আমেরিকায় ভোরবেলায় শাঁখ বাজেনা। কখনোই বাজেনা। আমার পুরোনো শহর কলকাতায় বাজে। এখানেই আমি থাকি। এসেছি আবার। ... ...
প্রথমে কিছু গগনবিদারি শ্লোগানে গা গরম করে নিয়ে মাইকটা এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ল জনপ্রিয় সুরে দল ও নেতার বন্দনাগীতিতে। ইতিমধ্যেই নেতাকর্মীদের ভীড়ে জায়গাটা ভরে গেছে। ওদিকে আরো কিছু মানুষ তাদের জন্য বরাদ্দ কোণাটিতে দাঁড়িয়ে গেছে; অবশ্য নিরাপত্তারক্ষীদের হুংকারে তাদের মাঝেমধ্যে কষ্টকর দিকবদল করতে হচ্ছে! সভার প্রবেশদ্বারটা প্রশস্ত হওয়ায় কোণাগুলি একটু বেশিই বেঁকে গেছে, না হলে সামান্য লম্ফ-ঝম্ফ - এ আর কী এমন কঠিন কাজ! ... ...
মানুষ কিন্তু নির্বাচন পছন্দ করে। কেন জানি মানুষের ধারণা যে ভোট দিতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই যে একদলের নির্বাচন হচ্ছে, মানুষের এইটা নিয়ে কোন আগ্রহই থাকবে না, এমন হওয়ার কথা না? কিন্তু তা হচ্ছে না! আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রজ্ঞাই বলেন আর যাই বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে এই নির্বাচন জমিয়ে দিয়েছে। শহরের মানুষ কিছু নাক উঁচু ভাব দেখাচ্ছে, ম্যালা তত্ত্ব কপাচাচ্ছে ( যেমন আমি নিজেই!) কিন্তু গ্রামের মানুষ, যেখানে সবচেয়ে বেশি ভোটার, তারা সবাই ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে। যারা ভাবছেন যে ভোটার শূন্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে তারা সম্ভবত ধোঁকা খেতে যাচ্ছেন। কালকে বিপুল পরিমাণ মানুষ ভোট দিবে এইটা আমি এখনই বলে দিতে পারছি। কারণ আমি সাধারণ মানুষের এই নির্বাচন নিয়ে যে উচ্ছ্বাস তা দেখেছি। মিথ্যা বলব না, এইটা আমাকে বিরক্ত করেছে। সব ফেলে এই নির্বাচনের জন্য এত আগ্রহ? ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৭ …তৃতীয় শতাব্দীতে গুপ্ত রাজবংশ থেকে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সময় ব্রিটিশ গ্যারিসন হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ইস্তক - সুদীর্ঘ ১৫০০ বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে নানা শাসনের দখলে থেকেছে কালিঞ্জর কেল্লা। দুর্গটি কবে নির্মিত হয়েছিল সঠিক জানা যায় না। তবে আগ্রা এবং অউধের ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ারে উল্লেখ আছে গুপ্ত রাজবংশের সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে কালিঞ্জার দুর্গ জয় করেছিলেন। ASIএর প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম কালিঞ্জর কেল্লার প্রাচীনত্ব ও গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন। তাঁর মতে এই কেল্লার নির্মাণ হয় ২৪৯ খ্রিস্টাব্দে। শিবের আর এক নাম কালিঞ্জর (কাল = সময়, জর = ক্ষয়) অর্থাৎ 'সময় ক্ষয়কারী' বা কালজয়ী। কথিত আছে সমূদ্রমন্থনে ওঠা হলাহল পান করে কন্ঠ নীল হয়ে যেতে শিব এখানে এসে সময়কে পরাস্ত করে মৃত্যুকে জয় করেছিলেন। তাই কালিঞ্জর কেল্লা বলতে কালজয়ী কেল্লাও বোঝায়। ... ...
উত্তরাখন্ড বেড়াতে গিয়েছিলাম ডিসেম্বরের ছুটিতে, তারই টুকিটাকি ঘটনা ... ...
‘তুমি বাজেয়াপ্ত শব্দের মানে জান?’ প্রশ্নটা করে লোকটা সোজা তাকিয়ে আছে তার দিকে, চোখ নামাতে পারল না সিংরাই। আশপাশে বসে থাকা সাত-আটজন পুরো চুপ, কারও মুখে কোনও কথা নেই। কিন্তু সিংরাই কী জবাব দেবে এই প্রশ্নের, শব্দটাই শোনেনি সে কোনও দিন। ... ...
পূর্বপুরুষের কৃত অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি এভাবে করা যায়? নাকি সবটাই স্বপ্ন? ... ...
বিনামূল্যে প্রাপ্ত বলেই সবকিছু মূল্যহীন হয় না। আপাতদৃষ্টিতে শ্রীহীন লাগলেও কোনো কিছুর সত্তায় থাকতে পারে মমতা - তবে তা মনে মাখতে জানতে হয়। ... ...
বীরেন শা'য়ের বাড়ীর দুইঘর ভাড়াটে নাকি গিয়ে সাতুদের দোতলায় উঠেছে। এদিকে দাদুদের গোয়ালঘরেও ভালই জল উঠেছে, প্রথমদিন তো লালি আর আকাইম্যা সারাদিনরাত দাঁড়িয়ে রইল। পরেরদিন ভোররাতে লালি কেমন অদ্ভুত আওয়াজ করে ডাকতে লাগল। তখন দাদু গিয়ে ওদের দড়ি ধরে এনে দাদুদের দিকের ভেতরের বারান্দায় তুলল। সে বেচারাদের কি ভয় সিঁড়ি দিয়ে উঠতে, অর্ধেক সিঁড়ি তো জলে ডোবা, তড়বড় করে আসতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে আকাইম্যা একেবারে দাঁড়িয়ে গেল শক্ত হয়ে, কিছুতেই নড়েচড়ে না। দাদু শেষে ওকে পাঁজাকোলা করে বারান্দায় তুলে দিল। লালি বেচারীর শিগগিরই বাছুর হবে, পেটটা ফুলে একেবারে ঝুলে গেছে, প্রায় মাটি ছুঁইছুঁই। খুব কষ্ট করে বারান্দায় উঠল। বারান্দার কোণায় ছোট গামলা করে ওদের জাবনা দেবার ব্যবস্থা হল। লালি উঠেই সেই যে বসে পড়ল, সারাদিনে আর উঠে দাঁড়াল না। শেষে দাদু আর দিদা সন্ধ্যের আগে অনেকক্ষণ ধরে ছোবড়ার আগুন জ্বালিয়ে লালিকে সেঁক দেওয়ার পরে বেচারী একটু ধাতস্থ হয়ে জাবনায় মুখ দেয়। পরেরদিনটাও লালিরা বারান্দায়ই রইল, তার পরের দিন জল অনেক নেমে গেল; উঠোনে আধহাঁটু, গোয়ালে গোড়ালি ভেজে কি ভেজে না। লালি আর আকাইম্যা আবার গোয়ালে ফেরত গেল। বারান্দায় দুই বোতল ফিনাইল ঢেলে ধোয়া শুরু করল বড়মামীমা। লালির জন্য গোয়ালে একটা ভাঙা দরজা পেতে দেওয়া হল, যাতে শুকনো জায়গায় বসতে পারে। পাড়া থেকে কারা যেন জিটিরোডে গিয়ে ইলেকট্রিক অফিসে খবর দিয়ে এল। এই সময় শুরু হল উঠোনে মাছের আনাগোণা। এদিকে শ্রীপল্লীর মাঠের পেছনের অংশের পুকুরটা ভেসেছে, ওদিকে শ্রীদুর্গা মিলের পুকুর। এই শিউলি গাছের গোড়া বাটামাছের ঝাঁক তো নারকেল গাছের গোড়ায় কইমাছ কানে হাঁটছে। বাবু, সুবীর, রতন, বুম্বারা ছেঁড়া মশারি, গামছা আর মাটির হাঁড়ি নিয়ে হইহই করে সারাপাড়া জুড়ে মাছ ধরে বেড়াচ্ছে। বুড়ীর মা মাসি আজ কাজে এসেছে, পেয়ারাগাছের সামনে থেকে খপ করে একটা মাঝারি সাইজের শোলমাছ ধরে ফেলল। বড়মামীমা মাছ কাটতে কাটতে মা'কে বলে 'কালিয়া করব, ওদের জন্য দেব, আগেভাগেই ওদের ভাত খাইয়ে দিস না দিদি।' ভাই শুনতে পেয়ে মুখ বেজার করে, ও মাছ খেতে একদম ভালবাসে না। ছবিমাসি দিদাকে বলে ‘মাসিমা আফনে রান্ধেন, আফনের রান্ধা কালিয়ার সোয়াদ মুহঅ লাইগ্যা থাহে।' দিদা হাসিহাসিমুখে বলে ‘হ বৌমা তুমি অন্যটি দ্যাহ, মাছটা আমি দেখ্তাসি।' ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৬ … বিলুর সাথে ঘুরতে ঘুরতে যা দেখেছিলাম চিটপ্যাডে শর্টে রানিং নোট নিয়েছিলাম। অনেক জায়গাতেই কিছু লেখা নেই, দিক নির্দেশও নেই। ও না থাকলে বাঁশবনে ডোম কানা হয়ে ঘুরে মরতাম। সন্ধ্যায় লজে এসে শর্টহ্যান্ড নোট থেকে একটু গুছিয়ে লিখে বুঝলাম ও আমায় গোটা তিরিশেক দ্রষ্টব্যস্থানে নিয়ে গেছিল। বিলু না থাকলে বেশ চকমা খেতাম। বিরাট এলাকা, কত কী রয়েছে, ভুলভুলাইয়া টাইপের ব্যাপার। ওর বদান্যতায় মোটামুটি দেখা হোলো। শেষ দ্রষ্টব্য ছিপ মহলে এসে ওকে বলেছিলাম, এবার তুমি গেটে গিয়ে বসতে পারো, এখান থেকে আমি ঠিক চলে যাবো। ওকে কিছু বখশিশ দিই। ও নমস্কার করে চলে যায়। কিছুক্ষণ বসে থাকি বৃষ্টিভেজা নির্জন কেল্লায়। পাঁচটা নাগাদ নামতে শুরু করি নীচে। ... ...
জোলো বাতাসে কুয়াশার ঘেরাটোপকে আমার বাপের বাড়ির মশারির মতো লাগছিল, এই পথঘাট ফলত স্বপ্নের এবং অবাস্তব - মানুষজন যেন জোব্বা পরা মরুবাসী অথবা মেরুপ্রদেশের; কুয়াশার সর ক্রমশ এমন ঘন আর রহস্যময় হয়ে উঠছিল যে চেনা পাড়াকে অজানা দ্বীপ বোধ হচ্ছিল - কুয়াশা ফুঁড়ে যে কোনো মুহূর্তেই বেরিয়ে আসতে পারে প্রকাণ্ড কাছিম অথবা ক্ষুদে পেঙ্গুইনের দল, অ্যালবাট্রসের পাখার ঝাপট লাগতে পারে গায়ে। ... ...
নতুন বছরের শুরুতে মানুষের শুভচেতনার প্রতি উৎসর্গিত ... ...
বর্ষশেষে গুরুর সবাইকে নতুন বছরের অগ্ৰিম শুভেচ্ছার সাথে রইলো ৩৮ বছর আগের কিছু স্মৃতিকণা ... ...
এই লেখাটি অধমের নয়। স্বর্গত চিত্রপরিচালক শ্রী মৃণাল সেনের স্মৃতিচারণের অংশ - অধম কর্তৃক একটু সংক্ষেপিত ও সামান্য সম্পাদিত। শিরোনামটিও অধম প্রদত্ত। ... ...
সওয়ারী সাইকিল কি ... ...
গণিতের সঙ্গে লেখকের প্রেম ও অপ্রেমের এক বর্ণময় ব্যক্তিগত আখ্যান — যার পর্বে পর্বে উন্মোচিত হবে হাজারো জিজ্ঞাসা, ফিরে ফিরে আসবে নানান স্মৃতিভার। সুপাঠ্য ঝরঝরে ভাষায় গণিতের আলো-আঁধারি পথে এ এক নতুন পদচারণার অভিজ্ঞতা। ... ...