এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • লজ্জা ও ঘৃণার কালো ইতিহাস

    ঝিনুক চক্রবর্তী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৫ আগস্ট ২০১৪ | ১৬৪৩০ বার পঠিত
  •  কোলকাতা বইমেলার আয়োজক পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ড এর মুখপত্র ‘পুস্তক মেলা’য় প্রকাশিত এই লেখাটিকে লোপাট করা হয়েছিল।পৃষ্ঠা কেটে সেখানে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্য বইয়ের সমালোচনা।‘পুস্তক মেলা’য় একই সংখ্যার (ষষ্ঠ বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, বৈশাখ – আষাঢ় ১৪০৯ ) দুটি কপিই আমাদের হাতে আছে ঐতিহাসিক প্রমাণ হিসাবে। – তুষার ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘অপ্রকাশিত মরিচঝাঁপি’ থেকে। 


     ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


    ‘এই উদ্বাস্তরা অন্য রাজ্য থেকে আসা অবাঙ্গালি অধিবাসীদের মতো কলকাতার রেলস্টেশন বা ফুটপাথ দখল করতে চান নি, তারা সত্যি সত্যিই পুনর্বাসনের পরিকল্পনা নিয়েই সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি দ্বীপে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হাসনাবাদে না যেতে দিয়ে, বর্ধমানের কাশীপুরে গুলি চালিয়ে ৬ জনকে মেরে, জোর করে অনেক উদ্বাস্তুকে দণ্ডকারণ্যে ফেরত পাঠান। বামফ্রন্ট নেতারা ভারত সেবাশ্রম সংঘ, রামকৃষ্ণ মিশন, মাদার টেরেসা, লুথারিয়ান চার্চ – কাউকে সেবাকাজ করতে দেয় নি। এমন কী শিশুদের বৃদ্ধদের দুধ দিতে দেয় নি। ফলে হাসনাবাদে প্রায় দেড় হাজার শিশু ও বৃদ্ধ বিনা চিকিৎসায় মারা যান।’– শক্তি সরকার (সুন্দরবনের প্রাক্তন সাংসদ)। সূত্রঃ নিরঞ্জন হালদার সম্পাদিত ‘মরিচঝাঁপি’,পৃষ্ঠা ৫২-৫৩।


    ‘পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় উদ্বাস্তুদের থামানো হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশকে বেশ সফল ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেইরকম একটি দলকে আমি হাসনাবাদ স্টেশনে দেখি, যারা ফেরত ট্রেনে ওঠার জন্য সরকারি অফিসে লাইন দিয়েছে স্বেচ্ছায়। তারা প্রায় প্রত্যেকেই তিন-চার দিন খায়নি। তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়া গেছে স্রেফ ক্ষুধার অস্ত্রে। তারা গোটা পশ্চিমবাংলাকে অভিসম্পাত দিতে দিতে ফিরে গেল।’– সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। সূত্রঃ ‘মরিচঝাঁপি সম্পর্কে জরুরি কথা – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১১.৯.১৯৭৮।


    ‘যে সমস্ত পরিবার আজ ওখানে (দণ্ডকারণ্যে) ফিরে আসছেন, তাঁদের প্রায় সকল পরিবার থেকে শিশু অথবা বৃদ্ধ অথবা দুই-ই তাঁরা পথে পথে চিরদিনের মতো হারিয়ে এসেছেন। তাঁদের শোক, দুঃখবোধও এই প্রচণ্ড আঘাতে ও প্রতারণায় বিফল। ফেরতগামী ট্রেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে ২-৩ জন করে অফিসার পাঠানো হচ্ছে শরণার্থীদের তদারকি করার জন্য। তাঁদের মুখেই শুনলাম, ফিরবার পথে মৃত শিশুদের তাঁরা ট্রেন থেকে ফেলে দিয়েছেন। পরবর্তী কোনো স্টেশনে তাদের সদগতির জন্য অপেক্ষা করেনি।’ পান্নালাল দাশগুপ্ত। সূত্র যুগান্তর, ২৫ শে জুলাই, ১৯৭৮।


    ইতিহাস দাগ রেখে যায়। সে-দাগ মোছে না কখনও। একদিন না একদিন তা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। করেই। আপাতভাবে আড়াল করে রাখলেও সময়ই তাকে টেনে খুঁড়ে বের করে আনে। মানুষই ইতিহাস সৃষ্টি করে, আঁচড় কাটে। চাপা পড়ে থাকা ক্ষত উঠে আসে যখন, শিউরে উঠতে হয়। এমনও হয় তাহলে। অস্বীকার করা যায় না কিছুতেই। হয়েছে তো এমনই।


    সময়ের পরিবর্তনে মানুষ হয়তো অবস্থান বদলায়, কিন্তু ইতিহাস বদলায় না। মানুষ লজ্জিত হয়। ইতিহাসই মানুষকে ধিক্কার দেয় কখনও কখনও। একটি করে পৃষ্ঠা উল্টেছি আর লজ্জায় ধিক্কারে ঘৃণায় ক্ষোভে শোকে অবনত করেছি মুখ। প্রগতিশীল বামপন্থার আড়ালে তবে এত অন্ধকার।


    ‘সমস্ত সরকারি বাধা অতিক্রম করে ১৯৭৮ সালের এপ্রিলে ৩০ হাজারের মতো নরনারী, শিশু, বৃদ্ধ মরিচঝাঁপি দ্বীপে পৌঁছান। নিজেদের শ্রম ও সামর্থ্যে তারা ১৯৭৯ সালের মে মাস পর্যন্ত থাকতে পারেন। – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে যে-ভাবে বন্দীদের না খেতে দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল, সেইভাবে মরিচঝাঁপির মানুষদের মেরে ফেলার চক্রান্ত শুরু হয়। ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঝড় বন্যার মধ্যেও ৬, ৭, ৮ সেপ্টেম্বর জ্যোতি বসুর সরকার পুলিশ লঞ্চের সাহায্যে উদ্বাস্তুদের নৌকাগুলি ডুবিয়ে দেয়। … ১৯৭৯ সালের ২৪ শে জানুয়ারি ব্লকেড করে পাশের দ্বীপ থেকে আসা খাদ্য ও পানীয় জল আনা বন্ধ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট রাজত্বে ৩১শে জানুয়ারী (১৯৭৯) প্রথম গুলি চলে। মরিচঝাঁপির লোকদের ছাপানো এই অক্ষরমালাকে ‘মিথ্যে বানানো পরিকল্পিত কুৎসা’ বুলে উড়িয়ে দিতে পারলে কোনো কষ্ট হত না। কিন্তু ওই যে ইতিহাস। অমোঘ শক্তি তার। নির্মম সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে সে। গায়ের জোরে অস্বীকার করার চেষ্টা করলেও মনে মনে সত্যের কাছে মাথা নোয়াতেই হয়।


    আমরা তাহলে পেরেছিলাম।


    আবাল্য স্বপ্নভূমি-বীজভূমি নিজস্ব উঠোনটুকু কেড়ে নিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ‘উদ্বাস্তু করেছিল’ যে স্বাধীনতা, তার সব দায় তাহলে ঐ হতভাগ্য মানুষগুলোর। সাতজন্মের পাপের ফল, নাকি দুর্ভাগ্য ওঁদের। আমরা যারা স্বাধীনতার ক্ষীরটুকু চাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, স্বাধীন গদিতে আপ্লুত হলাম, তাদের কাছে ওই সবহারানো নেই – মানুষগুলো রাতারাতি শরণার্থী হয়ে গেল।


    দাঙ্গা-কাটাকাটি সে না হয় হয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্র তো পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছে যথাসাধ্য। সুজলা-সুফলা-সবুজ নদীমাতৃক ভূমিপুত্রদের খুলনা যশোর ফরিদপুর জেলার নমঃশূদ্র-পৌণ্ড্রক্ষত্রিয় কৃষকদের পুনর্বাসন দেওয়া তো হল পাথর-কাঁকর-টিলা-অধ্যুষিত দণ্ডকারণ্যে।


    অহো, সরকার যে করেনি তা-তো নয়।


    কিন্তু দণ্ডকারণ্যের এই পুনর্বাসন বাঙালি কৃষক উদ্বাস্তুদের কাছে হয়ে উঠেছিল ‘নির্বাসন’। পশ্চিমবঙ্গের শিবিরবাসী এইসব উদ্বাস্তুদের ১৯৬১ সালে দণ্ডকারণ্যে পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ডোল বন্ধ করে দিলে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে পুনর্বাসনের দাবিতে অনশন করে। ১৯৬১ সালের ১৩ই জুলাই উদ্বাস্তুদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে জ্যোতি বসু অনিচ্ছুক উদ্বাস্তুদের দণ্ডকারণ্যে পাঠানো বন্ধ করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের তদানীন্তন রাজ্য পুনর্বাসন মন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেনকে একটি চিঠিতে লিখেছিলেনঃ “…although it was stated by the Government the West Bengal has reached a saturation point. I feel, therefore, that the rest may be found rehabilitation here provided there is willingness on the part of the Govt.”(যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার বারবার বলছেন যে, এই রাজ্যে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য একতিল জমি নেই, তথাপি মনে করি সরকারের অভিপ্রায় থাকলে অবশিষ্ট উদ্বাস্তুরা এ রাজ্যে পুনর্বাসন পেতে পারে।)


    সে সময় পশ্চিমবঙ্গে উদ্বাস্তু শিবিরগুলি বন্ধ করে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারও বদ্ধপরিকর। ১৯৫৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে বলেছিলেনঃ ‘যদি মাথায় আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়ে এবং কলকাতার পথে পথে দাঙ্গাও শুরু হয়, তাহা হইলেও আমরা উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলি বন্ধ করে দিব বলিয়া স্থির করিয়াছি।’ (সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, ২২.১০.১৯৫৯)।


    কেন্দ্রীয় সরকারের অনমনীয় মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সেদিন জ্যোতি বসু উদ্বাস্তুদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ২১ শে জুন কলকাতায় জ্যোতি বসুর সভাপতিত্বে বামপন্থী দলগুলি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলঃ ‘তাদের (উদ্বাস্তুদের) পুনর্বাসনের সব দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নিতে হবে।’ (সূত্রঃ মরিচঝাঁপি – নিরঞ্জন হালদার, পৃ-৩৩)।


    জ্যোতি বসুর এই দরদ(!)এর কথা মাথায় রেখেই বোধহয় ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ১৯৭৮ সালের প্রথমদিকে দণ্ডকারণ্যে নির্বাসিত উদ্বাস্তু মানুষজন পুনর্বাসিত হওয়ার আকাঙ্খায় পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের দিকে রওনা দেন।


    হায় রে আশা! গদিতে বসলে নেতাকে যে রাজার মতোই আচরণ করতে হয়। এই বুঝি গণতন্ত্রের নিয়ম।


    ১৯৭৮ সালের ১৮ই এপ্রিল দশ হাজার উদ্বাস্তু পরিবার সুন্দরবনের কুমিরমারি পার হয়ে মরিচঝাঁপিতে আশ্রয় নেন। তাঁরা পুনর্বাসনের জন্য সরকারের কাছে কোনো সাহায্য চান নি। তাঁদের দাবি ছিল ‘আমাদের শুধু মরিচঝাঁপিতে ভারতবর্ষের নাগরিক হিসাবে থাকতে দাও।’ তাঁদের ভরসা ছিল, এখানে পাঁচ ফুটের বেশি উঁচু জোয়ার আসে না। এখানকার কাছাকাছি গ্রামের লোকজন যদি পাঁচ ফুট বাঁধ দিয়ে নোনাজল ঠেকিয়ে একশো বছর ধরে চাষ করতে পারেন, তাহলে তাঁরা পারবেন না কেন? তাছাড়া মাছ ধরার সুযোগ তো আছে।


    পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার কী সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন, তাঁরা তখন জানতেন না, হায়।


    সিপিআই(এম) এর রাজ্য কমিটি তখন রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ‘দণ্ডকারণ্যের যে-সব উদ্বাস্তু পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন, প্রয়োজন হলে,তাদের বল প্রয়োগ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরিয়ে দিন।’ কমিটির তিন দিনের অধিবেশনের পর দলের সম্পাদক প্রমোদ দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেছিলেন “এইসব উদ্বাস্তুদের নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে”। (সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, ২.৭.১৯৭৮)।


    এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হতে দেরি হল না। ১৯৭৮ সালের ১৯ অগস্ট বহু পুলিশ ও কুড়িটির লঞ্চের সাহায্যে সামরিক কায়দায় নদীপথ অবরোধ করা হল এবং উদ্বাস্তুরা তাতেও দমে না দেখে ৬ই সেপ্টেম্বর সেইসব লঞ্চ নিয়ে উদ্বাস্তুদের রসদ জ্বালানি কাঠ ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বোঝাই করা ২০০টি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া হল। (সূত্রঃ মরিচঝাঁপি কি মরীচিকা? শৈবাল গুপ্ত। নিরঞ্জন হালদার সম্পাদিত ‘মরিচঝাঁপি, পৃ। ২৬-২৭ )।


    নৃশংসতার ছবি পাওয়া যায় সমসাময়িক সংবাদপত্রেও “উদ্বাস্তুরা যে ঘরগুলি তৈরি করেছিলেন তার সংখ্যা কোনোক্রমে এক হাজারের কম নয়। ঘরগুলির অধিকাংশই দৈর্ঘ্যে ১০০-১৫০ হাত, প্রস্থে ১২-১৪ হাত। ঘরগুলি শুধু ভেঙ্গে দেওয়া হয় নি, পুড়িয়েও দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অকথ্য অমানুষিক অত্যাচার, লাঠিপেটা, নারীধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুঠতরাজের মাধ্যমে ১০-১৫ দিন ধরে অনবরত সন্ত্রাস ও ভীতি প্রদর্শন করেও উদ্বাস্তুদের সম্পূর্ণ উৎখাত করতে সক্ষম হয়নি। (যুগান্তর, ২০ ফাল্গুন, ১৩৮৪)।


    ‘যেন যুদ্ধক্ষেত্রে এসে উপস্থিত হয়েছি।অথবা শত্রুদেশের সীমানায়। মাঠে মাঠে সশস্ত্র পুলিশের ছাউনি, পুলিশ চাইলেই আপনাকে হাত উঁচু করে হাঁটতে হবে। খানাতল্লাসি করবে। ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে আটক করবে। জেরা করবে। অথচ জায়গাটি সরকার ঘোষিত বনাঞ্চল নয়। এই জায়গাটার নাম কুমিরমারি। মরিচঝাঁপির লাগোয়া এক জনবহুল দ্বীপ। বামপন্থী সি পি আই এর মুখপত্র ‘কালান্তর’ পত্রিকায় ‘চার ভাঁটার পথঃ নিষিদ্ধ দ্বীপ’ শিরোনামে দিলীপ চক্রবর্তী ধারাবাহিক সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে যে বর্ণনা দেন তা না পড়লে শিউরে উঠতে হয়।


    “...ওখানকার মানুষরা চৌদ্দ দিন এপারে আসেনি। ভাত খেতে পারেনি। জলও পায়নি। পুলিশ ঘিরে রেখেছে দ্বীপ। প্রথম প্রথম ২-৩ দিন বেশি শব্দ হয় নি।এরূপ কান্না শোনা যেত রোজ।কু মীর আর কামট-ভরা নদী পার হয়ে কিছু লোক লুকিয়ে আসত রাতে-চাল ইত্যাদির খোঁজে। জলের খোঁজে।এরপর তাও বন্ধ হল। জালিপাতা আর যদু পালং খেয়ে থেকেছে ওরা,মরেছেও অনেক। ওদের কান্না এখান থেকে রোজই শুনতে পাই।


    “... ২৪ শে জানুয়ারি থেকে সরকার দ্বীপ অবরোধ করে। ৩১ শে জানুয়ারি গুলি চলে। ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের ইনজংশন অনুযায়ী জল-অন্ন আনার উপর থেকে বাধা প্রত্যাহৃত হয়।কিন্তু এর পরেও কড়াকড়ি চলছে। ...একমাত্র ১৬ ফেব্রুয়ারি তারিখেই চাল আনতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন অনন্ত মণ্ডল, অরবিন্দ রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈ, কার্তিক সরকার, রণজিৎ মণ্ডল, কৃষ্ণদুলাল বিশ্বাস। ...২৪ জানুয়ারি সরকারের পক্ষ থেকে দ্বীপ অবরোধ করার পর ওখানে অনাহারে মারা গিয়েছেন ৪৩ জন।‘ (সূত্রঃ কালান্তর,২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯)। 


    ‘ব্লকেডের সময় ওরা তখন কী খেত শুনবে? এক ধরনের ঘাস সেদ্ধ করে তাই দিয়ে সবাই পেট ভরায়।ঘাসের নামটা মনে পড়ছে না – ওখানে ওটা নাকি অপর্যাপ্ত জন্মায়। তখন কাশীকান্ত মৈত্র পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা ছিলেন,তাঁকে ঘাসটা দেখাতে পেরেছিলাম।’ (সূত্রঃ সাংবাদিক নিরঞ্জন হালদারকে লিখিত কমলা বসুর চিঠি)।


    ২৪শে জানুয়ারি ১৯৭৯ থেকে মরিচঝাঁপির নেতাজীনগরে অনাহারে মৃত ব্যক্তিদের নামের তালিকায় রয়েছেন ১৩৬ জন।অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত ব্যক্তির তালিকায় ২৩৯ জন।ধর্ষিতা মহিলাদের তালিকায় ২৩ জন।নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকায় ১২৮ জন। ৩১শে জানুয়ারি ১৯৭৯ গ্রেফতার হয়ে বসিরহাট ও আলিপুর জেলে আটক ব্যক্তিদের তালিকায় ৫২ জন। পরবর্তী সময় জেলে আটক ১৩০ জন। ২৪ শে জানুয়ারি ১৯৭৯ জল সংগ্রহ করতে গিয়ে আটক ৩০ জন। ২৪ শে জানুয়ারি থেকে ১১ই ফেব্রুয়ারি (১৯৭৯) পর্যন্ত পুলিশ-কর্তৃক ছিনতাই হওয়া নৌকার সংখ্যা ১৬৩। – এজাতীয় অসংখ্য প্রামাণ্য তথ্য।


    লজ্জায়, অবরুদ্ধ কান্নায় একের পর এক পৃষ্ঠা ওল্টাই, আর কেবলই মনে হয়, কেউ এসে চিৎকার করে বলুক – এ মিথ্যে মিথ্যে মিথ্যে।


    মানুষের অমানবিক প্রবৃত্তিতেই সংঘটিত হয় গণহত্যা। সেই কালো ইতিহাস একদিন উঠে আসে সাদা আলোয়। চব্বিশ বছর পরে এভাবে সমস্ত প্রামাণ্য বিশ্বাস্য নথি-সহ উঠে এল মরিচঝাঁপি।


    এ লজ্জা কোথায় লুকোব! ইস! আমি যে ভারতীয়, এই বাংলারই একজন। আর কী আশ্চর্য, মরিচঝাঁপি এই বাংলাতেই। প্রগতিশীল বাংলায় ‘মরিচঝাঁপি’ নিয়ে একটা ঝড় উঠবে না!


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৫ আগস্ট ২০১৪ | ১৬৪৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • PM | 233.223.159.125 (*) | ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ১২:৩৯88317
  • সিকি কি কয়েন পেলো??? ঃ)
  • PT | 213.110.246.230 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:৫৫88329
  • "খুব সহজ - বামই নেই।"
    নেই-ই যদি তাহলে তারা কার হাত ধরল তাই নিয়ে এত বাজার গরম করা কেন?

    "কারও মনে হতেই পারে, বলার মত কিছুই ঘটে নি"
    উঁহু, পিটি অমন কথা কখনই বলেনি।
    পিটি বারংবার বলেছে যে সঠিক তদন্ত হোক তাতে সিপিএম দলটা যদি উঠে যায় যাক। আর সেই হিসেবে মরিচঝাঁপির চাইতে নন্দীগ্রামের ঘটনার তদন্ত করা সহজতর। সাক্ষী-অসাক্ষীরা অনেকেই এখনো বেঁচে আর তখনকার বিরোধী দল এখন ক্ষমতায়। কিন্তু তদন্ত আটকানোতে সন্দেহ-পিশাচদের সন্দেহ তীব্রতর হয়। নন্দীগ্রাম সম্পর্কে যা "তথ্য" বাজারে ছড়ানো হয়েছিল তার অনেকটাই কি মিথ্যে? সারদার তদন্ত আটকানো চেষ্টা সেইজাতীয় নষ্টামিরই প্রমাণ। তাই মরিচঝাঁপির সঠিক তদন্ত হলে গপ্পগুলো সত্যি প্রমাণ হবেনা সেই ভয়েই কি তিনো সরকার কোন তদন্ত করালো না? আর অতিবদ অতিবামেরাও কি সেইজন্য সেইসব দাবী নিয়ে বিশেষ নাড়া-ঘাঁটা করল না?

    "নেতাই কান্ডে একটাও লোক-মেয়ে-শিশু মরে নি।"
    আবার পিটির বক্তব্য বিকৃত করার অপচেষ্টা। দিনক্ষণ নির্ঘন্ট দিয়ে নেতাই সম্পর্কে একটা পোস্টিং করেছিলাম। তাতে "পোস্টিং হো তো এইস্যা" জাতীয় মন্তব্য এসেছিল শুধু।
  • Atoz | 161.141.84.164 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:০৩88330
  • এইসব নোটা ফোটা করে কোনো কি লাভ হয়? সেই তো কোনো না কোনো পার্টিকে রাজ্য সামলাতে হবেই।

    তারচেয়ে বাপু খোলাখুলি নিজের পার্টি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন্না, জিতে গদীতে বসুন, রাজ্য সামলান।
    ঃ-)
  • PT | 213.110.246.230 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:১৪88331
  • নোটা নিজের রাজনৈতিক অবস্থানের দায়িত্ব এড়ানোর একটা চমৎকার পদ্ধতি। এটা এদেশে প্রধানতঃ শহুরে শিক্ষিত ও নৈরাজ্যবাদীদের চর্চার অতি প্রিয় বিষয়। এদের কথা ভেবেই বোধহ্য "চোখে আঙুল দাদা" নাটকটি লেখা হয়েছিল।
  • Atoz | 161.141.84.164 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:৩২88332
  • আরে, সেটাই তো! গোল গোল ঘুরে ঘুরে নোটা বাকুনিন প্যাঁচানোর চেয়ে সোজাসুজি নিজের পার্টি সংগঠিত করে একদম বিধিসম্মত রাজনৈতিক লড়াই লড়ে এঁরা আসুন না গদীতে, ভালোই তো হয়। রাষ্ট্রের যা যা কাজ, সেগুলো তাহলে রাষ্ট্রকে দিয়ে করিয়ে নিতে পারেন ভালোভাবে! কারণ নিজেরাই তো এনারা বলেন রাষ্ট্র কালই উবে যাবে না। যদ্দিন আছে তদ্দিন তাহলে তাই নিয়েই চলতে হবে।
  • কল্লোল | 111.63.72.207 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ১১:৫২88333
  • আমার তো কোনো পাট্টি নাই। এককালে নকশাল রাজনীতি করতাম। বহুকাল হলো সেই রাজনীতিকেও ভুল বলে মনে করি।
    কোন দলেই আস্থা নেই, তাই নোটা। নোটার ভোট যতো বাড়বে ততই দলগুলো চাপে থাকবে। কেউ না কেউ তো সরকারে যাবেই। তাতে কিই বা আসে যায়। সকলেই ক্ষমতার রাস্তায় চলবে। তাদের উপর মানুষের চাপ (পড়ুন নোটার চাপ) থাকুক এটাই চাই।

    আপনাদের আবার এতে অস্বস্তি হয়, তাই বারবার কোন একটা খোপে ঢুকতে বলছেন আমায়। ও আপনাদের খেলার নিয়ম। ও খেলায় আমি নেই।
  • PM | 193.89.150.128 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩২88343
  • এখনো পর্য্যন্ত সব ভোটে নোটার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে । তো নোটা পার্টি কে সিপিয়েমের মত হেরো পাট্টি বলা যাবে?
  • কল্লোল | 125.242.161.180 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫০88344
  • নোটা নিয়ে উপরের মতের (জটাশঙ্কর ওঝা আর ঃ)র) সাথে আমি সহমত নই। এটুকুই।
  • জটাশঙ্কর ওঝা | 99.0.104.128 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৫০88345
  • আমার মতের কোন অংশের সাথে সহমত নন?
    আপনি কি সব সময়ই নোটা অ্যাডভোকেট করছেন না?
  • সিকি | 132.177.86.77 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৫৮88346
  • জটাশঙ্করের পুরো বক্তব্যটাই একটা একপেশে ধারণা থেকে লেখা, যার সঙ্গে আমি সহমত নই - "১২০ কোটির দেশে কেউ যদি ঠিক করে রাখে উপরোক্ত ১২০ কোটির যে কেউ দাঁড়ালেই সে নোটা টিপবে, "

    এমন কথা কেউ বলেছে বলে মনে হয় না।
  • জটাশঙ্কর ওঝা | 99.0.104.128 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৪:১৬88347
  • বাঃ বেশ ভাল কথা, তার মানে কোন কোন কেন্দ্রে ওরা ভোট দেবেন। প্রশ্ন কাকে? কোন দলীয় প্রার্থীকে? আর ওরকম কাউকে ভোট দিলেই কি সরকারের ধারণার ওপর আস্থা প্রকাশ করা হচ্ছেনা? তা কি কল্লোলদার নৈরাজ্যের ধারণার সাথে যায়। একটা কথা বুঝে রাখা ভালো নোটায় ভোট দিলেই কেউ নোটাপন্থী হচ্ছেননা।
  • b | 24.139.196.6 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৪:৪৯88348
  • ক্ষমতায় এলেই তাকে ভয় দেখানো নয়, কেউ যখন ক্ষমতার অপব্যবহার করবে, সে গণতন্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হলেও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবার অধিকার নিশ্চয় আছে। এটা কি গণতন্ত্রের প্রতি অনাস্থা, নাকি একটি বিশেষ সরকারের একটি বিশেষ ইস্যুর প্রতি অনাস্থা?(প্রশ্নটা রেটরিক্যাল)

    যদ্দূর জানি নরেন মোদীর "সবার জন্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট" এই ইস্যুর বিপক্ষে কল্লোলদা এখনো কাউকে কালো পতাকা দেখান নি।
  • সিকি | 132.177.234.50 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:২০88349
  • সরি টু সে, জটাশঙ্কর মনে হচ্ছে নির্বাচন পদ্ধতিটাই ঠিক বুঝে উঠতে পারেন নি।
  • জটাশঙ্কর ওঝা | 99.0.104.128 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:২৮88350
  • আমি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে কোন কথাই বলিনি। আমি তাদের নিয়ে বলছি যারা সর্বাবস্থাতেই নোটায় ভোট দিতে বলছেন যেমন কল্লোলদা, তার আগের পোস্ট পড়ুন। নোটার আক্ষরিক অর্থ নিয়ে কথা হচ্ছেনা।

    ক্ষমতায় এলে কেউ অপব্যবহার করবে কিনা তা আগেই কিরূপে জানা যাবে তাও এক প্রশ্ন বটে। টাইমমেশিন এসে গেছে নাকি বাজারে!
  • PT | 213.110.243.24 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:৩০88351
  • আরে বাবা কর্নাটকের নির্বাচিত ২০০৮-২০১৩-র বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেই বা কে কতবার রাস্তায় নেমেছে?
  • কল্লোল | 111.63.200.22 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:০৫88335
  • atoz।
    হয়তো আমি বাংলা ততো ভালো জানি না। আমি তো কোথাও স্ববিরোধ পেলুম না।
    আপনে দয়া করে দেখিয়ে দিলে আলোকিত হই।
  • - | 109.133.152.163 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:১২88336
  • আমি যা বুঝছি, কল্লোল, আপনি নোটার খোপে ঢুকে বসে আছেন আর বলছেন আমি কোনও পক্ষে না! এটা স্ববিরোধী শোনাচ্ছে না?
  • সিকি | 135.19.34.86 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:৪২88337
  • অরিজিৎ থাকলে এইখানে মুজতবা আলি আওড়াত। সেই পাঠান :)
  • কল্লোল | 125.185.147.70 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৯:৩৮88338
  • ড্যাশ, আপনি কি Atozও?
    নোটা মানে কি? আমার ধারনা আপনি জানেন না বা জানলেও ভুল জানেন।
    ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে যারা তাদের কাউকেই (কোন প্রার্থী/দলকেই) আমার পছন্দ নয়। আমার তাদের কারুর ও/বা সেই সব দলগুলোর ওপর আস্থা নেই। এতোদিন এরকম অবস্থায় মানুষ হয় ভোট দিতে যেতো না বা উল্টোপাল্টা ছাপ মেরে ভোট নষ্ট করে আসতো। এখন আমরা আর একটা বোতাম বা খোপ পাচ্ছি যাতে লেখা আছে "কাউকেই পছন্দ নয়"। সেত বোতাম/খোপটিই নোটা ( none of the above)।
    অর্থাৎ নোটা মানে কোনো দলের উপর আস্থা নাই।
    এবারে বোঝান স্ববিরোধীতা কোথায়?
  • সিকি | 131.241.127.1 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ১০:০৫88339
  • সেই তো কেস, কল্লোলদা :) তুই কি অ্যানার্কিস্ট? - না, আমরা অ্যানার্কিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবো। ড্যাশ বোধ হয় সেই পাঠানের লাইনে ভাবতে চাইছেন।
  • জটাশঙ্কর ওঝা | 99.0.104.128 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ১০:৪১88340
  • নোটার মানে বুঝতে বোধহয় ভুল হচ্ছে। যদি কেউ বলে কোন ভোটেই কাউকেই আমার পছন্দ নয় তাহলে তার জন্য নোটা নয়। নোটা হল সেই সব সাধারণের জন্য যারা হয়ত রামের বদলে শ্যাম হলে ভোট দিত। অনেক সময়ই হয় যে দুজনই আসামী সেক্ষেত্রে নোটা সাধারণ মানুষকে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা দিচ্ছে। নোটা নৈরাজ্য প্রোপাগেট করার জন্য তৈরি হয়নি বলেই মনে করি।
  • সিকি | 131.241.127.1 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ১১:০৪88341
  • NOTA মানে None Of The Above। উপরোক্ত কাউকেই আমার পছন্দ নয়। এটি একটি 'না'-ভোট, সুতরাং এটি এমন কারুর জন্য নয় যে হয় তো রামের বদলে শ্যাম হলে "ভোট দিত"। ভোট সে দিচ্ছেই, এবং ভোট দিয়ে জানাচ্ছে কাউকেই আমার পছন্দ নয়।

    নোটার হিসেব আলাদা করে রাখা হয়, প্রকাশ করা হয় না, এবং প্রার্থীর জেতার জন্য নোটা কাউন্ট করা হয় না। কোনও কেন্দ্রে একশো জন ভোটারের মধ্যে যদি নিরানব্বই জন নোটায় বোতাম টেপেন এবং একজন একটি প্রার্থীকে ভোট দেন, তবে সেই একটি ভোটের বেসিসে সেই প্রার্থীই জিতবেন। কিন্তু তিনি জানবেন যে এই কেন্দ্রের নিরানব্বই শতাংশ লোক তাঁকে প্রার্থী হিসেবে পছন্দ করেন নি। প্রার্থী জানবেন, প্রার্থীর পার্টিও জানবে।
  • :) | 212.79.203.43 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ১২:১৮88342
  • মুশকিল হল ১২০ কোটির দেশে কেউ যদি ঠিক করে রাখে উপরোক্ত ১২০ কোটির যে কেউ দাঁড়ালেই সে নোটা টিপবে, তাহলে সে এই ভোট পদ্ধতি, সংসদীয় গণতন্ত্র পদ্ধতির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছে। সে ভোট ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছে। এটা যদি কেউ করতে চায় তবে সে ভোটে অংশ গ্রহণ না করলেই ভালো করবে।

    কেউ যদি মনে করে যে কেউ ক্ষমতায় আসুক তাকেই সে ভয় পেতে বাধ্য করবে, তাহলে সে নিজেকে একটি ভয় দেখানো র ইনস্ট্রুমেন্ট হিসেবে দেখতে চাইছে। সেক্ষেত্রে সে নিজেকে গণতন্ত্রের বিপ্রতীপে একটি অন্যধারার শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিতে চায়, যে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে-ই নির্বাচিত হোক, তারই বিরুদ্ধাচারণ করার অধিকার চায়। এটি একটি ভিন্ন রাজনীতি। (নৈরাজ্যনীতি?) সে স্পষ্টতঃই সেই ভিন্ন রাজনীতির অংশ। সুতরাং তার রাজনৈতিক দর্শন, গণতন্ত্রকে চাপে রাখার, ভয় দেখানোর, বাগড়াপন্থার দর্শন কে সে নোটা নামক বোতামটির মাধ্যমে বিম্বিত করতে চায়। যে কারণে বিভিন্ন পার্টির বোতামের মতই সে নোটা বোতামেও আরো আরো বেশি জনসংগঠন চায়। উদ্দেশ্যহীন, লক্ষ্যহীন, নন-কনস্ট্রাকটিভ এই বাগড়াপন্থার মূল সুর এরকম - আমার পচ্ছন্দ মত কাজ না হলেই আমি সব ভন্ডুল করে দোবো।

    যদি সে এই ১২০ কোটি মানুষের কোনো একজনের প্রতিও তার পছন্দ না জানাতে পারে, তবে সে নিজেকে ক্ষমতার অংশ করতে চায় শুধু এই বিরুদ্ধচারনের মাধ্যমে। সে গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। গণতন্ত্রবিরোধী। তার রাজনীতি বর্তমান গণতান্ত্রিক ভারতীয় পরিকাঠামোর সঙ্গে একটি তাত্ত্বিক বিতর্ক এবং তার দার্শনিক অবস্থান কোনো নির্দিষ্ট ও পৃথক ট্রীটমেন্ট দাবি করে।
  • Atoz | 161.141.84.164 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ১২:২২88334
  • কল্লোল,
    আপনার এই উপরের ২৮ অক্টো ৫ঃ২২ঃ১৮ স্ববিরোধী। নিজেই আবার পড়ে দেখুন প্রথম প্যারাটা।
  • PT | 213.110.246.25 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩৮88373
  • আমার বক্ত্যব্যের কোন "বিলো দ্য বেল্ট" ইত্যাদি কিস্যু ব্যাখ্যা নেই। আমারও কারো ঊরুভঙ্গ করার কোন উদ্দেশ্যও নেই।

    আসলে বামেদের তাড়ানোর জন্য "যে আসে আসুক" বলে এক্দল লুম্পেন অপদার্থকে ক্ষমতায় আনার যে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা চালু হয়েছিল তার তাত্বিক মদতদাতাদের ভুলটা স্বীকার করে নিতে সমস্যা হচ্ছে। তার ওপরে তিনোকে আনার কাটা খালের পথ ধরেই বিজেপি পব-তে ঢুকে পড়ায় সমস্যাটা গুরুচন্ডালী আকার ধারণ করেছে। গোটা ব্যাপারটা না-গেলা-না-ওগড়ানো অবস্থায় যাওয়ায় এখন "নোটা" নামক (অ)রাজনৈতিক অব্স্থান নেওয়ার চেষ্টা চালু হয়েছে। "নোটা"-র আসল উদ্দেশ্য যাই থাক এটা এখন (রাজনৈতিক) দিশাহীন, হতাশাগ্রস্ত, ও নৈরাজ্যবাদী এবং/অথবা সুবিধাবাদীদের আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

    ব্যাঙ্গালোরে যত ফ্ল্যাগ নড়ছে, পব-তে তিনো তত হিংস্র হচ্ছে। আর ঐ গোলাপী প্যান্টী থেকে রবীন্দ্রনাথ কোন কিছু দিয়েই মোদীর ক্ষমতায় উত্তরণকে ঠেকানো যাচ্ছে না। আমরা যারা আধা-বুড়ো তারা সকলেই জানি যে এই জাতীয় ঘটনা অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতেও বিভিন্ন রূপ ধরে ঘটতে থাকে। তার প্রতিবাদ করলে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হচ্ছে এমনটি প্রমাণিত হয়না।

    এই প্রেক্ষিতে ক্রমাগত "ঘেউ ঘেউ" করার ঢাকপেটানো দাবী খুব ক্লান্তিকর লাগে। এই জাতীয় আত্মশ্লাঘার দাবীর প্রতি বক্রোক্তি কোন ব্যক্তির প্রতি নিক্ষেপ করিনি। এটা একদল "পরিবর্তনকামী" বাঙ্গালীর অসাধু রাজনৈতিক অবস্থানকেই নতুন করে প্রকটিত করছে।
  • কল্লোল | 111.59.21.68 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪১88352
  • পিটি। না জেনে মন্তব্য করা এক সিপুয়েম দোষ।

    বি। সবার জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তার জন্য মোদীকে কালো পতাকা? কেন? আপনার অবগতির জন্য, মোদীকে গুজরাট সংখ্যালঘু হ্ত্যাকান্ডের পর কালো পতাকা দেখাতে গিয়ে বাম পুলিশের গুঁতো খেয়েছিলুম ক্যালকাটা ক্লাবের সামনে। সঙ্গে নানান বন্ধুদের মধ্যে কিছু সিপিএম সমর্থকও ছিলেন, তাদের একজন ইমানুল হক।
  • কল্লোল | 111.59.21.68 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৫88353
  • আর, হ্যাঁ। শুনলুম লেভেল ক্রসিংএর খানিকটা আগে প্রধান ফাটকের কাছে রাস্তা নাকি খুব বেহাল। বোধহয় কেউ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে নামতে ওরকম হয়েছে!!!!

    অপুনি আচারি ধর্ম ইঃ ইঃ ইঃ
  • সিকি | 132.177.216.220 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৫88374
  • লস্ট কেস।
  • PT | 213.110.246.230 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪২88354
  • বুঝ্লুম যে কর্ণাটকের নির্বাচিত বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিপুল বিদ্রোহ হয়েছিল যা কিনা সংবাদ মাধ্যমের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে।

    অনেকে টোকেনিস্মকে নিছক ভন্ডামি বলেই মনে করে।
  • b | 135.20.82.164 (*) | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৫88355
  • ও কল্লোলদা, আপনাকে সাপোর্ট করতে গিয়ে আপনারই গুঁতো খেলাম? কইতেছিলাম যে "কল্লোলের এজেন্ডা যে ক্ষমতায় আসুক তাকেই সব সময়েই ভয় দেখানো/প্রতিবাদ করা ..." এটা একটা ব্ল্যাংকেট স্টেটমেন্ট এবং যিনি বলছেন তিনি ভুল বলছেন। প্রতিবাদ ইস্যুভিত্তিক হবে। গুজরাট দাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যেতে পারে, কিন্তু সার্বজনীন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে নয়, যদিও দুটি ক্ষেত্রেই একই কুশীলব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন