এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • তুমি তো প্রহর গোনো, তারা মুদ্রা গোনে কোটি কোটি

    অতনু চক্রবর্তী 
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৭ জুলাই ২০২২ | ১০৪৯৩ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৭ জন)
  • রাজ্য রাজনীতিতে বিরাট  তোলপাড় তুলে উদ্ধার কোটি কোটি টাকা,  দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার  পার্থ চট্টোপাধ্যায় যিনি রাজ্য মন্ত্রীসভার দ্বিতীয় ব্যক্তি । শুধু প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীই নন, তিনি তৃণমূল দলের বিরাট মাপের এক নেতা, শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটির চেয়ারম্যান ও বটে । শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যার উপর দল  সঁপেছিল তিনিই এতো বড় কেলেঙ্কারি, আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন --- নির্মম পরিহাসের এর থেকে বড় উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে রয়েছে কিনা সন্দেহ আছে । তাঁর সাঙাততন্ত্রের  কদর্য চেহারাও  দেখলো গোটা রাজ্য। কিভাবে তাঁরই এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিলাসবহুল আবাসন থেকে উদ্ধার হল গুপ্তধন, কোটি কোটি টাকা,  অঢেল বিদেশি মুদ্রা ও সোনার অলঙ্কার! মিলল কি বিপুল স্থাবর  সম্পত্তির হদিশ । কুৎসিত বৈভবের নির্লজ্জ প্রদর্শনী চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল ক্ষমতার অলিন্দে থাকা এই সমস্ত হোমরা চোমরা নেতা - মন্ত্রী কত বড় বহরের অন্যায় - অবিচার - কে গোপনে সংগঠিত করেছিল বছর বছর ধরে। এতোবড় দুর্নীতির সাথে নাম জড়ানো  সত্ত্বেও রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে পার্থবাবুকে বরখাস্ত করা হল না। বোঝাই গেল, দুর্নীতির প্রশ্নে শূন্য সহনশীলতার নীতি আমাদের নীতিবাগিশ  মুখ্যমন্ত্রীর না- পসন্দ। আর তারপরেও সবাইকে  অবাক করে  মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, তিনি নাকি এই সমস্ত কিছুর বিন্দু - বিসর্গ ও জানতেন না!!  

    কিন্তু, এতো বড় অন্যায়ের শিকার যাঁরা হলেন, তাঁদের কি হবে?  রাজ্যের সাধারণ ঘরের অগুনতি  ছেলে মেয়েরা বহু পরিশ্রম করে এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে মেধা তালিকায় নাম ওঠার পরও দেখলেন তাঁদের চাকরি হলো না। উল্টে তা বিপুল টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেল।   এদিকে, ডাহা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে বাঁচাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন।  বঙ্গ - সম্মান প্রদানের মঞ্চকে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের মঞ্চে পরিনত করে অবলীলায় জানালেন যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির বিষয়ে তিনি আগে কিছুই জানতে পারেননি। অথচ কে না জানে, ২০১৯ সালের এসএলএসটি - র মেধা তালিকায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে- র নাম হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসল আর তিনি চাকরি পেয়ে গেলেন "যাদুকরী"  স্পর্শে।  গেজেট অনুযায়ী নিয়োগ না করার প্রতিবাদে ২০১৯ -র ২৮ শে ফেব্রুয়ারি কলকাতার মেয়ো রোডে প্রেস ক্লাবের সামনে ' যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ' এর ব্যানারে দুর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে শুরু হয় অনশন আন্দোলন। ২৯ দিনের মাথায় হঠাৎ অনশনস্থলে আবির্ভূত হলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি এসএসসি কে ঘুঘুর বাসা হিসাবে আখ্যায়িত করেন। তিনি সেখানে গঠন করেন একটা কমিটি ---- আর, সেখানে তাঁদেরই রেখে দিলেন  যাঁরা ইতিমধ্যেই দুর্নীতিবাজ হিসাবে চিহ্নিত।  কে না জানে, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এসএসসি - র মাধ্যমে শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অচিরেই বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে যে পরীক্ষা হয়, তাতেও লেপ্টে ছিল দুর্নীতির বড়সড় অভিযোগ। টেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে যে এলো, তাও কি মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না?  হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি - র নিয়োগ দুর্নীতি যাচাই করতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এটাও কি জানতেন না মুখ্যমন্ত্রী? হাইকোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটি এসএসসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে আঙুল তুলেছিলেন, তাও কি শুনতে পাননি মুখ্যমন্ত্রী?  না কি শুনতে চাননি? একদিকে   ক্ষমতার দম্ভ ও দাপটের মিশেল, অন্যদিকে ঠগ খুঁজতে দল উজাড় হওয়ার আশঙ্কায় তিনি নীতিহীন আপোষ করেছেন দুর্নীতির সাথে। 

    ২০১৫ সালে সংঘটিত আপার প্রাইমারি প্যানেলের মধ্যে বিরাট অসঙ্গতি থাকায় আদালত নির্দেশ দিয়েছিল অবিলম্বে তা সংশোধন করতে।   আজও ওই প্যানেলের নিয়োগ সম্পন্ন হলো না। ফলে, প্যানেলের মধ্যে থাকা চাকুরিপ্রার্থীরা ২০১৫- ২০২২ - --- এই দীর্ঘ সাত বছর ধরে যে স্বপ্ন সযত্নে লালন পালন করেছিলেন, তার ভ্রূণ হত্যা হল। টেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসলেও তার সমাধান আজ পর্যন্ত হল না। এদিকে,  সংকট থেকে পরিত্রাণ খুঁজতে মুখ্যমন্ত্রী আদালতের দিকে দায় ঠেলে দিলেন। হাইকোর্ট ও শিক্ষা সচিবের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে কোন কোন শূন্যপদ পূরণ আদালতের রায়ের কারণ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, তা হলফনামা পেশ করে জানাতে। 

    সাম্প্রতিক দুর্নীতি কান্ডে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে রাজ্যে আতঙ্কজনক কর্মহীনতার ছবি। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় ঘনিয়ে ওঠা সরকার - সৃষ্ট নৈরাজ্য, পড়ুয়া -পিছু শিক্ষকদের লজ্জাজনক ঘাটতি, রাজ্য সরকারি - আধা সরকারি - স্বশাসিত সংস্থাগুলোতে বছরের পর বছর বিপুল পরিমাণে শূন্যপদ না পূরণ করার আখ্যান। পড়ুয়া - শিক্ষক অনুপাতের চরম দৈন্যতা আজ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গিলে খাচ্ছে। সংবাদে প্রকাশ, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে সাকার ঘাট জুনিয়ার হাই স্কুলে উচ্চ প্রাথমিকে ৭৭২ জন পড়ুয়া পিছু শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ১! এটা কোন ব্যতিক্রমী উদাহরণ নয়। বহু উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে মাত্র এক বা দু' জন শিক্ষকের উপর পঠন পাঠনের পুরো দায়ভারটি ন্যস্ত। এমনও দেখা যায়, সেই এক বা দু'জন শিক্ষক ছুটিতে গেলে স্কুলের গ্রুপ -  ডি কর্মীকে ক্লাস নিতে হয়। কখনও বা আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে এই অবস্থার সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলে। শিক্ষার প্রতি এই নির্দয় অবহেলা অপরাধসম। শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী। শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড বলে ক্লান্তিহীন বিজ্ঞাপন যতই দেওয়া হোক না কেন, এই রাজ্য সরকার তিলে তিলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকেই ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছয় মাস পার হওয়া সত্ত্বেও  ২০২১ সালের টেট লিখিত পরীক্ষায় পাশ করা কর্মপ্রত্যাশীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই করা গেল না। আরও উল্লেখ্য, এই নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে কোন ধরনের মামলাই দায়ের করা হয়নি।

    শুধু পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবই নয়, সরকার এবং সরকার - পোষিত স্কুলগুলোতে শিক্ষার ন্যূনতম পরিবেশ, পরিকাঠামো পর্যন্ত নেই। নেই পর্যাপ্ত স্কুল ঘর, কোথাও খোলা আকাশের নীচে চলছে পঠন পাঠন, কোথাও শিক্ষক নেই, নেই শৌচাগার - পরিশ্রুত পানীয় জল - এমনই করুন অবস্থা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে। গোটা শিক্ষাক্ষেত্র জুড়ে কত শূন্যপদ রয়েছে ( শিক্ষক - অশিক্ষক পদে)  তার কোন সরকারি হিসাব আজ পর্যন্ত পেলনা রাজ্যবাসী। অথচ, তুমুল মস্করা করে, ২১ জুলাই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বললেন রাজ্যে নাকি ৩০ হাজার চাকরি তৈরি! সরকার নাকি শুধুমাত্র নিয়োগ পত্র দেওয়ার অপেক্ষায়। আর, ঠিক ক'দিন আগে সংবাদে প্রকাশিত হল রাজ্যে কর্মসংস্থানের আরেকটি মর্মান্তিক ছবি। সংবাদে প্রকাশ, মালদায় সরকারি কর্মসংস্থান কেন্দ্র পরিচারিকাদের জন্য একটা প্রশিক্ষণ শিবির সংগঠিত করে, যাতে অংশ নেয় ৪০ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মহিলারা। 

    এতো বড় একটা ঘটনার পরও রাজ্যের নাগরিক  সমাজ নীরব নিশ্চল! ক্ষমতার উদ্ধত চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন তোলার মূল্যবোধ এ রাজ্যে যেন বড়ই বিষম বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, যে সমস্ত টগবগে প্রাণ কাউকে তোয়াক্কা না করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশকে পরিনত করেছেন তাঁদের প্রতিবাদ প্রতিরোধের তীর্থস্থান, এক গণ আদালত, এক গণ সংসদে -- সেটাই আগামীতে রাত্রির গভীর বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে আনবে এক ফুটন্ত সকাল! সেই অবিচল, অবিনশ্বর বিশ্বাসের উপর ভর করেই উত্তাল সমুদ্রে বেয়ে চলেছে নবজীবনের তরনী। সমস্ত বাধা বন্ধনকে উপেক্ষা করে।

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ জুলাই ২০২২ | ১০৪৯৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 42.110.144.122 | ১৭ আগস্ট ২০২২ ১৮:১৯511123
  • নরাধম কাতলা মাথা সিবিআই এর জালে। আহা কি আনন্দ বাংলার আকাশে বাতাসে !
     
    ---- প্রসূন আচার্য 
     
    স্বাধীনতার পরে পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বড় মাফিয়া বীরভূমের কাতলা মাথা সিবিআই এর জালে। 
     
    বাড়ি গিয়ে দরজার কড়া নেড়ে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। বোধহয় বিকেলের দিকে গ্রেফতারের করা হবে। 
     
    আজ রাখী পূর্ণিমা। হাতে রাখীর বদলে হাতকড়া পরলো পাপে নিমজ্জিত এই নরাধমের। হেন অধর্ম কাজ নেই যে তিনি করেননি।
     
    পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রাজ্যের সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে এই কাতলা মাথা শুধু নিজের এবং ঘনিষ্ঠদের বেআইনি সম্পত্তি বাড়ান নি, দিনের পর দিন ক্যামাক স্ট্রীটে ভাইপো অ্যান্ড কোম্পানিকে পাঠিয়েছেন। বিনয় মিশ্রর মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়েছেন। যে বিনয় মিশ্র ভাইপোর ঘনিষ্ঠতার সুবাদে দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিল। এখন ইন্দোনেশিয়ার কাছে ভান্তুয়া দ্বীপে পলাতক। সেই দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছে।
     
    একদা মুকুল ঘনিষ্ঠ কাতলা মাথা ২০০৯ সালের আগে হাটে মাগুর মাছ বিক্রি করতেন। কাঁসার গ্লাসে দেশি মদ খেতেন। আজ তাঁর বেআইনি বেসরকারি সম্পত্তি অন্তত ১০০০ কোটি। কারণ, তাঁর একজন দেহরক্ষীর সম্পত্তি ১০০ কোটি টাকার বেশি! যিনি এখন সিবিআই এর হাতে।
     
    গত ১১ বছরে বীর ভূমিতে কাতলা মাথার প্রতিপত্তি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস পায়নি। কেউ প্রশ্ন তুললে তার পিঠে চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজিয়েছেন শাসক দলের এই ডন। পুলিশকে দিয়ে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গাঁজা কেস দিয়ে জেলে ভরা হয়েছে। এমনকি খুনের অভিযোগও আছে কাতলা মাথার বিরুদ্ধে। আমার আপনার টাক্স এর টাকায় রাজ্য সরকার এঁকে বিশেষ কমান্ডো সুরক্ষা দিয়েছে। এক ঝাঁক কমান্ডো তাঁকে ঘিরে রাখত। যাতে কেউ এঁকে ছুঁতে না পারে!
     
    বিরোধী শূণ্য করে কাতলা মাথা পঞ্চায়েত ভোট করেছেন। দলের অন্য গোষ্ঠীর লোককে পঞ্চায়েত ভোটে হারাতে প্রয়োজনে পুলিশকে বোম মারতে বলেছেন। খুনে মদত দিয়েছেন। এই তো সেদিনের কথা, ভাদু শেখ পাথর আর বালি খাদান এর তোলার ভাগ দেয়নি বলে বকটুই এ জ্বলন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে ১২ জন মহিলা আর শিশুকে। 
     
    শুধু বাংলাদেশে গরু পাচার নয়, পাথর ও বলি খাদান, বেআইনি কয়লা খনি, বাংলা মায়ের সম্পদ লুঠ করে নিজের আর দলের রাজকোষ ভরেছেন এই কাতলা মাথা। 
     
    দামী বিদেশি মদ এবং দলের বা ভাড়া করা মহিলা ছাড়া যাঁর একটা দিনও কাটত না। 
     
    কোনও ব্যবসায়ী বালি বা পাথর খাদান লিজে নিলে দুই হাজার টাকার নোটের বান্ডিল ছাড়াও দামী বিদেশি মদ এবং সোনাগাছির ভাড়া করা আগ্রাওলি পাঠাতে হত হোটেল বা গেস্ট হাউস ভাড়া করে! এটাই রীতি ছিল।
     
    আর দিনের পর দিন এই সব অনাচার দেখেও চোখ বুজে থেকেছেন সোনা বউয়ের পিসি শাশুড়ি! ফলে সাধারণ মানুষ এই কাতলা মাথাকে নিয়ে যতই ছি ছি করুক, কোনও দিন তাঁর বিরুদ্ধে তিনি কোনও ব্যবস্থাই নেননি। বরং "ওর মাথায় কম অক্সিজেন যায় " বলে বিষয়টি হালকা করে দিতে চেয়েছেন। 
     
    গ্রেফতারের পর এখন দল কী করবে ? 
     
    বর্ষীয়ান মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় দায় ঝেড়ে ফেলে বললেন, "দোষ করলে শাস্তি পাবে। এর দায় দল নেবে না।" চিটফান্ড মামলায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হয়ে মাসের পর মাস মাস জেল খাটা মদন মিত্রও দায় ঝেড়ে ফেললেন! 
     
    কাতলা মাথার পাপের দায় কি নেবেন কেউ ? সেই উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে। 
    দস্যু রত্নাকর এর পাপের ভাগ কি তাঁর স্ত্রী পুত্ররা নিয়েছিল ? 
    নেননি। 
    সিপিএমের আমলে হুগলির অনিল বসুর পাপের ভাগ কেউ নিয়েছিল ?
    নেয়নি।
     
    বীরভূমের আকাশে বাতাসে আজ আনন্দ। শেষ শ্রাবণে আবীর খেললেও কেউ আপত্তি করবে না। কারণ, দলটার Moral ভেঙে গিয়েছে। মানুষের মধ্যে বিলি হচ্ছে গুড় বাতাসা।
     
    আমি নিশ্চিত, এই কাতলা মাথার পুজো কোনও দিনই তারাপীঠ এর মা কালী গ্রহণ করেননি। (যদিও আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই ধরনের দেখনদারি পুজোয় বিশ্বাসী নই)। 
    কারণ, কাতলা মাথার সেই পুজোতে বার বার তাঁর আর্থিক বৈভব আর স্বর্ণালঙ্কার প্রাধান্য পেত। ভক্তি নয়। সেই সব ছবি তোলা আছে সংবাদ মাধ্যমে।
     
    আমার মনে হয়, কাতলা মাথার ঈশ্বর ভক্তি ছিল না। পুরোটাই লোক দেখানো। থাকলে এত পাপ করতে পারতো না!
     
    তাই তিনি ঘর বন্ধ করে পুজো করার সময় দরজায় কড়া নেড়ে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। বোধহয় ওঁর পূজিত ঈশ্বরই চান, এমন পাপীকে বলি দিতে। মা কালীর কাছে পাপীদের বলি দেওয়া হয় তো সেই জন্যই।
     
    আজ রাজ্যবাসী গুড় বাতাসা খেয়ে চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজাবে। 
     
    বলবে আহা আজ কি আনন্দ বাংলার আকাশে বাতাসে!
     
    C@ Prasun Acharya
  • দীপ | 42.110.144.122 | ১৭ আগস্ট ২০২২ ১৮:১৯511124
  • এক নরাধমের ইতিবৃত্ত!
  • দীপ | 42.110.147.59 | ১৮ আগস্ট ২০২২ ১৭:১০511151
  • এক অসহায় শিক্ষকের করুণ কাহিনী!
     
    নিজেকে শেষ করে দিলেন 'শিক্ষারত্ন', তিনবছরেও জোটেনি পেনশন 

    শিক্ষারত্ন পেলেও নিজের পেনশনটা পেলেন না বাংলার শিক্ষক। তিন বছর পেনশন না পেয়ে, নিজেকে শেষ করে দিলেন বাংলার শিক্ষারত্ন। হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের, ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। পূর্ব বর্ধমানে মেমারীর পাশে দেবীপুরে, নিজের বাড়িতে মিলল ঝুলন্ত দেহ। নিজেকে শেষ করে দিলেন, বাংলার এক শিক্ষারত্ন।

    অবসরের ৩ বছর পরেও পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না পেয়ে অবসাদে ভুগছিলেন, অভিযোগ পরিবারের, অভিযোগ শিক্ষকের স্ত্রীর। ২০১৯-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষারত্ন সম্মানে, ভূষিত হন শিক্ষক সুনীলকুমার দাস। পেনশনের জন্য অনেকবার বিকাশ ভবনে গিয়েছিলেন, দাবি মৃত শিক্ষকের স্ত্রী-র। কিন্তু বিকাশ ভবনের আধিকারিকদের দয়া হয়নি। পেনশন শুরু করেনি, অবসরপ্রাপ্ত্য শিক্ষক সুনীলকুমার দাসের।

    লজ্জার অন্ধকারে ডুবল বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা। ঢাকঢোল পিটিয়ে শিক্ষারত্ন দিলেও, রাজ্য সরকার তিন বছর ধরে দিল না পেনশন। বিকাশ ভবনে ঘুরে ঘুরে, জুতোর শুকতলা ছিঁড়ে গেলেও, পেলেন না নিজের পেনশন। এমনটাই অভিযোগ অবসরপ্রাপ্ত্য শিক্ষক সুনীলকুমার দাসের স্ত্রী ও পরিবারের। তিন বছর পেনশন না পেয়ে, নিজেকে শেষ করে দিলেন বাংলার শিক্ষারত্ন।

    প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁর হাতে শিক্ষারত্ন পুরস্কার তুলে দেন। সরকারী-বেসরকারী তরফে শিক্ষক হিসাবে, আরও বহু সম্মান তিনি পেয়েছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, তিনি অবসর নেন। পরিবারের অভিযোগ, অবসরের পর লাগাতার ৩ বছর ধরে বিকাশভবন ও নিজের স্কুলে যাতায়াত করলেও, মেলেনি পেনশন ও অন্যান্য পাওনা। এরপরই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ও আ'ত্মঘা'তী হন।

    আমরা শুধুই প্রচারের জন্যই রত্ন দি, তার যত্ন করি না...আমাদের ক্ষমা করে দিন স্যার......

    Copyright........ Manab Guha
  • দীপ | 42.110.137.99 | ১৯ আগস্ট ২০২২ ১৮:০২511185
  • দীপ | 42.110.137.99 | ১৯ আগস্ট ২০২২ ১৮:০৩511186
  • শূকরশাবকের আরো কীর্তি ‌!
  • যোষিতা | ২০ আগস্ট ২০২২ ০৩:১০511193
  • গাঁজা কেস দেবার হুমকি দিতো
  • দীপ | 42.110.145.83 | ২১ আগস্ট ২০২২ ১৫:৪১511241
  • এরপরও এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়না! উলটে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়!
  • দীপ | 2402:3a80:196b:f8fb:6a7b:fbe4:2540:118 | ২২ আগস্ট ২০২২ ১৬:০৪511266
  • দীপ | 2402:3a80:196b:f8fb:6a7b:fbe4:2540:118 | ২২ আগস্ট ২০২২ ১৬:০৪511267
  • একেকটি রত্ন সব!
  • দীপ | 42.110.147.136 | ২৫ আগস্ট ২০২২ ১৭:৫৫511342
  • এক অসহায় পরিবারের কাহিনী। সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলাম।
     
    "আমার কাকা কলকাতা কর্পোরেশনে অত্যন্ত দায়িত্বশীল পদ থেকে গত ৩১ মার্চ ২০২২ তারিখে অবসর নিয়েছেন। 
    বর্তমানে অবসরকালীন যে পাওনা অর্থ তা গত পাঁচ মাস ধরে বকেয়া আছে এর ফলে তিনি প্রভূত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
    তাঁর প্রাপ্য টাকার পরিমাণ নিম্নরূপ
    ১) পেনশনের ৪০% ( চল্লিশ শতাংশ) অর্থাৎ ১৬০০০ টাকা কম্যুট (commute) করেছেন যার নগদ মূল্য কমবেশি ১৬০০০০০ (ষোলো লাখ) টাকা তা বকেয়া আছে।
     
    ২) অবসরের প্রাপ্য গ্রাচ্যুইটি যায় নগদ মূল্য প্রায় ১২০০০০০ (বার লাখ) টাকা তা বকেয়া আছে।
     
    এর ফলে কলকাতা কর্পোরেশন তাঁর মোট প্রাপ্য কমবেশি ২৮০০০০০ (আটাশ লাখ) টাকা। যে টাকা সরকারী যে কোন সঞ্চয় প্রকল্পে রাখলে তার থেকে মোটামুটি ১৮ হাজার টাকা মাসিক সুদ হিসাবে তিনি পেতেন।
    বর্তমানে পেনশন বাবদ মাসে ২৫৭০০ টাকা পাচ্ছেন, ফলে প্রতি মাসের আর্থিক ক্ষতি বাদ দিলে তাঁর এফেকটিভ পেনশন দাঁড়াচ্ছে মাত্র সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা।
    এমনকি, কর্পোরেশন ক্রেডিট সোসাইটিতে তাঁর যা ফেরত যোগ্য প্রাপ্য (প্রায় ৫১ হাজার টাকা) সেটাও পাচ্ছেন না। তাঁকে ২২ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে যেতে বলা হয়েছে, যদিও তাঁর সাথে বা তার পর অবসর নেওয়া কিছু কিছু প্রভাবশালী কর্মী সেই টাকা ইতিমধ্যে পেয়ে গেছে। এটা ক্রেডিট সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে জানালেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি।
    আমার কাকার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে । অথচ এই কারণে সেই বিয়েও আটকে গেছে। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। দুশ্চিন্তায় আমার কাকা বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পুরো পরিবারের রাতের ঘুম চলে গেছে । ক্রমশ অন্ধকার নেমে আসছে আমাদের পুরো পরিবারের ওপর ।
    কি করব বলতে পারেন?"
     
    ইতি
    মহিমা ঘোষাল
     ২৩ আগস্ট, মঙ্গলবার,২০২২
  • দীপ | 42.110.136.77 | ২৭ আগস্ট ২০২২ ২১:২১511407
  • দীপ | 42.110.139.216 | ২৮ আগস্ট ২০২২ ২১:২৯511461
  • ১. বোলপুরে ৭ খানা বাড়ি এবং শান্তিনিকেতনে ৪০০০ স্কোয়ার ফুটের একটা গোটা ফ্লোর।
    ২. ডায়মন্ড সিটিতে ৪ টে ফ্ল্যাট, বেলঘরিয়া ক্লাব টাউনে ২ টো ফ্ল্যাট এবং নিউটাউনে ২ টো ফ্ল্যাট।
    ৩. সোনারপুরে একটা বিরাট বাড়ি।
    ৪. হুগলির জঙ্গি পাড়ায় একটা প্রাসাদোপম বাড়ি।
    ৫. ৪৫ কোটি টাকার জমির উপর ৫০ কোটি টাকার ইস্কুল!
    ৬. পশু হাসপাতাল খোলার জন্য কলকাতার বাঘাযতীন রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ১২,২৪০ স্কোয়ার ফুটের জমি।
    ৭. বারুইপুরে ২৫ বিঘা জমি।
    ৮. সিঙ্গুরে একটা বিরাট বড় ফার্ম হাউস।
    ৯. সুন্দরবনে একটা বিরাট গেস্ট হাউস।
    ১০. সজনেখালি পাখিরালয়ের কাছে একটা রিসর্ট।
    ১১. সুন্দরবনে একটা রিসর্ট।
    ১২. ঝাড়গ্রামে একটা ফার্ম হাউস।
    ১৩. বারুইপুরে একটা ফার্ম হাউস।
    ১৪. বানতলা লেদার কমপ্লেক্সের কাছে ২৪ কোটি টাকা মূল্যের ১০ বিঘা জমি।
    ১৫. ঝাড়খন্ডে ২৪ একর জমি।
    ১৬. বালি মাইনিং এর জন্য নিজস্ব ডাম্পার।
    ১৭. বিউটি পার্লার আর গার্মেন্টস চেইনে লগ্নি।
    ১৮. একটি এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানির গোটা বিল্ডিং।

    গত ১১ বছরে আমার আপনার মতো মুখে রক্ত তুলে উপার্জন করা মানুষগুলোর টাকা মেরে, ভদ্দোরলোক মাত্র এইটুকু সম্পত্তিই গোছাতে পেরেছিলেন। আমরা গরু গাধার মতো খাটছি, আর আমাদের টাকা নিয়ে ভদ্দোরলোকেরা এইভাবে ফুর্তি করছেন। কিউট না?
    Ambikesh Mahapatra
     
    অম্বিকেশ মহাপাত্রের কলমে পাঁঠা চ্যাটার্জীর সম্পত্তির খতিয়ান।
     
  • দীপ | 42.110.136.227 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:১২511553
  • দীপ | 42.110.136.227 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:১৩511554
  • পাঁচ লক্ষাধিক পদ শূন্য রয়েছে, আর উনি এখন উৎসবে মেতেছেন! 
    নির্লজ্জ শাসকের অপরিসীম ঔদ্ধত্য!
  • দীপ | 42.110.136.227 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৩৭511556
  • শুকরশাবকের আস্ফালন!
  • দীপ | 2402:3a80:196f:c8a8:1b35:5639:7869:9579 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:২৯511607
  • আরেক রত্নের প্রকাশ!
  • দীপ | 2401:4900:3149:3e67:ede5:36c4:7a8e:e83e | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫১511695
  • দীপ | 2401:4900:3149:3e67:ede5:36c4:7a8e:e83e | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫২511696
  • কারো প্রতিভাই চেপে রাখা যাচ্ছেনা!
  • দীপ | 42.110.147.226 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:৩৭511796
  • দীপ | 42.110.147.226 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:৩৮511797
  • গণতন্ত্র ‌চলছে!
  • দীপ | 42.110.147.226 | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০০:২৪511833
  • এবার আরেক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ১৮ কোটি টাকা!
    কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় টাকা উড়ে বেড়াচ্ছে! খালি ধরতে জানলেই হয়!
  • দীপ | 2402:3a80:196c:4b4:2ba6:10de:3ac8:2332 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:২১511871
  • ওদিকে ফেকুজীর ফকিরি!
  • দীপ | 42.110.139.102 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:২০511887
  • গতকাল (১২/০৯/২২) নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নাকি ১১০০০ কারিগরী শিক্ষা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের চাকরির অফার লেটার তুলে দিয়েছেন। আগামী ১৫/০৯/২২ খড়্গপুরে, ২১/০৯/২২ দুর্গাপুরে,২২/০৮/২২ শিলিগুড়িতে একইরকম সরকারি অনুষ্ঠানে আরও ১৯০০০ জনকে চাকরির অফার লেটার দেওয়া হবে বলে সংবাদমাধ্যমে জানাচ্ছে। শিক্ষক দিবসে যে ৩০০০০ চাকরির ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন, সেটা দুধর্ষ-দুরন্ত গতিতে রূপায়িত হচ্ছে বলেই আনন্দবাজার, এই সময়, জি নিউজ, ২৪ ঘন্টা, প্রতিদিন ইত্যাদি প্রভৃতি সংবাদমাধ্যম তারস্বরে প্রচার করলো।
     
    কিন্তু বাস্তবতা কী??? আমার ৫ জন ছাত্রছাত্রীর অভিজ্ঞতা, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু খবর ও ভিডিও থেকে যা জানলাম, সেটাই বলি।
     
    গতকাল (১২/০৯/২২) হাওড়া, হুগলী, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণা ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা - এই পাঁচ জেলা থেকে ১০১০০ জন কারিগরী শিক্ষা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের বাস বোঝাই করে ভিড় করানো হলো নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। জেলা পিছু খরচ করা হলো সাড়ে সাত লক্ষ টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা চলার সময় প্রদর্শনের জন্য স্টেডিয়ামে প্রবেশের সময় কিছু কিছু ছাত্রছাত্রীর হাতে ধরিয়ে দেওয়া হলো মমতা ব্যানার্জীর ছবি আর উৎকর্ষ বাংলার লোগো লাগানো হোর্ডার। মুখ্যমন্ত্রী এলেন। মাইক ধরলেন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নানান বাগাড়ম্বরের পর ছাত্রছাত্রীদের কাছে জানতে চাইলেন তারা অফার লেটারের ই-মেইল পেয়েছে কিনা। স্তব্ধ স্টেডিয়াম। কিন্তু অকুতোভয় ভঙ্গিতে তিনি বারবার জানতে চাইলেন। শেষে ছাত্রছাত্রীরা সমস্বরে জানালো - 'না'। বিড়ম্বনা এড়াতে পোডিয়াম ছেড়ে মঞ্চজুড়ে পায়চারি করতে শুরু করলেন তিনি। তারপর আধিকারিকদের সাথে শলাপরামর্শ করে জানালেন ই-মেইল আজকে (১২/০৯/২২) থেকে যাবে। এই কথা শুনে ও মুখ্যমন্ত্রীর বিভ্রান্তি দেখে ছাত্রছাত্রীরা হাসি চাপতে পারলো না। এবার মুখ্যমন্ত্রী ফাইল দেখালেন, চিঠি দেখালেন, উৎকর্ষ বাংলার সাতকাহন গাইলেন, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কৃষ্ণ গুপ্ত, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীসহ আমলাদের উপর বিরক্তি প্রকাশ করলেন, দপ্তরের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের চাটুকারিতা গ্রহণ করলেন। অতঃপর আজই (১২/০৯/২২) সকলকে অফার লেটার দিয়ে দেওয়া হবে, বাসে বাসে খাবারের প্যাকেটের (হুঁ হুঁ বাবা, মিও আমরের জবরদস্ত প্যাকেট) সঙ্গেই দিতে হবে অফার লেটার - আমলাদের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশ দিয়ে তিনি মঞ্চ ছাড়লেন। ১৫ মিনিট পরে আমলারা অসহায় ভঙ্গিতে ফেরার বাস ছাড়ার হুকুম দিয়ে দিলেন। অফার লেটার সেই বাসে উঠতে পারলো না। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন - সংবাদমাধ্যম মুখ্যমন্ত্রীর পিছু পিছু বিদায় নিয়েই হেডলাইন লিখে দিলো। সারা পৃথিবী জানলো মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ১১০০০ চাকরি দিয়ে দিয়েছেন। আরও দেবেন। মোট ৩০০০০। কিন্তু বাস্তবে যে অফার লেটার বাস মিস করেছে সেটা সংবাদমাধ্যম চেপে গেলো। ভোর চারটেয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাত আটটায় বাড়ি ফেরা ছাত্রছাত্রীদের শরীরে ক্লান্তি, মনে একরাশ বিভ্রান্তি ছিল, কিন্তু হাতে অফার লেটার ছিল না। তবুও ক্ষীণ একটা আশা ছিল আজ (১৩/০৯/২২) হয়তো তার অফার লেটার পাবে। সারাদিন কাটলো বৃথা অপেক্ষায়। 
     
    তবে সব অপেক্ষারই শেষ আছে। এই অপেক্ষাও শেষ হলো আজ (১৩/০৯/২২) রাত ৮টা ৩৮ শে। অফার লেটার নিতে ওদের ডাক পরলো হুগলী নোডাল অফিসে। সেখানকার কর্মীরা রাতেও অন-ডিউটি। আগামীকাল (১৪/০৯/২২) সকাল ১০টার আগে অফার লেটার ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে তাদের দিতেই হবে (কারণটা শেষে বুঝবেন)। ওরা ৫ জন ছুটলো আজ (১৩/০৯/২২) রাতেই। রাত সাড়ে নটা নাগাদ ওরা হাতে পেলো বহুপ্রতিক্ষীত অফার লেটার।
     
    কিন্তু লেটার খুলে তো ওদের চক্ষু চড়কগাছ। কোথায় চাকরি??? লেটারে লেখা আছে - সুজুকি মোটরস্ গুজরাট এবং ফানফিস্ট গ্লোবাল স্কিলার্স-এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় ২ বছরের আইটিআই শিক্ষাক্রমে ট্রেনিং পার্টনার হিসেবে তাদের যুক্ত করা হচ্ছে। মাসিক স্টাইফেন পাবে ১১০০০টাকা। ওদের কোর্স ফিজ সুজুকি মোটর্স গুজরাট প্রাইভেট লিমিটেড বহন করবে। যে তালিকায় ওদের নাম আছে, সেখানে আরও ১০২ জনের নাম আছে। মোট ১০৭ জন।
     
    এখানেই যন্ত্রণার শেয নয় এদের। চিঠিতে স্পষ্ট লেখা আছে ১১/০৯/২২ থেকে ১৪/০৯/২২-এর সকাল ১০টার মধ্যে গুজরাটের সুরেন্দ্রনগরে গিয়ে ওদের জয়েন করতে হবে। মানে হাতে চিঠি পাওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যে ২০৫০ কি.মি দূরে ওদের যেতে হবে জয়েন করতে। সাথে এটাও লক্ষণীয় জয়েনিং ১১/০৯/২২ থেকে শুরু হয়ে গেলেও শুধুমাত্র মমতা ব্যানার্জীর মুখ থেকে সরকারি মোচ্ছবের মাধ্যমে ঘোষণার জন্য মাত্র ১২ ঘন্টা আগে ( জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীর সেটুকু সময়ও পাবে না। কারণ ওদের পক্ষে ১৩/০৯/২২-এ ৮টা৩৮-এ খবর পেয়ে আর হুগলী নোডালে আসা সম্ভব নয়। ওরা এই অফার লেটার পাবে ১৪/০৯/২২ সকালে।) অফার লেটারের নামে প্রহসনপত্র তুলে দেওয়া হলো ছেলেমেয়েদের হাতে। আগামীকাল (১৪/০৯/২২) সকাল ১০টায় জয়েনিং-এর সময়সীমা শেষ, তাই তার আগেই বাধ্যতামূলক ভাবে অফার লেটার সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। 
     
    এই অবস্থায় আতান্তরে পরে ছাত্রছাত্রীরা চিঠিতে দেওয়া নম্বরে সেন্টার ইনচার্জ হিসেবে উল্লেখিত বেদপ্রকাশ সিং-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সম্পূর্ণ চিঠিটাই ফেক বা ভুয়ো। চিঠিতে উল্লেখিত কোম্পানি আছে, তারা স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য আইটিআই-এর কোর্স করান, সুজুকি মোটর্সের সাথে তাদের টাইআপ আছে, নিযুক্তদের তারা এই লেটারহেডেই চিঠি পাঠান - এগুলো সবই সত্যি। কিন্তু লেটার হেডটি রঙিন হয় - এই রকম সাদাকালো নয়। এক্ষেত্রে তাদের লেটারহেড অন্যায় ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 
     
    রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতিদের সাথে এই নির্মম রসিকতা মমতা ব্যানার্জীর পক্ষেই সম্ভব।
  • দীপ | 42.110.139.102 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:২১511888
  • অসভ্য নির্লজ্জ শাসক! 
  • দীপ | 42.110.138.182 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:২০511931
  • SSC দুর্নীতি অভিযোগে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় গ্রেফতার।
     
    ২৪ ঘন্টা ভুয়ো নিয়োগের সংবাদ প্রকাশ করেছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন