpheme ও syntax অনুযায়ী।
    দুটো উদাহরণ :- আরবী (সেমিটিক) এবং পশ্চিম ইরানী (ইন্দোয়ুরোপীয়ান) ভাষাগুলো।

    কুর্দিশ ভাষা ওই পশ্চিম ইরানী ইন্দোয়ুরোপীয়ান ভাষার মধ্যে অন্যতম। কয়েকটা আঞ্চলিক রূপ আছে। যদিও কিছু জায়গায় আরবী অক্ষরে লেখা হয়, তবে প্রধানতঃ বাঁয়ের থেকে ডাইনে ল্যাটিন, সিরিলিক, এ'সব (ISO-IEC 8859-1) অক্ষরেই লেখা হয়। এখন ইউনিভার্সাল Yekgirtú অক্ষরে লেখা হচ্ছে।

    ভাষাসংস্কৃতিও সে'জন্য অ্যাক্কেরে গোড়া থেকেই ইন্দোএরিয়ান।
    তুর্কী ও আরবী ভাষসংস্কৃতি থেকে বেশ অনেকটাই আলাদা। সেইটের ভিত্তিতে কয়েক সহস্রাব্দ ধ'রে নিজেদের একটা সুস্পষ্ট জাতিসত্তা তৈরী হয়েছে। যথারীতি সেই নিয়ে জাতিগরিমাও ভালোই আছে :-)
  • question | 125.112.74.130 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০১:১৫66544
  • "প্যারিস আক্রমনের দু দিন পূর্বে সেই সমগ্র অঞ্চল ইসলামিক স্টেট কে পরাজিত করে ইয়েজেদী এবং রোজাভা বিপ্লবীদের এক যৌথ বাহিনী পুনদখল করতে সক্ষম হয়েছেন " -
    "সমগ্র অঞ্চল" পুনর্দখলের খবর এর সুত্র জানাবেন ?
    কুর্দ রা শিন্জার পুনর্দখল করেছে জানি, কিন্তু সেটা কি US এয়ার স্ত্রীকে ও গোলাবারুদের যোগান ছাড়া সম্ভব ছিল ?
    http://www.aljazeera.com/news/2015/11/iraq-kurdish-fighters-enter-centre-sinjar-151113081248929.html
    "The government is seeking outside investment to build a power plant and a fertilizer factory." - যে বাইরে থেকে এসে যুদ্ধবিদ্ধস্ত অঞ্চলে পাওয়ার প্লান্ট fertilizer ফ্যাক্টরি বানাবে সে কি মুনাফা ছাড়া করবে ? তখন কিভাবে "উৎপাদন হবে ভোগের জন্য, উদ্বৃত্ত উৎপাদন বিক্রি করে লাভের জন্য নয়" নীতি খাটবে ?
  • ranjan roy | 132.162.198.81 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০২:১৬66545
  • লিংক পড়ার পরে এটা আমারও কোশ্চেনঃ
    এটা দেখুন--
    PKK urges US to mediate in its war with Turkey and admits to secret talks with Washington

    Cemil Bayik, one of the three-man interim leadership council of the Kurdish Workers’ Party (PKK), tells the Telegraph it would accept a ceasefire with Turkey under US guarantees।

    এটা একটু বুঝিয়ে দিন। আমার ঘেঁটে যাচ্ছে।
  • কল্লোল | 111.63.202.138 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩২66531
  • ফ্রন্টিয়ারের A Small Key Can Open A Large Door: The Rojava Revolution এই বইটি নিয়ে আলোচনায় একটা লাইন খুবই কৌতুহলোদ্দীপক - the book describes how the Kurdish region has used power-to-the-people principles to reimagine an economic system beyond capitalism.
  • Debabrata Chakrabarty | 213.147.88.114 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৫২66546
  • রজাভার অভ্যন্তরীণ হিসাব অনুযায়ী কম পক্ষে $২০০ মিলিয়ন দরকার পাওয়ার প্লান্ট এবং $৩০০ মিলিয়ন দরকার রিফাইনারী এবং সার কারখানার জন্য , কেই বা আসবে এই যুদ্ধ বিদ্ধস্ত অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে , অল্প কিছু বিনিয়োগ আসছে মূলত বিদেশে থাকা কুর্দ নাগরিকের কাছ থেকে তাই দিয়ে একটি বিটুমিন কারখানা হয়েছে রাস্তা ঠিক করার জন্য ,রজাভার এই ওয়ার ইকনমির ৬৫% যায় যুদ্ধ খরচ মেটাতে -ওনাদের হিসাব অনুযায়ী আগামীতে যুদ্ধ খরচ কমলে আর ভেঙ্গে পরা অর্থব্যবস্থা ঠিক ঠাক হলে ওনারা নিজেরাই বানাতে পারবেন -কবে সে খুব যদির ব্যাপার ।

    শিন্জার দখল হয়েছে মাত্র তিন চার দিন হলো , কিন্তু শিন্জার পুনদখলের অভিযান শুরু হয়েছে প্রায় ১-১/২ বছর পূর্বে ,ইসলামিক স্টেট এর আক্রমনের মুখে পেসমেরগা( ইরাকের কুর্দ অঞ্চলের বাহিনী ) শিন্জার অরক্ষিত রেখে পালিয়ে যাবার কারণেই ইসলামিক স্টেট গণহত্যা চালায় বিনা প্রতিরোধে , সেই সময় PYG এবং PKK নিরাপদ করিডোর বানিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া য়েজেদী দের উদ্ধার করে ট্রেনিং দিয়ে প্রথমে স্লিপার সেল বানিয়ে ইসলামিক স্টেটএর দখলে থাকা য়েজেদী অঞ্চলের খবর সংগ্রহ ,ছোট খাটো স্যাবতেজ দিয়ে শুরু করে কিছুদিন পূর্বে Ezidi Joint command, এর অধীনে শিন্জার দখলের অভিযান টি চালায় -অবস্যই আমেরিকার এয়ার সাপোর্ট ছিল শিন্জার দখলের অভিযানে

    The operation, which has been organized under the Ezidi Joint command, is being led by HGP and YJA Star guerillas and fighters with the YBŞ-YBJ Şengal, with peshmerga forces also taking part.

    আপনি যদি সেপ্টেম্বর ২০১৫ এবং আজকের রজাভার ম্যাপটি দেখেন তাহলেই পরিস্কার হবে রজাভার বর্তমান আঞ্চলিক অবস্থান - মাত্র এক বছরের মধ্যে কবানে এবং জাজিরা এই দুই canton এর মধ্যে ভৌগলিক সংযুক্তি সম্ভব হয়েছে । আজ পর্যন্ত আমেরিকা 20ton আর্মস এয়ার ড্রপ করেছে তাও কবানে সিজ এর সময় , তার মধ্যে অধিকাংস আরব বিদ্রোহীদের জন্য, তুরস্কের চাপে আমেরিকার কংগ্রেস আইন করে সিরিয়ার কুর্দ দের অস্ত্র দেওয়া নিষেধ করেছে ,আমেরিকা প্রকাশ্যে রজাভা কে অন্তত অস্ত্র দেয়না -তবে এয়ার সাপোর্ট দেয় বড় অভিযানে । 'কিন্তু সেটা কি US এয়ার স্ত্রীকে ও গোলাবারুদের যোগান ছাড়া সম্ভব ছিল ? ' এই প্রশ্নের উত্তর অংসিক সত্য মাত্র
  • Debabrata Chakrabarty | 213.147.88.114 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:১৮66547
  • রঞ্জন বাবু :- জেলবন্দী অচালানের সাথে তুরস্কের সরকার প্রকাশ্যে এবং গোপনে ৬ বছরের অধিক সময় ধরে নেগসিয়েসন করেছে অবশেসে ২০১৩ সালে এক ভঙ্গুর শান্তি চুক্তি হয়ছে , এই বছর নভেম্বর এ তুরস্কে নির্বাচনের পূর্বে আমাদের মোদী যেমন নির্বাচনের পূর্বে কাউকে কাউকে পাকিস্তানে পাঠান এবং যুদ্ধ হুঙ্কার দিয়ে থাকেন ঠিক তেমনি তুরস্কের সরকার তুর্কীয় ভোট এক কাঠ্থা করতে ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে PKK র ঘাটিতে বিমান হানা চালায় , সাথে রজাভার সাথে সীমান্ত সিল করে রেখেছে রজাভা প্রজেক্ট সফল হলে তুরস্কের কুর্দ রাও স্ব শাসনের লাইন নেবে একথা নিশ্চিত তাই লবিইং কাউন্টার লবিইং তো চলবেই , PKK এখনো নিষিদ্ধ সংগঠন তুরস্ক , আমেরিকা এবং ইউরোপে, তাই আমাদের মাওবাদীদের সাথে সরকার যেমন প্রকাশ্যে আলোচনা চালাতে পারেনা তেমন PKK র সাথেও পারেনা অথচ সবাই জানেন এই শান্তি চুক্তি ভঙ্গ হলে পুনরায় তুরস্কে রক্তপাত গৃহযুদ্ধ সুরু হতে পারে , তাই নিসিস্দ্ধ PKK আমেরিকার মাধ্যমে তুরস্ক সরকার কে চাপে রাখছেন - অথচ সিরিয়ার রজাভা অঞ্চলের কুর্দ রা নিষিদ্ধ সংগঠন নয় তারা দিব্বি প্রকাশ্যে আমেরিকা ইউরোপ যাচ্ছেন এবং রজাভার সমর্থন দাবি করছেন - বর্তমানে যা পরিস্থিতি যদি সত্যিই ওই অঞ্চলে ইসলামিক স্টেট এর সাথে লড়তে হয় তো PKK র ওপর থেকে ব্যান উঠল বলে । PKK এবং রোজাভা is gaining তুরস্কের ফ্যাসিস্ট সরকার is loosing এই লিংক টা দেখুন
    Why Turkey sees the Kurdish people as a bigger threat than ISIS http://ti.me/1OMNufm via @TIMEWorld
  • কল্লোল | 111.63.91.16 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:১২66532
  • পিকেকের ওয়েবসাইটে ওঁদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে বিশেষ কিছু পেলাম না। উইকিতে যা পেলাম তা খুবই ভাসাভাসা।
    Private property and entrepreneurship are protected under the principle of "ownership by use", although accountable to the democratic will of locally organized councils. Dr Dara Kurdaxi, a Rojavan economist, has said that: "The method in Rojava is not so much against private property, but rather has the goal of putting private property in the service of all the peoples who live in Rojava."
    The private sector is comparatively small, with the focus being on expanding social ownership of production and management of resources through communes and collectives. Several hundred instances of collectivization have occurred across towns and villages in all three cantons, with each commune consisting of approximately 20-35 people. According to the Ministry of Economics, approximately three quarters of all property has been placed under community ownership and a third of production has been transferred to direct management by workers councils.
    There are also no taxes on the people or businesses in Rojava. Instead money is raised through border crossings, and selling oil or other natural resources. Trade as well as access to both humanitarian and military aid is difficult as Rojava remains under a strict embargo enforced by Turkey.
    Price controls are managed by democratic committees per canton, which can set the price of basic goods such as for food and medical goods. This mechanism can also be used for managing public production to, for instance, produce more wheat to keep prices low for important goods.
    The government is seeking outside investment to build a power plant and a fertilizer factory.
    Resources[edit]
    Oil and food production exceeds demand so exports include oil and agricultural products such as sheep, grain and cotton. Imports include consumer goods and auto parts. The border crossing of Yaroubiyah is intermittently closed by the Kurdistan Regional Government side. Turkey does not allow Syrian Kurd businesspeople or their goods to cross its border although Rojava would like the border to be opened.
    Before the war, Al-Hasakah governorate was producing about 40,000 barrels of crude oil a day. However, during the war the oil refinery has been only working at 5% capacity due to lack of refining chemicals. Some people work at primitive oil refining, which causes more pollution.
    In 2014, the Syrian government was still paying some state employees,but fewer than before. The Rojavan government says that "none of our projects are financed by the regime"
    কিন্তু আমি হয়তো একটা যুদ্ধবিদ্ধস্ত জনগোষ্ঠীর থেকে খুব বেশী আশা করছি। কিন্তু কি করি, আশা তো এদের থেকেই করতে হবে, করতে চাই।
  • debabrata | 213.147.88.114 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৫৮66533
  • কল্লোল বাবু -পরব ৩এ ইকনমিক মডেল -গনতন্ত্রের মডেল-পলিটিকাল মডেল নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে। আপনি খুব মন দিয়ে পড়ছেন ভালো লাগলো।
  • | 127.194.17.143 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:২৬66534
  • 'Curiouser and curiouser!” হচ্ছি!
    @কল্লোল, পিকেকের ওয়েবসাইট আপনি খুঁজেছেন, আমি তো এখনও সময়ই পাই নি। তবে আপনার মতের ওপর আস্থা না রাখার কোনো কারণ পাচ্ছি না; দেবব্রত হয়তো পরে ইকোনমি নিয়ে আলোকপাত করতে পারবেন।

    আর উইকি থেকে কোট করার জন্যও ধন্যবাদ, কারণ ওগুলো পড়ার সময়ে তথ্যসমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোকে আলাদা করে চিনতে পারিনি, আপনি আণ্ডারলাইন করে দিয়েছেন। আপনার কোটেড অংশের মধ্যে ~~

    "Several hundred instances of collectivization have occurred across towns and villages in all three cantons, with each commune consisting of approximately 20-35 people. According to the Ministry of Economics, approximately three quarters of all property has been placed under community ownership and a third of production has been transferred to direct management by workers councils."

    এটা যদি সত্যিই ইমার্জিং ট্রেন্ড হয়, তাহলে "যুদ্ধবিদ্ধস্ত জনগোষ্ঠীর থেকে খুব বেশী আশা করছি" টা নেহাত দুরাশা নাও হতে পারে। আর তেলের সুবিধা (ট্যাক্স ইত্যাদি) নেবার সঙ্গে সঙ্গে একটা আইসোলেটেড ইকোনমি-তে অসুবিধাটাও (...oil refinery has been only working at 5% capacity due to lack of refining chemicals. Some people work at primitive oil refining, which causes more pollution.) মেনে না নিয়ে আপাত উপায় কিছু নেই।

    আরেকটা কথা। লিঙ্কটা ফ্রন্টিয়ার-এর হলেও, @কল্লোল, মনে তো হলনা যে বুক রিভ্যুটা ফ্রন্টিয়ার-এর এক্সক্লুসিভ। @দেবব্রত মনে হয় ঠিকই বলেছেন, "ফ্রন্টিয়ার অন্যের পুরানো লেখা কপি পেস্ট করেছে -এত বড় একটা কাণ্ড ঘটছে অথচ কি উদাসীনতা একটা লেখা লেখা গেলনা?"
    @কল্লোল,আপনার উদ্ধৃত লাইনটি সত্যিই চমৎকার, যদি তা সত্য হয় ~~ "used power-to-the-people principles to reimagine an economic system beyond capitalism." তবে reimagineএর পরে একটু redraw redefine পর্যায় বোধহয় এসে গেছে। মানে, reimagine তো নিরালম্ব বায়ুভুক হয়ে থাকতে পারে না, এখানেও পারেনি।
  • | 127.194.17.143 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:২৯66535
  • @দেবব্রত, আপনি অনেকগুলো উৎস দিয়েছেন, গিলতে সময় লাগবে, হজম করতে পারব কতটা জানি না। চেষ্টা করব। ধন্যবাদ জানিয়ে আপনার কন্ট্রিবিউশানকে মামুলী পর্যায়ে নামাব না।
    লিখে যান।
  • কল্লোল | 111.63.91.16 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:২৬66536
  • জ। খুব ভালো লাগছে এই বিনিময়। আমার বিশ্বাস এবং দৃঢ় বিশ্বাস ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বাইরেও অন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হতে পারে। আমি মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্রের অর্থনৈতিক মডেল নিয়ে চূড়ান্ত হতাশ। ওটা নেহাৎই ধনতন্ত্রের হেটমুন্ড সংস্করণ।
    কিছু কথা জোরে জোরে ভাবি - মানুষ উৎপাদন করে কেন? ভোগের জন্য। মানুষ ফলমূল কুড়িয়েছে, পশু শিকার করেছে, শষ্য ফলিয়েছে খাবার জন্য। চাকা বানিয়েছে দূরে যাবার জন্য, লিভার বানিয়েছে ভারী জিনিস তোলার জন্য। তার থেকে রোজগার করাটা অনেক পরের ব্যাপার। ব্যাবসা-বাণিজ্য অনেক পরের ব্যাপার। এরকম অর্থনীতি কি হতে পারে না যেখানে উৎপাদন হবে ভোগের জন্য, উদ্বৃত্ত উৎপাদন বিক্রি করে লাভের জন্য নয়।
    আমি হয়তো খুব হাওয়ায় কথা বলছি। তা, বলছি। হয়তো স্বপ্ন দেখছি, তা দেখছি।
  • | 127.194.13.36 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:৪৬66548
  • @কল্লোল দাশগুপ্ত,
    "মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি 6,145,199 বার পঠিত" ছাড়া আপনার অসাধারণ লেখাটিতে কোনো কমেন্ট দেখতে পেলাম না। তখন কি গুরুতে কমেন্ট হতো না? না, তা বোধহয় নয়। অবশ্য কমেন্ট না পেয়ে ভালোই হয়েছে, আমার মতো পাঠকের আপনার ঐ লেখাটুকুই একটানা পড়ে হজম হচ্ছে না। খুব তলিয়ে লেখা, এবং মার্ক্স-লেনিন ও সোভিয়েত ব্যবস্থার অজস্র নথি খুঁটিয়ে পড়ে।
    আমাদের পড়াশুনো সাধারণত 'রাষ্ট্র ও বিপ্লব' পর্যন্ত, এবং সেটাও 'পাঠ্যপুস্তক' মেনে নিয়ে অধ্যয়ন করা। তার মানে এই নয় যে আমরা কেউ কখনো প্রশ্ন করিনি। স্ট্যালিনিস্ট জমানায় নানা কান্ড থেকে ইঁদুরমারা কালো-বেড়াল সাদা-বেড়াল আমাদের দিয়েও প্রশ্ন করিয়ে ছেড়েছে, তবে সেসব তিতকুটে জিভে উচ্চারিত উত্তর-আশাহীন প্রশ্নদল। মার্ক্সের নতুন পাঠে কেউ কেউ জবাব খুঁজেছেন, কেউ বা মার্ক্সকে মহামানবের পালপিট থেকে নামিয়ে দেখতে চেয়েছেন, যেমন আপনি।

    আরেকটা এপ্রোচ আছে। আমি আগেই বলেছি, 'মান্থলি রিভ্যু'-র প্রতি আমার একটা আকর্ষণ আছে, এবং পত্রিকাটি 'নির্লজ্জভাবে' মার্ক্সবাদী। অলসতার কারণে জোগাড় করে সব পড়া হয় না। 'বাংলা মান্থলি রিভিউ' বেরোয় মান্থলি রিভ্যু'-র কিছু কিছু লেখা নিয়ে, সেটা সহজে পড়ে ফেলতে পারি। তো 'মার্কস, কৃষি ও বাস্তুতন্ত্র' নামে কোহেই সাইতো-র একটা লেখা সেই 'আরেকটা এপ্রোচ'-এর উদাহরণ, 'বাংলা মান্থলি রিভিউ' এপ্রিল-সেপ্টেম্বর ২০১৫ সংখ্যায়। মার্ক্সকে এনালিসিস করে দেখানো জীবনের নানা পর্যায়ে আন্দোলনের চাপ, অন্য নেতাদের নানা অবস্থানের পক্ষে-বিপক্ষে নিজের যুক্তি সাজানোর চাপ, ও কোন বইটা কখন পড়ছেন, তার চাপ-- এর বাইরে কোনো ঋষিসুলভ জ্ঞানী স্থানকালপাত্র-ঊর্দ্ধ মার্ক্স আমাদের স্বকপোল-কল্পিত।

    মার্ক্স কী করে সমাজতান্ত্রিক সমাজের বাস্তবতা, তার ঘাত-প্রতিঘাত, তার পুঁজি-ম্যানেজারদের চরিত্র -- এসব জেনে ফেলবেন? কোন কথা কী প্রেক্ষিতে বলেছেন, সেটাকে না জেনে গুরুত্ব কেমন করে দেওয়া যাবে? সে সময় তিনি দলবল খাড়া করবার বাধ্যবাধকতা ও ঊনিশ-শতকীয় অভিজ্ঞতার নিগড়ে বাঁধা এক মানুষ বৈ তো নন।

    @কল্লোল, আপনার "মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্রের অর্থনৈতিক মডেল ... নেহাৎই ধনতন্ত্রের হেটমুন্ড সংস্করণ।" এটা প্রায় দু-লাইনে প্রায় মেনেই ফেললাম, না জেনেই। এটাই আমার আপাত-জানা হয়ে থাক। পরে দেখা যাবে পথে কী জোটে।
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.125.10 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:২৬66537
  • কল্লোল বাবু , আপনি বলেছেন

    "এরকম অর্থনীতি কি হতে পারে না যেখানে উৎপাদন হবে ভোগের জন্য, উদ্বৃত্ত উৎপাদন বিক্রি করে লাভের জন্য নয়। " ----ঠিক একদম এইটাই হচ্ছে রজাভা তে । আপনারা উত্সাহিত করছেন পরবর্তী পর্যায়ের লেখাটি লেখার জন্য ।
  • ranjan roy | 132.162.198.81 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:৩৮66549
  • জ,
    উপরোক্ত বিষয়ে আমার অনুভব ও অনুভূতি ১০০% আপনার মত। কল্লোলের লেখাটি ও ওর পাঠানো বাকুনিনের লেখাও পড়েছি।
    আমিও বড় হয়েছি ট্রটস্কি/বাকুনিন না পড়ে, ওঁদের পরাজিত জেনে। স্তালিন ও মার্ক্স ওদের ভুল বলেছেন, এই যথেষ্ট মেনে নিয়ে। রেড বুককে বাইবেল মেনে।
    আজকাল মনে প্রশ্ন জাগেঃ
    ১) ইসরায়েল রাষ্ট্রটির প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া রাষ্ট্রটির নাম স্তালিনের রাশিয়া কেন? কেন আম্রিকা নয়?
    ২) কেন প্রথম ইসরায়েল-আরব যুদ্ধে দুর্বল ইজরায়েল কে স্তালিন ওয়রশ প্যাক্টের ্চেক আদির প্রস্তুত স্মল্ল আর্মস ও অ্যাম্যুনিশন দিয়েছিলেন?
    ৩) কেন লিউ শাও চি দেশের রাষ্ট্রপতি থেকে একদিনে বুর্জোয়া পথের পথিক সাব্যস্ত হয়ে জেলে গেলেন ও সেখানেই মারা গেলেন?
    ৪) কেন ভারতে লিউ শাও চির লেখা হাউ টু বি এ গুড কম্যুনিস্ট অবশ্যপাঠ্য থেকে নিষিদ্ধ বই হয়ে গেল?
    ৫) কেন মাওবাদী বিপ্লবী খমের রুজের কাম্বোডিয়া সাততাড়াতাড়ি কিলিং ফিল্ড্স এ রূপান্তরিত হয়ে গেল?
    ৭) কেন মাওয়ের "উত্তরাধিকারী" ঘোষিত হওয়ার (৯থ কংগ্রেসের সময়) দু'বছর পরেই লিন পিয়াও ষড়যন্ত্রকারী রাষ্ট্রদ্রোহী হয়ে পালাতে গিয়ে মারা পড়লেন?
    ৮) কেন পরিবার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমাজতান্ত্রিক চীনের আইন ভারতের চেয়ে বহুগুণ অমানবিক? ইত্যাদি।

    এমন সময় কল্লোলের সঙ্গে গুরুর পাততেই পরিচয়।

    কল্লোলের সঙ্গে সামান্য মুখোমুখি আলোচনা হয়েছিল। নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন