এই কন্যাটি অনর্গল ইংরাজী আর ফ্রেঞ্চ বলতে পারে , আর ফ্রেঞ্চ নিয়ে পড়ে সে পেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের সর্বোচ্চ নম্বর । নিয়মগত কারণে প্রেস্টিজিয়াস ঈশান স্কলারশিপ পেল না বটে, কিন্তু তাতে তো তার কৃতিত্ব খাটো হয় না। কন্যাটির নাম লিলিয়ান পালিত, বন্ধুরা ডাকে লিল বলে। ... ...
দুটো ঘটনাকে পাশাপাশি রাখব আমরা। গত বছরের কথা। সুশান্ত সিংহ রাজপুত ‘আত্মঘাতী’ হলেন। আমরা যারা সুশান্তের নামটুকুই জানতাম কেবল, এ বার বিস্ময়াবনত হয়ে চেয়ে দেখলাম, পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে গেল সুশান্ত ন্যায়মঞ্চ, সুশান্ত স্মৃতিসংঘ। ‘খুনে'র বিচার চেয়ে পদযাত্রা হল, এমন কী কলকাতারও বেশ কিছু মহল্লায়, পল্লিতে। কালীঘাট মন্দিরে চড়ল পুজো। প্রতি রাতে অর্ণব গোস্বামী তারসপ্তকে চ্যাঁচামেচি করতে থাকলেন, গোটা একটা জাতি দু’-তিন মাস ধরে তারিয়ে তারিয়ে খেল সে সব। খুব কম শব্দ খরচ করলে, স্রেফ অপ্রমাণিত সন্দেহের ভিত্তিতে সুশান্তকে নিয়ে যে অদৃষ্টপূর্ব তোলপাড় উঠেছিল ভারতীয় জনসমাজে, তা যে কোনও মহাতারকার কাছেই ঈর্ষণীয় বেঞ্চমার্ক। ... ...
যখন সততা দেখানোর সময় আসে, যখন আপনার নৈতিকতার পরীক্ষার সময় আসে তখন আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি দ্বিধায় ফেলে 'সুযোগ' নামের শব্দটা। আমরা ওই মুহূর্তে বেশির ভাগ সময়ে ডাহা ফেইল মারি। আমরা এইটাই তো সুযোগ বলে ঝাঁপিয়ে পড়ি। সততা, নৈতিকতা সব একদিকে ঠেলে ফেলে দিয়ে সুযোগটাকে কাজে লাগাই। এই পরিস্থিতি দেশের বেশির ভাগ মানুষের। যতক্ষণ পর্যন্ত সততার পরীক্ষা না দিতে হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সৎ, অসৎ হওয়ার জন্য শুধু সুযোগের অপেক্ষা। ... ...
আত্মহত্যার ঠেকাতে গেলে সামগ্রিক সহমর্মিতা দরকার। ... ...
আমি আগ্রহ আরও হারিয়ে ফেললাম কারণ তিনি তখন মরিয়া হয়ে প্রথা ভাঙতে চাচ্ছেন। মৌলবাদের প্রতি প্রচণ্ড আক্রোশ তৈরি হয়েছে, ফলে ধর্মকে নানান ভাবে আঘাত করছেন, আঘাতের অস্ত্র সব সময় সুবিধার না। গাছে মাছে আক্রমণ চলছে তখন। এবং তখনই সম্ভবত দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। ধর্মকে আক্রমণ করে এর আগেও অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। তাদের প্রতি মানুষ এই রকম বিরক্ত হয়নি। তাদের কথা পছন্দ হয়নি, হয়নি, চুপ করে থেকেছে। কারণ তাদের বলার ধরন অন্য রকম ছিল, তাতে সম্ভবত সাহিত্যের গুণাগুণ বেশি ছিল। তসলিমা নাসরিন কোনমতেই আহমেদ শরীফের চেয়ে বড় নাস্তিক ছিলেন না, হুমায়ুন আজাদের চেয়ে কঠোর কথা তিনি বলেন নাই তাও হয়ত বলা চলে। এরপরেও তাঁকে এঁদের চেয়ে বেশি গালাগালি শুনতে হয়েছে। এর কারণ এক যা বললাম, বলার ধরন অনেকের পছন্দ হয়নি আর দ্বিতীয়ত তিনি নারী! নারীর মুখে এই সব শুনতে আমরা রাজি না। ... ...
নায়িকা দুধে ধোয়া তুলশী পাতা? না, তা নাই হতে পারে। সমস্যা হচ্ছে কেউই দুধে ধোয়া তুলশী পাতা না। রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিষ, শিরায় শিরায় দুর্নীতি। আপনে সব কিছু ফেলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন নায়িকার উপরে। সমাজ নষ্ট করে দিচ্ছে, ছেলেপেলে উচ্ছন্নে যাচ্ছে সব। তরুণ সমাজকে উদ্ধার করতে নায়িকাকে বন্দী কর। নায়িকা বন্দী, এখন আর চিন্তা নাই, সমাজ রক্ষা পেল, দেশ উদ্ধার হয়ে গেল। দেশের আর কোন সমস্যা থাকল না, দুই তিনশ করে মানুষ এখন আর করোনায় মারা যাবে না, কালকে থেকে গণহারে সবাই টিকা পেয়ে যাবে, প্রতিটা হাসপাতালে আইসিউ বসে যাবে, অক্সিজেনের নহর বয়ে যাবে এখন থেকে। আমরা মূর্খ সুর্খ মানুষ, আমরা ভেদের খবর কি অত জানি? সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গেছে বাংলাদেশে, প্রতিটা নিউজ পোর্টাল ব্যস্ত নায়িকার বাসার ভিতরের ভিডিও নিয়ে, শোয়ার আর হাগার ঘরের ভিডিও নিয়ে! এমন সুযোগ বারেবারে আসে? এখন এইটাই খবর, বাকি সব ভুলে যাও। এক জিনিস বেশিদিন মনে রাখতে পারবেন না, তাই সামনে আরও নায়িকা, মডেল ধরা হবে। লকডাউন উপভোগ করতে থাকুন, আপনার বিনোদনের দায়িত্ব নিয়ে নেওয়া হয়েছে। ... ...
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে বাংলা হারাল প্রমিথিউসের মশালধারী দুই আলোকযাত্রীকে। একজন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চিকিৎসক স্মরজিৎ জানা ও অন্যজন মরণোত্তর দেহ ও অঙ্গদান আন্দোলনের পথিকৃৎ ব্রজ রায়। ... ...
"উঠোন পেরিয়ে বিষন্ন বদন যে ভবনটির সামনে এসে সাধনার আপিস বাড়ি। ভয়ে ভয়ে দরজা পেরিয়ে ঘরে ঢুকলাম। চোখে সবকিছু ধাঁধা ঠেকল। অন্ধকার যেন ঝাঁপিয়ে পড়ল। আর সেই আধার সাঁতরে যখন চোখটা একটু সয়ে আসল, দেখি, চৌকোনো এক মস্ত ঘর, চারধারে টেবিলের সারি। তাতে কর্মচারীরা নিবিষ্ট মনে কাজ করছেন। ওই মস্ত ঘরে সাকুল্যে দুটি ৪০ পাওয়ারের বাতি। বাইরের আলো থেকে ঘরে ঢুকলে হঠাৎ কিছু চোখে পড়বে না। তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। নিমে তথা ফতুয়াধারী লোকগুলোকে কেন যেন জ্যান্ত লাশ মনে হচ্ছিল - নড়াচড়া নেই, কথা নেই, ঘাড় খুঁজে কী সব আঁকিবুকি কষছে! আর একেবারে সামনে নড়বড়ে টেবিলে নিমে গায়ে যিনি বসে, বিজ্ঞাপনে তার চেহারা এত সহস্র বার দেখেছি যে তাকে চিনতে কষ্ট হলো না মোটে।" ... ...
বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গভীর মননশীল ও সমাজতাত্বিক বিশ্লেষণ। পুরো EPW লেভেল। ... ...
যে তুমি ফোটাও ও ফুল ঘ্রাণে ভরো ব্যাপক সবুজ জমিতে বিছিয়ে দাও ধান শিম খিরোই তরমুজ কুমড়োর সুস্বাদ, যে তুমি ফলাও শাখে ফজলি আম কামরাঙা পেয়ারা, বাতাসে দোলায় গুচ্ছগুচ্ছ জাম, যে তুমি বহাও নদী, পাললিক নদীর ভেতরে লালনপালন করো ইলিশ বোয়াল স্তরেস্তরে, যে তুমি উঠাও চাঁদ মেঘ ছিঁড়ে নীলাকাশ জুড়ে বাজাও শ্রাবণ রাত্রি নর্তকীর অজস্র নূপুরে , যে তুমি পাখির ডাকে জেগে ওঠো, এবং নিশ্চুপে বলিকার সারা দেহ ভরে দাও তিলেতিলে রূপে আর কণকচাঁপার গন্ধে আর ভাটিয়ালি গানে, যে তুমি বইয়ে দাও মধুদুগ্ধ গাভির ওলানে খড় আর ঘাস থেকে, যে তুমি ফোটাও মাধবী আর অজস্র পুত্রকে দাও ছন্দ- করে তোলো কবি, যে তুমি ফোটাও ফুল বনে বনে গন্ধভরপুর- সে তুমি কেমন করে, বাঙলা, সে তুমি কেমন করে দিকে দিকে জন্ম দিচ্ছ পালেপালে শুয়োর কুকুর? ... ...
এ বছরের ইকোনমিক সার্ভে-তে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে মহিলাদের জন্য কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা, বেতন ও উন্নতির রাস্তা সুষম করা, কাজে যোগদানে উৎসাহ দেওয়া এবং সর্বোপরি সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। সরকারের উদ্দেশ্য মহিলাদের পরিষেবামূলক কাজে আরো এগিয়ে নিয়ে আসা, শিশু প্রতিপালনের সুযোগসুবিধা বাড়ানো, পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের দেখাশোনার উপযুক্ত কাঠামো কাজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া, বেতন-সহ পিতৃত্ব-ছুটি দেওয়া ইত্যাদি। এক কথায়, মহিলাদের কাজের ক্ষেত্রে একটি পরিবার-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করার দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে। দেখা যাক, সরকার এই সোনার পাথরবাটিটি কী ভাবে গড়তে চাইছে। ... ...
মৃত্যুর তিন দিন আগে, কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে এক রচনা, যাঁকে তাঁর শেষ উইল বলা হয়, যেখানে তিনি কংগ্রেসের বিলুপ্তি এবং পঞ্চায়েত ভিত্তিক শাসনকাঠামোর পক্ষে সওয়াল করেন, সেখানে তিনি দেশের সাত লক্ষ গ্রামের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বরাট আর্থিক বিকাশের কথা বলছেন। নির্মল বসু এই রচনার ফুটনোটে লেখেন- সাত লক্ষ গ্রাম ভারতে নেই, আছে ভারত পাকিস্তান মিলিয়ে। অর্থাৎ, গান্ধিজি দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় পাকিস্তানকেও বাদ দিচ্ছেন না। ... ...
দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার কাজী পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আয়শা সিদ্দিকা নামের এক নারী কাজী পদের জন্য আবেদন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও শুধু মাত্র পুরুষের জন্য এই পদ এমন কিছু লেখা ছিল না। আর যেহেতু তিনি আর বাকি সব দিক দিয়ে যোগ্য ছিলেন তাই তিনি আবেদন করে দেন। যথা সময়ে পরীক্ষা হয়, তিনি প্রথম হন। তার সাথে আরও দুইজন নারী আবেদন করেন। এবং পরবর্তীতে পুরো প্যানেলকেই বাদ দেওয়া হয় শুধু মাত্র নারী এই যুক্তিতে। শারীরিক সীমাবদ্ধতা, রাত বিরাতে বিয়ের জন্য যেতে হবে ইত্যাদি নানান কারণ দেখিয়ে তাদের না করে দেওয়া হয়। এবার শুরু হয় আয়শার লড়াই। ২০১৪ সালে তিনি আদালতে যান। আইনের কোথাও নারী হিসেবে নিকাহ রেজিস্টার হতে পারবে না এমন কথা না থাকার পরেও এতদিন পরে আদালত এই রায় দেয় যে নারী বিবাহ পড়াতে পারবে না। আয়শা সিদ্দিকা আবার আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। কি হতে পারে এখনই অনুমান করা যাচ্ছে। বিশেষ করে মানুষের যে পরিমাণ সমর্থন এই কয়দিনে আদালত পেয়ে গেছে তাতে আরও সহজ হয়ে গেছে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। আমার দুইটা কথা না বললে ভাল লাগছে না তাই লিখতে বসছি। ... ...
রাজধানীতে প্রতিবাদী কৃষক ও সরকারের মধ্যে অষ্টম দফার বৈঠকও ( শুক্রবার ৮,জানুরারি,২০২১) ব্যর্থ। এই আইন নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করে সরব হয়েছে নেটিজেনদের একাংশ। চলছে তর্ক-বিতর্ক। এসবের মধ্যেই কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এবার পথে নামছে শ্রীরামপুরের নাগরিক সমাজ। আগামী ১৩ জানুয়ারি শ্রীরামপুর শহরে বিভিন্ন বাজারে প্রচারপত্র বিলি করা হবে। ২০ জানুয়ারি পথে নামবে সাধারণ মানুষ। ... ...
ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি আমাদের দেশ নাকি স্বাধীন,গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র । তা বড় হবার সময়ে এই সব শব্দ গুলির অর্থ ই কেমন যেন গুলিয়ে যেতে লাগল। কেউ শেখালেন ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়, তো অন্য কেউ বোঝালেন,এর চেয়ে ইংরেজরা নাকি ঢের ভালো ছিল! স্বাধীনতা ধুয়ে কি জল খাব, ইত্যাদি। ... ...