নারীর ভাবনাচিন্তা নিয়ে কিছু ... ...
প্রশ্নটা খুব সোজা হতে পারত – “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো করা কি ঠিক?” নেহাতই নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন। হ্যাঁ বা না বলে কাটিয়ে দেওয়া যেত, যদি না আরও নানা রঙের প্রশ্ন এসে পড়ত সামনে – ... ...
ওনারা ভেবেছিলেন হাবিলদার লোকটা কেমন করে কবি হতে পারে ? ও তো ইংরেজি-মাধ্যমে পড়েনি...গেঁয়ো... ... ...
জাঁ জেনে পড়ার পর ... ...
বাংলার আকাশে বাতাসে এখন বড় বেশি উৎসবের গন্ধ। আশি ও নব্বইয়ের দশকে গণবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন বহু মানুষ। ঈশ্বর তত্ত্বের পাশাপাশি জ্যোতিষ, তন্ত্র-মন্ত্র, ধাপ্পাবাজির বিরুদ্ধে ঘরে বাইরে সরব ছিলেন তারা। দুর্গাপুজোর মত চার-পাঁচ দিনের ধর্মের গন্ধ মেশা জগঝম্প আয়োজনে হয় বইয়ের স্টল না হয় সম মনভাবাপন্ন মানুষজনের সঙ্গে আড্ডা মেরে সময় কাটিয়ে দিতেন ওরা। পুজোর বাজারেই এই নাস্তিকদের জন্য তৈরি হয়ে যেত আর একটা স্পেস। আজকের দিনে সেই জায়গাটাই গিয়েছে হারিয়ে। ... ...
হাহা। হাহাহাহা। হাহাহাহাঃহাঃহাঃহাঃ। ... ...
একটি এমটিপি করতে আসা মেয়েকে নার্স বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রশ্ন করায় এক বেসরকারি হাসপাতালের (পশ্চিমবঙ্গের বাইরের) ডাক্তার নার্সকে ডেকে কাউন্সেল করেছিলেন, বলেছিলেন এই সব কথা তো তোমার জানার দরকার নেই। ও একটা সার্ভিস নিতে এসেছে আমাদের কাছে, আমরা দেব এইটাই ওর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, বাকিটা ওকে বুঝে নিতে দাও। এই ডাক্তার মহিলাকে অসীম শ্রদ্ধা জানাই। এর পাশে রাখি সেই সব কলকাত্তাই ডাক্তারদের যারা শুধু সিঁদূর দেখতে না পাওয়ার জন্য একটি মেয়েকে কুমারী ধরে নিয়ে মোরাল পিসিমা হয়ে এমটিপি করা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে চেষ্টা করেছিলেন। ... ...
তেমনই আমরা জানতে পারব না এলেন কেন উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হলেন। কেন আর দশটা ইউরেশিয়ান মেয়ের মত একটু পড়তে শেখা, একটু সেলাই-ফোঁড়াই , একটু নাচতে শেখা এই যা সব নিয়ে সাধারণ ইউরেশিয়ান মেয়েরা সন্তুষ্ট থাকত,এলেন কেন তার সীমানা ছাড়িয়ে বাইরে তাকাতে চাইলেন? তখনকার সাধারণ চাকুরিজীবি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বাড়িতে কি খুব পড়াশোনার চর্চা ছিল, বিশেষত মেয়েদের মধ্যে? ১৮৮২ সালের তথ্য থেকে পাই তার থেকে দেখা যায় যে ইউরোপিয়ান আর ইউরেশিয়ানদের মধ্যে, অন্তত কলকাতায়, প্রাইমারি বিভাগে মেয়েদের ভর্তির হার ছেলেদের প্রায় দ্বিগুণ। খুবই আশ্চর্য তথ্য। তবে মিডল স্কুলে গিয়েই এই অনুপাত উলটে যাচ্ছে। বিভিন্ন আংলো-ইন্ডিয়ান স্মৃতিকথার টুকরো-টাকরা যা হাতে এসেছে, তার থেকে এও ধারণা করা যায় যে ইউরেশিয়ান মেয়েদের অক্ষরজ্ঞান দরকার এই অবধি ঠিক আছে, তবে তার থেকে খুব বেশি শিক্ষার দরকার বলে কেউ ভাবেন নি সেই সময়। ওই প্রাইমারি স্কুলই ঢের। অবশ্য এই জনগোষ্ঠীর ছেলেরাও যে খুব বেশি দূর পড়াশোনা করতেন এমন তো নয়। আলাদা করে শ্রেণিবিভাগ করা থাকত না বলে একদম সঠিক করে বলা শক্ত, তবে এলেন যে বছর এন্ট্রান্স বা এফ এ পাস করেছেন সেই সেই বছরের তার সহপাঠীদের তালিকায় কিন্তু সাহেবি নামের ছাত্রের সংখ্যা নেহাতই হাতে গোণা। ... ...
আমার বাবাকে শেরপুরের মানুষ ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে মনে করতেন। সাধারণ মানুষ আব্বাকে চিনত এমন না, কিন্তু যারা এই ধারায় আছে তারা সবাই এক নামেই চিনত। শহরের বড় বড় মসজিদের ইমাম, ইসলাম বুঝে জানে এমন লোকজন আব্বাকে মান্য করত। আব্বার কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছি অনেকেই। কোন মসজিদ বা মাদ্রাসায় আব্বার নাম বললে উনার নাম শুনা মাত্র নড়েচড়ে বসত সকলেই। আব্বা আমাদের এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তেন না, কারণ এখানে যে নামাজ পড়ায় তিনি অল্প বয়সই, আব্বা তৃপ্তি পেতেন না তার পিছনে নামাজ পড়ে। হেঁটে দূরের এক মসজিদে যেতেন শুধু মাত্র সেই ইমাম সাহেবকে আব্বার মনে হত উনার মাপের, যার সাথে কথা বলা যায়, আলাপ করা যায়। সেই ইমাম সাহেব আমাকে অনেকবার আমার কাছে আব্বার প্রাণ খোলা প্রশংসা করেছেন। এক বাক্যে স্বীকৃতি দিছেন যে আব্বার মত ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানী মানুষ তিনি খুব কমই দেখেছেন। তিনি পরে শেরপুরের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা ও মসজিদের ইমাম হয়ে ছিলেন, এবং তখনও উনার আব্বার প্রতি মুগ্ধতা কাটেনি। আব্বা যখন অসুস্থ, বিছানায় পড়ে গেছেন। তখনও আমি দেখতাম কোথা থেকে কোথা থেকে মানুষ আসত, উদ্দেশ্য আব্বার সাথে দেখা করা আর একটু আলোচনা, ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে গল্প। আমি আব্বার এই দিকের কথা কেন বলছি? কারণ আমি আব্বাকে কোনদিন নববর্ষের বিরোধিতা করতে দেখি নাই। আব্বা নিশ্চয়ই মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ নেয় নাই। কিন্তু মেজোপা যখন নববর্ষ উপলক্ষে একটা পাঞ্জাবি বা ফতুয়া এনে দিত তখন তিনি আগ্রহ নিয়েই পরতেন, খুশিতে চোখ নেচে উঠত উনার। বাব্বাহ! আমার জন্য আনছ, বলে হাতে নিতেন, হাসতেন। আমি যখন ঢাকায় ছিলাম তখন ফোন দিয়ে বলতাম, আব্বা, শুভ নববর্ষ, তিনিও সাথে সাথেই শুভেচ্ছা জানাতেন নববর্ষের। নববর্ষ উপলক্ষে ভাল মন্দ রান্না হয়েছে কি না তার খোঁজ নিতেন, আগ্রহ নিয়ে খেতেনও। আমি আমার সমস্ত জ্ঞান বাজি রেখে আপনাদের বলতে পারি যে কাঠ মোল্লা জাহান্নাম যাওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন গলা ফাটাইয়া, আমার বাবা তার চেয়ে বেশি জানতেন, ধর্ম, ইসলাম, সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র সম্পর্কে। ... ...
যে দেশে কিছু না করেই অল টাইম দৌড়ের উপরে থাকতে হয় হিন্দুদের, যে দেশে তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে পরিকল্পিত ভাবে ম্যাসাকার করা হয় এবং যার কোন বিচার হয় না ,যে দেশে নিয়ম করে প্রতিমা ভাঙা হয়, যে দেশে গুজবের উপরে ভর করে পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কোন বিচার হয় না, সেই দেশে কেউ হিজাব পরার অপরাধে মারছে! কোন মাপের মগজহীন মানুষ হলে এইটা বিশ্বাস করা সম্ভব? ... ...
আমাদের গ্রামে যে সব ইউক্রেনিয়ান পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হবে তাঁদের আজ এক লম্বা প্রশ্নোত্তরের ফর্ম ভর্তি করতে হচ্ছে – এই সব শিশু এবং তাঁদের মাতারা যে সন্ত্রাসবাদী বা অলিগারকের সন্ততি নন সেটি প্রথমে প্রমাণ করতে হবে। এই পদ্ধতির কেতাবি নাম ভেটিং। বিশ বছর আগে চেলসি ক্লাব এবং লন্ডন শহরে একাধিক অট্টালিকা কেনার সময়ে রোমান আব্রামোভিচকে ব্রিটেন কোন প্রশ্ন করে নি। আজ অন্তত মুখরক্ষার্থে ব্রিটিশ সরকার এইসব অপ্রিয় প্রশ্ন করছেন। মিখাইল ফ্রিডমান গত সপ্তাহে লন্ডনে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি নাকি সেই ডাক্তারের ২০০ পাউনডের ফি দিতে পারেন নি – সব টাকা আটকে আছে। ... ...
১৯৪৫ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘ চার্টারের অন্যতম ফাউনডার মেম্বার ইউক্রেন।সমীর সার আরও বলেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দেবার সময়ে ইউক্রেনকে স্বতন্ত্র হয়ে যাবার (রাইট টু সিসিড) অধিকার দেওয়া হয়, সংবিধানের ৬৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী। মহান অক্টোবর বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দেয় নি। দেশের মধ্যে বিবদমান নানা দলের লড়াই চলছে সেই সুযোগে সোভিয়েত ইউনিয়ন বন্ধুর হাত বাড়িয়ে বলল – আহা, আপোষে ঝগড়া ঝাঁটি করো না। এসো আমার ঘরে এসো। আমি তোমার বড়ো ভাই। গলে মিলো। সেটা ১৯২২। সেই আলিঙ্গন থেকে মুক্তি চাইছে ইউক্রেন। ... ...
পাশের গ্রাম বিসলি থেকে সাইমন এলেন কাল সন্ধ্যেয়। মা ইউক্রেনিয়ান, তাঁর বাবা জন্মেছেন মুসুরিতে, ইংরেজ , কলকাতার ডন বসকো স্কুলে পড়েছেন! সাইমনড় স্ত্রী ইরিনা ইউক্রেনিয়ান দিদিমা নাৎসিদের অগ্নি চুল্লী থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে ইংল্যান্ডে আসেন। সাইমন একদা বার্লিনে কাজ করেছেন ভালো জার্মান বলেন। আমাদের সংগ্রহশালা থেকে টিনের খাবার, জামা কাপড় নিয়ে গেলেন। জানা গেলো এতো সামগ্রী জড়ো হচ্ছে যে এবার যাত্রা হবে ট্রাকে। সারি সারি ট্রাক চলেছে পোল্যান্ডের দিকে। ওষুধ পত্র পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে ছোট প্লেনে। বালিগঞ্জের বিভিন্ন ফারমাসি থেকে আমার যোগাড় করা দুশো আমক্সিসিলিন উঠবে সেই প্লেনে। ঘড়ির কাঁটার মতো চলছে কাজ। ... ...
দৈনিক ভাস্কর সংবাদপত্র গোষ্ঠীর একটি সিদ্ধান্ত বর্ণ অর্থাৎ পাত্রীর গায়ের রং উল্লেখ থাকলে পাত্র চাই-পাত্রী চাই কলামে সেই বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে না।এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বহু মানুষ।কারণ আমাদের মতো দেশে ফর্সা পাত্রী খোঁজার প্রথা, অপরাধেরই সমগোত্র।তবে শুধুমাত্র দৈনিক ভাস্কর কেন,একই পদক্ষেপ কেন নেবে না দেশের অন্য সংবাদপত্রও।কেন বন্ধ হবে না এমন বিজ্ঞাপন? ... ...
নিছক আবেগ না। তখন প্রশ্নটা ছিল পেটে লাথি খাওয়ার। জীবন জীবিকার প্রশ্ন। রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হলে কি হবে তা দেশ ভাগের অল্প দিনেই বুঝে গিয়েছিল বাঙালী। তাই আবেগের প্রশ্ন ছিল না, ছিল জীবনের প্রশ্ন। তৎকালীন বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সবাই বুঝে গিয়েছিল উর্দু রাষ্ট্র ভাষা হলে এই জীবনে আর পাকিস্তানের সাথে পেরে উঠা যাবে না। দেশ ভাগের পরেই যখন মানি অর্ডার ফরম, ডাক স্ট্যাম্প, চিঠির খাম সব উর্দু ভাষায় এসে হাজির হল তখনই বুঝা হয়ে গিয়েছিল উর্দু রাষ্ট্র ভাষা হলে আসলে কত বড় সর্বনাশ হবে। তাই ভাষা আন্দোলন ছাত্রদের আন্দোলন ছিল না। ছিল জনগণের আন্দোলন, যার নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্ররা। তাই শহিদের তালিকায় এক বরকত ছাড়া আর কাওকে ছাত্র খুঁজে পাই না, সবাই কর্মজীবী, খেটে খাওয়া মানুষ। ... ...
কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে উপরে যে ভিডিওর কথা বললাম তা। আপনারা বাংলা সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন ইংরেজিতে! বাংলা আসলে কোথায় মারা যাচ্ছে তা বুঝতে রকেট সাইন্স জানতে হবে না, মাথাটা একটু নরম হলেই খুব বুঝতে পারতেন। ওই ভিডিওটা দেখার পরে আমি কল্পনা করার চেষ্টা করলাম যে ঢাকায় একুশে বই মেলা প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা হচ্ছে, বিষয় বাংলা সাহিত্য আর কোন এক বাঙালী বক্তা ইংরেজিতে কুস্তাকুস্তি করছেন! কল্পনা করে আমি শিউরে উঠেছি, বেশিদূর যেতে পারি নাই কল্পনাকে টেনে নিয়ে। ... ...
কন্যা দিবস ... ...