এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  রাজনীতি

  • ছত্তিশগড়ে মাওবাদঃ এক বিহঙ্গম দৃষ্টি -- প্রথম কিস্তি

    রঞ্জন রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | রাজনীতি | ০৬ আগস্ট ২০১২ | ২২৭৭ বার পঠিত
  • স্টেটস্‌ম্যান পত্রিকায় উনসত্তর সালের গোড়ায় একটি ছোট্ট খবর বেরিয়েছিল --- বস্তারের সদর জগদলপুর শহরে মাওবাদী পোস্টার দেখা গেছে, পুলিশ সন্দেহ করছে বাইরে থেকে আসা কিছু যুবককে। শেষে ধরা পড়লেন ইস্পাতনগরী ভিলাইয়ের দুই বাঙালী। তাঁদের কিছুদিন জেলহাজতে রাখা হল। একজন অল্পদিনেই মুচলেকা দিয়ে বেরিয়ে এলেন। অন্যজন কিছুদিন পরে জামিনে ছাড়া পেলেন। ইতিমধ্যে কোলকাতার মনুমেন্ট ময়দানে মে দিবসের জনসভায় কানু সান্যাল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) গঠনের ঘোষণা  করেছেন। এবার রাজ্য কমিটিগুলো গঠনের পালা । তখন ছত্তিশগড় বিশাল মধ্যপ্রদেশের অন্তর্গত একটি  অঞ্চল মাত্র। আর কেরালার চেয়ে সামান্য বড় বস্তার ছিল ছত্তিশগড়ের একটি জেলা।  কাজ শুরু হল ভিলাইয়ের ইস্পাত কারখানার কিছু কর্মচারি ও অন্যান্য পেশার লোকজনকে নিয়ে। এদের মধ্যে বেশ ক'জন বাঙালী, কিছু অন্ধ্র প্রদেশ থেকে আসা তেলেগু আর জনাদুই  মালয়ালী। শুরুতেই ফাটল ধরল। জগদলপুর থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়া যুবক কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিযোগ করলেন যে মুচলেকা দিয়ে বেরিয়ে আসা অন্যজন পার্টিবিরোধী কাজ করেছেন। জবাবে অন্য যুবকটির বক্তব্য ছিল যে প্রাথমিক প্রচারের স্তরে ক'টি পোস্টার মেরে খামোকা জেলের ভেতরে বসে থাকা আসলে সময় ও শক্তির অপচয়। কেন্দ্রীয় কমিটি যুবকটিকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করল। একদশক পরে ওই যুবকটিকে গোটা দেশ চিনল ছত্তিশগড়ের খনি এলাকার  অন্য ঘরানার শ্রমিকনেতা হিসেবে, -- তাঁর নাম শংকর গুহনিয়োগী। "দেশব্রতী" পত্রিকায় প্রকাশিত ছোট্ট বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের কোন কারণ বলা হয় নি। আসল কারণ ছিল চারু মজুমদারের ট্রেড ইউনিয়ন থেকে দূরে থাকার নির্দেশের বিরোধিতা করা। বিপ্লবের সময় ট্রেড ইউনিয়ন নামক কথিত রূপে জঙ্গি অর্থনীতিবাদের আঁতুড়ঘর গণসংগঠন থেকে দূরে থাকাই কাম্য --- এহেন সরল ফরমান গুহনিয়োগী মেনে নিতে  পারেন নি।

        স্বাভাবিকভাবে অভিযোগকারী যুবক হয়ে গেলেন ভিলাই কেন্দ্রিক ছত্তিশগড়  আঞ্চলিক কমিটির সেক্রেটারি। বীরভূমের এক সম্ভ্রান্ত ভূমধ্যকারী পরিবার থেকে আসা যোগেন্দ্রনাথ রায় বা যোগী রায় বাইশে এপ্রিল ১৯৭০, লেনিনের জন্মদিনে প্রকাশ্য ঘোষণা করে ভিলাই স্টীল প্ল্যান্টের লোভনীয় চাকরিটিতে ইস্তফা দিলেন। বল্লেন যে উনি সিপিআই( এম-এল) দলে সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। ফলে প্রথম দিন থেকেই ওঁর পেছনে পুলিশ লেগে গেল। ভিলাইয়ের পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে যোগী রায় চলে গেলেন সরগুজা জেলার চিরিমিরি খনি অঞ্চলে। সেখানে বাঙালী ও স্থানীয় যুবকদের নিয়ে প্রায় একবছরের মধ্যে গড়ে তুললেন একটি সংগঠন। স্বপ্ন দেখলেন যে পাহাড়-জঙ্গল অধ্যুষিত এই এলাকা আর পাশের দক্ষিণ বিহারের পালামৌ-রাঁচি এলাকা নিয়ে গড়ে তুলবেন এক গেরিলা জোন।

         ইতিমধ্যে চারু মজুমদারের নির্দেশিত খতম অভিযান বঙ্গে ও বিহারের ব্যাপক এলাকায় আলোড়ন তুলেছে।  দরকার শুধু এখানেও শুরু করা। খনি এলাকায় সুদখোরদের নাম নিয়ে "খতম" এর লিস্টি বানানো হল। এবার হাতিয়ার কিনতে হবে। একজন সঙ্গীকে নিয়ে যোগী রায় চললেন ভিলাই। যদিও ভোল পাল্টে ফেলেছিলেন , হাঁটার চাল বদলেছিলেন, কিন্তু ভিলাইনগরে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সময়ে সাদা পোশাকের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে চিরিমিরি নিয়ে  যায়। ধরপাকড় শুরু হয় দুটো শহরেই। গ্রেফতার হন ভিলাইয়ে নকশালপন্থী সংগঠনের প্রায় সবাই। তখন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্ম নিচ্ছে। ইন্দিরা সরকার বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা-অন্ধ্র জুড়ে ব্যাপক দমন অভিযান চালাচ্ছেন। পুলিশের থার্ড ডিগ্রি যোগী রায়ের মনোবল ভাঙতে পারেনি। কিন্তু কয়েকবছর পরে ছাড়া পেয়ে দেখলেন চারু মজুমদার নেই। সিপিআই( এম-এল) এর সর্বভারতীয় নেতাদের মধ্যে অধিকাংশই হয় জেলে, নয় এন্‌কাউন্টারে নিহত। বিহারে সত্যনারায়ণ মিশ্র আলাদা হয়ে নিজের উপদলকে আই এস ও মার্কামারা আসল বিপ্লবী পার্টি বলছেন। সরোজ দত্ত মারা গেছেন।

     যোগী রায়ের মনে পড়ল  চারু মজুমদার- সুশীতল রায়চৌধুরি বিতর্কে উনি চারু বাবু ও সরোজ দত্তের লাইনকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ কোলকাতার একটি নার্সিংহোমে যখন সুশীতল রায়চৌধুরি মারা গেলেন তখন ঘটনাচক্রে যোগী রায় কোলকাতায় উপস্থিত ছিলেন এবং ওনার শেষযাত্রায় কাঁধ দিয়ে ছিলেন ।

        এবার ছত্তিশগড়ের দিকে তাকিয়ে দেখলেন অধিকাংশ কমরেডই "খতম অভিযান সব সমস্যার সমাধান' গোছের ওয়ান-লাইনার সরলীকরণে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। প্রয়োগের ঝুলিতে রয়েছে কয়েকবছর আগে  রাজধানী রায়পুর শহর থেকে মাইল পঞ্চাশেক দূরে গুটুরিয়া গ্রামে এক বিজেপি সমর্থক মালগুজার( জোতদার) এর ওপর  অসফল হামলা। তিক্ত স্বাদ নিয়ে যোগী রায় ফিরে গেলেন জন্মভূমি বীরভূমের গাঁয়ে। আজ  সত্তরের বুড়ি ছোঁয়া যোগী রায় নিজের গাঁয়ের উন্নয়নমূলক কাজকর্মে নিবেদিত প্রাণ সমাজকর্মী। বিয়ে করেন নি, একাই একজন সহায়ককে নিয়ে সাধারণ জীবনযাপন করেন। নিজেদের পৈতৃক জমির অনেকটাই বিলিয়ে দিয়েছেন ভূমিহীনদের মধ্যে। সমাজপরিবর্তনের জন্যে হিংসার অনিবার্যতায় আজ উনি বিশ্বাস করেন না। ছত্তিশগড়ের মধবিত্ত শিক্ষিত স্বপ্নদর্শীদের  নকশালবাদী বিপ্লবের প্রচেষ্টায় এভাবেই যবনিকা পড়ল।

          কিন্তু , এই সময় ছত্তিশগড়ে মাথা তুলে দাঁড়াল প্রাক্তন নকশালপন্থীদের আর একটি ধারা। পার্টি গঠনের গোড়াতেই দল থেকে বিতাড়িত শঙ্কর গুহনিয়োগী চলে গেলেন ভিলাইয়ের ইস্পাত কারখানার লৌহ আকরিক সাপ্লাইয়ের খনি এলাকা রাজাড়ায়। সেখানে কিছুদিন চুপচাপ থেকে শিখলেন ছত্তিশগড়ি উপভাষা, নিজের নাম নিলেন শংকর লাল সাহু। বিয়ে করলেন স্থানীয় ছত্তিশগড়ি মজদুর নেতা সহদেব সাহুর বোনকে। লিখতে শুরু করলেন হিন্দি ও ছত্তিশগড়িতে। জন্ম নিল খনিজ ও বনসম্পদে পূর্ণ ছত্তিশগড় কিভাবে আলাদা হয়ে শ্রমিক-কৃষকদের পরিচালনায় একটি সমৃদ্ধ বিকশিত রাজ্য হয়ে উঠতে পারে তার গুহনিয়োগী-রোডম্যাপ। শংকর শুরু থেকেই খারিজ করেছেন গণ আন্দোলন বিহীন শ্রেণীশত্রু খতমের লাইন। কিন্তু, উনি বিশ্বাস করতেন শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় জঙ্গি আন্দোলনে। তাঁর নির্দেশনায় ভিলাইয়ে ব্লাস্ট ফার্নেস কর্মীদের ধর্মঘট স্টিল ম্যানেজমেন্টকে মাথা নোয়াতে বাধ্য করল-- কারণ, কিছু নির্ধারিত পিরিয়ডের বেশি বন্ধ থাকলে অকেজো হয়ে যাবে ব্লাস্ট ফার্নেস। বন্ধ  হবে ইস্পাত উৎপাদন। লোকসান অপরিমেয়। আবার বিখ্যাত সেতারী পন্ডিত বুধাদিত্য মুখার্জীর বাবা বিমল মুখার্জী, তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার (মাইনস্‌)কে লম্বা সময় ঘেরাও করে রাখল গুহনিয়োগীর শ্রমিক সংগঠন। বিরাট পুলিশবাহিনী ওনাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল কয়েকদিন পর। এরপর গুহনিয়োগীকে গ্রেফতার করতে এলে  সংগঠিত শ্রমিকেরা বাধা দিলেন। বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বন্দী করে রাখলেন পুলিশদলকে। এল বড়সড় বাহিনী, -- শ্রমিকনেতাকে গ্রেফতার করতে নয়, নিজেদের সাথী পুলিশকর্মীদের ছাড়িয়ে নিতে।সেটা সম্ভব হল গুলিতে ছ'জন মজদূর ঘটনাস্থলেই মারা যাবার পর। গুহনিয়োগী গ্রেফতার হলেন, নেগোশিয়েশনে ছাড়া পেলেন। ছত্তিশগড় মজদূর আন্দোলনে ওনার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হল। ওনার সংগঠন "ছত্তিশগড় মুক্তিমোর্চা" বা "ছ-মু-ম" আর তার লালটুপিধারী  ক্যাডারদের  দৃপ্ত কুচকাওয়াজ্‌ ছত্তিশগড়ের ভিলাই-রায়পুর-বিলাসপুর-কোরবা শিল্পবলয়ে মালিকদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করল। আবার ওনার লেখা ছত্তিশগড়ি জননাটক-গণসংগীত কিছু এলাকায় জনপ্রিয় হল। রাজাড়ায় শ্রমিকদের নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসার জন্য শংকর শুরু করলেন "শহিদী হাসপাতাল"। তার দায়িত্বে কোলকাতা থেকে এলেন ডঃ পুণ্যব্রত গুণ, প্রেসিডেন্সি কলেজের খ্যাতনামা স্ট্যাটিসটিকসের প্রফেসর ডঃ অতীন্দ্রমোহন গুণের ছেলে। মূলত: ওনার চেষ্টায় জনসাধারণ শিক্ষিত হতে লাগল কি করে গরীবেরা দামি ওষুধ না খেয়েও বৈকল্পিক শস্তা জেনেরিক নামের ওষুধ ব্যবহার করে  ( যেমন ক্যালপল-ক্রোসিনের বদলে প্যারাসিটামল নামের শস্তা কিন্তু বেশি কার্যকরী ওষুধটি কেনা) এবং শস্তায় পুষ্টিকর খাদ্য খেয়ে প্রিভেন্টিভ হেল্‌থ কেয়ারের প্রয়োগে সুস্থ থাকতে পারে। এর জন্যে এঁরা প্রকাশিত করতে লাগলেন দুই বা তিন টাকা দামে সরল হিন্দিতে লেখা আন্ত্রিক জ্বর-ম্যালেরিয়া-টিবি ইত্যাদি রোগের বিরুদ্ধে লড়ার জন্যে প্রাথমিক শিক্ষার বই। আর বিনে পয়সায় প্রশিক্ষিত করতে লাগলেন প্রিভেন্টিভ হেল্‌থ কেয়ারের জন্যে স্বেচ্ছাসেবীদের।

         সময়টা ছিল ভারতের পূর্ব-পশ্চিম জুড়ে নতুন ধরণের  শ্রমিক আন্দোলনের। মুম্বাই এলাকায় দত্তাসামন্ত, ছত্তিশগড়ে শংকর গুহনিয়োগী ও ধানবাদ খনি এলাকায় অরুণ কুমার রায়। আন্দোলনের একটি স্তরে এরা সবাই সংসদীয় রাস্তাকে ব্যবহার করার কথা ভাবলেন। দত্তাসামন্ত ও অরুণ রায় সংসদে গেলেন। গুহনিয়োগীর ছত্তিশগড় মুক্তিমোর্চা থেকে জনকলাল ঠাকুর বিধায়ক হলেন। নিয়োগী নিজে নির্বাচনে দাঁড়ান নি।

          কিন্তু এদের পরিণতি প্রায় একইরকমের হল। অরুণ কুমার রায় কয়েকবার প্রাণঘাতী হামলার থেকে বরাতজোরে বেঁচে গেলেন, মারা পড়লেন ঘনিষ্ঠ সহযোগী কমরেড চ্যাটর্জি। সুপারিকিলারের হাতে মারা গেলেন দত্তাসামন্ত ও শংকর গুহনিয়োগী।  উত্তরপ্রদেশের ভাড়াটে খুনি পল্টন মাল্লা , ভিলাইয়ের সিম্‌প্‌লেক্স কারখানার মালিকপরিবারের চন্দ্রকান্ত ও কজন সাঙ্গোপাঙ্গ নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাবাসের সাজায় দন্ডিত হলেও পাকা প্রমাণের অভাবে হাইকোর্টে ছাড়া পেয়ে গেল। আস্তে আস্তে ছ্‌ত্তিশগড় মুক্তিমোর্চা ভেঙে গেল, তারপর একদশকের মধ্যে মিলিয়ে গেল। ডঃ পুণ্যব্রত গুণ কোলকাতায় ফিরে এসে আন্দুলমৌরির কাছে "শ্রমজীবি হাসপাতাল' এ যোগ দিয়ে নিজের কাছ করে যাচ্ছেন। আজ ছত্তিশগড় পৃথক রাজ্য হয়েছে।  যাঁরা এর স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন হিসেবে শংকর গুহনিয়োগীকে এখনো লোকে মনে রেখেছে।

          কিন্তু সত্তরদশকের শ্রমিক-কৃষকের জঙ্গি আন্দোলনের ধারাটি বর্তমান ছত্তিশগড়ে অবলুপ্ত প্রায়।

    (চলবে)

    আলোকচিত্রঃ লেখক


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ০৬ আগস্ট ২০১২ | ২২৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • riddhi | 118.218.136.234 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০১:২৫90215
  • এই লেখাটা খুব ভাল লাগছে।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.170.149 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০১:৩৬90220
  • খুব সুন্দর লেখা রঞ্জনবাবু। এরকম মেদবর্জিত রচনা আজকাল বিরল। তবে প্রথম লাইনে 'মাওবাদী' পোস্টারের কথায়, তখন 'মাওবাদী' শব্দটি ব্যবহার হত কিনা জিজ্ঞাস্য।
  • h | 127.194.227.79 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৪:১৬90221
  • রঞ্জনদা, খুব ভালো লেখা। অসাধারণ লেখা। অনেক অভিনন্দন।
    হয়তো ক্যাজুয়ালি লেখা বলেই, আপনি সময় অতিক্রম করেছেন সহজে। ৭ নং প্যারা -
    'সময়্টা ছিল... "নতুন ধরণের" শ্রমিক আন্দোলনের'
    এই দাবীটা আপনি মূলত করছেন এইটা ধরে নিয়ে যেখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট এবং বড় মাপের ট্রেড ইউনিয়ন লিডার রা বড় ফেডারেশন গুলোর ছাদের তলায় এন্টায়ারলি কাটান নি। এই দাবীটায় কিছু ডিসক্লেমার দেওয়া উচিত বলে মনে করি। দত্তা সামান্ত ১৯৭২ এ কংগ্রেসের টিকিটেই বিধান সভায় ঢোকেন। ১৯৮৪ তে রাজীব বিরোধী টিকিটে লোক সভায় যান। তবে তদ্দিনে ১৯৮২-৮৩ র এক দেড় বছরের টেক্সটাইল স্ট্রাইক হয়ে গেছে। ৫৫-৬৭ কৃষ্ণ দেশাই ভীষণ ডাংগের কথা বা সিপি আই এর সেন্ট্রাল লিডারশিপের কথা শুনে চলতেন এই অপবাদ তাঁকে কেউ দেবেন না ঃ-)
    জর্জ ফার্নন্ডেজ সোশালিস্ট গোশ্ঠীর সঙ্গে থাকার সময়ে ভীষণ সকলের কথা শুনে চলতেন এটাও আমার মনে হয় নি, যা পড়েছি। সময়্টা প্রায় আর্লি পঞ্চাশ থেকে লেট ষাট।
    আপনি 'সময়টা' বলতে তাহলে কোন সময়টা বলছেন?
    ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের নেচার টা হল, মালিক পক্ষের উপরে বড় পোলিটিকাল প্রেসার তৈরির জন্য লাগে সেন্ট্রাল ফেডারেশন গুলো কে, বা লাগে তাদের আইনি এক্সপার্টিজ বা লেবার মিনিস্ট্রির সঙ্গে নেগোশিয়েট করার ক্ষমতা আর সলিডারিটি জোগাড় করার ক্ষমতা। আর সেন্ট্রাল ইউনিয়ন গুলোর লাগে তাদের লেজিটিমেসীর জন্য লোকাল কন্ট্যাক্ট এবং নেগোশিয়েশনে ধোকার জন্য তিনটে এজেন্সীর কাছে রেকগনিশন, রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার এবং লোকাল ম্যানেজমেন্ট। অতএব আমার বক্তব্য হল, বড় লোকাল ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা নানা ভাবে উঠে আসেন ঠিক ই কিন্তু তাঁদের সঙ্গে অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়নের ঐতিহাসিক সম্পর্কটা শুধু তাঁরাই নিয়ন্ত্রন এর দায়িত্ত্ব নিলে সব মিলিয়ে স্ট্রাইকিং পাওয়ার বা নেগোশিয়েসন পাওয়ার এর খুব উন্নতি হয় না। শুধু তাই না, তখন ই এদের ম্যানেজমেন্ট গুলো বা মিডিয়া পাত্তা দেয় যখন তাঁরা মরাল ভয়েস হলেও বা তাঁদের শক্তি সীমিত থাকে। বিটি আর এর মৃত্যুর পরে এ কে রায় এর প্রবন্ধটা স্টেটস্ম্যানে যেটা বেরিয়েছিল, বা আর্থার স্কারগিল সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইভ্যালুয়েশন পরে যা হয়েছে, তাতে এই কথাটা র একটু অন্য ভাষায় উল্লেখ আছে। দত্তা সামান্থ এর ৮২ স্ট্রাইক ইনকন্ক্লুসিভ ভাবে শেষ হয়েছিল হয়তো মনে আছে। জর্জ ফার্নান্ডেজ এর মত অপ্রিয় তিনি হন নি, কিন্তু তাঁর পরিচালিত ঐ আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার অটোর বেলাকার যে সাফল্য এসেছিল সেটা ধরে রাখা জায় নি।
    শংকর গুহ নিয়োগী , এ কে রায়, দত্তা সামান্ত প্রণম্য নমস্য ব্যক্তি কিন্তু আপনি একটু চিন্তা করে বলবেন এইটে আমি মোটামুটি ওভারল ঠিক বলেছি কিনা।
    আরেকটা লাস্ট পয়েন্ট, আন্তর্পার্টি কলহ , ফ্যাকশানালিজম, সেক্টারিয়ানিজম এত কম ও বিরক্তিকর বাম্পন্থার প্রায় সব ফর্মের ইতিহাসে, যে সেটাকে ঐ জোগী রায় সুশীতল চৌধুরির শেষ সময়ে কাছে ছিলেন, এই খবরটা কে মানবতার উদা হিসেবে না দেখালেও পারতেন। ইন্টারেস্টিং অ্যানেকডোট, কিন্তু সত্যি বলছি তাতে জটিল, আনকাইন্ড, ভয়ানক, ক্রুয়েল ফ্যাকশানালিজম এর দায় থেকে বাম্পন্থার ইতিহাস কে মুক্তি দেওয়া ঠিক না। কারো উপকার হয় নি, যাঁরা টেক্সটাইল মিল গুলো বেচে ফ্ল্যাট করেছেন তাঁরা বা সমগোত্রীয় রা ছাড়াঃ-))
  • h | 127.194.227.79 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৪:১৮90222
  • কম=কমন
  • h | 127.194.227.79 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৪:২৮90223
  • লাস্টলি, ট্রেড ইউনিয়ন এ পোলিটিকাল অ্যাফিলিয়েশন না থাকলে, তার রেটোরিক এ পোলিটিকাল বক্তব্য থাকে না সেটা ও না। অতএব এই সম্ভাব্য অ্যাসোসিয়েশন এবং সেলিব্রেটেড ডিসোসিয়েশন, দুটি র ই নানা ধরণের কনটেক্সচুয়াল কারণ থাকে, সবটা আন্দোলনের বাইরে থেকে বলা সম্ভব না। যেমন ধরুন ই পি ডাব্লিউ এর লেখাটায়, মারুতি ওয়ার্কার দের চার্টার হিসেবে যে দাবীর উল্লেখ আছে তার অন্তত একটি দাবী খুব ই পোলিটিকালি খুব ই জেনেরিক। শ্রমিক এর যারা উপকার জেনুইন লি চাইছেন, তাঁরা না না বাওয়ালে ঐ দাবীটি কেন রাখতে গেলেন, তার কারণ বাইরে থেকে বোঝা মুশকিল। আমার দেখার ভুল ও হতে পারে।
    তবে এতে ইতিহাস টা, আইনি নেগোশোয়েসন ফ্রেমওয়ার্ক টা বদলায় না।
  • Anirban Maity | 126.193.141.214 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৫:০৪90216
  • অসম্ভব ভালো লেখা , শঙ্কর গুহনিয়োগী কে খুব কাছ থেকে দেখলাম, আরো জানার ইচ্ছে রইলো ।।।
  • সুশান্ত কর | 127.198.59.244 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৫:১৪90217
  • ভালো লাগছে, লিখে চলুন!
  • শুদ্ধ | 127.194.246.226 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৭:৪৮90218
  • পড়ে চলেছি রঞ্জনদা।
  • কান্তি | 212.90.106.240 (*) | ০৭ আগস্ট ২০১২ ০৮:৩০90219
  • খুব ভাল লাগছে। পরের কিস্তির জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকলাম।
  • DB | 125.250.179.41 (*) | ০৮ আগস্ট ২০১২ ০২:১৮90225
  • ra`Njanabaabu,
    aapanaara lekhaara anuraagi paThaka aami bahukaala Jaaba`t . bartamaana lekhaaTi aamaara aagraha baarhiye dila. balaaibaahulya eTi ekaTi gurutwapurNa dalila . adheera aagrahe base railaama parabartI kistira apexaaya
  • h | 213.99.212.53 (*) | ০৮ আগস্ট ২০১২ ০৫:৪৫90224
  • আরেকটা দিক, আপনার প্রবন্ধটা খুব ভালো বলেই হয়্তো চোখে পড়ছে। আমি জানি না কেন, তবে আমার ধারণা যে প্রবন্ধ একটা সাবজেক্ট এরিয়া তে পাঠক এর কমন উইসডম কে চ্যালেঞ্জ করে খানিকটা সেইটা প্রবন্ধ হিসেবে কোন ভাবে একটা লেভেলে পৌঁছয় যেটা সচরাচর সাপ্তহিক ফিচারে দেখা যায় না। ছত্তিশগড় মানেই মাওবাদী আন্দ্লন নয়, তার একটা অন্য ইতিহাস ও আছে এই টে এস্টাবলিশ করা যদি আপনার মূল উদ্দেশ্য হয় সেটাতে আপনি একশো বার সফল তবে দু-তিনটে ক্ষেত্রে প্রচলিত উইসডম কে আপনি চ্যালেঞ্জ করেন নি। যদিও চাইলেই করতে পারতেন। একটা হল, ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন এর ফলেই ম্যানুফাকচারিং এর বারোটা বেজেছে এই ধারণা কে আপনি চ্যালেঞ্জ করেন নি। দ্বিতীয়তঃ বড় ব্যক্তি নেতা কেন্দ্রিক ট্রেড ইউনিয়ন এর বাড় বাড়ন্ত র পরেই কেন গোটা ট্রেড ইউনিয়ন মুভমেন্টে ভাটার টাকান, আর 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট' ইউনিয়ন এর পোলিটিকাল রেটোরিক এর ধরা টা গুহনিয়োগী আর দত্তা সামন্ত দের আমল থেকে বদলালো কিনা, হোয়াইট কলার ইউইয়ন যেগুলো থেকে এ কে রায় স্বয়ং উঠে এলেন, তার অবস্থা কি, সেটা নিয়ে আলোচনা করেন নি, আর নতুন মাইনিং অ্যাক্ট আর বনাঞ্চল অ্যাক্ট এবোঙ্গ লেবার রাইট্স এর ইরোশন আর ক্যাজুআলাইজেশন নিয়ে এক্টা দুটো বাক্য দিলে পারতেন।
    যা লেখেন নি তাই নিয়ে আলোচনা হয় না, সমালোচনাও হয় না সুতরাং দুঃখিত, হয়তো পরের কিস্তিতে লিখবেন। তবে কাউন্টার ইনটুইশন এই প্রসঙ্গে কিচু গড়ে তুলতে না পারলে পাঠক ট্রেড ইউনিয়ন মানেই জুজু আর ব্যক্তি হিরো সংগঠন মানেই জালি এই ধারণা গুলো থেকে জিন্দেগীতে বেরোতে পারবে না। নিজেকে নিজে চ্যালেঞ্জ করার রসদ পাবে না। এইটা যদি একটু বিচার করেন।
  • Abir Das | 85.142.219.238 (*) | ০৮ আগস্ট ২০১২ ০৮:৪১90226
  • রঞ্জন বাবু, লেখাটা মনোযোগ সহকারে পড়লাম। আমি নিজে বীরভূমের সেই গ্রামটির (যেখানে যোগী রায়) থাকেন ছেলে হয়েও এতটা বিশদে জানতাম না যোগী দাদুর ব্যাপারে । হ্যা আমি ওনাকে যোগী দাদু বলেই সম্বোধন করি। উনি একটা ভয় ও শ্রদ্ধা মিশ্রিত কিংবদন্তিসম ব্যাপার কির্ণাহারে। সেই কারণেই কাউকে ওনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সঠিক কিছু জানা যেত না। যেকোনো কিংবদন্তির ক্ষেত্রেই যা হয়ে থাকে তাই হত। বিভিন্ন লোক বিভিন্ন ভার্সন দিত। ছোট থেকেই ওনাকে দেখে এসেছি, একজন শীর্ণকায়, দাড়িওয়ালা কিন্তু বলিষ্ঠ মানুষ হিসেবে। অত ছোটতে যখন অত কিছু বোঝার বয়স হয়নি, তখনও মনে আছে, এটা ভেবে আশ্চর্য হতাম যে, এই বুড়ো লোকটা কি করে এইরকম গটগট করে হেটে যায়? আর যাদের দাদু বলি তারা তো কেও এরকম নয়। 'ঋজু ভঙ্গিতে হেটে যাওয়া' কথাটা যখন শুনলাম, প্রথমেই এনার কথা মনে হয়েছিল, বিশ্বাস করুন, কোনো অল্পবয়সীর কথা মনেই আসেনি। এখনো দেখেছি, গ্রামের মানুষের কি অসীম শ্রদ্ধা মানুষটির প্রতি। আমাদের ওখানে একটি মুটিয়া-মজদুর ইউনিয়ন আছে, যাতে উনি কিছু একটা পদাধিকারী। কিন্তু, সেটাই সব নয়, সেখানকার মুটিয়া-মজদুররা যেকোনো সমস্যায় তার কাছে ছুটে যায় দেখেছি। ওনার বাড়ির খুব কাছে একটা টিউশন পড়তে যেতাম আমি, এমনকি আমার প্রাইমারি স্কুলটিও ওনার বাড়ির কাছে। মাঝেসাঝে ওনার বাড়ির পাচিলের বাইরে ঝুকে পরা কামরাঙ্গা গাছটি আমাদের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেত না। অবশ্য পাচিলের ওপরে ওঠার সাহস হত না, কি জানি বাবা যদি ধরে নিয়ে গিয়ে ওই মানুষটার সামনে নিয়ে চলে যায়? ভয়েই প্যান্ট ভিজে যাবে!!
    যাই হোক মানুষটার সম্বন্ধে জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো। শুধু তাই না, এই মাওবাদ এর এই ইতিহাসটাও খুব ইন্টেরেস্টিং লাগছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। শেষে একটা প্রশ্ন, (আপনার পদবি ও যোগী বাবুর পরবর্তী জীবন সম্বন্ধেও এতটা ডিটেল দেখে প্রশ্নটা করছি)।আপনি কি কোনো ভাবে কীর্ণাহার এর সঙ্গে জড়িত?
  • মনজুরুল হক | 212.79.21.7 (*) | ০৯ আগস্ট ২০১২ ০৬:১০90227
  • ইন্টারেস্টিং ! লেখাটি ভালো লেগেছে খুব 'পোক্ত' করে 'নিজস্ব মূল্যায়ন' না করায়। পরের পর্বের অপেক্ষায়....
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 (*) | ১০ আগস্ট ২০১২ ০২:৩৬90231
  • রঞ্জন রায়'কে সাধুবাদ জানাই-- প্রাণবন্ত ভাষায় ছত্তিশগড় তথা তৃণমূল নকশালাইট নেতাদের আদ্যপান্ত তুলে ধরার জন্য। এ নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিশদ জানার কৌতুহল বোধ করছিলাম। যোগী রায় বা শঙ্কর গুহ নিয়োগী দুজনেই নকশালবাড়ি আন্দোলনের আত্নত্যাগী বিপ্লবী, তাদের দেশেপ্রমকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। তাদের জন্য রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।...

    তবে সমাজ বিপ্লবের ছাত্র মাত্রই জানেন, আত্নত্যাগই শেষ কথা নয়; বরং গোষ্ঠিবাদী বিপ্লবের চর্চা মারাত্নক আত্নঘাতি, সংক্ষেপে নকশালবাদী। ইতিহাসের সর্বত্র এর নখরের গভীর ক্ষত রয়েছে, যার অনেক স্থান থেকেই এখনো রক্ত ঝরছে। ...

    সাতের দশকে এপারে বাংলাদেশেও আছড়ে পড়েছিলো নকশালবাড়ি আন্দোলনের ঢেউ। মাওবাদী গেরিলা আদর্শে উজ্জীবিত হাজার হাজার তরুণ বিপ্লবের আগুনে অকাতরে ঝাঁপ দিয়েছিলো। এর প্রধান একটি ধারা ছিলো সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বাধীন সর্বহারা পার্টি। সরাসরি চারু মজুমদারের "খতমের লাইন" ধারণকারী চীনপন্থী কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন ধারা-উপধারা তো ছিলোই।

    এ নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে মুক্তমনা ডটকম-এ একটি নোট লিখেছিলাম "সিরাজ সিকদার: অন্য আলোয় দেখা"। সেটি পড়া যাবে এখানে http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=7133

    অন্যদিকে বাংলাদেশে সম্ভবত এ পর্যন্ত সবচেয়ে সফল মাওবাদী গেরিলা নেতা ছিলেন এমএন লারমা এবং তার উত্তরসূরিরা। এ নিয়ে আরেকটি পৃথক নো্ট "গেরিলা নেতা এমএন লারমা" http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=7209

    চলতি ধারাবাহিকটির পরের পর্বের অপেক্ষায়। শেষ পর্বে এই লেখার তথ্যসূত্রসমূহ সংযুক্ত হবে বলে আশা করছি। অনেক ধন্যবাদ।
  • ranjan roy | 24.96.101.81 (*) | ১০ আগস্ট ২০১২ ০৫:০৫90228
  • রূপংকরদা,
    আমাকে বাবু নাই বললেন। আর ঠিকই বলেছেন। তখন "মাওবাদী" না বলে বলা হত "নক্সালবাদী" বা নক্সালাইট।
  • ranjan roy | 24.96.101.81 (*) | ১০ আগস্ট ২০১২ ০৫:২০90229
  • আবির দাস,
    যোগীদার কথা শুনে খুব ভাল লাগল। ছিপছিপে চেহারার রূপবান ব্যাচেলর যোগী রায় প্রথম জীবনে খুব শৌখিন ছিলেন। ভিলাইয়ে ওনার বন্ধুদের স্যুটের কাপড় কিনতে হলে বা ড্রইংরুমের ফার্নিচার কিনতে হলে ওনার পছন্দের ওপরই নির্ভর করত। কিন্তু সাথীদের জন্যে মানবিক কনসার্ন ওনার স্বভাব। সেইটে ভাল লাগত। নিজের শারীরিক কষ্ট নিয়ে বিশেষ বলতেন না।
    ওনার পরিবর্তন ছিল দেখার মত। আমার বাবার ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতেন। বাবা ওনার রাজনীতির সমর্থক না হলেও আত্মমর্য্যাদা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন জে এন রায়কে পছন্দ করতেন। লেট করে আসার জন্যে একদিন বলেছিলেন-- আপনার থেকে এগুলো আশা করিনি। ব্যস্‌, উনি আর কখনো লেট হন নি।
  • ranjan roy | 24.96.101.81 (*) | ১০ আগস্ট ২০১২ ০৫:৫৭90230
  • সবাইকে ধন্যবাদ। কিন্তু একটি ডিস্ক্লেমারঃ
    এই লেখাটি গত বছর কোলকাতার "আজকের দিন" ( এখন বন্ধ) পত্রিকায় দুই কিস্তিতে প্রকাশিত। এটা সম্পাদকমন্ডলীকে আগে জানিয়েছিলাম, হয়তো ভুলে গেছেন। এর জন্যে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আর সেজন্যেই এতে কোন পরিবর্তন/পরিমার্জন সম্ভব নয়।
    হনু,
    অশেষ ধন্যবাদ। আর বিশেষ করে প্রবন্ধের লক্ষ্য হিসেবে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার কথা বলায়। ভবিষ্যতে কোন প্রবন্ধ লিখতে গেলেই আমার এ কথাটা মনে থাকবে।
    এক,
    ঠিকই বলেছ, এই লেখাটার সীমিত ফোকাস-- সত্তরের দশকে মার্ক্সিস্ট ঘরানায় প্রতিবাদী আন্দোলনের স্বপ্নদর্শীরা যে কৃষক আন্দোলনকে শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করতে চাইছিলেন সেটা বলা আর ছত্তিশগড়ের মাওবাদী অন্দোলনের জন্মকুন্ডলী নিয়ে এক বিহংগম দৃষ্টিপাত।
    দুই,
    আলাদা ঘরানার শ্রমিক আন্দোলনের সময় বলতে বলছি ওই ১৯৮৪'র কথা। তখন প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের কাজকম্মে পরিমাণগত বৃদ্ধি হলেও কোথাও যেন ভাঁটার টান। ব্যাপারটা কেমন যেন শ্রম আইন/ লেবার কমিশনারের অফিসের মধ্যেই আটকে রয়েছে। মালিকশ্রেণী যেন ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে একটা বাঁধা ফরম্যাটে আটকে দিতে পেরেছে। দুপক্ষের প্রত্যেকটা মুভ যেন আগে থেকেই জানা। ফলে স্থিতাবস্থা বহাল।
    এই নিয়ে ধূমায়িত অসন্তোষের পৃষ্ঠভূমিতে স্বত্নত্র নায়কদের উৎথান। আমার দাদা, রাউরকেল্লার এইচ এম এস ইউনিয়নের নেতা, তখন দত্তাসামন্তের কাজএর স্টাইলের গ্রাফিক বর্ণনা দিয়েছিলেন। কিভাবে উনি কোম্পানির লেটেস্ট ব্যালান্সশীট হাতে নিয়ে মজদুরদের কত মুনাফা হয়েছে বুঝিয়ে তার বাড়তি হিস্যা কেন শ্রমিকেরা পাবে না বলে কোম্পানি ম্যানেজমেন্টের্ত কাছে কৈফিয়ৎ চাইতেন। বম্বের ফিয়েট কোম্পানি ঝুঁকলো। এই ট্যাকটিক্সের ফলে রাতারাতি মুম্বাইয়ের সব ইউনিয়নগুলো দলে দলে তাদের অ্যাফিলিয়েশন বদলে ওনার সঙ্গে যোগ দিল। অন্যেরা প্রমাদ গুণলেন। কেউ কেউ লেনিনীয় ভাষায় বল্লেন-- জঙ্গী অর্থনীতিবাদ!
    আসলে সদ্য সমাপ্ত কাপড়া মিল আন্দোলনের ব্যর্থতা ও মজদূরদের ব্যাপক ক্ষতি এর পৃষ্ঠভূমি তৈরি করেছিল।
    তিন,
    যোগী রায়ের নিজের মুখ থেকে গল্পটা শুনে মনে হয়েছিল সেই সময় আমরা কি পরিমাণ অগভীর ও উপদলীয় কোন্দলের বামপন্থী আন্দোলনের কমন ট্র্যাডিশন বহন করছিলাম, যেমন তুমি বলেছো।
    এর ক্রুর দিকগুলো অন্য প্রবন্ধে " বিপ্লবী ও যৌনতা" বলে লেখাটায় বলবো।
    ধর, এই যে প্রসেনজিত বসু সিপিএম এর একটি লাইনের বিরোধিতা করে পদত্যাগ করলেন তখন তাঁর পদত্যাগ পত্র স্বীকার করার গ্রেস না দেখিয়ে তাঁকে নিষ্কাশিত করা হল। তারপর এর পেছনে প্রসেনজিতের ব্যক্তিগত (কোন আদর্শগত বিরোধ নয়) স্বার্থের কথাও লেখা হল। এটা হলে তথ্য নিয়ে তদন্ত করার কথা। সেসব হবে না।বছর দুয়েক পরে পার্টি যদি লাইন বদলায় তখন ওনাকে হয়তো চুপচাপ নিয়ে নেয়া হবে। তাঁর কথিত "পার্টিবিরোধী চক্রান্তের" কথাটা চাপা পড়ে যাবে। যেমন আগেও হয়েছে। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তীর কথাটা মনে কর। এম-এলের অসংখ্য দল-উপদল আদৌ কোন ব্যতিক্রম নয়।
  • ranjan roy | 24.99.66.11 (*) | ১২ আগস্ট ২০১২ ০৬:৩৫90232
  • বিপ্লব রহমান,
    অনেক দিন থেকেই আগ্রহ ছিল বাংলাদেশের ওই ধারাটি সম্বন্ধে জানবার। শুধু সিরাজ শিকদার ও মহম্মদ তোফার নাম শুনেছিলাম। আর একাত্তরের সময় ইপিসিপি(এম-এল) এর কিছু দলিল। তাত্ত্বিক নেতা হিসেবে বদরুদ্দিন ওমরের বই কয়েকটা হাতে এসেছিল।
    আমি ঠিক ইতিহাসবিদ নই। তার জন্যে আবশ্যক রিগোরাস ডিসিপ্লিন আমার নেই। তাই আমার লেখা অ্যানেকডোটাল, অনেক সময়ই অ্যানাক্রনিজমে ভরা।
    আমার সম্বল শুধু একান্ত ব্যক্তিগত কিছু স্মৃতি। স্মৃতির কোলাজ। যোগীরায়ের সম্বন্ধেও, গুহনিয়োগীর ব্যাপারেও।
    আপনার লেখায় বাংলাদেশের আন্দোলন নিয়ে (প্রায় কিছুই জানতাম না) যা পাচ্ছি তা আমার অনেকদিনের চাহিদা মেটাচ্ছে। ধন্যবাদ।
  • maximin | 69.93.195.126 (*) | ১২ আগস্ট ২০১২ ০৯:২০90234
  • রঞ্জনের লেখা চমৎকার লেগেছে। বিপ্লব রহমানের বাবার কথা শুনে ভালো লাগল।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.14 (*) | ১২ আগস্ট ২০১২ ১২:৫৮90233
  • রঞ্জন রায়,

    আপনার প্রতি-মন্তব্য পেয়ে খুব ভালো লাগলো। আপনার লেখাটি আমাকে একদম ভেতর থেকে নাড়া দিয়েছে। নকশাল বাড়ি আন্দোলনের ওপর কিছু বইপত্র আগেই পড়েছিলাম, পত্র-পত্রিকার অসংখ্য লেখাপত্র, আজিজুল হক তো বটেই। কিন্তু এই লেখাটি এর আগে পড়া সব লেখার চেয়ে আলাদা। কেন? সেটাই বলছি।

    _______

    ব্যক্তিগত আবেগের অবস্থান থেকে জানাই, মুক্তমনায় প্রকাশিত সিরাজ সিকদার বিষয়ক লেখায় সাবেক নকশালাইট নেতা আজিজ মেহেরে বইয়ের উদ্ধৃতি একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে, বইটির লেখক আমার বাবা। আজিজ মেহের টানা ৪০ বছর তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিস্ট পার্টি করেছেন, এরমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে প্রায় ১০ বছর পাক সামরিক জান্তার কারাগারে ছিলেন। বাংলাদেশ আমলে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সময়ও একবার বেশ কয়েকমাস কারাভোগ করেন। সেখানেও তাকে দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়।

    সাতের দশকে আমার বাবা আজিজ মেহের পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকের (দেবেন সিকদার গ্রুপ) দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পার্টি সরাসরি চারু মজুমদারের "খতমের লাইন" সমর্থন করলেও একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধও সংগঠিত করেছে। উত্তরবঙ্গে সরাসরি একাধিকবার পাকিস্তানী সেনাদের সঙ্গে বীরত্বের লড়াই হয়েছে। শেখ মুজিবের সময় আমার বাবাকে রক্ষীবাহিনীর রোমহর্ষক নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে।

    জিয়াউর রহমানের আমলে জেল থেকে বেরিয়ে তিনি আর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হননি। আমার বাবা তার পার্টি জীবনের কথা নিয়ে এ পর্যন্ত অন্তত দুটি বই লিখেছেন। আপনার লেখার এই লাইনগুলো কী আশ্চর্যভাবে তার জীবনকথার সঙ্গে মিলে যায়! শুধু স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন। নইলে বাকি সবকিছু তো একই। আপনি যেমন বলেন :

    ["পুলিশের থার্ড ডিগ্রি যোগী রায়ের মনোবল ভাঙতে পারেনি। কিন্তু কয়েকবছর পরে ছাড়া পেয়ে দেখলেন চারু মজুমদার নেই। সিপিআই( এম-এল) এর সর্বভারতীয় নেতাদের মধ্যে অধিকাংশই হয় জেলে, নয় এন্‌কাউন্টারে নিহত। বিহারে সত্যনারায়ণ মিশ্র আলাদা হয়ে নিজের উপদলকে আই এস ও মার্কামারা আসল বিপ্লবী পার্টি বলছেন। সরোজ দত্ত মারা গেছেন।"]

    জিয়ার আমলেই তিনি পুস্তক প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হন। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ড. আহমদ শরীফের প্রায় সমস্ত বই তার "বস্তু প্রকাশন" থেকে বের হয়েছিল। যখন সমর্থবান ছিলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত রাজনৈতিক কলাম লিখতেন।

    ছোটবেলা থেকে "নকশাল", "কৃষক সংগ্রাম", "অ্যাকশন" এই শব্দগুলোর সঙ্গে আমার খুব ঘনিষ্ট পরিচয়। বাসায় সব সময় আন্ডারগ্রাউন্ড নেতাকর্মীদের আনাগোনা ছিলো। পরে বিভিন্ন সময় ছোট ছোট আলাপচারিতায় চরমপন্থী কয়েকজন তাত্বিক নেতা ও মাঠকর্মীদের কাছ থেকে সে সময়ের ঘটনা প্রবাহ জানার চেষ্টা করেছি। স্বীকার করা ভালো, সব সত্যি কথা লেখা যায় না; আমার বাবাও হয়তো তার আত্নজীবনীতে সব সত্যি কথা লিখতে পারেননি। কারণ অনেক সত্যর সঙ্গে অনেক মানুষের জীবনের নিরাপত্তা জড়িত থাকে, জড়িত থাকে মান-সন্মান।

    আমার বাবার বয়স এখন প্রায় ৮০। এখন তার অবসর সময় কাটছে বই পড়ে, টেলিভশন দেখে। নানান অসুখে জীবন জেরবার, কিন্তু তার চিন্তাভাবনা এখনো খুব পরিস্কার। এমন নীতিবান, আদর্শিক ও দৃঢ় চরিত্রের মানুষ আমাদের পুরো বংশে ওই একজনই আছেন।

    কয়েক বছর আগেও দেখেছি, প্রত্যন্ত গ্রামে (সিরাজগঞ্জ, মুগবেলাই) আমার দাদুর বাড়ি গেলে বাবাকে দেখার জন্য গ্রামের মানুষ এসে ভীড় করেন। তার পার্টির সাবেক অনুসারী কৃষক-মজদুররা তার সঙ্গে চা-মুড়ি থেতে খেতে এটা-সেটা অনেক গল্প করেন। অনেকে খবর পেয়ে দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকে আসেন। তারা শুধুমাত্র বারা কথা শোনার জন্য দাদু বাড়িতেই দিনের পর দিন থেকে যান।

    সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আমার বাবা বলেন, সাধারণ কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের ভেতরে একবার সমাজ পরিবর্তনের আদর্শ জাগ্রত করা গেলে, তারা কখনো আদর্শচ্যুত হন না, রাজনীতি ছেড়ে দিলেও আদর্শটি ভেতরে ভেতরে ছাইচাপা আগুনের মতো জাগরূক থাকে, নৈতিকতার দিক দিয়েও তারা হন মহৎ মনের মানুষ।
    _______

    অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
  • b | 135.20.82.165 (*) | ১৩ আগস্ট ২০১২ ০৩:০১90237
  • নেহাতই টেকনিকাল। DB আর আবীর দাসের কমেন্টের মধ্যে অনেকটা শাদা জায়্গা। দেখে ভালো লাগছে না।
  • h | 213.99.212.53 (*) | ১৩ আগস্ট ২০১২ ০৯:২৩90235
  • ra`Njana daa, samay kare uttar diyechhen bale dhanyabaad. aamaar bayase kulaay naa, tabu ei bishhayTaa niye aamaar aagraha aachhe. (arthaa`t aapani aamaar theke burho;-) ) TreDa iuniyan aandolane baamapantheeraa ekaa naa, ka`mgresi raa o Je ekaTaa samay parJanta prachur kaaj karechhen, Dimelo, phaarnaanDej, dattaa saamaant taar udaa. eba`m itihaaser khel hala, ranadibhe eba`m Daa`Mge Jaa`nraa upadaleeya kondaler Janya anek taatwika aalochanaay samaalochita, taa`nraa bibhinna dharaNer iuniyaner sa`Mge eka sa`Mge kaaj karechhen, JeTaa chhaagal moola daler lokeraa ekebaarei karate paaren ni, eTaa aaja o chalachhe. ekaTu kryaasa pharme kintu chalachhe e byaapaare kona sandeha nei. ei dikaTaa niye bhabishhyate kona ekaTaa lekhaa likhaben to.
  • h | 213.99.212.53 (*) | ১৩ আগস্ট ২০১২ ০৯:২৫90236
  • অসমর্থ গুরুচন্ডালি যে একেবারেই রিলায়েবল নয় এইটা তার প্রমাণ, সাধারণতঃ সোমত্থ ছেলে ছোকরা রা একটু আন রিলায়েবল হয়;-)
  • চৈতালি | 129.192.206.11 (*) | ১৪ আগস্ট ২০১২ ০৩:০৯90238
  • খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে। অনেক নতুন কিছু জানতে পারলাম।
  • রাকৃভ | 125.187.49.154 (*) | ১৫ আগস্ট ২০১২ ০১:১১90239
  • পড়ছি
    রঞ্জন ।
    আজিজ মেহের বিপ্লবের বাবা, এটা জেনেও ভালো লাগল । কমরেড সিএম- এর আটটা দলিল যদি সংক্ষেপে আলোচনা কর, তাহলে খুব ভালো হয় ।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 69.161.138.110 (*) | ১৫ আগস্ট ২০১২ ০২:৪১90240
  • 1.সি পি আই (এম এল)-এর প্রতিষ্ঠা দিবস ১৯৬৯-এর মে দিবস নয়, ২২ শে এপ্রিল।
    2.ঘটনাক্রমে রঞ্জনদা কিছুটা ভুল করেছেন। নিয়োগী কাজ করতেন ভিলাই ইস্পাত কারখানার কোক ওভেন বিভাগে, সেখানে তিনি ষাটের দশকের শেষভাগে সফল ধর্মঘট সংগঠিত করেন। নকশালের তকমা এবং শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে পুলিশ তাঁর পেছনে পড়ে। তিনি ছত্তিশগড়ের গ্রামাঞ্চলে আত্মগোপন করেন। এই পর্যায়ে তিনি ছাগল-ব্যবসায়ী,কৃষি-শ্রমিক, বাঁধ-নির্মাণশ্রমিক, দানীটোলা কোয়ার্জাইট খনির শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সাথে সাথে আন্দোলন সংগঠিত করতে থাকেন। দল্লী-রাজহরায় তাঁর আসা ১৯৭৭-এ ইমার্জেন্সির অবসানে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর। আই এন টি ইউ সি, এ আই টি ইউ সি থেকে বেরিয়ে এসে ঠিকাদারী খনি-শ্রমিকরা যখন নতুন ইউনিয়ন তৈরী করলেন, তখন তার নেতৃপদে তাঁরা নিয়োগীকে আহ্বান করেন।
    3.দানীটোলায় থাকার সময় ধীরেশ গুহ নিয়োগী শংকরলাল নাম নেন, দল্লী-রাজহরায় আসার পর নন।
    4.নিয়োগীর স্ত্রী আশা সহদেব সাহুর বোন নন, দানীটোলায় নিয়োগীর সহকর্মী সিয়ারামের মেয়ে। তাঁকে তিনি বিয়ে করেন দানীটোলায় থাকার সময়। তাঁদের প্রথম কন্যার জন্ম নিয়োগী ইমার্জেন্সির সময় জেলে থাকার সময়।
    5.১৯৭৭-এর গুলি কান্ডের তথ্যও যথাযথ নয়। সে সময় শ্রমিকরা ঘর তৈরীর বাঁশ-বল্লী কেনার ভাতার দাবীতে ধর্মঘট করছিলেন। খনি ধর্মঘট ভাঙ্গার জন্য ২রা জুন রাতে দুই জীপ পুলিশ ইউনিয়ন অফিসে আসে। নিয়োগীকে তুলে একটা জীপ বেরিয়ে যায়। অন্য জীপের পুলিশরা শ্রমিকদের হাতে আটকা পড়ে, তখন তারা গুলি চালায়। কয়েক জন মারা যাওয়া সত্ত্বেও তাঁরা নেতার মুক্তির দাবীতে অবিচল থাকেন। ৩রা জুন বড় পুলিশ বাহিনী আবার গুলি চালিয়ে বন্দী পুলিশদের মুক্ত করে। ২-৩রা জুন এক নারী-শ্রমিক ও এক শিশুসহ ১১ জন শহীদ হন। শ্রমিকরা কিন্তু ধর্মঘট চালিয়ে যান। প্রশাসন বাধ্য হয় নিয়োগীকে মুক্তি দিতে।
    6.গণসঙ্গীতের মর্মবস্তু অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগী-নির্দেশিত হলেও সেগুলির রচয়িতা খনি-শ্রমিক ফাগুরামসহ অনেক শ্রমজীবী শিল্পী।
    7.ছ মু মো-র লালটুপিধারী ক্যাডারদের কুচকাওয়াজ নয় শিল্প-মালিকদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল আরও অন্য কিছু—কেবল অর্থনৈতিক আন্দোলন নয় তার সঙ্গে রাজনৈতিক আন্দোলনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণ, শ্রমিক-কৃষক মৈত্রী, কেবল বোনাস-বেতনবৃদ্ধি-চার্জশিটের জবাব লেখা নয় শিক্ষা-স্বাস্থ্য-নারীমুক্তি-নেশাবন্দী-জাতীয়তার মুক্তি ইত্যাদি বিষয়গুলিকে ইউনিয়নের কর্মসূচীতে সামিল করা, ইত্যাদি। পরে কখনও সময়-সুযোগ পেলে এ বিষয়ে লিখব।
    8.শহিদী হাসপাতাল নয় শহীদ হাসপাতাল।
    9.ছ মু মো-র প্রথম ভাঙ্গন ঘটে নিয়োগীর শহীদত্বের প্রায় চার বছর পর, ১৯৯৪-এ। চার বছর ধরে সংগঠনে শ্রেণীসংগ্রাম বনাম শ্রেণীসমঝোতা, আন্তঃসংগঠন গণতন্ত্রের পক্ষে-বিপক্ষে মতাদর্শগত সংগ্রাম চলার পর খনিতে মেশিনীকরণের বিরোধিতা করায় ছ মু মো থেকে বহিষ্কৃত হই আমি ও শ্রমিকনেতা নীলরতন ঘোষাল। আমাদের সঙ্গে ভিলাই আন্দোলনের নেতাদের এক বড় অংশ বেরিয়ে এসে তৈরী করেন ছ মু মো (নিয়োগীপন্থী)।
    10.আমার বর্তমান কর্মক্ষেত্র আন্দুল-মৌরী নয় চেঙ্গাইল-ফুলেশ্বর, যেখানে নব্বইএর দশকের প্রথমে কানোরিয়ার শ্রমিক আন্দোলন বাংলাকে আলোড়িত করেছিল।
    11.রঞ্জনদা এই লেখায় ও আগেও কয়েকটি লেখায় আমার ওপর মহত্ব আরোপ করেছেন। শুধরে দেওয়াটা আমার নৈতিক কর্তব্য। শহীদ হাসপাতাল আমি তৈরী করিনি, শহীদ হাসপাতাল তৈরী করার কৃতিত্ব কমরেড শংকর গুহ নিয়োগীর নেতৃত্বে কয়েক হাজার শ্রমিকের। শহীদ হাসপাতাল তৈরীর সময় আমি কলকাতায় ডাক্তারি ছাত্র। ১৯৮১-তে প্রথম যে তিনজন ডাক্তার শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-আন্দোলনে যোগ দেন তাঁরা হলেন বিনায়ক সেন, আশিস কুন্ডু ও পবিত্র গুহ। ১৯৮৩-তে শহীদ হাসপাতাল গড়ে ওঠার সময় ছিলেন ডা. সেন, ডা. কুন্ডু ও ডা. শৈবাল জানা। আমি ১৯৮৬-তে যোগ দিই, আমার আগে থেকে এঁরা ছাড়া ছিলেন ডা. চঞ্চলা সমাজদার। ডা. সেন ছাড়া আমার নামটা বেশী পরিচিত কেন না আমি শহীদ হাসপাতাল নিয়ে লেখালিখি করেছি বেশী, এ ছাড়া আমার কোনও কৃতিত্ব নেই।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 69.161.138.110 (*) | ১৫ আগস্ট ২০১২ ০২:৪১90241
  • 1.সি পি আই (এম এল)-এর প্রতিষ্ঠা দিবস ১৯৬৯-এর মে দিবস নয়, ২২ শে এপ্রিল।
    2.ঘটনাক্রমে রঞ্জনদা কিছুটা ভুল করেছেন। নিয়োগী কাজ করতেন ভিলাই ইস্পাত কারখানার কোক ওভেন বিভাগে, সেখানে তিনি ষাটের দশকের শেষভাগে সফল ধর্মঘট সংগঠিত করেন। নকশালের তকমা এবং শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে পুলিশ তাঁর পেছনে পড়ে। তিনি ছত্তিশগড়ের গ্রামাঞ্চলে আত্মগোপন করেন। এই পর্যায়ে তিনি ছাগল-ব্যবসায়ী,কৃষি-শ্রমিক, বাঁধ-নির্মাণশ্রমিক, দানীটোলা কোয়ার্জাইট খনির শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সাথে সাথে আন্দোলন সংগঠিত করতে থাকেন। দল্লী-রাজহরায় তাঁর আসা ১৯৭৭-এ ইমার্জেন্সির অবসানে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর। আই এন টি ইউ সি, এ আই টি ইউ সি থেকে বেরিয়ে এসে ঠিকাদারী খনি-শ্রমিকরা যখন নতুন ইউনিয়ন তৈরী করলেন, তখন তার নেতৃপদে তাঁরা নিয়োগীকে আহ্বান করেন।
    3.দানীটোলায় থাকার সময় ধীরেশ গুহ নিয়োগী শংকরলাল নাম নেন, দল্লী-রাজহরায় আসার পর নন।
    4.নিয়োগীর স্ত্রী আশা সহদেব সাহুর বোন নন, দানীটোলায় নিয়োগীর সহকর্মী সিয়ারামের মেয়ে। তাঁকে তিনি বিয়ে করেন দানীটোলায় থাকার সময়। তাঁদের প্রথম কন্যার জন্ম নিয়োগী ইমার্জেন্সির সময় জেলে থাকার সময়।
    5.১৯৭৭-এর গুলি কান্ডের তথ্যও যথাযথ নয়। সে সময় শ্রমিকরা ঘর তৈরীর বাঁশ-বল্লী কেনার ভাতার দাবীতে ধর্মঘট করছিলেন। খনি ধর্মঘট ভাঙ্গার জন্য ২রা জুন রাতে দুই জীপ পুলিশ ইউনিয়ন অফিসে আসে। নিয়োগীকে তুলে একটা জীপ বেরিয়ে যায়। অন্য জীপের পুলিশরা শ্রমিকদের হাতে আটকা পড়ে, তখন তারা গুলি চালায়। কয়েক জন মারা যাওয়া সত্ত্বেও তাঁরা নেতার মুক্তির দাবীতে অবিচল থাকেন। ৩রা জুন বড় পুলিশ বাহিনী আবার গুলি চালিয়ে বন্দী পুলিশদের মুক্ত করে। ২-৩রা জুন এক নারী-শ্রমিক ও এক শিশুসহ ১১ জন শহীদ হন। শ্রমিকরা কিন্তু ধর্মঘট চালিয়ে যান। প্রশাসন বাধ্য হয় নিয়োগীকে মুক্তি দিতে।
    6.গণসঙ্গীতের মর্মবস্তু অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগী-নির্দেশিত হলেও সেগুলির রচয়িতা খনি-শ্রমিক ফাগুরামসহ অনেক শ্রমজীবী শিল্পী।
    7.ছ মু মো-র লালটুপিধারী ক্যাডারদের কুচকাওয়াজ নয় শিল্প-মালিকদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল আরও অন্য কিছু—কেবল অর্থনৈতিক আন্দোলন নয় তার সঙ্গে রাজনৈতিক আন্দোলনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণ, শ্রমিক-কৃষক মৈত্রী, কেবল বোনাস-বেতনবৃদ্ধি-চার্জশিটের জবাব লেখা নয় শিক্ষা-স্বাস্থ্য-নারীমুক্তি-নেশাবন্দী-জাতীয়তার মুক্তি ইত্যাদি বিষয়গুলিকে ইউনিয়নের কর্মসূচীতে সামিল করা, ইত্যাদি। পরে কখনও সময়-সুযোগ পেলে এ বিষয়ে লিখব।
    8.শহিদী হাসপাতাল নয় শহীদ হাসপাতাল।
    9.ছ মু মো-র প্রথম ভাঙ্গন ঘটে নিয়োগীর শহীদত্বের প্রায় চার বছর পর, ১৯৯৪-এ। চার বছর ধরে সংগঠনে শ্রেণীসংগ্রাম বনাম শ্রেণীসমঝোতা, আন্তঃসংগঠন গণতন্ত্রের পক্ষে-বিপক্ষে মতাদর্শগত সংগ্রাম চলার পর খনিতে মেশিনীকরণের বিরোধিতা করায় ছ মু মো থেকে বহিষ্কৃত হই আমি ও শ্রমিকনেতা নীলরতন ঘোষাল। আমাদের সঙ্গে ভিলাই আন্দোলনের নেতাদের এক বড় অংশ বেরিয়ে এসে তৈরী করেন ছ মু মো (নিয়োগীপন্থী)।
    10.আমার বর্তমান কর্মক্ষেত্র আন্দুল-মৌরী নয় চেঙ্গাইল-ফুলেশ্বর, যেখানে নব্বইএর দশকের প্রথমে কানোরিয়ার শ্রমিক আন্দোলন বাংলাকে আলোড়িত করেছিল।
    11.রঞ্জনদা এই লেখায় ও আগেও কয়েকটি লেখায় আমার ওপর মহত্ব আরোপ করেছেন। শুধরে দেওয়াটা আমার নৈতিক কর্তব্য। শহীদ হাসপাতাল আমি তৈরী করিনি, শহীদ হাসপাতাল তৈরী করার কৃতিত্ব কমরেড শংকর গুহ নিয়োগীর নেতৃত্বে কয়েক হাজার শ্রমিকের। শহীদ হাসপাতাল তৈরীর সময় আমি কলকাতায় ডাক্তারি ছাত্র। ১৯৮১-তে প্রথম যে তিনজন ডাক্তার শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-আন্দোলনে যোগ দেন তাঁরা হলেন বিনায়ক সেন, আশিস কুন্ডু ও পবিত্র গুহ। ১৯৮৩-তে শহীদ হাসপাতাল গড়ে ওঠার সময় ছিলেন ডা. সেন, ডা. কুন্ডু ও ডা. শৈবাল জানা। আমি ১৯৮৬-তে যোগ দিই, আমার আগে থেকে এঁরা ছাড়া ছিলেন ডা. চঞ্চলা সমাজদার। ডা. সেন ছাড়া আমার নামটা বেশী পরিচিত কেন না আমি শহীদ হাসপাতাল নিয়ে লেখালিখি করেছি বেশী, এ ছাড়া আমার কোনও কৃতিত্ব নেই।
  • aranya | 154.160.226.53 (*) | ১৬ আগস্ট ২০১২ ০৭:২৪90242
  • রঞ্জন-দার এই লেখাটা খুবই ভাল লাগছে, বলাই বাহুল্য। ব্যাখা বিশ্লেষণে যেতে মন চাইছে না, জাস্ট ভাল লাগা-টা জানাচ্ছি।

    বিপ্লব, আপনার লেখালেখি খুবই দামী মনে হয় সবসময়ই, বাবা-র ক্থা শুনে বুঝলাম, এই সংবেদনশীল মন আর লড়াইয়ের মানসিকতা কোথা থেকে পেয়েছেন।আববা-কে আমার সালাম দেবেন।

    ১৯৮১-৮৭, ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে নিত্য যাতায়াত ছিল। আমার দাদা ৮১-তে ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র, পল্লব কীর্তনীয়ার ব্যাচ, জে ডি (জবরদখল) হস্টেলে থাকত, ৮২ থেকে মেন হস্টেলে। শঙ্কর গুহনিয়োগী ও তার সহযোগীদের কথা যে কত শুনেছি, পুণ্যব্রত আবার মনে পড়িয়ে দিলেন।
  • বিপ্লব রহমান | 127.18.231.14 (*) | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১১:০৩90243
  • অরণ্য,

    আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আপনি যেমনটি বলছেন, তেমন কি না জানি না, তবে আমার চিন্তা-ভাবনা এবং লেখালেখির স্কুলিং বাবার কাছেই। আপনার শ্রদ্ধা ওনার কাছে পৌঁছে যাবে।

    রাকৃভ,

    আপনাকেও সাধুবাদ জানাই। ছাত্র অবস্থায় চারু মজুমদারের থিসিস কিছুটা পড়েছিলাম বটে [এবং পরে এপারের সিরাজ সিকাদার তো বটেই]। আপনার সঙ্গে এ ক ম ত। রঞ্জন রায়ের মোহহীন লেখনিতে এই সময়ের প্রেক্ষাপটে সিএম-রচনা বিশ্লেষণ হওয়া দরকার। ব্যক্তিগতভাবে তাদের যান্ত্রিক বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গী+ভাববাদ আমাকে বেশ ভাবিয়েছে [ট্রিগারে আঙ্গুল রাখলে, নিজেকে ঈশ্বর বলে মনে হয়--হুমায়ুন কবির]।
  • ranjan roy | 24.97.205.117 (*) | ২৭ আগস্ট ২০১২ ০৯:৩৬90244
  • ডঃ পুণ্যব্রত গুণের লেখাটি অনেক দেরিতে চোখে পড়েছে। আজ ছত্তিশগড়ে রায়পুর শহরে বসে লিখছি।
    হ্যাঁ, তথ্যগত সমস্ত ভ্রান্তি গুলো উনি যত্ন করে শুধরে দিয়েছেন।
    সত্তরের দশকে আমরা ছিলাম যোগী রায়ের অনুগামী। নিয়োগীদের সম্বন্ধে জানাশোনাটা অপ্রত্যক্ষ ছিল।
    তিয়াত্তরে পরিচয় হয় ব্লাস্ট ফার্নেসের নীলরতন ঘোষাল(নীলুদা) এর সঙ্গে। আর কলেজের পুরনো পরিচয়ে মজদূর নেতা কুরিয়েন জর্জ। ইতিমধ্যে যোগী রায় জেল থেকে বেরিয়ে বীরভুমে ফিরে গেছেন। ফলে যোগী রায়ের ডান হাত কর্মকারদা( পপুলার প্রেস, ইদানীং গত হয়েছেন) এদের সঙ্গে জুটে মাস লাইনকে সমর্থন করছেন।
    তখন দেখলাম গুহনিয়োগীকে। সেক্টর ফোরে মাংসের দোকান খুলেছেন। তাতে " ইয়ে সির্ফ মাটন শপ ই নেহি, মাহাঙ্গাই কে খিলাফ এক সংঘর্ষ ভি হ্যায়" গোছের কিছু লেখা ছিল। উনি হাতে লেখা একটি নাটকের পান্ডুলিপি পড়তে দিলেন। একবার ট্রাকে করে পাঁঠা আনতে গিয়ে একটি পথে মারা যায়। দাসদা ওটাকে না বেচে সেদ্ধ করে নুন মাখিয়ে আমাদের সবাইকে, ঘোষালদার বাড়িতে, খাইয়ে দিলেন। তার মজাই আলাদা। আমি পেরিফেরির লোক। শোনা কথা থেকে লেখা, ভুলভ্রান্তি হয়ে যায়। আর বয়সের সঙ্গে স্মৃতি দাগা দেয়। এর পরে ঘোষালদাদের নেতৃত্বে ব্লাস্ট ফার্নেসের সফল ধর্মঘট মনে আছে। ভিলাই স্টিল প্ল্যান্টের ম্যানেজমেন্টকে ঝুঁকতে হয়েছিল।
    ডঃ গুণের ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে বলা একটি কথাও আমি ফেরৎ নেব না।ঃ))))
    ওটা আমার পার্সোনাল ফিলিং।
    ময়মনসিংহের বারাট্‌ঠার গুণ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে কৃতী পুরুষ। বিনয় ওনাদের সহজাত। নিয়োগী হত্যার পরে ইপিডব্লিউ এ লেখা ওনার একটি চিঠি পড়েছিলাম মনে পড়ছে।
    আর হাওড়া স্টেশন থেকে একবার সাতসকালে ট্যাক্সিতে ওনাদের সঙ্গে সহযাত্রী হয়ে সল্ট লেকে ভাইয়ের বাড়ি যাচ্ছিলাম। ওনারা আগে যে বাড়িটায় নামলেন তার নেম প্লেট দেখে চমকে উঠি।
    -- এক মিনিট, এটা কি অধ্যাপক অতীন্দ্র মোহন গুণের বাড়ি? আপনি কে, পুণ্যব্রত না প্রিয়ব্রত?
    চশমা পরা হালকা কাঁচাপাকা দাড়ি যুবকটি হেসে মাথা হেলান। ট্যাক্সি ছাড়ার সময় বলি ভিলাইয়ের আই-সার্জন মিদ্যা দম্পতি আমার ছোট ভায়ের মত, খুব আপনার কথা বলে।
    ট্যাক্সি ছেড়ে দেয়।
    ওরা দুজনেই বহুদিন গত হয়েছেন।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন