এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • রমজান মাসে ইফতারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক নাটুকেপনা নিয়ে কিছু কথা

    সেখ সাহেবুল হক লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ২৬ মে ২০১৭ | ৭৩৯৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • সেখ সাহেবুল হক | ২৬ মে ২০১৭ ১২:১১366653
  • রমজান মাস আসছে। রমজান মাস মানে সারাদিনের উপবাসের পর ইফতার থাকবে নিয়মমাফিক। ইফতারের এই আবহকে ইফতার পার্টির নামে কিছু সুবিধাবাদী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা রাজনৈতিক চাল চালবেন। মুসলিম সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে ভোট বুকিংয়ে নেমে পড়বেন। এই ব্যাপারটি সমস্ত মুসলিমকে খেয়াল রাখতে হবে। ইতিমধ্যেই ফেসবুকে অনেকেই এই ব্যাপারটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন দেখে ভালোলাগছে।

    মাথায় ঘোমটা আর হাত জোড়া দেখে ভুলে গেলে হবে না। হয়তো দেখবেন রামরাজত্ব দাবি করে মুসলমানদের কুকুর ভাবা নেতাটিই আপনার পাশে টুপি পরে কেত মেরে ফলাহার করছেন। যা আপনার নেকি অর্জন, অন্যের কাছে মেকি দর্শনও হতে পারে।

    এই ব্যাপারে কয়েকটি ব্যাপার লক্ষ্য করতে হবে -

    ১)কাউকে বাড়িতে ডেকে খাওয়ানো, কিংবা কেউ খেতে চাইলে খাওয়ানোটা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অতি উত্তম ব্যাপার। কিন্তু সেজন্য আমার অমুসলিম ভাই বোনকে অযথা টুপি বা হিজাব পরে আসতে হবে না।
    ‘অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ’। অযথা ঢং দেখানো রাজনৈতিক টুপিদাদা-হিজাবদিদিদের স্বাভাবিক পোশাকেই আসতে বলুন।

    ২)সম্প্রীতির বাতাবরণ আলাদা। আর ইসলাম নিয়ে রাজনৈতিক নাটুকেপনা আলাদা। এটুকু বুঝতে হবে মুসলিম ভাইদের। সেটা যে কোনও দল হতে পারে। ভিন্ন রাজনীতি আমরা করতেই পারি, কিন্তু আমাদের নিয়ে যেন রাজনীতি না হয়।

    ৩)একটিবার ভাবুন যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পরধর্ম সহিষ্ণুতা দেখাতে আসছেন। সারাবছর তাঁরা কোথায় থাকেন?
    তারমানে বুঝতে হবে গলদ আছে। এঁরা মরশুমি ইসলামপ্রেমী!

    ৪)ভোট বড় বালাই। সংখ্যালঘু ভোট বড় বালাই। তাই ইফতার পার্টির নামে পার্টির প্রচার চালানোর বড়সড় তাগিদ থাকবেই।

    ৫)ধরুন কোনও মুসলিম নামধারী নেতা ভাই। গরু-ছাগল ভুল করেও মসজিদের চাতালে উঠে গেলেও, যিনি জীবনে মসজিদে ওঠেন না। নিজেকে মুসলিম ভাবতেই খারাপ লাগে যাঁর। তিনি মসজিদ কমিটিকে পয়সা দিয়ে ইফতার পার্টি করার টোপ দেবেন।
    আপনার বিশ্বাস দু মুঠো ছোলা, দুটো খেজুর আর একগ্লাস সরবতেও রক্ষিত হতে পারে।
    ধর্ম বা নাস্তিকতা বড় ব্যাপার নয়। বিশেষ ধর্ম নিয়ে রাজনীতিটাই ক্ষতিকর।

    ৬)অমুসলিম ভাইদের বেশিবেশি করে আমন্ত্রণ করুন। তাঁদের সাথে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া হোক। অন্তত খাদ্যসম্প্রীতি আসুক। ফল খেতে কার না ভালোলাগে!
    উফফফ তেলেভাজা!
    বিফ নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে, চিকেন বা মটন দিয়ে পরোটা সাঁটা হোক। একটু ফিরনি বা হালুয়া দিয়ে শেষটা আরো জমাটি হতে পারে।

    ৭)একসাথে খাওয়াদাওয়া কোনও ব্যাপার নয়। সবাইকেই আন্তরিকভাবে স্বাগত। কিন্তু কেউ যদি বলেন ‘ইফতার করলাম’, সেক্ষেত্রে ইসলাম মেনে তাঁকে সেহেরী এবং রোজাটাও রাখতে হবে। নাহলে ‘ইসলামি’ দৃষ্টিকোণ থেকে সেটি বোধহয় ঠিক হবে না। কারন রোজা মানে শুধু না খেয়ে থাকা নয়। পাক সাফ থাকতেও হয়।
    অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা দেখাতে হলে ভড়ংবাজির প্রয়োজন নেই। মাথায় যদি কাপড় দিতে হয় সারাবছরই দিন, ইসলাম যদি মানতে হয় নিয়ম করে মানুন। নচেৎ কোনও দরকার নেই।
    অন্যের কেয়ার করি, বা অন্যকে ভালোবাসি দেখাতে কোনও ধর্মের প্রতি লোকদেখানো শ্রদ্ধা কেন থাকবে!

    ৮)মোদ্দা কথা হোলো ইফতারটা ইফতারই থাক। পার্টিতে পরিনত না হয়। দাদা দিদিদের প্রতি রাজনৈতিক শ্রদ্ধা ভোটের মঞ্চে হোক। আর রমজান মাসে সবার জন্য রাজনীতিবিহীন আত্মীয়তায় জায়গা থাক। মুসলিম সেন্টিমেন্ট ব্যবহারের সুযোগ যেন না দিই আমরা।
    কেউ ঘাসফুল চাষ করুন, পদ্ম ফোটান, কাস্তেতে শান দিন, বেলচা কোদাল নিয়ে খাটাখাটনি করুন। সেটা মসজিদ বা ইফতারের পরিমণ্ডল থেকে বেরিয়ে।

    ৯)এই ভাবনা ফেসবুকের বাইরে সর্বস্তরে মুখে মুখে ছড়িয়ে দিন। সচেতনতা আসুক। প্রচুর মুসলিম ভাইবোনরা শিক্ষিত হচ্ছেন, এই ব্যবহারের রাজনীতিকে বিকল করে দিতে হবে।

    পুনশ্চ -
    আমি নিজেও খুব বড় রোজাদার বা নামাজী নয়। বরাবরই লাস্ট কাতারের লোক। সমাজ বদলানোর ঠেকা নিয়েও বসে নেই। কিন্তু তবুও কিছুটা সময় বের করে বোকাবোকা কিছু কথা লিখলাম। এই নিরীহ কথাগুলোও হয়তো কারো পশ্চাৎদাহের কারন হয়ে উঠবে। হয়তো সবকিছুই আগের মতোই চলবে।

    যাইহোক বাড়ি ডেকে খাওয়াতে না পারলেও রমজানের খাওয়াদাওয়ার কথা সময় সুযোগ পেলেই লিখবো।

    #হককথা
  • de | 24.139.119.171 | ২৬ মে ২০১৭ ১৪:২৮366664
  • ভালো লিখেছেন - এই পয়েন্টগুলো উঠে আসা দরকারী।
  • amit | 149.218.40.152 | ২৬ মে ২০১৭ ১৬:২৮366675
  • খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।
  • sm | 52.110.179.219 | ২৬ মে ২০১৭ ১৬:৫০366686
  • দুটো জিনিস খটকা লাগলো।কোনো অহিন্দু মানুষ যদি মন্দিরে প্রসাদ খেতে আসে বা দূর্গা পুজোর প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরে , তো আপত্তি কেন হবে? তাঁকে হিন্দুত্বের নিয়ম রীতি মানতে হবে কেন?সিমিলারলি, যার ইফতার খেতে মন চায় ,সে খাবে। তো তাঁকে মুসলমান নিয়ম রীতি মানতে হবে কেন?
    দুই কোনো নেতা, ইফতারে খেতে গেলেই, তাঁকে দলে দলে সংখ্যা লঘু লোকজন ভোট দেবে কেন?তাঁরা কি এতোই বোকা!লিশ্চয় বাজিয়ে দেখে নেবে ,সেই ব্যক্তি প্রকৃত ই তাঁদের সমাজের উন্নতি চায় কি না।
    আজ আমি যদি দেখি সিঁধু এসে কালীঘাটে পুজো দিচ্ছে তো আমার মতন লোকজন ছুটে গিয়ে সিধু কে ভোট দিয়ে দেবে?
  • Du | 57.184.32.243 | ২৭ মে ২০১৭ ০৫:৪৫366690
  • হক কথা। উদ্দেশ্য নিয়ে কারো সাথে মিশতে গেলে তাকে অপমানই করা হয়।
  • কল্লোল | 233.186.216.89 | ২৭ মে ২০১৭ ০৭:৩৫366691
  • কোন অহিন্দু মানুষ দূর্গা পূজোয় বা অন্য কোন পূজোয় যোগ দিতেই পারেন, তাতে কোন আপত্তি নাই। কিন্তু কেউ উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে সেটা করলে আপত্তিকর।
    আবার ধরুন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে হিন্দুদের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য দূর্গা পূজোয় অঞ্জলি দেন, তখন কি করবো?
  • PT | 213.110.242.5 | ২৭ মে ২০১৭ ০৮:০৫366692
  • "সহমর্মিতা" শব্দটি শুনতে ভাল কিন্তু খুঁড়েলে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে। কেননা ঐ শব্দ দিয়ে কাঁটা তারের এপারের ইমাম ভাতা থেকে কান-বের-করে-মাথায়-ঘোমটা দেওয়া ধান্দাবাজীও জাস্টিফাই করা যায়।
  • কল্লোল | 233.186.21.143 | ২৭ মে ২০১৭ ০৮:৫৬366693
  • পিটি। একদম। আমারও তাই মত। কিন্তু বাংলাদেশ বা পকিস্তানে যেখানে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর, ঘোষিত নাস্তিকদের উপর একের পর এক অত্যাচার নেমে আসছে, সেখানে যদি শেখ হাসিনা বা নওয়াজ শরিফ দূর্গা পুজোয় অঞ্জলি দেন বা কোন একটি সুফি দরগায় চাদর চড়ান, বা নাস্তিকদের ডেকে ভোজ খাওয়ান তখন কি করবো?
  • PT | 213.110.242.5 | ২৭ মে ২০১৭ ০৯:১৫366694
  • সমস্যা অন্যত্র কল্লোলদা। রাজনীতির মানুষেরা যদি ধর্ম ও রাষ্ট্রের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে না পারে তাহলে সহমর্মিতা আর ধান্দাবাজীর মধ্যে পার্থক্য করা বেজায় কঠিন। যিনি "হিন্দুদের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য দূর্গা পূজোয় অঞ্জলি দেন" তিনি কি তাহলে এই মূর্তি সরানোকে সরকারী সমর্থন জানিয়ে মুসলমান মৌলবাদীদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন?

  • sm | 52.110.161.35 | ২৭ মে ২০১৭ ০৯:৩২366654
  • যদি অঞ্জলি দেন তো দেবেন।
    যার যেটা ভালো লাগে সেটা করবে।
    আমার মন্দিরে পুজো না দিয়ে প্রসাদ খেতে ভালো লাগে ,তো কি করবো?অনেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বকবকানি শুনতে ভালো লাগে না কিন্তু ভাণ্ডারা খেতে ভালো লাগে।
    শিখ দের গুরদুয়ারে লঙ্গরে খেতে ভালো লাগে কিন্তু তাবলে ওই রীতিনীতি তে অংশ নিতে হবে কেন?
    আর উদ্দেশ্য! উদ্দেশ্য বিহনে কেউ কাজঃ করে?আম্মো প্রসাদ খাই উদরপূর্তির জন্য।
    সবাই পরিণত। ভেবে চিনতেই ভোট দেয়-ভড়ং বাজি দেখে নয়।
  • | ২৭ মে ২০১৭ ১০:০৫366655
  • এই যে আমি এসে গেছি ঝুড়ি কোদাল নিয়ে বোঝাতে।

    হক সাহেব বলছেন খাওয়াদাওয়া নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই বরং বিভিন্ন ধর্মের লোকজন আরো বেশী করে একসাথে খাওয়াদাওয়া করুন। কিন্তু মুসলমান বন্ধু বা প্রতিবেশীর ইফতারির সময় তাঁর সাথে বসে খেয়ে সেটা 'ইফতার করলাম' এই আখ্যা দেবেন না, বরং বলুন বন্ধু প্রতিবেশীর ইফতারির সময় তাঁর সাথে খাওয়াদাওয়া করেছি ('ইফতার' নয়) কারণ ইফতার করলে মানে ইফতারের প্রি-রিকুইজিট সূর্যোদয়ের আগে সেহরি আর সূর্য আকাশে থাকাকালীন রোজা রাখা। 'ইফতার করলাম' এই টার্মটা ব্যবহার করা পুরোপুরি ভন্ডামি, অনেকক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অনেকক্ষেত্রে অজ্ঞানতাপ্রসুত।

    খাবার দামার খেতে আদৌ কোনও আপত্তি করেন নি হক সাহেব।
  • sm | 52.110.161.35 | ২৭ মে ২০১৭ ১০:১১366656
  • তার মানে কোনো অ হিন্দু বিজয়া করে বলতে পারবেনা বিজয়া করলাম? তাকে অঞ্জলি দিতে হবে?
  • হারু | 116.208.82.64 | ২৭ মে ২০১৭ ১০:২২366657
  • বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করে অঞ্জলির নাটক করলে তাকে ঢ্যামনামো বলব।
  • Du | 57.184.32.243 | ২৭ মে ২০১৭ ১০:২৮366658
  • অঞ্জলি না দিলে বলতে পারবে না অঞ্জলি দিলাম এইটাই বক্তব্য
  • | ২৭ মে ২০১৭ ১০:৫১366659
  • কোনো হিন্দু কি পারবে না পারবে সে সম্পর্কে উনি কিছুই বলেন নি। 'হিন্দু' মানে কোনও ইউনিফর্ম স্ট্রাকচারড কিসু থাকলে সে নিয়ে যারা ওয়াকিবহাল তারাই বলতে পারবেন।

    আমি জানি না, বৈষ্ণব মতানুযায়ী বিজয়া কী, কীভাবে পালন করা উচিৎ? শৈব মতানুযায়ীইই বা কী? যদ্দুর শুনেছি নভ্‌রাত্রি পালনকারীদের কাছে যে বিজয়া ইত্যাদি নাকি সহী হিন্দুত্ব নয়,
  • | ২৭ মে ২০১৭ ১০:৫৪366660
  • ভাল কথা দু, খেয়াল করেছ ঠিক রমজান শুরু হওয়ার আগের দিনই সারা দেশে গরুকাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল? এদিকে বীফ এক্সপোর্টে বিজিপির লোকজনই তো শীর্ষে। তো ওরা না কেটে ক্যামেন বিক্রী করবে বিদেশে সেইটা ভাবছি
  • কল্লোল | 233.186.16.14 | ২৭ মে ২০১৭ ১০:৫৬366661
  • কিন্তু নাস্তিকদের ভোজ খাওয়ালে কি হবে, সে নিয়ে তো কেউ কিসু কইলে না?
  • কল্লোল | 233.186.16.14 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:১০366662
  • হিন্দুত্ব নিয়ে দুপহা, আমারই একটা পুরোনো লেখা থেকে ঃ
    ১৮৭২এ জনগণনার সময় এই সব উঠে আসে।
    প্রাক্‌ ঔপনিবেশিক সময় ভারতীয় উপমহাদেশের বিভাজনগুলি ছিলো মূলতঃ জাতপাতের ওপর ভিত্তি করে । ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ততো আগ্রহী ছিলো না মানুষ । প্রতিবেশীর ধর্মবিশ্বাসের চাইতেও মানুষ অনেক বেশি আগ্রহী ছিলো এটা জানতে যে, সে জলচল কিনা । অবশ্য এই জলচলের বিভাজনের মধ্যে অন্য ধর্ম (বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে থেকে আসা ধর্ম) একটা জাত হিসাবেই গণ্য হতো - যবন বা ম্লেচ্ছ ।
    জনগণনার কাজে ঔপনিবেশিক শাসকরা যে বিভাজনগুলি তৈরী করলো তা এরকম ঃ
    ১) ভারতীয় আর্য -
    ক) হিন্দু - (১) ব্রাহ্মণ্য হিন্দু , (২) বৈদিক হিন্দু , (৩) ব্রাহ্ম হিন্দু ;
    খ) শিখ ;
    গ) জৈন ;
    ঘ) বৌদ্ধ
    ২) ইরাণীয় - পার্সি
    ৩) সেমেটিক -
    ক) মুসলমান ,
    খ) খ্রীষ্টান ,
    গ) ইহুদি
    ৪) আদিম - মূলতঃ বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ধর্ম
    ৫) বিবিধ - এই চার বিভাগের অর্ন্তভুক্ত নয় এমন ।

    এই কাজ করতে গিয়ে জনগণনা কর্তাদের বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো । এই সব বিভাগগুলি কখনোই স্বয়ংসম্প¨র্ণ নয় । এরা একে অন্যের সঙ্গে/মধ্যে এমন ভাবে জড়িয়ে যে আলাদা করাটা প্রায় অসম্ভব । যেমন কাদের হিন্দু বলা হবে - এই নিয়ে নানান সংজ্ঞা দেওয়া হতে লাগলো । ১৮৭২-এর জনগণনা সংজ্ঞা অনুযায়ী , হিন্দু হলো ভারতের সেই অধিবাসী যারা ইউরোপীয়, আর্মেনীয়, মুঘল, পারসীয় বা অন্য কোন বিদেশী জাতি থেকে উদ্ভুত নয় , যাদের জাতিগত অবস্থান হিন্দু ধর্ম অনুমোদিত যে কোন একটি জাত-এর ভিতর , যারা ব্রাহ্মণের আধ্যাত্মিক আধিপত্য স্বীকার করে , যারা গোহত্যা করে না ।
    আগ্রা-অওধ যুক্তপ্রদেশের জনগণনা কর্তা জর্জ গ্যারিসনের মতে, হিন্দি অর্থ ভারতের সমস্ত অধিবাসী । হিন্দু অর্থ ভারতের অ-মুসলমান অধিবাসী ।
    শুধু হিন্দু নয়, শুদ্ধ হিন্দু কে তাই নিয়েও মাথা ঘামিয়েছে জনগণনা । ১৯১১-য় বলা হলো সেই সব গোষ্ঠীকে হিন্দুদের থেকে আলাদা করে দেখাতে , যারা -
    ১) ব্রাহ্মণের আধ্যাত্মিক আধিপত্য স্বীকার করে না ,
    ২) ব্রাহ্মণের বা হিন্দুধর্ম অনুমোদিত অন্য কোন গুরুর থেকে মন্ত্রদীক্ষা নেয় না ,
    ৩) বেদের কতৃত্ব স্বীকার করে না ,
    ৪) প্রধান হিন্দু দেবদেবীর পূজা করে না ,
    ৫) কোন ব্রাহ্মণ যাদের যজমান হিসাবে গ্রহন করে না ,
    ৬) হিন্দু মন্দিরে যাদের প্রবেশাধিকার নেই ,
    ৭) যাদের ছুঁলে বা যারা কাছে এলেই হিন্দুরা অশুদ্ধ বোধ করে ,
    ৮) যারা মৃতদেহ কবর দেয় এবং
    ৯) যারা গোমাংস খায় বা গরুর পূজা করে না ।

    এই করতে গিয়ে দেখা গেল , মধ্যপ্রদেশের বেরার-এ যাদের হিন্দু বলে ধরা হয়েছিলো তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশ ব্রাহ্মণের/বেদের কতৃত্ব স্বীকার করে না । ৫০ শতাংশ ব্রাহ্মণের বা হিন্দুধর্ম অনুমোদিত অন্য কোন গুরুর থেকে মন্ত্রদীক্ষা নেয় না । ২৫ শতাংশ প্রধান হিন্দু দেবদেবীর পূজা করে না । ৩৩ শতাংশের মন্দিরে প্রবেশাধিকার নেই । ২৫ শতাংশ অচ্ছুত । ১৪ শতাংশ মৃতদেহ কবর দেয় । ৪০ শতাংশ গোমাংস খায় ।
    বাংলা বিহার উড়িষ্যায় ৫৯টি হিন্দু জাতের মধ্যে ৭টি জাত, যাদের সংখ্যা তখন ১০ লক্ষেরও বেশী, যারা এই ৯টি বৈশিষ্টের কোন একটির অধিকারী । প্রায় ১৪টি জাত গোমাংস খায় এবং হিন্দু মন্দিরে যাদের প্রবেশাধিকার নেই । এদের অশুদ্ধ হিন্দু বা অংশত হিন্দু বলা হল ।
    এছাড়াও তখন ভারতীয় উপমহাদেশে এরকম অজস্র গোষ্ঠী বিরাজ করতো যারা নিজেদের হিন্দু বলতো অথচ তারা মুসলমান ধর্মের বহু আচার আচরণ মেনে চলতো । আবার ঠিক এর উল্টোটাও বিরল ছিলো না যারা নিজেদের মুসলমান বলতো অথচ হিন্দু ধর্মের বহু আচার আচরণ পালন করতো । বাংলাতেই এরকম - আউল, বাউল, ফকির, দরবেশ, কর্তাভজা, লালনপন্থী আরও অগুণতি এমন গোষ্ঠী আজও বিরাজ করে ।
  • sm | 52.110.157.76 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:১৫366663
  • তাহলে কল্লোল বাবুর পোস্টেই দেখা গেলো যার যেমন খুশি ,যতটা খুশি আচার রীতি নীতি পালন করতে পারে। কোনো গ্রামার নেই।
    সুতরাং হক বাবুর প্রি রিক্যুইসাইট যুক্তি তর্কের মধ্যে আশ্চ্যে না।
  • sm | 52.110.157.76 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:১৬366665
  • #আসছে
  • | ২৭ মে ২০১৭ ১১:২৩366666
  • উনি তো হিন্দুদের নিয়ে কিসু বলেনই নি, আসবে কোত্থেকে?? উনি মুসলমান ধর্মের দিক থেকে বলেছেন ওটা হয় না, ইফতারির প্রি-রিক্যুইসিট আছে।
    #ঝুড়িকোদাল
  • PT | 213.110.242.5 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:২৬366667
  • কল্লোলদার লেখা থেকে সব ধর্ম নিয়ে একই সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করলে সমস্যা হবে। তার একটা প্রধান কারণ বোধহয় হিন্দু ধর্ম "অপৌরুষেয়" এবং অন্যান্য ধর্ম কোন একজন মানুষের (পুরুষের) থেকে শুরু। এর মানে এই নয় যে হিন্দু ধর্ম মহত্বর কোন ব্যাপার। এর একটাই অর্থঃ হিন্দুধর্মের (আদৌ সেটাকে যদি ধর্ম বলা যায়) কাঠামোটাই সম্পূর্ণ আলাদা। অথবা কাঠামো বলতে কিসুই নাইঃ ঐ জন্যেই "মধ্যপ্রদেশের বেরার-এ যাদের হিন্দু বলে ধরা হয়েছিলো তাদের মধ্যে ......১৪ শতাংশ মৃতদেহ কবর দেয় । ৪০ শতাংশ গোমাংস খায় ।"
  • | ২৭ মে ২০১৭ ১১:২৮366669
  • একটা স্ট্রাকচারড আর একটা আনস্ট্রাকচারড ধর্মের ব্যবহারিক নিয়মকানুনে, অন্তর্নিহিত ফিলোসফিউতে তফাৎ থাকে। এখানে সেইটা খেয়াল না করলে ....
  • sm | 52.110.157.76 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:২৮366668
  • এটি দেখা গেলো অনেক হিন্দু কবর পর্যন্ত্য দেয়।
    আর উনি তো হিন্দু লোকেরা ইফতার করেছি বলতে গেলে প্রি রিক্যুইসিটি হিসাবে শর্ত পালন করার কথা বলেছে। তো শর্ত পালন করা আবশ্যিক এটাই বা উনি বলছেন কেন?
  • | ২৭ মে ২০১৭ ১১:৩২366670
  • শুধু হিন্দু বলেনন নি, সাধারণভাবেই ওঁর বক্তব্য কোনও মুসলমানও প্রিরিক্যুইসিট পালন না করে শুধু 'ইফতার' করেছি বলা যায় না, সেটা স্রেফ ভোজ খাওয়া হয়। আর এটা "শুধু হিন্দু" নয় হিন্দু মুসলনমান (যিনি রোজা রাখেন নি) খ্রীস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, ম্যারোনাইট, জিহোভাইট, নিয়েন্ডারথাল, হোমো-ইরেকটাস সবার জন্যই প্রযোজ্য।
  • sm | 52.110.157.76 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:৩৯366671
  • সেই জন্যই তো বলছি উনি সবার জন্যই প্রি রিকুইসিট অবশ্য পালনীয় বলেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে হিন্দুরাও পড়েন।কারণ উনি শুরুই করেছিলেন ভড়ং বাজি নিয়ে। সুতরাং হিন্দুদের উদ্দেশ্য করে কিছুই বলেন নি, এটা ঠিক কথা নয়। এটা বোঝাও এমন কিছু শিশি বোতল নয়।
    আমার আপত্তি এই প্রি রিক্যুসিটি শর্ত পালন নিয়ে।
    আমার মতে কেউ মনের খুশিতে ইফতার, দেওয়ালি, বিজয়া করতে পারে ও বলতেও পারে।
  • sinfaut | 11.23.77.223 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:৪৬366672
  • #‍১, #৬, আর #৭ আরেকবার পড়ে নিলে বুঝতে সুবিধে হবে।

    "কাউকে বাড়িতে ডেকে খাওয়ানো, কিংবা কেউ খেতে চাইলে খাওয়ানোটা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অতি উত্তম ব্যাপার। কিন্তু সেজন্য আমার অমুসলিম ভাই বোনকে অযথা টুপি বা হিজাব পরে আসতে হবে না।"

    "অমুসলিম ভাইদের বেশিবেশি করে আমন্ত্রণ করুন। তাঁদের সাথে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া হোক। অন্তত খাদ্যসম্প্রীতি আসুক। ফল খেতে কার না ভালোলাগে!"

    "একসাথে খাওয়াদাওয়া কোনও ব্যাপার নয়। সবাইকেই আন্তরিকভাবে স্বাগত। কিন্তু কেউ যদি বলেন ‘ইফতার করলাম’, সেক্ষেত্রে ইসলাম মেনে তাঁকে সেহেরী এবং রোজাটাও রাখতে হবে। ...

    অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা দেখাতে হলে ভড়ংবাজির প্রয়োজন নেই। ...

    অন্যের কেয়ার করি, বা অন্যকে ভালোবাসি দেখাতে কোনও ধর্মের প্রতি লোকদেখানো শ্রদ্ধা কেন থাকবে!"

    পুরোটা পড়ে তো রাজনৈতিক পার্টির ইফতার পার্টির কথাই মনে হচ্ছে।
  • sinfaut | 11.23.77.223 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:৪৯366673
  • "ইফতার করলাম" বলা যাবে না, বলাটা রেস্ট্রিকটিভ লাগছে ঠিকই, কিন্তু আমি এখানে বেনিফিট অফ ডাউট দেব লেখককে, যে উনি রাজনৈতিক দলগুলোর কথাই বলছেন।
  • sm | 52.110.157.76 | ২৭ মে ২০১৭ ১১:৫৯366674
  • আমার ও আপত্তি ওই জায়গায়। ইফতার করলাম বলা যাবে না। এটা যেন কেউ নীতি নির্ধারক কথা বলছে বলে মনে হলো।ভড়ংবাজি নিয়ে যা বলেছেন তাতে আপত্তি নাই। কারণ আমার মনে হয় লোকজন ভেবে চিন্তেই ভোট দেয় ভড়ং বাজি দেখে নয়।
  • সেখ সাহেবুল হক | ২৭ মে ২০১৭ ১২:২০366676
  • আমি 'রাজনৈতিক নাটুকেপনা' শব্দটিতে জোর দিয়েছি। সেটিই আসল বিষয়বস্তু। ইফতার পার্টি যেন রাজনৈতিক পার্টি না হয়ে যায়।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন