এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো  গুরুচন্ডা৯ দশ

  • খুঁটে খাওয়ার গ্রাফিতি

    ইন্দ্রাণী দত্ত
    গপ্পো | ০৩ জুন ২০০৭ | ১০৩৭ বার পঠিত


  • জলপাত্রটি কানায় কানায় ভরা।তলায় নীল নুড়ি।লালচে বেগুণী পাখনায় জল কাটে, ঘাই দেয়। নুড়ি ছুঁয়ে উঠে আসে। জলপাত্রের কাঁচদেওয়ালে বিম্বিত হয় সে। সিয়ামিজ ফাইটার। লড়ে যায় নিজের প্রতিবিম্বের সঙ্গে। এক দানা, দু'দানা, তিনদানা খাবার-দিনে তিনবার। জল পাল্টানো সপ্তাহে একদিন।

    পুরোনো টেবিল। দাগধরা।টেবিল ঘিরে চেয়ার।চার, পাঁচ,ছয়। কিম্বা তার বেশি। মর্নিং টী, লাঞ্চ, আফটারনুন টী। ওরা চা খায়।কফি। সূপ, কাপ নুডলস,স্যান্ডউইচ। টেবিল ঘিরে ওরা ক'জন। প্রতিদিন।



    এ এক অদ্ভূত জগৎ। আই ডু নট বিলং হিয়ার।
    ফ্রী ওয়ে ধরে আধ ঘন্টা।তারপর একজিট।কালচে ইঁটের ছোটো ছোটো বাড়ী, দোকান। ধূ ধূ মাঠময় চোরকাঁটা শুধু। বন্ধ ক্যাফে।দেয়াল জুড়ে স্প্রে পেন্টিংএর আঁকিবুঁকি।।রেলপথের দুধারে পরিত্যক্ত ওয়ারহাউজ।পুরোনো গ্যাস স্টেশনের পাশ দিয়ে তিন মিনিট। অ্যাক্সেস কার্ড ঢোকালে একপাশে সরতে থাকে ভারি গেট। সঙ্গে ধুলো,শুকনো ইউক্যালিপটাস পাতা ,খড়কুটো।কার্ড পাঞ্চিং মেশিন- কবেকার।একটা ঘড়ির সঙ্গে। দুটো কাঁটার একটাও নেই। পুরোনো কার্পেট। ধুলোর গন্ধ। সরু সিঁড়ি। আমার দিন শুরু হয়। এইভাবেই ওদেরও দিন শুরু।রোজ। সপ্তাহে পাঁচদিন। কখনও ছয়। যখন যেমন। ইউক্যালিপটাস গাছটির তলায় স্পীড কমায় স্টেফের জাগুয়ার,সীতার হন্ডা, রাউলের টয়োটা, ক্যাথির মাজদা।অন্যান্য। প্যাকেজিঙের মেয়েরা-একদল।প্রডাকশান আসে ভোরে।লিং, অ্যাপেল, রে, কীথ-ওরা। পার্কিং লটে ঢুকে ছায়া খোঁজে সবাই।তারপর সানশেড লাগায়।লক করে।সরু সিঁড়ি বেয়ে উঠলে লাঞ্চরুম। আভেনে কৌটো তুলে রাখে। কিম্বা ফ্রিজে।
    সাদা ওভার-অল। আই প্রটেকশন।গ্লাভস্‌। দিনের প্রথম স্যাম্পল নিয়ে আসে মাইকেল। আর্জেন্ট। ভেরি ভেরি আর্জেন্ট। গ্যাব্রিয়েলা বলে যায়।গ্যাব্রিয়েলা পিছন ফিরলে লরেল মুচকি হাসে।চোখ মটকায়।স্টীভ হাই তোলে।ঘাড় রগড়ায়,স্ট্রেচ করে। কাল লেট নাইট গেছে।
    ফিউমহুডে রিফ্লাক্স চলে। লরেল হিটিং অ্যাডজাস্ট করে, জলের ফ্লো দেখে। তারপর সলভেন্ট ঢালে জারে।সীতার টি এল সি প্লেট জারে ঢোকায়।মুখ চাপা দেয়।সলভেন্ট নিয়ে কাজ করা বারণ সীতার।প্রেগ্ন্যান্ট। সীতা শুধু মর্টার পেসেলে স্যাম্পল গুঁড়ো করতে থাকে। আই আর দেখে।স্যাম্পেলের ফ্লেকগুলি শক্ত, হলদেটে সাদা। অ্যাপিয়ারেন্স কমপ্লায়েড।সীতা বাথরুম যায়।
    স্টীভ মেটলারের টলারেন্স চেক করে। চিল্লিয়ে বলে, 'নট পাসিং, রাউল'।রাউল পাল্টা চেঁচায়- 'ডু ইট এগেইন, ডু ইট এগেইন।' স্টীভ পিঠ রগড়ায়।ডানা বরাবর।মেটলার ছেড়ে কম্পিউটারে বসে। চাকরি খোঁজে-'লাইফ সাকস ম্যান। লাইফ সাকস।'
    স্টেফানি বাফারের পিএইচ চেক করে, মোবাইল ফেজ ফিলটার করে আর অবিশ্রান্ত কথা বলে যায়-'আই ওয়ান্ট ভেকেশন , আই ওয়ান্ট সী বীচ, অনলি সী বীচ। নাথিং এলস্‌।নো মানি, নো ম্যান, নাথিং।
    হৃদয়রাম এখানে হার্ডে হয়ে গেছে কবে।কোয়ারেন্টাইন স্লিপ টাইপ করে। প্রিন্ট নেয়। কমলা রঙের চৌকোনা, আঠালো স্লিপ।একের পর এক। মেরি চুং প্যাকেজিং থেকে ল্যাবে আসে- পেপার ওয়ার্ক খোঁজে। হাসফাঁস করে। গোলগাল হাসিখুশি মেরি চুঙ। হেড কাভার লাগিয়ে কেন্‌ ঘুরে বেড়ায় ব্যস্ত সমস্ত। সেলফোন অবিরাম বাজে। ফিলিং লাইন নাম্বার থ্রী নট ওয়ার্কিং ... টেম্পারেচর ডাউন...
    ইসাবেলা ফাইলে ভরে রাখে এম এস ডি এস।একের পর এক। রাউল ওর কাঁধে হাত রেখে কথা বলে। নাকে তর্জনী ঠেকায় আলতো।ইসাবেলা গলার চেনের রূপোলী ক্রস ছোঁয়-'জেসাস ক্রাইস্ট।'
    টয়লেট মপ ক'রে, ল্যাবের জানলা মোছে ববি। স্প্রে করে।তারপর ওয়াইপ।স্টেফানিকে দেখে।সীতাকে। লরেলকে।স্প্রে করে ববি। এক হাতে। অন্য হাত প্যান্টের ভেতর ঢুকিয়ে হাল্কা গোঙায়।
    অপরিচ্ছন্ন লাঞ্চরুম। দাগধরা সিঙ্ক, মাইক্রো-ওয়েভ।ফ্রিজের দরজা খুললেই ধাক্কা দেয় বাসি গন্ধ- খিদে মরে যায়।। আমি ক্যাফেটেরিয়ায় লাঞ্চ সারি। ওরা অবাক হ'ত প্রথমটায়। এখন আড়চোখে আমাকে দেখে আর আওয়াজ ক'রে সুপ খায় টেবিল ঘিরে। নাওমি সিগ্রেট ধরায় বাইরে এসে।লাঞ্চের পরে আমি ফিরি যখন।গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। 'হেই ম্যান, ইউ ডোন্ট ওয়ান্ট টু স্টে হিয়ার? ডু ইয়ু?'ও'র ঈষৎ উঁচু হলদে দাঁত।সিগ্রেটের গন্ধ সারা গায়ে।আমি জবাব দি না। হাল্কা হাসি। ক্যাথি খুরখুরিয়ে হাঁটে-হাতে পেন,কাগজ-'লটো? লটো?থার্টি থ্রী মিলিয়ন ডলার টু নাইট।থার্টি থ্রী মিলিয়ন।'একটা গাঢ় নীল কাগজে একরাশ সংখ্যা-জোড়ায় জোড়ায়। ক্যাথি পাঁচজোড়া সংখ্যা বেছে নেয়। এ'সপ্তাহের পাওয়ার বল-'হু উইল প্লে?ইয়ু?ইয়ু?হোয়াট অ্যাবাউট ইয়ু,ম্যান ফ্রম ইউনি?'
    এ এক অদ্ভূৎ জগৎ। আই ডু নট বিলং হিয়ার।



    ইন্ডিকেটরের রঙ বদলে যায় ক্রমশ:-গাঢ় নীল থেকে হাল্কা-আশমানী-নীলচে সবুজ, সবুজ, সবজেটে হলুদ। এইখানে টাইট্রেশন বন্ধ করতে হয়। টাইটার ভ্যাল্যুর আর এস ডি পারসেন্ট কষি-পাস্‌ পাস্‌ পাস্‌-কনিক্যাল তিনটি বদলানো রং নিয়ে ফিউম হুডে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে-
    এ এক অদ্ভূত জগৎ-
    এ এক অদ্ভূত জগৎ। ছ মাস হয়ে গেল এখানে আমার।
    সাপোর্টিং ফ্রেমের ওপর ঈষৎ ঢালু ছাদ। অ্যাজবেসটস। স্কাইলাইট ক'খানি। র মেটেরিয়াল ওয়ারহাউজ। সাবানের গন্ধ, কখনও জোয়ানগুঁড়োর,কখনো মোমগন্ধ।মিলেমিশে থাকে। গ্রীন স্টিকার চেক করি।অরেঞ্জ কোয়ারেন্টাইন স্টিকারের ওপর গ্রীন স্টিকার।মেটেরিয়াল পাসড।লট নাম্বার চেক করি, ম্যানুফ্যাকচারার ব্যাচ নাম্বার। এভরিথিং ওকে। কীথ প্রডাকশন স্কেডিউল চেক করে। র মেটেরিয়াল রেডি নাউ। চার্লি ফর্ক লিফট দিয়ে তুলে নেয় কাঠের পাটাতন। তার ওপর নীল প্লাস্টিকের ড্রাম, বাদামী কার্ডবোর্ড বক্স অথবা প্ল্যাস্টিক ব্যাগ। অল স্টিকারড।মেরি চুং দৌড়ে আসে-'থ্যাংক্স ম্যান।'
    এ' এক অদ্ভূত জগৎ।লাঞ্চ আওয়ারে ঘুরে বেড়াই ইত:স্তত:।ক্যাফের পাশে রেলস্টেশন, টানেল, পুরোনো পেট্রল পাম্প... স্টেশনের বেঞ্চে, পশ্চিমের রোদ মুখে বসলে পরিত্যক্ত ওয়ারহাউজ-স্প্রে পেইন্টিংএ লেখা - বীচওয়্যার।সবুজ দুটি নারকেল গাছ আর নীলচে সফেন সমুদ্র।তলায় কালো রঙের খুলি, হাড়-গোড়।
    মাথার ওপর দিয়ে চলে গেছে এম-ফাইভ। তলায় টানেল। সেখানের দেওয়ালে বেগুণী, সবুজ, লাল, কালো-তীক্ষ্ণ তীর্যক অক্ষরমালা, ছবিগুলি।ইয়েলো ব্রিক রোড ধরে হেঁটে যায় কৃষ্ণাঙ্গিনী ডরোথি, টিনম্যান,স্কেয়ারক্রো আর লায়নের সঙ্গে-উইজার্ড অফ অজের চাপ দাড়ি, মাথায় বেসবল ক্যাপ। তলায় লাল টকটকে মোটা হরফ-'ফাক ইয়ু পোলিস'। অজস্র যৌনশব্দাবলীর মাঝে লেখা থাকে 'ডেভিড ওয়াজ হিয়ার'।
    এ' এক অদ্ভূৎ জগৎ। ছ'মাস হয়ে গেল এখানে আমার।
    সকাল হ'তেই একপাশে সরতে থাকে ভারি গেট। ক্রমাগত। ইউক্যালিপটাসের পাতা, ধুলোবালি, খড়কুটো, ছেঁড়া স্টিকার, দোমড়ানো কার্ডবোর্ড। ইউক্যালিপটাস গাছটির তলায় স্পীড কমায় স্টেফের জাগুয়ার, রাউলের টয়োটা, ক্যাথির মাজদা।সীতার হন্ডা আসে না। শী হ্যাড আ মিসক্যারেজ।
    'দিস প্লেস হ্যাজ আ কার্স অর সামথিং। দা সেম থিং হ্যাপেনড টু অ্যানাদার গার্ল বিফোর'-ক্যাথি চোখে রুমাল দেয়। 'স্টপ ইট ক্যাথি, ইয়ু বিলিভ ইন কার্স? অল বুলশিট। লাইফ সাকস। লাইফ সাকস।' গ্যাব্রিয়েলা ঝাঁঝায়।স্টীভ ডানা রগড়ায়-'হে ইয়ু গাইজ, দিস প্লেস ইজ কারস্‌ড রিয়েলি। জাস্ট হার্ড দ্য রিউমার।আওয়ার ব্যাংক স্টপড ফিন্যান্সিং। ইফ ইট'স ট্রু ম্যান,উই আর ইন ডীপ শিট।' 'ও: ম্যান!' লরেল চশমা ঠিক করে, তুতলে বলে-'উই নীড টু ফাইন্ড সাম আদার জব।আই হ্যাভ মাই মর্টগেজ। জাস্ট বট দ্য হাউজ।' স্টেফানি চুল জড়ায় আঙুলে।হেসে ওঠে। কপালে টোকা দেয়।ইসাবেলা ছুটি নেয়-তিন সপ্তাহের। ওর বাড়ী রিও ডি জেনিরোয়। কার্নিভ্যাল আসন্ন। স্টীভ পিকনোমিটারে জল ভরে-'শী ওন্ট কাম ব্যাক। আই নো।'
    ছ'মাস হয়ে গেল এখানে। আমার।



    লালচে বেগুণী পাখনায় জল কাটে, ঘাই দেয় সিয়ামিজ ফাইটার। জলপাত্রের কাঁচদেওয়ালে বিম্বিত হয়।লড়ে যায় নিজের প্রতিবিম্বের সঙ্গে।

    মর্নিং টী, লাঞ্চ, আফটারনুন টী। ওরা চা খায়।কফি। সূপ, কাপ নুডলস,স্যান্ডউইচ।টেবিল ঘিরে ওরা ক'জন। প্রতিদিন।
    তারপর 'আসছি' বলে কেউ উঠে যায়।হঠাৎ।



    সকাল হ'তেই একপাশে সরতে থাকে ভারি গেট। ক্রমাগত। ইউক্যালিপটাসের পাতা, ধুলোবালি, খড়কুটো, ছেঁড়া স্টিকার, দোমড়ানো কার্ডবোর্ড। ইউক্যালিপটাস গাছের তলায় স্পীড কমায় স্টেফের জাগুয়ার, রাউলের টয়োটা, ক্যাথির মাজদা।সীতার হন্ডাও।সীতা ফিরে আসে।
    এই সময় রাউল চলে যায়। ওর ফেয়ারওয়েলে অনেক কথা হয়। ভালো কথা। ভালো কেক।আমরা শুনি। আমরা কেক খাই।রাউলের মুখ শুকনো দেখায়, আর ঈষৎ বোকাটে। লরেল ফিসফিসোয়, 'দে স্যাকড হিম ম্যান। হি ওয়ান্টেড টু টাচ ক্যাথি।'
    আবার ফিউম হুডে কাজ করে সীতা।পিরিডিন ঢালে।একটানা গুনগুন করে। ঘুম পাড়ানি সুর।লালাবাই। ঘোলাটে চোখে হাসে। 'আই উইল ট্রাই এগেইন। আই উইল ট্রাই।'
    কেন কাজ ছেড়ে দেয়।প্যাকেজিংএর ক্যাজুয়াল মেয়েরা আর আসে না। পার্কিং লটে গাড়ি কমতে থাকে ক্রমশ:।ড্রাইভওয়েতে উবু হয়ে বসে সিগ্রেট ধরায় স্টিভ-'গ্রেভ সিচুয়েশন ম্যান। দিস ইজ নট মাই প্লেস।ইয়ু নো এনিবডি লুকিং ফর অ্যান এঞ্জিনীয়র?'
    ইয়ান জি এম। এখানকার। লাঞ্চরুমে মীটিং ডাকে।দেওয়ালে পিঠ দিয়ে দাঁড়ায়।ঘাম মোছে-'এভরিথিং উইল বি জাস্ট ফাইন উইদিন কাপল অফ ডেজ।প্লিজ স্টে উইথ আস।' আমরা মাটিতে জুতো ঘষি।ঘাড় নীচু।
    পরদিন-ই আমি নতুন অফার পাই।মনোমত কাজ। মনোমত প্যাকেজ।
    সাপোর্টিং ফ্রেমের ওপর ঈষৎ ঢালু ছাদ।সাবানগন্ধ, মোমগন্ধ মিলেমিশে থাকে।স্কাইলাট ক'খানি।ওয়ারহাউজে।ব্লু, গ্রীন, সিলভার ড্রাম, বাদামী কার্ডবোর্ড বক্স, প্ল্যাস্টিক জারিকেন, ব্যাগ।অল স্টিকার্ড। রেডি টু গো ফর প্রডাকশন।চার্লি ফর্ক লিফট চালিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বিড়বিড় করে।প্রডাকশন বন্ধ থাকে।সুগোল স্কাইলাইট বেয়ে চুঁইয়ে ঢোকে আলো।ছোটো ছোটো আলোর বৃত্ত তৈরী হয়।।আলোর চাকতিগুলি ভেসে বেড়ায়-নীল ড্রাম থেকে সাদা জারিকেন ছুঁয়ে কার্ডবোর্ড বক্স। হাওয়ায় তিরতির কাঁপে। আমাকে ছোঁয়।আর আমার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে সে। এই সময়। আমি আর সে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকি। এই সব আলোর বৃত্তগুলি, অজস্র ধুলোর আঁশ আমাদের ঘিরে ভেসে ভেসে বেড়ায়।
    লিং ফ্যাসফেঁসে গলায় গল্প শোনায় ভিয়েতনাম যুদ্ধের।হাই স্টুলে বসে। পা দোলায়।স্লীভস গুটিয়ে ক্ষত দেখায়-'উই উইল বি অলরাইট ম্যান।ইউনিয়ন উইল ফিক্স এভরিথিং।' ক্যাথি নীল কাগজে আঁকিবুঁকি কেটে চলে-'ফিফটি মিলিয়ন দিস উইক।হু উইল প্লে?' ইউক্যালিপ্টাসের তলায় নাওমি আমার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। 'হেই ম্যান, আর ইয়ু লীভিং? প্লিজ ডোন্ট গো।এভরিথিং উইল বী অলরাইট।' নাওমি আরো ঘন হয়। সাপ্টে চুমু খায়।ওর গায়ে সিগ্রেটের গন্ধ। হলদেটে উঁচু দাঁত। সে নাওমির কোমরে হাত দেয়। আশ্লেষে শোষণ করে ঠোঁট। আমার পকেটে অফার লেটার ডানা ঝাপটায়।



    পুরোনো টেবিল। দাগধরা।টেবিল ঘিরে চেয়ার।চার, পাঁচ,ছয়।কিম্বা তার বেশি।মর্নিং টী, লাঞ্চ, আফটারনুন টী। ওরা চা খায়।কফি। সূপ, কাপ নুডলস,স্যান্ডউইচ।টেবিল ঘিরে ওরা ক'জন। প্রতিদিন।

    জলপাত্রের কাঁচদেওয়ালে বিম্বিত হয় সিয়ামিজ ফাইটার। লড়ে যায় নিজের প্রতিবিম্বের সঙ্গে।এক দানা, দু'দানা, তিনদানা খাবার-দিনে তিনবার। জল পাল্টানো সপ্তাহে একদিন।জলতলে ছোটো একটি বৃত্ত।একদানা খাবার। সে হাঁ করে। মুখ বোজে। গিলে নেয়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ০৩ জুন ২০০৭ | ১০৩৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন