এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • অভিজিৎ রায় ও বর্তমান বাংলাদেশ 

    Muhammad Sadequzzaman Sharif লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ২৩৩৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  •  

     

    আজকে অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হয়েছে। একজনের যাবজ্জীবন আর পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিভিন্ন রায়ের পর আমরা বাদী বিবাদীর মতামত শুনে থাকি। সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন কেউ, কেউ বা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় নিয়ে উনার স্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন নাই। উনি কিছু প্রশ্ন তুলেছেন যা খুবই ন্যায্য প্রশ্ন। রাষ্ট্রের উচিত এই সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হাসিমুখে দুই আঙুল তুলে ভি চিহ্ন দেখিয়েছে। মানে উনারা রায় নিয়ে সন্তুষ্ট। অন্তত তাদের এই উপলব্ধির কারণে আমি সন্তুষ্ট!

    আমি রায় নিয়েও সন্তুষ্ট। নানান প্রশ্ন আছে, নানান কথা তুলাই যাবে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে। যেখানে একই হামলায় বন্যা আহমেদ আহত হয়েছে, উনি এই জঘন্য ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী আর তাকেই যখন একবারের জন্য আদালতে হাজির হতে হয়নি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য, তখন বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন কেউ তুললে তাকে খুব একটা দোষ দেওয়ার উপায় থাকে না, দেওয়া যায় না। কিন্তু আমি তবুও সন্তুষ্ট। কারণ আমি আমার দেশটাকে খুব ভাল করেই চিনি, এই দেশের বাস্তবতা মোটামুটি বুঝি। এই বিচারের রায় আসতে যদি বিশ বছর লাগত আমি তবুও অবাক হতাম না। আমাদের নানান সমস্যা, আমাদের এইটুকু সীমানার ভিতরে সতেরো আঠারো কোটি লোক বাস করে, আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, জনবলের  সীমাবদ্ধতা আছে। আইন এবং আইনের প্রয়োগ নিয়ে নানান কিচ্ছা কাহিনী আছে। চাইলেও অনেক কিছুই করার উপায় নাই এই দেশে। এত কিছুর পরে ছয় বছরের মধ্যে রায় এবং সন্তুষ্টিমূলক রায় পাওয়াকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখব। এই রায় কার্যকর করা, যে আসামিরা এখনো ধরা পরে নাই তাদের ধরা হচ্ছে এখনের প্রধান কাজ। রাষ্ট্র সেই কাজও করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

    তাহলে রায় হওয়াতে অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে মারার জন্য যে ক্ষোভ আমার মনে জমা ছিল তার কিছুটা কি প্রশমন হয়েছে? না, হয়নি। মুশকিল হচ্ছে এই রায় কার্যকর হোক  বা না হোক, এই রায় আজকে আসুক আর পরশু আসুক, অভিজিৎ রায়রা এই ভূখণ্ডে হেরে গেছে বা এখন পর্যন্ত হেরে রয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে তাদেরকে হেরে যেতে দিয়েছি। অভিজিৎ রায়রা আবার বাংলায় কবে জয়ী হবে তা এই অন্ধকার সময়ে দাঁড়িয়ে ঠিক ঠাওর করতে পারছি না। কিন্তু এখন যে অন্তত কোন আলো নেই সেই ব্যাপারে নিশ্চিত। কেন এমন বললাম? বলছি।

    অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর পরে যারা যারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিল, প্রকাশ্যে সেই অনুভূতি প্রসব করে অনলাইন সয়লাব করে দিয়েছিল যেই নরকের কীটেরা তারা এখন নিজেদের সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। এই সময়ের ভিতরে হুহু করে বেড়েছে এদের সংখ্যা। আর আলোর হাতে যারা ছিল তারা নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে, সংকুচিত করছে চিন্তার পরিধি। কেউ কোপ খেয়েছে, কেউ দেশ ছেড়েছে আর আরিফ আজাদ সেরা লেখকের পুরস্কার হাতে নিয়েছে, হাসিমুখে ছবি তুলেছে এই সমাজের গণ্যমান্যদের কাছ থেকে। যিনি একজন মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন সেই মৃত মানুষকে ব্যাঙ্গ করে! বাংলার আপামর জনতা সেই লোকের পিছনে কাতারে দাঁড়িয়ে গেছেন। এই নোংরামির জন্য বিন্দুমাত্র জবাবদিহিতা না চেয়েই তার বইকে, তাকে তারকা বানিয়েছে। আমি এক আরিফ আজাদের উদাহরণ দিলাম, এমন অনেক তৈরি হয়েছে, এক আরিফ আজাদ এখন লক্ষ হয়েছে, তার অবিশ্বাস্য ফ্যান ফলোয়ার তৈরি হয়েছে। মুক্তচিন্তা সিন্দুকে তুলে রাখা হয়েছে এই দেশে।

    আরিফ আজাদদের এই উত্থান অভিজিৎ রায়দের পরাজয়। খুব কুৎসিত শোনালেও এইটাই সত্য, বর্তমান সময়ের জন্য বাস্তব। কারণ এখনো অভিজিৎ রায়ের বই পাওয়া যায় না। নামি দামী দোকানেও কেউ রাখে না। কেউ রাখতে চাইলেও পারে না কারণ বইই নাই। কেউ প্রকাশ করলে তো পাওয়া যাবে! এখনো এই দেশে নতুন কোন অভিজিৎ রায় নিজের চিন্তা নিজের কাছে রেখে জীবনকে আগলে রাখতেই বেশি পছন্দ করে, কারণ করতে বাধ্য সে। কি দরকার পৈত্রিক ঘাড়ের উপরে অত্যাচারের ঝুঁকি নেওয়া?  এখনো এই দেশে নেহায়েত জানার জন্যও একটু ভিন্ন ধর্মী প্রশ্ন করতে পারবেন না। এখনো এই দেশে বিজ্ঞানকে শুধু বিজ্ঞান হিসেবে পড়তে পারবেন না, পড়তে পারলেও প্রচার করতে পারবেন না। নানান ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য যুক্ত করে বিজ্ঞান পড়তে হবে। যে কোন বিষয়, এইটা ধর্মগ্রন্থে আছে বলে যদি প্রচার করেন তাহলেই রক্ষা। নাহলে ধর্ম অবমাননার জন্য আপনি শেষ!

    জিয়া, ফারাবিসহ সমস্ত আসামিকে যদি দুইশ বার করেও ফাঁসি দেওয়া হয়, আর দেশে যদি একজন মুক্তচিন্তার মানুষও  নিজের যে ঢঙের চিন্তাই হোক তা প্রকাশ করতে না পারে তাহলে ধরে নিতে হবে আলো আসেনি। অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু ততদিন পর্যন্ত ব্যর্থ হিসেবেই থাকবে। আর সেই দায় রাষ্ট্রের নিতে হবে। রাষ্ট্র ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত হবে।

    আলো আসুক। আলোকে আসতেই হবে। এই আশা করা ছাড়া আমাদের সামনে অন্য কোন রাস্তা নাই, শেয়াল কুকুরে দেশ ভরে যাচ্ছে, আমাদের আশা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। হুমায়ুন আজাদের একটা কবিতা দিয়ে শেষ করি -

     

    যে তুমি ফোটাও ও ফুল ঘ্রাণে ভরো ব্যাপক সবুজ

    জমিতে বিছিয়ে দাও ধান শিম খিরোই তরমুজ

    কুমড়োর সুস্বাদ, যে তুমি ফলাও শাখে ফজলি আম

    কামরাঙা পেয়ারা, বাতাসে দোলায় গুচ্ছগুচ্ছ জাম,

    যে তুমি বহাও নদী, পাললিক নদীর ভেতরে

    লালনপালন করো ইলিশ বোয়াল স্তরেস্তরে,

    যে তুমি উঠাও চাঁদ মেঘ ছিঁড়ে নীলাকাশ জুড়ে

    বাজাও শ্রাবণ রাত্রি নর্তকীর অজস্র নূপুরে ,

    যে তুমি পাখির ডাকে জেগে ওঠো, এবং নিশ্চুপে

    বলিকার সারা দেহ ভরে দাও তিলেতিলে রূপে

    আর কণকচাঁপার গন্ধে আর ভাটিয়ালি গানে,

    যে তুমি বইয়ে দাও মধুদুগ্ধ গাভির ওলানে

    খড় আর ঘাস থেকে, যে তুমি ফোটাও মাধবী

    আর অজস্র পুত্রকে দাও ছন্দ- করে তোলো কবি,

    যে তুমি ফোটাও ফুল বনে বনে গন্ধভরপুর-

    সে তুমি কেমন করে, বাঙলা, সে তুমি কেমন করে

    দিকে দিকে জন্ম দিচ্ছ পালেপালে শুয়োর কুকুর?

     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ২৩৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | 162.115.44.103 | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৩৫102724
  • আরিফ আজাদদের পাশাপাশি, সাদেক, ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​মত লোকজনও ​​​​​​​তো ​​​​​​​আছেন।  


    'আলোকে আসতেই হবে'

  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১০:৫৮102725
  • @aranya, আমাদের সংখ্যা দিন দিন কমছে, সমস্যা তো সেখানেই। হু হু করে কমছে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে দেখলে কেউ চিন্তাই করতে পারবে না এই দেশ একদিন যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে। আমাদের আশেপাশে, চেনা মুখ এখন এমন অচেনা সুরে কথা বলে যে বিশ্বাস করা মুশকিল। নিজেদের বৃত্তের ভিতরের বন্ধুদের দেখছি পরিবর্তন হতে, ফেসবুকে ব্লক খাইছি তাদের কাছ থেকে যারা এক সময় নিত্যদিনের সাথী ছিল। আমি ঢাকাও থাকি না, মফস্বল শহরের পরিস্থিতি অকল্পনীয়। আলো আসবে, সেই আশায় আছি। স্বপ্ন দেখা ছাড়া তো আর কোন উপায় নাই বেঁচে থাকার। 

  • বিপ্লব রহমান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:৪৮103012
  • #IamAvijit 


    অভিজিৎরা হারলে হেরে যাবে বাংলাদেশ! কলম চলবেই 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন