সেই ছায়া এই আমার মনে, সেই ছায়া ওই কাঁপে বনে, কাঁপে সুনীল দিগঞ্চলে রে। ... ...
ঠিক যেমন কবিতা আসলে একটাই, আমরা কেবল নাম দিয়ে তাকে ভাঙি, পথকেও আমরা ভেঙে নিই বছরে। নতুন, পুরোনো, ইত্যাদিতে। কিন্তু তাতে পথের মনে হয় বিশেষ কিছু আসে যায় না। ... ...
- আমাদের বাড়িটা খুলে দিতে পারি? - মানে ঢুকতে ভিসা পাসপোর্ট লাগবে না? - স্টপ ইট। বলছি আমি একা মানুষ। নানান বাড়িতে ঘোরাঘুরি করে দান সংগ্রহ আর প্যাক করার চেয়ে ভালো হয় যদি সেই সব দান আমাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়। তাহলে বাড়িতে বসে আমি আর কয়েকজন সেগুলো বেঁধে দিতে পারি। শুক্র থেকে রবিবার মায়াও সাহায্য করবে। - তাহলে চালাঘর আর সুইমিং পুলটাও খুলে রাখো। এখন কেউ কি আর জলে নামবে? ... ...
আমরা বাচ্চারা ফুটপাথ আর গলির মুখে চার আনার রবারের বল নিয়ে ক্রিকেট খেলায় মশুগুল। ব্যাট করছে নীচের তলার আখতারদা -- নিলোফারের ছোড়দা -- ক্লাস এইটে পড়ে। বল করছি আমি, ক্লাস টু। লোপ্পা বলটায় আখতারদা এমন মারলো যে রাস্তা পেরিয়ে সার্কাস হোটেলের বারান্দায় শিককাবাব তৈরির উনুনের পাশে গিয়ে পড়লো। ওরা গেল খেপে, বল আটকে রেখে দিল। আখতারদা গিয়ে কীসব বলে নিয়ে এল বটে, কিন্তু তারপর ব্যাটটা অভিজিতের হাতে দিয়ে নিজে বল তুলে নিল। ... ...
তিব্বতে তথাগত আপাতত এইটুকুই থাক। বাকিটা প্রকাশকের কাছে ধোয়া মোছা চলছে। শিগগির বই হয়ে দেখা দেবে। ... ...
সেই একই কেস। “দেখ মা, এরা নিজেরা ভুল করেছে, তার পানিশমেন্ট পেয়েছে। দে ডোন্ট ডিজার্ভ সিমপ্যাথি।” ‘“ভুল করেনি, এদের ঠকানো হয়েছে। দুটো এক নয়।” “দে চোজ দ্য রঙ মেন। দেয়ার ফল্ট।” “কাগজ পড়িস? প্রোপোজাল রিজেক্ট হয়েছে বলেও অনেক ঘটনা ঘটে। তারও দরকার হয় না, জাস্ট প্রেজেন্সই অনেক কিছু করে।” “কিছুই বুঝলাম না।” “খামবুনির ঘটনা মনে আছে? মেয়েটি গ্যাংরেপড হয়ে খুন হয়। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিল, কয়েকজন তাকে তুলে নিয়ে যায়। মেয়েটির কি দোষ ছিল?” ... ...
আঁধার ছাতে চুল এলোমেলো করা হাওয়া দেয়। এখানে আকাশে আজ মেঘ কম। কৃষ্ণপক্ষের মৃদু চাঁদ আর অজস্র তারার মেলা। কন্যা হঠাৎ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমায়, ওপরে আঙ্গুল দেখিয়ে নতুন শেখা কবিতা বলে - দেখো মা - হাওয়া বয় শনশন তারারা কাঁপে হৃদয়ে কি জং ধরে পুরোনো খাপে কি বললি বাবু! মনে হঠাৎ একটা ফুলঝুরি জ্বলে ওঠে। মেয়েকে আঁকড়ে ধরে ওর কাঁধে চিবুক রেখে আকাশে চোখ পেতে দিই। ওগো প্রেমেন বাবু আজ নতুন করে তোমার কথার মানে বুঝেছি আমি। হাসিখেলা দুখমেলা স্মৃতির বাঁকে, আঁখিতারা তারা জুড়ে মাকেই আঁকে। হৃদপাতে সরোবর - হোথা মায়েরা থাকে। ... ...
কয়েকটি মন্দির দেখি বনজঙ্গলে ঢাকা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এত বড় ঐতিহ্য। কিছু করছেন না? কে করবে? সবাই শিবলিঙ্গ খুঁজে বেড়াচ্ছে। এদিকে কত ভালো ভালো মন্দির পড়ে আছে। তার মুখেই শুনলাম, ঠিক মতো বেতন হচ্ছে না, অস্থায়ী কর্মী বেশি। ... ...
তোনমি সম্ভোট তিব্বতের লিপি তৈরী করলেন। কিন্তু ঠিক কোন লিপি থেকে জন্ম নিল তিব্বতি বর্ণমালা? ... ...
আশির দশকের যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি। ... ...
ঝড় বয়ে গেল। এ’বছরের প্রথম কালবোশেখি। আঁধি মানে ধুলোর ঘূর্ণি, কিন্তু এটা ছিল অন্যরকম। এতে আমগাছের বৌর বা মুকুল ঝরে যায়, কাঁচা ঘরের চাল ওড়ে আর বৃষ্টির সঙ্গে ‘ওলে’ বা শিল পড়ে। তারপর কয়েকদিনের জন্য টেম্পারেচার নামে, লোকের মুখে হাসি ফোটে। ক’দিনের জন্য লু’ বা গরম হাওয়ার হলকার থেকে নিস্তার পাওয়া। সে সবই হোল। ... ...
ধরে নাও, সমুদ্রতীরের কোনও শহরে আমার আর তোমার দেখা হয়ে গেল, বহুদিন পর, প্রথমবারের মতো। দু'জনেই অন্তরে বেশ অবাক, কিছুটা ক্ষুণ্ণই হলাম একে অন্যকে ভালো থাকতে দেখে, কারণ, আমরা তো ভাবিনি ভালো থাকবে অন্যজন আমাদের ছাড়া। ভালো তো কারুরই থাকার কথা নয়, ভেবেছিলাম, কারণ প্রত্যেকে কারুর সঙ্গে যেমন আছে, কাউকে ছেড়েও তো আছে? তাই মুখে শুধু বলি, "ভালো তো? কতদিন পর...!" ... ...
তখনকার বণিকেরা এতটা শিল্প সম্মত মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিতে শেখেনি, কিন্ত তাদের সামগ্রীর বাস্তব বিজ্ঞাপন করাটা অবশ্যই জরুরি ছিল। কারণ গ্রামের সাধারণ মানুষদের কাছে সে সময় ব্রোঞ্জ সামগ্রী, তেল, গাভী ও বলদ কিংবা মূল্যবান পট্টবস্ত্র ছিল, একেবারেই নতুন এবং অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। অতএব আমার এই কল্পনা, অলীক অবাস্তব নয়। আমরা প্রকৃতিজাত অনন্য এক প্রাণী - হোমোস্যাপিয়েন্স, সেদিনও ছিলাম, আজও আছি। সে সময় ব্যবসায়ীরা মনোহারী সত্য কথায় মানুষকে প্রলুব্ধ করেছিল, এখন ব্যবসায়ীদের মনোহারী নির্জলা-মিথ্যা কথায় আমরা প্রলুব্ধ হই, তফাৎ এইটুকুই। ... ...
দাদু আমাকে বিদ্যাদিগগজ মহাধনুর্ধর করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে নিজে মুখে মুখে শেখাতে লাগলেনঃ “তিরিশ দিনেতে হয় মাস সেপ্টেম্বর, / সেইরূপ এপ্রিল, জুন আর নভেম্বর। / আটাশ দিনেতে সবে ফেব্রুয়ারি ধরে, / বাড়ে তার একদিন চারিবর্ষ পরে। ... ...