একদিন অঙ্কের খাতার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম আমার অবধারিত প্রশ্ন বুঝতে পেরেই আগেভাগে বলে উঠেছিল - এ মেলানোর অঙ্ক নয় ... ...
অর্থোডক্স ইহুদী ৱ্যাবাইদের নেতৃত্বে প্রো-প্যালেস্টাইন মিছিল! এই খোদ নিউ ইয়র্কে! ... ...
ঋষিকেশকে বিদেশীদের মধ্যে আরো জনপ্রিয় করেছে ষাটের দশকের শেষদিকে বিটলসদের এখানে আগমন। বিটলসরা এসেছিলেন মহেশ যোগীর কাছে 'ট্রান্সেন্ডেন্টাল মেডিটেশন' শিখতে। আশ্রমটা ছিল সরকারের থেকে লিজে নেওয়া জায়গা। লিজ শেষ হয়ে যাবার পর পুরো আশ্রম পরিত্যক্ত হয়ে যায় এবং প্যান ট্রিনিটি দাসের মত হিপি শিল্পীরা ঢুকে ভাঙা বাড়িগুলোর সর্বত্র গ্রাফিত্তি করে যেতে থাকে। এতদিন রাজাজী জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল ধীরে ধীরে খেয়ে নিচ্ছিল আশ্রমের ভাঙা ঘরবাড়ি। সরকার জায়গাটা ঘিরে দিয়েছে যাতে বন্য জন্তু না ঢুকে পড়ে। কিছু কিছু বাড়ি সারানো হয়েছে। ... ...
ফেলে আসা সেই সব দিনের কথা এমন দিনেই বলা যায়। ... ...
নিজের সঙ্গীত প্রতিভা নিয়ে আমার কোনোকালেই সংশয় ছিলনা। বাথরুম থেকে ক্যান্টিন, সর্বত্রই আমার রাসভনন্দিত কন্ঠের অবাধ বিচরণ ছিল।প্রখর আত্মবিশ্বাসে মৌলিক সুরে আমি রবীন্দ্রসংগীত গাইতুম।তবে যেদিন ইউনিভার্সিটি ক্যান্টিনে বেনারস থেকে আগত আমার সহপাঠীটি আমার গানের গলার প্রশংসা করে বসলেন সেদিন বিস্তর সন্দেহ জেগেছিল মনে।টাকা নাকি বই,কোনটা ধার নেওয়ার তালে আছে সে ভাবনাও মাথার মধ্যে উঁকি দিয়েছিল।দিনকতক পরে সেই সহপাঠীর ঘরে গেছি।আমায় বসিয়ে তিনি গান শোনালেন।পাক্কা চল্লিশ মিনিট। নাজিদের কন্সেন্ট্রেশন ... ...
বেঙ্গিয়া নামে একজন অন্য জেল থেকে বদলী হয়ে এসেছিল, আমাকে একদিন ওর হাত দেখে দিতে বললো। ওর দেখা মত একমাত্র জ্যোতিষীদের কাছেই বইপত্র থাকে, তাই আমারও নিশ্চয় ওরকম কোন ক্ষমতা আছে! আসলে ওর একটাই জিনিস জানার ছিল - এক ডাকাত দলের ডাকাতের সঙ্গে ওর ভাব ভালোবাসা - ঐ ডাকত প্রেমিকের বেঙ্গিয়ার ওপর এখনও টান আছে কিনা তাই নিয়ে ওর চিন্তা। দুটো ডাকাতির শাড়ি ওর কাছে পাওয়া গেছে - কিন্তু পুলিশকে ও কিছু বলেনি, তাই আটক হয়েছে। বেঙ্গিয়া আমাদের সঙ্গে অল্পদিনই ছিল। যেদিন ওকে ধানবাদ নিয়ে যায় সেদিন শুনলাম ফাটকের দিক থেকে খুব হইচই বাক বিতণ্ডা শোনা যাচ্ছে। ... ...
বেশ করেছে। হ্যাঁ মশাই, বেশ করেছে। ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে কিছু তথাকথিত বিজ্ঞানী এসে বলেছেন, প্রাচীন যুগে শ্রীলঙ্কায় এয়ারপোর্ট ছিল। কৌরবদের শতভাই আদি যুগেই স্টেম সেল থেরাপির প্রকৃষ্ট প্রমাণ। আর নিউটন আইনস্টাইন এঁরা সব ভুল -- ফক্কা । অতি শীঘ্রই গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ আর লেন্সিং ইফেক্ট-এর নাম সংশোধন করে নাকি বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক বহির্ভূত কোনো কোনো ব্যক্তির নামে হয়ে যাবে। তা মশাই, বেশ করেছে বলেছে । এরকম আকছারই তো শোনা যায় আজকাল। আগের সায়েন্স কংগ্রেসেও তো শোনা গেছিল আদি যুগে বিমান ব্যবহারের ... ...
আজকাল আর মন খারাপের খবর দেখতে-শুনতে-পড়তে ভালো লাগে না। বয়স বাড়ছে, বড্ড মানসিক অস্থিরতা জন্মায়। হয়তো বা পলায়ন প্রবৃত্তি, ঠিক জানিনা। বড় ভালো লাগে আশার, ভালোবাসার কথা পড়তে, শুনতে, দেখতেও। আসলে আমি স্বপ্ন দেখতে ও দেখাতে ভালোবাসি। আশা করি সব্বাই মিলে মিশে হাতে হাত ধরে খুব ভালো থাকবে। তাই আজকাল হতাশার কথা শুনলেই এড়িয়ে চলি। কিছু সুদিনের গল্প শোনাতেও ভালো লাগে তাই। ... ...
ডঃ শৈবাল জানা, শ্রী নিবাসন আর মেরিনা বিচের অলিভ রিডলেরা ।এক বন্ধু চড়ুইপাখি হারিয়ে যাওয়ায় কষ্ট পেয়ে পোস্ট করেছিলেন। আমি মন্তব্য করি যে এত আলো আর দূষণের জন্য জানালার পাশের দেবদারু গাছে চড়ুই কলোনির দখল নিয়েছে দাঁড়কাকেরা। অনেক নির্ঘুম রাতের শেষে ঠিক ঝরণার মত বাজতে শুনেছি চড়ুইএর কলস্বর, এখন শুধুই কর্কশতা।অমনি ভেসে এল একটি তির্যক মন্তব্য ----ডঃ শৈবাল জানা গ্রেপ্তার হয়েছেন জানেন ? তার প্রতিবাদ করেছেন তো ?আমি লিখলাম----গ্রেপ্তারের খবর পাবার সঙ্গে সঙ্গেই করেছি ।উনি ----অ, তাহলে ত ... ...
নেদারল্যান্ডস বা হল্যান্ডের কথা বললে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তো মাথায় আসেই, তার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায় অ্যানা ফ্র্যাঙ্কের কথাও। ক্লাস সেভেন বা এইটে কোনোভাবে হাতে এসেছিল সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অনবদ্য অনুবাদে ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী’। আমারই বয়সী একটি মেয়ে, যে বয়সে আমরা স্কুলে যাচ্ছি, ক্রিকেট-ফুটবল খেলছি, কেউ আঁকছি, কেউ গান গাইছি, কেউ বা তবলায় হাত পাকাচ্ছি, সেই বয়সেই, অ্যানা নামের একটি মেয়ে লুকিয়ে পড়েছে অন্ধকার ঘরে, বাইরে বেরনো বন্ধ, স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সাথে দেখা করা, খেলাধূলা, এমনকি গান-বাজনা পর্যন্ত বন্ধ, পাছে কেউ দেখে না ফেলে, পাছে কেউ শুনে না ফেলে। বাড়ির বাইরে থেকে বোঝার কোনো উপায় নেই যে ভেতরে কয়েকটা গুপ্ত ঘরে লুকিয়ে রয়েছে আটটা তাজা প্রাণ (ডুসেল, আরেক প্রতিবেশী অবশ্য পরে যোগ দেন)। পড়তে পড়তে আনা-র সঙ্গে যেন আমিও ঢুকে পড়েছিলাম সেই গুপ্ত কক্ষে, ভাগ করে নিচ্ছিলাম অজানা আশঙ্কার মুহূর্তগুলো! ... ...
প্রায়ই শহর থেকে বাসে করে স্কুলে আসার সময় শুনি গতরাতে ওমুক গঞ্জ কি তমুক ছড়ার স্কুলে আগুন লেগেছে। বেশিরভাগ টিনের চাল আর বাঁশ বা কাঠের ওপর প্লাস্টার করা স্কুল বাড়ি। দৃষ্টিশোভণ কিন্তু সহজ দাহ্য। একদিন দেখি বাসে একজন বয়স্ক মাষ্টারমশাই নীরবে চোখের জল ফেলছেন, স্কুল পুড়ে গেছে, পুড়ে গেছে তাঁর সার্ভিসবুক। সামনে রিটায়ারমেন্ট। একরকম একদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য বাসে উঠে একটা জানালার ধারে সীট পেয়ে গুছিয়ে বসেছি তখনই শুনলাম আগের রাতে আমাদের স্কুলে আগুন লেগে অফিস ব্লকসহ অনেকখানি পুড়ে গেছে। ... ...
কলেজ স্ট্রীটের দিগ্বিদিক ঘুরে বইপত্তর কিনে একটু সরবত খাব বলে হাঁটছি, এমন সময় বললে বিশ্বাস করবেন না, রাস্তা হারিয়ে গেল। কিচ্ছু চেনা যাচ্ছেনা, ঠা ঠা মে মাসের রোদ, একটা ঠেলাওয়ালা বসে বসে খৈনি টিপছে -- এছাড়া জনপ্রাণী নেই। রাস্তা বাতলাতে পারে ভেবে তার কাছে গিয়ে দেখি লোকটার মুখে কালো চাপদাড়ি বগলে একটা চামড়ার ব্যাগ। তারপরই আমার সব কেমন গুলিয়ে গেল (মা পরে শুনে বলেছিলো রোদ লেগে গেছে), আমি থমকে চেয়ে জিগ্যেস করে ফেললাম ঐ ব্যাগে কী আছে? শুনে লোকটা জুলজুল করে খানিকক্ষণ দেখে ব্যাগটা ভাঁজ করে চিকলেটের মত মুখে ... ...
সৎ দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে আমাদের গুরুদায়িত্ব সরকারেরব কথাকে বেদবাক্য বলে মেনে নেওয়া। এই পরিস্থিতিতে, নিজের স্বাস্থ্য নিজের সুরক্ষার দায় এক এবং একমাত্র নিজের, এমত সরকারি ঘোষণায় উদবুদ্ধ হয়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি বড় অংশ যদি বাড়িতে বসে থাকতে চান, তাহলে নিশ্চয়ই তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। তাই না?? তাহলে কী করবেন? কী আবার!!! আপনি হাত ধুচ্ছেন তো? আপনার সরকারও হাত ধুয়ে নিলেন। অতএব, আপনারা থালা বাজান। বাতি জ্বালুন। কোনো এক শুভদিনে সন্ধ্যা আট ঘটিকায় পরবর্তী ঘোষণার অপেক্ষায় থাকুন। ... ...
আপনি ফারহা জারীন কে চিনবেন না।চেনার কথাও নয়।তিনি একডাকে চিনে ফেলার মতন কোনো কেউকেটাও নন। এবার যদি আপনি এন্টালি’র বাসিন্দা হয়ে থাকেন বা ওই চত্বর দিয়ে যাতায়াত থাকে তাহলে দেখে থাকতেও পারেন।মেরেকেটে পাঁচফুট উচ্চতা, ক্ষয়াটে চেহারা,কাঠির মতন হাত পা, মাথায় ওড়না। আর কাঁধে একটা পুরোনো ব্যাগ।তালতলা থানা থেকে ডানদিকে যে রাস্তাটা ঢুকে গেছে,তার কিছু অলিগলি পেরিয়ে একটা গলির ভিতরে তিনতলায় একটা দুকামরার ফ্ল্যাটে উনি থাকেন।দাঁড়ান। এই ‘থাকেন’ শব্দটা সর্বার্থে সত্য নয়। উনি ওই ফ্ল্যাটে থাকেন রাত আটটা থেকে ... ...
কৃত্যা : প্রথম পর্বপ্রসেনজিৎ বসুযুধিষ্ঠির ক্লেশকম্পিত কণ্ঠে বললেন, "যিনি আকুঞ্চিত নীলকুন্তলা, মল্লিকামুখী, পদ্মনেত্রী ও পদ্মগন্ধা, যিনি মেষপালিকার ন্যায় শেষে নিদ্রিতা ও অগ্রে জাগ্রতা, সেই শ্রীলক্ষণা দ্রৌপদীকে পণ রাখলাম।"দ্যূতসভা চাঞ্চল্যবিক্ষুব্ধ হল। এ এক অভিনব ঘটনা বটে ! ইতোপূর্বে পতিকর্তৃক পত্নীপীড়ন, পত্নীদান, পত্নীপরিত্যাগ, পত্নীহত্যা ইত্যাদি বহুবিধ কর্ণরোচক সংবাদ প্রাপ্ত হওয়া গেছে। কিন্তু পতিকর্তৃক পত্নীকে দ্যূতের পণরূপে বিঘোষণা -- এটি প্রথম ! প্রকাশ্যে সকলেই উদ্বেগে ... ...
এক ঘুম দিয়ে উঠলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, মাত্র তিন ঘন্টা ঘুমিয়েছি। ঘুমটা ভেঙেছে খিদের চোটে। কাল রাত জাগরণ, তায় পাঁচ ছ’ ঘন্টা জার্নি করে বুড়ার থেকে বিলাসপুর এসে চা খেয়ে বিছানায় ডাইভ মেরেছিলাম। কিন্তু উত্তেজনার চোটে ঘুম আসছিল না। বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে আমার চোখের সামনে এতসব ঘটনা ঘটেছে। ... ...