এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • বিপ্লবের আগুন

    কিশোর ঘোষাল
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৬৭৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
    [প্রাককথাঃ আধুনিক গণতান্তিক সমাজ হোক কিংবা প্রাচীন রাজতান্ত্রিক সমাজ হোক – বিদ্রোহ, বিপ্লব সর্বদাই প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। নিরীহ, অনুন্নত এবং প্রান্তিক মানুষরা যুগেযুগে কীভাবে উদ্বুব্ধ হয়েছিলেন এবং হচ্ছেন? তাঁরা কীভাবে এগিয়ে চলেন বিপ্লবের পথে? কীভাবে তাঁরা অস্ত্র সংগ্রহ করেন? কোথা থেকে তাঁরা সংগ্রহ করেছেন সেই বহুমূল্য অস্ত্রসম্ভার? যার শক্তিতে তাঁরা রাষ্ট্রশক্তির চোখে চোখ রাখার বারবার স্পর্ধা করেছেন? কখনও তাঁরা পর্যুদস্ত হয়েছেন, কখনও ক্ষণস্থায়ী সাফল্য পেয়েছেন। আবার কখনও কখনও প্রবল প্রতাপ রাষ্ট্রকে তাঁরা পরাস্ত করে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাতেও পুরোন বিদ্রোহ-বিপ্লবের আগুন নেভে না কেন? রাষ্ট্রের পরোক্ষ মদতেই কি এ বিপ্লব চলতে থাকে আবহমান কাল ধরে?]
    ছবি: রমিত চট্টোপাধ্যায়





    রাজার সিংহাসনের পাশে গিয়ে মহামন্ত্রী রাজার কানেকানে বললেন, “রাজামশাই, আজকে এই সভার অধিবেশন যদি একটু তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলতে পারেন, তাহলে আমাদের জরুরি কিছু কথা আলোচনার আছে – সেগুলো সভার পরে সেরে ফেলতে পারতাম”।

    রাজামশাই ভুরু কুঁচকে মন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, “বোঝো কাণ্ড, তাড়াতাড়ি সভা ভঙ্গের কথায় আমি ভেবেছিলাম, আপনি অকালে ছুটি দিয়ে দিলেন। ভালই হল, আমি বিদূষকের সঙ্গে বসে দু হাত চতুরঙ্গ খেলে নেব। কিন্তু সে গুড়ে বালি – আপনি সভার পরে আবার মন্ত্রণাকক্ষে বসাবেন?”

    মহামন্ত্রীমশাই হেসে উত্তর দিলেন, “কী করি রাজামশাই, রাজকার্যে বড়ো ঝামেলি – কখন যে কোন বিষয়টা জরুরি হয়ে পড়ে আগে থেকে তার কোন অনুমান করা যায় না”।

    সভা ভঙ্গ হতে রাজামশাই ও মহামন্ত্রীমশাই মন্ত্রণা কক্ষে গেলেন। চারদিকে কঠোর নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। রাজা বা মহামন্ত্রীর বিশেষ অনুমতি ছাড়া এই কক্ষে এমনকি কক্ষের আশেপাশেও কারও দাঁড়িয়ে থাকার কোন অবকাশ রাখা হয় না। মন্ত্রণাকক্ষের নির্দিষ্ট আসনে বসার পর, মহামন্ত্রীমশাই বললেন, “সংগ্রামপুর থেকে অস্ত্রবিশারদ অসিবল্লভ এসেছেন, রাজামশাই। ওঁর সঙ্গেই আমাদের জরুরি আলোচনা। তাঁকে ডেকে নিই, রাজামশাই?”

    রাজামশাই সম্মতি দিতে, মহামন্ত্রীমশাই প্রহরীকে আদেশ দিলেন, অসিবল্লভকে ভেতরে পাঠানোর জন্যে। অসিবল্লভ অচিরেই মন্ত্রণা কক্ষে ঢুকলেন, প্রথমে রাজামশাইকে প্রণাম করে তাঁর হাতে একটি রত্নখচিত তরবারি উপহার দিলেন, তারপর মহামন্ত্রীমশাইকেও প্রণাম করলেন।

    স্মিতমুখে রাজামশাই জিজ্ঞাসা করলেন, “কী সংবাদ, অসিবল্লভ? তোমার অস্ত্রশালায় কোন গণ্ডগোল হয়নি আশা করি। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছে।”

    বিনীত সুরে অসিবল্লভ বললেন, “না মহারাজ, আমাদের অস্ত্র নির্মাণশালায় কোন বাধা-বিঘ্ন উপস্থিত হয়নি, সব ঠিকঠাক চলছে। প্রকৃতপক্ষে আপনার রাজ্যের সর্বত্রই অখণ্ড শান্তি ও নিবিড় নিরাপত্তা বিরাজ করছে। আমাদের মতো সাধারণ প্রজাদের পক্ষে সেটি খুবই আনন্দের বিষয় নিঃসন্দেহে। কিন্তু সেই কারণেই আমি অস্ত্রনির্মাণকারী হিসেবে বিশেষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছি, মহারাজ। আর সেই কথাটিই আমি মহামন্ত্রীমশাইকে নিবেদন করেছিলাম”।

    বিস্মিত রাজামশাই বললেন, “রাজ্যে শান্তি আর নিরাপত্তার কারণে তোমার দুশ্চিন্তা কেন? ঠিক বুঝতে পারলাম না, অসিবল্লভ। মন্ত্রীমশাই আপনি বুঝেছেন?”

    “কিছুটা বুঝেছি, রাজামশাই। সে কথা বলার জন্যেই আজকের এই মন্ত্রণার আয়োজন। খুব সংক্ষেপে অসিবল্লভ মহাশয়ের উদ্বেগের কারণটা আমি আপনাকে বলি, বাকি যা কথা আছে উনিই বলবেন”।

    রাজামশাইয়ের মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মহামন্ত্রীমশাই বললেন, “আপনার রাজত্বকালের পনের বছর পূর্ণ হতে চলল। প্রথম দুবছরের কিছু গৌণ বিদ্রোহ এবং দু-একটা ছোটখাটো যুদ্ধের পর এই রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করছে। অতএব অস্ত্র-শস্ত্রের কোন ঝনৎকার বহুদিন শোনা যায়নি। অসিবল্লভের সমস্যাটা ঘটছে সেখানেই। অস্ত্র-শস্ত্রের ব্যবহার যদি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, অস্ত্র-শস্ত্রের চাহিদা যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণের কোন প্রয়োজনই থাকছে না। অসিবল্লভের কথায় ওর অস্ত্রনির্মাণশালায় যে ভাণ্ডারগুলিতে ও নির্মিত অস্ত্রশস্ত্র সংরক্ষণ করে, সেগুলিতে আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। উপরন্তু, সংরক্ষিত অস্ত্রশস্ত্রগুলির অনেকাংশই দীর্ঘ অব্যবহারে জং ধরে এবং ধুলো পড়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠছে”।

    রাজামশাই চিন্তিত মুখে বললেন, “হুঁ। তার মানে, আপনি কি বলতে চাইছেন, রাজ্যের পক্ষে নিরঙ্কুশ শান্তিও কাম্য নয়”?

    মহামন্ত্রীমশাই সবিনয়ে বললেন, “সেটাই আমাদের এখন বিবেচনার বিষয়, মহারাজ। মহারাজ এই প্রসঙ্গ ছাড়াও আরও একটি জরুরি বিষয় আছে। যুদ্ধ হোক বা না হোক, প্রতিবেশী বিরোধী রাজ্যগুলির সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অস্ত্র-শস্ত্র নির্মাণের উন্নতিসাধন জরুরি। সে কাজটাও আমরা সর্বদাই চালিয়ে যাচ্ছি। তার ফলে দশ বছরের পুরোনো অস্ত্রশস্ত্র, আমাদের সদ্য বানানো আধুনিক অস্ত্র সম্ভারের কাছে নেহাতই লোহা-লক্কড়ের টুকরো হয়ে উঠছে। এখন কথা হল, আমরা কি তবে পুরোনো অস্ত্র-সম্ভার গালিয়ে আবার লোহার তাল বানিয়ে ফেলব, এবং তার থেকে আধুনিক অস্ত্র বানাবো। কিন্তু তাতে বেজায় খরচ, মহারাজ। আর যুদ্ধ-টুদ্ধ যদি না ঘটে, প্রতি বছরের বানানো নতুন অস্ত্র, পরের বছরেই পুরোনো হতে থাকবে। আর তাকে গালিয়ে আরো আধুনিক অস্ত্র বানানোর প্রক্রিয়াও চলতেই থাকবে! অর্থাৎ প্রতিবছরই রাজকোষ থেকে প্রভূত অর্থের এরকম অনর্থক অপচয় হতেই থাকবে”।

    রাজামশাই মন দিয়েই মহামন্ত্রীমশাইয়ের কথা শুনছিলেন আর মাথা নিচু করে চিন্তা করছিলেন। অনেকক্ষণ পর মুখ তুলে বললেন, “সমস্যাটা বুঝতে পারছি। কিন্তু আধুনিক ও উন্নততর অস্ত্র বানানোর গবেষণা ও উৎপাদন তো আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে। এ ছাড়া আর অন্য উপায় তো দেখছি না। বহুকাল ধরে শান্তি বজায় রয়েছে বলে, আমরা অস্ত্র উৎপাদন তো বন্ধ করে দিতে পারি না। কবে কোন প্রতিবেশী রাজার কী মতিগতি হয় কোন ঠিকানা আছে? তার জন্যে সতর্ক থাকাই তো বুদ্ধিমানের কাজ। তাই না?”

    মহামন্ত্রীমশাই বললেন, “একদম যথার্থ বলেছেন মহারাজ। কিন্তু আমি বলছিলাম, পুরোনো অস্ত্রগুলি যদি আমরা কোনভাবে বিক্রি করতে পারি, তাহলে আমাদের নতুন অস্ত্র বানানোর যে খরচ সেটা আমাদের গায়ে লাগবে না এবং অপব্যয় বলেও মনে হবে না। এমনকি বলা যায় না, আমাদের অস্ত্র-পসরার ঠিকঠাক প্রচার করতে পারলে রাজ্য-কোষাগার হয়তো দু-পয়সা লাভের মুখও দেখতে পারে!”

    রাজামশাই অবাক হয়ে মন্ত্রীমশাই ও অসিবল্লভের মুখের দিকে তাকালেন, বললেন, “সে কী করে সম্ভব? কে কিনবে? আপনিই তো বললেন, আমাদের অত্যাধুনিক অস্ত্রের তুলনায় আমাদের পুরোনো অস্ত্রগুলি লোহা-লক্কড়ের সমান - সেই বাজে লোহা-লক্কড় কিনবে কোন আহাম্মক?”

    অসিবল্লভ সবিনয়ে বললেন, “কেনার লোক এখন নেই, কিন্তু হতে কতক্ষণ, মহারাজ? তীক্ষ্ণ কূটবুদ্ধি সম্পন্ন কিছু যোগ্য গুপ্তচরকে নিয়োগ করে, আমরা রাজ্যের সীমান্তে দু-চারটে বিদ্রোহ বানিয়ে তুলতেই পারি!”

    রাজামশাই আরও অবাক হলেন, বললেন, “কি বলছেন, অসিবল্লভ, আমরা আবার কাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বানাবো? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না”।

    অসিবল্লভ নিজের দুই কান ও নাক মুলে বললেন, “ক্ষমা করবেন, মহারাজ, আমার ওভাবে বলা উচিৎ হয়নি। মহারাজ আমরা কারও বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবো না - বরং আমরাই আমাদের বিরুদ্ধে কিছু মানুষকে বিদ্রোহী করে তুলবো”।

    রাজামশাই কিছু বললেন না, তিনি যেন বিস্ময়ের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন। কী বলছে এরা সব? যেখানে কোথাও কোন অশান্তি নেই, সেখানে নিজেরাই খাল কেটে কুমীর ডেকে দাঙ্গা-লড়াই বাধিয়ে তুলবে? তিনি অসিবল্লভের মুখের দিকে নির্বাক তাকিয়ে রইলেন।

    অসিবল্লভ একটু ইতস্ততঃ করে আবার বললেন, “সত্যি বলতে আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, অর্থাৎ আপনার বিরুদ্ধে কিছু লোককে আমারা নানান উস্কানি দিয়ে বিদ্রোহী করে তুলবো। তাদের মাথায় ঢোকাবো অস্ত্র ছাড়া বিদ্রোহ সম্ভব নয়। তারা যেখান থেকে সম্ভব অর্থ সংগ্রহ করবে, অস্ত্র কেনার জন্যে। আর সেই অর্থের বিনিময়ে আমরা আমাদের পুরোনো অস্ত্র-সম্ভার তাদের কাছে বিক্রি করবো”।

    “কিন্তু সে বিদ্রোহ যদি আমাদের রাজ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়?”

    “কক্‌খনো হবে না, রাজামশাই। তার আগেই আমাদের সুশিক্ষিত সৈন্যদল আমাদের বানানো আধুনিক অস্ত্র দিয়ে তাদের দমন করবে। হ্যাঁ মহারাজ, তারা বিদ্রোহীদের নিঃশেষ করবে না, শুধু দমন করবে। যাতে আমাদের সৈন্যদল ফিরে এলেই বিদ্রোহীরা আবার কিছুদিনের মধ্যেই নতুন করে তাদের বিদ্রোহ শুরু করতে পারে”।

    রাজামশাই এ প্রস্তাবে সন্তুষ্ট হলেন না, তিনি মহামন্ত্রীমশাইকে বললেন, “আমার কিন্তু এ প্রস্তাব একেবারেই পছন্দ নয়। এতো আমাদের প্রজাদের সঙ্গে সরাসরি তঞ্চকতা, শঠতা? তাদের জেনেবুঝে অনিশ্চিত এক বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া... না, না, এ হতে পারে না। আপনি কী বলেন, মহামন্ত্রীমশাই?”

    “আমিও একমত, রাজামশাই। তবে রাজ্যের সকল প্রজাদের মঙ্গলের জন্যে সামান্য কিছু প্রজাকে বিড়ম্বনায় ফেলা তেমন কিছু দোষাবহ নয়, অন্ততঃ শাস্ত্রে সেরকমই বলে থাকে। তাছাড়া অন্য একটা দিকও ভেবে দেখবেন, রাজামশাই। আমাদের সুশিক্ষিত সৈন্যরা কৃষিকাজ করে আর অলস বসে থেকে দিনদিন অপদার্থ হয়ে উঠছে। কোন রাজ্যের সঙ্গে সত্যিসত্যিই হঠাৎ যদি যুদ্ধ লেগে যায়, আমাদের আধুনিক অস্ত্র নিয়ে তারা কতটা কী প্রতিরোধ ও আক্রমণ করতে পারবে – সে বিষয়ে আমার ঘোর সন্দেহ হয়, রাজামশাই। তাছাড়া তেমন যুদ্ধ যদি লেগেই যায়, এমনও হতে পারে তাদের অনেকেই যুদ্ধ করতে রাজিই হবে না। কারণ দীর্ঘদিন নিশ্চিন্ত গৃহবাসী হয়ে, তাদের মানসিকতায় রণক্ষেত্রের উত্তেজনা, হিংস্রতা, শক্তির অহংকার অনেকটাই মিইয়ে যেতে বসেছে। সেদিক থেকে মাঝে মাঝে – বছরে এক দুবার - বিদ্রোহ দমনের জন্যে তাদের সীমান্তে পাঠাতে পারলে তাদের পুরোনো অভ্যাস এবং দক্ষতা কিছুটা ঝালিয়েও নেওয়া যাবে”।

    মন্ত্রীমশাই এবং অসিবল্লভের কথাগুলো উত্তরে রাজামশাই কিছু বললেন না। সিংহাসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হেঁটে গেলেন গবাক্ষের দিকে। অনেকক্ষণ বাইরে তাকিয়ে রইলেন, সবুজ রম্য প্রাসাদকাননের গাছপালা, ফুলের সমোরোহ দেখতে লাগলেন। মহামন্ত্রীমশাই ও অসিবল্লভ ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে লাগলেন, দু তিনবার চোখে চোখে কথাও বলে নিলেন দুজনে।

    বেশ কিছুক্ষণ পর রাজামশাই মহামন্ত্রীর দিকে ফিরে চিন্তিত মুখে বললেন, “আপনাদের প্রস্তাবগুলিকে প্রত্যাখ্যান করার মতো যথেষ্ট যুক্তি আমি খুঁজে পাচ্ছি না। তবে আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ – যুদ্ধবাজ দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজা কোনদিনই হতে চাইনি, সে কারণে মন থেকে ঠিক সায় পাচ্ছি না। আবার একথাও ঠিক, সুষ্ঠু রাজ্যশাসনের জন্য রাজাকে অনেক সময়েই অপ্রিয় কাজ করতে হয়। অতএব আপনি বলুন, সীমান্তে বিদ্রোহ বানিয়ে তোলার জন্যে আপনারা কী চিন্তা করেছেন?”

    মহামন্ত্রীমশাই বললেন, “আমাদের রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলটির অনেকটাই রুক্ষ অনুর্বর। সেই কারণে অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ অনুন্নত। অতএব ওই অঞ্চলের অধিবাসীরা আমাদের রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেকটাই দরিদ্র। নিত্য-অভাব মানুষের মনে কখনও ঈশ্বরের প্রতি আবার কখনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার করে। সেই ক্ষোভটাকেই আমরা কাজে লাগাতে চাই মহারাজ। আমাদের গুপ্তচর গিয়ে ওখানকার প্রজাদের বিচ্ছিন্ন ক্ষোভগুলিকে উস্কে তুলতে থাকুক এবং একমুখী করে তুলুক। জমে উঠতে থাকা সেই ক্ষোভের আগুন ধিকিধিকি জ্বলতে শুরু করলেই, আপনি যদি অনুমতি দেন, আপনার শ্যালক শ্রী রতিকান্ত মহাশয়কে ওই ক্ষোভ প্রশমনের জন্যে আমরা পাঠাতে পারি...”।

    মহারাজ চমকে উঠলেন, “রতিকান্ত? কী বলছেন মহামন্ত্রী। ও করবে প্রজাদের ক্ষোভ নিরসন? বিলাসী- ইন্দ্রিয়ের দাস, বিবেক-বুদ্ধিহীন গোঁয়ার...তাকে আপনি এই দায়িত্বে নিয়োগ করতে চান?”

    অসিবল্লভ অতি বিনীতভাবে হাত কচলে বললেন, “ওঁকেই যে দরকার মহারাজ। এ রাজ্যের আপামর জনগণ আপনাকে শ্রদ্ধা করে, ভালবাসে এবং বিশ্বাস করে। প্রজাদের ক্ষোভ যতই উস্কে তোলা যাক, তারা আপনার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করতে শতবার দ্বিধা করবে। কিন্তু আপনার প্রতিনিধি হয়ে শ্রীযুক্ত রতিকান্ত মহাশয়ের মতো প্রশাসক ওদের মধ্যে গিয়ে পৌঁছলে, অচিরেই তাদের ক্ষোভ বিদ্রোহে পরিণত হয়ে উঠবে। মহারাজ, এ আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। তবে শ্রী রতিকান্ত মহাশয়ের সুরক্ষা ব্যবস্থায় আমরা কোন কার্পণ্য করব না, সে বিষয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন”।

    মহারাজার এই শ্যালকটি তাঁর তৃতীয় রাণির ভ্রাতা। রাজধানীতে তার নানান উপদ্রবে তিনি প্রায়শঃ ব্যতিব্যস্ত থাকেন। রাজপ্রাসাদ থেকে অদূরে, তার নিজস্ব প্রমোদকাননে সে সর্বদাই মদ্যাসক্ত অবস্থায় থাকে। নিত্যনতুন শয্যাসঙ্গিনীদের সঙ্গে সে রাত্রি যাপন করে। বেলা দ্বিপ্রহরে তার নিদ্রাভঙ্গ হয়। বিলাসী রতিকান্ত প্রতি হেমন্তে মৃগয়া অথবা রাজ্যভ্রমণে বের হন। তার নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী থাকলেও, মহারাজ তার ভ্রমণ পথের সর্বত্র তাঁর বিশ্বস্ত কিছু অনুচরদের নিযুক্ত রাখেন। পথের ধারের গ্রাম, জনপদ এবং নগরের সাধারণ প্রজাবৃন্দ যেন কোনভাবেই রতিকান্তর লালসার শিকার না হয়ে পড়ে, সে দিকে তিনি তীক্ষ্ণ নজর রাখেন।

    অতএব মহামন্ত্রীর এই প্রস্তাবে প্রথমে বিরক্ত হলেও, তিনি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। এবং একথাও তাঁর বুঝতে বাকি রইল না, মূর্খ, অশিক্ষিত ও বিবেকহীন রতিকান্তই হয়ে উঠবে মহামন্ত্রী ও অসিবল্লভের হাতের পুতুল। সে যত বেশি উদ্ধত হবে, অত্যাচার-অনাচার করবে - ক্ষুব্ধ প্রজারা তত তাড়াতাড়ি বিদ্রোহের পথে এগোবে। অন্যদিকে রাজধানী থেকে রতিকান্ত বিদায় হলে, তাঁকেও সর্বদা তটস্থ থাকতে হবে না। রতিকান্তর দিদি অর্থাৎ তাঁর তৃতীয় রাণিও জানলে খুশি হবেন, মহারাজা তাঁর ভ্রাতাটিকে এতদিনে চিনতে পেরেছেন। এবং ভরসা করে রাজ্যের কোন এক অঞ্চলের প্রশাসনিক পদে নিযুক্ত করেছেন। অন্দরের অভিমান এবং বাইরের বিপদ দুটো দিক থেকেই তিনি চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন।

    মহারাজা বললেন, “সমস্ত বিষয়টি নিয়ে আমাকে এক-দুদিন চিন্তা করার সময় দিন মহামন্ত্রীমশাই। আজ আমাদের মন্ত্রণা এখানেই স্থগিত থাক, আগামী পরশুদিন এই বিষয়ে আমার মতামত জানাব”।

    অসিবল্লভ মহারাজা ও মহামন্ত্রীকে বিনীত অভিবাদন করে মন্ত্রণাকক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন।





    ক্রমশ...




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
  • ধারাবাহিক | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৬৭৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০০:২৮530313
  • ভিত ভাল বানানো হয়েছে। পরের পর্বের জন্য সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।
  • হীরেন সিংহরায় | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫২530340
  • অসাধারন। ন্যাটোর, পেনটাগনের চিন্তা ভাবনাগুলির নিখুঁত চিত্রন! রূপকের জয় হোক।
  • সঞ্জীব দেবলস্কর | 2405:201:a803:815c:b597:d51a:2a3:5cf6 | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৭530352
  • উপমহাদেশে যুদ্ধের প্রস্তুতি তো প্রায় সম্পূর্ণ। এখন সমরাস্ত্র সংগ্রহ, নির্মাণে কল্যাণকামী রাষ্ট্র কতটুকু অগ্রগতি দেখায় সেটাই  বিবেচ্য।  
  • Kishore Ghosal | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৩২530354
  • পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য সকলকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।  
    হীরেনদা, যথারীতি আপনার তীক্ষ্ণ বিচক্ষণতায় অভিভূত হলাম। রূপকের মাধ্যমে আমরা (বিশ্বের সাধারণ "জনগেন") এখন ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছি, দেখানোর ইচ্ছে আছে - জানি না কতদূর সফল হবো... তবু চেষ্টা তো করি।       
  • সমরেশ মুখার্জী | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩৯530355
  • যুদ্ধের জন‍্য অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা সহজবোধ‍্য।
     
    কিন্তু অস্ত্রের চাহিদা বজায় রেখে রাজকোষে এবং ডিফেন্স এস্টাবলিশমেন্টে অর্থের যোগান অব‍্যাহত রাখা - প্রভূত কূটকৌশলের ব‍্যাপার।
     
    শুনেছি দীর্ঘ ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানের যুদ্ধে আমেরিকা‌র অনেক ধন-প্রাণ নষ্ট হয়েছিল। কিন্তু নব্বই‌তে WMD এর জিগির তুলে সিনিয়র বুশ ইরাকে উপসাগরীয় যুদ্ধ বাঁধাতে সহযোগী রাষ্ট্র‌গুলি‌ যুদ্ধ বাবদ যা কমিটমেন্ট মানি  দিয়েছিল - যুদ্ধে অত খরচ‌ই হয়নি। ফলে তা থেকে‌ আমেরিকার প্রায় 50 বিলিয়ন USD লাভ হয়েছিল। 
     
    চাইনিজ দর্শন‌ও নাকি বলে - War is essential for peace. 
     
    এসব বড়দের ব‍্যাপার - আমার ভাবের ঘোরে থাকা বেড়ুক দীমাগে এসব ঢোকে‌ও না। মনে‌ও থাকে না। ভাবতেও ইচ্ছা করে না। আপনার লেখা পড়ে কিছু কথা লিখে ফেললাম।
  • Falguni Mazumder | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৫৮530356
  • লেখকের সাথে একমত নই। বিপ্লব কেন হয় তা কম বেশি সবাই জানে। ফরাসী বিপ্লব পৃথিবীতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল কিন্তু সাধারণ সভা কিন্তু সম্পত্তির পরেই নির্ভর করে ভোটাধিকার দেয়, নারীদের ভোটাধিকার দেয় নি। এই বিপ্লবে নারীদের কোন উল্লেখই নেই, বলশেভিক বিপ্লবেও নারীদের অবদানের উল্লেখ নেই। পুরাতন অস্ত্র কারা কিনবে? অর্থ কি ভাবে আসবে? বিপ্লবের উদ্দেশ্য কি হবে?
  • বিতনু চট্টোপাধ্যায় | 110.224.100.169 | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৫৯530359
  • অসাধারণ
  • | ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ২২:২২530360
  • চমৎকার শুরু। 
  • Kishore Ghosal | ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৩৮530373
  • ফাল্গুনীবাবু, ফরাসী বিপ্লব  বিশ্ব-ইতিহাসে অন্যতম এক ব্যতিক্রমী ঘটনা - এ নিয়ে  বহু গ্রন্থ রচনা হয়েছে। সেই বিপ্লব নিয়ে আমার কিছু লেখার ধৃষ্টতা নেই। 
    আমার বিষয় যুগযুগ ধরে ঘটে চলা অজস্র বিদ্রোহ-বিপ্লবের প্রেক্ষাপট খোঁজা।  সে বিপ্লবের শুরু কীভাবে হয়েছিল - এবং  সে বিপ্লব কেন কোনদিনই শেষ হয় না - অন্যভাবে, অন্যরূপে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে বারবার... 
    আমার সঙ্গে একমত না হয়েও - আপনি যে পড়ে মন্তব্য করেছেন তার জন্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা নেবেন। আশা করব শেষ অব্দি আপনি সঙ্গে থাকবেন - এবং আপনার মন্তব্যে আমায় ঋদ্ধ করবেন।   
     
    সমরেশ, বিতনুবাবু এবং দ ম্যাডাম - আপনাদের সকলকেও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করব সঙ্গে থাকবেন। 
  • Debanjan Banerjee | 2409:4060:2ec6:2cfd:4a3e:dc:6bfd:f75e | ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৮530392
  • Osadharon শুরু করেছেন কিশোরবাবু l অভিনন্দন l 
  • Kishore Ghosal | ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৩৩530410
  • অনেক ধন্যবাদ, দেবাঞ্জনবাবু। 
  • হীরেন সিংহরায় | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৫৬530430
  • ফাল্গুনি - ১৭৯২ সালের ফরাসি সংবিধানে  ভোট দেওয়ার অধিকার সকল ২১ বছর বয়স্ক পুরুষকে দেওয়া হয় , সম্পত্তি থাকাটা আবশ্যিক ছিল না। মহিলাদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়েছিল ১৯৪৪ সালে, ব্রিটেনে ১৯২৬  ,আমেরিকায় ১৯২০ । কোন বিপ্লব ছাড়াই ফিনল্যান্ড প্রথম দেশ যারা মহিলাদের ভোটাধিকার দেয় ১৯০৬ সালে । প্রসঙ্গত  সুইজারল্যান্ডে ১৯৯৪ সালে সকল ক্যান্টনে মহিলাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয় ।  
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০১:২৮530431
  • হীরেনবাবু কি ইচ্ছে করে ভুল লিখলেন নাকি সুইসদের খোঁচা মারার জন্য?
    The last European jurisdictions to give women the right to vote were Liechtenstein in 1984 and the Swiss canton of Appenzell Innerrhoden at the local level in 1990,[11] with the Vatican City being an absolute elective monarchy (the electorate of the Holy See, the conclave, is composed of male cardinals, rather than Vaticancitizens). 
    বাকি কান্টনের নারীরা পূর্বেই আঞ্চলিক ভোটের অধিকার পেয়েছিল এবং সেন্ট্রালের ভোটের অধিকার মেয়েরা পায় ১৯৭১ সালে।
    পাছে আপনার কমেন্ট পড়ে অন্যরা এই ভুলটুকু বেদবাক্য হিসেবে মেনে ফেলে, তাই আমি আবার মহিলা কি না, আমার বক্তব্য ও ভোটাধিকারের মত সমাজে কম বিশ্বাসযোগ্য হবে, তাই দরকার হলে সত্যটা নেট মাধ্যমে যাচাই করে নেবেন। কেমন?
    মহিলার দেওয়া ইনফরমেশন তো ঠিক পুরুষের দেওয়া ইনফরমেশনের মত অকাট্য সত্য হিসেবে মেনে নেবার রীতি নেই, তাই উইকি থেকে কপি পেস্ট মেরেছি।
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৫১530433
  • প্রসঙ্গত, জ্ঞাতার্থে জানাই আমার দেশ সুইটজারল্যান্ড দুনিয়ার প্রথম ডেমোক্র্যাসির দেশ। এখানে প্রত্যেক ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স্ক নাগরিকদের জন্য পোস্টাল ব্যালট সিস্টেম। পোস্টেজ ফ্রি। কেউ পোস্ট করতে দেরি করে ফেললে সশরীরেও গণনা কেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট জমা দিতে পারেন। ভোটে মারামারি হানাহানি হয় না। গণনা হবার দিনই বিকেলে রেজাল্ট বের হয়। ভোটগণনা যারা করেন, তাদের অনেকেরই ভোটাধিকার নেই (বিদেশি নাগরিক, আশে পাশের দেশ থেকে আগত এদেশের সরকারি কর্মচারী)।
    আমাদের দেশে ডিরেক্ট ডেমোক্র্যাসি। সমস্ত, প্রায় সবরকম ডিসিশনের জন্যই ভোটাভুটি হয়।
    এবং এদেশে মিনিস্টারপ্রেসিডেন্ট সিস্টেম। প্রত্যেক বছর নতুন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য কোনও ক্যাটেগোরির দেহরক্ষী নাই। লাইনে দাঁড়িয়ে দোকান বাজার করেন, বাসে ট্রেনে সকল যাত্রীর সঙ্গে যাতায়াত করেন এবং কেউ কেউ সাইকেল চালিয়েও অফিসে গেছেন।
    দরকার হলে আপনারা নেট টেট খুঁজে যাচাই করতে পারেন।
    আরেকটা তথ্য, এই মুহূর্তে যিনি আমাদের শহরের মেয়র, তিনি ওপেনলি লেসবিয়ান। ভোট দিয়ে আমরাই তাঁকে মেয়র বানিয়েছি। 
  • হীরেন সিংহরায় | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০২:৩০530437
  • যোষিতা 
     
    অত্যন্ত দুঃখিত । আপপেনজেল ১৯৯০ সালে মহিলাদের ভোটের অধিকার দেয়! শেষ সুইস ক্যান্টন । এখানকার একটি ছেলে হান্স রুডি নেফ আমার জন্য কাজ করত- সে অফিসে এসে বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করে  মনে আছে। সালটা এখানে ভুল লিখেছি বইয়েতে ঠিক লেখা আছে। ১৯৯৪ নয় ১৯৯০ হবে। 
     
    পোস্টাল ব্যালট নিখরচায় পোস্ট করার সুযোগ ইংল্যান্ডে চালু অনেকদিন। এস্টোনিয়ায অন লাইন ভোটিং হয়। 
     
    সুইসকে প্রথম ডিরেকট ডেমোক্রেসি বললে আইসল্যান্ড আপত্তি করতে পারে । আলথিংএ সেটা ৯৩০ সাল থেকে চালু হয়। সুইস রাজ্য প্রতিষ্ঠা ১২৯০।
     
  • হীরেন সিংহরায় | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০২:৪৩530438
  • যোষিতা
     
    এটা আগেই দেখা ছিল তবু সর্বজন জ্ঞাতারথে
     
    While Swiss women were allowed to vote at a national level in 1971, those of canton Appenzell Inner Rhodes had to wait until 1990 and a ruling of the Federal Court to do so at a cantonal level. Some of the Appenzell women talk to SWI swissinfo.ch about living in the canton and remember casting their first vote.  
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০২:৫৯530440
  • এর পেছনের ঘটনাটা এইরকম। দুনিয়ার সমাজ নানান ভাবে, বিভিন্ন পদ্ধতিগত ভাবে যেহেতু পুরুষতান্ত্রিক, সেহেতু আপেনৎসেল ইনাররেডেনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ইনফাইনাইট লুপে পড়ে গেছল। বাকি কান্টনগুলোয় আগে পরে গণতান্ত্রিক ভোটাভুটি করে পুরুষরাই মেয়েদের ভোটাধিকারের পক্ষে রায় দেয়। এমনকি আপেনৎসেল আউসাররেডেনের মেয়েরাও ভোটাধিকার পেয়ে গেল, তাও 
    আপেনৎসেল ইনাররেডেনের মেয়েরা বাকি পড়ে রইল। ওখানকার পুরুষেরা মেয়েদের বুদ্ধি বিবেচনার ওপর ভরসা করতে পারছিল না রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তের জন্য। তখন বাধ্য হয়ে রাষ্ট্র তথা আইনব্যবস্থাকে হস্তক্ষেপ করতে হলো। কাজেই এই অধিকার জোর করে দেওয়া হলো।
    অর্থাৎ পুরুষরা যে নারীদের বুদ্ধি বিবেচনার ওপর আস্থা রাখে না, তার অ্যাসিড টেস্ট গোছের।
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:০০530441
  • ইনাররোডোন
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:০০530442
  • বারবার বানান ভুল হচ্ছে।
    ইনাররোডেন।
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:০৮530443
  • নাহ, সেভাবে দেখলে প্রথম গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত রাজার নাম গোপাল। আনুমানিক ৭৫০ খৃষ্টাব্দে। পাবলিকের ভোটে ( ব্যালটহীন) নির্বাচিত এবং পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।
  • &/ | 151.141.85.8 | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:৫০530444
  • বাঙালি। গোপাল বাঙালি। বাংলার প্রকৃতিপুঞ্জ অর্থাৎ কিনা প্রজাগণ তাঁকে নির্বাচিত করেন। বাংলা আজ যা ভাবে, বাকী দুনিয়া আগামীকাল কিংবা আগামী পরশু তা ভাবে। ঃ-)
  • যোষিতা | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:০০530445
  • কিন্তু বাঙালি সফলভাবে কোনও বিপ্লব করতে পেরেছে কি?
    কিছু মেয়ে ইদানীং রুখে দাঁড়িয়েছে বটে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বলে। যার পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়, সে ই কেবল সেটা টের পায়। বাকি বিপ্লবগুলোয় মেয়ের ক্রেডিক হাইজ্যাক হয়ে গেছে। তবে এবার বাংলার গরীব মেয়েরা যেটা করে দেখালো/ দেখাচ্ছে, তার ক্রেডিট যেন হাইজ্যাক হতে না দেয়।
  • &/ | 151.141.85.8 | ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:১৩530446
  • বাংলার গরীব মেয়েদের জয় হোক। এদের ঘরের কন্যাদের মধ্যে যে স্ফুলিঙ্গ, যেন নিভতে না দেয় তারা। বড়লোক বড়দারা চাইবে সব উড়িয়ে দিতে। যেন না পারে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন