এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তারাময়ী রাত্রিকথা

    Angana
    অন্যান্য | ১৮ আগস্ট ২০০৭ | ৩১৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Angana | 131.95.121.132 | ১৮ আগস্ট ২০০৭ ২১:০৬392841
  • গ্রীষ্মসন্ধ্যায় লোডশেডিং হয়ে গেলে উঠানে বা ছাদের উপরে মাদুর পেতে বসে ঝিরিঝিরি দক্ষিণা হাওয়ায় শান্তিময় হতে হতে আমরা তারা চিনতাম-উত্তর দিকে ঐ যে সাতটা তারা জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতন ছবি তৈরী করেছে-ঐ হলো সপ্তর্ষিমন্ডল-ঐ তারাগুলোর নাম ক্রতু,পুলহ পুলস্ত্য,অত্রি, অঙ্গিরা বশিষ্ঠ আর মরিচী।আর ঐ যে বশিষ্ঠ তারার খুব কাছে আরেকটা মিটমিটে হাল্কা তারা,ও হলো অরুন্ধতী। প্রথম দুখানা তারা ক্রতু আর পুলহকে কাল্পনিক সরলরেখা দিয়ে যোগ করে উত্তরে বাড়িয়ে দিলে সেই রেখা ছুঁয়ে ফেলে ধ্রুবতারা,যা কিনা সারারাত সারা বছর একই জায়গায় থাকে,উত্তরের দিক চিনতে তাই তো ওকে অত দরকার হতো পুরানোকালের নাবিকদের, দিকচিহ্নহীন সমুদ্রে ঐ তারা ছাড়া আর পথ চেনাবে কে?
    পরে, আরো অনেককাল পরে আমরা জানতে পারি ধ্রুবতারাও আছে অনেক, পৃথিবীর মেরুও চংক্রমণ করে খুব ধীরে, খুউউব ধীরে,তারই সঙ্গে সঙ্গে ধ্রুবতারাও বদলাতে থাকে। ২৬০০০ বছরে একবার গোটা চক্রপথ ঘুরে আসে পৃথিবীর মেরু, সেই পথে অভিজিৎ পড়ে, সে হবে নতুন ধ্রুবতারা আরো বহু হাজার বছর পরে।
    আমরা শরতের সন্ধ্যাতে চিনতাম ছায়াপথের হাল্কা শ্বেতাভ মেঘের মতন চেহারা,উত্তরের দিক থেকে চলে গেছে দক্ষিণে। দক্ষিণে ধনুরাশির তারাগুলির পিছনে দেখা যায় ছায়াপথের কেন্দাঞ্চল,লক্ষ লক্ষ তারা যেন সেদিকে সমুদ্রতীরের বালির মতন ছড়ানো-আমরা খালিচোখে সেসব তারাকে আলাদা করে চিনতে পারতাম না।
    উত্তরে তাকালে যেখা যেতো রাজহংসমন্ডল,লম্বাগলা বাড়িয়ে উড়ে আসছে এক তারাময় রাজহাঁস,তার পুচ্ছের তারাটির নাম ছায়াগ্নি।ইংরেজিতে বলে ডেনেব,খুব উজ্জল বড়ো তারা,খুব ম্যাসিভ।
    গ্রীকরা এই রাজহংসকে নিয়ে কত গল্পকথা রচনা করেছিলো!
  • Angana | 131.95.121.132 | ১৮ আগস্ট ২০০৭ ২২:৪১392852
  • ওরা গল্পকথায় বলতো আকাশের দেবরাজ হংসরূপ ধারণ করে পৃথিবীর মানুষের কাছে উড়ে আসছেন,তারায় তারায় তার একবার আসার স্থিরচিত্রটি স্থায়ী হয়ে গেছে।আরো গল্প আছে,এইরকম হাঁস হয়ে উড়ে তিনি কোন্‌ মানবী রাজকন্যার কাছে আসতেন,তারপরে কত কি কান্ড হলো, সেইসব। আবার অন্য গল্পে আছে অন্য কথা, সেখানে পার্থিবজীবনে সে এক সুদর্শন কিশোর,সূর্যপুত্র ফিথনের বন্ধু ছিলো সে।সেই যে সূর্যপুত্র ফিথন যখন কিনা আকাশের সূর্যরথ চালাতে গিয়ে সামলাতে না পেরে ক্র্যাশ করলো,তখন সেসব খুঁজতে তো এই সিগনাসই গেছিলো হাঁসের রূপ ধরে! ইরেজীতে এই নক্ষত্রমন্ডলটির নাম সিগনাস।
    আমাদের দেশের উপকথায় ছায়াপথ হলো আকাশগঙ্গা, জ্যোতির্ময়ী দিব্য নদী। ওরই পাড়ের শরবণে তো অগ্নি ও স্বাহার অগ্নিময় পুত্র স্কন্দ জন্মান, স্বাহা সেই তেজের ভয়ে পালান(অগ্নি তো তখন সীনেই ছিলেন না!),স্কন্দের ছয় ছয়টা মুখ ছিলো,কী ভয়ানক! কৃত্তিকারা ছয় বোন সদ্যোজাত স্কন্দকে পালন করলেন,পরে উমা মহেশ্বর তাকে গ্রহণ করলেন পুত্র বলে।তারাই নাকি স্পিরিট হিসাবে অগ্নি ও স্বাহার মধ্যে ছিলেন কিনা,তাই হিসেব করে দেখলে সে এদেরই ছেলে! এসব গভীর স্পেসটাইমের কাপলড ইকুয়েশান কি আর মানুষে বোঝে! তাদের তো তাই গল্পকথাতেই মোটামুটি একটা বুঝে নিয়ে বেঁচেবত্তে থাকতে হয়!
    আকাশগঙ্গা দক্ষিণে বয়ে গেছে ধনুরাশির দিকে, ধনুরাশি মানে স্যাজিটারিয়াসের পাশেই হলো বৃশ্চিক রাশি।তারায় তারায় এক বিরাট বিচ্ছু! পেঁচানো লেজটি দিব্যি বোঝা যায়! এই বৃশ্চিক রাশিতে উঙ্কÄল কম্লা রঙের তারাটি হলো জ্যেষ্ঠা,ইংরেজীতে বলে অ্যান্টারেস।এটি বিরাট তারা,জীবনের শেষপর্বে কেন্দ্রের সব তাজা হাইড্রোজেন ফুয়েল ফুরিয়ে ফেলে বাইরের খোলের বহির্মুখী চাপে ফুলে ফেঁপে বিরাট হয়েছে। এদেরই বলে লালদানব(Red Giant) তারা।
    আজ থেকে পাঁচশো কোটি বছর পরে আমাদের সূর্যও এমনি করে ফুলে ফেঁপে লালদানব হয়ে একেবারে মঙ্গলের কক্ষপথ অবধি গ্রাস করে নেবে।
  • birhalaa taaraamaNDal/taaraapeeTh | 59.93.242.196 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০১:৩৫392863
  • সকলই তোমারই ইচ্ছা, ইচ্ছাময়ী তারা তুমি,
    তোমার কর্ম তুমি করো মা, লোকে বলে কি দুষ্টুমি।
  • angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০১:৪৪392874
  • শীতের রাত্রে ঝকঝকে পরিষ্কার আকাশে আমরা দেখতাম কালপুরুষ(Orion)। শীতরাত্রির আকাশের অতন্দ্র প্রহরী। তারায় তারায় রচিত এক বীর শিকারীর মূর্তি,হাতে ধনুর্বান,কোমরের ঝকঝকে তিনতারার কোমরবন্ধ থেকে ঝুলছে তলোয়ার।কাঁধের কাছে কমলা তারা আর্দ্রা(বেটেলগিউজ),এটিও বয়স্ক লালদানব তারা।পায়ের কাছে উজ্বল নীলতারা বাণরাজা(রাইগেল)।কোমরের কোমরবন্ধ আর তলোয়ারের কাছে আছে নেবুলারা, মহাকাশের ধোঁয়া গ্যাসে পরিপূর্ণ তারাদের আঁতুড়ঘর,এখানে নতুন তারা তৈরী হচ্ছে গ্যাসপুঞ্জ থেকে,কেউ কেউ তারা হয়ে জ্বলতে শুরু করেছে, কেউ কেউ এখনো করেনি।
    গ্রীক উপকথার একটি গল্পে ওরায়ন ছিলেন এক বীর শিকারী। ধনুর্বিদ্যা ও শরসন্ধানে অতুলনীয়। নির্ভীক সাহসী তাজা এক তরুণ, বনে বনে শিকার করে বেড়াতেন সারাদিন, সন্ধ্যা হলে সমুদ্রতীরে কুটিরখানিতে ফিরে বিশ্রাম নিতেন আর একা একা বসে বসে দেখতেন সমুদ্রদিগন্তে অপূর্ব চন্দ্রোদয় হচ্ছে।মনে মনে কল্পনা করতেন চন্দ্রের দেবীকে, সুন্দরী, তেজস্বিনী,আরণ্য অশ্বিনীর মতন তীব্র দুর্জয় নারী,আপন পৌরুষে তাঁকে মুগ্‌ধ করে জয় করে নেবার জাগর স্বপ্ন দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে যেতেন ওরায়ন।

  • angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০১:৫৪392885
  • চন্দ্রের দেবী ছিলেন ডায়ানা(এনার আরেক নাম আর্টেমিস)। অপরূপা সুন্দরী,সাহসী,তেজস্বিনী,তীব্র দুর্জয় দেবকন্যা। শরসন্ধানে ইনিও অতুলনীয়া,শিকারপ্রিয়া সাহসিনী সখীদের নিয়ে তিনিও বনে বনে শিকার করতেন মাঝে মাঝে।সন্ধ্যা হলে সকলে ফিরে যেতেন স্বর্গে।
    এমনি এক শিকারপর্বে ডায়ানা আর ওরায়নের দেখা হলো।কষ্ঠিপাথরের কৃষ্ণের মতন সুঠামদেহ নির্ভীক এই ওরায়নকে দেখে মুগ্‌ধ হয়ে গেলেন সাহসিনী শিকারপ্রিয়া অস্ত্রনিপুণা চন্দ্রদেবী।ওদের বন্ধুত্ব হলো,ক্রমে বন্ধুত্ব গাড়তর হলো। এখন প্রায়ই চন্দ্রদেবী আসেন পৃথিবীর অরণ্যে শিকার করতে, ওরায়নের সঙ্গে সারাদিন শিকার ও অন্যন্য আনন্দ উৎসবে কেটে যায়,সন্ধ্যায় দেবী ফিরে যান আকাশে।ওরায়ন মধুর ক্লান্তি নিয়ে ফিরে যায় সমুদ্রতীরের কুটিরে,দাওয়ায় বসে পুবের আকাশে চেয়ে দেখে আস্তে আস্তে চন্দ্রোদয় হচ্ছে,সমস্ত সমুদ্র কেমন উদ্বেলিত হয়ে উঠছে।ভরা পূর্ণিমার সমুদ্রের মতন উদে্‌ব্‌লঅ হয়ে ওঠে ওরায়নের হৃদয়সমুদ্রও, ঘুমের অতলে সে স্বপ্নের মধ্যে ডুবে যায়।সেখানে অনন্ত মধু-বৃন্দাবন,মুহূর্তেরও বিরহ নাই।
  • agana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০২:১০392896
  • ডায়ানা ও ওরায়নের বন্ধুত্ব প্রণয়ে পরিণতি লাভ করলো একসময়। এই সংবাদ স্বর্গে পৌঁছলো। তারপরে যা হয় আরকি। ক্ষেপে গেলেন দেবতারা,সবচেয়ে বেশী ক্ষেপলেন ডায়ানার যমজভাই সূর্যদেব অ্যাপোলো। কী!!!!এ কি ঘোর অনাচার! স্বর্গের দেবী হয়ে কিনা সামান্য এক মর্ত্যমানবের সঙ্গে প্রেম!
    কিন্তু ডায়ানা বারণ মানে না,ধমক দিলে হো হো করে হাসে। সে স্বাধীন শক্তিশালী তেজস্বিনী দেবী, সে কেন অন্যের অন্যায় ধমক বা বারণ মানতে যাবে?
    ধমকে চমকে কাজ হয় না দেখে শেষে কূটকৌশল করলেন দেবতারা।
    ডায়ানা এসবের কিছু খবর পায় নি, সে গেছে ওরায়নের সঙ্গে দেখা করতে,সারাদিন ইচ্ছেসুখ করে ঘুরেফিরে শিকার করে খেয়েদেয়ে আনন্দ করে সন্ধ্যায় বিদায় নিয়েছে।ডায়ানা বিদায় নিতে অন্যদিনের মতন সমুদ্রতীরের ঘরে ফিরেছিলো ওরায়ন,কিন্তু অ্যাপোলো ছদ্মবেশ ধরে তার কাছে এসে বললো,"আরে করছো কি ঘরে বসে বসে? এক্ষুণি ভূমিকম্প হয়ে এইসব ঘরদোর পড়ে যাবে।বাঁচতে যদি চাও আমার সঙ্গে এসো।"সঙ্গে সঙ্গে মাটিটাও একটু দুলে উঠলো!
    সরল ওরায়ন সঙ্গে সঙ্গে ছদ্মবেশী অ্যাপোলোর সঙ্গে চললো।অ্যাপোলো তাকে সমুদ্রতীরে এক পাথরের উপরে বসতে বলে বললো আজ রাতে আর ঘরে ফেরার দরকার নেই, এখানেই থাকো।
    ওরায়ন সেখানেই রাত্রির বিশ্রামের বন্দোবস্ত করলো। ছদ্মবেশী অ্যাপোলো বিদায় নিলো।
    এদিকে চন্দ্রদেবী তখন সবে পুব দিগন্তে মুখটি তুলেছেন, অ্যাপোলো তার কাছে এসে কইলেন,"এই যে ডায়না,খুব যে শরসন্ধানের গর্ব করিস,পারবি আমার সঙ্গে লক্ষ্যভেদের বাজী ধরতে?"
    ডায়না তেজের সঙ্গে কইলেন অবশ্যই পারবো। কি বাজী?
  • angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০২:২১392907
  • দূরের সমুদ্রতীরে একটি কালোমতন টার্গেট দেখিয়ে অ্যাপোলো কইলেন,"ঐটে। পারবি তীর মেরে বিঁধতে?"
    ডায়ানা তেড়ে উঠে কইলেন,"আগে তুই ট্রাই করবি না আগে আমি?"
    অ্যাপোলো কইলেন,দেখি আগে আমিই দেখি।
    বলে নিজে তীর মারলেন, লক্ষ্যভেদ করলেন না ইচ্ছা করেই।
    ডায়ানা একটা হাসি দিয়ে কইলেন,"কীরে, এইবারে আমি ছুঁড়ি?"
    ডায়নার একবারো মনে হয়নি এর মধ্যে কোনো প্যাঁচ থাকতে পারে,এতটাই উত্তেজিত যে ভেবে দেখার আগেই তীর তুলে নিয়ে ধনুতে পরিয়ে টান দিয়েছেন।শন শন করে তীর ছুটে গেল,অব্যর্থ লক্ষ্যে আঘাত হানলো। ডায়ানাকে বিজয়ী বলে স্বীকার করে নিয়ে বেট হেরে ছদ্মকাঁচুমাচুমুখে চলে গেলো অ্যাপোলো।

  • angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০২:৪২392918
  • পরদিন ওরায়নের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে ডায়ানা,দেখা পায় না,দেখা পায় না, বারে বারে ডাকে ওরায়নের নাম ধরে,কেউ আসে না, কেউ সাড়া দেয় না।গাছগাছালি চমকে ওঠে সে আকুল আহ্বানে, পাখপাখালি উড়ে যায় চমকে উঠে,কিন্তু ওরায়ন আসে না,আসে না। কি হলো তার?
    অচেনা আশঙ্কার ছায়া পড়ে চন্দ্রদেবীর নি:শঙ্ক নীল চোখে, বুকের মধ্যে ধক করে ওঠে অনিষ্টের ভয়। কালকে যখন বিদায় নেয়, তখন অ্যাপোলোর চোখের মধ্যে কিযেন ছিলো, অশুভ কোনো কিছু। মনে পড়ে ডায়ানার। ওরায়নের কোনো ক্ষতি হলো না তো! তীরধনু অস্ত্র বর্ম সব ফেলে রেখে সে ছুটে যায় সমুদ্রতীরে।
    সেখানেই পাওয়া গেলো মৃত ওরায়নকে।পড়ে আছে নশ্বর মর্ত্যমানবের প্রাণহীণ দেহ,ডায়ানার অব্যর্থ-লক্ষ্য তীরখানি মাথা ভেদ করে ফেলেছে ওরায়নের।
    উথালপাথাল তীব্র অগ্নি-ঝঞ্ঝাময় শোকের পরে আস্তে আস্তে একসময় শান্ত হয়ে এলো ডায়ানা।ওরায়নের মৃতদেহ নিয়ে গেলো আকাশে,তারায় তারায় সাজিয়ে দিলো তাকে, ক্ষণিকের প্রিয়কে চিরকালের প্রিয়তম করে।
    আর ভয় নেই, আর বিচ্ছেদ নেই,অনন্ত এই মধুবৃন্দাবনে আর তো বিরহ নাই!
    সেই থেকে ওরায়ন আকাশে আছে নক্ষত্রমন্ডল হয়ে,চাঁদ তাকে ছুঁয়ে যায় প্রতিরাত্রের আকাশপরিক্রমায়।
    ******
  • ayan | 67.8.92.202 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ০৫:৩০392925
  • দারুণ হচ্ছে!! চালিয়ে যান অঙ্গনা দেবী, দুর্দান্ত লাগছে
  • angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২২:০৩392842
  • কালপুরুষের সামনে যুদ্ধরত বৃষ-জ্যোতির্বিদেরা একে বৃষরাশি(Taurus)বলেন। আকাশে সূর্যের আপাত চলনপথকে বলে রবিমার্গ,এই পথে বারোটি নক্ষত্রমন্ডল আছে, যাদের বলে রাশি (Zodiac sign)।বৃষ রবিমার্গের দ্বিতীয় রাশি,এর আগে আছে মেষরাশি(Aries)পরে আছে মিথুনরাশি(Gemini)। রাশিদের পরপর নামগুলো হলো মেষ(Aries), বৃষ(taurus), মিথুন(Gemini), কর্কট(Cancer), সিংহ(Leo), কন্যা(Virgo),তূলা(Libra), বৃষি্‌চক(Scorpius), ধনু(Sagittarius), মকর(Capricornus), কুম্ভ(Aquarius), মীন(Pisces)।
    আকাশে কালপুরুষের পশ্চিমে একটু খুঁজলেই দেখা যায় তারা দিয়ে তৈরী একটা V এর মতন আকৃতি, এটা বৃষের মাথা, এইখানে লালচে-কমলা রঙের উজ্বল একটি তারা আছে,এর নাম রোহিণী(Aldebaran)। আমাদের উপকথায় রোহিণী আর চন্দ্রের অন্যান্য স্ত্রীদের নিয়ে একটি গল্প আছে।
  • Angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২২:১৮392843
  • চন্দ্রের চলার পথে পড়ে এরকম সাতাশটি উজ্বল নক্ষত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে-প্রতি রাত্রে চাঁদ এক এক নক্ষত্রের কাছে অবস্থান করে। চান্দ্রপথের এই নক্ষত্রদের নাম অশ্বিনী, ভরণী, কৃত্তিকা, রোহিণী, মৃগশিরা, আর্দ্রা, পুনর্বসু, পুষ্যা, অশ্লেষা, মঘা, পূর্বফল্গুণী, উত্তরফল্গুণী, হস্তা,চিত্রা,স্বাতী, বিশাখা,অনুরাধা,জ্যেষ্ঠা, মূলা, পূর্বাষাঢ়া উত্তারাষাঢ়া ধনিষ্ঠা শ্রবণা রেবতী পূর্বভাদ্রপদা উত্তরভাদ্রপদা শতভিষা। নামগুলো চেনা চেনা লাগে কি? আমাদের বাংলা মাসগুলোর নাম: বৈশাখ জৈষ্ঠ আষাঢ় শ্রাবণ এইসব মাসগুলোর নাম এই চান্দ্রপথের নক্ষত্র-নামানুসারে হয়েছে। যে যে মাসের পূর্নিমা যে যে নক্ষত্রের কাছে হয় সেই সেই নক্ষত্রের নামে সেই সেই মাসের নাম।

  • agana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২২:৪২392844
  • আমাদের প্রাচীন উপকথায় এই চন্দ্র আর সাতাশটি নক্ষত্র নিয়ে গল্প আছে বলেছিলাম যে,সেই গল্প হলো এই: দক্ষের সাতাশজন কন্যার সঙ্গে চন্দ্রদেবের বিবাহ হলো।প্রজাপতি ব্রহ্মা স্বয়ং এই বিবাহ দিলেন আর চন্দ্রের কাছে প্রতিশ্রুতি আদায় করলেন যে সে প্রত্যেক স্ত্রীকেই সমান ভালোবাসবে, সমান সঙ্গ দেবে সমান প্রীতি-উপহার ইত্যাদি দেবে। চন্দ্রদেব সম্মত হলেন (আরে বুড়া দাদুর সামনে কিকরে বলে আর অন্যরকম? এদিকে চন্দ্র তো প্রথম দেখাতেই রোহিণীকে দেখে চিত্ত হারিয়েছেন,ওরে আমার জানরে ওরে আমার পাখিরে অবস্থা)
    দিন যায় দিন যায়,দেখা যায় চন্দ্র রোহিণীকে নিয়ে ব্যস্ত,প্রায় সারাক্ষণ তার মহলেই থাকেন,আনন্দ করেন, বহুরকম উপহার দেন তাকে আর বাকী ছাব্বিশজনের সঙ্গে নমোনমো করে সম্পর্করক্ষা করেন।
    তারা তো রেগে আগুন হয়ে গেলেন,দক্ষের কন্যা তারা,খুব তেজীয়ান, এসব সইবে কেন মুখে বুজে? দলবেঁধে তারা প্রথমে গেলো পিতা দক্ষের কাছে নালিশ করতে,দক্ষ তাদের তাড়াতাড়ি করে প্রজাপতি ব্রহ্মার দিকে অগ্রসর করে দিলেন(এতজন কন্যার দলবদ্ধ আক্রমণে অমন যে অমন দক্ষ,তিনিও ঘাবড়ে গেছিলেন নিশ্চয়,সেকথা গল্পে চেপে গেছে:-))))
    পিতামহ ব্রহ্মা দক্ষকন্যাদের অভিযোগ মন দিয়ে শুনলেন, সব শুনে তিনিও রেগে গেলেন।এ কী? ছোঁড়া এই সেদিন সোনামুখ করে প্রতিশ্রুতি দিলো সবাইকে সমান ভালোবাসবে, এদিকে দুদিন যেতে না যেতেই অন্য রকম আচার আচরণ? রেগে গিয়ে তিনি শাপ দিলেন, চন্দ্রের ক্ষয় রোগ হবে।দক্ষকন্যারা হৃষ্টচিত্তে ফিরে যে যার আপন আপন মহলে চলে গেলেন।
    অচিরেই অভিশাপ ফললো,চন্দ্র ক্ষয়ে যেতে আরম্ভ করলেন,আতংকিত রোহিণী যথাসাধ্য যত্ন-আত্তি করলো চিকিৎসার ব্যবস্থাও করলো,কিন্তু চন্দ্র ক্ষয়েই যেতে লাগলেন দিনের পর দিন।
    দিদিদের কাছে গিয়ে কেঁদে পড়লো রোহিণী,প্রথমে দিদিরা "এবার কেমন লাগে?" ধরনের অ্যাটিচুড নিয়েছিলো,কিন্তু পরে সংকট বাড়লে নিজেরাও ত্রস্ত হয়ে উঠলো।চন্দ্রদেব মারা গেলে যে সকলেই বিধবা হবে তারা!
    এবারে সাতাশজন মিলেই আবার গেলো দাদুর কাছে,সকলে কেঁদে পড়লো অভিশাপ ফিরিয়ে নেবার জন্য।পিতামহ মিনতিতে গলে গিয়ে ওদের সঙ্গে চলে এলেন চন্দ্রদেবের প্রাসাদে। নিজের কমন্ডলুর সঞ্জীবনী জল ছিটিয়ে আরোগ্য করে দিলেন চন্দ্রকে। কিন্তু পুরোপুরি তো যাবার নয় অভিশাপ,তাই মাসের অর্ধেক ধরে চন্দ্র ক্ষয়ে যান আবার বাকী অর্ধেকে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেন,এইভাবেই চলতে থাকে।এখনো তাই চলছে।পূর্ণিমার গোল চাঁদ ক্ষয়ে ক্ষয়ে অমাবস্যার আঁধারে মিলান, ফের সরু চন্দ্রলেখা হয়ে দেখা দিয়ে আস্তে আস্তে বড়ো হয়ে ওঠেন পূর্ণিমার রাত্রিতে পূর্ণ হবেন বলে।
    স্থিরপ্রেমা রোহিণী শান্ত হয়ে বসে থাকে নিজ মহলে, একটি রাত্রিতে প্রিয়তমকে কাছে পাবে বলে।

  • Blank | 74.138.157.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২৩:১২392845
  • agana ই কি angana?
  • angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২৩:৩০392846
  • আগের পোস্ট এ নামে একটা n বাদ পড়ে গেছে,দু:খিত।
    নামে কি আসে যায়? শেক্সপীয়ার কি বলে গেছিলেন?

  • Tim | 204.111.134.55 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২৩:৪৬392847
  • আরে, n টাই তো আসল। n সংখ্যক লেখিকার n-সেম্বল। :-))
  • Angana | 131.95.121.132 | ১৯ আগস্ট ২০০৭ ২৩:৪৯392848
  • সেই যে আকাশ ও নক্ষত্রপ্রিয় সম্রাট উলূগ বেগ-ত্রিভুবনখ্যাত তৈমুর লঙ এর তিনি নাতি। এনার কথা একবার বলেছিলাম কোথাও মনে হয়। ওনার অবজার্ভেটরির কথাও। সময় এলে এখানেও বলা যাবেখন।
  • Angana | 131.95.121.132 | ২০ আগস্ট ২০০৭ ০০:৩৫392849
  • আমাদের এক শিক্ষক বলছিলেন এই নক্ষত্রপ্রিয় সুলতানের গল্প।তিনি অত্যন্ত অবাক হতেন যে সেই মধ্যযুগের ভয়ানক রক্তপিপাসু যোদ্ধাদের মধ্যে কিকরে এমন আকাশনক্ষত্র আর অংক-ভালোবাসা মানুষের জন্ম হলো? কিন্তু কেউ কেউ তো থাকে অমন জন্ম বাউল,অমন সুফী,অমন জন্ম ফকীর।থাকে না? মোগল প্রাসাদের সোনার খাঁচার জালের মধ্যেও তো দারাশুকো জন্মেছিলেন দুই মহাসমুদ্রের মিলনের স্বপ্ন নিয়ে।
    তো,হচ্ছিলো উলুগ বেগের কথা।এই নাতি তখনো জন্মায় নি,ঠাকুদ্দা তৈমুর ছিলেন এক যুদ্ধে।শুভ জয়সংবাদ আর নাতির জন্মের সংবাদ পায় একই সঙ্গে এসে পৌঁছালো তার শিবিরে।আনন্দে উদ্বেল হয়ে তৈমুর ঘোষণা করলেন যে যুদ্ধবন্দীদের তিনি মারবেন না,তাদের তিনি নি:শর্তে মুক্তি দিলেন। তাদের আজকের আনন্দে যেন সদ্যোজাত নাতিটির ভালো হয়।
    এই নাতিকে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেন তৈমুর,মধ্য এশিয়ার বিরাট অংশ উলুগ বেগ যে অল্পবয়সেই ঘুরে ফেলেছিলেন তা এই দিগ্বিজয়ী ঠাকুদ্দার কল্যাণে। যদিও এতসব যুদ্ধের মধ্যে এত কচিবয়সে ঘোরা নিরাপদ নয়,কিন্তু এতো আর ন্যাতপেতে বাঙালি না,এ হলো তৈমুরী বংশের সন্তান! শক্তপোক্ত করার জন্য এনারা ছোটো থেকেই ঐভাবে মানুষ।

  • angana | 131.95.121.132 | ২০ আগস্ট ২০০৭ ০০:৪৩392850
  • উলুগ অল্প বয়স থেকেই গণিত আর জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহী। আর অসাধারণ স্মৃতিশক্তিও। কোরাণ মুখস্থ করে ফেললেন অল্পদিনেই! নিশ্চয় নাতির কৃতিত্বে তৈমুর অত্যন্ত খুশী ছিলেন।
    তৈমুরের মৃত্যুর পরে তার পুত্র শাহরুখ দায়িত্ব পেলেন তার সাম্রাজ্যের। তৈমুরের রাজধানী ছিলো সমরখন্দ,শাহরুখ নিজের রাজধানী করলেন হীরাটে। ছেড়ে যাওয়া সমরখন্দ দেখভালের দায়িত্ব দিলেন পুত্র উলুগের হাতে,তার তখন ১৬ বছর বয়স।
    এই টিনেজার শাসক সমরখন্দকে বিদ্যাশিক্ষার পীঠস্থান করে তুলতে ব্রতী হলেন।তৈরী করলেন বিরাট মাদ্রাসা-সেখানে সেযুগের বড়ো বড়ো স্কলারদের সমাদরে ডেকে এনে ,তাদের মধ্যে গণিতবিদ আর জ্যোতির্বিদই বেশী ডাকলেন-ডেকে এনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিলেন।

  • Angana | 131.95.121.132 | ২০ আগস্ট ২০০৭ ০১:০৫392851
  • এরপরের অংশই উলুগের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায়। ১৪২৮ সালে তিনি সমরখন্দে এক বিরাট তিনতলা অবজার্ভেটরি তৈরী করলেন।সেখানে সেই দূরবীনপূর্ব যুগের সবচেয়ে ভালো ভালো পর্যবেক্ষণ যন্ত্রপাতি বসালেন।টলেমির পরে আর টাইকোব্রাহের আগে এনার অবজার্ভেটরির কাজই সবচেয়ে বিস্তৃত ও সূক্ষ্ম। সেযুগের দুনিয়ার সবচেয়ে নামকরা জ্যোতির্বিদ আলি কাদ্‌শী কে এই অবজার্ভেটরির ডিরেকটর পদে বৃত করলেন সম্রাট উলুগ বেগ।
    এর কয়েক বছর পরেই প্রকাশিত হলো সেযুগের সবচেয়ে বিস্তৃত স্টার ক্যাটালগ ৯৯৪ টি তারার কো-অর্ডিনেট সূক্ষ্ম ও নির্ভুল হিসেব করে দেখিয়ে। আগের টলেমির ক্যাটালগ এত তারা দেখায় নি আর তাতে হিসাবের কিছু অল্প ভুলচুক ছিলো,সমস্ত ঠিকঠাক করে এই অবজার্ভেটরি থেকে প্রকাশিত হলো।পরবর্তীকালে উরোপের রেনেসাঁর সময় এসব কাজ খুব কাজে লেগেছিলো।

  • angana | 131.95.121.132 | ২০ আগস্ট ২০০৭ ০১:২৩392853
  • রেনেসাঁ বলতে আসলে বলতে চাইছিলাম পরবর্তীকালে টাইকোব্রাহে কেপলার এদের সময়ে এসব কাজে লেগেছিলো খুব।আস্তে আস্তে গ্যালিলিও নিউটনেরা তো তারপরেই এলেন কিনা!
    এই নক্ষত্রপ্রিয় গণিতজ্ঞ সম্রাটের মৃত্যু অত্যন্ত দু:খজনক। নানারকম যুদ্ধ হত্যামৃত্যু বিদ্রোহের চক্করে একসময় ইনি ফেঁসে গেলেন।একসময় ধর্মান্ধেরা তাকে ধর্মদ্রোহী ইত্যাদিও বললো, এদিকে তিনি একজন হাফিজ, সেই কোন্‌ কিশোরকাল থেকে তিনি কোরাণ আবৃত্তি করতে পারেন না দেখে,মন থেকে। ধর্মদ্রোহী ইত্যাদি অভিযোগের প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হলো না, এসবের মধ্যে গভীর ষড়যন্ত্র ছিলো।
    শেষপর্যন্ত একটা পথ পাওয়া গেলো, পায়ে হেঁটে মক্কা যেতে হবে প্রায়শ্চিত্ত করতে। উনি রাজী হলেন এবং যাত্রা শুরুও করে দিলেন প্রাথমিক চিত্তশুদ্ধির পরে।শহরসীমা ছাড়ানোর পরেই ওনার ছেলের পাঠানো গুপ্তঘাতক এসে তার মুন্ডটি ধড় থেকে আলাদ করে ফেললো।
    সম্রাটের নশ্বর দেহ পৃথিবীতে পড়ে রইলো, অবিনশ্বর যা, তা চলে গেলো আকাশে, ঐ যে লক্ষ তারার মণিরত্ন জড়ানো ঐ তার প্রিয় আকাশে।

  • Blank | 74.138.157.69 | ২০ আগস্ট ২০০৭ ০২:১৭392854
  • সে নক্ষত্র প্রিয় সম্রাটকে দেখতে চাইলে, পুর্নিমার রাতে চাঁদের দিকে একবার তাকিও।
    ওনার সন্মানে চাঁদের এক গহ্বরের নাম রাখা হয়েছিল উলুগ বেগ ক্রেটার।
  • Angana | 131.95.121.132 | ২০ আগস্ট ২০০৭ ১৯:৫৩392855
  • মণিখন্ডের মতন তারারা জ্বলে রাত্রিনীল আকাশ ভরে, নীহারিকার হাল্কা ওড়না ছড়িয়ে থাকে মহাশূন্যে, গ্লোবুলার ক্লাস্টারের ঝাঁক ঝাঁক তারাচূর্ণ ছড়ানো ঐ অসহ্য সৌন্দর্য্য মানবহৃদয়ের সীমায়িত আয়তনে ধারণ করা যায় না,কেবলি সে উপচে পড়ে উপচে পড়ে দুচোখ বেয়ে....তখন আমাদের আশ্রয় করতে হয় তাঁর গান-
    ""আকাশ জুড়ে শুনিনু ঐ বাজে
    তোমারি নাম সকল তারার মাঝে
    সে নামখানি নেমে এলো ভুঁয়ে
    কখন আমার ললাট গেলো ছুঁয়ে
    শান্তিধারায় বেদন গেলো ধুয়ে
    আপন আমার আপনি মরে লাজে..."
  • Angana | 131.95.121.132 | ২১ আগস্ট ২০০৭ ০৩:০৭392856
  • রাধাগোবিন্দ চন্দের কথা আমাদের বলেছিলেন আরেক শিক্ষক। এই অ্যামেচার জ্যোতির্বিদের কাজ বিদেশের জ্যোতির্বিদেরা সমাদর করে গ্রহণ করতেন, অথচ বাঙালিরা অনেকে তাঁর নামই জানে না। উনি যখন সক্রিয়ভাবে কাজ করে গেছেন, তখনো বাঙালিরা তাঁকে কোনোদিন স্বীকৃতি দেয় নি। একটি ছোটোখাটো দূরবীণ কেনার খরচও তিনি যোগাড় করতে পারেন নি, পরে সম্ভবত কোনো দূরদেশী শুভানুধ্যায়ীর কল্যাণে তা পান।অতি দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাঙালির ক্ষেত্রে এটা বারে বারে দেখা যায় যে যোগ্যজন কাছের মানুষের কাছে স্বীকৃতি পান না, উপরন্তু পান ব্যঙ্গবিদ্রুপ ও বাধা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো কঠিন দু:খ ও হতাশা তাদের ঠেলে দেয় মৃত্যুর দিকে। সেই যে টেস্ট টিউব বেবী নিয়ে সফল গবেষণাকারী ডক্টর সুভাষ মুখার্জীর কথা তো আমাদের মনে আছেই।যার পাওয়া উচিৎ ছিলো অকুন্ঠ স্বীকৃতি ও প্রশংসা ও উৎসাহ ও স্পনসর,তিনি আপন জাতির মানুষের নিষ্ঠুর ব্যঙ্গবিদ্রুপে স্বেচ্ছায় পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন।এসব নিয়ে যোগ্যজনেরা বলতে পারবেন আরো ভালো করে, আমাদের শুধু কষ্ট পাওয়া, আর কিই বা করার?
    যাহোক, যেকথা বলছিলাম। রাধাগোবিন্দ চন্দ।উনি স্বীকৃতির কাঙাল ছিলেন না,চুপচাপ থাকতেন, নিজের মনে দিনে চাকুরী আর সন্ধ্যায় নিজের বাড়ীর উঠানের থেকে আকাশ পর্যবেক্ষণ,ছোটো দূরবীনটির সহায়তায়।
    গ্রামের সাধারণ ঘরে জন্মেছিলেন তিনি,গাঁয়ের পাঠশালে পড়তেন, গ্রহতারাময় আকাশের দিকে আগ্রহ হবার কথাই না এমনিতে। কিন্তু কিকরে হলো সেই সূচনালগ্নটির কথাই আমাদের শিক্ষক বলেছিলেন।
    তখন সে সাত আট বছরের বাচ্চাছেলে।রাত্রে একদিন উত্তরের জানালার কাছে শুয়ে আছে ঠাকুমার সঙ্গে, হঠাৎ দেখে একটা তারা জ্বলে উঠে নিভে গেলো। সে তখন জানতো না একে উল্কা বলে। চমৎকৃত হয়ে সে বললো ঠাকুমা-আ-আ, ঐটা কি? ঐ যে আকাশে জ্বলে উঠলো,নিভে গ্যালো?
    ঠাকুমা অমঙ্গল আশংকায় নাতির চোখে হাত চাপা দিয়ে বলেন,"আরে তুই তারাখসা দেখে ফেললি? কি হবে এখন! তুই শীগগীরে সাত ঋষির নাম নে।""
    সে অবাক হয়ে বলে,সাত ঋষি? সাত ঋষি কারা? আমি তো তাদের নাম জানিনা!
    ঠাকুমা উত্তরের আকাশে তাকে দেখান সপ্তর্ষিমন্ডল-সাত ঋষি।দুহাত জড়ো করে প্রণাম করেন ঠাকুমা,নাতির উল্কা দেখার অমঙ্গল কাটিয়ে দিতে।
    আর, এতখানি চোখমেলা বালক রাধাগোবিন্দের সামনে খুলে যায় এক আশ্চর্য জগৎ।আকাশের জগৎ।ঐ জ্যোতির্ময় উর্ধলোকের প্রেমে সে বাঁধা পড়ে যায় সেই শুভরাত্রির মঙ্গলময় মুহূর্ত থেকে। তারপর থেকে তারা দেখার নেশা তাকে সারাজীবন ছড়ে নি।
  • Angana | 131.95.121.132 | ২১ আগস্ট ২০০৭ ০৪:০৩392857
  • দক্ষিণের কাভালুর অব্জার্ভেটরির ৯০ ইঞ্চি ব্যাসের টেলিস্কোপটি যার নামে, সেই ভাইনু বাপ্পুর কথাও বলেছিলেন এই শিক্ষক। ভাইনু ও খুব বাচ্চাবয়সে গ্রহতারানীহারিকাময় আকাশের প্রতি আগ্রহী হন। ভাইনুর বাবা ছিলেন অ্যাস্ট্রোনমার,সন্ধ্যা থেকে অবজার্ভেটরিতে কাজ শুরু হতো,চলতো অনেক রাত অবধি। মাঝে মাঝে কাজের চাপ যখন অল্প থাকতো,তখন বাবা ভাইনুকে নিয়ে যেতেন সঙ্গে করে।
    একদম ছোটোবেলা ও এদিক ওদিক দৌড়ে খেলে বেড়াতো, ওসব তারা টারা বা টেলিস্কোপ ফেলিস্কোপ ব্যাপারগুলো ওকে টানতো না। একদিন, তখন বেশ রাত, অব্জার্ভেটরিতে আর কেউ নেই, ওর বাবা খুব নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছিলেন এক গ্লোবুলার ক্লাস্টার। গ্লোবুলার ক্লাসটার হলো হাজার হাজার তারা ঘনসন্নিবদ্ধ ঝাঁক, গ্যালাক্টিক হ্যালো অঞ্চলে বেশী পাওয়া যায়। দূরবীণে অসাধারণ সুন্দর দেখায়।
    ভাইনু বাবার কাছে গিয়ে জিগায়,"কি দেখছ এত করে? বাড়ী যাবে না? আমার খিদে পেয়েছে না?ঘুমাবোই বা কখন? "
    বাবা খালি বলে,"এইতো খোকা, আরেকটু।""
    কি মনে করে কাছিয়ে এসে ভাইনু বলে,""আমাকে দেখতে দেবে কি দেখছ?"
    ভাইনু তখন ছোটো, আইপিসে তো ওর চোখ যায় না। ওর বাবা ওকে তুলে নিয়ে দূরবীণের আইপিসের কাছে ওর চোখ রাখলেন। একনিমেষে মুগ্‌ধ আচ্ছন্ন হয়ে গেলো ভাইনু।
    ঐ জ্যোতির্লোকে মোহকরী সৌন্দর্যের সামনে প্রণতিরত উপাসকের মতন সারাজীবন উৎসর্গীকৃত হলো ভাইনুর।
    ভারতীয় জ্যোতির্বিদদের মধ্যে এঁর কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • Angana | 131.95.121.132 | ২২ আগস্ট ২০০৭ ০১:৫০392858
  • এখন সন্ধ্যেরাতে যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে আর শহরের আলোকদূষণ বেশী না থাকে, তাহলে আকাশের দিকে তাকালেই দেখতে পাওয়া যাবে ছায়াপথ,মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি। শ্বেতাভ হাল্কা মেঘের মতন চলে গেছে উত্তর থেকে দক্ষিণে। প্রায় দশহাজার কোটি তারা নিয়ে তৈরী এক বিরাট নক্ষত্রজগৎ এ।আমরা মানে আমাদের সৌরজগৎ আছে এরই মধ্যে,কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে,একপাশে একটি ঘূর্ণীবাহুর মধ্যে।
  • Angana | 131.95.121.132 | ২২ আগস্ট ২০০৭ ০২:১৫392859
  • আন্তর্জালে যারা হারিকেন ডিন এর উপগ্রহ চিত্র দেখতে পাচ্ছেন,তারা মিল্কি ওয়ের আসল চেহারার ধরতাই পাবেন। ঐ হারিকেনের মতনই,আকারে বহু বহু বহু গুণ বড়ো অবিশ্যি। ঘূর্ণীবাহুগুলোকে বলে স্পাইরাল আর্ম,ওগুলোর মধ্যেই নতুন নতুন তারার ঝাঁক জন্মায়,কেন্দ্রটি কিন্তু অন্যরকম,জ্যোতিপদার্থবিদেরা বলেন ঐ কেন্দ্রটিতে আছে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল, আমাদের সূর্যের বিলিয়ন গুণ বেশী ম্যাস এর।
    মিল্কিওয়ের ঘূর্নীটুর্নীগুলো শুদ্ধ নিয়ে যদি একটা ডিস্কের মতন কল্পনা করি তাইলে পাশের থেকে দেখাবে যেন একটা দুই ডিমের পোচ,কুসুমদুটো ভাঙে নি,মাঝখানটা উপরে নীচে ফুলে আছে একটু তাই। এই অঞ্চলটাকে বলে গ্যালাক্টিক হ্যালো, এইখানে পুরানো বৃদ্ধ তারারা আর গ্লোবুলার ক্লাস্টারগুলো বেশী পাওয়া যায়।
    ঐ ডিস্কের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত কত খানি বড়ো? এক লক্ষ আলোকবর্ষ।আলো এর এক প্রান্ত থেকে সেকেন্ডে তিন লাখ কিমি বেগে ছুটতে ছুটতে অন্যপ্রান্তে পৌঁছবে এক লক্ষ বছর পরে। এত বড়ো! এখন জানা গেছে, তার চেয়েও আরো বড়ো এই গ্যালাক্সি।
  • Angana | 131.95.121.132 | ২৪ আগস্ট ২০০৭ ২০:০৪392860
  • হাবল সায়েবের নামে নাম দেওয়া স্পেস টেলিস্কোপ গভীর মহাকাশের যে ছবি আমাদের দেয়, তা থেকে অনেক নতুন নতুন খবর জানা গেছে যা আগে জানা ছিলো না।
    যেমন জানা গেছে, এই যে উজ্বল তারারা বা আলো বিকিরণ করা নেবুলারা বা আলো ব্লক করা আঁধার নেবুলারা ---এই যা যা সব দেখা যায় আমাদের প্রচলিত উপায়ে--সেইসব বস্তুর ম্যাস সব জুড়ে টুড়ে ও কিছুতেই হিসাব মেলানো যায় না,হিসাব মেলানোর জন্য আরো বহু বেশী ম্যাস এর দরকার হয় নয়তো নিউটন্যীয় মহাকর্ষ ও তার সংশোধিত আইন্সটাইনীয় রূপ-এদেরকেই পালটাতে হয়।
    এই যে যাসব বস্তু দেখা যায় না, এরা আলোর সঙ্গে কোনো কারবারই করে না বলে বলা হচ্ছে, আলো বিকিরণও করে না, শোষণও করে না, কিছু না।এদের নাম দেওয়া হয়েছে ডার্ক ম্যাটার।এরা কিধরনের পদার্থ সে সম্পর্কে কিছুই জানা নেই আমাদের। শুধু জানা আছে এই লুকানো ভর আছে আমাদের গ্যালাক্সিতে ও অন্যন্য গ্যালাক্সিতে আর গ্যালাক্সি-পুঞ্জে। মোট ভরের ২২%-২৩% ই এই অজানা পদার্থ। যেখানে আমাদের জানা অর্ডিনারি ম্যাটার হলো কিনা মাত্র ৪%।
    আমাদের এক শিক্ষক বলছিলেন ঠিক যেন একশোটাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে দ্যাখো মোটে ৪ টাকা পকেটে, বাকী ৯৬ টাকার কোনো হদিশ নেই। মনের অবস্থাটা তখন যেমন হয়, বর্তমান অ্যাস্ট্রোনমারদের অবস্থা প্রায় তাই।

  • Angana | 131.95.121.132 | ২৪ আগস্ট ২০০৭ ২২:৩৫392861
  • তা সেসব ডার্ক ম্যাটার ডার্ক এনার্জী নিয়ে কাজ করুন জ্যোতিপদার্থবিদেরা আর কণাপদার্থবিদেরা।এনারা কেউ কেউ উৎফুল্ল নতুন ব্যাপারের সন্ধান পেয়ে। ঠিকই তো,সব কিছু অত সহজে মিলে গেলে জীবনের মানেটা কি আর এত রঙীন,এত সমৃদ্ধ এত অপ্রত্যাশিত চমকে ভরা থাকে?
    আমরা সেই ফাঁকে এখন আবার গিয়ে দাঁড়াই আকাশের নীচে,দেখি চোখ মেলে দিয়ে তারায় তারায় কি কথা বলে যায় আকাশ! বলে গেছিলো আমাদের বহু বহু প্রজন্ম আগের মানুষের কাছে? বলে যাবে আরো আরো দূর গভীর ভবিষ্যতে যেসব নতুন নতুন মানুষেরা আসবে, তাদের কাছে?
    এখন একটু বেশী রাতে,এই সাড়ে নটা দশটায় বাইরে গিয়ে রাত আকাশের দিকে চেয়ে উত্তরের দিকে তাকালে দেখি সপ্তর্ষির জিজ্ঞাসা চিহ্ন ঢলে পড়েছে পশ্চিমে আর পুবের দিকে উঠে আসছে W এর মতন চেহারা নিয়ে ক্যাসিওপিয়া নক্ষত্রমন্ডল।
    উপকথায় ইনি ছিলেন ইথিওপিয়ার রাণী,নীলোৎপলবর্ণা অপরূপা,রাজা সিফিউসের(সেফিউসের নামেও রয়েছে নক্ষত্রমন্ডল)স্ত্রী। এদের কন্যা ছিলেন অ্যান্ড্রোমেডা(এই কন্যার নামে আরেকটি নক্ষত্রমন্ডল আছে)।
    তো ক্যাসিওপিয়া রূপের গর্ব করতেন বলে সমুদ্রদেবতা গেলেন রেগে।আসলে কিনা সমুদ্রদেবতার কন্যাদের তখন খুব রূপের খ্যাতি, তাই ইথিওপিয়ার রাণী ওদের কিনা বিউটি কন্টেস্টে হারিয়ে দেবার উপক্রম করে দেখে ওরা ক্ষেপে গিয়ে ওদের বাবাকে বলে।সমুদ্রদেব এই শুনে মারাত্মক জলজন্তু সিটাসকে(সিটাস নক্ষত্রমন্ডলটি আছে একটু দক্ষিণঘেঁষা আকাশে) পাঠান ইথিওপিয়া দেশটাকেই ধবংস করতে।

  • Angana | 131.95.121.132 | ২৪ আগস্ট ২০০৭ ২২:৫৪392862
  • দেশ জুড়ে হায় হায় রব ওঠে,লোকে পালাতে থাকে ঘরবাড়ী ছেড়ে। মহান হৃদয় রাজা সেফিউসের অন্তর দুলে ওঠে, প্রজাদের বাঁচাবার চেষ্টা করতেই হবে। পুরোহিতদের পরামর্শ নিতে গেলেন তিনি।বহু আলোচনার পরে তারা পরামর্শ দিলো কুমারী অ্যাড্রোমেডাকে উৎসর্গ করা হোক সেটাসের কাছে,ওকে মন্ত্রতন্ত্র দিয়ে শুদ্ধ করে বেঁধে রেখে আসা হোক সমুদ্রতীরের পাহাড়ের চূড়ার কাছে,শিলাখন্ডের সঙ্গে।
    বোঝো কান্ড! কে কোথায় কি করলো, প্রায়শ্চিত্তের ভার পড়লো কার ঘাড়ে! উদো কি সাধে ঐ হযবরল র ছাব্বিশমার্কা দেশে গিয়ে সুখে থাকতো? আমাদের দুনিয়ায় প্রচুর ফ্যাচাং! একে তো বয়স কেবল বেড়েই চলে,মোটেই ঘুরিয়ে দেওয়া যায় না,তার উপর আবার এইসব গন্ডগোল! কে কোন সজারু না বাঁদর না প্যাঁচা কোথায় কি করে, ন্যাড়াকে ধরে আসামী বানায়!

  • Angana | 131.95.121.132 | ২৪ আগস্ট ২০০৭ ২৩:১৫392864
  • না না আবার ভেবে বসবেন না যেন অ্যান্ড্রোমেডা ন্যাড়া ছিলো। তার ছিলো ঘাড়পিঠকোমরছাপানো রেশমহেন চুল, নিয়মিত ভৃঙ্গরাজ তেল দিয়ে তাকে করে রাখতো পম্পাসরোবরের ঢেউ। রাজকুমারী দেখতে ছিলো যেন সদ্যফোটা পদ্মটি, রূপেগুণে তাঁর জুড়ি ছিলো না কোথাও।
    তো, দেশকে বাঁচাতে এহেন কন্যাকে বলি দিতে হবে শুনে রাজা রাণী ম্রিয়মান,কিন্তু কি আর করা! বৃহত্তর স্বার্থে মেনে নিতেই হলো।
    কথামতো রাজকুমারীকে বেঁধে রেখে আসা হলো শিলাখন্ডের সঙ্গে,যার সঙ্গে বিয়ের কথা ছিলো রাজকন্যার,সেই কাপুরুষও রাজকন্যাকে বাঁচাবার চেষ্টা করলো না। দূরে দেখা যায় সিটাসের আগমণের জলোচ্ছ্বাস! নিশ্চিৎ মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে অ্যান্ড্রোমেডা!
    এমন সময় এক আশ্চর্য কান্ড!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন