হঠাৎ একদিন সেই আলেয়া বু’কে লইয়া বাড়ির বড়রা রূদ্ধদ্বার বৈঠকে বসিলেন। হাত পাখার ডাঁটি দিয়া সে বেচারাকে খানিক মারধোর করা হইল। ভাতের সন্ধানে পাষানপুরিতে আসা ফর্সাপানা গাঁয়ের মেয়ে, আমাদের আলেয়া বু’ ফোঁপাইয়া কাঁদিয়াছিল মাত্র। প্রতিবাদ করে নাই। তাহাকে আমার বাবা ডাক্তার-চিকিৎসা করাইয়াছিলেন। তবে শিগগিরই তাহাকে ছাড়াইয়া দেওয়া হইয়াছিল। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৮. এ লেখাটি “ভ্রমণ আড্ডা” বার্ষিক সংখ্যা ২০২০ তে প্রকাশিত হয়েছিল। ওটা এক অন্য গোত্রের পত্রিকা। বিগত ২৫ বছর ধরে ভদ্রেশ্বর থেকে বছরে একবার বেরোয়। বইয়ের মতো আকার। ১৭০-৮০ পাতার পরিসর। ছবিছবা থাকে না। তবে এখানে ছবি রাখায় বাধা নেই - তাই কয়েকটি ছবি রইলো পুনশ্চের পরে ... ...
সপ্তম পর্ব : বুডাপেস্টের পথে ... ...
ছেলেটার নাম অ্যারন বুশনেল। বয়স ২৫। খবরটা পড়ে, দেখে, এবং শুনে, প্রথমেই মনে হল, তা বলে এইভাবে? অন্য কিছু কি করা যেতনা? তারপর মনে হল, ধাক্কা কত বেশি হলে, তবেই এ জিনিস করা যায়। এ ছেলে ছিল সামরিকবাহিনীতে সাইবারডিফেন্স অপারেশন স্পেশালিস্ট। যেটা ঝপ করে মনে করিয়ে দেবে এডওয়ার্ড স্নোডেনের কথা। তিনিও ছিলেন, যদ্দূর জানা যায়, সাইবার নজরদারির কাজে।ওইসব গোপন কাজে, এমন কিছু থাকে, যা, মানুষের মাথাই ওলটপালট করে দেয়। বুশনেল বলেছে প্যালেস্তাইনে গণহত্যা। স্নোডেনের সময় ছিল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের উপর একটা সিনেমা দেখছিলাম, তাতে গ্রামকে গ্রাম লোক, ড্রোনহানায় হয় নেই, নয়তো পঙ্গু। একটা গ্রামে ড্রোন হত্যা করেছিল এক মুরুব্বিকে। তারপর তাঁর সমাধির অনুষ্ঠানে আবার ড্রোনহানা। মরে আরও কিছু লোক। ... ...
সত্যেন্দ্রনাথ বসু মশাইকে দিয়েও এই গল্পটা শুরু করলে খারাপ হয় না। দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি এমন এক দেশে জন্মেছিলেন, যে, সেখানকার লোকে তাঁর কাজ সম্পর্কে এক বিন্দু না জেনেও তাঁকে আইকন বানিয়ে দেবার আগে দু-বার ভাবে না। ইউরোপে জন্মালে বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি আরো বেশি স্বীকৃতি পেতেন, হয়তো নোবেল পুরস্কারও পেতেন, কিন্তু হিরো-বুভুক্ষুর দল তাঁকে নিয়ে এমন উৎকট মাতামাতি করত না (কতটা উৎকট তার পরিচয় পরে দেব)। সত্যেন্দ্রনাথ ঠিক কী করেছিলেন? ... ...
তার এককোণে একটা টলটলে চৌবাচ্চা, আর কলাফুলের গাছ। উঠোনের তিনদিকে টুকটুকে লাল পথ ছিল, সেই পথ গিয়ে মিশত একটা সবুজ বাগানে। বাগানে না আসলে দালানে - ঘন সবুজ ঘাসের মত মখমলি, মাটির দাওয়ার মত শীতল এক দালান। সে দালান যেমন বড়, না ঠিক বড় নয়, মানে যেন অতল গভীর, মানে ঠিক গভীর নয়, ঠিক কেমন বলতে ঠাহর পাইনা। তবে যেমনই হোক, খুব আপন আপন। আমি যেদিন প্রথম সেখানে গিয়েছিলাম, তখন সবে কুঁড়ি ফুটেছি, অমন কুঁড়ি পাঠশালে কেউ নেয়না। সেদিন সেই দালানে গিয়ে শুয়ে পড়লাম, ঘুম এসে গেল। চোখ খুলে দেখি দালানে একজন মা রয়েছেন। তিনি কে তো জানিনা, মনে হল মায়ের মতো। মা বলল, উনি সবার মা, মায়েরও মা, আমারও মা। ... ...
আলেকজান্দ্রিয়া – ৩৩২ খ্রীষ্টপূর্ব – ম্যাসিডোনিয়ার সম্রাট তৃতীয় আলেকজান্ডার (ওরফে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট) পারস্য জয় করে আজকের গাজা পার হয়ে এসে ঢুকে পড়লেন মিশরে। পারস্যের অত্যাচার আর লুন্ঠন থেকে বাঁচতে মিশর-ও বাধ্য হয়ে বেছে নিল ‘লেসার ইভিল’ আলেকজান্ডারকে (যদিও তাঁর দিগবিজয়ে যাঁরা বাধা দিয়েছেন তাঁদের উপর অত্যাচারের কোনো মাত্রা রাখেননি , পুরু বা পোরাসের গল্প সত্যি ইতিহাস কিনা তা নিয়ে আজকের দিনে ধন্দ আছে) , তায় আবার যুদ্ধবিগ্রহে তিনি মিশরের প্রাচীন ফারাওদের মতো-ই পারদর্শী! তার উপর প্রথমেই মিশরে এসে তিনি দেখতে চাইলেন ‘এপিস বুল’-কে এবং সম্মান জানালেন! ব্যস, মিশরীয়রা মুগ্ধ, নির্ঘাৎ সেই প্রাচীন যুগের-ই কোনো মহান ফারাও এসে গেছেন তাঁদের রক্ষা করতে। সুতরাং নীলনদের উপত্যকা সহজেই বিনা বাধায় ম্যাসিডোনিয়ান সাম্রাজ্যের আওতায় এসে গেল। কিন্তু আলেকজান্ডার আরও উত্তরে গেলেন হোমারের ওডিসি-তে পড়া ফারোস দ্বীপের সন্ধানে, পেলেন এবং তাঁর নিজের নামে একটি শহর স্থাপন করলেন , ব্যবসা-বাণিজ্য আর ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ আর রাজ্যগুলিতে যাতায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগকারী স্থান হিসেবে। ... ...
একথা অনস্বীকার্য যে আজকের ইসলামি দুনিয়ায় সঠিক বৈজ্ঞানিক মনোভাব এবং যুক্তিবাদের চর্চায় ঘাটতি আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শ্লথতা এবং কূপমণ্ডুকতার পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কায়েমী শক্তির মেলবন্ধন । অথচ অতীতে সমস্ত ধর্ম,সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞান থেকে শেখার মনোভাব দেখিয়েছেন ইসলামি পণ্ডিতরা।সবাই পাশ্চাত্যের সংজ্ঞা অনুযায়ী সেকুলার হবেন না, সাংস্কৃতিক কারণেই তা সম্ভব নয় এটা আমাদের বুঝতে হবে। বিজ্ঞান এবং ধর্মের মধ্যে, যুক্তিবাদ এবং আবেগের মধ্যে কিছুটা সমন্বয় এবং যেখানে সেই সমন্বয় সম্ভব নয় সেখানে তাদের নিজস্ব স্বাধীন ক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। ... ...
এগুলা সবই ছিল, অতীত কালে বলছি। কারণ হুট করেই এগুলা সব বেদাত, হারাম হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে! কবে কীভাবে যে হয়ে গেল বুঝতেই পারি নাই। অনেক আগে এক শবে বরাতে আমাদের মসজিদে একজন নিউজপ্রিন্ট কাগজে দুই পাশে ছাপা একটা লিফটলেটের মত বস্তু নিয়ে আসছিল। তাতে লেখা ছিল শবে বরাত পালন করা যাবে না, এগুলা বেদাত, হারাম! সেদিন ওই লোক কোনমতে লম্বা পায়ে এলাকা ছেড়ে নিজের পিঠ বাঁচিয়ে ছিল। কেউ সেদিন তার কথা শুনতে রাজি ছিল না। অথচ ওয়াহাবি সালাফিদের এখন এত জোর যে শবে বরাতই টিম টিম করে কোনমতে টিকে আছে! শবে বরাত বললে আব্বার কথা মনে পড়বেই। আব্বা আমাদের মত সারা রাত মসজিদে কাটিয়ে দিতেন না, এশার নামাজের পরে কিছুক্ষণ মসজিদে থেকে চলে আসতেন বাসায়। এরপরে বাসায়ই নামাজ পড়তেন। সকালে দুই হাত তুলে দোয়া ধরতেন। ডুকরে কাঁদতেন, গাল বেয়ে পানি পড়ত, সবার জন্য দোয়া করতেন, দাদা দাদীর জন্য দোয়া করতেন, নানা নানীর জন্য, নিজের ভাই বোনের জন্য। আকুল হয়ে কাঁদতেন। হায়! কেউ যদি তখন তাঁকে বুঝাইতে আসত যে শবে বরাত পালন করা যাবে না! আহা! কেউ যদি আমাকে এখন বুঝায় দিতে পারত যে আমার বাপ ধর্ম বুঝত না, সারা জীবন বেদাত হারাম কাজ করে গেছে লোকটা! ... ...
পরপর দুটি স্মৃতিকথা পড়া হয়। প্রথম বাশারাত পীর লিখিত ‘কার্ফ্যিউড নাইট’ এবং সেই সূত্রে রেফারেন্স পেয়েই বিপ্রতীপের আখ্যান রাহুল পন্ডিতা লিখিত ‘আওয়ার মুন হ্যাজ ব্লাড ক্লটস’। পীরের লেখা আমাকে আমূল কাঁপিয়ে দিয়ে যায়। আফস্পা নামক আইনটি এবং সেই রক্ষাকবচের আড়ালে কাশ্মীর বা মণিপুরে ভারতীয় সেনার দানবীয় রূপের কিছু কিছু কথা জানা ছিল, জানা ছিল না এই ভয়াবহ অত্যাচার আর অবিশ্বাসের আবহাওয়ার। জানা ছিল না সরকার তথা সেনাবাহিনী অথবা সন্ত্রাসবাদী তথা স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর এই দুই পক্ষের মধ্যে কোন একটির আওতায় থাকতে বাধ্য প্রতিটি মানুষ। জানা ছিল না এমনকি পক্ষাবলম্বনের পরেও সেই পক্ষের মধ্যে থাকতে পারে অজস্র ছোট পক্ষ যাদের মধ্যের বাদানুবাদে যেকোন মুহূর্তে বিপন্ন হতে পারে মানুষের সর্বস্ব। প্রায় নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে পীর লিখে গেছেন কাশ্মীরের অসহায় বিপন্ন দিনরাতের জ্বলেপুড়ে যাওয়ার কাহিনী। পন্ডিতা নিজে কাশ্মিরী পন্ডিত, লেখা সত্যি বলতে কি বড় বেশী পার্টিজান, খুব যে ভাল লেগেছে পড়তে তা নয়, কিন্তু এ বইও আমার জন্য আই ওপনার। কাশ্মীরি পন্ডিতদের আতঙ্ক ও অসহায় পলায়ন ঠিক এভাবে জানা ছিল না। ... ...
বাইরে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামছে। জীবন্ত সম্প্রচারের সময় হয়ে এল। এই গুহাতে কোনো প্রাকৃতিক আলো , হাওয়া আসে না। গুহার নকল সিলিংকে পেঁচিয়ে শুয়ে আছে গোলাপি এলইডি আলোকলতা। তাদের ফুলের আভায় সারা ঘরে এক অদ্ভুত হালকা আলো আঁধারির খেলা। ... ...
কিন্তু কথা হল, সব চ্যানেল-ট্যানেল কিনে ফেলেও, অপছন্দের সিনেমাকে আটকে, এজেন্সি দিয়ে ভয়-টয় দেখিয়েও গোদীবাবুর ঠিক শান্তি নেই। পিছনে পাপ লেগে থাকলে যা হয়। এখনও দুচাট্টে লোক এদিক সেদিক খুচরো ট্যাঁফোঁ করে চলেছে, কে কখন বলে দেয় 'রাজা তুই ন্যাংটো' তার ঠিক নেই। এই আমার মতো কিছু তেএঁটে আছে, যারা মিডিয়ার শত প্ররোচনাতেও গোদীবিরোধিতা থেকে কিছুতেই নড়বেনা। তাদের থামাতে এবার এসে গেছে ভারতের নতুন সম্প্রচার বিলের খসড়া। পাশ হলে তার আওতায় এসে যাবে প্রায় সবকিছু। টিভি, কেবল তো ছিলই, ওটিটি, ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যম। খুব সম্ভবত এই লেখাটা, নতুন বিল এলে 'সম্প্রচার'এর আওতায় পড়বে। এসব কাপড় খুলে দেওয়া লেখা, তাই বিলে বলা আছে, খবর বা সাম্প্রতিক বিষয়ে সম্প্রচার করতে হলে সব্বাইকে 'নিয়ম' বা কোড মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? না, সেটা বলা নেই। সরকার বা কর্তৃপক্ষ যখন যা ঠিক করে দেবে তাই। নইলে জেল-জরিমানা, সবই আছে। ... ...
ভয়েজার-১ এর কথা ... ...
গণিতের সঙ্গে লেখকের প্রেম ও অপ্রেমের এক বর্ণময় ব্যক্তিগত আখ্যান — যার পর্বে পর্বে উন্মোচিত হবে হাজারো জিজ্ঞাসা, ফিরে ফিরে আসবে নানান স্মৃতিভার। সুপাঠ্য ঝরঝরে ভাষায় গণিতের আলো-আঁধারি পথে এ এক নতুন পদচারণার অভিজ্ঞতা। ... ...
কলকাতার রাস্তায় কান পাতলে আসল কথা শোনা যায়। আমরা কান পাতি না। ... ...
সিংরাই দেখে বাচ্চাটা টানা চিৎকার করছে। চেষ্টা করছে পুলিশের হাত ছাড়ানোর, পারছে না। কান্না পেয়ে যায় তার। চেষ্টা করেও চোখের জল আটকাতে পারে না সিংরাই। বুঝতে পারে না, এই যে এখন চোখে জল এল তার কারণ কী? এমন তো আগে হয়নি কখনও, অন্য কারও কষ্ট দেখে কান্না পায়নি তো কোনওদিন! যেদিন নিজের বাড়ি ভাঙা হচ্ছিল, সেদিন তো চরম আক্রোশ, ঘৃণা নিয়ে সে তাকিয়েছিল পুলিশ, ফরেস্ট ডিপার্টমেণ্টের লোকগুলোর দিকে, আর আজ অন্যের বাড়ি ভাঙা, বাচ্চাটার চিৎকার শুনে চোখে জল এল কেন? উত্তর খুঁজে পায় না সিংরাই, শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অবশ্য তার তো বয়স কম, অনেক বয়স হওয়া সব মানুষও কি আর বোঝে, যে তীব্রভাবে কাউকে ঘৃণা করতে পারে, একমাত্র সেই এমন ভালোবাসতে পারে, যে ভালোবাসা অচেনা কারও কষ্ট দেখলে চোখে জল নিয়ে আসে! কারণ, এও পদার্থ বিদ্যার সেই সূত্রের মতো, তীব্র ঘৃণার উল্টোদিকে আছে তীব্র ভালোবাসা! ... ...
টাইম মেশিনে চড়ে এই পৃথিবীর কোন শহরে ফিরে যেতে পারি, যাবো বার্লিনে । ঝরিয়া, পাইকপাড়ার বাড়িতে বসে বাল্য, যুবা কাল থেকে গত শতাব্দীর ইতিহাসের যে পর্ব এবং স্থানটি আমাকে আকৃষ্ট করে রেখেছে সেটি তিন দশকের বার্লিন। এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে পতন ও অভ্যুদয়ের ঘনঘটা আর কোথাও চোখে পড়ে নি । ওয়ান্স আপন এ টাইম নয়, এই সময়কালকে যেন ধরা ছোঁয়া যায় , এই তো সেদিনকার কথা! নিতান্ত ভাগ্যক্রমে ইতিহাসের এই ঘুরন্ত রঙ্গমঞ্চের সেট, উইংস,তার পিছনের দৃশ্য পট শুধু চোখে দেখি নি , মঞ্চের মাঝখান দিয়ে হেঁটেছি –কথা বলে ইতিহাস , ভিলহেলমস্ত্রাসেতে বিসমার্কের অফিস যেখানে বসে তিনি আফ্রিকা খণ্ড খণ্ড করছেন, হিটলার ওই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে মশাল যাত্রা দেখছেন , তিরিশে জানুয়ারি ১৯৩৩, এক নম্বর ঊনটার ডেন লিনডেনে আডলন হোটেল , পারিসার প্লাতস, গ্রুনেভালডের পথ যেখানে রাথেনাউ প্রাণ হারালেন, ফ্রিডরিখস্ত্রাসে স্টেশন, আপোলো থিয়েটার, আলেক্সান্দার প্লাতস , কুডামে সুবেশ নরনারী : বার্লিন অলিম্পিক স্টেডিয়াম এখনও দাঁড়িয়ে , এই তো আজকের সন্ধ্যায় বিসমার্ক আলেতে জ্বলবে আলবার্ট স্পেয়ারের ডিজাইন করা পথবাতি। ... ...
এই ‘নির্বাচনী বন্ড’ কেবল বিজেপিদলটির দ্বারা নয় বরং গোটা রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সাহায্যেই নির্মিত হয়েছে, যা বিজেপি-মোদি সরকারের ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক দুর্নীতি রূপেই ভবিষ্যতে উল্লেখিত থাকবে। যার ফলে আজ সংসদীয় গণতন্ত্র পুঁজিতান্ত্রিক ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে, জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার এখানে সম্পূর্ন কমেডি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের এমন বিপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে জনগণের বাস্তবিক অবস্থা সব মিলিয়ে মিশিয়ে ট্র্যাজিকমেডি চরিত্রে পরিণতি হয়েছে। যদিও দেশের বিজেপি-বিরোধী দলগুলির দুর্নীতিবাজ নেতাদের দৌলতে, যাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপরে উঠে দাঁড়িয়েই বিজেপি-মোদি সরকার রাষ্ট্রের একেকটি স্তম্ভ কে হাতিয়ার করে, ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটিয়েছে। তবুও এখন বিজেপি-বিরোধীদলগুলির এই একচেটিয়া লগ্নিপুঁজি-তন্ত্রের বিরোধিতা করে, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ধীরে ধীরে দেশের নিপীড়িত-শোষিত কৃষক-শ্রমিক-আদিবাসী-সংখ্যালঘু, ছোট-মাঝারি ব্যবসাদারদের দ্বারস্থ হওয়ার ফলে দেশের জন-গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ইতিবাচক দিক বহন করতে পারে। ... ...
মৃত্যুর পর মৃতদেহের মমি তৈরীর পদ্ধতি ছিল যথেষ্ট সময় আর খরচ-সাপেক্ষ। তাই ফারাও, তার পরিবার বা বিশিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া মমি বানানোর চল কম-ই ছিল। মৃত্যুর পর মমি তৈরীর পারদর্শী পুরোহিতের তত্ত্বাবধানে মামিফিকেশনের জন্য নির্দিষ্ট বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হত মৃতদেহ। সেখানে ‘ইবিউ’ নামক স্থানে দেহ ধুয়ে শুদ্ধ করে নেওয়া হতো। তারপর ‘পার নেফার’ নামক স্থানে শুরু হতো সেই দেহের সৌন্দর্য্যায়ন বা মামিফিকেশন। এর বিশদ বর্ণনা অধিকাংশটাই দিয়ে গেছেন গ্রীক পন্ডিত হেরোডোটাস। প্রথমে সরু আর সামনের দিকে বাঁকানো একটি যন্ত্র নাকের গর্ত দিয়ে ঢুকিয়ে মস্তিষ্ক কুরে কুরে বের করে নেওয়া হতো আর সেই ফাঁকা জায়গায় নল দিয়ে পাঠানো হত ক্ষয়রোধী জৈব রস আর সুগন্ধী। এরপর পেটের বাঁদিক চিরে বের করে নেওয়া হতো ফুসফুস, অন্ত্র, যকৃৎ আর পাকস্থলী, ভালো করে নুন মাখিয়ে সেসব রাখা হতো চারটি আলাদা ঢাকা দেওয়া পাত্রে (ক্যানোপিক জার)। এই চারটি পাত্র আবার চারজন দেবতা রক্ষা করতেন। তাঁরা হলেন দেবতা হোরাসের চার ছেলে – ইমসেতি, হাপি, দুয়ামুতেফ আর কেভসেন্যুফ। ... ...