চার বন্ধু জীবনের সামান্য টুইস্টের লোভে বিপজ্জনক কাজে নিজেরা জড়িয়ে যাচ্ছে।সেটি নিয়েই এই উপন্যাস। ... ...
অতএব দেখা যাচ্ছে, ভগবান যিশুর ভারতবাস যথেষ্ট ঘটনাবহুল। ইজরায়েলের আগেই, তিনি ধর্মপ্রচারের সূচনা করেছিলেন এই ভারতেই, অন্ততঃ বৈশ্য এবং শূদ্র বর্ণের অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষদের মধ্যে। যদিও তার ফল হয়েছিল মারাত্মক। ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়দের বিরুদ্ধে যাওয়াতে তাঁর এদেশেও প্রাণনাশের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁর নিজের দেশেই হোক অথবা ভারতে, সব দেশেই পুরোহিত সম্প্রদায় এবং রাজন্যবর্গদের চরিত্র যে একই, ধার্মিক ভারতে এসে অন্ততঃ এটুকু স্পষ্ট উপলব্ধি তাঁর হয়েছিল। ... ...
সেকাল থেকে আজ পর্যন্ত, তীর্থে-তীর্থে এবং কলকাতা বা যে কোন বড়ো শহরের রত্নব্যবসায়ীদের চেম্বারে প্রায়ই স্বঘোষিত সিদ্ধ সাধকদের দেখা যায়। তাঁদের অনেকে আবার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত – এই পদক কোন প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে জানা যায়না। তবে এঁরা বশীকরণ করতে পারেন, আপনাকে যে কোন কাজে সার্থক করে তুলতে পারেন। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হল বৈদেশিক আক্রমণের সময় এঁদের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যোদ্ধাদেরই সীমান্তে লড়তে হয়ে। তাঁরা বশিত্ব দিয়ে বিপক্ষ সৈন্য বা সেনাপতিদের বশ করে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতেন, কিন্তু কোনদিন করেননি। অথবা সাধারণ আকৃতির সাধক মহিমা সিদ্ধি দিয়ে হঠাৎ বিশাল শরীর বানিয়ে, গরিমা সিদ্ধিতে তাঁদের পায়ের তলায় পিষে একজন শত্রুকেও বিনাশ করতে পেরেছেন - এমন শোনা যায় না। ... ...
দুর্গোপূজো শেষ, বিজয়াদশমীর বিসর্জন সবে শুরু। বিকেল পাঁচটা নাগাদ অন্ধকার ঘনিয়ে আসার সময় দূর থেকে কোথাও অবাঙালী পাড়ায় রাবণ জ্বলছে, বাজি পুড়ছে। তার দূরাগত গুরুগুরু ধ্বনি মিলিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ঘড়ি ধরে দরজায় কড়া নড়ে উঠত। বাচ্চারা টের পেতাম ঢাকুরিয়া থেকে দুই জোড়া পিসিমা-পিসেমশায়রা এসেছেন! যাঁদের পদবি ছিল মজুমদার, বাঙাল উচ্চারণে মন্দার!দরজা খুলতেই ধোপদুরস্ত ধুতিপাঞ্জাবি পরা বিপুলবপু... ... ...
আজ থেকে মাত্র কয়েকশ’ বছর আগে (১৭৫৬-৫৭ সি.ই.), নবাব সিরাজদ্দৌলাকে সরিয়ে ক্লাইভ ও তাঁর অনুগত মিরজাফরকে সিংহাসনে বসাতে বণিক মহতাব চাঁদ ও স্বরূপ চাঁদের (ইতিহাসে যাঁরা “জগৎ শেঠ” (Banker of the World) উপাধিতে বিখ্যাত) ভূমিকা এবং তাঁদের বিপুল অর্থব্যয়ের হিসেব জানলে চমকে উঠতে হয়। অতএব রাজাকে রাজা বানিয়ে তুলতে (king-maker) বণিকসম্প্রদায়ের প্রভাব আজও যেমন আছে, সে সময়েও ছিল – এমন অনুমান করাই যায়। ... ...
প্রায় সকল অনার্য দেবতারাই এখন হিন্দু দেবতা। কিন্তু তাও দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক, দেবতাদের থেকে এখন সাধারণ মানুষের দূরত্ব বেড়ে উঠেছে বহুগুণ। আগে অনার্য মানুষরা দেবতাদের কাছে সরাসরি প্রার্থনা করতে পারতেন। কিন্তু এখন সে প্রার্থনার অনেক রীতি, অনেক পদ্ধতি, অনেক মন্ত্র, সে মন্ত্র আবার কোন আঞ্চলিক ভাষায় নয় – সে ভাষা দেবভাষা সংস্কৃত। আর এই সকল পূজার বিচিত্র বিধি-বিধান, বিভিন্ন দেব-দেবীর বিবিধ মন্ত্র যিনি জানেন, তিনিই পুরোহিত এবং তিনি অবশ্যই ব্রাহ্মণ। ... ...
ইংল্যান্ডের কর্ণওয়েল এর কাছে একটা গ্রাম – সেই ১৭৯০ সালের কথা। উইলিয়াম গ্রেগর অভ্যাসমত ভোরবেলা হাঁটতে বেড়িয়ে সেদিন গ্রামের থেকে একটু দূরেই চলে এসেছেন – আগে এদিকটাই তেমন আসা হয় নি। একটা কর্ণ মিলের পাশে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ এক অদ্ভূত ধরণের কালো রঙের বালি চোখে পড়ল। এমন নয় যে আগে কোনদিন কালো বালি দেখেননি গ্রেগর, কিন্তু সেই সব ক্ষেত্রে কালো বালি মিশে থাকে এমনি বালির সাথে – আর এই বালির টেক্সচারটাও কেমন যে আলাদা মনে হল একটু। বেড়াতে বেরিয়ে এটা ওটা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার অভ্যাস গ্রেগরের অনেক দিনের। তাই সাথে করে একটা ব্যাগ নিয়েই বেরোন। সেদিন কাঁধের ব্যাগে ভরে নিলেন কিছু বালি বাড়িতে ফিরে নিজের গবেষণাগারে আরো ভালো করে পরীক্ষা করবেন। বাড়ির গবেষণাগারে দেখতে পেলেন সেই বালিতে আবার চৌম্বক শক্তি রয়েছে। ইন্টারেষ্ট বেড়ে গেল গ্রেগরের। রোজ বেড়াতে বেরিয়ে সেই কালো বালি নিয়ে এসে আরো ভালো করে বিশ্লেষণ করা শুরু করলেন। এইভাবেই তিনি বের করে ফেললেন যে সেই কালো বালিতে সিলিকা, আয়রন ছাড়াও আদপে মিশে আছে এক অজানা পদার্থ – যার নাম তিনি দিয়েছিলেন ‘মানাকানাইট’। কিন্তু তখনো গ্রেগর জানতেন না তিনি তখন যা আবিষ্কার করছেন ১৫০ বছর পর সেই জিনিস পৃথিবীর ইতিহাস অনেকটা বদলে দেবে! ... ...
এইভাবেই আলাপ হয়ে যায় রোমানিয়ান মেয়ে দুটির সাথে। বন্ধুর অ্যাপার্টমেন্টের একদম লাগোয়া একটা গলি আর সেই গলিতে ছিল দুটি লাল-জানালা। অনেকেই হয়ত এটা জানেন যে আমষ্টারডামে বিশেষ ভাবে চিহ্নত রেড-লাইট ডিষ্ট্রিক্ট ছাড়াও, গোটা শহর জুড়ে বেশ কিছু জায়গায় আরো ছড়িয়ে আছে এমন লাল-জানালা। আসল রেড-লাইট ডিষ্ট্রিক্টের মোট জানালার তুলনায় এরা গুণতিতে তত না হলেও – মাঝে মাঝেই চোখে পড়ে যেত এদের উপস্থিতি। ঠিক তেমন ভাবেই বন্ধুর অ্যাপার্টমেন্টের পাশের গলির সেই লাল-জানালা দুটো চোখ পরে যায় একদিন। ... ...
তাঁরা সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হলেন, পুণ্য ও পাপ এবং তার ফলে প্রাপ্য পুরষ্কার ও তিরষ্কারের ধারণা। তাঁদের উচ্চারিত প্রত্যয়ী মন্ত্রের ব্যাখ্যায়, কথকতায়, ধর্মকথায় কল্পনার জগতের দুয়ার খুলে গেছিল সাধারণ মানুষের মনে। তাঁরা আশ্চর্য হয়েছিলেন, অভিভূত হয়েছিলেন, এবং বিশ্বস্ত হয়েছিলেন। আমাদের ছোটবেলাতেও গ্রামের বাড়িতে দেখেছি, বাঁধানো ফ্রেমে আঁকা নরকভোগের রঙিন চিত্রপট। সেখানে যমদূতেরা চোরদের হাত কাটে, পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকাদের লোহার কাঁটাওয়ালা স্তম্ভ জড়িয়ে শুয়ে থাকতে হয়, ফুটন্ত তেলে পাপীদের ভাজতে ভাজতে (deep fry) যমদূতরা মাথায় ড্যাঙস মারে, ইত্যাদি। ... ...
আমি খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছিলাম পৃথিবীর কোন দেশের টুরিষ্টদের সবচেয়ে বদনাম – কিন্তু সমস্যা হল এই র্যাঙ্কিং এর তো কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, আর তা ছাড়া নিজের দেশকে কে আর খারাপ বলতে চায়! তবুও দেখেছিলাম যে শিষ্টাচার বিহীন টুরিষ্ট কিছু কিছু দেশের নামের পুনরাবৃত্তি হয়েছে – যেমন ইংল্যান্ডের ছেলে ছোকরাদের। যারা ফুটবল নিয়ে মাথা ঘামান তাঁরা জানেন যে সেই ফুটবল ফলো করতে গিয়ে নানা দেশে ঘুরে এই ভাবে এরা হুজ্জুত বাধিয়ে বেড়ায়! এদের তো ‘ফুটবল হুলিগান’ ও বলা হয়। এছাড়া আছে রাশিয়ান টুরুষ্ট – এদের ব্যবহার নাকি খুব খারাপ – জার্মান টুরিষ্টদের নাম আছে, অষ্ট্রেলিয়ানদের নাম আছে তালিকায় – চাইনীজ টুরিষ্টরা তো আছেই - এবং বেশ কিছু তালিকায় ভারতীয় টুরিষ্টদের নামও আছে শিষ্টাচার মেনে চলে না বলে। শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি। ... ...
মানুষের ভীতি এবং যৌন উত্তেজনার মধ্যে কোন সম্পর্ক আদৌ আছে কিনা ডোনাল্ড ডাটন এবং আর্থার আরন নামে দুই গবেষক তা তলিয়ে দেখার চেষ্টা করছিলেন! তাঁরা অনুমান খাড়া করেছিলেন এই মর্ম যে ভীতি বা উদ্বেগ জনিত অবস্থা যৌন উত্তেজনা বাড়াবে কারণ সেই অবস্থায় আমাদের মস্তিষ্ক ভুলভাবে সনাক্ত করবে যৌন উত্তেজনা জাগরণের মূল কারণ (“মিস-অ্যাট্রিবিউশন অফ আর্যাউজাল”)। এই থিওরী অনুযায়ী, যদি আমরা এমন কোন অবস্থার মধ্যে থাকি যা আমাদের মধ্যে খুব বেশী আবেগ জাগিয়ে তোলে, তাহলে আমরা বেশীর ভাগ সময় ভুল ভাবে আবেগের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করি আমাদের সাথে থাকা মানুষটার সাথে – আসলে যেখানে আমাদের চালিত করছে সেই মুহুর্তে কোন পরিস্থিতিতে আছি মূলত সেটাই। এ তো গেল হাইপোথিসিস – কিন্তু এটা প্রমাণ করা যাবে কিভাবে? ভ্যাঙ্কুভার শহরের কাছে মানুষ পারাপারের ক্যাপিলানো ঝুলন্ত ব্রীজ। যাঁরা কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার দিকে গেছেন তাঁরা জানেন যে ওখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য খুব সুন্দর। আর এই ব্রীজটা ঠিক বাণিজ্যিক ব্রীজ নয় বরং খুব সুন্দর প্রাকৃতিক জায়গার মধ্যে বেড়াতে গিয়ে ব্যবহার করার জুলন্ত সেতুর মত – প্রায় ৪৫০ ফুট মত লম্বা – পুরোটাই কাঠ এবং দড়ি দিয়ে তৈরী, এবং খুব সরু। বুঝতেই পারছেন কাঠের পাটাতনের উপর দিয়ে এই ব্রীজ পেরোবার সময় বেশ ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হত – আর পায়ের নীচে দেখা যেত প্রায় ২৫ তলা বাড়ির সমান গভীর পাথুরে খাদ। হাওয়া দিলে বা জোরে চলার চেষ্টা করলে সেই কাঠের সেতু দুলত – এবং কিছু এদিক ওদিক হয়ে গেলে নীচে পাথরের উপর পরে গেলেই ব্যাস গল্প খতম! ১৯৭৪ সালের কোন এক দিন - এক খুব সুন্দরী মহিলা সেই ঝুলন্ত সেতুর উপর যে সমস্ত একাকী যুবক পারাপার করছিল তাদের কাছে (এক সময়ে একজনের কাছে) এগিয়ে, একহাত দিয়ে সেই ঝুলন্ত দুলতে থাকা ব্রীজের ধারের দড়ি ধরে নিজের ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করতে করতে মিষ্টি তাকালো - ... ...
ধর্মের সৃষ্টি হয়েছিল হয়তো সামাজিক বিধি-বিধান থেকে অথবা আশঙ্কা ও উদ্বেগ থেকে মুক্তির আশায়। কিন্তু সেই ধর্মই এখন সারা বিশ্বের অন্যতম উদ্বেগের মূল কারণ ... ... ...
সাম্রাজ্যই হোক বা কোন উদ্যোগই হোক, তার সাফল্য এবং দীর্ঘস্থায়ীতা নির্ভর করে প্রশাসনিক দক্ষতার ওপর। আমার বিস্ময় এখানেই, কোন প্রশাসনিক দক্ষতার জোরে, বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা এমন একটা উদ্যোগকে এত দীর্ঘ সময় সাফল্যের সঙ্গে টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হল? আমার বিশ্বাস – এই প্রশাসন চালাতেন নির্বাচিত কোন গণসঙ্ঘ বা বুধমণ্ডলী। তাঁদের এতদিন ধরে সগৌরবে টিকে থাকার রহস্য হল বন্ধুত্বপূর্ণ নিবিড় যোগাযোগ। তাঁদের মূলমন্ত্র ছিল – যুদ্ধ নয়, রাজ্য জয় ও ক্ষমতার লিপ্সা নয় - মৈত্রী এবং সহযোগীতা। যার সূচনা করেছিলেন, পিতা পশুপতি, মাতা মিত্তিকা এবং বিশ্ভাই। ... ...
এই দ্বিতীয় পর্বের প্রাককথায় বলেছিলাম, প্রতিটি উত্তরণ হল সভ্যতার অসীম সিঁড়ির এক একটি ধাপ। আমাদের সমাজের বেশ কিছু মানুষ এই পর্যায়ে এসে সভ্যতার অনেকগুলি ধাপ খুব দ্রুত পার হতে পেরেছিল, কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রপ্তানির বাজার মন্দা হওয়ার কারণে, তারাই আবার বেশ খানিকটা পিছিয়ে দিল আমাদের সভ্যতার অগ্রগতি। ... ...
ইন্দ্র রায় রোড ধরে হেঁটে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রোডে ওঠার মুখটায় ডানদিকের কোণায় ‘দাঁ পেপার হাউস’, রাস্তা থেকে বেশ অনেকটা উঁচু বেশ কয়েক ধাপ সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। দোকানের ভেতরে নতুন খাতার গন্ধ, নতুন উডপেন্সিল আর রবারের গন্ধ, হলদে গোলাপী চার্টপেপারের গন্ধ, নতুন বইখাতায় মলাট দেবার ব্রাউন পেপারের গন্ধ ম’ ম’ করে। আর আছে রং পেন্সিল, রং কলম আর রঙ বাক্স। মোম দেওয়া রঙ পেন্সিলের ছোট বাক্স ড্রয়িং ক্লাসের দিন ইস্কুলে নিয়ে যেতে হয়। আমারটা বারো রঙের ছোট্ট বাক্স, সুলগ্না খুব সুন্দর আঁকতে পারে, ওর বাক্সে আঠেরটা রঙ। ত্রিসীমার একটা ইয়াব্বড় বাক্স আছে তাতে ছত্রিশটা রঙ, একদিন ইস্কুলে দেখাতে এনেছিল। ... ...
অফিস থেকে বেরিয়ে কয়েক পা দূরে প্যাটেল চৌকের দিকে হেঁটে যাচ্ছি, একটু থামছি, চারপাশ দেখছি। আপাততঃ এদিকে আর আসা হবে না, কবে আসব, বা আদৌ কোনও দিন আর আসব কি না, কে জানে। এই চত্বরে আসার পরে প্রথম প্রথম আশপাশগুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম, তারপর সব রুটিন হয়ে গেল। এখন চলে যাওয়ার আগে ফের সব একবার দেখে নিতে সাধ জাগছে কেন তাই বা কে বলবে? ... ...